#প্রণয়_কোন্দল
#মাশফিয়াত_সুইটি
পর্ব:০৪(ছদ্মনাম)
গোসল করে বাইরে বের হতেই ঠাস করে মেঝেতে পড়ে গেল উৎস। হাতের কনুই হালকা ফেটে গেছে, শতাব্দী জোরে জোরে হাসছে হাসি যেন থামছেই না। কোমরে হাত দিয়ে মুখ কাচুমাচু করে শতাব্দীর দিকে তাকিয়ে আছে উৎস, বুঝতে আর বাকী নেই কাজটা যে শতাব্দীর। উৎস দেওয়াল ধরে উঠার চেষ্টা করতে গিয়ে আবারো পড়ে গিয়ে ব্যথায় ‘চ সূচক’ শব্দ উচ্চারণ করলো।
উৎসের চিৎকারে বাড়ির সবাই উৎসের ঘরে চলে এসেছে। ইসতিয়াক আহমেদ ছেলেকে জিজ্ঞেস করলেন,
– তুই মেঝেতে গড়াগড়ি খাচ্ছিস কেন?
উৎস অসহায় কন্ঠে বলল,
– পড়ে গেছি বাবা।
– পড়লি কিভাবে?
– আগে তো এখান থেকে তুলো আমায়।
ইসতিয়াক আহমেদ ছেলের কাছে যাওয়ার জন্য পা বাড়াতেই উৎস মুখ খিচে বলল,
– দেখে এসো এখানে সাবান পানি আছে।
মিসেস উপমা ব্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করলেন,
– এখানে সাবান পানি কোত্থেকে আসলো?
উৎস চোখ ছোট ছোট করে শতাব্দীর দিকে তাকালো, শতাব্দী শুকনো হেসে বলল,
– আপনার ছেলে নিজেই রেখেছে আমি সরাতে চাইলাম কিন্তু আমাকে সরাতে নিষেধ করায় আমি সরাইনি এখন দেখুন নিজেই অসাবধানতাবশত পড়ে গেল।
উৎস বিড়বিড় করে বলল,’এক নাম্বারের মিথ্যুক মেয়ে।’
ইসতিয়াক আহমেদ আর তৌসিফ মিলে উৎসকে বিছানায় বসিয়ে দিল। উৎস মিনমিনে গলায় বলল,
– আমার কোমরটা মনে হয় ভেঙ্গেই গেছে।
মিসেস উপমা আহ্লাদি সুরে বললেন,
– এটুকুতে কোমর ভাঙ্গে না কয়েকদিন বিশ্রাম নিয়ে ঠিক মতো ওষুধ খেলেই ঠিক হয়ে যাবে।
ডাক্তার এসে চেক আপ করে কয়েকটা ওষুধ লিখে দিয়ে চলে গেলেন। তৌসিফ লোক পাঠিয়েছে ওষুধ আনতে, ঘরে এখন শুধু উৎস আর শতাব্দী আছে বাকি সবাই নিজেদের ঘরে চলে গেছে।
শতাব্দী সোফায় বসে গুনগুন করে গান গাইতে গাইতে মোবাইল টিপছে আর আড়চোখে একটু পর পর উৎসকে দেখছে।উৎস এক দৃষ্টিতে শতাব্দীর দিকে তাকিয়ে আছে ইচ্ছে করছে ঠাসিয়ে গিয়ে কয়েকটা কামড় দিতে কিন্তু কোমরের ব্যথায় উঠতেই পারছে না।
শতাব্দী মুখটা দুঃখী দুঃখী করে উৎসকে জিজ্ঞেস করল,
– মি. হাজব্যান্ড আপনার কি অনেক ব্যথা করছে?
উৎস মুখ কুঁচকে বলল,
– ইচ্ছে করে ফেলে দিয়ে এখন ঢং করা হচ্ছে?
