Drama_Queen_VS_Mr_Handsome,Part_11,12

0
1894

Drama_Queen_VS_Mr_Handsome,Part_11,12
Writer_Neela
Part_11
.
.
মিসেস শাহানা: এটেনশন এটেনশন এটেনশন!!! লেডিস এন্ড জেন্টলম্যান।

মিসেস শাহানার কথায় সবাই এসে গোল টেবিলটার পাশে গোল হয়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে দাড়ালো।

মিসেস শাহানা: আপনারা সবাই জানেন আজ আমার ছেলে মেঘের জন্মদিন। সো মেঘ কাম হেয়ার।

মেঘ হেসে দিয়ে সোজা হাঁটা শুরু করলো হঠাৎ ই মিহুর দিকে চোখ রাঙিয়ে তাকালো মিহু ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে চুল উড়িয়ে উল্টো দিকে ঘুরে গেলো আর মিহুর চুল গুলো বারি খেলো মেঘের চোখে মুখে। মেঘ মিহুর চুলের বারি পেয়ে মেঘ চোখ কুঁচকে বন্ধ করে ফেললো তারপর রাগ দেখিয়ে হেটে মিসেস শাহানার সাথে দাঁড়ালো।
।।

নীল আর নীলা একসাথে হাটছিলো নীলা আশেপাশে তাকিয়ে হাঁটছে নীল একটু একটু করে আড়চোখে তাকাচ্ছে নীলার দিকে। হঠাৎ ই নীলাকে একজন বয়স্ক মহিলা হাত দিয়ে ইশারা করে ডাকলো বলে তার মনে হলো। পাশে থেকে নীল দৌড়ে বয়স্ক মহিলাটার হুইল চেয়ার এ বসে পরলো বয়স্ক মহিলা টা নীলের ঘার ধরে গাল কাছে টেনে নিয়ে চুমু খেলো। নীল জোরে হাসি দিয়ে দৌড়ে এসে নীলার হাত ধরলো__

নীল: চলো নীলা।

নীলা কিছু বলতে পারলো না ড্যাবড্যাব চোখে তাকিয়ে রইলো নীল হাসি মুখে নীলার হাত ধরে আগাচ্ছে। নীলা কিছু বুঝতে পারছে না সবকিছু যেনো তার কাছে স্লো মোশন লাগছে শুধু মাত্র তার হার্ট বিট টাই যেনো দ্রুত চলছে আর হাতের স্পর্শে যেনো সে বারবার নতুন কিছু অনুভব করছে।

নীল: নীলা!!!

নীলার ধ্যান ভাঙলো সে নড়ে উঠলো এখন সবকিছু আবার ও তার কাছে স্বাভাবিক লাগছে।

নীলা: হ হুম!

নীল: আমার দাদি। ও ডার্লিং এইটা নীলা ভাবির বোন।

নীলা দাদিকে ডার্লিং বলতে শুনে চোখ কুঁচকে দাদির দিকে তাকালো। দাদিও যেনো আরো ভাবসাব নিয়ে বসলো।

নীলা: ওওও হো হো দাদি তুমি তো এখনো পুরাই ইয়াং লেডি। হিন্দি তে বলে না _ দাদিইই আপ তো আবভি যাওয়ান লাগতি হো।

দাদি: হাহাহা। কিরে নীল তুই তো পুরো তোর মতো একজন কে নিয়ে আসলি।

দাদি নীলার হাত ধরে কাছে আসতে ইশারা করলো নীলা বুঝতে পেরে হাটু গেরে বসে পরলো দাদির সামনে। দাদি তার দু’হাত দিয়ে নীলার দু গাল ধরে কপালে চুমু খেলো।

