Mr_Arrogant_2 ? #The_Gangster_Lover,10,11

0
1813

#Mr_Arrogant_2 ?
#The_Gangster_Lover,10,11
#Writer_Sanjana_Shabnam_Fahmida
#Part_10
.
.
.
.
সুবহাকে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে রওশন। আচমকা ওহি এসে সুবহাকে জড়িয়ে ধরে বলতে শুরু করে,,,

ওহিঃ ওয়েলকামমম ভাবিইই,,,

রওশন আর অর্নব একে অপরের মুখের দিকে তাকায় আর সুবহা তো শক্ড ওহির কথায়,,,

সুবহাঃ ভাবি??( টাস্কি খেয়ে)

ওহি সাথে সাথে নিজের মুখ চেপে ধরে।‌ অর্নব রাগি ভাবে ইশারা করছে ওহিকে চুপ থাকতে।

ওহিঃ আভ আসলে আমি তো তোমার নাম জানি না তাই ভাবি বললাম,,,( কথা ঘুরিয়ে)

সুবহাঃ নাম জানে না তাই ভাবি বলবে? আজব!( মনে মনে) আমি সুবহা।

ওহিঃ আমি ওহি নাইস টু মিট ইউ। ( জোর করে হাসার চেষ্টা করে)

অর্নবঃ ওহি মামনি সুবহাকে নিজের সাথে নিয়ে যাও আমরা একটু প্রাইভেট ভাবে কথা বলবো।

ওহিঃ ওকে কাম সুবহা।

ওহি সুবহাকে নিয়ে অন্য সাইডে চলে আসলো। সুবহাকে দেখে আভি এগিয়ে আসলো ওদের দিকে।

আভিঃ কেমন আছো সুবহা?

সুবহাঃ ভালো।

[ আভি সুবহাকে কল করে বলে দিয়েছিল পার্টিতে নর্মাল বিহেভ করতে। যেহেতু অর্নব খাঁন ওর সিনিয়র তাই ওদের প্লানের কথা ও জানে। পার্টিতে অ্যাক্টিং করার প্রয়োজন নেই। সুবহাও বোকার মতো আভির কথা শুনে ]

ওহিঃ আমাকেও কখনো জিজ্ঞেস করো আমি কেমন আছি,,, ( কিছুটা রাগী ভাবে)

আভিঃ চুরেল ডায়েনরা আমার মতো মাসুম ছেলেদের রক্ত খেয়ে ভালোই থাকে। ( কোণা চোখে)

ওহিঃ তুমি আবারো আমাকে এসব বলছো?

আভিঃ তুমি রাগছো কেন? আমি কি তোমার নাম ধরে বলেছি? এর মানে তুমি নিজেকে চুলের ডায়েন ভাবো।( হেসে দিয়ে)

ওহিঃ শাট আপ আভিইই,,,

আভিঃ ইউ শাটট আপপ মিস চুরেল,,,

সুবহা হা হয়ে আভি আর ওহির ঝগড়া দেখছে। টম অ্যান্ড জেরির মতো ঝগড়া করছে ওরা।

অর্নবঃ কি হচ্ছে এখানে?

রওশন আর অর্নব আসতেই আভি ওহি চুপ করে যায়।

আভিঃ আ গায়া হিটলার,,,( বিরবির করে)

ওহিঃ আব্বুউউ আভি আমাকে চুরেল ডায়েন বলেছে। আমাকে নাকি শাকচুন্নীর মতো দেখতে কেউ আমাকে বিয়ে করবে না। আর তোমাকে হিটলার ও বলেছে।( কাঁদার অ্যাক্টিং করে )

সুবহা আর আভি হা হয়ে গেছে। কি সুন্দর করে বানিয়ে মিথ্যা বলে বেচারাকে ফাসাচ্ছে ওহি,,, ভাবছে সুবহা।

রওশন সুবহার পাশে দাঁড়িয়ে মুচকি হেসে ওদের কান্ড দেখছে।

আভিঃ আ আমি কখন বললাম,,, মিথ্যুক মেয়ে। ( রেগে )

ওহিঃ দেখো তোমার সামনেও ধমক দিচ্ছে। ( আরো জোরে কেঁদে দিল )

অর্নবঃ কি হচ্ছে আভি তুমি আমার মেয়েকে কাঁদাচ্ছো কেন? আর এটা কি সত্যি যে তুমি আমাকে হিটলার বলেছো?

