?#The_Hate_Story ? ?#Madness_Love ? #Part_1

0
2357

?#The_Hate_Story ?
?#Madness_Love ?
#Part_1
#Writer_Sanjana_Shabnam_Fahmida

In Chowdhury Mansion,,,,

মিসেস মায়াঃ তারাতারি সব ডেকোরেশন শেষ করো বেশি সময় কিন্তু নেই। আর কতবার বলেছি গোলাপ ফুল গুলো সরাও আযানের গোপাল ফুলে এলার্জি আছে। (অনেকটা রেগে কাজের লোককে বললেন)

(নায়িকার মা। অনেক স্ট্রিক্ট কোন কাজ ধরলে যে পর্যন্ত তা complete না হয় শান্তি তে বসেন না। একটু রাগী কিন্তু অনেক ভালো মনের মানুষ)

কাজের লোকঃ জি বড় মেডাম এখনি সরাচ্ছি।(ভয়ে ভয়ে ফুল গুলো তারাতারি সরিয়ে ফেলল)

মিসেস মায়াঃ কামিনী কোথায় তুমি??? কামিনী (কাজের মেয়ে)

কামিনী দৌড়ে আসলো,,,,

কামিনীঃ জি মেডাম ডেকেছেন। হাপাতে হাপাতে।

মায়াঃ শবনম কোথায়??

কামিনীঃ ছোট মেডাম তো ঘুমাচ্ছে। অনেক বার ডাকছি উঠে না উল্টা বালিশ ছুরে মারে।??
আপনি তো জানেনই ছোট মেডাম 10 টার আগে ঘুম থেকে উঠে না। হাজার ডাকলেও।

মিসেস মায়াঃ তাই বলে আজকেও 10 টা অব্দি ঘুমাবে এ মেয়ে। আজ ওর engagement আর ও লাট সাহেবের মতো ঘুমাচ্ছে। ওর কোন খেয়ালী নেই।দারা আমি গিয়ে ওর ঘুম তারাচ্ছি। অনেকটা রেগে শবনমের রুমের দিকে গেলেন।

(শবনম গল্পের নায়িকা। গায়ের রং উজ্জ্বল শ্যামবর্ণ হাইট 5.1″ , চুল গুলো লম্বা আর হালকা কোঁকড়ানো। ঠোঁটের উপরে হালকা ছোট তিল। রূপবতী না বলে মায়াবতী বললেই শ্রেয়। বাবা মার একমাত্র মেয়ে। একটু দুষ্টু আর অনেক মিষ্টি।)

এইদিকে,,,,

একটা বড় টেডি বিয়ার জড়িয়ে ঘুমিয়ে আছে শবনম। ছোট ছোট চুল গুলো উড়ে কপালে এসে পরেছে। ঠোঁটে মুচকি হাসি।

একটা বিশাল রুম। রুমের সব দেয়াল সাদা রঙের পুরো রুমে সাদা পর্দা বাতাসে উড়ছে। শবনম রুমটি তে প্রবেশ করে আযান নাম ধরে ডাকছে।

শবনমঃ আযান কোথায় তুমি। দেখো অনেক অপেক্ষা করিয়েছো আর না।

আশেপাশে শুধু আযানের হাসির আওয়াজ পাচ্ছে ও। শবনম চারো দিকে ঘুরে ঘুরে আযানকে খুঁজছে। কিন্তু পাচ্ছে না। শবনম প্রায় কেঁদে দিবে এমন অবস্থা। হঠাৎ একটু এগিয়ে গিয়ে দেখে আযান বেলকুনিতে দাড়িয়ে ওর দিকেই তাকিয়ে আছে। ঠোঁটে সেই মন ভুলানো হাসি।

শবনম দৌড়ে আযানের সামনে গিয়ে দাঁড়ায় আর হাঁপাতে হাঁপাতে বলে,,,,

শবনমঃ অনেক ভালো লাগে তাই না। আমাকে কষ্ট দিতে আমার কাছ থেকে দূরে যেতে। এবার আর কোথাও যেতে দিবো না। কোথাও হারাতে দিবো না।

কথা গুলো বলে শবনম আযানের দিকে এগুতেই আশেপাশে ধোয়া দিয়ে ভরে যায়। শবনম হাত দিয়ে ধোয়া গুলো সরিয়ে সামনে তাকিয়ে দেখে আযান নেই। শবনম পাগলের মতো এদিক ওদিক আযানকে খুঁজতে লাগলো ওর নাম ধরে ডাকতে শুরু করলো কিন্তু আযানকে পেলো না।

আযান বলে চিৎকার দিয়ে লাফ দিয়ে উঠে পরে শবনম। পুরো শরীর ঘেমে একাকার। থর থর করে কাঁপছে ও। এমন লাগছে আযানকে কেউ ওর থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছে। বুকে হাত রেখে বড় বড় নিঃশ্বাস নিচ্ছে ও।

কি হয়েছে মামনি।মিসেস মায়ার কন্ঠ শুনে দরজার দিকে তাকালো ও।

মিসেস মায়া এসে শবনমের পাশে বসলেন। ওর মাথায় হাত বুলিয়ে বলতে লাগলেন।

মায়াঃ কি হয়েছে শবনম এমন ঘামছো কেন তুমি।

এতোক্ষনে শবনম বুঝে গেছে যে ও স্বপ্ন দেখছিলো। তাই নিজেকে স্বাভাবিক করে বলল,,,

শবনমঃ কিছু না আম্মু just a bad dream.

