?#The_Hate_Story? ?#Madness_Love?,18,19

0
1611

?#The_Hate_Story?
?#Madness_Love?,18,19
#Writer_Sanjana_Shabnam_Fahmida
#Part_18

আধার নিজের চোখ মুছে নিজেকে স্ট্রং করে সামনে এগিয়ে গেলো।

সূর্য তাকিয়ে দেখে আধার ওদের দিকেই আসছে। আধারকে দেখে সূর্যের রাগ সপ্তম আসমানে উঠে যায়।

সূর্যঃ সব ওর জন্য হয়েছে শবনমের এই অবস্থার জন্য একমাত্র ওই দায়ি।?

সূর্য তেড়ে গিয়ে আধারের কলার ধরে ফেলে। আর রেগে বলতে শুরু করে,,,

সূর্যঃ তুই সব করেছিস তাই না। শবনমের এই অবস্থার জন্য একমাত্র তুই দায়ী। ওকে মারার প্লেন করেছিলি তাই না। নিজের প্রতিশোধ নেয়ার জন্য।

বল এটা সত্য কিনা (রেগে আধারের কলার চেপে ধরে)

সূর্যের এমন ব্যবহারে আধার অনেকটা রেগে যায়। আধার রেগে সূর্যের হাত নিজের কলার থেকে সরিয়ে ওকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়।

সূর্য টাল সামলাতে না পেরে ফ্লোরে পরে যায়।

আধারঃ সব দোষ আমার না তোর। তুই আর তোর বাপ মিলে এসব করেছিস। প্রথমে আমাকে মারার চেষ্টা করেছিস আর এখন আমার শবনমকে।

তোর জন্য একমাত্র তোর জন্য আমি আমার শবনমকে দিনের পর দিন কষ্ট দিয়েছি ওকে ভুল বুঝে এসেছি। সব ফসাদের জর তুই আর তোর বাবা। আজকে আমি তোদের শেষই করে দিবো।

আধার সূর্যকে মারার জন্য এগিয়ে আসতেই কেউ ওর গালে জোরে চর বসিয়ে দেয়। আধার গালে হাত দিয়ে সামনে তাকিয়ে দেখে মায়া দাঁড়িয়ে আছে ওর হাতটা কাঁপছে যে হাত দিয়ে ও আধারকে থাপ্পড় মেরেছিলো।

আধার ছলছল চোখে মায়ার দিকে তাকিয়ে বলতে শুরু করে,,,

আধারঃ মামুনি তুমি আমায় মারলে। (অবাক হয়ে)

মায়াঃ খবরদার এই মুখ দিয়ে আমাকে মামুনি ডাকবে না। নিজের সন্তানের মত আদর আর ভালোবাসা দিয়ে বড় করেছিলাম তোমাকে। কখনো শবনম আর তোমার মাঝে পার্থক্য করি নি। আর তুমি,,, তুমি কি করলে আমার মেয়েকেই মারার চেষ্টা করলে,,,

প্রতিশোধ নেয়ার জন্য করেছো তাই না। বিনা অপরাধে ওকে এতো বড় শাস্তি দিলে। (কাঁদতে কাঁদতে)

মায়ার কথায় আধার ভেঙে পরে আর কাঁদতে কাঁদতে বলে,,,

আধারঃ বিশ্বাস করো মামুনি আমি শবনমকে হার্ট করিনি। হ্যাঁ ওকে কষ্ট দিতে চেয়েছিলাম কিন্তু আমার ভালোবাসার কাছে প্রত্যেক বার হেরে গেছে আমার ঘৃনা। আমি কখনো ওকে মারার কথা চিন্তাও করতে পারি না। ওকে ছাড়া বাঁচার কথা ভাবলেও নিশ্বাস বন্ধ হয়ে যায় আমার তাহলে কি ভাবে ওকে মারার চেষ্টা করবো আমি বলো।

