Mr_Arrogant ? #The_Addiction_Of_Love,#Part_1_2

0
4808

#Mr_Arrogant ?
#The_Addiction_Of_Love,#Part_1_2
#Writer_Sanjana_Shabnam_Fahmida
01

হাতে ওয়াইনের বোতল নিয়ে ঢলতে ঢলতে হাটছে সুবহা। দেখেই বুঝা যাচ্ছে যে ও পুরো ড্রাঙ্ক।

আজকে নিজের সবচেয়ে কাছের মানুষের কাছ থেকে সব চেয়ে বড় ধোঁকা পেয়েছে ও। একজন যাকে ও নিজের জীবন থেকেও বেশি ভালোবাসে আরেকজন যাকে ও নিজের বোনের থেকেও বেশি ভেবেছে। দুজন মিলে সুবহাকে এমন ধোঁকা দিয়েছে যা ও স্বপ্নেও কল্পনা করে নি।

? Some Time Ego ?

অফিসে বসে কাজ করছে সুবহা এমন সময় আননোন নাম্বার থেকে কল আসলো।

সুবহাঃ হ্যালো!

পুলিশঃ মিস সুবহা বলছেন?

সুবহাঃ জ্বি।

পুলিশঃ একচুয়ালি আমরা ***** হোটেলে রেট লাগিয়েছিলাম তখন সবার সাথে দুজন কে আরেস্ট করেছি। তারা দাবি করছে যে তারা স্বামী স্ত্রী কিন্তু আমাদের বিশ্বাস হচ্ছে না। কারন যদি তারা স্বামী স্ত্রী হতো তাহলে এরকম নোংরা হোটেলে কেন আসবে। ছেলেটার ফোনে আপনার নাম্বার টা প্রথমে ছিল তাই আপনাকে অনুরোধ করছি এসে তাদের পরিচয় টা আমাদের দিতে।

কথা গুলো বলেই ইন্সপেক্টর কল কেটে দিল। শরীরে ঝিম ধরে যাচ্ছে সুবহার। হাত পা সমানে কাঁপছে ওর। কি শুনলো এই মাত্র ও। আভি সত্যিই কোন মেয়ের সাথে? আর ভাবতে পারছে না সুবহা। দ্রুত বেরিয়ে গেল ও পুলিশ স্টেশনের উদ্দেশ্যে।

? In Police Station ?

আভিঃ what the hell আমাদের এভাবে বসিয়ে রাখার মানে কি। ( রেগে)। আমরা স্বামী স্ত্রী কতবার বলবো আপনাদের।

ইন্সপেক্টরঃ একটু ধৈর্য ধারন করেন মি. আভি আমরা প্রমানের জন্য একজন কে আসতে বলেছি সে এসে আপনাদের বেল করিয়ে দিলেই আপনাদের যেতে দেওয়া হবে।

আভি কিছুটা ঘাবরে যায় ইন্সপেক্টর এর কথায়। তারপর কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বলে উঠে ও।

আভিঃ ক কাকে ফোন করেছেন?

সুবহাঃ আমাকে! ( ভাঙা কন্ঠে)

সুবহার কন্ঠে আভি চমকে পেছনে তাকালো। সুবহাকে পুলিশ স্টেশনে দেখে ভয়ে গলা শুকিয়ে আসছে ও।

সুবহা ছলছল চোখে তাকিয়ে আছে আভির দিকে আভির পাশেই রিশা মাথা নিচু করে বসে আছে।

ইন্সপেক্টরঃ মিস সুবহা?

সুবহা নিজেকে সামলে ইন্সপেক্টর এর সামনে গিয়ে বলল,,

সুবহাঃ জ্বি,,,

ইন্সপেক্টরঃ তা উনারা কি সত্যিই স্বামী স্ত্রী? নাকি হোটেলে অন্য কোন মতলবে উঠেছিল?

