সেদিন_বর্ষায় #পর্বঃ৮ #আয়েশা_আক্তার

0
568

#সেদিন_বর্ষায়
#পর্বঃ৮
#আয়েশা_আক্তার

🍁

সকালে উঠে তিথি শাড়ি চুরি পড়ে তৈরি হয়ে তানভীরের রুমে গেলো।তানভীর ও রেডি হচ্ছিল। তিথি ভাইয়ার ঘরে এসে ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে আছে। ফর্সা শরীরে কালো প্যান্ট, হোয়াইট শার্ট, কালো বুট,সাথে ম্যাচিং করে কালো ঘড়ি এক কথায় অসাধারণ লাগছে। মুখের খোঁচা খোঁচা দাঁড়ি গুলো যেন দিগুণ করে দিয়েছে তানভীরের সৌন্দর্য। চুল গুলো জেল দিয়ে স্পাইক করা।তানভীর তিথির সামনে এসে,

আরে বোন কখন আসলি?? তোকে কিন্তু অনেক সুন্দর লাগছে। তোর কপালে বাচ্চাদের মতো কালো টিপ দিয়ে দিতে ইচ্ছে করছে। কালো রং টা তোকে এতো টা মানাবে জানতামই না আমি।

তিথি মুখ গোমড়া করে,

তুমি বানিয়ে বানিয়ে কেন বলছো ভাইয়া। আমি মোটেও সুন্দর নই তুমি কতো কিউট আর ফর্সা আর আমি কালো ভুতের মতো দেখতে।

তানভীর তিথির মাথায় একটা চাটি দিয়ে বললো,

ধুর পাগলি, ফর্সা আর কিউট কি এক নাকি??আমি ফর্সা হলেও তুই আমার থেকে বেশি কিউট। একদম মায়ের মতো মায়াবী দেখতে। তাছাড়া তোর স্বভাব, চরিত্র ও মায়ের মতো কিউট।

সত্যি বলছো আমি মায়ের মতো?(মুখে হাসি ফুটিয়ে)

হুম এখন চল।দেরি হলে আবির রাগ করবে।

হুম চলো। একটা রিকশা করে দুই ভাইবোন এগুচ্ছে আবিরের বাসার দিকে। তানভীর তিথির খেয়াল রাখছে বোনের শাড়ি রিকশায় পেচিয়ে যায় কিনা? বোন পড়ে যায় কিনা এইসব। আর তিথি ভাইয়ার সামনে খুশি থাকার চেষ্টা করলেও মনটা ভীষণ খারাপ তার।কেন ঢ়েন বুকের ভেতর টা কষ্টে ফেটে যাচ্ছে। আবির চলে যাবে এতে ওর কেন এতো কষ্ট হচ্ছে সেটাই ভেবে পাচ্ছে না তিথি। তবে কি আমি আবির ভাইয়া কে ভালোবেসে ফেলেছি। না না এসব কি ভাবছি আমি। উনি ভাইয়ার খুব ভালো একজন বন্ধু। আমি চায় না আমার জন্য ওদের সম্পর্ক আমি কিছুতেই নষ্ট হতে দিতে পারি না।আর উনিই বা কি মনে করবেন আমাকে? নিশ্চিত খারাপ মেয়ে মনে করবেন আমায়।নয়তো ভাইয়ের বন্ধু কে নিয়ে কেউ এসব ভাবে? তিথি কন্ট্রোল ইউর সেলফ। কন্ট্রোল ইউর সেলফ। এসব আজেবাজে চিন্তা বাদ দে আগে ভাইয়ের স্বপ্ন পূরণ কর তারপর অন্য কিছু।

আবিরের বাসার সামনে আসতেই দেখলো,আবির তার বাবা-মা রাফসান সাহেব আর রাহেলা বেগম গাড়ি নিয়ে ওদের জন্য ওয়েট করছে। আবির তো তানভীর কে দেখা মাত্রই ঝাপিয়ে পড়লো।তানভীর কে কয়েক টা কিল-ঘুষি দিয়,

শালা তোর কথা রাখতে দেশের বাইরে যাচ্ছি আর তুই কিনা লেইট করছিস??

