#এক_কাপ_চায়ে : ১০
লেখনীতে : নাহিদা সানজিদ
আজ ঝুম বৃষ্টি। আবহাওয়ার অবস্থা করুণ। বিয়ের দিন এমন বৃষ্টি হওয়া ভালো লক্ষ্মণ। বৃষ্টি বেশিরভাগ সময় আসে রহমত নিয়ে। সম্ভবত আজও তাই নিয়ে এসেছে। শুভর সঙ্গে গেছে তার বাবা। বউদের কোনোরকম আয়োজন করা বারণ। শুভর কিনে দেয়া জিনিসপত্রে সাজিয়ে গুছিয়ে ছেলের বউ করে নিয়ে আসবেন কেবল। অনুষ্ঠান হবে বাড়িতে।
এদিকে মেয়ে বিদায়ের রোল পড়েছে। পুষ্প শুভকে ছাড়া বিয়ে করবে না। তাই অপেক্ষা করছে নতুন বউ আসার। শুভর ঘর সাজানো হয়েছে ঝিঙের ফুল দিয়ে। পুষ্প বারবার ভুবনভুলানো হাসি দিচ্ছে। তনু বিয়ের কনেকে এত হাসতে কখনো দেখেনি। পুষ্প উপহার মোড়কে বাঁধছে। বিছানায় শিউলি ফুল দিয়ে লিখলো, “আজ শুভর বিয়ে, ঝিঙে ফুল দিয়ে”।
শুভর হয়েছে মুসিবত। পুষ্প পাশে থাকলে সুবিধা হতো। ওকে দুচার ঘা দিয়ে নিজের অস্বস্তি কমানো যেত। আব্বা মুরব্বিদের সঙ্গে খেজুরে আলাপ সাড়ছেন। মেয়ের বাবা নেই। সুতরাং, ঝামেলা একটু বেশি। শুভ চাচ্ছে দ্রুত মিটে যাক সব।
কোনোরকম বিরতি ভাবনা ছাড়া অনর্গল তিনবার ‘কবুল’ বলে ফেলল। বৃষ্টিকে বসানো হয়েছে তার পাশে। বৃষ্টির ভাই এসে শুভর মুখের সামনে আয়না ধরে বলল,
— “ভাইয়া, আয়নায় কাকে দেখা যায়?”
বৃষ্টি ফিসফিস করে বলল,
— “বলুন, যার চোখে দেখেছিলাম আমার সর্বনাশ।”
শুভ পুরোটা হঠাৎ-ই বুঝে উঠতে পারলো না। কপালের ঘাম মুছতে মুছতে বলল,
— “সর্বনাশ, সর্বনাশ।”
এক ঘর লোক একসঙ্গে হাসছে। শুভ বুঝতে না পেরে বৃষ্টিকে ইশারা করে ‘স্যরি’ বলল। বাবা শিখিয়ে দিয়েছেন, বিবাহিত জীবনের একটি মাত্র শব্দ তোমার অনুকূলে, সেটা হচ্ছে ‘Sorry’।
বৃষ্টি নিজেও হাসছে। হিজাবের ফাঁক গলে ছোট ছোট চুল বেরিয়ে এসেছে। শুভ আনমনে আঙ্গুল দিয়ে সরিয়ে দিলো। নিজেই নিজের কাজে অবাক হয়ে গেলো। সদ্য বিয়ে করা বউ তার, অথচ মনে হচ্ছে কত বছরের সম্পর্ক!
.
.
পুষ্প মৃদু চিৎকার দিয়ে বলল,
— “ভাবীইই, বৃষ্টি এসেছে।”
— “কোন বৃষ্টির কথা বলছো, নাকি আকাশ থেকে পড়ে যে ওই বৃষ্টি নাকি শুভর বৃষ্টি?”