মায়াঃ বিশ্বাস আর তোমাকে (তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে) তুমি করেছিলে বিশ্বাস আমাদের উপর?? আচ্ছা মানলাম আমাদের উপর বিশ্বাস ছিলো না। কিন্তু শবনম!! ওকে তো তুমি ভালো বাসতে তাহলে ওকে কিভাবে অবিশ্বাস করলে। কিভাবে পারলে ওকে কষ্ট দিতে।

মায়া আধারের হাত টেনে ওকে ওটির সামনে এনে দাড় করায়।

কাচের থাই দিয়ে শবনমকে দেখা যাচ্ছে। নিস্তেজ হয়ে আছে শবনমের শরীর মুখে অক্সিজেন মাস্ক লাগানো।

শবনমকে এভাবে দেখে আধারের হৃদয়টা ক্ষত বিক্ষত হয়ে যাচ্ছে। মনে হচ্ছে কেউ ছুরি দিয়ে ওর বুকে আঘাত করছে।

মায়াঃ দেখেছো?? নিস্তেজ হয়ে পরে আছে আমার মেয়েটি। কি থেকে কি করে ফেলেছো তুমি দেখো। এখনো বলবে তোমার কোন দোষ নেই??

আধারকে ঝাঁকাতে ঝাঁকাতে বলল কথা গুলো মায়া।

আধার থাইয়ের গ্লাসে হাত রেখে নীরবে চোখের পানি ফেলছে। কি বলবে ও কোন প্রমাণ নেই ওর কাছে কারো বিরুদ্ধে। আর প্রমাণ ছাড়া কেউ ওর কথা বিশ্বাস ও করবে না।

আধারঃ প্লিজ ঠিক হয়ে যাও শবনম। আমার জন্য আমাদের ভালোবাসার জন্য। কথা দিচ্ছি সব কিছু ঠিক করে দিবো সব ভুল ভাঙ্গিয়ে দেবো। Please give me a chance please…..

থাইয়ের গ্লাসে তাকিয়ে আধার কথা গুলো ভাবছিলো। হঠাৎ শবনমের নিশ্বাস ঘন হতে থাকে। বড় বড় নিশ্বাস নিতে থাকে ও আধার শবনমের এই অবস্থা দেখে ভয় পেয়ে যায়

ড. আফজাল আর দুটো নার্স তারাহুরা করে রুমের ভিতরে ঢুকে।

আধারও তাদের পিছনে ভিতরে ঢুকতে নিলে আফজাল ওকে বাধা দেয়।

আফজালঃ আযান তুমি বাইরে অপেক্ষা করো ভিতরে প্রবেশ নিষিদ্ধ।

আধারঃ প্লিজ আঙ্কেল আমাকে আসতে দিন প্লিজ প্লিজ প্লিজ,,,,

আধারের কথা আফজাল ফেলতে পারলেন না তাই ওকে নিয়েই ভিতরে যান তিনি।

আফজাল শবনমকে একটা ইনজেকশন দেন এতে শবনম আগের মতো নরমাল হয়ে যায়।

আধারঃ আঙ্কেল ও চোখ খুলছে না কেন। ও ঠিক আছে তো প্লিজ বলেন না। ( শবনমের হাত ধরে কাঁদতে কাঁদতে)

আফজালঃ ও এখন ঠিক আছে আযান। কিছুক্ষনের মধ্যেই ওর জ্ঞান ফিরবে ডোন্ট ওয়ারি। তুমি এক কাজ করো ওর পাশেই থাকো। আ’ম সিওর ও চোখ খুলে তোমাকে দেখলে এমনেই সুস্থ হয়ে যাবে। এখন ওর তোমাকে সব থেকে বেশী প্রয়োজন she needs your support right now….

