Drama_Queen_VS_Mr_Handsome,Part_21,22 last

0
2192

Drama_Queen_VS_Mr_Handsome,Part_21,22 last
Writer_Neela
Part_21
.
.
দীপ: আর কত সময়?

নীলা: দেখুন আমি তো বলেছি আমার সময় লাগবে

দীপ: তুমি আমাকে পরে জানাবে সেটা আমি মানতে পারছি না।

নীলা: দেখুন আপনি কেনো মানতে চাচ্ছেন না। আর আজ আমায় যেতে হবে বাসায় না বলে এসেছি আমি।

আদিবা: সরি টু ডিস্টার্ব কিন্তু আমি কিছু বলতে চাই। নীলা তুই কেনো মানতে চাচ্ছিস না বল তো তুই ই তো আমাকে বলেছিস যে তুই ভাইয়ার উপর ক্রাশ।

নীলা:আজিব ক্রাশ খাওয়া মানে এই না যে ভালোবেসে ফেলা ক্রাশ অর্থাৎ ক্ষনিকের ভালো লাগা।

আদিবা: ভাইয়া!!!

দীপ: কি?

আদিবা: আমি নীলাকে খুব ভালো করে চিনি ও এইভাবে মানবে না কিভাবে মানাতে হবে বুঝতে পারছো?

নীলা: কিভাবে মানে?

আদিবা: ওহ কা’মন নীলা তোকে আমি ১০ বছর ধরে চিনি তুই মানবি না সেটা ও আমি জানি। ভাইয়া আমি দরজা লাগিয়ে দিচ্ছি।

নীলা: আদিবা!!!

আদিবা নীলার কথা শোনার কোনো প্রয়োজন মনে করলো না নীলা চিল্লিয়ে বারবার আদিবা কে ডাকছে কিন্তু কোনো লাভ হচ্ছে না। এইদিকে দীপ এতো সময় ভয় পাচ্ছিলো আদিবা কে নিয়ে এখন আদিবাই যেহেতু পারমিশন দিয়ে দিয়েছে দীপের কোনো সমস্যা নেই।

নীলা: আদিবা!!! আদিবা!!! আদিবা প্লিজ দরজা টা খুল‌ আদিবা প্লিজ। বাবু প্লিজ দরজা টা খুল তুই না আমাকে সবসময় বলিস তুই আমার বড় বোন তাহলে তুই কিভাবে এখন তোর ছোট বোনের প্রতি এমন নির্মম হতে পারছিস প্লিজ দরজা টা খোল আদিবা।

নীলা দরজা ধাক্কাচ্ছে আর চিল্লিয়ে যাচ্ছে এইদিকে দীপ এসে নীলার কাঁধে হাত রাখলো। নীলা দীপের দিকে ঘুরে গিয়ে হাত জোর করে তার সামনে দাঁড়ালো।

নীলা: দেখেন ভাইয়া আপনাকে হাত জোর করে বলছি আমার সাথে কিছু করবেন না যদি একটু হলেও ভালোবেসে থাকেন তাহলে কিছু করবেন না প্লিজ।

দীপ নীলার গালে এলোমেলো হওয়া চুল গুলো আলতো হাতে সরিয়ে দিলো নীলার চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়াটা ও মুছে দিলো। নীলার প্রচুর রাগ লাগছিলো সজোরে এক থাপ্পর মেরে দৌড়ে সেদিক থেকে পালিয়ে যেতে নিলেই দীপ নীলার হাত শক্ত করে চেপে ধরে নীলা দীপের হাতে কামড় দিয়ে ধরে। দীপ সাথে সাথে হাত ছাড়িয়ে নেয় নীলা আবার ও কাঁদতে থাকে____

নীলা: প্লিজ আদিবা দরজা টা খোল আমি তোর উপর একটু ও রাগ থাকবো না দরজা টা খোল বোন আমার দরজা টা খোল দয়া কর আমার উপর।