— “শুভর বৃষ্টিই।”
পুষ্পর মা রাবেয়া পুত্রবধূকে বরণ করলেন দরজায় বালিশ পেতে। কোনো এক পুরোনো রেওয়াজ মতে, বউ যদি বালিশ হাতে তুলে প্রবেশ করে তাহলে পাশ। বোঝা যাবে বউয়ের আক্কেল জ্ঞান কিছু আছে। তনু বায়না করার মতো মুখ করে বলল,
— “আম্মা, ছোট মানুষ, এতকিছু নাও বুঝতে পারে। থাকুক না এসব।”
বৃষ্টির আগে শুভ বালিশ পা দিয়ে ঠেলে চিৎকার করে বলল,
— “আম্মা, কী সমস্যা তোমাদের? বিয়া করে আসলাম মাত্র, ঘরের সামনে বালিশ দিয়া রাখছো পায়ের সামনে। কি বোঝাইতে চাও, কও?”
পুষ্প খিলখিল করে হেসে উঠলো। একহাতে বৃষ্টিকে ধরে তনুর কাছে নিয়ে এলো। পুষ্প দুহাত পেতে দিয়ে বলল,
— “দুই ভাবী, দুহাতে মেহেদী লাগিয়ে দাও। আমি পরীক্ষক তোমাদের, পাশমার্ক ছাড়া বরের কাছে যাওয়া যাবে না।”
শুভ বাইরে থেকেই জবাব দিলো,
— “তুই কে রে মাতুব্বর? আমার বউ, আমি বিয়া কইরা আনছি, আরেকজন আইছে পরীক্ষা করতে। পরীক্ষা করলে আমি করব, আমাকে দিয়ে দিতে বল মেহেদী।”
— “ছেলেদের মেহেদী দেওয়া হারাম, হারাম, হারাম। নিজের ঘরে বসে থাক। আমার জামাই এলে এরপর তুই বউ পাবি।”
শুভ রাবেয়ার দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে বলল,
— “আম্মা, তুমি দেখছো? দেখছো ওরে? এই মাইয়া নাক কান্দানি লাগাইছিলো বিয়া করবে না বলে। এখন তোমার সামনে জামাই জামাই করতেছে। বেশরম, বেলেহাজ, বেতাল…. ”
— “এর ভাই।”
বৃষ্টি চুপচাপ ওদের কান্ড দেখছিলো। এই ঘর গোষ্ঠী মানুষ সব পাগল কিসিমের। ঘরের তিন মেয়েকে বড় বোলে আস্ত মুরগী খেতে দেয়া হলো। রাবেয়া চোখ গরম করে পুরোটা শেষ করার ইশারা করে গেছেন৷ রীতি রেওয়াজ মানা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়, তবুও আনন্দটাই আসল। বৃষ্টি স্বাচ্ছন্দ্যে তা উপভোগ করে চলেছে।
যথা নিয়মে পুষ্পর বিয়ে হলো। চারতলা থেকে দোতলায় যাচ্ছে সে। তবুও এমন ভান করলো যেন ভিনদেশে বিয়ে হয়ে গেছে ওর। তনু ফিসফিস করে পানি দিতে বলল। ওর নাকি চোখে পানি আসছে না। শুভ নবীনকে বই উপহার দিয়েছে। বইয়ের নাম, “বউকে ভালোবাসিও, কিন্তু বিশ্বাস করিও না”।
পুষ্প কটমট চোখে চেয়ে বলল, “নিজের উপহারটা দেখে আমাকে সালাম করে যাস”। শুভ উগড়ে দিচ্ছে এমন ভাব করে ভেঙালো।
যাওয়ার আগে করে আবার বলে উঠলো,
— “ছিহ্, এমন মেয়ে দেখিনি বাবা। কোথায় কেঁদে কেটে একাকার হবে, অথচ কী স্বাভাবিক?”
পুষ্প পেছন ফিরে বলল, “এখন কাঁদব কেন? বর-শাশুড়ীর বকা খেলে তোকে জড়িয়ে ধরে তখন হাউমাউ করে কাঁদব। কয়েকটা টিস্যুবক্স কিনে রাখিস। আমি এখন যাই, বরের বাড়ি অনেক দূর।”
নম্র সামনে পথপ্রদর্শকের মতো দিকনির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছে। পুষ্প ভারী জামা সামলাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে। হোঁচট খেতেই নবীন ধরে ফেলল।
পুষ্প অসহায় গলায় বলল,
— “ধরে রাখুন, প্লিজ। আপনাকে ছাড়া আমার আর গতি নেই।”
.
