স্নিগ্ধ_অনুভব #পার্ট:৭

0
406

#স্নিগ্ধ_অনুভব
#পার্ট:৭
#পিচ্চি_লেখিকা

(গল্পের শেষের লিখা টুকু পড়ার অনুরোধ রইলো)

পুরো শরীরের ব্যাথায় নড়েচড়েও বসতে পারছি না। শরীর নাড়ালেই ব্যাথা গুলো চাড়া দিয়ে উঠে। একটা মানুষ যে এতটা নিষ্ঠুর হয়তে পারে তা আমার জানা ছিলো না। অনুভব কে না দেখলে হয়তো জানতেও পারতাম না। প্রথম প্রথম থাপ্পড় খেয়েও কিছুই বলতাম না। এখন তো আর থাপ্পড় চলে না। কথায় কথায় বেল্ট দিয়ে মারে। আর৷ যায় হোক এই লোকের সাথে সংসার হয় না। যে সম্পর্কে ভালোবাসা নেই,সে সংসার হবে কি করে?

ফ্ল্যাশব্যাক________

ক্যান্টিনে মেঘলা,তন্নি আর তামিম বকছিলো তখনই ঝড়ের গতিতে এসে কেউ আমাকে জড়িয়ে ধরলো। ঘটনার আকস্মিকতায় সবাই চমকে গেছি। ভয়ে ভয়ে চোখ মেলে দেখি তিশা আপু। তিশা আপুকে দেখে প্রাণ ভরে শ্বাস নিলাম। আপুর জায়গায় অন্য কেউ থাকলে আর অনুভব দেখলে আমার আজও মাইর খাইতে হতো।
“এই স্নিগ্ধুর বাচ্চা এতদিন কই ছিলি? ওই বাড়িতেও যাস না ভার্সিটিও আসিস না!কেন?”
“তুমি তো ভার্সিটি আসো না আজ হঠাৎ?”
“আমার প্রশ্নের আন্সার না দিয়ে আমাকেই প্রশ্ন করছিস!”
কিছু না বলে মাথা নিচু করে তাচ্ছিল্যের হাসি হাসলাম৷ এটা অবশ্য নিজের জন্যই। এই হাসিটাই হয়তো বরাদ্দ আমার জন্য। আমাকে চুপ থাকতে দেখে তিশা আপু গাঢ় দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।
“কি হয়ছে বল তো? অনুভব ভাইয়া বলে তুই নাকি অসুস্থ ছিলি? এটা কি সত্যি?”
“হুম!”
“এখন ঠিক আছিস?”
“হুম!”
“কি হুম হুম করছিস? কি হয়েছে বল?”
“কই কিছু না তো!”
“মিথ্যা বলিস না। তোর চোখ মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছে তোর কিছু হয়ছে..”
“কিছু হয়নি আপু।”
“কিছু হয়নি তাহলে তাচ্ছিল্যের হাসি দিলি কেন?”
আমি আপুর দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে আবারও মাথা নিচু করে নিলাম। মেঘলারাও আমার পাশেই দাঁড়িয়ে আছে। ওরাও হয়তো সত্যিটা জানতে চায়। তিশা আপু ওদের সামনেই জিজ্ঞেস করলো,,
“তোকে যে বলেছিলাম কিছু তোর মনে আছে?”
“হুম।”
“কিছু জানতে পেরেছিস?”
আপুর কথা শুনে যেমন হাসি পাচ্ছে তেমনি বুক ফেটে কান্না আসছে। আপু আমাকে চুপ দেখে বাহু চেপে ধরে। সাথে সাথে ব্যাথায় চোখ মুখ কুচকে “আহ” বলে উঠি। আপু সাথে সাথে আমাার বাহু ছেড়ে বললো,,
“কি হয়ছে স্নিগ্ধু? এমন করলি কেন? কি হয়ছে বল?”
“কিছু হয়নি আপু।”
এবার পাশ থেকে মেঘলা বলে উঠলো,,
