The_Beauty_Of_Love,13,14

0
1657

#The_Beauty_Of_Love,13,14
#Samayra_Mihu(Nafisa)
#Part_13
.
.
.
কিছুদিন পর,,, বিকেলে আমি ছাদে বসে আছি দোলনায়,, মাথার মধ্যে অনেক কিছু ঘুরছে,,,উনি কি আমাকে মেনে নিবে নাকি নিবে না ,,উনি বুঝবে না কখনো আমি ওনাকে ঠিক কতটা ভালবাসি,,এমন কেনো উনি সব সময় আমার থেকে দূরে থাকবে আবার রাতে ঘুমালে কাছে আসবে,,, আমি জানি আপনিও আমাকে ভালোবাসেন বলেন না কেনো বলুন তো ,,,, অনেক কিছু ভাবছিলাম তখন আমার ফোন টা বেজে উঠলো,,, রিসিভ করে যা শুনলাম তা শুনার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না হাত থেকে ফোন টা পড়ে গেলো,,চোখ থেকে পানি পড়ে যাচ্ছে ,,আমি দৌড়ে নীচে চলে এলাম মামনির কাছে,,,,,,,,,পুরো রুম দেখলাম মামনি কোথাও নেই রান্না ঘরেও নেই,,আমার হাতে এতো সময় নেই তাই আমি মামনি কে না বলেই চলে গেলাম,,,,বাড়ি তে একটা গাড়ি থাকে ড্রাইভার কে বলে চলে উঠে বসলাম,,,,

“কোথায় যাবো বৌমনি আর তুমি কান্না করছো কেনো?(ড্রাইভার বলে উঠে)

“কাকা হসপিটাল চলেন,,,একটু তাড়াতাড়ি চলুন,,,

উনি তাড়াতাড়ি গাড়ি চালিয়ে নিয়ে যায়,, কেনো যানি মনে হচ্ছে রাস্তা শেষ হয় না ,, অনেক কান্না পাচ্ছে,,,গাড়ি গিয়ে হসপিটালের সামনে থামলো,,আমি গাড়ি থেকে দৌড়ে নেমে ভিতরে চলে গেলাম,, ফোনে আমাকে আগেই রুম নম্বর বলে দিয়েছিল তাই খুঁজতে অসুবিধা হলো না,,,আমি দৌড়ে রুমে ঢুকে গেলাম,,, বেডে শুয়ে থাকা লোকটা কে দেখে জড়িয়ে ধরে হাউ মাও করে কেদে উঠলাম,,,,,

“কি করে এমন হলো আমাকে জানাও নি কেনো ,,(কান্না করে)

“এখন একটু ঠিক আছি মা তুই কান্না করিস না ,,এখন বল তুই কামন আছিস কতো দিন তোকে দেখিনি,,,,

“ভালো আছি মামা,, আচ্ছা মামী কোথায় আর ডক্টর কি বলেছে,,

“তোর মামী ডক্টরের সঙ্গে কথা বলতে গেলো,,,

“আচ্ছা তুমি বেশি কথা বলো না চুপ করে রেস্ট নাউ ডক্টর কি বললো দেখছি আমি,,,,

এই বলে সেখান থেকে বাইরে এলাম,,, তখন মামী ফোন করেছিলো,, ফোন করে মামার অসুস্থ্যতার কথা বলে,, মামা নাকি আমাকে দেখতে চায়ছে একমাত্র মামা ই যে আমাকে অনেক ভালোবাসা দিয়েছে নিজের আব্বুর মতো,,, ছোটো থেকে পড়া লেখা করিয়ে বড়ো করেছে যখন যা দরকার পড়েছে মামীর কাছ থেকে লুকিয়ে এনে দিয়েছে,,, সেই মামার এমন কথা শুনে নিজেকে ধরে রাখতে পারিনি দৌড়ে এসেছি,,,,,,,,,রুম থেকে বের হয়ে দেখি মামী ডক্টর কে কি যেনো বলছে কান্না করছে আর ,, চোখে মুখে চিন্তার ছাপ,,,আমি তাড়াতাড়ি গিয়ে বললাম,,,

“কি হয়েছে মামী তুমি কান্না করছো কেনো?,,, (কিন্তু মামী আমার মুখের দিকে তাকিয়ে আবার মুখ ফিরিয়ে নিলেন,, কথা বললেন না বুঝলাম অনেক রেগে আছে এখনও আমার ওপর,, আমি ডক্টর কে জিজ্ঞেস করলাম,,,)