.
বাসর রাতে পূর্ণিমা থাকাটা রোমাঞ্চকর ব্যাপার। ইংরেজিতে A full moon night — অনুচ্ছেদটি পড়ার সময় বৃষ্টির মনে হতো, ইশশ এমন একটা রাতে যদি ওর বিয়ে হতো! ওর আশা পূর্ণ হয়েছে। আকাশে গোল থালার মতো একটা মস্ত বড় চাঁদ দেখা যাচ্ছে। সাথে ভেসে আসছে বাতাবি নেবুর গন্ধ। শুভর ব্যালকনিতে গাছ-গাছালি আছে। কিন্তু কোথাও একটি ফুলগাছ দেখলো না। বৃষ্টি মন খারাপ করবে করবে করেও করলো না। মন খারাপ অসুখটা দীর্ঘস্থায়ী, প্রথমেই মন খারাপ দিয়ে শুরু করলে বাকি জীবনটা তা করেই কাটাতে হবে।
কাজেই বৃষ্টি টুকটুক করে হেঁটে বেরালো পুরো ঘর। মোটামুটি গোছানো। তেমন শৌখিন কিছুর স্থান নেই। টেবিল ভর্তি বোঝাই করা বই। বোঝা যাচ্ছে এতে অনেক দিন যাবত কারো হাত লাগেনি। পড়ুয়া মানুষের টেবিল গোছানো থাকে না। বৃষ্টি টেবিলের উপরই পা দুলিয়ে বসে রইলো। তার বর তাকে দেখে ফেলেছে সকালে। সুতরাং একহাত ঘোমটা ফেলে ‘মাশাআল্লাহ’ শোনার অপেক্ষার প্রয়োজন নেই।
শুভ এসে পাঞ্জাবির বুকের কাছের দুটো বোতাম খুলে সিলিং ফ্যানের দিকে মুখ করে বসে রইলো। আজকাল লোডশেডিং খুব সমস্যা করছে। ঠিক দু মিনিট পরই বিদ্যুৎ উধাও। বৃষ্টি ভয় পেলো না, চিৎকার করে বর মহাশয়কে জাপটেও ধরলো না। শুভ অবাক হলো। এই গরমে গায়ের উপর এসে পড়লে ও সত্যিই বিরক্ত হতো। বৃষ্টি পা দুলিয়ে আবদারের সুরে বলে উঠলো,
— “চলুন না, আমরা ছাদে গিয়ে বসি? গরমে তো এখন ঘুমানো যাবে না। বাইরে চাঁদের আলো আছে, দেখুন? ভালো লাগবে।”
নিঃশব্দ অন্ধকারের মাঝে কন্ঠ টা শোনালো খুব মধুর। নববধূর আবদার ফেলে দেওয়ার মতো কঠিন হৃদয় শুভর কোনদিনই ছিলো না। দু’জোড়া পা হেঁটে গেলো ছাদের দিকে। বৃষ্টি খালি মেঝেতেই বেশ আরাম করে বসলো। শুভও দেখাদেখি বসে পড়লো। চাঁদের আলোয় স্পষ্ট দেখা না গেলেও খুব সুন্দর লাগছে চারপাশ। অসম্ভব সুন্দর। লোডশেডিং এ জ্যোৎস্না এতটা উপভোগ্য হবে, শুভ কখনো ভাবেনি। কোনো কবি সাহিত্যিক বৃষ্টির পাশে থাকলে হয়ত তাকে দেয়া হতো ‘জ্যোৎস্না-রাণী’ উপমা।
বৃষ্টি মেক-আপ করেনি। বিয়ের পোশাকটি এখনও অস্বস্তি ছাড়াই পরে আছে। সারা বিকেল এই ঝুমকো চুড়ি হাতেই সে হেঁটে হেঁটে পেয়ারা খেয়েছে। এসব করেছে সে তনুর আশকারায়। বৃষ্টি থুতনি কবজিতে ভর দিয়ে বলল,
— “আচ্ছা, আপনাদের বাসার মানুষগুলো এত অসাধারণ কেন? কেন যেন মনে হয়, আরে আমার তো ভয় পাওয়ার দরকারই নেই। ওরা সবাই নিজের মানুষ।”
শুভ মনোযোগ দিয়ে আকাশ দেখছে।
— “তুমি নিজেও অসাধারণ তাই।”
— “আমি কীভাবে!”
