Drama_Queen_VS_Mr_Handsome,Part_7,8

0
1608

Drama_Queen_VS_Mr_Handsome,Part_7,8
Writer_Neela
Part_7
.
.
মিহু লক্ষ্য করছে নীলা বাসায় আসার পর থেকে একটু কেমন যেনো ব্লাশিং হচ্ছে কিছু সময় পর পর গাল টা গোলাপি হয়ে যাচ্ছে আবার স্বাভাবিক হয়ে যাচ্ছে।

মিহু: কি হয়েছে তোর?

নীলা:কার আমার? কই কিছু না তো ?

মিহু: আবার নতুন কোনো ক্রাশ খেয়েছিস

নীলা: নাহ আর মনে হয় না লাইফে ক্রাশ খাবো করলে একবারে বিয়ে পাক্কা।

মিহু: আবার কি হয়েছে।

নীলা যেয়ে লাফ দিয়ে বিছানার উপর বসলো মিহুর সামনে মিহু ভয় পেয়ে পিছিয়ে গেলো___

নীলা: উফফ মিস ঢিশমিশ আমি তোর হাব্বি না যে তোকে কিস করার জন্য এসেছি আর তুই ভয় পেয়ে দূরে সরে যাবি হুহ

মিহু: উফফ নীলা কি যা তা বলছিস

নীলা: ইশশ রোমান্টিক কথা শুনে কবে থেকে তুমি লজ্জা পাওয়া শুরু করেছো শুনি ? তুমি তো রোমান্টিক কুইন ?

মিহু: হুম শশশ [নীলার ঠোঁটে আঙুল রেখে] চুপ

নীলা: হুহ।

মিহু:নীলা রাত হয়েছে বিছানা গুছা।

নীলা: তুই গুছা না আর কয়দিন পর তো চলেই যাবি তখন থেকে তো আমার ই করতে হবে

মিহু:উউউউফফফফফ

নীলা ভেংচি কেটে মানিকের রুমে ঢুকলো চুপিচুপি দেখলো মানিক ফোন চালাচ্ছে নীলা এক পা দু পা করে হেঁটে হুট করে মানিকের হাত থেকে টান দিয়ে ফোন নিয়ে নিলো।

মানিক: নীলাআআ আপিইইই

নীলা রাগি চোখে মানিকের দিকে তাকালো মানিক একটা ডোক গিললো___

নীলা: ডাম্বো তুই ফেসবুক চালাস আমাকে বলিস নি কেনো
‌।
মানিক: সরি আপু না মানে প্লিজ আপু আম্মুকে বলো না।

নীলা মানিকের সাথে যেমনই ফ্রি হোক না কেনো নীলা বাসায় যেমন ই হাসিখুশি থাকুক না কেনো নীলাকে বাসার সবাই একটু অন্যরকম ভয় পায় কারন রাগলে সবার খবর করে ছাড়ে নীলা। কাউকে ছেড়ে কথা বলার সময় সে নেই উচিত কথা কখনো ছাড়ে না তাই প্রতিবেশীর কাছে ও সে খারাপ। কিন্তু মিহু সবসময় সব কিছু মুখ বুজেই সহ্য করে নেয় আর মানিক মিহু কে তেমন একটা ভয় ও পায় না কারন নীলা যখন মানিকের উপর চিল্লাচিল্লি করে এক মাত্র মিহুই তাকে বাঁচায়।

মানিক: নীলা আপু সরি

নীলা: ডাম্বো???? তুই ফেসবুক চালাস কবে থেকে আগে সেটা ‌বল

মানিক ভয়ে কিছু টা কেপে উঠলো। নীলা রাগি চোখে তাকিয়ে আছে মানিকের দিক।

নীলা: ঠিক আছে আমি কাউকে কিছু বলবো না কিন্তু তোর এই ফোন টা আপাতত আমার কাছে থাকবে আর শোন রেগুলার ৩ ঘন্টা এনাফ ফেসবুক চালানোর জন্য তাই না।

নীলা মুচকি হেসে কথা টা বললো মানিক ও হেসে দিলো। মানিক নীলার থেকে ফোন নিতে গেলেই নীলা বললো___

নীলা: ওয়েট ওয়েট এই স্নেহা সামথান টা কে।

মানিক:আপু প্লিজ [ব্লাশিং]

নীলা: তুই তো অনেক ফাস্ট ডাম্বো ওপ’স সরি তুই ফাস্ট হবি না তো কে হবে আমাদের কবি ও তো অনেক ফাস্ট ছিলো।

