The_Boss Part : 10

0
3646

The_Boss

Part : 10

Aarizona ella

লোকটা কে মেরে মায়া হাঁপাচ্ছে,ইলমাজ মায়ার দিকে অকষ্মিক ভাবে তাকিয়ে আছে।।

এই মেয়েটার মধ্যে এমন কি আছে?আমি ভেবে ঠাই পাই না,সব চেয়ে আলাদা তুমি।।ভাবছে ইলমাজ।

দুজন হোটেলে যেতে যেতে প্রায় রাত ১০ টা বেজেছে।।ইলমাজ নিজের জন্য আর মায়ার জন্য আলাদা রুম বুক করেছে।।

মায়া চুপচাপ রিসেপশনে দাঁড়িয়ে আছে,মায়ার মুখে চিন্তার ছাপ দেখতে পেলো ইলমাজ।।

কি চিন্তা করছো?(ইলমাজ)

না স্যার তেমন কিছু না।।(মায়া)

তোমার জন্য আলাদা রুম বুক করা হয়েছে,সো ভয় পাওয়ার কিছুই নেই।।।কজ,আমার চয়েস এতো খারাপ না।।(ইলমাজ)
মায়ার চেহারার অবস্তা দেখে বহু কষ্টে হাসি চাপিয়ে রেখেছে ইলমাজ।

ইলমাজের পাশেই মায়ার রুম বুক করেছে যাতে কোন সমস্যা না হয়।
মায়াকে তার রুমে পৌছে দিয়ে,নিজের রুমের বিছানায় গা এলিয়ে দিলো সে।

ফ্রেশ হয়ে বের হতে হতে প্রায় আধঘন্টা লেগে গেছে মায়ার।।ফ্রেশ হয়ে ব্যাগ খুজতেই দেখছে তার রুমে ব্যাগ নেই।।চমকে উঠলো মায়া।।

সার্ভিসম্যান হয়তো ভুলে ব্যাগ ইলমাজ স্যার এর রুমে রেখে এসেছে।গিয়ে নিয়ে আসি,না না এই সময় যাওয়া কি ঠিক হবে?।(মায়া)

খুব জোরে বারি লাগাতে পিঠে বেশ আঘাত পেয়েছে ইলমাজ।।পিঠের বাম পাশে ফুলে কালচে হয়ে গেছে ইলমাজের।উদম গায়ে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আয়নার দিকে পিঠ ঘুরিয়ে দেখার চেষ্টা করছে ইলমাজ।।আর ব্যাথায় হাল্কা কুকড়ে উঠছে সে।।

রুমের দরজা লক না থাকায় মায়া ইলমাজের রুমের ভিতরে প্রবেশ করতেই ইলমাজ কে এমন অবস্থায় দেখে চমকে উঠলো মায়া।।

স্যারি,স্যরি,স্যরি স্যার আমি কিছু দেখি নি।।চোখে দুহাত দিয়ে চোখ ঢাকতে ঢাকতে বললো মায়া।

আতংকিত হয়ে মায়ার দিকে ফিরে তাকালো ইলমাজ।।মায়া হাত দিয়ে এভাবে চোখ লুকাতে দেখে কিছুটা অবাক হলো ইলমাজ।

স্যার আমি পরে আসবো।। চোখ হাত দিয়েই রেখেছে মায়া।

দরজা কি আমি লক করতে ভুলে গেছিলাম নাকি তুমিই লক ভেঙ্গে ভিতরে ঢুকেছো?একটা ভ্রু উপরে তুলে বললো ইলমাজ।।

ন,,ন,,না না আমি কিভাবে লক ভাঙ্গবো স্যার,আমার ওতো শক্তি কবে থেকে হয়েছে?চোখে হাত রেখেই বললো মায়া।।

ওহ!আমি তো ভুলেই গেছিলাম তোমার ওতো শক্তি কোত্থেকে যে তুমি তালা ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করবে।।মুখ বাকা করে মায়ার জুতার দিকে তাকিয়ে বললো ইলমাজ।।

আচ্ছা আমি পরে আসছি স্যার,আমতা আমতা করে বলে দরজার দিকে পা বাড়ালো মায়া।

ওয়েট!!!!(ইলমাজ)

থমকে দাঁড়ালো মায়া।।

আমার মান সম্মান নষ্ট করে তুমি এভাবে কিভাবে চলে যাবে?(ইলমাজ)

ম,,ম,,মানে কি স্যার??(মায়া)