দরজার শব্দে নীলা খুশি হয়ে আদিবার দিকে তাকালো আদিবা তাচ্ছিল্য হাসি দিয়ে বললো___

আদিবা: অনেক চিল্লাচ্ছিস তুই তোর খবর আছে।

নীলা অবাক হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো এক ধ্যানে আদিবার দিকে তাকিয়ে রইলো আদিবা ওরনা দিয়ে নীলার মুখ বেধে দিতে আসলেই নীলার হুস ফিরে আদিবার পায়ে ল্যাং মেরে দৌড়ে অন্য রুমে চলে গেলো নীলা দীপ নীলার পিছন পিছনেই আসছে নীলা রান্নাঘরে গিয়ে মরিচের গুঁড়া নিয়ে দীপের মুখে ছুঁড়ে মারলো দীপ চোখের জ্বালায় ছটফট করতে লাগলো।

নীলা যেই দরজা দিয়ে বেরিয়ে যেতে নিবে আদিবা নীলার পথ আটকায় নীলা দৌড়ে বারান্দার দিকে চলে যায় আদিবা ও নীলার পিছন পিছন যায় আদিবা নীলার হাত পা বাঁধার জন্য আর নীলা হাত পা বাঁধতে দিবে না বলে জোড়াজুড়ি করতে লাগলো এমন সময় নীলা রেগে আদিবা কে ধাক্কা মারে আর আদিবা বারান্দার রেলিং এ ঝুলে রইলো।

আদিবা: নীলা প্লিজ আমাকে বাচা প্লিজ বাঁচা আমাকে।

নীলা আদিবার হাত আঁকড়ে ধরে রেখেছিলো এক সময় নীলা মুচকি হেসে বললো___

নীলা: তোর মতো মেয়ের বেঁচে থাকার কোনো অধিকার ই নেই।

নীলা আস্তে করে আদিবার হাত ছেড়ে দিলো নীলা মাথায় ওরনা পেঁচিয়ে কাঁধে ব্যাগ নিয়ে বেড়িয়ে পরলো নীলা নিচে নামতে নামতে আদিবার ওদিকে অনেক মানুষ ঘিরে গিয়েছিলো নীলা আদিবার রক্ত মাখা মুখ দেখেও ওদিক থেকে চলে আসলো‌।

নীল: তারপর!!!

মিহু: খালুর বন্ধু ছিলেন পুলিশ অফিসার নীলা নিজে গিয়েই কমপ্লেইন করলো দীপের নামে সেদিনই দীপ কে পুলিশ এ বন্ধী করা হয় সারাদিন এইসব ধকল যাওয়ার পর নীলা বাসায় আসতেই অচেতন হয়ে পড়ে তারপর আর রাতে ঘুমোতে পারতো না প্রতিনিয়ত ওকে এই বিষয় টা নিয়ে ভীত হয়ে থাকতো কিন্তু নীলা অনেক সাহসী এই সময়ে মেয়েরা কি করবে কিছুই বুঝতে পারে না কিন্তু নীলা নিজেকে কতোদুর পর্যন্ত নিয়ে গিয়েছে।

নীল: আসলেই কিন্তু তোমরা এইসব ঘটনা কিভাবে জেনেছো।

মিহু: নীলা যখন ঘুমোতে পারতো না তখন বারবার ওকে জিজ্ঞাসা করা হতো কিন্তু কিছু বলতে চাইতো না একদিন ঘুমের মধ্যে ছটফট করছিলো আর বিড়বিড় করছিলো তখন সাথে সাথে ওকে জিজ্ঞাসা করি আর ও খালামনির কোলে শুয়ে অস্পষ্ট ভাবে সব কথা বলতে থাকে তখন কেউই বুঝতে পারি নি আমি রেকর্ডিং অন করে রেখেছিলাম তখন টানা ৩ দিন লেগেছে ওর অস্পষ্ট কথা গুলো আমাদের বুঝতে। যেদিন বুঝতে পেরেছি সেদিনই ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হই কারন আমরা জানতাম দীপ জেল থেকে ছাড়া পেলে নীলাকে ছাড়বে না দীপের চোখের মনি ছিলো আদিবা।

নীল: ওর যেমন চোখের মনি আদিবা তেমনই নীলা ও তো কারো চোখের মনি এইটা মাথায় যায় না।

মিহু:আই উইশ যদি যেতো। একটা জিনিস দেখবে?

নীল: কি?

মিহু নীলের হাত ধরে নীলার আম্মুর কেঁদে নামাজ পড়ার হালকা শব্দ শুনেছে।

নীল একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে নীলার রুমের সামনে এসে নীলার দিকে তাকালো।

মিহু: আদিবার পর নীলা একমাত্র মিম কে বিশ্বাস করেছে।

নীল: মিম মেয়ে টাও ভালো না। নীলাকে বলবে মিমের সাথে বন্ধুত্ব ভেঙে ফেলতে।

মিহু: কিন্তু কেনো?

