Ex_ব্রেস্টফ্রেন্ড_যখন_বউ♥ #পর্ব_৬

0
2591

#Ex_ব্রেস্টফ্রেন্ড_যখন_বউ♥
#পর্ব_৬
#লেখক_Ananta Sanny

হঠাৎ অনন্তর ফোনে একটা ম্যাসেজ আসলো….অনন্ত ফোনটা হাতে নিয়ে দেখে তিথি ম্যাসেজ করছে, অফিসের বস তাই নাম্বার টা সেভ ই ছিলো…
অনন্যা তখন অনন্ত কে জড়িয়ে ধরে আছে, আর অনন্তর তিথির দেওয়া ম্যাসেজ পড়ছে মনে মনে
,,
,,
,,
-এই যে স্যার আপনার পকেটে কয়েক জোড়া গোলাপ দিয়েছি, এটা তোমার জন্য, তোমাকে কিস খাওয়ার সময় ফুল গুলো দিয়েছি, আর তোমার ঠোঁট অনেক মিষ্টি… আর হ্যা মিস ইউ (লেখার শেষে স্যাড স্টিকার)…….
,,
,,
,,
-কি গো কিছু বলছো না যে (অনন্যা)
-হুমম হ্যা বলব (অনন্ত)
-কিইইই বলবা??
-খেতে দাও খুদা লাগছে অনেক
-ওকে বাবু টা যাও রেডি হয়ে আসো…
,,
,,
অনন্ত ফ্রেস হওয়ার জন্য ওয়াশরুমে গেলো…সেই সময় আবার তিথির ম্যাসেজ…
-কি করো??(তিথি)
,,
অনন্ত ভাবছে রিপ্লাই দিবে কি দিবে না…ভাবতেই ভাবতেই আরেকটা ম্যাসেজ…
-এই কিছু বলছো না কেনো??(তিথি)
-ফ্রেশ হচ্ছি ডিনার করবো এখন (অনন্ত)
-ওকে তাহলে আমিও খেয়ে নিচ্ছি..(তিথি)
-…..(অনন্ত আর কোনো রিপ্লাই করলো না)
,,
,,
খাওয়ার টেবিলে অনন্যা অনন্ত কে জিজ্ঞাস করলো…
-তোমাকে বেশ চিন্তিত লাগছে, কি হয়েছে??(অনন্যা)
-কই না তো, কিছু হয় নি (অনন্ত)
-মিথ্যা বলছো না তো??
-না সত্যি কিছু হয় নি
-হুমম তাড়াতাড়ি খেয়ে নাও…
,,
,,
খাওয়া শেষ করে, অনন্ত শুয়ে থেকে সেই তিথির কথাই ভাবছে। অনেক রাত হয়ে যায় তার চোখে ঘুম নেই..কারন এই রকম অবস্থা অনন্ত মেনে নিতে পাড়ছে না…
কিছুক্ষণ ভাবার পর অনন্ত মনে মনে সিদ্ধান্ত নিলো যে, সে চাকরি টা ছেড়ে দেবে এবং আগামীকালই দেবে…
,,
,,
,,
পরদিন সকাল বেলা…
অনন্ত অফিসে যায়, আর সোজা তিথির রুমে…
-ম্যাডাম আসতে পারি (অনন্ত)
-হ্যা আসো..(তিথি)
-……(অনন্তর রুমের মধ্যে প্রবেশ করলো)
-বসো
-……(অনন্ত কিছু না বলে বসলো, অনেকটা রাগান্বিত ভাব)
-কিছু বলবে??
-আমি এই জব টা করব না (অনন্ত)
,,
,,
অনন্তর কথা শুনে তিথি খুবই অবাক হয়, আর পানিও চলে আসে..
-কেন কি হইছে?? কেনো করবে না (কান্না ভেজা কন্ঠে)
-এমনি ভালো লাগে না (অনন্ত)
-কেন ভালো লাগে না??
-সেটা কি আপনাকে বলতে হবে?? আপনি কে হ্যা!?? যে সব আপনাকে বলতে যাবো?? আমি না করছি ব্যাস, জব করবো না
-আচ্ছা আমার কথাও শুনে রাখো, জব টা ছেড়ে দিয়ে তুমি বাসায় যাওয়ার আগেই আমার মৃত্যুর খবর পাবে
-আহহহহ,,, আপনি এমন করছেন কেনো?? আমাকে কি আপনি ভালো থাকতে দিবেন না??
-তুমি কি আমাকে ভালো থাকতে দিবে না??
-আপনি উল্টা পাল্টা কিছু করবেন না, আমি যাচ্ছি,,
-বললাম তো, বাসায় যাওয়ার আগেই খবর পাবে যে আমি আর নেই
-ওকে ওকে ছাড়বো না জব টা,(অনন্ত গরম হয়ে বলল, আর রুম থেকে বাইরে চলে গেলো)