“তুই কি বলবি স্নিগ্ধু? তোর ওপর কিন্তু খুব রাগ হচ্ছে। বল কি হয়ছে?”
“তোরা এমন করছিস কেন?কিছু হয়নি আমার।
” দেখি তোর হাত দেখা।”
“না!”
আপু আর মেঘলা জোর করে জামার হাতা একটু উপরে তুলতেই দেখে জায়গাটা কালচে দাগ পড়ে গেছে। কয়েকটা দাগ সেখানে। মেঘলা তো দেখেই দু কদম পিছিয়ে গেছে। আমি মাথা নিচু করে চোখের জল বিসর্জন দিচ্ছি। আজ ঘরের কথা পরে জানবে যদিও ওরা পর না তবুও তো আমার স্বামী আমাকে মারে এটা ওরা আজ জানবে। হয়তো খুব খারাপ চোখে দেখবে বিষয়টা। মেঘলা আমার গায়ের দাগ দেখে হু হু করে কেদে উঠলো আপুও ঠায় বসে আছে। তামিম আর তন্নি তো বাকরুদ্ধ হয়ে গেছে। যে মেয়ে একটা চিমটি সহ্য করতে না পেরে ওদের মাথা খেয়ে ফেলতো আজ কি না সে এত মার খেয়েও চুপ করে আছে এটাই হয়তো ওদের অবাক করে দিয়েছে। কিছু না বলে চুপ করে রইলাম। তিশা আপু চোখ মুখ শক্ত করে বললো,,
“তোর এই অবস্থা কেন? ভা..ভাইয়া মারছে তোকে?”
“……………..
” চুপ করে থাকবি না স্নিগ্ধু বল কি করে হয়েছে?”
আমি তখনো মাথা নিচু করে কেঁদেই যাচ্ছি। আপু আমার হাত ওর মাথার উপর নিয়ে বললো,,
“আমি জানি কসম দেওয়া পাপ..তবুও আমার কসম বল কি করে হয়েছে তোর এসব? অনুভব ভাইয়া মেরেছে তোকে?”
আপুর দিকে একবার তাকিয়ে আপুকে জাপটে ধরে শব্দ করে কান্না করে দিলাম। ক্লাস শুরু হওয়ায় সব স্টুডেন্টরা ক্লাসে চলে গেছে শুধু আমরা বাদে। আপু আমাকে শান্ত করে সবটা বলতে বললো। আমিও শুরু থেকে শেষ সবটা বলেই কান্না শুরু করে দিলাম। মেঘলা, তন্নি, তামিম, তিশা আপু সবাই রেগে গেছে।
“ভাইয়া তোর সাথে এরকম বিহেভ কিভাবে করে? আর তুই সবটা সহ্য করিস কোন সাহসে?এত কেন উদার তুই?”(তিশা আপু)
“আপু ও তো বরাবরই অনুভব ভাইয়াকে প্রাণ দিয়ে ভালোবাসে তাই চুপ করে থাকে। তাই বলে এত টর্চার সহ্য করবে! আমার তো ওকে এখন ঠাটিয়ে থাপ্পড় দিতে ইচ্ছা করছে।”(মেঘলা)
” অনুভব ভাইয়ার কপাল ভালো তোর মতো বউ পেয়েছে। অন্য কোনো মেয়ে হলে তো এতদিনে অনুভব ভাইয়াকে জেলের ভাত খাওয়াতো।”(তন্নি)
“তোর ভালোবাসা এক পাক্ষিক হয়ে গেছে রে স্নিগ্ধু। তুই ওই কুৎসিত লোকটার থেকে দুরে যা নয়তো উনি তোকে এভাবে মারতে মারতেই মেরে ফেলবে।” (মেঘলা)

ওরা সবাই যে যার মতো করে অনেক কথা বললো। আমি পুরোটা সময়ই চুপ ছিলাম। তারপর তিশা আপু আমাকে জোড় করেই রেস্টুরেন্টে নিয়ে গেলো। আপুর বিএফ আসবে দেখা করতে। আমার মন ভালো না তাই আমাকে ঘুরার জন্য নিয়ে যাবে। আমি যেতে না চাইলেও ওরা সবাই জোড় করেই আপুর সাথে পাঠিয়ে দিলো।