– আপনি দেখে হাঁটতে পারেন না? দেখে হাঁটলে তো আর এমন অবস্থা হতো না।
– আমি তো আর জানতাম না ঘরেও আমার শত্রু আছে।
শতাব্দী মুখ বাঁকালো। উৎসের রাতের খাবার মিসেস উপমা ঘরেই নিয়ে এসেছেন, শতাব্দী মৃদু হেসে বলল,
– শ্বাশুড়ি আমার কাছে দিন আমি উনাকে খাইয়ে দিব।
মিসেস উপমা শতাব্দীর হাতে খাবার গুলো দিয়ে চলে গেলেন।উৎস শতাব্দীর দিকে তাকিয়ে ভাবছে, ‘মতলব তো ভালো ঠেকছে না।’
শতাব্দী খাবারগুলো নিয়ে সোফায় বসে পড়লো। দুধের গ্লাসে চুমুক দিয়ে বলল,
– ইস খাবারগুলো অনেক গরম শরীর ব্যথা নিয়ে আপনার গরম খাবার খাওয়া ঠিক হবে না,অনেক খিদে পেয়েছে বুঝলেন আপনার হয়ে আমিই বরং খাবারটা খেয়ে নেই।
বলেই ঠোঁট প্রশস্ত করে হাসি দিল শতাব্দী।উৎস বলল,
– আমারও সময় আসবে তখন আমিও শোধ নিবো।
শতাব্দী ভেংচি কেটে উৎসকে দেখিয়ে দেখিয়ে খেতে লাগলো।উৎস মুখ কুঁচকে অন্যদিকে ফিরে চোখ বন্ধ করে নিলো।
_____________
মাঝে কয়েকদিন কেটে গেল উৎসের কোমর ব্যথা ভালো হয়ে গেছে। শতাব্দী এ’কদিন বিভিন্ন ভাবে উৎসকে অনেক জ্বালাতন করেছে। উৎস আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে তৈরি হচ্ছে কোথাও যাওয়ার জন্য শতাব্দী জিজ্ঞেস করলো,
– কোথায় যাচ্ছেন?
– ফ্যাক্টরিতে।
– আশা করি আমার মোবাইল চেক করা হয়ে গেছে এবার আমার মোবাইল আমাকে ফেরত দিন।
উৎস আয়নায় আরও একবার নিজেকে দেখে নিয়ে আলমারির একটা ড্রয়ার থেকে মোবাইল এনে শতাব্দীর হাতে দিয়ে বলল,
– আপনি অনেক চালাক উকিল সাহেবা, তবে উকিলদের বুদ্ধি থাকা ভালো।
মুচকি হেসে চলে যাচ্ছিল উৎস কিছু একটা ভেবে আবারও পেছনে ঘুরে বলল,
– আর হ্যা এখন থেকে চাইলে বাড়ির বাইরে বের হতে পারবে তবে যেখানেই যাও না কেন সুন্দর মতো বাড়িতে ফিরে আসবে।
উৎস চলে গেল। শতাব্দী উৎসের হঠাৎ এমন ভালো ব্যবহার নিতে পারছে না তবে এখন এসব ভাবার সময় নেই। শতাব্দী নিজের চেম্বারে যাওয়ার জন্য তৈরি হয়ে নিলো ফোনে কাউকে কিছু বুঝিয়ে দিয়ে বেরিয়ে গেল বাড়ি থেকে।
উৎসের বাড়ি থেকে চেম্বারে যেতে এক ঘন্টার মতো সময় লাগে। শতাব্দী নিজের চেয়ারে গিয়ে বসতেই তার এসিস্ট্যান্ট আয়মান এসে হাজির হলো। শতাব্দী কিছু বলার আগেই আয়মান কৌতুহলী স্বরে জিজ্ঞেস করল,
– ম্যাম আপনি শাহরিয়ার আহমেদ উৎসকে বিয়ে করেছেন!
– আমি নয় মি.উৎস আমায় বিয়ে করেছে।
– কিভাবে সম্ভব ম্যাম? আপনি মি.উৎসের বিপক্ষে কেস লড়ছেন এমন একটা অপরাধীর সঙ্গে আপনার বিয়ে হলো!
