The_Beauty_Of_Love,Part_21

0
1601

#The_Beauty_Of_Love,Part_21
#Samayra_Mihu(Nafisa)

“ওহ তার মানে আপনি সুইসাইড করতে এসেছেন,,আর করার জন্য আমার গাড়ি তাই পেলেন,,,আর মরতে এসে এতো সেজে গুজে এসেছেন কেনো?(মেয়ে টার হাত কলার থেকে ছাড়িয়ে বললো নয়ন)

“বাহ রে আমি সুইসাইড করবো তারপর মরে যাওয়ার পর খবরের কাগজে আমার ছবি বের হবে তো তাই একটু সেজে এসেছি যাতে ছবি টা ভালো উঠে,,,,(মুচকি হেসে বলল মেয়েটা)

মেয়েটার কথা শুনে নয়নের জ্ঞান হারানোর অবস্থা,,,এই মেয়ে কি অন্ন কিছু,,মরতে এসেও ছবির কথা ভাবে,,,, আরো একবার পা থেকে মাথা পর্যন্ত দেখে নয়ন মেয়েটার,,,,,, নয়নের এমন করে তাকিয়ে থাকা দেখে মেয়েটা একটু ভাব নিয়ে বললো,,,।

“ওহ মিস্টার এমন করে কি দেখছেন হু যানি আমি একটু বেশি সুন্দর,, যে কেও দেখলেই প্রেমে পরে যাবে,,তাই বলে কি এমন করে দেখতে হবে নাকি,,,(মুখ ভেংচি দিয়ে)

“তুমি সুন্দর এই ভুল ধারণা টা কে ধুকায়ছে তোমার মাথায়,,,?পেত্নী সুন্দরী একটা,,(নয়ন প্যান্টের পকেটে হাত দিয়ে অন্য পাসে তাকিয়ে,,)

নয়নের কথা শুনে মেয়েটা তেলে বেগুনে জ্বলে উঠে,,,

“কি আমি সুন্দর এটা ভুল তাহলে কি আমি সুন্দর না,,আপনার সাহস তো কম না আপনি তিথি কে অপমান করেন,,,(মেয়েটার নাম তিথি)

তিথি এই বলে নয়নের কলার আবার ধরতে যায় কিন্তু এবার নয়ন তিথির হাত ধরে নিয়ে বলে,,,

“মিস পেত্নী সুন্দরী একবার নয়ন আহমেদ এর কলার ধরার সুযোগ পেয়েছো তাই বলে কি বারে বারে পাবে,,,আর তোমার সাহস কি করে হয় আমার কলার ধরার,,এই টুকু একটা পুচকি মেয়ে,,,,

তিথি নয়নের কাছ থেকে তার হাত ছাড়িয়ে রেগে ফুসতে লাগে কি বলবে সে খুঁজেও পায় না তখন নয়ন আবার বলে,,,

“তো সুইসাইড এর কারণ কি নিশ্চয় বয় ফ্রেন্ড ছ্যাকা দিয়েছে,,, এখন কার মেয়েরা তো এটাই দুই দিনের প্রেম করে ছ্যাকা খেয়ে সুইসাইড করা,,,(নয়ন তার নিজের মতো বকবক করেই যাচ্ছে)

এই দিকে তিথি ব্রু কুচকে নয়নের কথা শুনছে বলছে কি ছেলে টা মাথা ঠিক আছে,,,

“চুপ করেন,, আমার কোনো বয় ফ্রেন্ড নেই আর আমি ছ্যাকা ও খায়নি,,,, কারো ব্যাপারে না জেনে কিছু বলতে হয় না জানেন না আপনি,,জানবেন ই বা কি করে বুদ্ধি তো হাঁটুর নিচে,, শাকচুন্না, সাদা লাল মহিষ,,

তিথির কোথায় নয়নের রাগ উঠে যায়,, নয়ন তিথির দুই বাহু শক্ত করে ধরে গাড়ির সঙ্গে চেপে ধরে,,রেগে বলে,,,

“হাউ ডেয়ার ইউ,,,,। সাহস কি করে হয় তোমার আমাকে এই সব বলার,,আজ পর্যন্ত কেউ আমার সঙ্গে উঁচু গলায় কথা বলে নি আর তুমি এই সব বলছো,,,,