নীল হাত বটে নিয়ে দাঁড়িয়ে ঠোঁট কামড়ে তাদের দিকে তাকিয়ে হাসছে।

নীলা: ওও দাদি হাউ সুইট অফ ইউ।

নীলা দাদির দু গাল টেনে দিলো।

নীল: ডার্লিং ঠিক হচ্ছে না কিন্তু

নীলা: কি ঠিক হচ্ছে না শুনি এই আপনি যান তো যান এখান থেকে।

নীল: ইশশ আমার দাদির কাছে আমি যাবো তুমি সরো।

নীল ধাক্কা দিলো নীলা কে। নীলা পরে যাওয়ার এক্টিং করে নিচেই পা ধরে বসে পরলো।

নীল: এই এই আমি ইচ্ছা করে দেই নি খুব ব্যাথা পেয়েছো।

নীলা: আম্মুউউউউ আমার পা ভেঙ্গে গেলো রে।

এইদিকে দাদি ও টেনশনে পরে গেলো। নীল টেনশনে আশেপাশে তাকাতে লাগলো নীলা দাদির দিকে তাকিয়ে চোখ টিপ দিলো দাদি নীলার কান্ড দেখে হা করে রইলো তারপর মিটমিট করে হেসে দিলো।

নীল: তুমি এইদিকে বসো আমি আসছি

নীলা ব্যাথায় কুকরে যাচ্ছে এমন ফেস নিয়ে মাথা নাড়ালো নীল দৌড়ে চলে গেলো। নীল চলে গিয়েছে নাকি নীলা পিছন ফিরে ঘুরে দেখলো তারপর দাদির দিকে তাকালো দাদি আর নীলা একসাথে হেসে দিলো।
।।

মিসেস শাহানা: কেক টা কাটো মেঘ।

মেঘ: বাট!! নীল?

মিসেস শাহানা: আছে হয়তো এদিক ওদিক গিটার নিয়ে তুমি কাটো।

মেঘ না চাওয়া সত্ত্বেও কেক টা কাটলো কিন্তু মেঘের দুটো চোখ শুধু মাত্র নীল কে খুঁজছে।

মেঘ কেক কেটে সর্ব প্রথম মিসেস শাহানা কে খাইয়ে দিলেন। মেঘের বাবা ভেবেছিলো মেঘ পরেরবার তাকে খাইয়ে দিবে সেইজন্য সে হা করলো কিন্তু মেঘ নীলের বাবাকে খাইয়ে দিলেন। মেঘের বাবা তার হা টা বন্ধ করে নিলেন।

[মেঘের বাবা খুব হাসিখুশি একজন মানুষ তার মতো যেনো মানুষ ই হয় না সবার চাওয়া পাওয়া তে সে সবসময় লক্ষ্য করে কিন্তু বেশি একটা বিজনেস সামলায় না তার কাছে তার পরিবার আগে তারপর বিজনেস। কিন্তু মেঘের মা মেঘ ওরা কেউ ই মেঘের বাবা কে সাপোর্ট করে না। মেঘের বাবা বড় হওয়া সত্ত্বেও মেঘের বাবাকে মেঘের দাদা সম্পূর্ণ বিজনেস সামলানোর দায়িত্ব দেয় নি দিয়েছে নীলের বাবাকে। মেঘের বাবাকে আজ পর্যন্ত কেউ তেমন একটা ভয় ও পায় না যতোটা সবাই নীলের বাবাকে ভয় পায়। নীলের বাবার কথাতে যেনো পুরো সংসার চলে নীলের বাবা যদি কোনো কিছু তে পারমিশন না দেয় তাহলে সে কাজ ঘরে কখনো হয় না। আর মেঘ হয়েছে পুরো নীলের বাবার মতো মেঘের কাছে নীলের বাবা বেস্ট। আর নীলের কাছে মেঘের বাবা বেস্ট।]

তারপর মেঘ তার বাবাকে খাইয়ে দিলো। মেঘের বাবা হালকা একটু মেঘ কে খাইয়ে দিতে নিলে মেঘ সেদিক থেকে সরে যায় নীলের মা কে খাইয়ে দেওয়ার জন্য। মেঘের বাবা হাসিমুখে কেক টা রেখে দেয় আর সবার সাথে কথা বলতে থাকে।

মেঘ: দাদি তুমি কই ছিলা কতোক্ষণ ধরে খুঁজছি।

মেঘ কথাটি বলেই দাদিকে কেক খাইয়ে দিলো দাদি ও হাসিমুখে মেঘ কে দোয়া করে দিলেন। মেঘের চোখ গেলো নীলার দিকে।

মেঘ: নীলা রাইট?

নীলা হেসে উত্তর দিলো “জি”

মেঘ: লুকিং গর্জিয়াস হাউ প্রিটি ইউ আর!!