সুবহা চোখ ভরা ঘৃনা নিয়ে আভি আর রিশার দিকে তাকালো। ওরা মাথা নিচু করে আছে।

সুবহাঃ ওরা সত্য বলছে they are husband and wife. কোন খারাপ মতলবে ওরা হোটেলে উঠে নি। আসলে রিশা রেগে বাড়ি থেকে বের হয়ে গিয়েছিল। ফেমিলির কাউকে জানাতে চায় নি বলে ও হোটেলে গিয়েছে। ও হয়তো বুঝতে পারে নি যে ওই হোটেলটা সুবিধার না। আভি ওকে মানানোর জন্য গিয়েছিল এর বেশি কিছু না।

সুবহার কথায় আভি আর রিশা দুজনেই হতভাগ। কোথায় সুবহা ওদের শাস্তি দিবে তা না ও ওদের বাঁচিয়ে দিচ্ছে মিথ্যা বলে।

ইন্সপেক্টরঃ আপনি কি হন উনাদের??

সুবহা ছলছল চোখে আভির দিকে তাকিয়ে বলল।

সুবহাঃ আ আমি ওদের বন্ধু,, শুধু বন্ধু।

ইন্সপেক্টরঃ আপনাকে এখানে সাইন করতে হবে।

সুবহা ইন্সপেক্টর এর দেখানো কাগজে সাইন করে দিল। সব ফরমালিটি শেষ করে ওরা বেড়িয়ে আসলো পুলিশ স্টেশন থেকে।

সুবহা আগে আগে হাঁটছে আর আভি ওর পেছনে ছুটে আসছে।

আভিঃ স সুবহা আমার কথা শুনো সুবহাআআ দেখ আমাকে এক্সপ্লেইন করার একটা সুযোগ দাও প্লিজ।

সুবহা আভির কোন কথায় কান না দিয়ে সোজা হাঁটছে আর ওর চোখ মুছছে।

আভি দৌঁড়ে এসে সুবহার হাত ধরে ওকে আটকালো সাথে সাথে সুবহা আভির গালে থাপ্পড় বসিয়ে দেয়। থাপ্পড় খেয়ে আভি যেন স্তব্ধ হয়ে গেছে। ও বিশ্বাস করতে পারছে না যে সুবহা ওর গায়ে হাত তুলেছে।

সুবহাঃ Don’t you dare to touch me… ( চিৎকার করে) তোমার এই নোংরা স্পর্শে আমাকে অপবিত্র করার চেষ্টা করবে না।

আভিকে থাপ্পড় মারায় রিশা আভির কাছে এগিয়ে আসে তারপর নেকামো করে ওর গালে হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বলে।

রিশাঃ এটা কি করলে সুবহা?? আভির গায়ে কোন সাহসে হাত তুললে তুমি??

রিশার কথায় সুবহার রাগ আরো বেড়ে যায় সাথে সাথে রিশার হাত টেনে ওর গালেও চর বসিয়ে দেয় সুবহা।

সুবহাঃ কোন সাহসে আমার হবু বরের সাথে রুমডেটে এসেছিস তুই হ্যাঁ। তুই না আমার বেস্ট ফ্রেন্ড? লজ্জা করে না নিজের বোনের মত ফ্রেন্ডের হবু বরের উপর নজর দিতে। কতটা নির্লজ্জ বেহায়া হলে মানুষ এমনটা করতে পারে ভেবে পাচ্ছি না আমি।

রিশাঃ ত তুমি আমার গায়ে হাত তুললে সুবহা? How dare you,,

রিশা সুবহার গায়ে হাত তুলতে নিলেই আভি ওর হাত ধরে ঘুরিয়ে চর বসিয়ে দিল।

আভিঃ তোর সাহস তো কম না সুবহার দিকে হাত বারাস তুই। ( রেগে) মেরে এখানেই পুতে রাখবো বলে দিলাম।

রিশাঃ আভি ও তোমাকে থাপ্পড়,,,,

আভিঃ এটা আমাদের পার্সোনাল ইশু তোর এখানে নাক গলাতে হবে না। তুই জাস্ট আমার একদিনের বেড পার্টনার তাই নিজেকে এতো বড় মনে করিস না। সুবহা আমার হবু স্ত্রী ওর দিকে হাত বাড়ানোর সাহস দেখাবি নি এর পর থেকে।

রিশা অবাক আভির কথায়। এতোদিন চেষ্টা করেও কেন আভিকে সুবহার থেকে ফিরাতে পারছে না বুঝতে পারছে না ও।