নীল: শুনো তাহল,,,,,

নীলের মনে পরে গেলো সেদিনের কথা হুম সেদিনের মিমের কথাগুলো সব যেনো নীলের ভালো লাগা গুলো উলোট পালোট করে দিচ্ছে। মেঘের জন্মদিন এ নীলার পরিবার গিয়েছিলো সাথে ছিলো মিম ও। নীলার বেস্ট ফ্রেন্ড গলায় গলায় ভাব তাদের। নীলা ব্যাথার অভিনয় করার পর নীলের যখন মনে হচ্ছিলো নীল নিজেই মনে হয় ব্যাথা পেয়েছিলো সাথে সাথে দৌড়ে চলে গেলো ঠিক তখনই____

মিম: হ্যালো কি করছেন?

নীল: মিম!!! নীলা প্রচুর ব্যাথা ঞপেয়েছে।

মিম: সত্যিই কি ব্যাথা পেয়েছে?

নীল: মানে?

মিম: নীলার বেস্ট ফ্রেন্ড আমি ও কখন কি করে না করে সেটা আমি খুব ভালো করে জানি।

নীল: কিন্তু আমার তো এখন সন্দেহ হচ্ছে তুমি কি সত্যিই ওর বেস্ট ফ্রেন্ড হওয়ার যোগ্য নাকি

মিম: মুখ সামলে কথাই বলুন!!! আজকাল দেখছি মানুষের ভালো চাওয়া ও দোষ।

নীল: কি বলতে চাচ্ছো তুমি?

মিম: আপনি ওর অনেক গুলো ক্রাশের মধ্যে একজন আর ওর সব ক্রাশ দের ও ক্রাশার গার্ল ছিলো নীলা ভার্সিটির অন্যতম সুন্দরী সে যখনি যার উপরে ক্রাশ খেতো তার দু একদিন পর সেই এসে নীলাকে প্রোপজ করতো নীলা হ্যা ও বলতো না এমনকি না ও বলতো না।

নীল: রিলেশন তো আর করতো না তাই না?

মিম: যাই করতো না কেনো!! প্রত্যেকটা ছেলেকে সে কষ্ট দিয়েছে বন্ধুর মতো করে মিশে।

নীল: সেটা তো বন্ধুর মতো করেই।

মিম: সেটাই তো আপনাকে বলতে চাচ্ছি আপনাকেও তো কষ্ট দিবে সেটা বুঝতে পারছেন না ওর যে ব্যাথা পাওয়া টাও অভিনয় এইটা যেমন বুঝতে পারছেন না তেমন ওর পরের চাল গুলো ও আপনি বুঝতে পারবেন না।

নীল: ও যদি খারাপ ও হয় তবুও আপনার বেস্ট ফ্রেন্ড আর যদি ভালো ও হয় তবুও আপনার বেস্ট ফ্রেন্ড লজ্জা করে না নিজের বেস্ট ফ্রেন্ড এর ব্যাপারে এইসব বলছেন?

মিম: না লজ্জা করে না সেদিন থেকেই আমি ওকে আমার বেস্ট ফ্রেন্ড ভাবা বন্ধ করে দিয়েছি যেদিন থেকে দেখেছি আমি যাকে পাগলের মতো ভালোবাসি সে আমাকে না নীলাকে ভালোবাসে।

নীল: অবশ্যই ভালোবাসতেই পারে কারন নীলার মধ্যে একটা ভালো মন আছে যেটা আপনার মধ্যে নেই।

মিম:ভালো মন কার আছে সেটা কিছুদিন পরই টের পাবেন ‌।

নীল: এট লিস্ট আপনাকে বেস্ট ফ্রেন্ড ভেবে আপনার ব্যাপারে বদনাম করে না।

মিম: যাই হোক ওর মতো এতো সুন্দর অভিনয় ও করি না যেমন আজকের অভিনয় টা ও আপনি বুঝতে পারছেন না।

নীল: আচ্ছা আপনি কি চান বলুন তো।

মিম: আপনাকে!

নীল: মানে

মিম: আমি আপনাকে চাই আর কিছু না।

নীল: স্টুপিড!!