“কি হয়েছে ডক্টর?(ডক্টর আমার দিকে তাকিয়ে বলে)

“দেখুন ওনার একটা কিডনি নষ্ট হয়ে গেছে আরেক টা কিডনি তে পাথর হয়েছে,, এখনি যদি অপারেশন না করে তো উনি মারা যেতে পারে,,,,,

ডক্টর এর কথা শুনে এক পা পিছিয়ে গেলাম,,, মামার এমন কথা শুনে বুক টা ফেটে যাচ্ছে তবুও নিজেকে সামলিয়ে বললাম,,,

“সমস্যা কোথায় ডক্টর অপারেশন করেন না কেনো?

“অপারেশন করাতে ৫০ লাখ টাকা লাগবে,,,,, হাতে ২৪ ঘণ্টা সময় আছে আপনারা তাড়াতাড়ি টাকার ব্যাবস্থা করুন,,, পেসেন্ট এর অনেক আগে থেকে এই সমস্যা আমি আগেও বলেছি অপারেশন করতে কিন্তু উনি রাজি হননি,,এখন না করলে উনি বাঁচবে না,,,,,(এই বলে ডক্টর চলে গেলো)

৫০ লাখ টাকা কোথায় পাবো আমি কে দিবে আমাকে এতো টাকা,, কিন্তু আমাকে যে করেই হোক টাকা যোগাড় করতেই হবে,,, চৌধূরী সাহেব আমাকে নিশ্চয় সাহায্য করবে হ্যাঁ আমি চৌধূরী সাহেব কেই বলি,,,,,,

“মামী তুমি মামার কাছে বসো আর টেনশন করো না আমি টাকার ব্যাবস্থা করছি,,,,(আমার কথা শুনে মামী একটু অবাক হলো কিন্তু কিছু বললো না ,, মামার কাছে চলে গেলো)

ফোন আমার ফোন কোথায়,,, কিছুক্ষন আগের কথা মনে পড়ে আমি তো ফোন ছাদেই ফেলে এসেছি,,,, হসপিটালের ফোন থেকে ফোন করি,,,দৌড়ে গেলাম গিয়ে ওনার নম্বরে ফোন করছি কিন্তু ধরছে না,,, কি করছে উনি ফোন ধরছে না কেনো,,, প্লিজ চৌধুরী সাহেব ফোন টা রিসিভ করুন আমার যে খুব দরকার আপনাকে,,,, অনেক বার ট্রাই করার পরও ধরলো না,, অনেক কান্না পাচ্ছে দরকারে কাওকে পাওয়া যায় না ,,,, উনি এখন অফিসে থাকবে হ্যাঁ আমি বরণ অফিসেই যায়,,,,,যেই ভাবা সেই কাজ দৌড়ে বাইরে গেলাম ড্রাইভার কাকা বললাম ওনার অফিসে নিয়ে যেতে,,,,,,কিছুক্ষন পরে চলে এলাম ওনার অফিসে,,তাড়াতাড়ি নিচে নেমে দৌড়ে ভিতরে গেলাম,,আমাকে এই সময় অফিসে দেখে সবাই আমার দিকে তাকিয়ে আছে,, আমি সোজা ওনার রুমে গেলাম,,, কিছু না বলেই ঢুকে পড়লাম ওনার কেবিনে,,,ঢুকে দেখি অনেক গুলা লোক মনে হয় মিটিং চলছিলো,,,,,ওনারা সবাই আমার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে,, উনি ও অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে আমি এই মুহূর্তে কি বলবো বুঝতে পারছি না,,,,উনি আমার মুখের দিকে ব্রু কুচকে তাকিয়ে থেকে বাকি লোক দের বলে পরে কথা হবে আপনাদের সঙ্গে ,,,ওই লোক গুলাও চলে গেলো,, উনি উঠে এসে আমার সামনে এসে বলে ,,,

“কি হয়েছে মিহু তোমাকে এমন দেখাচ্ছে কেনো,,,

উনি এই প্রশ্ন করতেই আমি আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলাম না ওনাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দিলাম,, উনি অবাক আমার এমন করায় আমি কান্না করেই যাচ্ছি,,,,