আভিঃ কই নাতো। ( ডাহা মিথ্যা কথা আভি)

রওশনঃ আঙ্কেল বাদ দেন ওরা তো এমনই। ওহি ডোন্ট ক্রাই আমি আভিকে বকে দিব।

আভি অসহায় ভাবে রওশনের দিকে তাকিয়ে ঢোক গিলল,,,

সুবহাঃ আপনি কেন বকবেন?( অবাক হয়ে)

রওশনঃ ও আমার ছোট তাই। ( কথা ঘুরিয়ে)

সুবহাঃ ছোট দেখে বকবে। বকা ছাড়া আর পারে কি। সারাদিন ধমক আ্য হুমকি দিতে জানে।আমাকে তো অযথা বকেই এখন আভি স্যারের পেছনে পরেছে যেমন বিহেভ করছে ওনার ভাই হয় হুহ। ( মনে মনে)

রওশনঃ আমি ধমক দেওয়া ছাড়া আরো অনেক কিছু পারি চাইলে তোমাকে প্র্যাকটিক্যালি দেখাতে পারি। ( সুবহার কানের কাছে ফিসফিস করে)

সুবহা অবাক চোখে তাকায় রওশনের দিকে।

সুবহাঃ ম মানে?

রওশনঃ আমি মানে বলে বুঝাই না, করে দেখাই।

সুবহাঃ থাক আমার কিছু বুঝা লাগবে না। ( কথা ঘুরিয়ে)

সুবহা চলে আসে ওখান থেকে। আভি ওহির দিকে রাগি দৃষ্টি নিক্ষেপ করে চলে যায়। ওহি আভিকে ভেংচি কেটে ডোন্ট কেয়ার ভাব দেখায়।

কিছুক্ষণ পর,,,??

সুবহা একটা কর্নারে দাঁড়িয়ে আছে। লাইট অফ করে কালার লাইট জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে হলে। সফ্ট মিউজিকে সবাই পরিবেশ টা উপভোগ করছে।

আভি বার সাইডে দাঁড়িয়ে জুস খাচ্ছে আর ওহি বারবার ওর সাথে ঘেঁষে দাঁড়াচ্ছে। আভি রাগি লুক নিয়ে তাকালেও লাভ হচ্ছে না ওহি তো ওহিই।

রওশন একটু দূরে দাঁড়িয়েই সুবহাকে দেখছে। সুবহা বারবার আড়চোখে তাকাচ্ছে রওশনের দিকে। না চাইতেও ওর চোখ বারবার রওশনের দিকেই যাচ্ছে।

হঠাৎ সুবহা রওশনের দিকে তাকাতেই দেখে রওশন যেখানে দাঁড়িয়ে ছিল সেখানে নেই। সুবহা ঘাবড়ে নিজের আশেপাশে তাকায় কিন্তু কোথাও নেই রওশন।

সুবহাঃ রওশন কোথায় গেল?( ভয় পেয়ে)

আশেপাশে ধীর পায়ে হেঁটে রওশনকে খুঁজছে সুবহা। হঠাৎ লাইট আরো নিভু নিভু হয়ে যায়। এতক্ষন যাও কিছু কিছু স্পষ্ট দেখা যাচ্ছিল কিন্তু এখন অতটা স্পষ্ট কাউকে চেনা যাচ্ছে না।

মিউজিক বদলে অন্য একটা মিউজিক প্লে হয়ে যায়। সুবহা কিছুটা দূরে একজন পরিচিত মানুষের অবয়ব দেখতে পায়। আগের মতোই তার মুখে মাস্ক যার জন্য কপাল থেকে নাক পর্যন্ত ঢাকা।

চোখ দু’টো দেখেই সুবহার নিঃশ্বাস অস্বাভাবিক হয়ে যায়। ভয় কৌতুহল ঘিরে ধরে ওকে।

সুবহাঃ সাদিককক,,,( অবাক হয়ে)

হঠাৎ সেই মাস্ক ওয়ালা লোকটি সরে যায়। সুবহা তাকে খুঁজতে থাকে আশেপাশে। সবাই গানের সাথে নিজের কাপলদের সাথে নাচছে। সুবহা তাদের ভীর ঠেলে খুঁজছে সে অজানাকে। আচমকা কে যেন সুবহার কোমড় জড়িয়ে ধরে পেছন থেকে। সুবহা যেন ফ্রিজড হয়ে গিয়েছে।

সেদিনের স্পর্শ আর আজকের স্পর্শ একই তার মানে এটাই সেই লোক যাকে সুবহা খুঁজছে।

সেই লোকটি সুবহাকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে ওর এক হাত নিজের হাতের ভাঁজে নিয়ে অন্য হাত ওর কোমড় জড়িয়ে ওকে নিজের কাছে টেনে নেয়।