নীল এই কথা গুলো বলেই চলে যেতে নিলে মিম দূর থেকে চিল্লিয়ে বলে___

মিম: আরে যান যান!!! ওর সাথে ১০ বছর ধরে আছি ওর সব খবর আমি জানি আর আজ যেমন পরে যাওয়ার অভিনয় আপনি বুঝতে পারেন নি তেমন ই এর পর থেকে কোনো অভিনয় ই বুঝতে পারবেন না।

তখনি নীল যেয়ে দেখলো নীলা তীক্ষ্ম চোখে দাদির দিকে তাকিয়ে মুখ ফুলিয়ে দাঁড়িয়ে গেলো ধুমধাম করে হেঁটে তার পাশে এসে দাঁড়ালো। নীল নীলাকে ভ্রু কুঁচকে মাথা থেকে পা পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করতে লাগলো।

নীলা নীলের সামনে দাঁড়িয়ে লাফাতে লাগলো নীল বললো___

নীল: এই তুমি না পায়ে ব্যাথা পেয়েছো?

নীলা: ঢং করেছি ঢং হুহ।

নীল: আমার আগেই বুঝে ফেলা উচিত ছিলো ড্রামা কুইন একটা।

সেদিন নীল নিজেকে অনেক কষ্টে সামলে নিলেও পরদিন পারলো না। নীল এবং ঈশান একসাথে বাজারে গিয়েছিলো ঈশান লোকাল বাজার দেখতে চেয়েছে তখন নীলের চোখ পড়লো একটা ছোট্ট চাবির রিং এর দিকে। চাবি রিংটি ছিলো গোলাপি রঙের একটা ছোট্ট পুতুল শরীরটা ছিল একদম তুলতুলে নরম বলের মতো আর মাথায় ছিল গোলাপি রঙের একটা ছোট্ট টুপি ঠোঁটে লাল রঙের লিপস্টিক বাচ্চাটা চুপ করে ঘুমাচ্ছিলো। নীল তো দেখতে দেখতে ঈশান অন্যদিকে চলে গেল তারপর নীল ঈশান কে খুঁজতে খুঁজতে দেখল ঈশান এবং নীলা একে অপরের সাথে চুটিয়ে ঝগরা করছে তারপর ঈশান চলে যাওয়ার পর নীলা বললো কিউট ছিল নীল সেটা সহ্য করতে পারলো না চুপ করে সেদিকে দাঁড়িয়ে রইল নিলা যেই পিছনে করতে ঘুরবে তখন নীল অন্য পাশে চলে গেল নীলা আর নীল কে দেখতে পারলো না।

নীলের চোখ আস্তে আস্তে লাল আবরণে পরিণত হল প্রচন্ড রাগ লাগছে তার।

নীল: এই ছিলো কাহিনী।

মিহু: নীলা সত্যি ক্রাশ খায় কিন্তু ও এমন কখনো করে না বিশ্বাস করো ওর মধ্যে তোমার জন্য যে অনুভূতি দেখেছি সেটা কারো মধ্যে পাই নি। বিশ্বাস করো।

নীল: হুম করি এখন নিজেকে ক্ষমা করতে পারছি না। না জেনে ‌না বুঝে মেয়েটাকে কষ্ট দিয়েছি‌।



চলবে,,,,,,,,

❣Drama_Queen_VS_Mr_Handsome❣
#Writer_Neela
#Part_22
.
.
নীলা বসে আছে মাথা নিচু করে নীল দাঁড়িয়ে ইচ্ছে মতো ঝেড়ে যাচ্ছে নীলাকে।

নীল: তুমি যে পাকনামো করে একা একা এসেছো কে বলেছে একা একা আসতে ফাজলামো করো তুমি ? যদি তোমার কিছু হয়ে যেতো তখন ‌।

নীলা: আমার কিছু হয়ে গেলে আমার হতো তাতে আপনার কি?[ আহ্লাদি কন্ঠে]

নীল: আমার কি মানে? আমার কিছু না?

নীলা: জি নো!!! আপনার কিছু না হুহ। আসছে ঢং করতে ?

