গল্পের নামঃ #বস আমার এক্স
লেখকঃ মোঃ শামীম মিয়া
সূচনা পর্ব
তানহা কাগজ গুলো ছুরে মারলো মামুনের মুখের উপরে। এই কাগজ গুলো তৈরি করার জন্য মামুন কে এক সপ্তাহ সময় দিয়েছিলো তানহা। কিন্তু মামুন তা করতে পারে নাই। মামুনের কারনে তানহা আজকে প্রায় কোটি টাকার বিজনেস করতে পারলো না। রাগে চোখ মুখ লাল করেছে তানহা, এই বিজনেস টা করতে পারলে কোটি কোটি লাভ হতো তানহার কোম্পানির।
তানহাঃ যদি কাজ করতে মন না চায় আর কাজে মন না বসে তাহলে চাকরি ছেড়ে দিয়ে চলে যেতে পারেন আপনি? ( রেগে)
মামুনঃ আসলে ম্যাম আমি ঠিক করেই করেছি কিন্তু কি থেকে কি যে হয়ে গেলো বুঝতে পারলাম না আমি। বিশ্বাস করেন ম্যাম দিন রাত এক করে সব কাগজ আমি তৈরি করেছিলাম। কিন্তু আমি নিজেই বুঝতে পারতেছি না এরকম কেমন করে হলো।
তানহাঃ আপনি কি করেছেন আর কি করেন নাই তার প্রমাণ তো এই কাগজ গুলো দিতেছি। নাকি আপনি আমার কোম্পানির ভালো চান না? আর সব কিছু বা কেমন করে ভালো করে করবেন আপনার তো ঠকানোর অভ্যাস খুব ভালো করেই আছে।
মামুনঃ আপনি দয়া করে এসব কথা বলবেন না ম্যাম। সত্যি আমি আপনার কোম্পানির ভালো চাই। তাছাড়া আপনি তো ভালো করেই জানেন আমি কেমন?
তানহাঃ আমার চেয়ে আপনাকে কেউ বেশি চিনে না তা জানি। আর আপনি কেমন সেটাও আমি জানি ভালো। আপনার মত মানুষ যেখানে যার কাছে গেছে তাকে ঠকিয়েছে আর তার ক্ষতি করে ছেড়েছে। তাই তো আপনি আমার কোম্পানি কে পথে বসাতে চান।
মামুনঃ সরি ম্যাম এমন ভুল আর হবে না কখনও ( মাথা নিচু করে)
তানহাঃ ঠিক আছে এবারের মত ক্ষমা করে দিলাম এরপর যদি এমন ভুল করেন তাহলে তো বুঝতেই পারতেছেন।
মামুনঃ অবশ্যই ম্যাম জানি আর মনে করিয়ে দিতে হবে না।
এত গুলো অফিসের মানুষের সামনে কনফারেন্স রুমে মামুন কে ঠিক এভাবে কথা গুলো শুনালো। আর না শুনিয়ে কোন উপায় আছে, তার কারনে তো অন্য একটা কোম্পানির সাথে এত সুন্দর ডিল টা হলো না। তানহা কে এর আগে কখনও এমন রেগে যেতে দেখে নাই এই অফিসের কেউ।
ম্যানেজারঃ ম্যাম এখন কি আমরা যেতে পারি নাকি আরো কোন কাজ আছে।
তানহাঃ যে কাজ থাকার কথা ছিলো তা তো আর হলো না এখন যে যার কাজে যান।
সবাই যে যার ডেক্সে গিয়ে কাজে লেগে পড়লো। তানহা এখনও রেগে আছে। তার রাগ যেনো কিছুতেই কমতেছে। এই মামুন কে এখানে তার বাবা কি দেখে চাকরি দিলেন সেটাই সে বুঝতে পারতেছে না। এমন সময় তানহার রুমে ঘানা আসলো। আসলে আজিজুলের নাম ঘানা হওয়ার পিছনে একটা কারন আছে সে আফ্রিকা মহাদেশের কালো মানুষের মত দেখতে। তাছাড়া সাইজেও একটু খাটো আর কি সেই কারনে সবাই তাকে ঘানা নামে ডাকে।
ঘানাঃ আগেই বলেছিলাম তানহা তোমাকে এই মামুন কে এখানে রাখার কোন দরকার নেই। আমার কথা তো শুনলে না দেখলে তো আজকে কি ঘটনা টাই না সে ঘটালো। আজকে মামুনের কারনে তোমাকে অন্য কোম্পানির লোকের কাছে অপমানিত হতে হলো।