নীলা: থ্যাংক ইয়ু। লুকিং হ্যান্ডসাম।

মেঘ: সত্যি তোমাকে অনেক সুন্দর লাগছে এক কথায় অসাধারণ।

নীলা খেয়াল করলো মেঘ কেমন করে যেনো কথা বলছে তার কথাগুলো নীলার কাছে কেমন যেনো অস্বস্তিকর লাগছে। নীলা লক্ষ্য করলো মেঘ তার দিকে অদ্ভুত চোখে তাকিয়ে আছে।

নীলা: এক্সকিউজ মি!!

মেঘ: ইয়েস!!

নীলা: আন্টি আপনাকে ডাকছে।

মেঘ: ওহ ওকে

মেঘ সেদিক থেকে চলে গেলো নীলা যেনো হাফ ছেড়ে বাঁচলো মনে মনে বললো “লুইচ্চা?”

মিসেস শাহানা: আজ একটা এনাউন্সমেন্ট করবো আশা করছি সবাই অনেক টা সারপ্রাইজ হবেন। আজ আমার ছেলে মেঘ এবং মিহু!!!

মিহুর অনেক লজ্জা লাগছে মানিক ধাক্কা দিয়ে মিহুকে মাঝে পাঠিয়ে দিলো। মিহু আস্তে আস্তে হেঁটে মেঘের পাশে যেয়ে দাঁড়ালো।

মিসেস শাহানা: আমার ছেলের সাথে মিহুর বিয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আর ক’দিন পরই ওদের এংগেজমেন্ট সবাই দোয়া করবেন।

মিসেস শাহানা কথা বলায় ব্যাস্ত হয়ে পড়লো। মেঘ ফিসফিস করতে লাগলো মিহু বুঝতে পেরে কান টা এগিয়ে দিলো মেঘ কি বলছে শোনার জন্য। মেঘ মিহুকে বলছে__

মেঘ: তোমার থেকে আমার তোমার বোন কে বেশি ভালো লেগেছে।

মিহু: [হেসে দিয়ে] ওর সাথেই তো আপনার বিয়ের কথা ছিলো আপনি আপনার মাকে বলে দিন।

মেঘ: আমি আমার মায়ের বিরুদ্ধে যাই না।

মিহু: তাহলে তো কিছু করার নেই আরো একটা কথা বলবো? আমার বোন আপনাকে প্রথম দেখাতেই রিজেক্ট করে দিয়েছে।

মেঘ কিছু বললো না চুপ করে দাঁড়িয়ে রইলো মিহু মুচকি হাসলো।
।।

নীলা: এই বুড়ি।

দাদি: এই খবরদার বুড়ি বলবি না আমার বয়সে এমন থাকবি?

নীলা: নো টেনশন আরো ইয়াং থাকবো।

দাদি হেসে নীলার কান টেনে দিলো। নীলা ঠোঁট ছোট করে কান ডলতে লাগলো।

নীলা: এই বুড়ি একটা প্রপোজাল দিবো

দাদি: কিসের প্রপোজাল আগে বল।

নীলা: সতীন হবানি?

দাদি: না নীল খালি আমারই।

নীলা: এইইই বুড়িইই তোমাকে ভালো ভাবছিলাম তুমি তো আমার ইয়ার থেকে শত্রু হয়ে যাইতিছো

দাদি:হবো তবুও তোর মতো মেয়ের সাথে আমার নাতি কে দিবো না।

নীলা রাগে ভেংচি কাটলো দাদি মুখ ঘুরিয়ে ভেংচি কাটলো।

নীলা: তুমি না মোটেও ইয়াং না বুঝলা পান খাইতে খাইতে দাঁত লাল করে ফেলছো ফাকা ফাকা দাঁত চামড়া ভুরিয়ে গেছে….

দাদি: যতো খুশি বলতে থাক তোর দাঁত তো সাদা দাত ও সমান চেহেরার চামরা ও টানটান তবুও তো নীল তোকে পাত্তা দেয় না তোকে কখনো ডার্লিং বলছে? আমাকে বলছে?

নীলা:ইশশশ বুড়ির ঢং কতো

নীলা তীক্ষ্ম চোখে দাদির দিকে তাকিয়ে মুখ ফুলিয়ে দাঁড়িয়ে গেলো ধুমধাম করে হেঁটে নীলের পাশে যেয়ে দাঁড়ালো। নীল নীলাকে দেখে ভ্রু কুঁচকে মাথা থেকে পা পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করতে লাগলো।

নীলা নীলের সামনে দাঁড়িয়ে লাফাতে লাগলো নীল বললো___

নীল: এই তুমি না পায়ে ব্যাথা পেয়েছো?