/”মিহু কি হয়েছে বলবা তো না বললে বুঝবো কি করে বলো ,,,?(মাহিরের জান পাখি টা যেনো উরে গেছে মিহু কে এমন করে কান্না করতে দেখে)

“আমাকে সাহায্য করুন প্লিজ আপনার সাহায্যর অনেক প্রয়োজন আমার,,,(কান্না করে)

“কি হয়েছে বলো আর কিসের সাহায্য খুলে বলো,,,,

“মামা,,, আমার মামার কিডনি নষ্ট হয়ে গেছে অপারেশন করাতে হবে ৫০ লাখ টাকা লাগবে নয়তো মামা কে বাঁচানো যাবে না,,, প্লিজ আমাকে সাহায্য করুন,,আমি সারাজীবন আপনার কথা মতো চলবো,,যা বলবেন তাই করবো আমাকে ইউএসএ পাঠাতে হবে না,, প্লিজ,,(কান্না করতে করতে নিচে বসে পরলাম,,)

মিহুর এমন অবস্থা দেখে মাহিরের বুক টা যেনো ছিড়ে যাচ্ছে,,,,কতো টা অসহায় হলে এমন করে সাহায্য চায়,,মাহিরের খুব করে বলতে ইচ্ছে করছে আমার থেকে সাহায্য কেনো চায় তে হবে এইসব তো সবই তো তোমার,,,,,মাহির মিহুকে উঠিয়ে চোখের লোক খুব যত্ন করে মুছে দিয়ে জড়িয়ে ধরে শক্ত করে,, মাথায় হাত বুলিয়ে বলে,,,

“কিছু হবে না তোমার মামার আমি সব ঠিক করে দিবো,,,চলো আমার সঙ্গে,,,,,,,

এই বলে উনি আমাকে নিয়ে বেরিয়ে পরে,,,,হসপিটালে গিয়ে উনি ডক্টরের সঙ্গে কথা বসে একটা চেক লিখে দেয়,, তারপর আমার মামার কেবিনে আসে,,, আমাদের দুইজন কে ভিতরে আসতে দেখে মামা মামী অবাক হয়ে ই তাকালো আমাদের দিকে,,,উনি গিয়ে মামা মামী কে সালাম করে,, মামা সালাম এর উত্তর দিয়ে বলে,,

“মিহু উনি কে?

আমি কি বলবো ভাবছিলাম তখনি উনি বলে উঠে,,

“মামা আমি মিহুর হাসব্যান্ড,,

ওনার কথা শুনে মামা খুশি হলেও মামী অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে,,

“এটা তোর স্বামী হলে আমি সেদিন তোর সঙ্গে যাকে দেখেছিলাম সে কে?

মামীর প্রশ্নে আমি কি উত্তর দিবো আমার জানা নেই মাথা নিচু করে দাড়িয়ে আছি,, তখন মাহির বলে,,

“ওটা মিহুর এক ফ্রেন্ড ছিল মামী,,আচ্ছা ডক্টর এখনই চলে আসবে একটু পরে মামার অপারেশন শুরু হবে,,(উনি কথা কাটানোর জন্য বললো ওনার প্রতি টা কথা কাজে আমাকে মুগ্ধ করছে নতুন করে প্রেমে পড়ে যাচ্ছি বার বার)

“এতো টাকা কে দিলো?(মামা অবাক হয়ে বললো)

“মামা উনি দিয়েছে তোমাকে আর টেনশন করতে হবে না তুমি খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যাবে,,,

মামা মামী ওনার কাছে ধন্যবাদ জানাই,,

“ধন্যবাদ বাবা তুমি না থাকলে যে কি হতো আমাদের,,,(মামী হাত যোর করে বলে)

“একি করছেন মামী আমি আপনার ছেলে হলে কি এমন করতাম না,, আপনি কোনো টেনশন করবেন না আমি আছি তো,,,(মামীর হাত ধরে মায়া ভরা কণ্ঠে বললো উনি)