আভি আবার সুবহার দিকে এগিয়ে আসতেই সুবহা হাত দিয়ে বাধা দিয়ে বলতে শুরু করে।

সুবহাঃ প্লিজ আভি আর না। তোমার আর কোন নাটক সহ্য করতে পারবো না আমি। তুমি যেই ক্ষত টা আমাকে দিয়েছো সেটা মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আমার সাথে থাকবে‌। তোমার এই মিথ্যা ভালোবাসা এই ধোঁকা সহ্য করার ক্ষমতা আমার নেই।

আমি চাইলে ফিরে যেতে পারতাম তোমাকে এখানে এই অবস্থায় ফেলে কিন্তু যাইনি। ভেবো না যে তোমাকে ভালোবাসি বলে,,, একদম না। এখন থেকে আমার মনে শুধু তোমার জন্য ঘৃনা থাকবে ভালোবাসা না। আমি এজন্য মিথ্যা বলেছি কারন আমি চাই না যে তোমার কু কর্মের কথা আন্টি জানুক আর কষ্ট পাক। ওনার কথা ভেবে তোমাকে প্রটেক্ট করেছি আমি।

আমি কালকেই আন্টিকে জানিয়ে দিব তোমার সাথে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখা আমার পক্ষে সম্ভব না। তোমার মত ক্যারেক্টারলেস মানুষের সাথে বিয়ে করা থেকে গলায় দড়ি দিয়ে মরে যাওয়া শ্রেয়।

সুবহা আর কাউকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে কান্না করতে করতে চলে যায়।

আভি অনুতপ্ত ভাবে তাকিয়ে আছে সুবহার যাওয়ার পথে।

রিশাঃ ফাইনালি আমি যা চেয়েছি তা পেতে চলেছি। এখন আভির জীবন থেকে সুবহা আউট আর রিশা ইন। ( মনে মনে শয়তানি হেসে)

? In present ?

চারোদিকের নিস্তব্ধতার মাঝে হেটে চলছে সুবহা। হঠাৎ হোঁচট খেয়ে পড়ে গেল ও।

সুবহাঃ ওয়াও আমি তো আজকাল পথে পথে হোঁচট খাচ্ছি,,, ( মাতাল ভাবে)। নিজেকে সামলা সুবহা। তোকে সামলানোর জন্য আল্লাহ এঞ্জেল পাঠাবেন না। ছোট থেকে একাই পথ চলেছিস বাকিটা পথ‌ও একাই চলতে হবে। no one is here for you..

সুবহা নিজের হিল জুতো গুলো খুলে হাতে তুলে নিল তারপর ওয়াইনের বোতলে শেষ চুমুক দিয়ে উঠে দাঁড়ালো।

ঢলতে ঢলতে হাটছে আর ওয়াইনের বোতলে চুমুক দিচ্ছে সুবহা। হয়তো পেইন ভুলানোর জন্য এটাই সবচেয়ে কার্যকরী ঔষধ।

হঠাৎ গাড়ির হর্ন শুনতে পেল ও। চোখে গাড়ির লাইটের আলো লাগছে ওর। চোখ টেনে বুঝার চেষ্টা করছে আসলে সামনে কি আসছে। গাড়ির ড্রাইভার জোরে জোরে হর্ন দিচ্ছে তাও সুবহা মাঝ রাস্তা থেকে সরে আসছে না।

সুবহার চোখে সব ঝাপসা ঝাপসা লাগছে। সামনে গাড়ি নাকি ট্রেন সেটা বুঝার ক্ষমতা হয়তো হারিয়ে ফেলেছে ও।

গাড়িটি সুবহার সাথে ধাক্কা লাগার আগেই থেমে যায় তাও সুবহা ব্যালেন্স না রাখতে পেরে নিচে পরে যায়।

গাড়িতে বসে ল্যাপটপে অফিসের কাজ চেক করছিল র‌‌ওশন রায়জাদা। হঠাৎ এভাবে ব্রেক করায় বিরক্ত হয়ে ও অনয় ( অনয় র‌‌ওশনের ম্যানেজার এতক্ষণ ওই ড্রাইভ করছিল) জিজ্ঞেস করে।

র‌‌ওশনঃ What the hell এভাবে কেউ কার ব্রেক করে। আদৌ ঠিকঠাক গাড়ি চালানো শিখতে না। ( রেগে)

অয়নঃ বস আমার দোষ না সামনে কে যেন চলে এসেছিল তাই জোরে ব্রেক করতে হয়েছে। মানুষটি হয়তো আঘাত পেয়ে পরে গেছে।

র‌‌ওশনঃ যাও গিয়ে দেখো মরে গেছে নাকি বেঁচে আছে। যত্তসব মুর্খের দল।

অয়নঃ জ্বি বসস।

অয়ন দ্রুত নেমে সামনে যায়। সামনে একটি মেয়ে পরে আছে দেখে অবাক হয় ও।

অয়নঃ আপনি ঠিক আছেন?

