The_Love_Of_A_Devil_And_Angel,21,22

0
1074

#The_Love_Of_A_Devil_And_Angel,21,22
#An_Impossible_Love_Story
#Writer_Sanjana_Shabnam_Fahmida
#Part_21

কিছুক্ষনের মধ্যে সবাই চৌধুরী বাড়ীতে পৌছে আসে,,, মায়া আর সিয়া আগে আর শুভ সাদ রোহিত ধীর ওদের পেছনে,,,

শুভদের আসতে দেখে তাহির আর নাহার এগিয়ে গিয়ে ওদের ওয়েলকাম জানায়,,,

নাহারঃ কেমন আছেন ভাবী???

মায়াঃ ভালো তোমরা??

নাহারঃ আলহামদুলিল্লাহ ভালো,,, আর সিয়া শুভ সাদ তোমরা সবাই কেমন আছো???

শুভঃ ভালো আন্টি আপনারা,,,

সিয়াঃ আন্টি রশনি দি আর বাকিরা কোথায়,,,

মায়াঃ ওরা রুমে হয়তো যাও গিয়ে দেখে আসো,,

সিয়া মুচকি হেসে ভেতরে চলে গেল,,,

মায়া নাহার আর তাহির ভিতরে গিয়ে কথা বলছে,,,

আর আমাদের রোমিওরা তাদের জুলিয়েটদের খুঁজতে ব্যস্ত?,,,

শুভদের আসতে দেখে আজহার আর আবরার ওদের দিকে এগিয়ে আসে,,

আজহারঃ কেমন আছো তোমরা??

শুভঃ ভালো আঙ্কেল আপনি??

আজহারঃ হুম ভালো,,, আসলে সাদ তোমার সাথে আমার একটু দরকারী কথা ছিলো প্রাইভেটলি,,,

সাদঃ আ আমার সাথে ?

শুভ সাদের কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিস করে বলল,,

শুভঃ যা সাদ তোর হবু শশুর ডাকছে,,, দেখ তোর আর তিনার বিয়ের ডেট হয়তো ফিক্সড করবেন,, ?

সাদ চোখ গরম করে শুভর দিকে তাকালো,,, শুভ আর রোহিত মুখ চেপে হাসি কন্ট্রোল করার চেষ্টা করছে।

সাদঃ সিউর আঙ্কেল চলেন,,,

সাদ আজহারের সাথে চলে গেল,,,

আজহার আর সাদ চলে যেতেই আবরার বলতে শুরু করল,,

আবরারঃ তোমাদের সবার মাঝের বন্ধুত্বের বন্ডিং অনেক স্ট্রং মনে হচ্ছে। কত দিনের বন্ধুত্ব??

আবরারের কথা শুনে রোহিত শুভর কাধ জড়িয়ে ধরে বলতে শুরু করে,,,

রোহিতঃ শুভ আর আমার ফ্রেন্ডশিপ ছোট বেলা থেকেই,, ও যখন স্কটল্যান্ডে হোস্টেলে এডমিশন নিয়েছিলো তখন আমাদের দেখা,,, প্রথম ফ্রেন্ড তারপর ফ্রেন্ড থেকে বেষ্ট ফ্রেন্ড,,

রোহিতের কথা শুনে আবরার চাপা হেসে আবার বলতে শুরু করলো,,

আবরারঃ আর সাদ?? ওও কি ছোট বেলা থেকেই তোমাদের বন্ধু ( ভ্রু কুঁচকে)

শুভঃ নাহ আসলে সাদের সাথে আমাদের পরিচয় কলেজ থেকে,,,আর ধীর ওর সাথেও আমাদের বন্ধুত্ব কিছু দিনেরই,,,

আবরার খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন করছে শুভ আর রোহিতকে সাদের বিষয়ে,,, আর রোহিতও বোকার মতো সব বলে দিচ্ছে,,,

এইদিকে,,,

আজহার সাদকে পার্টি ভ্যানু থেকে কিছুটা দূরে সরিয়ে নিয়ে গেল,,, পাশ দিয়ে একটা ওয়েটার ট্রেতে জুস নিয়ে যাচ্ছিলো,, আজহার দুটো গ্লাস নিয়ে একটা সাদের দিকে এগিয়ে দিলো,, সাদ এর একটু আন কমফোরটেবল ফিল হচ্ছে তাও চাপা হেসে গ্লাসটা নিয়ে নিলো ও,, গ্লাসে একটা চুমুক দিয়ে আজহার সাদকে বলতে শুরু করে,,,

আজহারঃ তো সাদ তোমার ফ্যামিলি তে কে কে আছে??