মায়াঃ ওহ আচ্ছা উঠে পরেছো যখন ফ্রেশ হয়ে নিচে আসো। সবাই অপেক্ষা করছি। আকদের অনেক কাজ বাকি আছে।

মাথা ঝাকালো শবনম।

মায়া নিচে চলে গেলেন। কামিনী শবনমের একটু কাছে এসে দাঁড়িয়ে বলল,,,

কামিনীঃ আপামনি স্বপ্নেও কি আযান ভাইয়াকে দেখছিলেন নাকি।??

শবনম লজ্জা পেয়ে কামিনীর দিকে বালিশ ছুরে মারলো আর কামিনী হাসতে হাসতে দৌড়ে বেড়িয়ে গেলো।

শবনম কিছুক্ষণ নিজে নিজে হেসে জামা কাপড় নিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেল।

(এবার মেইন কাহিনী টা বলি। আযান হলো শবনমের ছোট বেলার বন্ধু। ছোট বেলা থেকেই ওরা একে অপরকে অনেক ভালোবাসে। আজ ওদের engagement. আযান 5 বছর আগে লন্ডন গিয়েছে লেখাপড়া কমপ্লিট করতে। আযানের বাবা মা ছোট বেলায় road accident এ মারা যায়। ও ওর মামার কাছে বড় হয়েছে। আজ আযান ফিরে আসবে আর আজই ওদের engagement হবে।)

রেডি হয়ে নিচে নেমে আসে শবনম। মি.আসিফ (শবনমের বাবা) বসে নিউজ পেপার পরছিলেন। শবনম এসে ওনার পাসে বসলো।

মেয়ে পাশে বসতেই নিউজ পেপার টা রেখে শবনমের মাথায় হাত বুলিয়ে আদর করে বলেন তিনি,,,

আসিফঃ ঘুম হলো আমার মা টার। আদুরে গলায়।

শবনমঃহুম বাবাকে জড়িয়ে।

মিসেস মায়া খাবার গুলো টেবিলে রাখতে রাখতে বলেন,,,

মায়াঃ 10 টা অব্দি ঘুমালে কার আবার ঘুম ভালো না হয়।

শবনমঃ আব্বু আম্মুকে বলো আমাকে বকলে বকতে কিন্তু আমার সুইট ঘুমের ব্যপারে কিছু না বলতে। নাক ফুলিয়ে।

মেয়ের কান্ডে হাল্কা হেসে দিলো আসিফ।

আসিফঃমায়া আমার মামনিকে কিছু বলো না ও এখনো অনেক ছোট বুঝলা।

মায়াঃ আজকে আকদ এক সপ্তাহ পরে বিয়ে। ও বড় হবে কখন।

আসিফঃ সময় হলে ঠিকই বড় হবে দেখে নিও। একদিন আমার মেয়ে আমার নাম উজ্জ্বল করবে তাইনা মা।

শবনমঃ ইয়েস আব্বু।

মায়াঃ হ্যাঁ ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে নাম উজ্জ্বল করবে। এখন তারাতারি খেতে আসেন অনেক কাজ বাকি আছে।

আসিফঃ আচ্ছা মায়া আযানকে এয়ারপোর্ট থেকে আনতে কে যাবে।

মায়াঃ আযান কাওকে আসতে বারন করেছে। বলছে শুধু গাড়ি পাঠিয়ে দিতে।

আসিফঃ আচ্ছা রহিমকে পাঠিয়ে দিও।( ড্রাইভার)

সন্ধ্যায়,,,,,,

পার্লারের মেয়েরা আসে শবনম কে সাজাতে। শবনম আজ আযানের পছন্দ মতো নিজেকে সাজাবে।

এই দিকে,,,,

লন্ডনের ফ্লাইট বাংলাদেশের এয়ারপোর্টে ল্যান্ড করেছে। এয়ারপোর্ট থেকে বের হয়ে আযান একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল।

(আযান দেখতে পুরো হিরোর মতো। গায়ের রং ফর্সা হাইট 6.1″ চুল গুলো একটু বড় আর সিল্কি। এই চুল নিয়ে শবনম ওকে অনেক রাগায়। পরনে হোয়াট শার্ট ব্লাক জ্যাকেট ব্লাক প্যান্ট ব্লাক সানগ্লাস। আর ঠোঁটে মন ভুলানো মুচকি হাসি।)

আযান খেয়াল করলো আশেপাশে সব মেয়েরা ওর দিকে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে আছে। আযান একটা কিলার স্মাইল দিয়ে হাতের ব্যাগটা কাধে ঝুলিয়ে হাটতে লাগলো।