অয়ন গিয়ে সুবহাকে সোজা করতেই চমকে যায়।

অয়নঃ এটাতো সুবহা ম্যাম ( অবাক হয়ে)।

অয়ন দ্রুত উঠে র‌‌ওশনের কাছে যায়। তারপর বলতে শুরু করে,,,

অয়নঃ বস ওই মেয়েটা ওই মেয়েটা ( আর বলতে পারছে না)

র‌‌ওশনঃ কি ওই মেয়েটা?? আমাকেই বের হতে হবে রিডিউকিলাস।

র‌‌ওশন কার থেকে বেরিয়ে সুবহাকে দেখে অবাক হয়।

র‌‌ওশনঃ সুবহাআ??

র‌‌ওশন দ্রুত সুবহার পাশে গেল। সুবহার গা থেকে ওয়াইনের গন্ধ আসছে। আর পাশেই বোতল দেখে র‌‌ওশন বুঝতে পারে যে সুবহা ড্রাঙ্ক। হালকা জ্ঞান ফিরছে সুবহার। পিটপিট করে চোখ খুলেই সামনে র‌‌ওশনকে দেখছে কিন্তু ভাবছে এটা আভি।

সুবহাঃ ইউউউ চিটার,,,, তুমি আবার আমার সামনে আসার সাহস কিভাবে করলে স্টে আওয়ে ফ্রম মি। ( র‌‌ওশনকে সরিয়ে)

সুবহার ব্যবহারে র‌‌ওশন অবাক হচ্ছে কারন ওকে সুবহা চিটার বলছে।

র‌‌ওশনঃ কি বলছ এগুলো মাথা ঠিক আছে তোমার। আর তুমি এতো রাতে একা এই অবস্থায় কেন সুবহা। কি হাল করেছ নিজের?

সুবহাকে কোলে তুলে র‌‌ওশন গাড়ির দিকে এগোয়। সুবহা র‌‌ওশনের বুকে কিল ঘুষি দিচ্ছে ইচ্ছে মত।

সুবহাঃ you cheated on me… You r a bloody cheater… I hate u I just hateeee uuu. (মাতাল ভাবে)

র‌‌ওশন সুবহাকে ওর পাশের সিটে বসালো তারপর অয়নকে বলল গাড়ি আভিদের বাড়ির দিকে ঘুরাতে।

হঠাৎ সুবহার খেয়াল থেকে আভি সরে গেল এখন ও ভাবছে ওর পাশে অচেনা কেউ বসে আছে। ওর কাছে লোকটিকে র‌‌ওশনের মত লাগছে। ( মাতাল হলে যা হয়। টিভিতে দেখেছি কেউ ভাববেন না আমি ড্রিঙ্ক করি ?)

সুবহাঃ এই আপনি কি মি এরোগেন্ট। না না আপনি উনি হতে যাবেন কেন আপনি তো কতোওও ভালো ( র‌‌ওশনের গাল টেনে)

র‌‌ওশন বিরক্ত হয়ে সুবহার দিকে তাকালো।

সুবহাঃ আচ্ছা আপনি ওই খারুস আক্রু র‌‌ওশন রায়জাদা কে চিনেন ?