মানিক: আপু প্লিজ তুমি আর মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় কে নিয়ে কিছু শুরু করো না।

নীলা হাসতে লাগলো মানিক মাথা নিচু করে বসে আছে নীলা মানিকের কান টেনে বললো___

নীলা: বা রে ডাম্বো তুই ই ভবিষ্যতের মুখ উজ্জ্বল করবি।

মানিক: আর তোমার মতো মেয়েরা ভবিষ্যতের মুখ উজ্জ্বল এর থেকেও উপরে নিয়ে যাবে।

নীলা: কিছু বললি

মানিক: কি ক কই না তো।

নীলা:‌তোর ভাগ্য ভালো যে আমি কিছু শুনি নি আচ্ছা এখন বল মেয়েটা কোথায় থাকে।

মানিক:আপু কিছু জানি না বিশ্বাস করো এতো টুকু জেনে রাখো এই আইডি টা মেয়েটার ফেইক আইডি।

নীলা: কিহ!! ফেইক আইডি? যদি ছেলে হয়।

মানিক: ছেলে না আমি ড্যাম সিউর কারন ছেলে আর মেয়েদের কথা বলায় অনেক পার্থক্য আছে

নীলা: অনেক পেকে গিয়েছিস রে আচ্ছা ছবি টবি কিছু আছে?

মানিক: না কিছু নেই।

নীলা: রিয়েল আইডি ও চাস নি

মানিক: না আমি ওকে বিশ্বাস করি। আর আপু ওর সাথে আমি রিলেশন এ না ওকে এখনো আমার মনের কথা বলে উঠতে পারি নি।

নীলা: উমমম বুঝলাম।

নীলা মানিকের আইডি ঘুরতে লাগলো হঠাৎ নীলার চোখ গেলো মানিকের টাইমলাইনের বায়োর দিকে বায়ো যে লিখা “আপুর মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় ?”

নীলা দেখে হঠাৎ ই ঠোঁটের কোণে হালকা হাসি ফুটলো কিন্তু মানিক কে বুঝতে দিলো না। নীলা মানিকের হাতে ফোন দিলো___
‌।
নীলা: নে কথা বল তোদের টাইম নষ্ট করলাম।

মানিক: আচ্ছা টাটা

নীলা উল্টো দিকে ঘুরে হাঁটা শুরু করলো মানিকের রুম থেকে বেরিয়ে ও গিয়েছিলো কিন্তু হঠাৎ ই নীলার পা আটকে গেলো আবার উল্টো দিক হাটা শুরু করলো মানিকের রুমের উদ্দেশ্যে।

মানিক: তুমি আবার কিছু বলবা?

নীলা: এই দাড়া!!! দাড়া বলছি

মানিক কিছু টা ভয় পেয়ে গেলো নীলার কথা মতো দাঁড়িয়ে গেলো নীলা ঝাপ্টে মেরে জরিয়ে ধরলো মানিক কে। মানিক নিজেও বুঝলো না কি হয়েছে কিন্তু ওর ভালোই লাগছে তাই ওই ও জরিয়ে ধরলো।

নীলা: অনেক বড় হয়ে গিয়েছিস মেয়ে হিসেবে আমি অনেক লম্বা ৫.৬ আর তুই ক্লাস ১০ এর স্টুডেন্ট হয়ে আমার থেকেও লম্বা হুহ কাট্টি।

মানিক: হায়রে আপু তুমি ও না।

নীলা: শোন কখনো আমাকে ছেড়ে চলে যাবি না তো।

মানিক: তুই ই তো যাওয়ার জন্য উঠে পরে লেগেছিস বিয়ে করবি বিয়ে করবি।

নীলা: আরে ওটা তো…

মিহু:৩ দিনের জন্য।

মিহু ও মানিক: গায়ে হলুদ,বিয়ে,বৌ ভাত করে হাতে জুতা নিয়ে পালাবেন আপনি। [একসাথে]

তিনজন একসাথে হেসে উঠলো।

মিহু:নীলা তোর ফোন বাজছে না?