শতাব্দী দীর্ঘশ্বাস ফেলে প্রসঙ্গ পাল্টে বলল,
– রুহির মৃত্যুর আগের দিন থেকে এখন পর্যন্ত উৎস কার কার সঙ্গে কথা বলেছে পুরো কল ডিটেইলস আজকের মধ্যেই আমার চাই।
– ম্যাম মি.উৎসের বিরুদ্ধে সব প্রমাণ আমাদের আসিফ ইসলাম জোগাড় করে দিয়েছেন সেসব প্রমাণের ভিত্তিতে প্রমাণ হয় আসল খু’নি শাহরিয়ার আহমেদ উৎস তাহলে কল ডিটেইলস চেক করে কি হবে?
– এত প্রশ্ন করো না কারণ ছাড়া আমি কিছু করি না যা বলছি তাই করো আর হ্যা আমরা দু’জন ছাড়া এ ব্যাপারে কেউ যাতে না জানে।
– ঠিক আছে ম্যাম।
– যাওয়ার আগে তন্নীকে আমার কাছে পাঠিয়ে দিও।
– আচ্ছা ম্যাম।
আয়মান শতাব্দীর থেকে বিদায় নিয়ে চলে গেল।কয়েক মিনিট পর তন্নী শতাব্দীর কাছে এসে বলল,
– ম্যাম আপনি এতদিন কোথায় ছিলেন? নিশ্চই ওই উৎস আপনাকে আটকে রেখেছিল তাই না ম্যাম? ম্যাম এক কাজ করুন উৎসের নামে নারী নির্যাতনের মামলাও দিয়ে দেন তাহলে আর এই জীবনে জেল থেকে বের হতে পারবে না।
– উৎস নয় স্যার বলে সম্বোধন করবে।
তন্নী ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেল।গলার স্বর নিচু করে বলল,
– ওকেহ ম্যাম।
– গুড।
– ম্যাম মামলা দিবেন না?
– কিসের জন্য?
– এই যে আপনাকে ঠকিয়ে বিয়ে করে বাড়িতে আটকে রেখেছিল।
– পরে ভেবে দেখব।
শতাব্দী একটু থেমে বলল,
– মি.উৎসের কেসের সব ফাইল গুলো নিয়ে এসো তো।
– জ্বি ম্যাম।
তন্নী চলে গেল ফাইলগুলো আনতে, কয়েকমিনিট সময় নিয়ে ফাইলগুলো এনে শতাব্দীর সামনের টেবিলে রাখলো। শতাব্দী ফাইলগুলো মনোযোগ সহকারে দেখে ফাইল থেকে একটা কাগজ তন্নীর দিকে এগিয়ে দিয়ে বলল,
– এটা মি. জুবায়েরের ল্যাবে পাঠাও রিপোর্টটা আসল নাকি নকল জানতে হবে।
– ম্যাম হঠাৎ এগুলো নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করছেন কেন?
– কারণ আছে রুহির এই কেসটায় অনেক গন্ডগোল আর রহস্য আছে, সব রহস্য বের করতে হবে অন্যের উপর বিশ্বাস করেই অনেক ভুল হয়েছে আমাদের প্রথম থেকেই সবকিছু যাচাই বাছাই করা উচিত ছিল।
– ম্যাম আপনি কি বলতে চাইছেন মি.উৎস নির্দোষ? এই ফাইলগুলোতে সমস্যা আছে?
– মি.উৎস সত্যিই নির্দোষ নাকি দোষী আমি জানি না তবে আমার সবকিছু গন্ডগোল লাগছে কেসের সঙ্গে জড়িত সবার উপরে সন্দেহ হচ্ছে তাই নিজে থেকে এবার সব রহস্য বের করবো।
– আচ্ছা ম্যাম।
তন্নী কাগজটা নিয়ে শতাব্দীর রুম থেকে চলে গেল।তন্নী যেতেই শতাব্দী জুবায়েরকে ফোন করে সবটা বুঝিয়ে বলে দিল।
________________
সন্ধ্যার আগেই বাড়িতে ফিরে এসেছে শতাব্দী তার কিছুক্ষণ পরেই উৎসের আগমন ঘটে।উৎস বাইরের পোশাক বদলে সোফায় বসে ল্যাপটপে মনোযোগ সহকারে কাজ করছে। শতাব্দী উৎসের দিকে তাকিয়ে থেকে বলল,
– কাল সকালে রেডি থাকবেন আমরা বের হবো।
– বাহিরে কেন? ঘরে বসেই তো প্রেম করা যায়।
– আজেবাজে চিন্তা, প্রেম করতে নয় হাসপাতালে যাবো।
– কেন? কার কি হয়েছে?