নীল: ওকে ওয়েট।

নীল চোখের সামনে ফল কাটার ছুরি নিয়ে নিজের আঙুল সজোরে এক
সাইডে হালকা একটু কেটে ফেললো নীলা ভয় পেয়ে চোখ বন্ধ করে ফেললো তাকিয়ে দেখলো রক্ত বেয়ে পড়ছে।

নীলা সাথে সাথে লাফ দিয়ে বিছানা থেকে উঠে কান্না চোখে হাতের দিকে তাকিয়ে ড্রয়ার থেকে ফার্স্ট এইড বক্স নিয়ে হাতের রক্ত মুছে দিতে লাগলো।

নীল: এই মেয়ে কাঁদছো কেনো?

নীলা: কথা বলবেন না আপনি।

নীল: দেখেছো আমার কিছু হলে তোমার খারাপ লাগে? তাহলে তোমার কিছু হলে আমার খারাপ লাগবে না কেনো?

নীলা: কথা বলবেন না বলেছি একবার ?

নীল: ছাড়ো আমার হাত।

নীলা: আরে।

নীল নিজের কাটা আঙুলটা নীলার কপালে দিলো রক্ত টিপ আকারে হয়ে আছে নীলার কপালে।

নীলা: আরে কি করলেন কি?

নীল: চুপ!!!ওয়েট

নীলা: কিন্তু কেনো।

নীল দাঁড়িয়ে দরজা দিয়ে আবার ও উঁকি দিলো কেউ আসছে নাকি নীল আবার ও নীলার সামনে এসে আবার ও দরজার দিকে লক্ষ্য রাখলো নীলা কিছুই বুঝে উঠতে পারছে না নীল এইগুলো কি করছে।

নীল নীলার দু গাল আলতো হাতে ধরে কপালের যেখানে নীল রক্ত দিয়ে নীলাকে টিপ দিয়ে দিয়েছে ঠিক সেইদিকে চুমু খেলো নীলা সাথে সাথে কেঁপে উঠলো এক অন্যরকম অনুভুতি হচ্ছে নীলার এমন অনুভূতি যা বলে প্রকাশ করা সম্ভব না।

নীল: বাহ!!!ড্রামা কুইন লজ্জা ও পায় দেখছি।

নীলা: তো ড্রামা কুইন দের লজ্জা পাওয়া নিষিদ্ধ নাকি মিস্টার হ্যান্ডসাম।

নীল: অবশ্যই যদি ড্রামা কুইন লজ্জা পায় তাহলে আমাকে এমন অনুভূতি অনুভব করাবে কে শুনি যেমন অনুভূতি টা এখন তুমি পাচ্ছো।

নীলা: দেখুন বেশি হয়ে যাচ্ছে কিন্তু।

নীল: হুম হুম বেশি তো হবেই। আচ্ছা শুনো।

নীলা:[ হয়তো এইবার ভালোবাসি বলবে!! যদি বলে একেবারেই উত্তর টা দিবো না ?] হুম বলুন

নীল: সরি এতো দিন একটু মিসবিহেভ করে ফেলেছি।

নীলা: ওপ’স আমি তো ভুলেই গিয়েছিলাম নোপ আপনাকে মাফ করবো না আমি।

নীল: আচ্ছা তো কি করলে আপনার রাগ ভাঙবে।

নীলা: ১০ বার কান উঠবস তারপর একটা কথা বলতে হবে।

নীল: কি কথা?

নীলা: আগে করুন তারপর জানাবো।

নীল পা ভাঙছে না শুধু শরীর টা ই উপর নিচ উঠাচ্ছে নীলা বুঝতে ও পারে নি যখনই বুঝতে পারলো সাথে সাথে___

নীলা: এইইইইই চিটিং চিটিং দেখুন আপনি চিটিং করছেন।

নীল: হিহিহি ধরে ফেলেছো?আসলে এইটা একটা ব্যায়াম জিম ক্লাসে শিখিয়েছে

নীলা: এইটা কে কি আপনার জিম মনে হয়?

নীল: আচ্ছা সরি তো।

নীলা: সুন্দর করে বলুন।

নীল: আসলে সরি নীলা।

নীলা: আরো সুন্দর করে বলুন।

নীল: নীলাআআ আ’ম সরিইইই

নীলা: ঢং করছেন কেনো?

নীল: উফফফফফফ। আচ্ছা কি যেনো বলতে হবে?