,,
,,
আর এদিকে তিথি মিষ্টি করে একটু হাসলো…
,,
সেইদিন দুপুরে অফিসে একটা জরুরি মিটিং বসে, সেখানে সিদ্ধান্ত হয় অফিস থেকে ১২ জনকে, ১ মাসের জন্য চট্টগ্রাম যেতে হবে…অনন্তর নামও আছে সেই লিষ্টে..আর তিথি তো অবশ্যই যাবে…
,,
,,
,,
সেদিন অফিস শেষে…
অনন্ত বাইরে দাড়িয়ে ছিলো গাড়ির জন্য…
-গাড়িতে উঠো..(তিথি)
-না (অনন্ত)
-আচ্ছা আজ ভয় নেই..
-না আপনি যান,
-ওকে, আর হ্যা ১২ টার মধ্যে অফিসে আসবে..
-হুমমম
-বায়য় মিস ইউ(তিথি আস্তেই বলল)

,,
,,
,,
অনন্ত বাসায় ফিরে, অনন্যা কে তার কাজের কথা বলল…কথাটা শোনার পর অনন্যা একটু বেশি খুশি হলে। কি কারনে খুশি হলে সেটা অনন্ত বুঝতে পারে না…
,,
,,
পরদিন ১২ টার আগেই অনন্ত রেডি হয়ে অফিসে চলে আসে। দুপুরের খাওয়া অফিসে খেয়ে সবাই, বসে আছে। সবাই অপেক্ষা করছে তিথি ম্যাম এর জন্য, সে এখনো আসে নি…
,,
,,অনন্তকে কয়েকজন বলল ফোন করতে..চাপে পরে অনন্ত ফোন করলো…
-হ্যালো আর একটু অপেক্ষা করো আসছি আমি (তিথি)
অনন্ত কে কিছু বলতে দিয়েই একাই কথা বলে, নিজেই কলটা কেটে দিলো…

,,
,,
,,
কিছুক্ষণ পর তিথি আসলো..
-সরি সরি, বাসায় একটু প্রবলেম হইছিলো, তাই লেট হয়ে গেলো…সবাই তাহলে রেডি??(তিথি)
-জ্বি ম্যাম (সবাই মিলে)
-ওকে চলো..
,,
,,
তিথি অনন্তর সাথে সাথে থাকার চেষ্টা করে সবসময়, এখনও তাই করছে,,,,,, অনন্তর পাশেই।
-আচ্ছা কেমন লাগছে বললে না তো (তিথি)
-ভালো (অনন্ত অন্য দিক তাকিয়ে বলল)
-…(তিথি এটা দেখে মনে মনে খুবই রাগ করলো)