মামী ওনাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দিল,, আমারও কান্না আসছে উনি এতো ভালো কেনো,,, কিছুক্ষন পরে ডক্টর এসে মামা কে নিয়ে যেতে লাগে,, আমি মামা কে মামা ইশারাই বললাম ভয় পাবে না সব ঠিক হয়ে যাবে,,,,তারপর মামা কে অপারেশন চলতে থাকে আমরা বাইরে বসে আছি উনিও আমার পাশে বসে আছে,,, ওনাকে বলেছিলাম চলে যেতে কিন্তু যায় নি,,,,,,প্রাই তিন চার ঘণ্টা পরে ডক্টর বের হলো,, ডক্টর কে মামার কথা জিজ্ঞেস করায় উনি বললেন,, একদম ঠিক আছে,,,, আজ কেও দেখা করতে পারবেন না কাল জ্ঞান ফিরলে দেখা করতে পারবেন,,,, আমি মামী কে বললাম তুমি বাড়ি চলে যাও আমি থাকছি কিন্তু মামী বলল না আমি থাকি তোরা যা,, কাল আবার আসবি,,,,তাই আমরা চলে আসলাম উনি আর আমি,,,,,,বাড়ি তে আমাদের দেখে মামনি মনে উঠে ,,

“কি রে মিহু তুই তখন কিছু না বলে বেরিয়ে গেছিস কেনো আমি কতো খুঁজেছি,, পরে ড্রাইভার কে ফোন দিয়ে উনি তুই হসপিটালে কি হয়েছে? কে অসুস্থ্য?

মামনি কে থামিয়ে সব খুলে বললাম উনি বললেন কাল যাবে দেখতে আমাদের সঙ্গে,, ফ্রেশ হয়ে কিছু খেয়ে রুমে চলে এলাম আমরা এখন রাত প্রায় ১২:৩০,,,, অনেক ক্লান্ত লাগছে তাই শুয়ে যেতেই ঘুমিয়ে পরলাম উনিও ঘুমিয়ে গেলো,,,

চলবে?

#The_Beauty_Of_Love
#Samayra_Mihu(Nafisa)
#Part_14
.
.
.
মামনি কে থামিয়ে সব খুলে বললাম উনি বললেন কাল যাবে দেখতে আমাদের সঙ্গে,, ফ্রেশ হয়ে কিছু খেয়ে রুমে চলে এলাম আমরা এখন রাত প্রায় ১২:৩০,,,, অনেক ক্লান্ত লাগছে তাই শুয়ে যেতেই ঘুমিয়ে পরলাম উনিও ঘুমিয়ে গেলো,,,

পরের দিন সকালে আমি মামনি আর উনি নাস্তা করে নিলাম আর মামীর জন্য নাস্তা নিয়ে নিলাম বাইরের খাবার ভালো না ওতো তাই,,,আমরা তিন জনে বেরিয়ে পরলাম হসপিটাল এর উদ্দেশে,,,,,হসপিটালে এসে আমরা ভিতরে যায় ডক্টর এর কাছে খবর নিয়ে যানি মামার জ্ঞান ফিরেছে আর ভালো আছে,,, আমরা ভিতরে গেলাম মামার কাছে মামী বসে ছিলো,,,,মামনির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিলাম আর মামা শরীর এখন কামন আছে জিজ্ঞেস করলাম,,,মামনি উনি গল্প করছে মামী মামার সঙ্গে,,,তখন আমি বলি,,,

“মামী আমি নাস্তা নিয়ে এসেছি তুমি খেয়ে নাউ আর মামা কে এখন ফল জুস ছাড়া আর কিছু দেওয়া যাবে না ডক্টর বলেছে,,,তুমি খেয়ে নাও,,,,

আমার কোথায় মামী হ্যাঁ বললো,, মামনি আর ওনাকে মামার কাছে রেখে আমি মামী কে হসপিটালের ক্যান্টিনে নিয়ে গেলাম ,,মামনি নাস্তা করছিল আমি বসে ছিলাম,, ছোটো থেকেই মামীর সঙ্গে আমার ভালো করে কথা হয় না,, হয় না বলতে মামী পছন্দ করতো না আমার সঙ্গে কথা বলতে তাই আমিও বলতাম না দরকার ছাড়া,,,এখনও তার ব্যাতিক্রম না,,,,মামীর খাওয়া হলে আমরা আবার চলে যায় মামার কাছে,,,

“মামনি তুমি বাড়ি তে চলে যাও আর আপনি অফিসে যান আপনার দেরি হচ্ছে,,আমি আজ এখানে থাকি,,,,(মামনি আর ওনাকে বললাম)

“ঠিক আছে আমি অফিস থেকে বাড়ি আসার সময় তোমাকে নিয়ে যাবো,,,,(আমি বলতে চায় ছিলাম রাতেও থাকবো কিন্তু তার আগেই উনি এটা বলে দিলেন,,আমিও আর কিছু বললাম না)