নীলা: রাত ১২ টায় কাল ও কল আসলো আজও ওয়েট তো দেখে আসি।

নীলা দৌড়ে যেয়ে ফোন‌ হাতে নিলো ফোনের স্ক্রিনে নাম উঠছে “আধা নান রুটি”। নীলা ফোন রিসিভ করতেই__

আদনান:হ্যালো মিস নীলা

নীলা: হ্যালো মিস্টার আধা নান রুটি

আদনান: দেখো আমার অনেক সুন্দর একটা নাম আদনান এইভাবে পচাবে না।

নীলা:ওয়েট আ সেকেন্ড আপনার কন্ঠ টা অনেক চেনা ‌চেনা লাগছে অনেক পরিচিত মনে হচ্ছে।

আদনান: কি বলছো আমি তো কখনো তোমার সামনে ও আসে নি [হতভম্ব হয়ে]

নীলা: কি জানি কিন্তু চেনা চেনা লাগছে কেনো জানি না।

আদনান: আজ তোমার সাথে কে ছিলো??

নীলা: ওওও মিস্টার হ্যান্ডসাম।

আদনান: না মানে নীলা তুমি বুঝে গিয়েছো

নীলা:বুঝে গিয়েছি মানে কি বুঝলাম?

আদনান: না আমি বলছিলাম যে কি বলছো তুমি

নীলা: ওহ হুম আজ আমার সাথে আমার ফাইনাল ক্রাশ ছিলো মিস্টার হ্যান্ডসাম ? একটু বেশি মুড ওয়ালা একটু ঝগুরোটে টাইপের তবুও আমি মানিয়ে নিবো সমস্যা নেই।

আদনান: আমি কিন্তু এমন মুড এইগুলো কিছু দেখাবো না আমার কথা ভেবে দেখতে পারো।

নীলা: ইশশশশ এই আপনি প্রতিদিন আমার ঘুম নষ্ট করেন কেনো হ্যা ফোন রাখেন হুহ



চলবে,,,,,

❣Drama_Queen_VS_Mr_Handsome❣
#Writer_Neela
#Part_8
.
.
ভোর সকালেই বেল বাজতে লাগলো। নীলা কান বালিশ দিয়ে কান চেপে দোমরে মুচরে শুয়ে আছে মুখে বিরক্তির ছাপ।

নীলা: এই ঝান্ডুবাম দেখ না কে এলো।

মিহু: সেটা তো জানা কথা অবশ্যই আমার যেতে হবে।

নীলা: উফফ এই শুক্রবারেও শান্তি নেই রে ? কোন রাক্ষস আসছে কে জানে।

মিহু: উফফ বেল বাজাতেই আছে থামার কোনো নাম গনজো ও নেই এই ওরনাটা কোথায় রেখেছি আবার।

নীলা: এই মিহু বেইল বাজানো অফ হয়ে গিয়েছি আয় ঘুমাই

মিহু: মানিকের গলা না ওয়েট আসছি।

মিহু দৌড়ে নিচে চলে গেলো। বাহিরে দাঁড়ানো মানুষ টাকে দেখতেই মিহুর মুখে হাসির রেখা ফুটে উঠলো।

মানিক: নীল ভাইয়া কেমন আছো তুমি?

মিহু: আরে নীল এতো সকাল সকাল কি মনে করে।

নীল: আরে আজ আমাদের বাসায় একটা অনুষ্ঠান আছে বিশেষ করে তোমাকে নিয়ে ভাবি

মিহু: আমাকে নিয়ে মানে??

নীল:আরে আজ ভাইয়ার জন্মদিন সন্ধ্যায় তাই তোমাদের বিশেষ ভাবে ইনভাইট করা হয়েছে আজ তোমাদের বিয়ের এনাউন্সমেন্ট ও করা হবে।

মিহু: ওহ আচ্ছা। কিন্তু এইসব কি এনেছো সাথে।

নীল: এই নাও এইটা ভাইয়ার বার্থডে ইনভেটেশন কার্ড আর এইসব উপহার।

মিহু: বার্থডে তো তোমার ভাইয়ার তো তোমরা আমাদের উপহার কেনো দিচ্ছো।

নীল: এইটা আমাদের পরিবারের নিয়ম নিকট আত্মীয় দের দাওয়াত দেওয়ার সময় তাদের জন্য বিশেষ উপহার দেওয়া।

নীল মুচকি হেসে মিহুর হাতে একটা ব্যাগ দিলো আর দিয়ে বললো “এই নাও এইটা তোমার এইটা পরে তুমি আজ আসবে” আর বাকিদের টা এইদিকে থাকুক সবার প্যাকেট এর উপর নাম লিখা আছে।

আম্মু:এইসবের কোনো দরকার ই ছিলো না বাবা।

নীল:আরে আন্টি এইগুলো সব চাচি করেছে আমি কি করবো বলো।

নীল সবার সাথে কথা বলছে আড়চোখে আশেপাশে তাকাচ্ছে মিহু নীলের দিকে তাকিয়ে বুঝতে পেরে হালকা হাসলো।