রেস্টুরেন্টে বসে আপুর বিএফ আবিদ ভাইয়ার সাথে টুকটাক কথা বলছি। আমি বলছি বললে ভুল হবে উনিই জিজ্ঞেস করছে আর আমি আন্সার দিচ্ছি কখনো হুম হা এসবই করে যাচ্ছি। আপু ওয়াশরুম গেছে। হঠাৎ করেই কই থেকে অনুভব ঝড়ের গতিতে এসে আমার হাত চেপে ধরলো। চোখের দিকে তাকিয়ে মনে হচ্ছে আগুন পড়বে এখনই। আমাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে টেনে হিঁচড়ে রেস্টুরেন্ট থেকে বের করে নিয়ে আসলো। অনেক আকুতি মিনুতি করেও লাভ হয়নি। নির্মম ভাবে মেরে ওখানেই ফেলে চলে গেছে। এত বেশি মার খাওয়ার ফলে সেন্সলেস হয়ে যায়।

বর্তমান___

সেন্স আসতেই দেখি বেডে আমি। সামনেই মাথায় এক হাত রেখে অনুভব বসে আছে। উনার মুখটাও আমার দেখতে ইচ্ছা করছে না। অনেক সহ্য করেছি আর না।
এই সংসার তো এমনিও থাকার নয় তাই আমিও আর ট্রাই করবো না। মুক্তি চাই আমার।
“আ..আমি বে..ডে ক..কি..ভাবে আ..স..লাম?”
অনুভব আমার দিকে পূর্ণ দৃষ্টি দিয়ে আমার কাছে এগিয়ে এসে বললো,,
” চুপচাপ শুয়ে থাক।”
“এ..ত না..ট..ক ক..রা..র কোনো দর..কার না..ই। অ..নে..ক ক..রে ফেলছেন।”
“স্নিগ্ধু কথা কম বলবি।”
অনেক কষ্টে মুখ দিয়ে স্পষ্ট ভাবে কথা বের করলাম।
“আ..আর কত চুপ থাকবো? কত? প্রথম দিন থেকে আপনার অত্যাচার সহ্য করেই যাচ্ছি আর না। মুক্তি চাই আমার।”
মুক্তির কথা শুনেই অনুভব আমার মুখ চেপে ধরে। রাগে গিজ গিজ করতে করতে দাতে দাত চেপে বলে,,
“মুক্তি! মুক্তি চাই তোর? আমি মরে গেলেও তোকে মুক্তি দেবো না। তাই মুক্তির চিন্তা তো তুই ছেড়েই দে।”
“বাহ বাহ!ওয়াও ভাইয়া তোমাকে তো অস্কার দেওয়া উচিত।”
কারো কন্ঠ শুনে দুজনেই পিছনে তাকাতে দেখি তিশা আপু, আবিদ ভাইয়া, তন্নি, তামিম, মেঘলা সবাই দাঁড়িয়ে। কথাটা তিশা আপুই বলেছে। সবাই রাগে ফুসছে। মেঘলা আমার কাছে এসে আমাকে ধরে বসলো। আর তিশা আপু গিয়ে অনুভবের সামনে দাঁড়ালো।
“তোরা সবাই এখানে?”
“কেন? আশা করো নাই বুঝি? মেয়েটা কে তো মেরেই ফেলতে পারো।”
অনুভব ভ্রু যুগল কিঞ্চিত কুচকে প্রশ্নবিদ্ধ চোখে তাকালো,,
“বুঝতে পারো নি! যেভাবে ক্ষত বিক্ষত করে রেখেছো এর থেকে ভালো ওকে মেরেই ফেলতে। অন্তত কষ্ট কম হতো ওর।”
“তিশু”
“কি তিশু? কি? আজকে ধমকেও থামাতে পারবে না। আরে ভালোবাসো না তো বিয়ে কেন করেছো ওকে? শুধু এভাবে কষ্ট দিয়ে মেরে ফেলার জন্য! সন্দেহ ভালো তবে অতিরিক্ত ভালো না। রেস্টুরেন্টে শুধু স্নিগ্ধু আর আবিদই ছিলো না আমিও ছিলাম। ওয়াশরুম গেছিলাম তাতেই এত কিছু হয়ে গেছে। জানতাম তুমি ওকে ছাড় দেবে না তাই আমরাই আসলাম। আজকে তোমাকে আমার বড় ভাই বলতেও লজ্জা করছে। আরে তুমি কিভাবে পারো একটা মেয়েকে এত টর্চার করতে? একটুও মায়া নেই তোমার মনে? তুমি কি এমন বিষয় নিয়ে ওর ওপর এত রেগে আছো তা আমি জানি