আযান মনে মনে ভাবছে,,,

আযানঃ তোমরা যতই আমার দিকে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে থাকো না কেন এই আযান নিজেকে শবনমের নামে অনেক আগেই করে দিয়েছে। আযান শুধু শবনমের আর শবনম শুধু আযানের। I’m coming মেরি জান।

আযানের সামনে একটা গাড়ি এসে থামলো। গাড়ি থেকে রহিম চাচা বেড়িয়ে আসলেন। আযান গিয়ে ওনাকে জড়িয়ে ধরলো,,,

আযানঃ কেমন আছেন চাচা।

রহিম চাচার পুরো শরীর কাঁপছে। বারবার এক হাত দিয়ে নিজের কপালের ঘাম মুছছেন।

কাঁপাকাপা গলায় বললেন,,, এই তো ভালো তুমি কেমন আছো আযান বাবা।

আযানঃ এতো দিন কেমন ছিলাম জানি না কিন্তু এখন আমার জানকে দেখলে ঠিক হয়ে যাবো। চলেন তারাতারি বাসায় যাই শবনম আমার জন্য অপেক্ষা করছে।

আযান গিয়ে গাড়িতে বসলো কিন্তু রহিম চাচা ঠাই দাঁড়িয়ে আছে,,,

আযানঃ কি হলো চলেন

রহিমঃ আসলে কি বাবা আমার একটা সমস্যা আছে।

আযানঃ কি সমস্যা বলেন

রহিমঃ আমার বৌটা অনেক অসুস্থ ওকে ডাক্তার কাছে নিতে হবে। তুমি কি আমাকে আজকের জন্য ছুটি দিবা। কাঁপাকাপা গলায় বললেন।

আযান গাড়ি থেকে বেড়িয়ে,,, তো এই ব্যপার এই নিন (পকেট থেকে টাকা বের করে) আপনি যান বাকি পথ আমি একাই যেতে পারবো।

বলে গাড়িতে বসে বেড়িয়ে পরে আযান। আযানের যেন তর সইছে না এতো বছরের অপেক্ষার আজ সমাপ্তি ঘটবে।

রহিম চাচা ঠাই দাঁড়িয়ে আছেন,,, ওনার চোখে পানি চিকচিক করছে,,

রহিমঃ আমাকে ক্ষমা করে দিও আযান বাবা। আমি অসহায়।

আযান নিজের পকেট থেকে শবনমের একটা ছবি বের করে সামনে রাখলো আর গান অন করলো,,,

Yeh raate Ab nehi dhadak ti…

Dil bhi sasei nehi leti….

Aabh to aa Jao mere soniya…

Jo baatein reh gayi aadhuri…

Mere labo pe zaroori aake….

Soon Jao mere soniyaa..

Tere bin nahi lage jiya…

Tere bin aabhto aaja piya…

Tere bin nahi lage jiyaaa…

এইদিকে,,,

শবনম নীল রঙের লেহেঙ্গা আযানের দেওয়া নীল চুরি স্টোনের জুয়েলারী। হাল্কা মেক আপ খোলা চুল ঠিক যেমন আযানের পছন্দ সেভাবে রেডি হয়েছে।

শবনম আযানের একটা ছবি হাতে নিয়ে বলতে শুরু করে,,,

শবনমঃ আর কতক্ষণ আযান। come back soon. অনেক অপেক্ষা করেছি আর পারছি না। আজ কেমন জানি ফিল হচ্ছে যানো। কেমন একটা নেগেটিভ ফিলিং আসছে। তুমি বাস তারাতারি চলে আসো।

শবনমও একই গান গাওয়া শুরু করলো,,,

Tere bin nahi lage jiya

Tere bin aabhto aaja piya.

আযান ড্রাইভিং করছে অনেক স্পীডে। ওর রাজকুমারীর কাছে তারাতারি পৌছাতে চাচ্ছে। হঠাৎ গাড়ি আন কন্ট্রোল হয়ে গেল। আযান অনেক চেষ্টা করছে কিন্তু গাড়ি কন্ট্রোল করতে পারছে না। ও বুঝে গেছে যে গাড়ির ব্রেক ফেল। তারপরেও আযান হাল ছাড়ে নি। ওকে বাঁচতে হবে ওর শবনমের জন্য ওকে বাঁচাতে হবে। আযানের মাথায় একটাই চিন্তা শবনম ওর জন্য তৈরী হয়ে ওর অপেক্ষা করছে।

এই দিকে হঠাৎ শবনমের বুকটা মোচড় দিয়ে উঠে। বাইরে প্রচুর বাতাস শুরু হয়। ওর রুমের পর্দা গুলো জোরে জোরে উড়তে থাকে।শবনম দৌড়ে পর্দা লাগাতে গিয়ে পরে যায়। ওর হাতের চুরি গুলো টেবিলের কোনায় লেগে ভেঙ্গে যায়। শবনম টলটল চোখে নিজের হাতের দিকে তাকিয়ে থাকে কতক্ষণ তার পর আস্তে করে একটা নাম নেয়,,,, আযাননন।

To be continued……

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here