আধার মাথা ঝাঁকালো। আফজাল কেবিন থেকে বের হয়ে গেল।

আধার শবনমের হাত ধরে ওর পাশের চেয়ারে বসে পরলো শবনমের মাথায় ব্যান্ডেজ করা হাতে ব্যান্ডেজ করা।

আধার শবনমের কপালে গভীর ভাবে ঠোঁট ছোয়ালো তার পর ওর গালে আর হাতে।

আধারঃ আই প্রমিস মেরি জান এই হাত আর কখনো ছাড়বো না।l love you Jan. I love you every moment of my life.

সূর্য কেবিনের বাইরে দাঁড়িয়ে ওদের দেখছে আর রাগে ফুঁসছে।

সূর্য ভেতরে ঢুকতে নিলে মায়া ওকে বাধা দেয়। সূর্য অবাক চোখে মায়ার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে,,,,

সূর্যঃ আপনি আমাকে বাধা দিচ্ছেন কেন আমি এখনই আযানকে শবনমের কাছ থেকে দূরে সরিয়ে দেবো। ও শবনমকে মারার চেষ্টা করেছে। ( রেগে চিৎকার করে)

মায়াঃ আযান কখনো শবনমের ক্ষতি করতে পারবে না। কারন শবনমের মাঝে ওর রুহ বাস করে। They are incomplete without each other. শবনমকে শুধু ওই ঠিক করতে পারবে।

আধারের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে কথা গুলো বলল মায়া।

সূর্য রাগী দৃষ্টিতে মায়ার দিকে তাকিয়ে ওখান থেকে হনহন করে বেরিয়ে যায়।

সূর্যঃ এই মহিলার মাথায় কি চলছে কে জানে। এতক্ষণ আযানের বিরুদ্ধে ছিল আর এখন শবনমের প্রতি ওর সো কল্ড ভালোবাসা দেখে গলে গেছে।

ও যদি শবনম আর আমার মাঝে আসার চেষ্টা করে তাহলে ওকেও ওর স্বামীর কাছে পাঠিয়ে দিবো। ( মনে মনে)

কিন্তু এখন আমার একজনের সাথে নিজের বোঝাপড়া করতে হবে।

কথা গুলো নিজে নিজে বলে সূর্য হসপিটাল থেকে বের হয়ে যায়।

After 20 Hours,,,,

শবনমের জ্ঞান ফিরছে। আস্তে আস্তে চোখ খুলছে ও মাথা টা অনেক ভারি অনুভব হচ্ছে ওর কাছে। আসে পাশে সব কিছু আবছা আবছা লাগছে।
শবনম চোখ মেলে সাইডে তাকিয়ে দেখে আধার ওর এক হাত নিজের হাতের ভাজে নিয়ে আছে। ওর হাত আধারের ঠোঁট ছুইছে।আধার চোখ বন্ধ করে আছে।

অনেক নিষ্পাপ লাগছে আধারকে এই মুহুর্তে। ছোট ছোট চুল গুলো কপালে উড়ে আসছে বার বার।

অপলক ভাবে আধারকে দেখছে শবনম। হঠাৎ আধারের ব্যবহারের কথা মনে পরতেই চোখের কোনে পানি চলে আসে ওর।

আধারের হাত থেকে নিজের হাত ছাড়ানোর শক্তি টুকুও নেই ওর কাছে। শবনম অন্য পাশ ফিরে নিজের চোখের পানি ফেলতে থাকে।

শবনমের হাত নরে উঠায় আধার হন্তদন্ত করে চোখ খুলে। আধার চোখ খুলতেই দেখে শবনম অপর পাশ ফিরে কান্না করছে।

শবনমকে কান্না করতে দেখে আধার ভয় পেয়ে যায়। আধার হন্তদন্ত করে উঠে শবনমের গালে হাত রেখে বলতে শুরু করল,,,

আধারঃ শবনম তুমি ঠিক আছো জান। কান্না করছো কেন ব্যাথা করছে। কোথায় ব্যাথা করছে বলো আমাকে (অস্থির হয়ে শবনমের হাতে আর মাথায় হাত দিয়ে দেখছে)