— “সাধারণ মেয়ে হলে কী আমাকে বিয়ে করতে? চাকরি বাকরিহীন, যার চালচুলো নেই, তোমার লাইফ সিকিউরিটি নেই।”
বৃষ্টি ভ্রু কুঁচকালো।
— “আপনি এত গাধা আমি চিন্তাও করিনি। ভেবেছিলাম আমার চেয়ে বুদ্ধি একটু বেশি।”
— “জানলে বুঝি বিয়ে করতে না?”
— “ভাগ্যে আছেন বলেই তো হয়েছে। উপরওয়ালা বুঝে শুনেই মিলিয়েছেন, জানা অজানার হিসাব বুঝি না।”
— “হিসাব বুঝো না কেন? অংকে ফেল করতে?”
বৃষ্টি লজ্জা পেয়ে হাসলো।
— “তা মাঝেমাঝে করতাম। দেখেছেন? বললাম না, উপরওয়ালা বুঝেশুনে মিলিয়েছেন। আমি অঙ্ক পারিনা বলেই অঙ্কবিদ আমার বর।”
শুভ হেসে ফেললো শব্দ করে। বৃষ্টি মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে রইলো। চোখ সরাতে গিয়েও সরালো না। দ্রুত বলে উঠলো,
— “জানেন আমি এখন কী করছিলাম? তাড়াতাড়ি চোখ সরিয়ে নিচ্ছিলাম এটা ভেবে আরে ছেলেদের দিকে তাকাচ্ছি কেন! এরপর সাথে সাথেই মনে পড়লো, আপনাকে দেখার জন্য আমার এখন আর কোনো রুলস মানতে হবে না, তাই না?”
— “এত মানো নাকি?”
— “আরে হ্যাঁ! আপনি বিশ্বাস করছেন না? আমার জীবনের প্রথম প্রপোজাল পেয়ে আমি এত কান্না করেছি আপনি কল্পনাই করতে পারবেন না। সবাই ভাবছিলো আমার ব্রেকআপ হয়ে গেছে। আসলে আমি এটা ভেবে কাঁদছিলাম যে আমি তো এখন আর বলতে পারব না আমার ফিউচার বরকে যে আমি একদম ডিসেন্ট। কোনো ছেলেকে কাছে ধারে আসতে দেইনি, প্রপোজ তো দূর কি বাত!”
শুভর হাসতে হাসতে চোখে পানি এসে যাচ্ছে।
— “তুমি তখন নিশ্চয়ই নিব্বি ছিলে?”
— “অবশ্যই! আমি তখন চাইতাম আমার এক্ষুনি বিয়ে হয়ে যাক, আমি কনফার্ম হয়ে যাই আসলে জীবনে কে আছে, কাকে সব ভালোবাসা দেব। তখন জানেন, আমি আপনাকে কল্পনা করে করে রাগও করতাম। বান্ধবীদেরকে বলতাম, বদলোকটা কচ্ছপের পিঠে করে আসছে। তাই এত লেট!”
শুভর হাসি থামাতে খুব বেগ পোহাতে হচ্ছে। মুখ চেপে বলল,
— “এখন আমাকে সাজা টাজা দেবে না? দেরী হওয়ার জন্য?”