মামনি আর উনি মামা মামী বিদায় দিয়ে চলে গেলো,,,আমি মামার কাছে বসে আছি,,মামী একটা চেয়ারে বসে হেলান দিয়ে বসে আছে,,দেখেই মনে হচ্ছে অনেক ক্লান্ত মামী,,আমি মামীর কাছে গিয়ে বললাম,,,

“মামী তুমি বাড়িতে গিয়ে একটু রেস্ট নিতে পারো এখন তো আমি আছি তুমি বরণ বিকেলে আসবে আবার,,এখন যাও,,,

মামী প্রথমে যেতে চায় ছিলো না তবুও যোর করে পাঠালাম,,,,,এখন আমি একা বসে আছি,,মামা ঘুমিয়েছে ওষুধ এর পাওয়ার অনেক বেশি,, তাই মামা ঘুমিয়ে পড়েছে আমি বসে আছি আর মাথার মধ্যে হাজারো চিন্তা ভাবনা ঘুরছে,,,আজ উনি না থাকলে কি হতো মামার কিছু হয়ে গেলে মামী কোথায় যেতো,, কি করতো,,মামায় তো একমাত্র ভরসা ছিল আমাদের,,,,,,, অনেক ক্ষন পর মামার জ্ঞান ফিরে,, তারপর মামার সঙ্গে গল্প করতে লাগলাম,,,মামার সঙ্গে গল্প করে বসে থেকে সারাদিন চলে গেলো,, বিকেলে মামী ও ফিরে এলো,,,কিছুক্ষন পর সন্ধ্যে হবে,,তখনি উনি এলেন মামার সঙ্গে একটু কথা বলে আমরা চলে এলাম বাইরে,,,,,গাড়ি তে উঠে বসলাম অনেক ক্লান্ত লাগছে তারওপর সারাদিন কিছু খায়নি,,,উনি আমার দিকে তাকিয়ে বলে,,,

“কিছু খেয়েছ?

ওনার প্রশ্নে আমি মাথা নাড়ালাম অর্থাৎ না খায়নি,,,উনি গাড়ি চালাতে লাগে,,অনেক ক্ষন যাওয়ার পর গাড়ি থামালো এখানে গাড়ি থামালে আমি ওনার দিকে তাকায়,,

“নামো গাড়ি থেকে,,

“মানে? কেনো নামবো? আপনি কি আমাকে মাঝ রাস্তায় রেখে যাওয়ার প্ল্যান করছেন?(উনি আমার মুখের দিকে একটু তাকিয়ে থেকে নিজেই গাড়ি থেকে নেমে গেলো,,আমি তো অবাক কি করছেন উনি?,,, উনি আমার দিকে এসে দরজা খুলে বলে)

“সব সময় এক লাইন বেশি বুঝা মেয়েদের কাজ,,, নামো চোখে দেখতে পাও না সামনে রেসটুরেন্ট,,, সারাদিন তো না খেয়ে আছো দেখেই বুঝা যাচ্ছে কতটা দুর্বল তুমি,,,,,এখন নামবে নাকি আমার মুখ দেখেই পেট ভরবে?(আমি ওনার কথা শুনে একপলকে তাকিয়ে ছিলাম ওনার মুখের দিকে এতো ভাবে উনি আমার কথা,,শেষের কথা শুনে তাড়াতাড়ি বেরিয়ে এলাম বাড়ি থেকে)

উনি আমাকে নিয়ে ভিতরে নিয়ে যায় ওয়েটার কে ডেকে খাবার অর্ডার করতে বলে,,আমি কিছু খাবার অর্ডার করি আর উনিও করে,,,তারপর দুজনে খেয়ে বেরিয়ে পরলাম আবার,,সত্যি বলতে আমার অনেক খুদা লাগছিলো,,,সেই সকালে নাস্তা করে এসেছিলাম আর কিছু খায়নি,,,,,উনি আমাকে নিয়ে বাড়িতে চলে আসে মামনি কে বলে দি বাইরে থেকে খেয়ে এসেছি ,, মামনি যেনো খেয়ে নেই,,, আমি ওপরে এসে ওয়াশ রুমে চলে যায়,,গোসল করা দরকার হসপিটাল থেকে এসেছি ভালো লাগছে না গোসল করলে একটু ফ্রেশ লাগবে,,,,তাই গোসল করতে লাগলাম,,,,,,গোসল শেষে প্লাজো আর একটা সাদা টি শার্ট পরে বের হলাম চুল মুছতে মুছতে,,,,আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুল ঝরছি,,,,,,,,,