তানহাঃ ঘানা এটা কিন্তু আমার অফিস আর এখানে তুমি চাকরি করো সুতরাং আমাকে সম্মান দিয়ে কথা বলবে বলে দিলাম।
ঘানাঃ তানহা ভুলে যেও না আমি তোমার খালাতো ভাই হই আর তোমার সাথে আমার বিয়ে হবে। তাই আমি তোমার নাম ধরে ডাকতেই পারি। এখানে তো আর অফিসের কোন লোক নাই, তাদের সামনে তো নাম ধরে ডাকি না আর সবার সামনে কিন্তু সম্মান দেই।
তানহাঃ মুখ সামলে কথা বলবে বলে দিলাম ঘানা। বিয়ে আর তোমাকে করবো আমি সেটা ভাবলে কি করে তুমি। আর শোন এমন কথা বললে এখানে একদিনও টিকতে পারবে না।
ঘানাঃ আচ্ছা সরি আর বলবো না। কিন্তু যত দ্রুত সম্ভব মামুন কে এখান থেকে বের করে দিন ম্যাম। তা না হলে আমাদেন এই কোম্পানি খালি লসের মুখ দেখবে।
তানহাঃ সেটা নিয়ে তোমাকে এত ভাবতে হবে না। আমার কাজ আমি বুঝবো কাকে রাখবো আর কাকে রাখবো না সেটা সময় বলে দিবে।
ঘানাঃ দেখেন ম্যাম সেটা আপনার ইচ্ছে কিন্তু আমি এই কোম্পানির ভালোর জন্য বললাম। তাছাড়া খালু আমাকে আগেই বলেছে আমি যেনো এই কোম্পানির কোন ক্ষতি হতে না দেই আর কে কে কোম্পানির সাথে বেঈমানী করে সেটা বলে দিতে।
তানহাঃ তার মানে বলতে চাচ্ছো মামুন আমাদের কোম্পানির সাথে বেঈমানী করতেছে।
ঘানাঃ আপনি জ্ঞানী মানুষ ম্যাম নিশ্চয়ই আপনাকে কোন বলতে হবে না।
তানহাঃ ঠিক আছে এবার যাও গিয়ে নিজের কাজ টা মনোযোগ দিয়ে করো।
ঘানা চলে গেলো তার ডেক্সে, তানহা ভাবতেছে সত্যি কি মামুন আমাদের কোম্পানির সাথে বেঈমানী করতেছে। তানহা এবার কনফারেন্স রুম থেকে বের হয় তার নিজের ক্যাবিনে গেলো। মাথাটা তার খুব ধরেছে এখন একটা তার কফি খেতেই হবে। তাই তানহা বেল বাজিয়ে পিয়ন কে ক্যাবিনে ডাকলো।
পিয়নঃ ম্যাম কোন কিছু কি লাগবে আপনার।
তানহাঃ হ্যাঁ আমার জন্য আপনি এক কাপ কফি নিয়ে আসুন দ্রুত। আর কফি আনার আগে মামুন সাহেব কে আমার এখানে আসতে বলুন।
পিয়নঃ আচ্ছা ম্যাম আমি এক্ষুনি যাচ্ছি।
পিয়ন আগে গিয়ে মামুন কে তানহার ক্যাবিনে যেতে বলল, পরে সে কফি বানাতে গেলো। মামুন শুনেই তানহার ক্যাবিনে নক করে অনুমতি নিয়ে ঢুকলো।
মামুনঃ ম্যাম আমাকে আপনি ডেকেছেন।
তানহাঃ এ মাসে লাভ লস কত প্রোডাক্ট বিক্রি হয়েছে কত গুলো ফিরত এসেছে আর কত শ্রমিকের বেতন দিতে হবে তার সব হিসাব কি করেছেন।
মামুনঃ আসলে ম্যাম এখনও সব হিসাব হয় নাই আজকের দিনটা একটু সময় লাগবে তাছাড়া ম্যাসেজার স্যারও এখনও আমাকে কোন কিছুর হিসাব দেয় নাই।
তানহাঃ নিজের দোষ অন্যের কাঁধে দিবেন না মি. মামুন সাহেব। সবার আগে নিজের কাজের দায়িত্ব টা পালন করুন আপনি। আর হ্যাঁ ম্যানেজার সাহেব বলেছে আপনার ডেক্সে নাকি পরশু সব হিসাবের ফাইল দিয়ে দিয়েছে।
মামুনঃ আসলে আমি এখনও দেখি নাই কোথায় ফাইল রাখছে। আমি এক্ষুণি গিয়ে সব করতেছি আমাকে একটু সময় দেন।