– আমার হয়েছে।
– আমি তো কিছু করিনি।
– কোন অসভ্যের পাল্লায় পরলাম? আর একটাও ফাউল কথা বলবেন না চুপচাপ কাল আমার সঙ্গে যাবেন।
– আমার কাজ আছে ঊষাকে সঙ্গে নিয়ে যেও।
– আপনাকেই যেতে হবে এটাই ফাইনাল কথা।
শতাব্দী চোখ বন্ধ করে শুয়ে পড়ল, উৎস শতাব্দীর দিকে তাকিয়ে আবারো কাজে মন দিল।
.
.
.
সকাল হতেই শতাব্দী রেডি হয়ে গেছে।উৎস এখনও ঘুমে বিভোর, শতাব্দী বিরক্ত হয়ে আবারো পানি ভর্তি বালতি এনে উৎসের গায়ে ঢেলে দিল।উৎস লাফিয়ে উঠে গেল, রাগ দেখিয়ে বলল,
– সমস্যা কি তোমার? রোজ রোজ এভাবে গায়ের উপর পানি ঢালো কেন?
– রাতে বলেছিলাম না সকাল সকাল রেডি থাকতে তাহলে এখনও বিছানায় কি করেন?
– আমি তোমার সঙ্গে যাচ্ছি না তোমার মতলব ভালো না উকিল সাহেবা।
– আমার মতলব ভালো না!
– না, হাসপাতালে নিয়ে যদি আমার কিডনি বেঁচে দেও তখন কি হবে?
উৎস এবার চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে বলল,
– এই সত্যি সত্যি তুমি আমার কিডনি বেঁচে দিতে চাইছো নাতো উকিল সাহেবা? শেষ পর্যন্ত আমার কিডনির দিকে নজর দিলে? আমার কিডনি বেঁচে আই ফোন কেনার মতলব এঁটেছো তাই না, তোমার আই ফোন লাগবে আমায় বলতে পারতে আমি কিনে দিতাম আমার কি টাকার অভাব আছে নাকি এসব চালাকির কি দরকার ছিল ?
শতাব্দী হতভম্ব হয়ে উৎসের মুখের দিকে তাকিয়ে আছে। কতটা ফাজিল হলে এসব চিন্তা ভাবনা করতে পারে এরকম লম্বু একটা ছেলে ভেবে পাচ্ছে না শতাব্দী। শতাব্দী নিজের মাথা চেপে ধরে বলল,
– দুই মিনিটের মধ্যে রেডি হয়ে না আসলে নিচে গিয়ে সব ভাঙচুর করে ফেলব।
উৎস ফিচেল হেসে বলল,
– যাচ্ছি তো বউ রাগো কেন?
উৎস ওয়াশরুমে ঢুকে গেল। শতাব্দী আলমারি থেকে উৎসের কাপড় বের করে রেখে ড্রয়িং রুমে চলে গেল।
উৎসদের বাড়িতে যার যখন খিদে পায় সে তখনি নিজের মতো খেয়ে নেয়। শতাব্দী এই বাড়িতে এসে একদিনও খাবার টেবিলে সবাইকে একসঙ্গে পায়নি।উৎস রেডি হয়ে নিচে নেমে এসেছে,পরনে ছাই রঙের জিন্স সাদা রঙের শার্ট, শার্টের হাতা ফোল্ড করা বুকের দিকে দু’টো বোতাম খোলা কয়েকটা চুল কপালে এসে পরেছে যার কারণে দেখতে এক কথায় চকলেট বয়দের মতো লাগছে। উৎসের চোখে সবসময় সাদা ফ্রেমের চশমা থাকে এতে মুখ দেখে ইনোছেন্ট লাগে।
শতাব্দী নিচ থেকে উপর পর্যন্ত উৎসকে পর্যবেক্ষণ করে বলল,
– আমরা গার্লস স্কুলে নয় হাসপাতালে যাচ্ছি এত সাজার দরকার কি ছিল?
– সাজলাম কোথায়? তোমার মতো ঠোঁটে লিপস্টিক দিয়েছি নাকি চোখে কাজল দিয়েছি?