নীলা: ঢং করেছি ঢং হুহ।

নীল: আমার আগেই বুঝে ফেলা উচিত ছিলো। ড্রামা কুইন একটা।

নীল সোজা হাটতে শুরু করলো। হঠাৎ ই নীলা ডাকাতে নীল দাঁড়িয়ে ওপাশে ফিরেই দাঁড়িয়ে রইলো নীলা নীলের সামনে গিয়ে দাঁড়ালো____

নীলা: Drama Queen vs Mr Handsome পারফেক্ট ম্যাচ কি বলেন?

নীল ভ্রু কুঁচকে নীলার দিকে তাকিয়ে কোনো উত্তর না দিয়েই চলে গেলো। নীলা মুখ ফুলিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

।❣Drama_Queen_VS_Mr_Handsome❣
#Writer_Neela
#Part_12
.
.
জানালার সাইডে বসে আছে মেঘ বাহিরের চাঁদ দেখায় ব্যস্ত সে। আজ নিজের কাছে নিজেকে অসহ্য লাগছে মেঘের কাছে সে কিভাবে করলো এই কাজ টা। শুধু মাত্র এই জন্য যেনো মিহু তাকে সবসময় খারাপ ভাবে। আজ যখন সে নীলাকে এসব কথা বলছিলো তার যেনো কলিজা টা ছিঁড়ে যাচ্ছিলো মনে হচ্ছিলো তার ছোট বোন কে কেউ এইভাবে কথাগুলো বলছে। রাগে নিজের চুল নিজে ছিঁড়ছে। রাগ কন্ট্রোল করতে না পেরে ওয়াইনের বোতল টা ছুড়ে মারলো আর বোতল টা সাথে সাথে কতো গুলো টুকরো টুকরো কাঁচে পরিনত হলো।
।।

মিহু বারান্দায় দাঁড়িয়ে মেঘের কথা ই ভাবছে একটা মানুষ কিভাবে এতো জঘন্য হতে পারে ছিঃ এমন একজন আমার ফিউচার হাজবেন্ড ভাবতেই ঘৃনা লাগছে আমার।

নীলা: এইইইইই চায় এসে গেছে চা।

মিহু: কি করছিস কি আর এইটা কফি।

নীলা: ওপ’স সরি সরি। বাই দা ওয়ে কি ভাবছিস তোকে অনেক ভাবনাময়ী লাগছে।

মিহু:আরে কিছু না এমনিতেই।

কথাটি বলেই মিহু কফিতে চুমুক দিলো। নীলা ড্যাবড্যাব করে কফির দিকে তাকিয়ে আছে।

মিহু: তুই এইভাবে কফির দিকে তাকিয়ে আছিস কেনো!

নীলা: দোস্ত আমি না ক্রাশ।

মিহু: তুই একটা কফিকেও ছাড়লি না।

নীলা:হুররর কফি বা চায়ের উপর কে ক্রাশ খায়? আমি তো ক্রাশ খেয়েছি কফি ও চায়ের যে ধোয়া গুলো। কতো সুন্দর লাগে তাই না।

মিহু: আচ্ছা চুমুক দে।

নীলা: ইশশশ জীভ পুরে যাবে হুহ।

মিহু: তোর কাহিনি আমি বুঝি না তুই এইগুলো ঠান্ডা করে কেনো খাস তখন মজা পাস।

মিহু কফিতে চুমুক দিতে যাবে নীলা টেনে গ্লাস টা নিয়ে নিলো মিহু ভ্রু কুঁচকে নীলার দিকে তাকিয়ে আছে।

নীলা: তুই ও ঠান্ডা করে খা অন্যরকম মজা পাবি।

মিহু: জি না আমার অমন‌ মজার দরকার নেই। দে কফি দে।

নীলা মুখ ফুলিয়ে মিহুর গ্লাস মিহু কে দিয়ে দিলো। নীলা কফির ধোয়ার দিকে তাকিয়ে থেকে বললো___

নীলা: ভাবতিছি ক্রাশ চেন্জ করবো।

মিহু:এইটা আবার নতুন কি?