তানহাঃ নিজের কাজে যদি গাফিলতি করেন তাহলে চাকরি করার কি দরকার শুনি।( রেগে)
মামুনঃ সরি ম্যাম আমি বুঝতে পারি নাই আমি সব করে আপনাকে দিতেছি। তাছাড়া অফিসের অন্য ফাইল পত্র নিয়ে খুব ব্যস্ত ছিলাম।
তানহাঃ কাজে ফাঁকিবাজি আমার একদম পছন্দ নয় বুঝেছেন আপনি। যান এক্ষুণি গিয়ে সব কিছু রেডি করে আমার রুমে নিয়ে আসবেন বলে দিলাম।
এর মাঝে পিয়ন এসে তানহা কে কফি দিয়ে গেলো। মামুন সময় নষ্ট না করে দ্রুত তার ডেক্সে গিয়ে ফাইল টা বের করে কাজে লেগে পড়লো। অফিসে তানহা আসার পর মামুন ঠিকমত বসে থাকতেও পারে নাই। একটার পর একটা কাজ তার উপর চাপিয়ে দিয়েছে সে। মামুনও কোন না বলে আপন মনে তার কাজ করে গেছে। মামুন চাইলেও চাকরি ছাড়তে পারবে না, প্রথমত তার পরিবার আছে দ্বিতীয়ত এখানে চাকরি নেওয়ার আগে কিছু পেপারে সই করেছে সেখানে কিছু শর্ত আছে চাকরি ছাড়তে হলে মামুন কে ১০ লক্ষ্য টাকা দিয়ে চাকরি করতে হবে। যেখানে মামুন এই চাকরির বেতনের উপর নির্ভর করে চলে সেখানে এত টাকা কোথায় থেকে দিবে। তাই তো সব মুখ বুঝে সহ্য করে মামুন।
পিয়নঃ ম্যাম আমাকে কেনো ডাকলেন আবার, কোন কিছুর কি প্রয়োজন আপনার।
তানহাঃ না এখন তেমন কিছু লাগবে না। আমি এখন লাঞ্চ করার জন্য বের হচ্ছি আপনিও লাঞ্চ করে নিবেন। আমার ফিরতে একটু দেরি হবে ম্যানেজার কি বলে সে অনুযায়ী কাজ করবেন
পিয়নঃ ঠিক আছে ম্যাম সব বুঝতে পেরেছি।
তানহাঃ আর শুনেন মামুন সাহেব কে বলে দিবেন কাজ শেষ না করে যেনো আজকে বাসায় না যায়।
পিয়নঃ আচ্ছা ম্যাম আমি বলবো মামুন সাহেব কে। আপনি কি এখনি বের হবেন।
তানহাঃ হ্যাঁ লাঞ্চের সময় হয়ে গেছে বের হতে হবে আমাকে এখন।
তানহা লাঞ্চ করার জন্য বের হয়ে গেলো। যাওয়ার সময় দেখলো মামুন তার ডেক্সে বসে কাজ করতেছে। কিন্তু তার আশেপাশের সবাই লাঞ্চ করার জন্য বের হয়ে গেছে। এর মাঝে পিয়ন এসে মামুন কে বলতেছে।
পিয়নঃ কি স্যার আপনি আজকে লাঞ্চে গেলেন না যে।
মামুনঃ আসলে ম্যাম কে আজকের মধ্যে এই ফাইল টা রেডি করে দিতে হবে( মাথা না তুলে)
পিয়নঃ স্যার এভাবে আর কতদিন লাঞ্চ না করে এভাবে কাজ করে যাবেন। এভাবে কাজ করলে তো আপনি অসুস্থ হয়ে যাবেন।
মামুনঃ এছাড়া কোন উপায় নেই অফিসের সব কাজের দায়িত্ব তো আমার উপরে চাপিয়ে দিয়েছে। কি করবো বলুন কাজ না করলে যদি চাকরি যায় তখন আমার পরিবার চলবে কি করে। ছোট ভাই বোনের পড়াশোনা মায়ের ঔষুধ পরিবার চলা সব আমার উপর যে নির্ভর করে।
পিয়নঃ স্যার সত্যি আপনি ভালো মানুষ এই যুগেও এসে নিজের কথা না ভেবে ভাই বোন বাবা মায়ের কথা ভাবতেছেন।
মামুনঃ কি করবো বলেন, আমার পড়াশোনার পিছনে বাবা সব জমি বন্দক রেখেছে। এখন তো আমারও কিছু দায়বদ্ধতা আছে নাকি। তাছাড়া ধিরে ধিরে সব জমি বন্দক থেকে আমাকেই বের করতে হবে যে।