শবনম এখনো নীরবে কান্না করছে,,,

শবনম তুমি প্লিজ কান্না করো না আমি এখনই আঙ্কেলকে ডেকে আনছি। আমি জানি অনেক কষ্ট হচ্ছে কিন্তু দেখো সব ঠিক হয়ে যাবে আ আমি উনাকে ড ডেকে আনছি ওয়েইট।

>> আমাকে ডাকতে হবে না আমি এসে পরেছি আযান। পিছন থেকে আফজাল বলে উঠলেন।

আফজালঃ How was you feeling Shabnam. কেমন লাগছে এখন। ( চেকাপ করতে করতে)

শবনম কিছু বলল না শুধু হালকা হাসলো। মায়া শবনমের পাশে বসে ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। আর আধার একটু দূরে দাঁড়িয়ে শবনমকে দেখছে। ওর সামনে যাওয়ার সাহস পাচ্ছে না ও। অনেক বেশী বাজে ব্যবহার করে ফেলেছিলো সেদিন। কথাটা মনে পরতেই আধারের বুক কেঁপে উঠে।

এভাবেই কেটে যায় এক মাস। শবনম এখন অনেকটা সুস্থ এই এক মাস আধার ছায়ার মতো শবনমের পাশে থেকে ওর খেয়াল রেখেছে।কিন্তু শবনম আধারের সাথে এখনো একটা কথা ও বলে নি। আধার নিজে নিজেই ওর সাথে বকবক করে আর ওকে হাসানোর চেষ্টা করে। কিন্তু শবনম মূর্তির মতো শুধু শোনে কোন উত্তর দেয় না।

শবনমের এমন ব্যবহারে আধারের অনেক কষ্ট হয় কিন্তু ও তা শবনমের সামনে প্রকাশ করে না। সব কষ্ট আর ব্যাথা নিজের হাসির পিছনে লুকিয়ে রাখে।

শবনম নিজের ব্যাগ গুছাচ্ছে আজ ওকে হসপিটাল থেকে ডিসচার্জ দিয়েছে ডক্টর আফজাল।

আধার খাবার নিয়ে ভিতরে ঢুকে দেখে শবনম ওর ব্যাগ গুছাচ্ছে। আধার খাবারটা টেবিলে রেখে শবনমের কাছে গিয়ে ওর হাত থেকে ব্যাগ নিয়ে বলল,,

আধারঃ মেরি জান তুমি এতো কষ্ট করে কাজ করছো কেন আমি আছি না দাও আমি সব গুছিয়ে দিচ্ছি।

শবনম ছো মেরে আধারের হাত থেকে ব্যাগ নিয়ে ওর দিকে না তাকিয়ে বলল,,,

শবনমঃ অনেক খেয়াল রেখেছেন আর না। আমি নিজের খেয়াল নিজে রাখতে পারি আর নিজের কাজ ও নিজে করতে পারি I don’t need your help.

আধারঃ ওরে আমার জান টা রেগে আছে ডোন্ট ওয়ারি এই রাগ অভিমান বেশি দিন থাকবে না ( শবনমের গাল টেনে দিয়ে)

শবনম রাগী দৃষ্টিতে আধারের দিকে তাকাতেই আধার ওকে কোমড় জড়িয়ে নিজের কাছে এনে বলল,,,

আধারঃ তোমার রাগ, অভিমান, ভালোবাসা, ঘৃনা সব কিছুতেই শুধু আমার অধিকার। তাই রাগ করো আর যাই করো নিজের থেকে আমাকে আলাদা করতে পারবে না। তাই শুধু শুধু ব্যার্থ চেষ্টা করো না। ( বলে শবনমের কপালে কিস করলো)

অনেক ভূল করেছি জানি তার জন্য যা শাস্তি দিবে মাথা পেতে নিবো কিন্তু তার শাস্তি যদি তোমাকে হারানো হয় তাহলে মানি না আমি এমন কোন শাস্তি।

To be continued…..