।।

এই দিকে মাহির ফ্রেশ হয়ে বেডে বসে ল্যাপটপে কি করছিলো তখন তার ওপর পানি ছিটা আসে,,এই সময় পানি ছিটা পাওয়ায় অবাক হয়ে মাথা উচু করে তাকায় দেখে ,, মিহু আয়নার সামনে চুল ঝরছে,,,চুল গুলো অনেক বড়ো এই দিক সেদিক নিয়ে চুল ঠিক করছে,,সাদা টি শার্ট পাতলা শরীর অনেক সুন্দর লাগছে মাহিরের কাছে,,, মাহির উঠে মিহুর কাছে যায়,, দুই পাশ দিয়ে হাত দুটো নিয়ে মিহুর পেটে রেখে টেনে আনে নিজের দিকে,,,,,,,

।।

আমি চুল ঠিক করতে বিজি ছিলাম তখন পিছন থেকে উনি আমার পেটে হাত দিয়ে কাছে নিয়ে যায়,,ওনার বুকে আমার পিট ঠেকে যায়,,,উনি আমার চুল গুলো এক সাইডে করে আমার ঘাড়ে গভীর ভাবে কিস করে,, আমি যেনো কেপে উঠি ওনার পর্শে,,হাত থেকে টায়োল টা পড়ে যায়,,,ওনার ঊষ্ণ ঠোঁটের ছোয়া যেনো বাড়তেই থাকছে,,,,ওনার প্রতি টা ছোয়ায় কেপে কেপে উঠছি,, আমি ওনার দিকে ঘুরে জড়িয়ে ধরি ওনাকে,,,,,,,,,,,,

মাহির কি করছে সে নিজেও যানে না ,,মাহির যেনো নিজের মধ্যে নেই আজ সে হারাতে চায় মিহুতে,,,,মাহির মিহু কে কোলে তুলে বেডে শুইয়ে দেই,, মাহির মিহুর পুরো মুখে পাগলের মতো কিস করতে লাগে,,,,মাহির মিহুর ঠোঁটে নিজের ঠোঁট ঢুবিয়ে দেই,,,, মাহির আজ নিজের মধ্যে নেই,,,, এই দিকে বার বার মাহিরের ফোন বেজে উঠছে,,,,, মাহির একবার ফোন নিয়ে কেটে দেই,,, পরে আবার আসে এবার এক প্রকার বিরক্ত নিয়ে ফোন রিসিভ করে বারান্দায় চলে যায় মাহির,,,,,

উনি আমাকে বেডে নিয়ে কিস করতে থাকে এমন সময় ফোন বেজে উঠলো মাথা টায় গরম হয়ে গেলো এক প্রকার,, কিন্তু উনি কেটে দেই,, পরে আবার বেজে উঠলে উনি রিসিভ করে বাইরে চলে যায়,,, সালা কোন বেয়াদোপ ফোন করেছিস ঘরে কি তোর বউ নেই,, যে আমার রোমান্স এর ৩৬ টা বাজালি,,,কত্তো সুন্দর আমার চৌধুরী সাহেব আমাকে আদর করছিল,,, সব ওই ফোনের দশ যে ফোন করেছিস ,,তোর বউ তোকে ঝাড়ু দিয়ে পিটাবে দেখিস,, জীবনেও তুই বউ এর আদর পাবি না ঝাড়ু পিটা ছাড়া,,, মিহুর অভিশাপ রইলো হুহ,,,,,,,,ওই লোক কে বোকা দিতে দিতে শুয়ে পরলাম,,কিছু খন আগের কথা মনে পড়ে লজ্জায় শেষ হয়ে যেতে মন করছে ইসস কি লজ্জা কি লজ্জা,,,,,,,,কিন্তু এতো রাতে কে ফোন করলো,,আর উনি আসছে না কেনো এখনও কি কথা বলছে,,,দেখবো একবার গিয়ে,, না না আগের বার কি হয়েছিল মনে নেই কতো কথা শুনিয়ে ছিলো,,না আমি যাবো না তার চেয়ে ঘুমিয়ে পড়ি,,, এই ভেবে আমি ঘুমিয়ে পরলাম,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,