নীলা: আম্মুউউউউ!!! আমাদের রুম গুছানো শেষ আর কি কি গুছাতে হবে বলো।

নীলা লাল রঙের ধুতি পাজামা পড়া আর কাতানের হলুদ শর্ট কামিজ পড়া। লাল ওরনা টা কোমরে বেঁধে ঘাম মুছতে মুছতে আসছে নীল ওকে দেখলে হালকা বাঁকা হাসলো।

মিহু,মানিক ও অম্মু সবাই যেনো আকাশ থেকে পড়লো চোখ বড় বড় করে নীলার দিকে তাকিয়ে আছে। অথচ নীলা এমন ভাব করছে নীল এসেছে সে জানেই না পানির গ্লাস হাতে নিয়ে নীলের দিকে চোখ পড়তেই নীলা এমন ভাব করলো নীল নীলার কান্ড দেখে ঠোঁট কামড়ে পকেটে হাত একটু বাকা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে মনে মনে বললো “হুয়াট আ ড্রামা!!! ড্রামা কুইন একটা ? চোখ দেখে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে ঘুম থেকে উঠতে না চেয়েও জোর জাবোস্তি উঠেছে আর জলদি করে রেডি হয়ে ব্রাশ করে যে ফেস ধুয়েছিলো সেইটাকে বোঝানো হয়েছে সে ঘেমে গিয়েছে ঘরের কাজ করতে করতে”

নীলা: আরেএএএ আপনি কখন এলেন?[আয় হায় কত্তো কিউট আবারো ক্রাশ মিস্টার হ্যান্ডসাম টার উপরে ?]

নীল: তোমার ঘুম থেকে উঠার একটু আগেই আমি এসেছি।

নীলা: আমি তো সেই ৬ টায় ঘুম থেকে উঠেছি

মানিক হঠাৎ ই জোরে জোরে কাশতে শুরু করলো ওর কাশি যেনো কোনো মতে থামছেই না নীলা চোখ রাঙিয়ে মানিকের দিকে তাকিয়ে রাগি নিঃশ্বাস ফেলতে লাগলো নীলা আস্তে আস্তে মানিকের পাশে যেয়ে দাঁড়িয়ে___

নীলা:তোকে কতোবার বলেছি ঠিক মতো ঠান্ডার মেডিসিন নিয়ে নিতে কিন্তু আমার কোনো কথা ই তুই শুনিস না দেখছিস তো কিভাবে কাশছিস।

নীলা রাগি মুখে হাসার চেষ্টা করে মানিকের সাথে কথা বলছে আর নীলের দিকে তাকাচ্ছে আর মানিকের ঘারে জোরে জোরে থাপ্পর দিতে লাগলো মানিকের ঘার লাল হয়ে গিয়েছে ।

মানিক: হুম আপু আমি এখনি মেডিসিন খেয়ে আসছি তুমি আজ একটু আমার বেশি ই কেয়ার করছো।

নীলা:খুব দুষ্টু হয়েছিস তাই না তোর কেয়ার আমি করবো না তো কে করবে বল।

নীলা মানিকের কান মোচর দিলো মানিক ব্যাথায় উউ করে উঠলো। নীল বুঝতে পারছে নীলা এক প্রকার মানিক কে চাপা মাইর দিচ্ছে।

নীলা: আরে আপনি বসুন না।

নীল একটু ভয় পেয়ে আস্তে আস্তে সোফায় যেয়ে বসলো আর আশেপাশে পর্যবেক্ষণ করতে লাগলো বাসাটা একটু পুরানো স্টাইলের বললেই চলে তার উপর সোফা গুলো ব্যাতের আর বাড়ির অন্যান্য সরঞ্জাম ও একটু পুরানো স্টাইলের বেশ লাগছে নীলের কাছে। হঠাৎ কালকের কথা মনে পড়ে গেলো নীলের___

নীল: ভাই জানিস আজ নীলার সাথে দেখা হয়েছে।

মেঘ বারান্দায় দাঁড়িয়ে গ্ৰিন টি খাচ্ছিলো আর আকাশের চাঁদের দিকে বেখায়ালে তাকিয়ে ছিলো নীলের কথা শুনে মেঘ উত্তর দিলো___

মেঘ: নীলা কে?