নীলা: উফফ মিহু!!! মিহু ওয়ালা প্রমিজ আমার এইবার ক্রাশ চেন্জ করার কোনো ইচ্ছেই ছিলো না ?

মিহু: ওহ নীলা ওয়ালা কথার পাওয়ার দেখতে পাচ্ছি আজ।

নীলা: ধ্যাত ভালো লাগে না শুধু মজা নেয় আমার সাথে ?

মিহু: আহালে।

নীলা:এই মিস্টার হ্যান্ডসাম এর ভাব বেশি আমাকে পাত্তা ই দেয় না উনি কি ভেবেছে উনার পিছনেই শুধু মেয়েরা ঘুরে উনি জানেন না উনার পিছনে যতোগুলো মেয়ে ঘুরে তার থেকে ৪ ভাগ বেশি ফলোয়ার আমার ইন্সটা যে হুহ।

মিহুর কফি খাওয়া শেষ গ্লাস রেখে দিলো। মিহু এইবার চিল্লিয়ে উঠলো___

মিহু; নীলাআআআআ কফিটা খা পরে তেতো লাগবে। আর কতো ঠান্ডা করবি তুই।

নীলা: আরেকটু।

মিহু গ্লাসে হাত দিয়ে বললো “ঠান্ডা হয়ে গেছে খা” নীলা ও গ্লাসে হাত দিয়ে বললো “কে বলছে এখনো অনেক গরম”

মিহু: তুই কি খাবি?

নীলা:খাইতিছি তো!![কাঁদো কাঁদো কন্ঠ নিয়ে]

মিহু: হুম খা।

নীলা মুখে দেওয়ার সাথে সাথে চেঁচিয়ে উঠলো “আমার ঠোঁট পুরে গেছে ?”

মিহু:এখন এইভাবে ই খাবি

নীলা:তুই সবসময় আমার সাথে এমন করিস

মিহু: ভালো করছি এমনি করবো সবসময়।

নীলা:মিহু!!

মিহু হঠাৎ চমকে গেলো নীলার এতো নম্র কন্ঠ শুনে নীলার দিকে তাকাতেই দেখলো নীলা আজব এক চাহনি নিয়ে তার দিকে তাকিয়ে আছে।

মিহু:কি হয়েছে নীলা?

নীলা: আমি তোকে ছাড়া কিভাবে থাকবো?

মিহু কিছু বলতে পারলো না তার কান্না আসছে কান্না চেপে রেখেছে সে। নীলা হেসে দিয়ে বললো___

নীলা: তুই আমাকে এতো দিন যেভাবে জ্বালিয়েছিস আমার আদরের ভাগ নিয়েছিস এখন সব আমি একা পাবো হিহিহি।

মিহু: পাজি একটা। যা মশারি টানা।

নীলা বিছানায় যেয়ে শুয়ে পরলো আর বললো___

নীলা: মিহু আজ ঘরে একটা মশা ও নেই এইভাবে ই শোয়া যাবে।

মিহু: না নীলা মশারি টানা।

নীলা: আছিস ই আর ক’দিন একটু সেক্রিফাইস কর।

মিহু: সেক্রিফাইস তো তোর করার কথা।

নীলা: করলাম ই তো।মশারি টানানো লাগবে না মশা নেই।

মিহু: উফফফ।

মিহু উল্টো দিকে ঘুরে গেলো। নীলা উঠে বসলো আর বললো__

নীলা: মিহু মশারি টানালে ভালো হয় তুই তো জানিস ই মশা আমাকে কতো লাভ করে মশা না থাকলেও শুধু কিস করে মশা কে বলি “মশা আমায় এতো কিস করিস না” মশা কোনো রকম ই আমার কথা শোনে না।

মিহু: করুক হুহ।

নীলা: আমার গাল লাল হয়ে যাবে।

মিহু:তাহলেই তো ভালো তোর ব্লাশার ইউজ করতে হবে না।

নীলা: উউউউফফফফফ।
।।

সকালে,,,,

নীলা নিজেকে আবিষ্কার করলো মশারির মধ্যে মিহুর দিকে তাকিয়ে হেসে দিলো নীলা।

ঘড়ির দিকে তাকিয়ে নীলা অবাক এতো জলদি উঠেছে সে কেমনে পসিবল। ব্যাপার টা তো সবাইকে দেখাতে হয়। ড্রয়িং রুমে যেয়ে হাঁটাহাঁটি শুরু করলো।