আজহারের কথা শুনে সাদের চোখের সামনে কিছু ভয়ঙ্কর দৃশ্য ভেসে উঠলো,,, চোখের কোনে পানি জমে গেছে,,, আর রাগে মুখ খিঁচে শক্ত করে ফেলে ও।

নিজেকে সামলে সাদ শান্ত গলায় জবাব দিলো,,

সাদঃ আমার ফ্যামিলি তে কেউ নেই,,,

সাদের কথায় চমকে উঠে আজহার,, অনেক খারাপ লাগছে ওর কাছে,, অজান্তেই সাদের মনে কষ্ট দিয়ে ফেলেছে ও,,

আজহারঃ কেউ নেই মানে আই মিন বাবা মা!!

সাদ আড় চোখে আবরারের দিকে একটু তাকিয়ে ক্ষিন গলায় বলল,,

সাদঃ মাকে জন্মের সময় হারিয়েছি আর বাবা!!( আবরারের দিকে তাকিয়ে) যখন আমার ষোলো বছর একটা এক্সিডেন্টে মারা যান,,,

তখন থেকেই একা বড় হয়েছি,, বাবার সব দায়িত্ব নিজেই পালন করছি,,,

সাদের কথা গুলো শুনে আজহারের অনেক ভালো লাগছে,,, যে ছেলে এতো কম বয়স থেকে এতো দায়িত্বশীল সে কখনো খারাপ হতে পারে না,, আজহারের মনে এখন একটু শান্তি লাগছে,, তাও মনের শঙ্কা এখনো মিটে নি ও যা ভাবছে সাদ আর তিনার বিষয়ে তা আদৌ কি সত্য নাকি ওর ভূল ধারনা,,,

সাদের কথায় ভাবনার জগৎ থেকে বাস্তবে ফিরে আজহার,,

সাদঃ কিন্তু আঙ্কেল হঠাৎ এই প্রশ্ন গুলো কেন??

আজহারঃ কিছু প্রশ্ন মনে জাগছিল ভাবলাম মনে না রেখে জিঙ্গেস করি ফেলি,,, দেখো সাদ তিনা আমার মেয়ে আর কোন বাবা চাইবে না তার মেয়ের কোন ক্ষতি হোক,,, তাই একটা কথা সত্যি করে বলবে,,, তোমার আর তিনার মধ্যে যে সম্পর্ক তার নাম কি??

আজহারের কথায় সাদ হালকা হাসলো তারপর বলল,,

সাদঃ যদি সম্পর্কের নাম জানতে চান তাহলে বলব এই সম্পর্কের নাম ভালোবাসা যদি এর গভীরতা জানতে চান তাহলে বলব,,, ভালোবাসার গভীরতা কখনো মাপা যায় না,,, আর আঙ্কেল আপনি নিশ্চিত থাকতে পারেন,,, ছোট বেলা।থেকে যেমন আপনি তিনাকে সব বিপদ থেকে বাঁচিয়ে রেখেছেন,, কোন দুঃখ ওর কাছে ঘেঁষতেও দেন নি আই প্রমিস বাকিটা জীবন আমিও সেভাবে ওকে আগলে রাখবো,, যদি আপনি এর অনুমতি দেন তো,,,

বিশ্বাস করেন কখনো ওর চোখে পানি আসতে দিবো না,,,

সাদের কথা শুনে আজহারের অনেক হালকা লাগছে ,,, আসলেই ছেলেটা অনেক আলাদা,,, আর সবাই নিজের মেয়ের জন্য এমন ছেলেরই আশা করে,,,

আজহারঃ আই ট্রাস্ট ইউ,,, ( সাদকে জড়িয়ে ধরে)

তিনা এতক্ষণ পেছন থেকে মুগ্ধ হয়ে সাদের কথা শুনছিলো,,, অজান্তেই কয়েক ফোঁটা পানি গড়িয়ে পরলো ওর চোখ থেকে,,,

তিনাঃ আমি কখনো ভাবতেও পারিনি সাদ যে আপনি আমাকে এতো ভালোবাসেন,,, কখনো বুঝার চেষ্টা ও করিনি আপনাকে,,, স্যরি সাদ,,,

শুভ আর রোহিত আবরারের সাথে কথা বলছে,,,শুভ আর রোহিত অনেক বিরক্ত বোধ আবরারের প্রশ্নে,,,

তখনি হঠাৎ শুভর চোখ আটকে যায় রশনির দিকে,,, হাতের ব্রেসলেট ঠিক করতে করতে কোথাও যাচ্ছে,,,

শুভঃ আব আমার একটা ইম্পর্টেন্ট কল করতে হবে আ’ল বি ব্যাক,,, ( বলেই ওখান থেকে কেটে পরলো)

রোহিতঃ শুভ দাড়া আমিও আসছি excuse me Mr Abrar,?

রোহিত বারবার আশেপাশে দেখছিলো বাট নিশিকে কোথাও দেখা যাচ্ছিলো না,,, তার উপর আবার আবরারের প্রশ্ন,,,, তাই এই সুযোগে ওও শুভর পেছনে চলে আসলো,,

কিছু দূর এগোতেই শুভ রোহিতকে বলল,,,

শুভঃ তুই আমার পিছনে কোথায় আসছিস?? ?