নীল: আরে তোর জন্য যাকে দেখতে গিয়েছিলো।

মেঘ: ওহ ঐ যে ঐ দুষ্টু মেয়েটা।

নীল: হুম শুধু দুষ্টু না চরম দুষ্টু।

মেঘ: সত্যি বলতে আমার ওকেই ভালো লেগেছিলো।

নীল:ওহ আচ্ছা তো চাচি কে বললি না কেনো?

মেঘ: মায়ের উপর আমি কথা বলি না জানিস ই তো। আর যাই হোক না কেনো দু’জনেই তো মিডেলক্লাস ফ্যামিলির একই ফ্যামিলি আবার।

নীল: ভাই মিডেল ক্লাস তো কি হয়েছে ওরা কিন্তু অনেক ভালো বিশেষ করে মিহু কে কিন্তু আমার অনেক ভালো লেগেছে নীলাকে ভাবি ভাবি লাগতো না বেস্ট ফ্রেন্ড লাগতো মিহু কে ভাবি হিসেবে পারফেক্ট লেগেছে।

মেঘ: শোন যাদের একটু সহজ সরল মনে হয় না তারাই যতো পরিমান খারাপ আর আমার এমন চুপচাপ মানুষদের একদম ভালো লাগে না আরো একটা কথা বাসার অবস্থা দেখেছিস কি বাজে

নীল: কিন্তু বাসা তো অনেক সুন্দর ছিলো।

মেঘ: আমার একদমই ভালো লাগে নি।

নীল আর কিছু বলতে পারলো না মেঘের সাথে নীলের বাবার অনেক মিল অর্থাৎ তাদের পরিবারে মেঘ,মেঘের মা আর নীলের বাবা একই স্বভাবের।

নীলা নীলের মুখের সামনে চুটকি বাজাতেই নীলের ঘোর ভাঙলো নীলা চোখ ঠোঁট ছোট নীলের দিকে তাকিয়ে আছে নীল ভ্রু কুঁচকে নীলার দিকে তাকাতেই ___

নীলা: কি ভাবছিলেন।

আম্মু: নীলা তুই না অনেক কথা বলিস এইসব কিন্তু আমার মোটেও পছন্দ হচ্ছেনা।

নীলা: উফফ আম্মু বেয়াইদের সাথে মজা করবো না তো কার সাথে করবো।

নীলা আম্মুর দিকে তাকিয়ে কথা গুলো বলে নীলের দিকে তাকিয়ে দিলো এক চোখ টিপ নীল মুচকি হেসে অন্য দিকে তাকালো ‌

হঠাৎ ই আবার ও বেল বাজতে নীলা দৌড়ে দরজা খুলে দিলো আর যা দেখলো নীলা খুশিতে লাফ দিয়ে তাকে জরিয়ে ধরলো চিল্লিয়ে বলে উঠলো___

নীলা:আব্বুউউউউউউ

আব্বু ও নীলাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে আছে ধরবে নাই ই বা কেনো তার প্রিন্সেস বলে কথা।

আব্বু: কেমন আছিস আমার প্রিন্সেস

নীলা: আলহামদুলিল্লাহ আব্বু তুমি কেমন আছো?

আব্বু:এই তো আলহামদুলিল্লাহ।

আম্মু: বলছি বাহিরেই কি দাঁড়িয়ে থাকবে নাকি ভিতরেও আসবে।

আব্বু:আসছি আসছি

আব্বু নীলার কাঁধে হাত দিয়ে হাটছে আর নীলা খিলখিল করে হাসছে আব্বু নীলার কথা শুনে নীলার নাক টেনে দিলো। মিহু দৌড়ে যেয়ে আব্বুকে সালাম দিলো___

আব্বু: আরে আরে করছিস কি উঠ।

মিহু:সালাম ই তো করলাম।

আব্বু মিহুর দিকে তাকিয়ে বুকে জড়িয়ে নিলো মিহু কে।

মিহু:কেমন আছো ছোট আব্বু

আব্বু: বেশ আছি। আমার বড় প্রিন্সেস এর বিয়ের খবর শুনে আরো ভালো হয়ে গিয়েছি সেইজন্য ই তো এতো জলদি জলদি এলাম।

মিহু লজ্জা পেয়ে মাথা নিচু করে ফেললো। নীল আপনি মনে নীলার পরিবার কে দেখছে কতোটা হাসিখুশি পরিবার সবাই ফ্রেন্ডদের মতো নীলের হঠাৎ ই মন খারাপ হয়ে গেলো ভাবতে লাগলো অনেক কিছু___