সুবহা শুধু ফ্রিজড হয়ে তাকিয়ে আছে তার দিকে।

লোকটি সুবহার চোখে চোখ রেখে গাইতে‌ শুরু করে,,,

“ রাতের সব তারা আছে, দিনের গভীরে
বুকের মাঝে মন যেখানে
রাখবো তোকে সেখানে
তুই কি আমার হবি রে ⁉️( X2 )

মন বাড়িয়ে আছি দাড়িয়ে
তোর হৃদয়ে গেছি হারিয়ে
তুই,,, জীবন মরণ সবিরে!
তুই কি আমার হবি রে ⁉️

লোকটার মুখের অদ্ভুত হাসি সুবহার মনে অদ্ভুত অনুভূতির সৃষ্টি করছে। সুবহা নিজের অজান্তেই হারিয়ে যাচ্ছে তার চোখের গভীর দৃষ্টিতে।

লোকটি ওকে ছেড়ে পিছু সরে যায়। লোকটি সুবহার চোখের আড়াল হতেই সুবহা আশেপাশে তাকে খুঁজতে শুরু করে।

হঠাৎ কারো সাথে ধাক্কা লাগে সুবহার। সুবহা সামনে তাকিয়ে দেখে রওশন। রওশন ইশারায় জিজ্ঞেস করে “কি হয়েছে” সুবহা মাথা নাড়িয়ে “না” বলে কিছু হয়নি।

রওশন সুবহার সামনে নিজের হাত বাড়িয়ে দেয়। সুবহা আশেপাশে তাকিয়ে রওশনের হাতে হাত রাখে।

“ আমার পথটা চলে যায় তোরই দিকে
চোখের কলম শত কবিতা লিখে
এ হৃদয়ের ভালো বাসা দিয়ে
সেই কবিতা শুধু তোকে নিয়ে”

রওশনের স্পর্শ আর সেই লোকের স্পর্শ অদ্ভুত ভাবে সুবহার কাছে একই লাগছে। সুবহা অবাক চোখে তাকায় রওশনের দিকে। রওশনের চোখের দিকে তাকাতেও সেই একই ফিলিং আসে। সুবহার হার্ট বিট যেন দ্বিগুন বেড়ে গেছে।

“চোখ ভরে তুই দেখে পড়ে তুই
প্রেম কবিতায় এই তোকে ছুঁই
তুই,,, চিনে নে সেই কবিরে!
তুই কি আমার হবি রে ⁉️

রওশন সুবহাকে নিজের বুকে জড়িয়ে নেয়। রওশনের হার্টবিট শুনতে পারছে সুবহা। চোখ বন্ধ করে অনুভব করছে সুবহা ওর হার্টবিট।

“ রাতের সব তারা আছে, দিনের গভীরে
বুকের মাঝে মন যেখানে
রাখবো তোকে সেখানে
তুই কি আমার হবি রে ⁉️

আভি আর ওহি মুগ্ধ চোখে সুবহা আর রওশনেকে দেখছে। ওহিরও ইচ্ছে করছে আভির বুকে এভাবেই মাথা রেখে চোখ বন্ধ ওর হৃদস্পন্দন শুনতে।

আভি অন্য দিকে যেতে নিলেই ওহি ওর হাত ধরে ফেলে। আভি অবাক চোখে তাকায় ওহির দিকে।

ওহি হাসি মাখা মুখ নিয়ে আভির দু কাঁধে হাত রেখে দাঁড়ায়,,, ওহির মায়াবী চেহারা আভিকে ঘোরের মধ্যে ফেলে দিচ্ছে।

“হৃদয় ক্যানভাসে মন রং মেখে মেখে
তোরই মুখ ছবি যাই নীরবে এঁকে
সব ভালো লাগা মনে ছুঁয়েছে এসে
সুখ ছোঁয়াতে আমি গিয়েছি ভেসে ”

মন বাড়িয়ে আছি দাঁড়িয়ে
তোর হৃদয়ে গেছি হারিয়ে
তুই,,, দেখে নে সে ছবি রে,,,
তুই কি আমার হবি রে ⁉️

আভি নিজের অজান্তেই ওহিকে নিজের কাছে টেনে আনে তারপর ওর কপালে ঠোঁট ছুঁইয়ে দেয়।

রাতের সব তারা আছে, দিনের গভীরে
বুকের মাঝে মন যেখানে
রাখবো তোকে সেখানে
তুই কি আমার হবি রে ⁉️