এই দিকে মাহির কথা শেষ করে রুমে আসে,,,, মাহির যখন ল্যাপটপে নিয়ে কাজ করছিল তখন একটা ডিলের মেইল পাঠিয়ে ছিলো মিস্টার খান কে,,, সেটার জন্যই মিস্টার খান ফোন করেছিলো,, বাট ফোন করার সময় টা একদম ভুল ছিলো,,না চায় তেও মাহির রিসিভ করে,,,,,,মাহির রুমে এসে দেখে মিহু গুটিসুটি হয়ে শুয়ে আছে,, মাহির মুচকি হেসে মিহু কে বুকে নিয়ে শুয়ে পড়ে মিহুর কপালে কিস করে ঘুমিয়ে পড়ে মাহির,,,,,

দেখতে দেখতে আরো ১৫ দিন কেটে যায় আজ আমার মামা কে বাড়ি তে নেওয়া হবে,,,, তাই উনি আর আমি এসেছি,, মামা আগের থেকে একটু সুস্থ তবে হাঁটতে পারে না,, একে বারে ঠিক হতে তো সময় লাগবেই,,,,,আমি আজ সকাল থেকেই বায়না ঘরেছি আমি কইদিন মামার ওখানে থাকবো,, কিন্তু উনি রাজি হচ্ছে না,, রাজি হচ্ছে না বললে ভুল হবে আসলে উনি কিছুই বলছে না,, সকাল থেকে প্রায় অনেক বার বলেছি তবুও হ্যাঁ কি না কিছুই বলছে না কি যানি কি চলছে ওনার মনে,, আর একবার বলবো দেখি কি বলে,,, আমরা মামার কাছে চলে এলাম সব কিছু ঠিক করে ওষুধ নিয়ে,, বেরিয়ে এলাম তখনি মামা মামীর সামনে বলে উঠলাম,,,

“আমি কই দিন মামার কাছে থাকি বেশি না দুই দিন প্লিজ,,,,(ওনার দিকে তাকিয়ে উনি কিছু বলতে যাবে তার আগের মামা বলে)

“হ্যাঁ বাবা মিহু কে দুই দিন আমার কাছে রাখো দুই দিন পর নিয়ে যাও,,,

উনি আর মামার কথা ফেলতে পারলেন না,, আমাদের রেখে এলেন মামার বাড়ি তে ,, মামা অনেক বার বলেছিল ভিতরে আস্তে কিন্তু দেরি হচ্ছে বলে চলে গেলেন,,, আমি আর কিছু না ভেবে মামা কে ভিতরে নিয়ে যায়,,, অনেক দিন পরে আবার এই বাড়িতে এলাম ছোটো থেকে বড়ো হয়েছি এখানে অনেক স্মৃতি আছে ,,, মামার এই বাড়ি টা এক তালা তিন টা রুম,, তিন টা রুম বলতে দুটো রুম বড়ো আর একটা ছোটো একটু অগোছালো আর সেটাই আমার রুম ছিলো আর একটা রান্না ঘর,,, একটাই থাকে মামা মামী আর একটায় আপু মানে মামার মেয়ে কিন্তু আপু তো আর নেই তাই ওই রুম টা খালি থাকে,,, মামা মামী কে অনেক বার বলেছিল আমাকে ঐ রুম টা দিতে কিন্তু মামী দেন নি,,,,, আমি মামা কে তার রুমে দিয়ে এসে আমি আমার রুমে যাচ্ছিলাম তখন মামী পিছন থেকে বলে উঠলো,,,,

” ওই রুমে তোকে আর থাকতে হবে না তুই আলিশার (আপুর নাম আলিশা ছিলো) রুমে থাকবি আজ থেকে,,,,,(এই বলে মামী চলে গেলেন)

আমি তো মামীর কথা শুনে অবাক,,, আর খুশি ও লাগছে ,,আমি আপুর রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিলাম,,,দেওয়ালে আপুর একটা ছবি টাঙানো আছে ছবি টার দিকে তাকিয়ে বড়ো একটা নিঃশ্বাস ফেললাম,,,আর বললাম,,,

“কেনো এমন করলা আপু মামী না হয় একটা ভুল করেই ফেলেছে,,, তাই বলে তুমি এতো বড়ো শাস্তি দিলে,, মামী তো তোমার ভালোই চেয়েছিলো কেনো এমন করলা,,,,,,,,