বৃষ্টি মাথা নিচু করে ফেললো।
— “তখন স্কুলে পড়তাম তো, তাই এগুলো ভাবতাম। আর ভাবতাম যেদিন আমাদের বিয়ে হবে সেদিন বসে বসে এই গল্পগুলো বলব। আবার বড় হবার পর মন খারাপ হতো, হয়ত গল্প শোনার জন্য আপনি কখনোই অপেক্ষা করবেন না। একটা রোবট বরের রোবট স্ত্রী হয়ে যেতে হবে। আমার সাথের ওরা প্রায় বলতো আমাকে, ‘দেখ বৃষ্টি তুই যেমন ভাবছিস তেমনটা হয়না বাস্তবে। দেখ গিয়ে তোর বর হয়ত এখন দশ বারোটা মেয়ের সঙ্গে ফ্লার্ট করছে।’ তখন থেকে আমার এই চিন্তা গুলো কমে যায়, কিন্তু দেখুন তেমনটা তো হয়নি না? আপনি আমার গল্প তো শুনলেন।”
শুভর ঠোঁট থেকে হাসি সরে গিয়েছে। মৃদু গলায় বলল,
— “তোমার বান্ধবীরা তো কিছুটা ঠিক বলেছে।”
— “পুরোটা তো ঠিক হয়নি। সবার বাস্তবতা ভিন্ন, কেউ পরিস্থিতির স্বীকার, কেউ বুঝে উঠতে পারে না ঠিক বেঠিক, তাই বলে তো এই না আপনি ভালো না। বিয়ে তো আপনার সবকিছু জেনেশুনেই করেছি। আমার জীবনেও কেউ প্রভাব ফেলতে পারতো, কিন্তু তার মানে এই না সে অতীতের জন্য আমি বর্তমানকে মেনে নেব না। ভুল হচ্ছে স্লিপ খেয়ে পড়ার মতো, পড়ে যাওয়ার পর কারো হাত ধরে উঠে দাঁড়তে হয়, আবার পথ চলতে হয়।”
শুভ শুনলো মনোযোগ দিয়ে। বলতে ইচ্ছে হলো এই মেয়েটা ঠিক পুষ্পর মতো মন ভালো করা কথা বলে। নিজেকে ছোট ভাবতেই দেয় না। শুভ আড়ষ্ট গলায় প্রথমবারের মতো ওর নাম ধরে ডেকে বলল,
— “বৃষ্টি, তোমার কোলে মাথা রাখি একটু?”
বৃষ্টি মাথা নাড়ালো উপরনিচ। সারাদিনের এত ধকল সামলে দুচোখে রাজ্যের ঘুম ব্যতীত কিছু দেখতে পেলো না শুভ।
— “তোমাকে অসাধারণ বলেছিলাম না বৃষ্টি? আমিও তোমার মতো ভয়ে থাকতাম জানো, ভাবতাম আমার বউ বুঝি আমাকে সবসময় লুজার বলে ডাকবে। চেঁচাবে আমার অপ্রিয় অতীতের কথা তুলে। এই যে তুমি চিৎকার না করে আমার সঙ্গে এত গল্প করলে, আমার খুব ঘুম আসছে। ঠিক বড় ভাইয়ার মতো, আমার ইচ্ছে করছে নিশ্চিন্তে ঘুম দিয়ে সব ভুলে যাই। চোখ গুলো বলছে, তুমি ভাবনাহীন হয়ে ঘুমাও, তোমার সকল দুশ্চিন্তা কাঁধে নেবার জন্য তোমার একটা মানুষ আছে, নিজের মানুষ…”
নিভু নিভু স্বর তার। ওর চুলে বিচরণ করা হাতগুলোর সঞ্চালের সঙ্গে সঙ্গে ঝুমকো বেজে চলেছে। নারী কন্ঠটি রিনরিনে গলায় গাইছে প্রেমের গান। শুভর শোনা হলো না তাকে নিয়ে গাওয়া সেই অনুভূতি। নির্ভার হয়ে চাঁদের আলোয় ঘুমন্ত শুভকে দেখে বৃষ্টির মন চাইলো কিছু মুহুর্তের জন্য কবি হয়ে যাক সে। এই পুরুষকে সে কবিতায় ভূষিত করা হবে ‘জ্যোৎস্না-রাজ’ উপমায়।
চলবে ~