আম্মু: নীলা একটু বাজারে যা। আজ জামাইয়ের বাড়ি থেকে মানুষ আসবে।

নীলা; তোমার জামাই এর বাড়ি থেকে মানুষ আসবে তুমি যাও আমি কেন যাবো।

আম্মু: আর তুমি বাসায় তুরতুর করবা তাই না? এই যা বাজারে যা।

নীলা: পারবো না।

আম্মু: ভাবছিলাম বিরিয়ানি রান্না করবো?

নীলা: এই আম্মুউউউ তুমি কেনো কষ্ট করবা বলো আমি আছি তো।

নীলা বাজারের ব্যাগ হাতে নিয়ে স্কুটি চালু করলো। বটবটি বাইক ও এতো আওয়াজ করে না যতোটা নীলা নিজের মুখ দিয়ে করছে।

নীলা: হয় হয় !!! হয় হয় বাজার করবো। ফুরররররররর

বাজারের সবাই চারদিকে অবাক চোখে তাকিয়ে আছে নীলা এক হাতে স্কুটির হ্যান্ডেল আরেক হাত উচু করে বাজারের ব্যাগ গোল গোল ঘুরাচ্ছে স্কুটি থেকে দু পা ছড়িয়ে বের করে স্কুটি চালাচ্ছে।

নীলা স্কুটি থেকে নেমে হেলমেট খুললো হঠাৎ ই একজন তার খোপা করা কাটা টা তার চুল থেকে খুলে দিলো। নীলা মাথা নাড়িয়ে ভ্রু কুঁচকে পিছনে ঘুরলো তার চুল গুলো কোমর পর্যন্ত ছড়িয়ে গিয়েছে। যে ছেলেটা তার খোঁপার কাঁটা খুলে দিয়েছে সে সাথে সাথে নীলার একটা ছবি ক্লিক করে সোজা হাঁটা শুরু করলো।

নীলা: হেইইই ওয়েট।

ছেলেটা চশমা খুলে মুচকি হেসে নীলার দিকে তাকালো নীলা রাগি চেহারা নিয়ে তার দিকে এগুলো ছেলেটা হেসে দিলো।

নীলা: কারো পারমিশন ছাড়া যে কারো ছবি তুলতে নেই সেটা কি আপনি জানেন না।

ছেলেটা: ওহ আ’ম রিয়েলি সরি। আমি আসলে জানতাম না।

নীলা: মানে কি?

ছেলেটা: ইন্ট্রোডিউজ দেই?

নীলা: আমি আপনার কাছে ইন্ট্রোডিউজ চেয়েছি?

ছেলেটি: সরি মিস! ডোন্ট বি শাউট। বাই দা ওয়ে, আ’ম ঈশান। ফ্রম লন্ডন। আ প্রফেশনাল ফটোগ্রাফার ?

নীলা: আপনি যতোই প্রফেশনাল হন না তাতে আমার কি আমার ছবি ডিলিট করুন। আর আপনার লন্ডনে হয়তো আপনি মেয়েদের জিজ্ঞেস না করেই ছবি তুলে নিতেন কিন্তু এইটা লন্ডন না এইটা বাংলাদেশ সো কারো ছবি তোলার আগে অবভিয়াসলি আপনার পারমিশন নেওয়া উচিত।

ঈশান: আমি আপনার ছবি তুলে নিয়েছি এখন কিভাবে পারমিশন নিবো?

নীলা: ডিলিট করে দিন তাহলেই তো হলো!!

ঈশান: আমি এই ছবিটা আমার ক্যামেরা তেই রাখবো আর এইটাতে পারমিশন নেওয়ার কিছু নেই।

ঈশান এই কথা বলে সোজা হাটা শুরু করলো নীলা পিছন থেকে হাজার ডাক দেওয়ার পরও পিছু ফিরে তাকায় নি সে তার মতো।

নীলা: হোয়াট আ এটিটিউড। হাহ!!! বাট কিউট ছিলো।

নীলা বাচ্চাদের মতো একটা হাসি দিয়ে সবজির দোকানে চলে গেলো।



চলবে,,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here