“কি করছেন ছাড়ুন আমাকে ব্যাথা লাগছে আমার,, ভালো হবে না কিন্তু,,,ছাড়ুন বলছি,,,(তিথি একটু ভয় পায় বাট সেটা নয়ন কে বুঝতে দেই না)

“ছাড়বো না কি করবা?(তিথির আর একটু কাছে গিয়ে)

তিথি কি করবে এবার বুঝতেই পারছে না তার কথায় বন্ধ হয়ে গেছে,,আজ পর্যন্ত কোনো ছেলে তার এতো কাছে আসে নি,,,,তিথি কি করবে ভেবে পাচ্ছে না,,শেষে একটা আইডিয়া বের করলো,,,,তিথি একটু ঝুঁকে নয়নের হয়ে অনেক যোরে কামড়িয়ে ধরলো,,, নয়ন ব্যাথায় তিথি কে ছেরে দূরে সরে গিয়ে হাত দেখতে লাগে,,তিথির দাঁতের দাগ বসে গেছে এতো যোরে কেটেছে,,,,এই সুযোগে তিথি দৌড়ে চলে যায় কিছু দূরে সেখানে একটা স্কুটি ছিলো সেটা তে চেপে ওখান থেকেই চিৎকার করে বলে,,,

” লাল টমেটো কাক্কু তিথির সাহসের কিছুই দেখেননি আপনি,,এবার আমার সামনে আসলে আপনাকে কুটি কুটি করে কেটে রান্না করে আমার চুন্নু কে খাওয়াবো,,,,(এই বলে স্কুটি নিয়ে চলে গেলো তিথি)

নয়ন এখনও হা করে তিথির যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে,,কি মেয়ে ছিলো এটা তাই ভাবছে কত্তো ফাজিল হাত কামড়ে দেই,,,আর একবার দেখা হোক নয়ন বুঝিয়ে দিবে,,,এই ভেবে গাড়ি নিয়ে চলে যায় নয়ন,,,

।।

রাতে ডিনার করে মামা মামীর সঙ্গে কিছুক্ষন আড্ডা দিয়ে ঘুমোতে চলে যায় মিহু,,,,দিনে অনেক ঘুমিয়েছে তাই ঘুম আসছে না মিহুর,,,শুয়ে শুয়ে মাহিরের কথা ভাবছে,, হয়তো মাহির অনেক সুখেই আছে জেরিন কে নিয়ে,,,মামনি কেমন আছে মামনির কথা বড্ডো মনে পড়ছে মিহুর,, চোঁখ থেকে জল গড়িয়ে পড়ে,,অনেক কিছু ভাবতে ভাবতে মিহুর চোঁখ টা লেগে যায়,,ঘুম খুব গভীর ও না আর পাতলাও না,,,এখন রাত একটা ছুঁই ছুঁই,,,,,, হঠাৎ মিহু অনুভব করে তার মুখে গরম হাওয়া লাগছে,,কেও তার পুরো মুখে পাগলের মতো কিস করছে,, কিন্তু ঘুমের জন্যে তাকানোর শক্তি টাও পাচ্ছে না মিহু,,, কিস এর পরিমাণ বাড়তেই থাকছে,,,মুখ থেকে গলায় নেমে আসছে,, মিহুর অনেক অসুস্তি লাগছে,,,, হঠাৎ যখন মিহুর ঠোঁট কিস করতে লাগে তখনি মিহু ঘুম থেকে উঠে তার কাছে থাকা লোকটা কে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয়,,, তাড়াতাড়ি ভয়ে লাইট অন করে সামনে দাঁড়িয়ে থাকা লোক তাকে দেখে অনেক অবাক হয়,,,কিন্তু রাগ ও উঠে,,,,

“আপনি? আপনি এখানে কি করছেন আর এখানে এলেন কি করে? আর আপনি জানলেন কি করে আমি এই বাড়িতে আছি,, চলে যান এখান থেকে আমার কাছে আসার ও চেষ্টা করবেন না,,,,,