“এমন কেনো হয় মনের মধ্যে হাজারো লুকানো কথা থাকতেও সবার সামনে হাসি খুশি থাকতে হয়। নীলের কাছে নীলের মা ওয়ার্ল্ড বেস্ট বাট বাবা? ওয়ার্ল্ড এর সবচেয়ে খারাপ বাবাদের তালিকায় উনি প্রথম উনি শুধু চিনে ভাবে টাকা দিয়ে পৃথিবীর সব সুখ শান্তি পাওয়া যায় কিন্তু টাকা ছাড়া ও যে পরিবারের মিলেমিশে থাকাটা যে কতোটা মজার সেটা তার বাবা কে নীল কখনো বোঝাতে পারে নি। নীলের বাবার কাছে নীল অনেক খারাপ আর মেঘ অনেক ভালো এইতো সেদিনের ঘটনা যখন মেঘ স্বাভাবিক ছিলো তার ভালোবাসা নেহা কে নিয়ে একদিন____

মেঘ: আজকের নাইট ক্লাবে কিন্তু অনেক মজা হয়েছে তাই না।
‌।
নীল: হুম সেইজন্য ই তো বলি লাইফ টা ই ক’দিন যে ক’দিন বেঁচে আছি অনলি চিজ

নীলের বাবার চোখ পড়তেই চোখ রাঙিয়ে নীলের দিকে তাকালো নীল কথা বলতে বলতে তার বাবার দিকে তাকাতেই মাথা নিচু করে ফেললো আর হাসি যেনো উধাও হয়ে গেলো ।

নীলের বাবা: কখন বাসায় এসেছো নীল

নীল: ড্যাড এইতো কিছু সময় হলো।

নীলের বাবা নীলের দিকে কঠোর চোখে তাকালো তারপর চোখ ঘুরিয়ে নিয়ে মেঘের দিকে হাসি মুখে তাকালো___

নীলের বাবা: কেমন আছো তুমি

মেঘ:চাচু ভালো আছি।

নীলের বাবা: ইনজয় করছো করো কিন্তু বড় হওয়ার পর কোনো প্ল্যান আছে

মেঘ: জি চাচু অবশ্যই বড়‌ হয়ে আপনার মতো হতে চাই।

নীলের বাবা: দ্যাট’স লাইক আ মাই সান গুড জব। এটলিস্ট নীলের মতো কিছু ভেবে রাখো নি। যার বাবার এতো টাকা সে এতো টাকার মধ্যে শুধু আমার কাছে চায় একটা গিটার হুয়াট আ মাইন্ড।

নীল:বাবা আমি ভুল কিছু করেছি বলে আমার মনে হয় না আমি তো শুধু মাত্র মিউজিশিয়ান ই হতে চেয়েছি।

নীলের বাবা: চুপ করো ইডিয়ট সবসময় একটা গিটার নিয়ে ঘোরাফেরা করে রাস্তায় রাস্তায় গান গেয়ে বেড়ায় রেড কার নিয়ে ফ্রেন্ডদের সাথে লং ড্রাইভ। ডিসগাস্টিং

নীল রাগ দেখিয়ে উল্টো ঘুরে হাটা শুরু করলো সে বুঝে উঠতে পারছে না মেঘ যে জায়গা থেকে এসেছে নীল ও সেই জায়গা থেকেই এসেছে তাহলে নীলের দিকে তাকিয়ে রাগ প্রকাশ কেনো আর মেঘের দিকে তাকিয়ে হাসি কেনো? এমনকি নীল এইটাও বলেছে তার স্বপ্ন পূরণের পাশাপাশি সে বিজনেস ও ফলো করবে তার বাবার একটাই কথা দুটো কাজ কখনো একসাথে হয় না।

নীলা: এই যে মিস্টার আপনি কোথায় হারিয়ে যান বলুন তো

নীল:কোথাও না।

নীলা: কি খাবেন বলুন।

নীল: উমমম চা…

নীলা আর কিছু বলার সুযোগ দিলো না নীল নিজেই বলতে শুরু করলো___

নীলা: কি চা খাবেন বলেন আদা চা,দুধ চা,লেবু চা,মরিচ চা,মালটা চা, তেঁতুল চা,তেতো চা কোনটা খাবেন বলেন।

নীল:থাক আমার চা খাওয়ার শখ মিটে গিয়েছে আর চা খাবো না।

নীলা: ওমা কেনো?

নীল: না এমনিতেই তুমি বরং আমার জন্য পানি ই নিয়ে আসো।



চলবে,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here