লাইট জ্বলে উঠতেই আভির ঘোর কেটে যায় সাথে সাথে ও ওহিকে ছেড়ে দূরে সরে দাঁড়ায়। ওহি অবাক চোখে তাকিয়ে আছে আভির দিকে। ওহির ফেসে লজ্জার আভা দেখা যাচ্ছে।

আভি কিছু না বলেই হন্তদন্ত হয়ে ছুটে বেরিয়ে যায় পার্টি ভ্যানু থেকে।

হবার হাত তালির আওয়াজে সুবহা রওশনের থেকে সরে দাঁড়ায়। সুবহা সন্দেহ চোখে তাকিয়ে আছে রওশনের দিকে।

রওশনঃ সুবহা কি আমাকে সন্দেহ করছে?( মনে মনে)

অর্নবের সাথে কথা বলে রওশন সুবহাকে নিয়ে বাড়ি চলে আসে।

বাড়িতে,,,??

সুবহা নিজের রুমে বসে ভাবছে ওই অজানা লোকটির কথা। হাতে গিফটের বাস্কেটে রাখা কার্ডটা যেটাতে সাদিক নাম লিখা। রওশনের সাথে কেন যেন গুলিয়ে ফেলছে ও সাদিককে।

সুবহাঃ উফফ মাথা নষ্ট হয়ে যাবে আমার। রওশন আর এই সাদিক কিভাবে এক হতে পারে? প্রথমত, রওশন সব সময় আমার সাথে রুডলি কথা বলে, কথায় কথায় ধমক দেয় such a Arrogant mafiya!

আর অন্য সাইডে এই আননোন সাদিক, সব সময় কত সুন্দর সুন্দর রোমান্টিক পোয়েট্রি লিখে পাঠায়, চকলেট আর ফ্লাওয়ার গিফট করে।

জমিন আসমানের পার্থক্য এদের মধ্যে। আমিও না কিসের সাথে কি মিলাচ্ছি।

রওশন আর সাদিকের বর্ননা দিতে দিতে ঘুমিয়ে পরে সুবহা।

এইদিকে,,,??

আভিঃ সিরিয়াসলি আমি ওই ওহি চুরেলকে কিস করেছি নোওওও,,, আমি ওর প্রেমে পরে আহত নিহত বিক্ষোপ্ত হতে চাই না। ভূলে যা আভি জাস্ট ফর্গেটট ইট,,,( বালিশ দিয়ে মাথা চেপে ধরে)

To be continued…….

#Mr_Arrogant_2 ?
#The_Gangster_Lover
#Writer_Sanjana_Shabnam_Fahmida
#Part_11
.
.
.
.
? In Morning ?

প্রতিদিনের মতো আজও খরগোশ নামক ঢোলের অ্যালার্মে সুবহার ঘুম ভাঙলো। না চাইতেও জোর পূর্বক বিছানা থেকে উঠে জগিং এর জন্য রেডি হয়ে নিচে নেমে আসলো সুবহা।

রওশন রেডি হয়ে সুবহানকে রুমে যাওয়ার জন্য পা বাড়াতেই দেখলো সুবহা ড্রইং রুমের সোফায় বসে গালে হাত দিয়ে ঝিমুচ্ছে।

রওশনঃ বাহ্ আজকে চাঁদ কোন দিকে উঠলো?

রওশন সুবহার সামনে এসে দাঁড়ালো হাতের ঘড়ি ঠিক করতে করতে। রওশনের কথাটা কানে যেতেই সুবহার ঘুম যেন গায়েব হয়ে গেল। কিছুটা রাগি ভাবে উত্তর দিল সুবহা।

সুবহাঃ সকাল বেলা চাঁদ না সূর্য উঠে সেটাও জানেন না?( ত্যাড়া উত্তর )

রওশনঃ তুমি কি সোজা ভাবে কথা বলতে পারো না?

সুবহাঃ আমি উল্টা লটকে কখন কথা বললাম আজব!

রওশনঃ তোমার সাথে কথা বলাই বেকার,,,( নিজের রাগ কন্ট্রোল করে)।

রওশন সামনে হাঁটা ধরে আর সুবহা ওর পেছনে। সুবহার ঠোঁটে প্রশান্তির হাসি অ্যারোগেন্ট মাফিয়াকে আজকে ইটের জবাব পাথর দিয়ে দিয়েছে ও।

? In Park ?