র‌‌ওশন এবার শকড্ প্লাস রেগে সুবহার দিকে তাকালো।

সুবহাঃ মানুষ কতটা রুড এরোগেন্ট হতে পারে তাকে না দেখলে বুঝতাম‌ই না। এক নাম্বার ডেভিল তেমন বদের হাড্ডি সারাদিন মুখটাকে বাংলার পাঁচ বানিয়ে রাখে । ( ভেংচি কেটে)

ব্যাটা বুড়ো হয়ে যাচ্ছে তাও বিয়ে করে না। ওওও নো নো এমন খারুস আক্রু এরোগেন্ট ছেলেকে কে বিয়ে করবে হাহ। একটু হাসেও না জন্মের সময় হয়তো কেউ মুখে মধু দেয় নি।

র‌‌ওশনঃ সুবহা শাট্ ইউর মাউথ। আমার রাগ তুলো না কারন আমার রাগ সম্পর্কে তোমার কোন ধারনা নেই।

সুবহাঃ আরে আপনি রাগবেন কেন কথায় কথায় রেগে যাওয়া তো খারুস রায়জাদার কাজ। আমি আদৌ এটা বুঝি না যে উনি মানুষ নাকি এলিয়েন।

র‌‌ওশন নিজের রাগ কন্ট্রোল করার চেষ্টা করছে আর এইদিকে সুবহা র‌‌ওশনের সার্টিফিকেট তৈরি করছে বকে।

অয়ন ভয়ে ভয়ে গাড়ি চালাচ্ছে ও জানে র‌‌ওশনের রাগ সম্পর্কে তাই ভয় হচ্ছে ওর সুবহার জন্য। আল্লাহ জানে বেচারির কপালে কি আছে।

সুবহার বকবক সহ্য করতে না পেরে র‌‌ওশন আচমকা সুবহাকে টেনে ওর ঠোঁটে নিজের ঠোঁট বসিয়ে দেয়। সুবহা আচমকা এমন হ‌ওয়ায় অপ্রস্তুত হয়ে পরে। সুবহা সরে আসতে চাইলে র‌‌ওশন ওর কোমর জড়িয়ে ওকে নিজের আরো কাছে আনে। রাগের বসে এমনটা করলেও হঠাৎ ঘোরের মাঝে হারিয়ে যাচ্ছে র‌‌ওশন।

সুবহা র‌‌ওশনের কলার খামছে ধরেছে চোখ বন্ধ করে। হঠাৎ মিররে পেছনের দৃশ্য দেখে চোখ বড় বড় হয়ে গেছে অয়নের সাথে সাথে গাড়ি জোরে ব্রেক করলো ও।

আচমকা ব্রেক হ‌ওয়ায় র‌‌ওশন সুবহাকে নিয়ে সামনে ঝুঁকে পরে। র‌‌ওশন সুবহাকে ছেড়ে রাগি ভাবে অয়ন কে বলল।

র‌‌ওশনঃ গাড়ি চালানো কি ভুলে গেছ অয়ন।

অয়নঃ ব বস আভি স্যারদের ব বাসার বাইরে পৌঁছে গেছি ( কাঁপা গলায়)

র‌‌ওশনঃ বাড়ির দিকে একবার সুবহার দিকে একবার তাকিয়ে কিছু একটা ভেবে অয়নকে বলল।

র‌‌ওশনঃ গাড়ি ঘুরিয়ে রায়জাদা ভিলায় ব্যাক করো।

অয়ন তাই করলো। সুবহা ঢলে পরেছে র‌‌ওশনের বুকে। র‌‌ওশন সুবহার দিকে গভীর ভাবে তাকিয়ে ওকে নিজের বুকে জড়িয়ে নেয়।

অয়নঃ ছিঃ বস এটা কি করেছে। সুবহা ম্যাম কে কিস করেছে। নিজের ভাইয়ের হবু স্ত্রী কে। আভি স্যার জানলে ভয়ঙ্কর যুদ্ধ শুরু হবে এদের মাঝে। ( মনে মনে)

To be continued…..

#Mr_Arrogant ?
#The_Addiction_Of_Love
#Writer_Sanjana_Shabnam_Fahmida
#Part_2

অয়নঃ ছিঃ বস এটা কি করেছে। সুবহা ম্যাম কে কিস করেছে। নিজের ভাইয়ের হবু স্ত্রী কে। আভি স্যার জানলে ভয়ঙ্কর যুদ্ধ শুরু হবে এদের মাঝে। ( মনে মনে)

গাড়ি থামল রায়জাদা ভিলার সামনে। র‌‌ওশন গাড়ি থেকে নেমে সুবহাকে কোলে তুলে ভিতরে প্রবেশ করে।