মানে তুমি আমাকে বিনা বস্ত্রে দেখেছো!!আমার ইজ্জতের ফালুদা বানিয়েছো।।এটা শাস্তিযোগ্য আপরাধ মনে হচ্ছে আমার।(ইলমাজ)

ইলমাজ মায়ার পিছনে দাঁড়িয়ে আছে আর মায়া চোখ বড় বড় করে দরজার দিকে তাকিয়ে ঢোক গিলছে।।

স,,,,স,,,স,,স্যার কি বলছেন এইসব?আমি জানতাম না আপনি এমন অবস্থায় থাকবেন?আর আপনি কি মেয়ে নাকি যে আপনার ইজ্জত নষ্ট হবে? আর তাছাড়া আমি কিছুই দেখি নি স্যার সত্যি।?(মায়া)

আমি তোমাকে দেখতে দেখেছি।তুমি নক করে ঢুকো নি যেহেতু এটা আপরাধ আর এটার শাস্তি তো তুমি পাবেই।।(ইলমাজ)

আপনি পাগল হয়ে গেছেন স্যার।।আ,আ,আমি জানতাম না স্যার,স্যরি।।নেক্সট টাইম থেকে নক করে ঢুকার কথা টা মাথায় রাখবো।।(মায়া)

সেটা পরের কথা,আগের টা তো আগে মিটিয়ে নিতে হবে।।বাকা হাসলো ইলমাজ।।

আম,,,আমি আসছি স্যার।।মায়া দরজার দিকে এগিয়ে গেলো।।
আর তখনই ইলমাজ মায়ার হাতের বাহু ধরে এক টান দিয়ে ইলমাজ এর দিকে মুখ ঘুরিয়ে দাঁড় করালো তাকে।।

কি সমস্যা ওভাবে চোখে হাত দিয়ে রেখেছো কেন?আমাকে দেখতে কি বিকৃত মানব এর মতো লাগে?(ইলমাজ)

না,, মানে স্যার আমার আনিজি লাগছে তাই।।(মায়া)

হাত সরিয়ে এদিকে তাকাও।।(ইলমাজ)

মায়া হাত সরিয়ে ভ্রু কুচকে চোখ বন্ধ করে রেখেছে।

মায়ার এমন অবস্থা দেখে ইলমাজের বড্ড হাসি পাচ্ছে।।ইলমাজ মায়ার দিকে তাকিয়ে আছে আর মুচকি হাসছে।।

এদিকে তাকাতে বললাম।।(ইলমাজ)

মায়া ঢোক গিললো এক চোখ খুলে ইলমাজ এর দিকে তাকালো।।ইলমাজ মায়ার দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে মায়া আবারো চোখ খাটলো।

এদিকে তাকাতে এমন করছো আর যখন শাস্তির সম্মুখীন হবে তখন তোমার অবস্থা কি হবে তা চিন্তা করছি।।(ইলমাজ)

ইলমাজের কথা শুনে রীতিমতো চমকে চোখ বড় করে ইলমাজের দিকে তাকালো মায়া।।

মানে কি স্যার?(মায়া)

মানে ওই যে আমার শার্ট দেখছো? আমি এতক্ষন ওদিকেই তাকাতে বলছিলাম।। ওটা তোমার কারনে নোংরা হয়েছে সো এখন তুমি এটা ধুয়ে দিবে যেভাবে ওই লোক টা কে জুতা দিয়ে ধুয়ে কাকতাড়ুয়া বানিয়েছিলে।।(ইলমাজ)

ওহ,তাহলে এটা আমার শাস্তি ছিলো? ? স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে বললো মায়া।।

কেন অন্য কিছু আশা করছিলে নাকি?একটা ভ্রু উপরে তুলে বললো ইলমাজ।।

ন,,ন্,,না মানে ঠিক আছে।।এক্ষুনি ধুয়ে দিচ্ছি।।(মায়া)

ইলমাজ ওয়াশ্রুমের দিকে ইশারা করে যেতে বললো মায়াকে।।।

মায়া শার্ট নিয়ে ওয়াশ্রুমে ঢুকে পড়লো।।ইলমাজ পেট ধরে হাসতে হাসতে বেডে বসে পড়লো।

বেশ কছুক্ষন পর ওয়াশ্রুম থেকে বেরিয়ে চমকে উঠলো মায়া।।
ইলমাজ আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে পিঠের আহত অংশটা ছোয়ার চেস্টা করছে,,আর ব্যাথায় কুকড়ে উঠছে।।

গম্ভীরমুখে ইলমাজের পিঠের দিকে তাকিয়ে আছে মায়া।।ইলমাজের পিঠের একাংশে কালচে সার্কেল হয়ে গেছে।।