তানভীর আবিরের কানের কাছে মুখ নিয়ে,

মুখ সামলে কথা বল। আমি তোর শালা হতে যাবো কেন? আমার কলিজার বোন কে দিতে রাজি হয়ে গিয়ছি আমি আর তুই সামান্য কথা রাখতেও এতো কথা শুনাচ্ছিস??

তিথি একটু দুরে দাড়িয়ে ওদের কে দেখছে। চোখ দিয়ে দুফোঁটা পানি আসলে তিথি দ্রুত তা মুছে চোখের পানি আড়াল করে। কিন্তু আবির ঠিকই দেখে নেয় আর বুঝে নেয় সে চলে যাচ্ছে তাই তার প্রেয়সীর কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু মুখে বলছে না। তিথি কে এক মায়া পরী লাগছে দেখতে।কই ওর থেকে আরও অনেক ফর্সা মেয়ে ও দেখেছে কিন্তু কাউকেই তো এতো টা সুন্দর লাগে নি কখনো। কথায় আছে না থাকে ভালো লাগে তার সবথেকে খারাপ দিকটাও ভালো লাগে। আর এতো সামান্য গায়ের রং।মানুষ কে কখনোই তার গায়ের রং দিয়ে বিচার করা ঠিক না।তার মনুষ্যত্ব টাই আসল।মানুষের মন যত সুন্দর সে ততবেশি সুন্দর। তানভীরের ডাকে আবিরের ঘোর কাটলো,

কিরে এখানেই দাড়িয়ে থাকবি নাকি?? পড়ে তো ফ্লাইট মিস করবি।অলরেডি ৭ টার উপরে বাজে।

আবির মলিন হেসে, হ্যাঁ চল।সবাই গাড়িতে উঠো।

রাহেলা বেগম, তোরা যা বাবা আমি সেখানে গিয়ে নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারবো না। আর আমি চাই না যাওয়ার সময় তুই মন খারাপ করে যাস।

আবির মায়ের সামনে এসে,

কিন্তু মা…..

আবির কে থামিয়ে দিয়ে রাহেলা বেগম বললেন,

কোনো কিন্তু নয় বাপ। সাবধানে যাবি আর একদম মন খারাপ করবি না কেমন? পৌঁছে আমাকে কল দিবি।আর ভালো করে পড়াশোনা করবি।এতটুকু বলেই উনি বাসার ভেতরে চলে গেলেন।

আবিরের একটু কষ্ট হলেও তা আড়াল করে সবাইকে নিয়ে গাড়ির দিকে এগিয়ে গেলো।আবির আর তানভীর একসাথে বসতে নিলে তিথি বললো,

ভাইয়া তুমি আমার সাথে বসো প্লিজ।( মনেমনে) আপনি হয়তো ভাবছেন আমি আপনাকে সহ্য করতে পারি না। কিন্তু আমি চাইছি না আপনি যাপয়ার সময় কোনো মন খারাপ নিয়ে যান।দোয়া করি সুস্থ ভাবে সফল হয়ে ফিরে আসুন। সবাই আপনাকে নিয়ে অনেক আগ্রহী।

আবির মুখে বললো,

ওকে বাবা তুমি আমার সাথে বসো আর তানভীর তুই তিথির সাথে। (আর মনেমনে) জানি তোমার কষ্ট হচ্ছে, কারণ তুমি ও যে একটু একটু করে ভালোবাসতে শুরু করেছো আমায়।হয়তো ভাবছো আমি তোমাকে ভুল বুঝছি কিন্তু না আমি কখনো তোমাকে ভুল বুঝবো না।সারাজীবন আগলে রাখবো। বিষয়ে পর একটুও কষ্ট পেতে দিব না। এতো দিন না হয় একটু সহ্য করে নাও।

🍁

চলবে…

বিদ্র. ভুল ত্রুটি ক্ষমা করবেন। গঠন মূলক মন্তব্য করবেন। হেপি রিডিং অল 🖤

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here