সুবহা রওশনের পিছু পিছু দৌড়ে হাঁপিয়ে গিয়েছে। বেঞ্চে বসে ব্যাগ থেকে গ্লুকোজের ফ্লাক্স বের করে মুখে দিতেই ফিক করে সব বের করে ফেলে দিল‌ সুবহা।

সুবহাঃ ছিঃহহহহ ( জিহ্বা বের করে) এগুলো কি ইয়াককক,,,

রওশনঃ এগুলোকে গ্লুকোজ বলে। গুড ফর হেলথ।

রওশন সুবহার হাত থেকে ওয়াটার পট টা নিয়ে পুরো পট ফাঁকা করে দিল। সুবহা হা হয়ে দেখছে রওশনের কাজ‌। এমন কুখাদ্য কেউ কিভাবে এক ঢোকে শেষ করতে পারে ছিঃ।

সুবহাঃ আমারও পিপাসা পেয়েছে আমি কি খাব?( রেগে)

সুবহার কথায় রওশন বাঁকা হেসে দাঁড়ানো অবস্থায় ওর দিকে ঝুঁকে যায়। রওশনকে নিজের দিকে ঝুঁকতে দেখে সুবহা চোখ বড় বড় করে পেছনের দিকে ঝুঁকে যায়।

সুবহাঃ এই মাফিয়া টা কি করতে চাইছে?( মনে মনে)

রওশনঃ চিন্তা করছো কেন সুবহা আমি আছি তো তোমার তৃষ্ণা মেটানোর জন্য।‌ ( বাঁকা হেসে)

সুবহা চোখ বড় বড় করে তাকায় রওশনের দিকে তারপর আশেপাশে তাকিয়ে দেখে কেউ দেখছে কিনা।

সুবহাঃ আ আপনি এগোচ্ছেন কেন?( ভয়ে ভয়ে)

রওশনঃ তুমি পিছাচ্ছো যে,,,

রওশন সুবহার কাছাকাছি আসতেই সুবহা চোখ বন্ধ করে ফেলে ওর নিঃশ্বাস ভারী হয়ে আসছে।

রওশন সুবহার কপালে পরে থাকা চুল গুলোর উপর ফুঁ দিয়ে সেগুলো সরিয়ে দেয়। সুবহা কেঁপে উঠে রওশনের কাজে।

রওশন সুবহার ফেস দেখে হালকা হেসে সুবহার পাশের ব্যাগ থেকে একটা ওয়াটার পট বের করে সরে আসে।

রওশন সরে গেছে টের পেতেই সুবহা নিজের চোখ খুলে তাকায়। আর কতক্ষন রওশন ওর পাশে থাকলে নির্ঘাত ওর দম আঁটকে যেত। রওশন সুবহার হাতে ওয়াটার পট ধরিয়ে দিয়ে বলে,,,

রওশনঃ তোমার মতো পিচ্চির জন্য এটাই পার্ফেক্ট। ড্রিঙ্ক ইট।

সুবহা ওয়াটার পটের ঢাকনা খুলে মুখে দিতেই দেখলো এটা ট্যাং।

সুবহাঃ বাহ্ টেস্টি ট্যাং লাভ ইটট,,,( খেতে খেতে)

রওশন পাশে তাকাতেই দেখলো একজন মধ্যবয়সী লোক [ অনেক মোটা দেখেই মনে হচ্ছে লোকটির শরীরের আগে পেট চলে ] দাঁড়িয়ে হাসছে ওদের দেখে আর তার পাশে তার স্ত্রী দাঁড়িয়ে সেল্ফি তুলছে। যথেষ্ট সুন্দরী আর ইয়াং দেখতে তার স্ত্রী। লোকটির সাথে দাঁড়ানোতে হয়তো অনেকে মহিলা টিকে লোকটির মেয়ে ভাববে। প্রথম রওশনও এটা ভাবতো পরে জানতে পারে ইনি মেয়ে না বউ। সেদিন রওশন নিজের উপর প্রচুর হেসেছে। শেষে কিনা বউকে মেয়ে বানিয়ে দিল।

রওশনঃ আঙ্কেল আমাদের দিকে কনসন্ট্রেট না করে আন্টির উপর কনসন্ট্রেট করেন দেখা যাবে আপনি আমাদের দিকে তাকিয়ে আছেন আর আন্টি অন্য কারো সাথে ফুরর,,,

রওশনের কথা শুনে লোকটির মুখ গোমড়া হয়ে গেল আর তার স্ত্রী হেসে দিল।

সুবহাঃ পাবলিক প্লেসে লুচুগিরি করবে আর তারা দেখলেই দোষ। ( মনে মনে)

রওশন নিজের জ্যাকেট খুলে সুবহার পাশে রেখে গ্ৰাউন্ডে পুশআপ দিতে শুরু করে।

রওশনের পরনে শুধু একটা পাতলা টি শার্ট। বডি স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে। সুবহা আড়চোখে রওশনকে স্ক্যান করছে কিন্তু তা বুঝতে দিচ্ছে না।