,,
,,
,,
তারা চট্টগ্রাম ট্রেনে যাবে….
সবাই স্টেশন এ অপেক্ষা করছে ট্রেন এর জন্য। প্রথমে হাইস এ বা বাসে যাওয়ার কথা ছিলো, কয়েকজন এর সমস্যার কারনে ট্রেনে যেতে হচ্ছে…
,,
,,
,,
দুপুর থেকে অপেক্ষা করতে করতে রাত হয়ে যায়…।পরে খোঁজ নিয়ে শোনা যায় ১০ টায় ট্রেন ছাড়বে। যাদের সমস্যা ছিলো, অন্যরা তাদের সমালোচনা করে ধুয়ে দিচ্ছে একদম…
,,
,,
তিথি সবাই কে কিছুক্ষণ পর পর গাইড দিচ্ছে যাতে সবাই একটু ঠান্ডা
থাকে..।
,,
,,
১০ টার পর পরই ট্রেন চলে আসলো…
সবাই এক এক করে ট্রেনে উঠলো, অনন্ত সবার আগে তার পেছনে তিথি..। বগিতে উঠার পর তাদের বুকিং করা ছিটের কাছে যায়। ওখানে গিয়ে…তিথি অনন্তর হাত ধরে একে ছিটে ধপাস করে বসে যায়…
,,
,,
,,
এমন করে টান দেওয়াতে অনন্তর হাতে একটু ব্যাথা পায়…বস হয় তাই কিছু বলতে পাড়লো না…শুধু বলল
-এভাবে টান দিলেন কেনো??(অনন্ত)
-এত পথ যাবো, কাছের মানুষ যদি কাছে না থাকে, তাহলে কেয়ার করবে কে??(তিথি)
-এগুলো ঠিক না, আমি কিন্তু অন্য কারও
-হ্যা জানি আমি, আর আমি অন্য কারও না, আমি শুধু আপনার
-এত পাগলামি আসে কোথা থেকে, আপনার বিয়ে হলেই তো সব ভুলে যাবেন, তাহলে এখন এমন করছেন কেনো?
-নাহহহ বিয়েই হবে না, আবার ভুলে যাবো কিভাবে??
-মানে??
-কিছু না, এখন চুপচাপ বসে থাকেন..,,
,,
,,
রাতের খাওয়া ট্রেনেই সেড়ে নিলো..
অনন্ত চুপচাপ বসে আছে, তিথির থেকে একটু দূড়েই, যাতে তিথির সাথে তার শরীরে টাচ না লাগে…
,,
,,
অনন্ত কি ভেবে যেনো অনন্যাকে ফোন দেয়,,, অনন্যার নাম্বার ব্যস্ত দেখায়, অনেকবার ফোন দেয়, তাও সেই ব্যস্ত…অনন্ত কিছু না ভেবে আর কল করে না…
,,
,,
হঠাৎ তিথি বলে
-এই শোনো আমার খুব ঘুম পাচ্ছে (তিথি)
-তো ঘুমান পারমিশন নেওয়ার কি আছে??(অনন্ত)
-আপনার কাধে মাথা রেখে ঘুমাবো তো, তাই পারমিশন নিয়ে নিলাম (এটা বলেই, অনন্তর কাধে তিথি মাথা রাখলো..
-এই ম্যাডাম, এ এ (অনন্ত আর কিছু বলতে পারলো না)
,,
,,
রাতে বৃষ্টি শুরু হওয়ার খুব ঠান্ডা পড়ে…। ঠান্ডায় তিথি জড়ো সড়ো হয়ে যায়। আর অনন্তকে আরও বেশি করে জড়িয়ে ধরে…
,,
,,
অনন্ত তিথির দিকে তাকায়,, আর দেখে
-একটা বাচ্চার মতো দেখাচ্ছে তাকে..মনে হয় কিছুই বোঝে না, কিন্তু এটা যে শয়তানের একটা হাড্ডি সেটা হাড়ে হাড়ে টের পাওয়া যায় (অনন্ত মনে মনে বলল)
,,
,,
তিথি ঠান্ডায় আরও জড়ো সড়ো হয়ে যায়। এটা দেখে অনন্ত তিথির ব্যাগ থেকে একটা ওড়না বের করলো…আর তিথির গায়ের উপর দিলো….
অনেক রাত হয়েছে, অনন্তরও ঘুম পাচ্ছে…অনন্ত ও ঘুমিয়ে যায়…
,,
,,
,,
ভোরের দিকে তাদের গন্তব্যে ট্রেন গিয়ে থামে…একজন এসে তিথি কে ডাকে..
-ম্যাম ম্যাম
তিথি আর অনন্ত দুজনই জেগে উঠে আর দেখে, দুজনই অনেক কাছাকাছি, আর জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে ছিলো…যে ডেকে দিলো সে এই কান্ড দেখে মুচকি হাসলো…
,,
,,
ছেলেটি চলে যাওয়ার পর,,, তিথি মুচকি হাসলো আর বলল
-থ্যাংকস (তিথি)
-কি জন্য?? (অনন্ত)
-আমার কেয়ার নেওয়ার জন্য
-কই আপনার কেয়ার নিলাম??
-এই যে আমার গায়ের উপর ওড়না, তার প্রমান
-…..(অনন্ত কিছু বলল না)
-রাতে অনেক ঠান্ডা ছিলো, হুহ ভাগ্য ভালো তুমি পাশে ছিলে, না হলে খুব কষ্ট হতো…
-একসময় একবারও পাবেন না
-হাত পা কেটে রেখে দিবো যাতে, সেগুলো আমার কেয়ার না নিতে পারে…(তিথি গরম হয়ে বলল)

চলবে

?কেমন হয়েছে জানাতে ভুলবেন না?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here