?#The_Hate_Story?
?#Madness_Love?
#Writer_Sanjana_Shabnam_Fahmida
#Part_19

আধার শবনমকে জড়িয়ে ধরে আছে। হঠাৎ শবনম আধারকে ধাক্কা দিয়ে নিজের থেকে দূরে সরিয়ে দিলো।

আধার টাল সামলাতে না পেরে কিছু টা দুরে সরে যায় আর অবাক চোখে শবনমের দিকে তাকায়।

শবনমঃ চাই না আপনাকে আমি। আর না চাই আপনার সো কল্ড ভালোবাসা। কেউ হন না আপনি আমার কেউ না। আমার তো মনে হয় আপনি কখনো আমাকে ভালোই বাসেন নি। যদি বাসতেন তাহলে বিশ্বাস করতেন। I just hate I only hate you Mr. Aadhar Rejwan. ( রেগে চিল্লিয়ে কথা গুলো বলছে শবনম)

আধার শুধু ছলছল চোখে ওর দিকে তাকিয়ে আছে।

আধারকে চুপ থাকতে দেখে শবনম আবার বলতে শুরু করলো।

শবনমঃ এখন চুপ করে আছেন কেন। আমি তো এটা বুঝতে পারছি না যে হঠাৎ আপনার মধ্যে এই পরিবর্তন আসলো কোথা থেকে। আপনি তো আমাকে ঘৃণা করতেন প্রতিশোধ নিতে চাইছিলেন। তাহলে এমন কি হলো যে আপনার রং বদলিয়ে গেলো। আপনার মনে আমার জন্য আগের মতো ভালবাসা জাগ্রত হয়ে গেল।

এই এক মাস আমি শুধু এই প্রশ্নের উত্তর ই খুঁজেছি। আর জানেন উত্তরে কি পেয়েছি (তাচ্ছিল্য হেসে)

আধার জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে ওর দিকে তাকালো,,,

শবনমঃ উত্তরে দুটি জবাব পেয়েছি,, প্লান আর দ্বিতীয় হলো সিমপেথি।

এক হলে এই সব আপনার সাজানো নাটক আমাকে নতুন করে কষ্ট দেওয়ার, আমার ফিলিংস এর সাথে খেলা করার।

অথবা,, এটা আপনার সহানুভূতি, প্রায়শ্চিত্ত। হয়তো নিজের ভুল ধরতে পেরে আমাকে সহানুভূতি দেখাতে এসব করছেন। নিজের পাপের প্রায়শ্চিত্ত করার জন্য আমার এতো খেয়াল রাখছেন।

আপনি হয়তো ভাবছেন আপনার জন্য আমার এই অবস্থা হয়েছে তাই আমাকে সিমপেথি দেখাতে চলে এসেছেন।

বাট নো মি. রেজওয়ান এটা আপনার ভুল ধারনা। আমার সাথে যা হয়েছে তা আমার ভুলের শাস্তি হ্যাঁ আপনাকে ভালোবেসে যে ভুল করেছিলাম তার ফল।

আমার আপনার সহানুভূতি আর সিমপেথির প্রয়োজন নেই। আমি যদি মরেও যাই তবুও আপনার সাহায্যের বাড়ানো হাত ধরবো না। আফসোস আমি বেঁচে গেছি,, যদি মরে যেতাম তাহলে আপনার এই নাটক দেখতে হতো না।

এতোক্ষণ চুপ করে থাকলেও শেষের কথাটি শুনে আধারের মাথায় রক্ত উঠে যায়। ও রেগে শবনমকে দেয়ালে চেপে ধরে আর বলতে শুরু করে,,,