পিয়নঃ স্যার ম্যাম বলে গেছে আজকের মধ্যে যেনো ফাইলটা রেডি করে ম্যাম কে দিতে।
মামুনঃ আমি জানি আমাকে বলেছে এবার আপনি আপনার কাজে যান আমাকে কাজটা ঠিক করে করতে দেন।
পিয়নঃ আচ্ছা ঠিক আছে করেন আপনি কাজ আপনাকে আর বিরক্ত না করি।
পিয়ন চলে গেলো তার কাজে। মামুন এক ধ্যানে ফাইল টা রেডি করতে লাগলো। আসলে তানহা হলো মামুনের এক্স জিএফ। দুজনের দুই বছরের সম্পর্ক ছিলো কোন একটা ঝড় তাদের এক হতে দেয় নাই। এখানে অবশ্য মামুনের দোষটাই বেশি। তাই হয়তো তানহা তার প্রতিশোধ এভাবে মামুনের উপর তুলতেছে। মামুন যখন এখানে চাকরি নেয় তখন তানহা অফিসের বস ছিলো না। আর তানহার আব্বু চাকরি দেওয়ার আগে এসব শর্ত দেয়। কারন হঠাৎ কোন কর্মকর্তা চলে গেলে তার কোম্পানির লস হতে পারে তাছাড়া বড় পদেই চাকরি করে মামুন। সেই সুযোগটা আরো মজবুত করে কাজে লাগিয়েছে তানহা। মামুনের কাজ করার সময় একটা মেয়ে কলিগ তার কাছে আসলো।
মিতুঃ কি করেন মামুন সাহেব এত মনোযোগ দিয়ে।
মামুনঃ কি আর করবো বলেন এই তো অফিসের কাজ করি।
মিতুঃ তাই বলে কি আপনি লাঞ্চ টাও করতে যাবেন না নাকি।
মামুনঃ কাজে মন দিলে আর খাওয়ার ইচ্ছে থাকে না। তা আপনি লাঞ্চ করেছেন তো নাকি?
মিতুঃ হ্যা করেছি, আচ্ছা সব সময় দেখি এই নতুন বস আপনার উপর সব কাজ চাপিয়ে দেয়।
মামুনঃ হয়তো আমার কাজ নতুন বসের খুব পছন্দ তাই হয়তো আমাকে এত এত কাজ দেয়।
মিতুঃ আবার দেখি সবার সামনে অপমান করতেও ছাড়ে না আপনাকে।
মামুনঃ কাজ যখন করি তখন তো ভুল হবে, আর ভুল করার পর নিশ্চয়ই আদর পাবো না।
মিতুঃ আপনি কি ভারি দুষ্টুু আছেন। সব রকম পরিস্থিতিতে আপনি কথা হাসি মুখে বলতে জানেন।
মামুনঃ শোনেন মিস মিতু হাসলে কি আর কাঁন্না করলে কি কেউ তো আর মনের অবস্থা জানবে না৷ একটু না হয় হেসেই দুষ্টুমি করে কথা বললাম তাতে অপর প্রান্তের মানুষ টা বুঝলো আমি ভালো আছি।
মিতুঃ তা অবশ্য ঠিক কথাই বলেছেন আপনি। তা আপনার কাজ কি শেষ নাকি এখনও বাকি আছে।
মামুনঃ এই তো প্রায় শেষ আর একটু কাজ বাকি আছে।
মিতুঃ তাহলে করেন কাজ আজকে কিন্তু এক সাথে যাবো কেমন।
মামুনঃ আচ্ছা আমি চেষ্টা করবো যদি তারাতারি আমাকে ছাড়ে তো।
তানহা কিন্তু অফিসে ঢুকার পথে মামুন আর মিতুর কথা বলা দেখে ফেলেছে। তানহা যে অফিসে এসেছে মামুন আর মিতু দুজনের কেউ জানে না। তানহা তার ক্যাবিন থেকে বসে বসে দেখেছিলো কত সুন্দর করে তারা হেসে হেসে কথা বলতেছে। কারন মামুনের ডেক্সটা তানহার ক্যাবিনে পাশেই। আর ক্যাবিনের সামনের অংশ টুকু থাই গ্লাসের। মিতু আর মামুনের কথা শেষ হলে তানহা পিয়নের দ্বারা মামুন কে তার রুম বলেন আর ক্যাবিন বলেন সেখানে ডাকলো।
মামুনঃ ম্যাম আমাকে ডেকেছিলেন নাকি।
তানহাঃ তা ফাইল টা রেডি হয়েছে নাকি আর তিন চারদিন সময় লাগবে( রেগে)
মামুনঃ ম্যাম আর একটু বাকি আছে হিসাব টা মিলালে হয়ে যাবে।