মায়ার খারাপ লাগছে কেন জানি খুব মায়া হচ্ছে তার জন্য।। মায়া অসহায় চাহনিতে তাকিয়ে আছে ইলমাজ এর দিকে। ইলমাজ মায়ার দিকে লক্ষ করতেই নিজেকে স্বাভাবিক করে নিলো।

কি হলো কখন এসেছো?
আর এভাবে স্ট্যাচু হয়ে আছো কেন?ওয়াশ্রুমে ভুত দেখেছো নাকি?হাসতে হাসতে বললো ইলমাজ।।

এতো ব্যাথা পাওয়ার পরও এই মানুষটি বিন্দুমাত্রা তার অনুভূতি বুঝতে দেয় নি।।একটা মানুষ এতটা সহনশীল কিভাবে হতে পারে?ইলমাজ এর দিকে অপলক তাকিয়ে ভাবছে মায়া।।

ওহ হ্যালো মিস মায়া?এভাবে কি দেখছো?এবার মনে হচ্ছে সত্যিই তুমি ভুত দেখেছো।।এই প্রথম দেখলাম মিস মায়াও কাউকে ভয় পায় নাকি ভুতও তোমাকে দেখে পালিয়ে গেছে??হাসতে হাসতে বলছে ইলমাজ।।
আজকে ইলমাজের এমন কথায় মোটেও রগান্বিত হয় নি মায়া বরং সেও হেসে দিলো।।

আমার ব্যাগে বাম আছে চাইলে পিঠে লাগিয়ে নিতে পারেন।।(মায়া)

মায়ার এমন কথায় খটকা খেলো ইলমাজ এর।।হাল্কা ঘাড় বাঁকা করে ভ্রু কুচকালো সে।

সহানুভূতি দেখাচ্ছো?যদি তাই হয় তবে বলবো সহানুভূতি প্রদর্শন করা মানুষ গুলো আমার একদম অসহ্য লাগে,আমি কখনো কারও সহানুভূতির সম্মুখীন হই নি না কখনো হবো।রাগী ভাব নিয়ে বললো ইলমাজ।

না স্যার সহানুভূতি কেন দেখাবো?আপনার পিঠে ক্ষতের দাগ হয়ে গেছে আর তা আমার কারনেই হয়েছে তাই বললাম।।(মায়া)

আমি ঠিক আছি।।মুখ অন্য দিকে ঘুরিয়ে বললো ইলমাজ।

হুম তা আমি দেখতেই পাচ্ছি।।(মায়া)

মায়ার কথার কোন জবাব দিলো না ইলমাজ চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে সে।
মায়া বেড থেকে ব্যাগ উঠিয়ে তার ভিতর থেকে বাম নিয়ে ইলমাজ এর দিকে এগিয়ে দিলো।।

i Don’t need it..i m Alright..আর তাছাড়া আমি আগেও বলেছি আমার কারও সেম্প্যাথির প্রয়োজন নেই। (ইলমাজ)

আমিও আপনাকে আগে বলেছি,আমি আপনার প্রতি কোন সহানুভূতি দেখাচ্ছি না,আপনি আমাকে প্রটেক্ট করার জন্য এমন অবস্থার সম্মুখীন হয়েছেন আর কষ্টটা ও যেহেতু আপনি আমার জন্যই পাচ্ছেন তবে এটাকে হিল করার দায়িত্বটা ও আমার।(মায়া)

আমার হাত পৌছাবে না।।(ইলমাজ)

আমি লাগিয়ে দিতে পারি যদি আপনি কিছু মনে না করেন।।(মায়া)

হুম।।দিতে পারো।( ইলমাজ)

মায়া বামের ঢাকনা খুলে ইলমাজের পিঠের ক্ষত জায়গাটায় আস্তে আস্তে লাগাতে শুরু করলো।।

ইলমাজ আয়নায় মায়ার দিকে আড়চোখে তাকিয়ে আছে।

উপ্সস্,এই লোক টা এতো হট কেন?মনে মনে বলছে বড় বড় নিঃশ্বাস নিচ্ছে আর ঢোক গিলছে মায়া।।

ক্ষত অংশে হাল্কা চাপ পড়তেই আওয়াজ করে উঠলো ইলমাজ।।

ওহ স্যরি স্যার,,আমি খেয়াল করিনি।।এখন ব্যাথা কমে যাবে।(মায়া)

হুম।।ইলমাজ এখনও মায়ার দিকে আড়চোখে তাকিয়ে আছে।।

চলবে।।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here