না। তবে রেগে থাকার কারন টা ওকে বলতে স্নিগ্ধু ভুলটা শুধরাতো যদি তাও না করতো তখন শাসন করতে কিন্তু না তুমি ওকে ওর ভুল টাও বুঝাবে না অথচ মারতেই থাকবে। তোমার ওকে নিয়ে যখন এতই সমস্যা তবে সেদিন বিয়ে কেন করেছিলে? আরে তোমার থেকে তো নরপশুও ভালো অন্তত একেবারে মেরে ফেলে এভাবে টর্চার করে না। আমার তো তোমাকে ভাই ভাবতেই লজ্জা করছে। আজ স্নিগ্ধুর জায়গায় আমি থাকলে কি হতো তুমি সেই ছেলেকে ছেড়ে দিতে? না কারণ আমি তোমার অনেক আদরের। আজ ওর ভাই নেই বলে তুমি পাড় পেয়ে যাচ্ছো। আসলে কি জানো তুমি ওর যোগ্যই না। ওর ভালোবাসা পাওয়ার যোগ্যই না তুমি। আজকে ওর জায়গায় অন্য কেউ থাকলে তোমাকে জেল পর্যন্ত নিয়ে যেতো।”
তিশা আপুর একটা কথারও উত্তর দেয়নি অনুভব। বেশ অবাক হয়েছি উনার এমন আচরণে। মেঘলা আমাকে জড়িয়ে বসে আছে। তামিম এমন ভাবে রেগে আছে যেনো এখনি অনুভবকে মেরে ফেলবে কিন্তু আবিদ ভাইয়া ওকে ধরে রেখেছে। তন্নি এসে আমার পাশে বসলো। তিশা আপু আমাকে উদ্দেশ্য করে বললো,,
“আর তুই? তুই কি মানুষ? এত অত্যাচার সহ্য করে কেন থাকিস এখানে? এত কিসের ভালোবাসা তোর? যাকে প্রাণ দিয়ে ভালোবাসিস সে তোর ভালোবাসার দাম দিয়েছে? দেয়নি! তাহলে তুই কেন পড়ে পড়ে মার খাস বল? এত মহান হতে কে বলেছে তোকে? চল এই বাড়িতে আর তুই থাকবি না।”
“কো..কোথায় যাবো আপু?”
“ওই বাড়িতে!”
“না আপু। ওখানে গেলে অনেক প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে। আমি পারবো না। আর তাছাড়া মামুনি আর বাবাইও কষ্ট পাবে।”
আপু এবার এক প্রকার চেঁচিয়ে বললো,,
“মামুনি বাবাই..মামুনি বাবা… আর কত? আর কত সহ্য করবি তুই ওদের জন্য? নিজের জিবনে অর্ধেকটা তো ওদের জন্যই বিসর্জন দিয়ে দিচ্ছিস। ৩ বছর আগেও দিচ্ছিলি আজ আবারও দিচ্ছিস। এই ২ টা মানুষের কথা রাখতে আজ তোর এই পরিস্থিতি। অবশ্য তাদের কি দোষ তারা তো আর জানতো না তাদের ছেলে ফরেইন কান্ট্রি গিয়ে এতটা নরপশু হয়ে আসবে।”
“চুপ করো আপু প্লিজ। আর বলো না এভাবে! উনি তোমার ভাই হয়।”
“চুপ তুই একদম চুপ। যে যা আমি তাকে তাই বলছি। যে লোক নিজের বউ কে খালাতো বোন বলে পরিচয় দেয় তার মতো নিকৃষ্ট মানুষ আর কয়জন আছে? যে এত নিষ্ঠুর ভাবে মারতে পারে তাকে আমি মানুষ মনে করি না। তুই চল আমার সাথে।”
“আপু আমি বলছি কি স্নিগ্ধু এখন ওই বাড়ি গেলে ওকে অনেক প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে তার থেকে ভালো ও আমার সাথে আমাদের বাড়িতে যাক।” (মেঘলা)
“কিন্তু তোমার বাড়ির লোক এটা কিভাবে দেখবে?” (তিশা আপু)
“আপু স্নিগ্ধু কে আমাদের বাড়ির সবাই অনেক ভালোবাসে।”
“স্নিগ্ধু তুই ওর সাথে ওর বাড়ি যা।”
“আপু আপু প্লিজ….