নীলা: বলুন

নীল: কি

নীলা: না থাক কিছু না রাত হয়ে যাচ্ছে বাসায় যান।

নীল: না আগে বলো কি বলতে হবে।

নীলা: আপনি জানেন আমি আপনাকে কি‌ বলতে বলছি তবুও এমন করছেন।

নীল: ওহ আচ্ছা ওইটা।

নীলা: হ্যা বলুন।

নীল:মানিক কে বলে দিয়েছি মানিক বলে দিবে।

নীলা: আপনার কথা মানিক কেনো বলবে দেখুন আপনি কি বলবেন নাকি আমি রাগ করবো।

নীল: উফফ তোমার চকোলেট আমি লুকিয়ে মিহুর ড্রয়ার এ রেখে দিয়েছি।

নীলা: মানে কি?

নীল: কি মানে কি?

নীলা: আআআআআআআআআ এই আপনি আমার বাসা থেকে বের হন বের হন বলছি।

নীল: আরে কি করেছি।

নীলা আঙুল উঠিয়ে ধাক্কাতে ধাক্কাতে নীল কে রুম থেকে বের করে দিয়ে দরজা লাগিয়ে দিলো। নীলা বিছানায় বসে একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে উপুড় হয়ে শুয়ে পরলো।

নীল মনে মনে বলছে “ইশ আমি বলিনি দেখে রাগ করছে মনে হচ্ছে এখন আমারই বলতে হবে হুম গভীর রাতে আসবো?”।

নীলা: [শয়তান,বিলাই, উল্লুক,ভাল্লুক, ইঁদুর, ঝিলে থাকা কুমির, বট গাছের সাপ, পঁচা ডিম, পঁচা পানির কুমির কি বলতে বলেছি সেটাও বুঝেনি এখন আমার ই বলতে হবে নো প্রবলেম গভীর রাতে দেখো কি হয়]
।।

নীলা গ্যারেজ থেকে স্কুটি নিয়ে নাইট গার্ড কে টাকা দিয়ে তার থেকে দোয়া নিলো। বেরিয়ে গেলো নীলের বাসার উদ্দেশ্যে রাত ১:৩০ টা পুরো রাস্তা নিরব।

নীলা: [আবে নীলা তু তো গায়া এই মিস্টার হ্যান্ডসাম এর জন্য তোর কতো কিছু করতে হচ্ছে হে আল্লাহ তুমি ঐ দুষ্টু টাকে হেদায়েত দান করো আমিন]

নীলা স্কুটি নিয়ে নীলের বাসায় এসে পৌঁছিয়েছে এখন ২:২৫ বাজে স্কুটি থেকে নেমে সিকিউরিটি গার্ডের মাথায় দিলো বারি সিকিউরিটি গার্ড ভয়ে সাথে সাথে দাঁড়িয়ে গেলো।

নীলা: ঘুমোচ্ছেন কেনো এখন যদি আমার মতো কোনো চোর এসে পড়ে তখন।

সিকিউরিটি গার্ড: চ চ চোর?

নীলা: চ চ চ চ কি চ এর পরে ছ জানেন না নাকি যাই হোক আমি সেই চোর না তোমার ছোট স্যারের মন ডাকাতি করতে এসেছি।

সিকিউরিটি গার্ড: কে আপনি?

নীলা: তোমার ছোট স্যারের ফিউচার ওয়াইফ আর এই শুনো আমার কথা যেনো কেউ না জানে নয়তো?

সিকিউরিটি গার্ড: নয়তো কি?

নীলা: ওয়েট!!!

নীলা সিকিউরিটি গার্ড এর নাক ডেকে ঘুমানোর ভিডিও টা দেখিয়ে দিয়ে বললো___

নীলা: এইটা মেঘের আম্মুকে দেখিয়ে দিবো জল্লাদ টাকে।

সিকিউরিটি গার্ড:সরি ম্যাম এই কাজটি আপনি করবেন না।

নীলা: তাহলে আমার ব্যাপারে ও যেনো কেউ না জানে হুহ ?