“কেনো জান পাখি আমার কাছে আসা তে তোমার ভালো লাগছে না? আগে তো তুমি ই আমার কাছে আসতে চায়তে এখন কি হলো হ্ন,,,(দুষ্টু হেসে মাহির আবার মিহুর কাছে যায়,,,, হ্যাঁ মাহির ই এসেছে মিহুর রুমে,,,মাহির ছাড়া আর কার সাহস আছে মিহুর রুমে ঢুকে এমন করার,,)

“আবার কাছে আসছেন সরে যান এখান থেকে,,,(মাহিরের কাছ থেকে দূরে সরে)

“এতো বেশি চিৎকার করো না জান পাখি মামা মামী জেগে যাবে,,,তখন কি ভাববে বলো ত? আমি তো সোজা বলে দিবো মিহু নাকি আমাকে ছেড়ে থাকতে পারছে না তাই ফোন করে ডাকলো,,,(শয়তানি হাসি দিয়ে)

“ছি লজ্জা করে না ঘরে বউ রেখে অন্য মেয়ের কাছে আসেন,,চলে যান এখান থেকে নয়তো আপনার বউ জেরিন তো কষ্ট পাবে,,,(অন্য দিকে মুখ করে)

মাহির গিয়ে মিহু কে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে গলায় কিস করে বলে,,,

“আমার বউ তো এখানে আছে,, তাই বউ এর কাছেই এলাম,,কিন্তু বউ দেখি রাগ করে আছে,,,

“কি বউ বউ করছেন,,এক্স বউ বলেন এখন আর আমরা বউ বর নেই,,একবছর হয়ে গেছে,,আপনার কাজ। ও হয়ে গেছে,,,,(মাহির কে ছড়ানোর চেষ্টা করে)

“এখনও ডিভোর্স হয় নি আমাদের,, আইন অনুযায়ী এখনও তুমি আমার বউ আর আমার তোমার ওপর পুরো অধিকার আছে,,,

“কোনো অধিকার নেই আমার ওপর আপনার,,,আমি নিজের মতো থাকবো চলবো সব করবো,,,,আপনি আমার থেকে দূরে সরে যান,,,,,

মাহির মিহুর কথা শুনে রেগে মিহুকে কাছে এনে,, মিহুর ঠোঁটে আবার কিস করে বসে,,,তিন মিনিট পরে ছেরে দেই মিহু হাঁপাতে লাগে,,,,

“তুমি চায় লেও আমার অধিকার থেকে আমাকে তুমি সরাতে পারবে না,,,যতো দূরে যাওয়ার চেষ্টা করবে ততো বেশি করে আমার পাগল রূপ দেখবে,,এটা তো জাস্ট শুরু দেখো আগে আমি কি করি,,,এখন চুপ চাপ এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পরো তো জান পাখি আমার অনেক ঘুম পাচ্ছে অনেক দিন শান্তি তে ঘুমায় নি,,,,,(এই বলে মিহুকে কিছু বলতে না দিয়ে বেডে গিয়ে শুয়ে পরলো মিহু কে জড়িয়ে ধরে,,এতো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে শুয়ে আছে যেনো যেনো ছেড়ে দিলেই মিহু আবার পালাবে,,,)

“আপনি এখানে এলেন কি করে আমি তো ঘুমানোর আগে সব দরজা বন্ধ করে ঘুমিয়েছি,,,(গুমড়া মুখ করে বললো মিহু)

“চুপ করো কথা বলবে না ঘুমাতে দাও,,কি করে এসেছি সেটা না জানলেও হবে,,,(আস্তে আস্তে বললো মাহির)

“আমার বাড়ি এসেছেন আর আমি জানবো না। করে এসেছেন,,,তাহলে আমি আরো সাবধান হতাম পরে যদি আবার চোর আসে,,,,,

“আর একটা কথা বললে আমি কি করবো তুমি ভাবতেও পারবে না,,,

“কি করবেন?( মুখ ভেংচি দিয়ে)

“আমাদের না বাসর রাত হয়নি ওটাই আজ সেরে ফেলতাম কি বলো,,,(মুচকি হেসে)

“না না এই দেখেন আমি চুপ আছি ঘুমিয়েও পড়েছি,,,(চোখ বন্ধ করে)