সুবহা পাশে তাকাতেই দেখলো কয়েকটা মেয়ে দাড়িয়ে রওশনকেই দেখছে। সুবহার শরীর জ্বলছে রাগে। সুবহা রেগে দাঁড়িয়ে যায় তারপর রওশনের জ্যাকেট তুলে রওশনের সামনে দাঁড়ায়।

সুবহাঃ রওশনননন,,( চিল্লিয়ে )

সুবহার চিল্লানোতে রওশন থেমে যায় তারপর দাঁড়িয়ে গিয়ে ভ্রু কুঁচকে বলে,,,

রওশনঃ এভাবে চেচাঁচ্ছো কেন?

সুবহাঃ এটা পরেন,,,( জ্যাকেট এগিয়ে দিয়ে)

রওশনঃ এটা পরলে অ্যাক্সারসাইজ করবো কিভাবে?

সুবহাঃ এতো কিছু বুঝি না আমি আপনি এক্ষুনি এটা পরবেন। আপনাকে জ্যাকেট ছাড়া অনেক বাজে দেখাচ্ছে।

রওশনঃ What do you mean?( রেগে ) আমার জন্য হাজারো মেয়ে পাগল আর তুমি বলছো আমাকে বাজে দেখাচ্ছে?( রেগে এগিয়ে গিয়ে)

সুবহা রওশনের কথা কানে না নিয়ে সোজা রওশনের সামনে দাঁড়িয়ে ওকে জোর করে জ্যাকেট পরিয়ে দিতে শুরু করে। রওশন টাস্কি সুবহার কাজে। জ্যাকেট পরানো শেষ হতেই সুবহা রেগে মেয়ে গুলোর দিকে তাকিয়ে চেঁচিয়ে বলে,,,

সুবহাঃ শুটিং শেষ এখন আপনারা যেতে পারেন,,,

মেয়ে গুলো মুখ কালো করে চলে গেল। রওশন এবার বুঝতে পারলো সুবহার রাগের কারন,,,

রওশনঃ Subha! Are you feel jealous? ( সুবহার কানের কাছে মুখ নিয়ে)

সুবহা রাগি দৃষ্টিতে রওশনের দিকে তাকিয়ে ব্যাগ নিয়ে হনহন করে বেরিয়ে যায় ওখান থেকে। রওশন ও সুবহার পেছনে ছুট দেয়।

সুবহাঃ লুচু মাফিয়া,, এখন বুঝেছি জগিংয়ে আসার জন্য এতো তাড়াহুড়ো করে কেন,,আসলে জগিং করতে না মেয়েদের দেখতে
আসে ব্যাটা লুচু। আর কখনো একা আসতে দিব না এখানে হুহ,, এখানকার মেয়েরা একেকটা লুচির ডিব্বা। ( রেগে মনে মনে)

???

একটা কক্ষ চারপাশে রশনি ছড়িয়ে আছে, কক্ষের সাদা পর্দা গুলো বাতাসে এলোমেলো ভাবে উড়ছে।‌

আভিঃ আমি এখানে আসলাম কিভাবে?( চার পাশে অবাক হয়ে তাকিয়ে)

হঠাৎ আভি সামনে তাকিয়ে দেখে একটা মেয়ে জানলার সামনে মুখ করে দাঁড়িয়ে আছে। তার চুল গুলো এলোমেলো ভাবে উড়ছে হাওয়ায়।

আভি ধীর পায়ে এগিয়ে যায় তার দিকে। আভি সামনে যেতেই মেয়েটি আভির দিকে ঘুরে দাঁড়ালো। মেয়েটির হাতে অর্কিড ফ্লাওয়ার আর সেটা মুখের সামনে তুলে আছে যার ফলে চেহারা বুঝা যাচ্ছে না

আভিঃ কে তুমি?

মেয়েটি আস্তে আস্তে নিজের হাত নামিয়ে নেয়। আভি মেয়েটিকে দেখেই যেন স্ট্রোক করবে এমন অবস্থা। মেয়েটি আর কেউ নয় বরং ওহি।

ওহি ধীরে ধীরে আভির সামনে এসে দাঁড়ায়। আভি এখনো ফ্রিজড হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ওহি আভির সামনে এসে ওর গালে কিস করে বসে। আভির তো চোখ বেরিয়ে যাওয়ার উপক্রম।

ওহি আভির কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিসিয়ে বলতে শুরু করে,,,