নীলা ঢ্যাং ঢ্যাং করতে করতে ভিতরে চলে গেলো নীলা দেখে অবাক হলো___

নীলা: আরেএএ এই মিস্টার হ্যান্ডসাম কি জানতো নাকি যে আমি আসবো আগে থেকেই মই রেডি। ওয়ে হোয়ে কিয়া বাত হে?
।।

নীল মই টা সোজা করে সেট করে দিলো হঠাৎ ই তার মনে পরে গেলো সে কোনো দড়ি আনে নি নীলার বারান্দা দিয়ে কিভাবে উঠবে আলমারি খুলে তরিঘরি করে দড়ি খুঁজতে লাগলো।

নীলা মই বেয়ে উঠে লাফ মারলো বারান্দায় গুটি গুটি পায়ে হাঁটতে লাগলো।

নীল:[যাই বারান্দা দিয়েই ইজিলি চলে যাই]

নীলা অন্ধকারে হাটছে মোবাইলের ব্রাইটনেস এর আলো দিয়েই হাটছে হঠাৎ যেনো কার সাথে ধাক্কা লাগায়।

নীলা: আয়োম্মাআআআ।

নীল: নীলা!!![এইটা নীলার কন্ঠ না]

নীলা: মিস্টার হ্যান্ডসাম!!! আপনি?

নীল টর্চ জ্বালিয়ে নীলার মুখে মেরে দেখলো নীলা ভ্রু কুঁচকে বললো___

নীল: আমি কি? এই প্রশ্ন তো আমার করার কথা এতো রাতে তুমি??? এইদিকে কি করো।

নীলা নীলের হাত থেকে টর্চ নিয়ে নীলের মুখে মেরে বললো___

নীলা: তার আগে বলুন কোথায় যাওয়া হচ্ছিলো আপনার।

নীল: তুমি এতো রাতে একা এসেছো? তুমি কি পাগল

নীলা: আমার প্রশ্নের উত্তর দিন?

নীল: তোমার বাসায় যাচ্ছিলাম।

নীলা: কেনো? আমার বাসার ওয়াইফাই চুরি করতে?

নীল: হুয়াট? তোমার বাসার ওয়াইফাই চুরি করতে যাবো কেনো আমি? আমার বাসায় কি নেই?

নীলা: না আমি ভাবলাম আপনাদের টা হয়তো নষ্ট হয়ে গিয়েছে।

নীল: ওহ গড!!! কিন্তু তুমি কি করতে এসেছো।

নীলা: ডাকাতি করতে।

নীল: হুয়াট!!!তার মানে তুমি ডাকাত।

নীলা: হুম ভাবলাম আপনারা বড়লোক মানুষ সব কিছু ব্র্যান্ড এর আপনার শার্ট চুরি করে মানিক কে গিফট করতাম ?

নীল: উফফফফফফ ?

নীলা: যাই হোক শুনেন।

নীল: কি?

নীলা: যা বলার জন্য আমার বাসায় যেতেন বলুন আমাকে আমি দাঁড়িয়ে আছি।

নীল: তুমি যে কারনে এসেছো তুমি বলো তুমিও তো বলতেই এসেছো।

নীলা: আমি কেনো বলবো এইগুলো ছেলেরা বলে জানেন না?

নীল: তুমি তো ইউনিক তো তুমি ই বলো।

নীলা: ওকে একসাথে।

নীল: ডান।

নীল হাটু গেরে বসে পরলো নীলা ও হাটু গেরে বসলো দুজনই দুজনের কানের কাছে ঠোঁট নিয়ে বললো___

নীল: ভালোবাসি।

নীলা: ভালোবাসি!!!

নীল নীলার কানে আলতো করে চুমু খেলো নীলা নীলের কানে সজোরে কামড় বসিয়ে দিলো।
‌।
নীল: আউচ।

নীলা আর নীল মুখোমুখি হয়ে এখনো হাটু গেরে বসে আছে নীল কান ডলছে আর নীলা হাসছে নীল মুচকি হেসে বললো___

নীল: তোমার মনে আছে? তুমি একদিন বলেছিলে

নীলা: কি বলেছি?

নীল: ড্রামা কুইন এন্ড মিস্টার হ্যান্ডসাম পার্ফেক্ট কাপল।

নীলা:হুমম!!! ?

নীলা লজ্জা পেয়ে নীলের কাঁধে মাথা রাখলো নীল নীলার মাথায় হাত রাখলো বললো__”আজ আমাদের সম্পর্কের সাক্ষী পরিবার ও না বন্ধু রা ও না এক মাত্র কালো আকাশের পূর্ণিমা চাঁদ টা” নীলা আস্তে করে বললো “হুম”

…………সমাপ্ত…………

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here