অয়নের তো বুক ধকধক করছে। পুরো বাড়ি খালি শুধু সুবহা আর র‌‌ওশন ভিতরে।

অয়নঃ বস সুবহা ম্যামের সাথে উল্টা পাল্টা কিছু করবেন না তো। সুবহা ম্যাম তো ড্রাঙ্ক যদি কিছু,,, ( ভয়ে ভয়ে )

না না এসব কি ভাবছি আমি। আমাদের র‌‌ওশন স্যার তো এরকম না। উনি আজ‌ও কোন মেয়ের সাথে মিস বিহেভ করেন নি তার উপর উনিতো মেয়েদের থেকে একশ হাত দূরে থাকেন। উনি এরকম কিছু করবেন না আমার বিশ্বাস আছে। ( নিজেকে শান্তনা দিয়ে)

তাহলে উনি ম্যামকে নিয়ে নিজের বাড়িতে আসলেন কেন?? উনিতো পারতেন ম্যামকে আভি স্যারদের বাড়ি দিয়ে আসতে। বাড়ি অবদি পৌঁছে ও কেন ফিরে আসলেন। ( কনফিউজড হয়ে)

আআআ আর ভাবতে পারছি না। আমার এখানে মাথা ঘামিয়ে লাভ নেই। দুই ভাইয়েরটা দুই ভাই বুঝুক আমি যাই।

নিজের কনফিউশন নিয়েই অয়ন গাড়ি ব্যাক করে চলে যায়।

র‌‌‌ওশন সুবহাকে নিজের রুমে নিয়ে এসে ওর বেডে শুইয়ে দেয়। সুবহা বেঘোরে ঘুমাচ্ছে। র‌‌ওশন অনেকটা ঝুঁকে আছে সুবহার দিকে। র‌‌ওশনের নিঃশ্বাস সুবহার মুখে পরছে এতে সুবহার কপালের চুল গুলো হালকা নরছে।

আজ প্রথম বারের মত সুবহাকে এতো কাছ থেকে দেখছে র‌‌‌ওশন। সুবহার গায়ের রং চাপা কিন্তু চেহারায় অদ্ভুত মায়া ওর। ঠিক বাম গালে একটা কালো তিল আছে সুবহার তার উপর ঠোঁটেও তিল।

এই তিলটার জন্যই র‌‌ওশন তখন নিজের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছিল। যখন সুবহা অবিরাম কতা বলছিল ওর দিকেই তাকিয়ে ছিল র‌‌ওশন অপলক। তখন নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে নি ও তাই এমন ভুল করে ফেলেছে।

ঘুমের মধ্যেই সুবহা র‌‌ওশনের কলার ধরে আছে। র‌‌ওশন সুবহার দিকে আরেকটু ঝুঁকে ওর গালের তিলটায় ঠোঁট ছোয়ালো। তারপর ঠোঁটের উপরের তিলটায় হালকা ঠোঁট ছোয়ালো। ঘোরের মধ্যে হারিয়ে যাচ্ছে র‌‌ওশন এমন লাগছে সুবহা ওকে টানছে।

র‌‌ওশন সুবহার আরেকটু কাছে যেতেই কোথাও একটা বাধা পরে ও।

র‌‌ওশনঃ এটা আমি কি করছি এটা ঠিক না। সুবহা নিজের হুশে নেই কিন্তু আমিতো আছি। আমি কোন ধরনের ভুল করতে পারবো না।

র‌‌ওশন সুবহার থেকে সরে এসে ওর গায়ে ব্ল্যাঙ্কেট টেনে দেয়।

র‌‌ওশন ওর কাবার্ড থেকে নিজের নাইট সুট বের করে ওয়াশরুমে ঢুকে পড়ে।

[ র‌‌ওশন রায়জাদা। ফ্যামিলি বলতে কেউ নেই। এক কথায় বলতে গেলে ফ্যামিলি থেকেও নেই। আভি র‌‌ওশনের ছোট আব্বুর ছেলে। এক বছরের ছোট আভি র‌‌ওশন থেকে। ওদের মাঝের সম্পর্ক তেমন একটা ভালো না। আভির আব্বু র‌‌‌ওশনকে শুধু নিজের টাকার চাহিদা পুরনের মেশিন ভাবে। সবার জন্য র‌‌ওশন একজন ডিসিপ্লিন, স্ট্রিক্ট, রুড এরোগেন্ট পার্সন। সবাইকে শাসনে রাখে র‌‌ওশন। ওর অফিস থেকে ধরে বাসার কাজের লোকেরাও র‌‌ওশনকে ভয় পায়।