ওহিঃ আই লাভ ইউ আভিইই,,,

আভিঃ নোওওওওও,,,,

চিৎকার দিয়ে উঠে বসে আভি। বুকে হাত দিয়ে বড় বড় নিঃশ্বাস ফেলছে ও।

আভিঃ লা হাওলা ওয়ালা কুয়াতা ইল্লাহ বিল্লাহ,,,( নিজে বুকে ফুঁ দিয়ে)

শেষমেশ ওহি চুরেলকে স্বপ্ন দেখলাম আমি! কি সাংঘাতিক! Wait wait,,, Did I fall in love with herrr…

Nooo this can’t be happened তওবা তওবা ( হাত দিয়ে দু গাল ঘষে ) আমি ওর প্রেমে পরবো না। জীবন আমার ধনিয়া পাতা টু তেজপাতা করে দিবে ও। ( অসহায় ভাবে)

???

রওশন‌ আর সুবহা জগিং করে ফিরে আসে বাসায়। সুবহা এখনো রেগে‌ আছে রওশনের উপর।

ওরা ড্রইং রুমে প্রবেশ করেই দেখে ওহি বসে আছে।

রওশনঃ ওহি তুমি এখানে?

ওহিঃ হ্যালো ভাইয়া হ্যালো ভা ( থেমে গেল) আভ সুবহা।

সুবহাঃ হাই।

ওহিঃ অ্যাকচুয়ালি রওশন ভাইয়া আমি সুবহাকে আমার সাথে নিয়ে যেতে এসেছিলাম।

রওশনঃ কোথায়?

ওহিঃ শপিং।( হেসে)

সুবহাঃ শপিং!! আমি এক পায়ে দাঁড়িয়ে রাজি।( খুশি হয়ে)

রওশন কপাল কুঁচকে তাকালো সুবহার দিকে। রওশনের চাহনি দেখে সুবহা চুপসে যায়।

রওশনঃ অ্যাকচুয়ালি ওহি সুবহাকে আমি একা ছাড়তে পারব না এমনিতেই ওর কিছু মনে নেই তাই ওর সাথে আমার থাকাটা জরুরি। কিন্তু আজকে আমার একটা ইম্পর্ট্যান্ট কাজ আছে তাই যেতে হবে আমাকে তুমি এক কাজ করো শপিং এর প্লান অন্য একদিনের জন্য স্কীপ করো।

রওশনের কথায় সুবহা নিজের জন্য চিন্তা স্পষ্ট বুঝতে পারছে। রওশন ওর জন্য চিন্তা করে ভাবতেই ঠোঁটে হাসি ফুটে উঠল ওর।

ওহিঃ ভাইয়া আমি আছি তো সুবহার সাথে ট্যানশন নট আর তাছাড়া গার্ডস রাও তো আছে। ( জেদ করে) প্লিজ প্লিজ প্লিজ,,,

রওশন সুবহার দিকে তাকিয়ে দেখে সুবহা মায়ুস হয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে। ওহিও জেদ করছে। সুবহার হয়তো ভালো লাগবে একটু বাইরে গিয়ে ঘুরলে তাই রওশন নিজের মত বদলে দেয়।

রওশনঃ ওকে ফাইন। কিন্তু গার্ড দের পাশে থাকবে।

ওহিঃ ইয়াহুউ থ্যাংক ইউ ভাইয়াআ,,,

রওশনের পার্মিশন পেয়ে সুবহার মুখে আবারো খুশির ঝিলিক দেখা দিল।

ওহিঃ সুবহা তুমি রেডি হয়ে আসো আমি অপেক্ষা করছি।

সুবহা রওশনের দিকে তাকালো পার্মিশনের জন্য। জন্য মাথা নাড়িয়ে সায় দিল।

সুবহাঃ আমি দশ মিনিটে আসছি,,,

সুবহা দৌড়ে নিজের রুমে চলে যায়। রওশনের মনে একটা অদ্ভুত চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে। মনে হচ্ছে কিছু খারাপ হতে চলেছে।

টাইসেল দৌড়ে রওশনের সামনে আসে। ওহি টাইসেলকে দেখে ওর সামনে বসে ওর গায়ে হাত বুলিয়ে দিতে দিতে কথা বলতে শুরু করে।

সুবহা রেডি হয়ে নিচে নেমে আসে। সবাই একসাথে ব্রেকফাস্ট করে নেয়। রওশন টাইসেলকে কোলে করে দাঁড়িয়ে আছে দরজার সামনে।

ওহি আর সুবহা‌ গাড়িতে উঠছে। টাইসেল ছুটাছুটি করছে সুবহার কাছে যাওয়ার জন্য কিন্তু রওশন ধরে রাখায় নামতে পারছে না। সুবহা গাড়িতে উঠার আগে পেছনে ফিরে রওশনের দিকে তাকালো।