” চুপ একদম চুপ। তুই আজ যা আমি তোর মামুনি আর বাবাইকে তাদের ছেলের অপকর্মের কথা গুলো জানায় তারপর তোকে আনবো আজ ওর সাথেই যাবি। এর বেশি একটা কথা বললেও তোর খবর আছে।”
“আপু প্লিজ তুমি মামুনি আর বাবাইকে কিছু বলো না। প্লিজ উনারা খুব কষ্ট পাবে আপু। প্লিজ আপু!”
“চুপ থাক।”
অনেক কষ্টে আপুকে মানালাম যাতে সে কিছু ওই বাড়িতে না বলে। ওদের জোড়াজুড়িতে এই বাড়ি ছেড়ে যেতেও রাজি হলাম। তন্নি আর মেঘলা আমাকে ফ্রেশ করিয়ে চেঞ্জ করিয়ে বাইরে নিয়ে আসলো। অনুভব মুখে গম্ভীর ভাব নিয়ে সোফায় বসে আছে। আজ যা বলার তা তো তিশা আপুই বলে দিয়েছে আমি আর কি বলবো? বেড়িয়ে আসতে যাবো তখনই অনুভব বলে উঠলো,,
“স্নিগ্ধু কোথাও যাবে না তিশু। তোরা যা!”
তিশা আপু তো এমনিতেই রেগে ছিলো এখন আরো রেগে গেছে।তেলে বেগুনে জ্বলে উঠে বললো,,
“তোমার কথা আমরা শুনবো না। আর স্নিগ্ধু শুনতে চাইলে ওকে মেরে ঝুলিয়ে দেবো। তুমি খবরদার আটকানোর চেষ্টা করবে না। মেঘলা চলো!”
অনুভবকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই আমাকে নিয়ে বাইরে চলে আসলো। মেঘলার বাড়ি থেকে গাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছে। মেঘলা বলে দিয়েছিলো। আমাকে নিয়ে মেঘলা তন্নি পিছনে বসলো আর তামিম সামনে বসলো৷ তিশা আপু আমার সাথে যাবো না। আবিদ ভাইয়াও বিদায় নিয়ে চলে গেছে। গাড়িতে মেঘলার কাঁধে মাথা রেখে চুপ করে বসে আছি। জিবনে কি থেকে কি হয়ে গেলো! আমি তো এমন জিবন চাইনি। আমি তো অনুভব কে ভালোবেসেই চেয়েছি তবে এই নিষ্ঠুর অনুভবকে চায়নি। শরীরের ব্যাথায় চোখ বুজে আসছে..চোখ মুখ কুচকে বন্ধ করে নিয়েছি। মেঘলা আমার মাথায় হাত দিয়ে বললো,,
“কষ্ট হচ্ছে? তাই না রে! কষ্ট পাস না। আমি জানি তুই মানসিকভাবে শারীরিক ভাবে ব্যাথিত শুধু একটু সহ্য কর দেখবি সব ঠিক হয়ে যাবে। অনুভব ভাইয়া আজকের পর তোর প্রতি একটু হলেও নরম হবে। তোর অনুপস্থিতি অনুভব ভাইয়াকে কষ্ট দেবে। দেখিস অনুভব ভাইয়া তোকে ভালোবাসবে আর কষ্ট দেবে না।”
কথা গুলো বলতে বলতে মেঘলা প্রায় কেঁদে দিয়েছে। তন্নি অন্য পাশ মুখ ফিরে বসে আছে। হয়তো সেও কাঁদছে। এই ৩ জন আমাকে এত কেন ভালোবাসে জানি না। তবে সবার থেকে বেশি এরাই ভালোবাসে। আমার একেকটা ব্যাথা যেন আমার না ওদের লাগে।
মেঘলার কথা শুনে একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে ভাবতে লাগলাম,,
“আদৌও কি কখনো আর এই সম্পর্ক ঠিক হবে? কখনো কি ভালোবাসবে আমাকে অনুভব? নাকি আজকের এই সাময়িক বিচ্ছেদের ফলে দুজনের পথ আবারও আলাদা হয়ে যাবে!”

চলবে….

(ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন ❤️ আগের পার্টে ভুল করে তামিমের জায়গায় তুষার লিখে ফেলছিলাম তার জন্য দুঃখিত)
হ্যাপি রিডিং😊

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here