তানহাঃ সময় তো লাগবেই আপনার, এটা তো আর অফিস না এটা হলো প্রেম করার পার্ক।( রেগে)
মামুনঃ সরি ম্যাডাম ঠিক বুঝলাম না আমি।
তানহাঃ বুঝবেন কি করে, খুব তো হেসে হেসে হেলে দুলে প্রেমালাপ করলেন এতক্ষণ। অফিসে যে বস এসেছে সেদিকে তো কোন খেয়াল নেই। তা প্রেম যদি করতেই হয় পার্কে করেন সিনেমা হলে গিয়ে করেন। অফিসে কাজ না করে প্রেম করার জন্য নিশ্চয়ই বেতন দেই না।
মামুনঃ আসলে ম্যাম কাজ করতে করতে একটু হাপিয়ে গিয়েছিলাম।হঠাৎ মিস মিতু আসলো আর জিজ্ঞেস করলো লাঞ্চ করেছি কি না আর অফিসের কোন ফাইল টা করতেছি।
তানহাঃ এত মিথ্যা বলতে হবে না, আমি মানুষ চিনি। যান ৩০ মিনিটের মধ্যে ফাইল টা রেডি করে আনবেন বলে দিলাম।
মামুনঃ আচ্ছা ম্যাম ধন্যবাদ।
মামুন নিজের ডেক্সে গিয়ে মনোযোগ দিয়ে কাজ করতে লাগলো। আসলে ফাইল টা আরো আগেই দেওয়ার কথা ছিলো, কিন্তু ম্যানেজার স্যার কখন কবে ফাইল তার ডেক্সে রেখেছে সেটা মামুন জানে না। এদিকে তানহা ভাবতেছে সত্যি কি মামুন লাঞ্চ করে নাই, নাকি ভার্সিটি জীবনের মত মিথ্যা বলতেছে। তাই শিওর হওয়ার জন্য তানহা পিয়ন কে আবারো ডাক দিলো।
তানহাঃ আচ্ছা মামুন সাহেব কি লাঞ্চে গিয়েছিলো নাকি তার ডেক্সে বসে ফাইল ঠিক করতেছিলো।
পিয়নঃ ম্যাম মামুন স্যার ফাইল ঠিক করতেছিলো। আমি অবশ্য তাকে বলেছিলাম যেতে কিন্তু তিনি ফাইল টা শেষ করে আপনাকে দিবে।
তানহাঃ আচ্ছা ঠিক আছে আপনি এখন যান, আর হ্যাঁ ম্যানেজারের রুমে গিয়ে ওনাকে বলবেন ম্যাডামের যে অন্য একটা কোম্পানির সাথে যৌত কাজের ফাইল দেওয়া ছিলো সেটা জেনো তারাতারি দিয়ে দেয়।
পিয়নঃ মাফ করবেন ম্যাডাম, আপনি কি অন্য কোন নতুন কোম্পানির সাথে মিলে আরো শেয়ারে নতুন কোম্পানি করতে চাচ্ছেন?
তানহাঃ হ্যাঁ নতুন কোম্পানির সাথে শেয়ার হয়ে আরো বড় একটা কোম্পানি করতেছি। কিন্তু এটা আপনাদের বড় বস মানে আমার বাবার বন্ধু আর আমার বাবা মিলে করতেছে। ওটার কাজ অবশ্য শেষ প্রায়, দেশের ৪২ টা জায়গায় এটার কোম্পানি হচ্ছে আর সব ধরনের প্রোডাক্ট তৈরি করা হবে কিছুদিনের মধ্যে আমরা নতুন কর্মচারী নিবো সেখানে। কিন্তু সব কিছু পরিচালনা হবে আমাদের এই অফিস থেকে।
পিয়নঃ আচ্ছা ম্যাডাম আমি তাহলে যাই এবার ম্যানেজার স্যারের ক্যাবিনে ফাইল টা নিয়ে আসার জন্য।
পিয়ন তানহার ক্যাবিন থেকে বের হয়ে ম্যানেজারের ক্যাবিনে গেলো। ম্যানেজারের কাছ থেকে ফাইল নিয়ে আবারো তানহার ক্যাবিনে আসবে এমন সময় তার হাত থেকে ফাইল টা কেরে নিলো………….?
চলবে কি???
সবাই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ কায়েম করি এবং খারাপ কাজ থেকে দূরে থাকি। আপনার সন্তান কে কোরআন এবং দ্বীনের শিক্ষা দিন। কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। দয়া করে কেউ গল্প কপি করে নিজের নামে চালিয়ে দিবেন না।🙏🙏🙏