রওশনঃ সাবধানে থাকবে আর যেভাবে বলেছি কোন মিস্টেক করলে খবর আছে।

সুবহাঃ ওকে। বাই রওশন বাই টাইসেল।

সুবহা আর ওহি চলে গেল। রওশন টাইসেলের দিকে তাকিয়ে বলতে শুরু করে।

রওশনঃ বাড়িতে একা থেকে বোর হয়ে যাবি চল আজকে তোকে নিয়েই অফিসে যাবো।

রওশন টাইসেলকে একটা ফিটিং হোয়াইট কালারের টি শার্ট পরিয়ে রেডি করে দেয়। তারপর টাইসেলের ঘন সাদা লোম গুলোতে ব্রাশ করে দেয়। তারপর নিজের সাথে অফিসে নিয়ে যায়।

???

সুবহা আর ওহি সাউথ অ্যান্ড সিটি শপিং মলে এসেছে। ওহি সুবহাকে নিয়ে কফি শপে বসেছে অন্য সাইডে গার্ড গুলো দাঁড়িয়ে আছে। কফি শেষ করে ওরা শপিং করতে যাবে।

ওহিঃ‌ সুবহা ভা ( থেমে গেল আবার) আই মিন সুবহা আমাকে তোমার কাছে কেমন লাগে বলোতো?

সুবহাঃ কেমন লাগে মানে?( অবাক হয়ে)

ওহিঃ মানে এটা, আমি কি সুন্দর না? কিউট ইনোসেন্ট না?( অসহায় ভাবে)

সুবহাঃ অবভিয়াসলি। তুমি তো অনেক সুন্দর একদম বার্বি ডলের মতো।

ওহিঃ আমি জানি। জানো আমার পেছনে কত কত ছেলেরা ঘুরে কিন্তু আমি তাদের পাত্তাও দেই না কিন্তু আভি! আমি ওকে কত ভালোবাসি আর ও আমার দিকে ফিরেও তাকায় না এটা কি ঠিক বলো?( কাঁদো কাঁদো ভাবে)

সুবহাঃ ওও তারমানে এই ব্যাপার। ( মনে মনে)

সুবহার সব ডাউট ক্লিয়ার হয়ে যায় ওহির কথায়।

ওহিঃ আচ্ছা সুবহা তুমি কি আমাকে হেল্প করবে আভিকে পটাতে প্লিজজজজ?( ইনোসেন্ট ভাবে)

সুবহাঃ আ আমি? কিন্তু কিভাবে?

ওহিঃ তুমি জাস্ট ওকে বুঝিয়ে বলবে যে আমি ওকে কতোওও ভালোবাসি।

সুবহাঃ আচ্ছা বলবো।

ওহিঃ‌‌ ইউ আর দ্যা ব্যাস্ট সুবহা। এখন চলো লেট হলে পরে রওশন ভাইয়া বকবেন।

সুবহা আর ওহি শপিং মলে প্রবেশ করে। অনেক কিছু কেনাকাটা করেছে ওরা। ওরা অন্য স্যাক্টরে যেতে নিলেই হঠাৎ বন্দুকের আওয়াজ পায়। কে যেন গুলি চালিয়েছে।

সুবহা আর ওহি সহ মলের সবাই ভয় পেয়ে যায়। হঠাৎ মলের সব দরজা বন্ধ হয়ে যায় বাইরে থেকে আসা যাওয়ার সব পথ বন্ধ হয়ে গেছে। অনেক গুলো কালো মুখোশ পরা লোক হাতে বন্দুক সবাইকে একত্র করছে। ওহি আর সুবহা ভয়ে জরোশরো হয়ে আছে। ওদের দিকে লোক গুলো এগোতেই ওদের গার্ডরা হামলা করে তাদের উপর কিন্তু গার্ড গুলোকে তারা গুলি চালিয়ে মেরে ফেলে।

? In Office ?

রওশন নিজের কেবিনে বসে কাজ করছে আর টাইসেল ফ্লোরে একটা বল নিয়ে খেলা করছে।

হঠাৎ রওশনের ফোনে কল আসে। রওশন তাকিয়ে দেখে কমিশনার কল করেছে।

রওশনঃ জি বলেন কমিশনার ইকরাম?

অপর পাশে কমিশনারের কথা শুনে দাঁড়িয়ে যায় রওশন,,

রওশনঃ হাইজ্যাক!!( অবাক হয়ে)

To be continued……….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here