আধারঃ Don’t you dare… আরেক বার এ ধরনের কথা মুখে আনলে আমার থেকে খারাপ কেউ হবে না। Do you get that… ( রেগে চিল্লিয়ে পাশের দেয়ালে জোরে বারি মারলো)

শবনম ভয় পেয়ে নিজের চোখ বন্ধ করে ফেলে।

আধার আবার বলতে শুরু করলো,,,

আধারঃ আরেকটা কথা,,, আমাকে বকা দিলে দাও মারলে মারো আমি কিচ্ছু বলবো না। কিন্তু আমার ভালোবাসায় আঙ্গুল তুলবে না শবনম। তোমাকে কতটুকু ভালোবাসি সেটা শুধু আমি জানি। আর আমার ভালোবাসাকে সহানুভূতি আর সিমপেথির নাম দেওয়ার চেষ্টাও করবে না।

ভালোবাসি তোমায় তাই তোমার দেওয়া সব কষ্ট সহ্য করতে পারি কিন্তু আমার ভালোবাসার উপর কোন অপবাদ সহ্য করবো না।

You know that… my love is for you isn’t only love!! This is my #Madness_Love .

জানি ভুল করেছি আর তার শাস্তিও পাচ্ছি কিন্তু তুমি কি একবারও আমার দিকটা বুঝার চেষ্টা করেছো।

আমি কিভাবে বেঁচে ফিরে এসেছি,,, এই দুই বছর কোন অবস্থায় ছিলাম। কিচ্ছু জানো না তুমি।

( আমি এখন তোমাকে কিছু বলবো না কারন এখনো তুমি সম্পুর্ন সুস্থ্য হও নি। সবার মুখোশ খুলবো কিন্তু এখন না। সঠিক সময়ের অপেক্ষায় আছি আমি। মনে মনে )

শবনমঃ জানতে চাই না কিছু আমি। আমি শুধু মুক্তি চাই তোমার থেকে তোমার প্রতি টা স্মৃতি থেকে। তোমার মিথ্যা ভালোবাসা নামক ঘৃণা থেকে। ( চিল্লিয়ে কান্না করতে করতে)

শবনমের কথায় আধার আরো রেগে যায়। ওর চোখ দুটো অসম্ভব লাল হয়ে গেছে। নিজের রাগ কন্ট্রোল করতে না পেরে আধার শবনমকে নিজের আরো কাছে টেনে ওর ঠোঁটে কিস করে দেয়। পাগলের মতো কিস করছে আধার শবনমকে। নিজের যত রাগ আছে সব ও শবনমের উপর ঢালছে।

শবনম আধারকে দু হাত দিয়ে ধাক্কা দেওয়ার চেষ্টা করছে কিন্তু আধার এক ইঞ্চি ও নরছে না। আরো শবনমের হাত নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে নেয়।

আধার যেন এক ঘোরের মাঝে হারিয়ে গেছে। শবনম রেগে আধারের ঠোঁটে কামড় বসিয়ে দেয় আর আধার সাথে সাথে ওর থেকে দূরে সরিয়ে দাঁড়ায়। নিজের ঠোঁটে আঙ্গুল দিয়ে আধার চেক করছে যে কোথাও কেটে গেছে কি না।

আধার ভ্রু কুঁচকে শবনমের দিকে তাকালো।শবনম জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিচ্ছে আর ওর দিকে রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।

আধার শবনমের কাছে এসে ওকে জিজ্ঞেস করলো।

আধারঃ এটা কি করলে তুমি জান আমি ব্যথা পেলাম তো। ( রাগার এক্টিং করে)

শবনমঃ ব্যাথা পাওয়ার জন্যই দিয়েছি। ?