মাহির আবার মুচকি হাসি দেই,,,মাহির মিহু দুজনেই ঘুমিয়ে পড়ে,,,আজ অনেক দিন পরে আবার দুই জনে শান্তি তে ঘুমাচ্ছে,,,এতো দিন মাহির তো ঘুমায়নি বললেই চলে,,,আর মিহু তো সে বেঁচেও মরে ছিলো,,,,,,,,ভোরের দিকে মিহুর ঘুম ভেংগে যায় তাড়াতাড়ি উঠে চারি দিকে দেখে মাহির কোথাও নেই,,,তাহলে কি মিহু স্বপ্ন দেখছিলো নাকি,,, না না এটা স্বপ্ন না উনি ই এসেছিল বজ্জাত একটা হু,,,,,

মিহু নাস্তা করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়লো,,, উদ্দেশ্য ভার্টিসি তে যাবে ,, ভর্তি হতে,,,,, নয়ন কে ফোন করে আস্তে বলেছিল মিহু,,, নয়ন ও দেরি না করে চলে আসে,,দুজনে ভার্সিটি তে চলে যায়,,, নয়ন মিহু কে ভর্তি করিয়ে চলে যায়,, তার মিটিং আছে বলে,,,,এই দিকে মিহু ভাবছে এখন বাড়ি গিয়ে কি করবো,,,তার চেয়ে ক্লাস করি আমি এমনিতেই লেট ভর্তি হইছি,,,,,অধরা রোদ মাইশা আয়ানে কথা খুব মনে পড়ছে মিহুর মিহু তো জানে না ওরা কোন ভার্সিটিতে ভর্তি হয়েছে আর মিহু এসে খবর ও নেই নি,,,,ভার্সিটি টা এদিক সেদিক ঘুরে দেখতে দেখতে এক জায়গায় দেখলো,,একটা মেয়ে নিজে নিজে বকবক করছে আর কি যেনো বলছে,,,আসে পাসে তাকিয়ে দেখলো কেও নেই মেয়ে টার পাসে,,,তাই মিহু তার কাছে গেলো দিয়ে বললো,,,,

“হাই,, তোমার কি কিছু প্রবলেম হইছে?

মেয়েটা মিহুর মুখের দিকে একটু তাকিয়ে থেকে উত্তর দিলো,,,

“সহজ ভাবে সুইসাইড কেমনে করে জানা আছে তোমার? মানে যাতে সুইসাইড করে শান্তি তে মরতে পারি,, ব্যাথা না লাগে,,কষ্ট না পায় ভয় না পায়,,যানো তো প্লিজ আমাকে বলো,,,,,

মেয়ে টার কথা শুনে মিহু চোখ বড়ো বড়ো করে তাকিয়ে আছে কি বলছে কি সুইসাইড কেনো করবে এই মেয়ে,,,, মিহুর কিছু উত্তর না পেয়ে মেয়ে টা আবার বললো,,,

“যানো না তাই না? আচ্ছা ঠিক আছে আমি ঠিক ব্যাবস্থা করে নিবো তবে আমি মরেই ছাড়বো,,,বাই দা কুড়াল আমি তিথি এবার অনার্স প্রথম বর্ষে পড়ি,,তুমি কি নতুন এই ভার্সিটি তে আগে তো দেখিনি,,,(ব্রু কুচকে তাকিয়ে)

“হুমম আমি আজি নিউ অ্যাডমিশন হলাম,,আমি মিহু অনার্স প্রথম বর্ষে,,,,,(মুচকি হেসে)

“ওহ তাহলে তো আমরা ফ্রেন্ড হতে পারি আচ্ছা আমরা তুই করে বলবো ওকে,,,

“ওকে,, কিন্তু তুমি থুক্কু তুই সুইসাইড কেনো করতে চায় ছিশ?

“সে অনেক কাহিনী আয় তোকে বলি,,আমি আজ ক্লাস করতে যাইনি ভালো লাগছে না,,,চল কোথাও গিয়ে বসে বলি,,,,

এই বলে তিথি মিহুর হাত ধরে নিয়ে যেতে লাগলো,,,অনেক মিশুক তিথি সবার সঙ্গে একটু তেই পরিচিত হয়ে যায় আপন করে নেই,,,আর মিহু ও তাই,,,, মিহুর মন ভালো নেই তাই এতো চুপ চাপ,,,,,,

চলবে?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here