রুম থেকে বের হয়ে রান্না ঘরে চলে গেলাম,,আগে আমি ই সব রান্না করতাম,,, রান্না ঘরে গিয়ে দেখি মামী রান্না করছে দুপুরের জন্য,,,,আমি বললাম,,,

“মামী তুমি মামার কাছে যাও মামার কিছু দরকার হতে পারে আমি রান্নার কাজ টা করে নিচ্ছি,,,

আমার কোথায় মামী মাথা নেরে চলে গেলো আমি রান্না করতে লাগলাম,,,,রান্না শেষে মামার সঙ্গে গল্প করলাম আরো অনেক কিছু করে সারাদিন কেটে গেলো,,, আজ অনেক ভালো লাগছে এই বাড়িতে আগে তো এতো ভালো লাগতো না সারাক্ষণ মামী কথা শোনাত,,, একটা ভুল হলেই দুটো বেশি কথা শুনতে সুযোগ ছাড়তেন না,,,কিন্তু আজ কিছুই বলে না যতো বারি কথা বলেছে অনেক ভালো করে,,,আমারও অনেক ভালো লাগছে ,,,,,,,,,,,রাতের খাবার খেয়ে রুমে চলে এলাম ঘুমাতে,,,,,,,,

এই দিকে মাহির,,, কাজ শেষে বাড়ি এসে আগে মিহু কে খোঁজে রোজ কার মতো কিন্তু একটু পরেই মনে পরে,, মিহু তো নেই তার মামার বাড়ি তে,,, তাই মাহির ফ্রেশ হয়ে কোনো রকম খেয়ে রুমে চলে আসে,,,ঘুমানোর জন্য শুয়ে পরে পাসে মিহুর যায় গার দিকে চোখ যায় ফাঁকা আজ এই জায়গা টা,,, মাহিরের বুক ও যে আজ খালি,, মিহু নেই আজ তার বুকে মাথা রেখে শুয়ে,,,,অনেক মিস করছে মাহির মিহু কে,,,ঘুম চোখে কোনো মতেই আসছে না,, একবার এই দিকে একবার ওই দিকে করছে,,, শুয়ে থাকতেও যেনো তার ভালো লাগছে না আজ,,, তাই বেড থেকে উঠে বারান্দায় চলে যায়,,, একটা সিগারেট ধরিয়ে টান দেয়,,, মাহির সিগারেট খায় না বাট কখনো খায় অনেক টেনশন হলে আর কিছু জিনিস বুঝতে না পারলে,,,,,কিন্তু আজ সিগারেট খাওয়ার কারণ কি,,টেনশন নাকি মাহিরের কিছু বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে,,,,,,, হ্যাঁ আজ মাহির বুঝতে পারছে না কেনো মিহুর প্রতি ওর এতো টান,,,তবে কি সে মিহু কে ভালবেসে ফেলেছে,,, মিহু কে ছাড়া যে তার আজ কাল কিছুই ভালো লাগছে না,,, বালির মতো মাহিরের মন ও যে হাত থেকে চলে যাচ্ছে,,,,,,,, মাহির এটা খুব ভালো বুঝে গেছে মিহু কে ছাড়া সে থাকতে পারবে না,, আর সে মিহু কে কোথাও যেতে দিবে না,,, ওর কাছেই রাখবে,,,,,,,সিগারেটের শেষ একটা টান দিয়ে ফেলে দেয়,,,,আর নিজে নিজে বলে,,,,

“ভালোবাসি কি যানি না আমি তবে তোমাকে ছাড়তে আমি কখনো পারবো না,,,তুমি শুধু আমার আর আমার কাছেই থাকবে মিহু,, কাল থেকে তুমি আমার নতুন রূপ দেখবে,,,তুমি না চায়লেও এই মাহির কে তোমাকে সহ্য করতে হবে,,,,, তুমি শুধু আমার জান পাখি,,,,, (জান পাখি নাম টা অজান্তেই বেরিয়ে এলো মাহিরের মুখ থেকে,,, মাহির ভেবে দেখলো সে কি বললো,, ) জান পাখি মন্দ না তো হ্যাঁ মিহু তুমি শুধু আমার জান পাখি,,(মুচকি হেসে রুমে চলে যায় মাহির)

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here