আধার শবনমকে ওর কাছে টেনে আনে আর শবনম দূরে যাওয়ার জন্য ছুটাছুটি করছে।

আধারঃ এমন করে লাভ নেই তুমি আমার কাছ থেকে কখনো ছুটতে পারবে না মেরি জান।(নেশা ভরা কন্ঠে)

আর আমার ভালোবাসাকে মিথ্যা বলে তার অপমান করবে না। এই ভালোবাসার কারনেই তোমার আযান আধারের রুপে তোমার কাছে বেঁচে ফিরতে পেরেছে।

So please don’t insult my Love. আমাদের ভালোবাসা আমার সবচেয়ে বড় স্ট্রেন্থ। এটা আমার কাছে ছিলো বলেই এতো বাধা পেরিয়ে তোমার কাছে আসতে পেরেছি।

আধারের কথার অর্থ বুঝতে পারছে না শবনম।

শবনমঃ মানে??

আধারঃ কিছু না (কথা ঘুরিয়ে) তুমি এখানে ওয়েইট করো আমি ডিসচার্জ পেপার গুলো চেক করে আসি তারপর একসাথে বাড়ি যাবো। (বলে চলে যায়।)

শবনমঃ আমার কি পা নেই আমি একাই চলে যেতে পারবো হ্হ ??

কিছু দূর গিয়ে আধার আবার পিছনে ফিরে এসে শবনমের সামনে দাঁড়ায়।

শবনম কিছুটা ঘাবরে যায়,,,

শবনমঃ আল্লাহ ডেভিল টা শুনে ফেলল নাকি?( মনে মনে)

আধার শবনমের কপালে কিস করে বলল।

আধারঃ ভুলেও একা বের হওয়ার কথা ভাববে না নাহলে আমার থেকে খারাপ কেউ হবে না। ?

শবনমঃ তোর থেকে খারাপ এ দুনিয়ায় দ্বিতীয় কেউ নেইও হুহ ?(মনে মনে)

আধারঃ এটা আমি জানি আমার থেকে খারাপ কেউ নেই তার পরেও জানিয়ে রাখলাম। তুমি কোন ভুল করলে আমি তোমাকে কি শাস্তি দেই নিশ্চয়ই তোমার মনে আছে। ( শবনমের কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিস করে বলল)

শবনম ভয়ে কয়েকটা ঢোক গিললো।??

আধারঃ আসি। বলে আধার বেড়িয়ে গেল।

কিছুক্ষণ পর,,,

আধার শবনমের কেবিনে ঢুকে এসে দেখে ও নেই ওর ব্যাগও নেই রুমে । শবনমকে না পেয়ে আধার অনেক বেশি রেগে যায়।

আধারঃ আজকে আমি তোমাকে কি করবো আমি নিজেও জানি না শবনম।?

আধার রেগে বেড়িয়ে যায়। আধার বাইরে এসে দেখে সূর্য শবনমের হাত ধরে ওকে গাড়িতে বসাচ্ছে। সূর্যকে শবনমের সাথে দেখে আধার আরো বেশি রেগে যায়। আধার ওই দিকে এগিয়ে যেতেই গাড়ি নিয়ে ওরা বেড়িয়ে যায়।

আধার এতো টা রেগে আছে যে ওর চোখ দিয়ে মনে হচ্ছে আগুন ঝরছে।

আধারঃ এবার আমি তোকে জিততে দিবো না সূর্য। সব কিছুর জন্য এক মাত্র তুই দায়ী। আমার আর শবনমের মাঝের দূরত্বের এক মাত্র কারন তুই। দিন গোণা শুরু করে দে তোর বরবাদীর দিন ঘনিয়ে আসছে।

আধার গাড়িতে বসে কাউকে কল করে,,,

আধারঃ উনার কি অবস্থা এখন ??

>> বস ডাক্তার ট্রিটমেন্ট করছে সময় লাগবে।

আধারঃ তারাতারি সুস্থ করে তোলো উনাকে। এতো সহজ মৃত্যু আল্লাহ উনার ভাগ্যে লিখে নি ?

>> Yes boss.