মেয়েরা র‌‌‌ওশন বলতে পাগল কিন্তু র‌‌‌ওশনের মেয়েদের প্রতি কোন আসক্তি নেই। ওর যত আসক্তি সব সুবহাকে ঘিরে। ]

ফ্রেশ হয়ে এসে র‌‌ওশন গিয়ে সোফায় বসে পরে। ওর চোখ স্থির হয়ে আছে সুবহার দিকে। কেন যেন নিজের নজর সরাতে পারছে না ও সুবহার উপর থেকে।

সুবহাকে দেখতে দেখতে কখন র‌‌ওশন ঘুমের রাজ্যে হারিয়ে যায় ও বুঝতে ও পারে না।

? In Morning ?

ভোরের আলো চোখে পরতেই ঘুম ভেঙে গেল সুবহার। আড়মোড়া ভেঙ্গে উঠে বসলে ও। মাথাটা এখনো ঝিম ধরে আছে। নিজের মাথা চেপে ধরে কতক্ষন বসে থাকলো ও।

হঠাৎ চোখ তুলে তাকাতেই চমকে উঠে সুবহা,,,, এটা কোথায় ও ?( আতকে)

বিশাল রুম আর পুরো রুম সাদা রং দিয়ে সাজানো। দেয়াল থেকে ধরে বেডশিট টাও সাদা।

সুবহাঃ এটা কোথায় আমি আ আর এখানে কেন? কার বাসা এটা। ( অবাক হয়ে)

সুবহা লাফ দিয়ে উঠে নিজের জামা কাপড় চেক করে নাহ সব ঠিকঠাক আছে। স্বস্তির নিশ্বাস নিল সুবহা।

সুবহা বেডে বসে রাতের কথা মনে করার চেষ্টা করছে।

হঠাৎ কিছু একটার শব্দে ও দরজার দিকে তাকালো। একজন ভদ্র মহিলা ট্রে ভর্তি খাবার নিয়ে রুমে আসছেন।

মহিলাঃ গুড মর্নিং ম্যাডাম আমি ন্যান্সি এই বাড়ির কেয়ার টেকার। স্যার বলেছে আপনি উঠলে আপনাকে আগে লেবুর শরবত দিতে নিন। ( গ্লাস এগিয়ে দিয়ে)

সুবহাঃ স্যার ! কোন স্যার? ( অবাক হয়ে)

ন্যান্সিঃ র‌‌ওশন স্যার।

র‌‌ওশনের নাম শুনেই সুবহার মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পরলো।

সুবহাঃ র র র‌‌ওশন ! তার মানে এটা মি. র‌‌ওশন এর বাড়ি আর আমি এখানে সারারাত ড্রাঙ্ক অবস্থায় ছিলাম?? ( ধপ করে বসে পরে) বাঘের গুহায় সারারাত তার উপর ড্রাঙ্ক অবস্থায় !

ন্যান্সিঃ ম্যাম জুস এটা খেলে আপনার সুস্থ অনুভব হবে।

সুবহা ন্যান্সির হাত থেকে গ্লাস নিয়ে ঢকঢক করে পুরো জুস খেয়ে নিল।

সুবহাঃ feeling better thank you. আমি আসি এখন।

ন্যান্সিঃ স্যার বলেছে আপনাকে তার সাথে দেখা করতে।

সুবহাঃ জ্বি।

সুবহা দ্রুত বেড়িয়ে গেল বাড়ি থেকে।

? Rayzada Industry ?

সুবহাঃ মি. র‌‌ওশন রায়জাদার কেবিন কোন দিকে?

পি এঃ আপনি মিস সুবহা এহমাদ?