শতাব্দী লজ্জা পেল উৎসকে অপমান করতে গিয়ে নিজেই অপমানিত হয়ে গেল। উৎস বলল,
– যাওয়া যাক?
– হুম চলুন।
দু’জনে গিয়ে গাড়িতে উঠল। তৌসিফ ড্রাইভারের পাশের সিটে বসার জন্য উঠতে নিচ্ছিল তখনি শতাব্দী বলল,
– আপনি উঠছেন কেন? কোথায় যাবেন?
– বস যেখানে যাবেন আমিও সেখানেই যাব।
শতাব্দী উৎসের দিকে রাগ মিশ্রিত দৃষ্টিতে তাকাতেই উৎস তৌসিফের উদ্দেশ্যে বলল,
– বুঝলে তোসিফ তোমার ম্যাম আমার সঙ্গে একান্তই সময় কাটাতে চায় তাই তোমাকে যেতে হবে না তুমি বরং আমাদের নারায়ণগঞ্জেল ফ্যাক্টরিটা দেখে এসো।
– ওকেহ বস।
তৌসিফ আর গাড়িতে উঠলো না। শতাব্দী বলতেই ড্রাইভার গাড়ি ছেড়ে দিল।আধ ঘন্টা পর গাড়ি একটা হাসপাতালের সামনে থামলো। হাসপাতালটা মাঝারি আকারের, উৎস শতাব্দী দু’জনেই ভেতরে প্রবেশ করলো। শতাব্দী রিসেপশনে কথা বলে উৎসকে নিয়ে দুই তলা গেল।উৎস চুপচাপ শতাব্দীর পেছনে পেছনে যাচ্ছে কোনো প্রশ্ন করছে না এতে যেন শতাব্দী অনেক অবাক হয়েছে। একটা রুমের কাছে এসে শতাব্দী উৎসকে বলল,
– আপনি ওই সিটে গিয়ে বসুন আমি ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলে আসছি।
– হুম যাও।
উৎস গিয়ে বসলো। শতাব্দী ডাক্তারের চেম্বারে ঢুকতেই ডা: আবিদ বললেন,
– এডভোকেট আহিরী শতাব্দী যে বসুন বসুন।
– বসার সময় নেই গতকাল আপনাকে ফোনে যা যা বলেছিলাম তার ব্যবস্থা করেছেন?
– হুম সব ব্যবস্থা শেষ আপনার হাজব্যান্ড কোথায় তাকে আনলেই হবে।
– সেও এসেছে বাইরে বসে আছে।
– উনি জানেন তো সব?
– না এখনও জানানো হয়নি।
– পরে যদি ঝামেলা করে?
– যা ইচ্ছে করুক আপনি শুধু আপনার কাজ করুন।
ডা: আবিদ একজন নার্সকে ডেকে কেবিন ঠিক করতে বললেন। শতাব্দী উৎসের কাছে গেল নরম কন্ঠে বলল,
– আপনি আমার হাজব্যান্ড তাই আমার সাথে আপনাকেও কিছু টেস্ট করাতে হবে।
– কোন হাতুড়ে ডাক্তারের কাছে এলে!
– হাতুড়ে ডাক্তার কেন বললেন?
– সমস্যা তোমার অথচ হাজব্যান্ড হয়েছি বলে টেস্ট করাতে হবে আমার হাতুড়ে ডাক্তার ছাড়া আর কি বলবো।
– আপনি যাবেন কি যাবেন না?
– হুম যাব।
শতাব্দী মৃদু হাসলো।উৎস দাঁড়িয়ে গিয়ে বলল,
– তাহলে চলো।
– কোথায়?
– টেস্ট করাতে।
– ও হ্যা চলুন।
উৎস আর কোনো প্রশ্ন না করায় হাফ ছেড়ে বাঁচলো শতাব্দী। উৎসকে নিয়ে ডাক্তার কেবিনের ভেতরে ঢুকে গেল, শতাব্দী বাইরে বসে আছে চিন্তায় মুখ লাল হয়ে গেছে কপাল থেকে বিন্দু বিন্দু ঘাম পড়ছে।
চলবে………