আধারঃ আরেকটা কথা তোকে এক জনের খোজ নিতে বলেছিলাম।

>> বস এখনো খুঁজছি পেলে আপনাকে ইনফর্ম করে দিবো।

আধারঃ হুমম। কল কেটে আধার ড্রাইভিং শুরু করল।

বাড়িতে এসে মায়ার সাথে কতক্ষণ কথা বলে নিজের রুমে চলে আসে শবনম। কিছুক্ষন রুমটাতে ভালো মতো চোখ বুলালো ও। নাহ যেমন রেখে গিয়েছিলো তেমনি আছে। এক মাসে কিচ্ছু বদলায় নি।

ধপ করে বিছানায় উপুড় হয়ে শুয়ে পরলো শবনম। হাসপাতালে থাকতে থাকতে দম বন্ধ হয়ে আসছিলো ওর। নিজের বিছানা ছাড়া কোথাও ভালো ঘুম হয় না ওর।

রিং টোনের আওয়াজে মাথা তুলে দেখে শবনম। আধার কল করছে।

শবনমঃ ধরবো না ফোন। আসছে আমাকে শাস্তি দিতে। এবার শাস্তি দিয়ে দেখান। ??

ফোন সাইলেন্ট করে বালিশের নিচে রেখে দিলো শবনম তারপর উঠে দরজা ভালো মতো লক করে আবার শুয়ে পরে।

রাতে,,,,

কিছু কাজের কারনে শবনমের সাথে দিনে দেখা করতে পারে নি আধার। কিন্তু বারবার ফোন দিয়েছে শবনম এক বারো রিসিভ করে নি।

রাত 11 টা বাজে। শবনমের বাড়ির সামনে গাড়ির সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে আধার। ভাবছে ভিতরে যাবে কি না।

আধারঃ এ সময়ে বাড়িতে যাওয়া ঠিক হবে না। মামুনি এমনেই আমার উপর রেগে আছেন। কিন্তু শবনমের সাথে দেখা না করলে আমার অস্থিরতা কমবে না। ও অনেক জিদ্দি ওকে খাবার আর ঔষধ খাওয়ানো যুদ্ধ জয় করার সমান। মামুনি ওকে খাওয়াতে পেরেছে কি না। ম্যাডাম ফোনও ধরছে না।

কি করি কিভাবে ভিতরে যাই,,,,

হঠাৎ আধারের নজর শবনমের বারান্দার দিকে যায়।

আধারঃ আমার সামনে রাস্তা আর আমি এখানে ওখানে খুঁজছি। আগে তো এখান দিয়েই রাতে ঘুরতে বেরতাম।

আধার বারান্দার নিচের বরবার পাইপটাকে ভালো ভাবে স্ক্যান করে দেখে।

আধারঃ এটা দিয়ে নিচে নেমেছি কিন্তু কখনো উপরে উঠি নি।?

ভয়ের কি আছে আধার ইউ কেন ডু দিস।?

আধার বুকে ফু দিয়ে আস্তে আস্তে দোতলায় শবনমের রুমের বারান্দায় উঠে যায়। বারান্দায় দাঁড়িয়ে নিচে তাকিয়ে দেখে কতটুকু উঁচু,,,

আধারঃ আল্লাহ কি উঁচু পরে গেলে আমাকে খুঁজেও পাওয়া যেতো না ?

এখন গিয়ে দেখি আমার মিসেস কি করছে,,,

আধার শবনমের রুমে এসে দেখে ও বেঘোরে ঘুমাচ্ছে। অন্ধকার রুমে দেয়ালে লাগানো ছোট ছোট তারা গুলো জ্বল জ্বল করছে। এর আলো শবনমের মুখে লাগছে। ঘুমন্ত অবস্থায় ওকে আরো মায়াবী আর নিষ্পাপ লাগছে।

আধার আস্তে আস্তে শবনমের পাশে গিয়ে বসে পরলো।

To be continued…..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here