সুবহাঃ জ্বি,,,

পি এঃ স্যার বলেছিলেন আপনি আসলে আপনাকে ওনার কেবিনে বসাতে। আসলে স্যার একটা জরুরি মিটিংয়ে আছেন তাই আপনার একটু অপেক্ষা করতে হবে।

সুবহাঃ সমস্যা নেই।

পি এঃ চলুন আমার সাথে।

র‌‌ওশনের পি এ সুবহাকে ওর কেবিনে দিয়ে আসে।

পি এঃ এটা স্যারের কেবিন। হ্যাভ আ্য নাইস ডে ম্যাম।

সুবহা জোরে জোরে কয়েকটা নিঃশ্বাস ছেড়ে কেবিনে প্রবেশ করল। বিশাল কেবিন দেখেই বুঝা যাচ্ছে যে র‌‌ওশন কতটা শৌখিন। সুবহা ঘুরে ঘুরে দেখছে কেবিনটা। কেবিনে আ্যডজাস্ট করা বেড রুম আছে সাথে বারান্দাও।

সুবহাঃ কেবিনে বেড রুম স্ট্রেন্জ। ( অবাক হয়ে)

সুবহা টেবিলের সামনে হাটছে আর ফাইল গুলো কে ছুঁয়ে ছুঁয়ে দেখছে।

হঠাৎ দরজা খোলার শব্দে চমকে দরজার দিকে ঘুরে দাঁড়ালো সুবহা।

র‌‌ওশন একটা ফাইল দেখতে দেখতে কেবিনে প্রবেশ করছে। র‌‌ওশনকে দেখে আরেক দফা ক্রাশ খেল সুবহা। প্রথম যখন আভি ওকে র‌‌ওশনের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিল তখন প্রথম সুবহা কারো উপর ক্রাশ খায়। র‌‌ওশনের ড্রেস‌আপ ওর কথা বলার স্টাইল ওর এটিটিউড সব কিছু যে কোন মেয়েকে ঘায়েল করতে সক্ষম। কিন্তু যখন র‌‌ওশনের রাগ দেখেছে ও তখন ক্রাশ শব্দটা উল্টে #Mr_Arrogant হয়ে গেছে।

আজ‌‌ও র‌‌ওশনকে একদম আলাদা লাগছে। ব্লাক শার্ট চকলেট কালার ব্লেজার ব্লাক প্যান্ট হাতে চকলেট কালার বেল্টের ঘড়ি। তার উপর জিম করা বডি,,, র‌‌ওশনের ঠোঁট একদম বিদেশিদের মত গোলাপি। সব চেয়ে ডিফারেন্ট হলো র‌‌ওশনের চুল। একদম সিল্কি আর কপালে চার পাঁচটা পরেই থাকে।

র‌‌ওশনকে দেখতে একদম কোন ফরেইন হিরোদের মত লাগে।

মুখের সামনে তুরি বাজতেই ঘোর ভাঙে সুবহার। র‌‌ওশন ওর সামনে চলে এসেছে। এতক্ষন ঘোরের মধ্যে বুঝেই নি সুবহা কখন র‌‌ওশন ওর সামনে আসলো। লজ্জায় সুবহার গাল লাল হয়ে গেছে। সাথে সাথে চোখ নামিয়ে নেয় সুবহা।

র‌‌ওশনঃ আর ইউ ওকে সুবহা।

সুবহাঃ আ আব হ্যায় আমি ঠিক আছি।

র‌‌‌ওশন গিয়ে ওর ডেস্কে বসলো আর সুবহাকে ইশারায় বললো অপজিটে বসতে। সুবহা মাথা নিচু করে বসে পরল।

র‌‌ওশনঃ নাও টেল মি কালকে কি হয়েছিল ? আভি এমন কি করেছে যে তুমি নেশার ঘোরেও ওকে সহ্য করতে পারছিলে না আর কেন‌ই বা তুমি এতো রাতে ড্রাঙ্ক অবস্থায় রাস্তায় ছিলে? I want to know the truth. কিন্তু মনে থাকে যেন আমি মিথ্যা কে ঘৃণা করি তাই আমাকে সবটা সত্য বলবে।

সুবহা ছলছল চোখে র‌‌ওশনের দিকে তাকালো। সুবহার এই কান্না ভরা দৃষ্টি র‌‌ওশনের বুকে গিয়ে বিধছে। এই দৃষ্টিতে কতটা পেইন আছে সেটা হয়তো র‌‌ওশন অনুভব করতে পারছে।

To be continued…..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here