রোহিতঃ আরে ডুড ডোন্ট ওয়ারি আমার তোদের মাঝে কাবাবে হাড্ডি হওয়ার শখ নেই,,?

শুভ একটু রাগী দৃষ্টিতে রোহিতের দিকে তাকালো,,

রোহিতঃ আ আমি আন্টির কাছে যাচ্ছি ?( বলেই চলে গেলো)

ধীরঃ আপনি কি করতে চাচ্ছেন কিং?? আমি আপনার কোন চাল বুঝে উঠতে পারছি না,,,

আবরারঃ এতো তাড়া কিসের মাই বয়,,, খেলা তো জাস্ট শুরু হয়েছে,,, খেলার পেয়াদা গুলো কে আগে তৈরি করি দেন,,, গেম স্টার্ট করবো,,,

আবরারের প্রত্যেকটা কথা ধীরের কাছে অনেক রহস্যময় লাগছে,,,

সাদঃ প্রথম বার শুনেছি কোন বাবা তার সন্তানদের খেলার পেয়াদা হিসেবে ব্যবহার করতে চায় ( আবরারের পিছন থেকে)

সাদের কথা শুনে ধীর আর আবরার পিছনে ফিরলো,,,, আবরার বাকা হেসে বলতে শুরু করল,,,

আবরারঃ ওহ ফাইনালি ইউ কাম দ্যা কিং অফ এঞ্জেল সাদ,,,

সাদ আবরারের সামনে এগিয়ে আসতে আসতে বলল,,,

সাদঃ আমাকে তো আসতে হবেই,,, ডেভিল আছে, ডেভিল কিং আছে, এঞ্জেল আছে সেখানে এঞ্জেল কিং তো থাকবেই,,, ( আবরারের সামনে এসে)

তাছাড়া আপনাদের সাথে তো আমার পুরনো হিসাব বাকি আছে কিং,,,

আবরারঃ হিসাব নিকাশ করার জন্য তুমি এখনো অবুঝ সাদ,,, তোমার বাবাই আমাকে আটকাতে পারেন নি বরং আমার হাতে নিজের জীবন হেরে গেছে,, আরতো তুমি,,, ( বাকা হেসে)

এখনো সময় আছে,, এই যুদ্ধ থেকে দূরে থাকো নাহলে অকারনে নিজের প্রান হেরে যাবে,,,

আবরারের কথা শুনে সাদ দাতেদাত চেপে আবরারের মুখোমুখি হয়ে বলে,,,

সাদঃ আমার বাবাকে তুমি ছল করে মেরেছিলে আবরার,,, তোমার কারনে আমি আমার বাবাকে হারিয়েছি,,, কথা দিচ্ছি তোমায়,,, যে ছেলেকে হাতিয়ার বানিয়ে সমস্ত রাজ্য জয় করতে চাও,,, যাকে নিজের বসে এনে দুনিয়াতে অশুভ শক্তির বিকাশ করতে চাও,,, তার হাতেই তোমার জীবনের বৃত্তান্ত ঘটাবো আমি,,, তোমার নিজের ছেলে তোমাকে শেষ করবে আবরার,,,

আবরারঃ ওকেই লেট্স সি কে কাকে শেষ করে,,,

সাদঃ আর ধীর! ( ধীরের দিকে তাকিয়ে) বন্ধু হয়ে শত্রুতা ভালো করেই করলে,, তোমরা ডেভিলরা এই কাজটাই ভালো পারো,,, বিশ্বাসঘাতকতা,,, পিছন থেকে প্রহার করা,,,

ধীর রাগে নিজের হাত শক্ত করে মুঠো করে ফেলে কিছু বলতে গিয়েও থেমে গেল ও,,,

আবরারঃ কাম ডাউন সাদ। একজন কিং হয়ে এতো হাইপার হাওয়া তোমার সোভা পায় না,, ( সাদের কাধে হাত রেখে)

আবরার সাদের কাধে হাত রাখতেই কিছু দৃশ্য সাদের চোখে ভেসে উঠে,,, সাদ নিজের হাত শক্ত করে মুঠোয় করে নেয়,,,

[ রোহিতঃ প্লিজ নিশি ডোন্ট ডু দিস আই রিয়েলি লাভ ইউ,,, নিশির হাত ধরে,,,

নিশিঃ আই ডোন্ট লাভ ইউ রোহিত,,,

হঠাৎ নিশি রোহিতকে ধাক্কা দিয়ে ঝর্ণার উপর থেকে নিচে ফেলে দেয়,,,

নিশিইইই,,, রোহিত চিৎকার করে নিশির নাম নিয়ে নিচে পরে যায়,,,

হঠাৎ নিশি বুজতে পারলো ও কি করেছে,,,

র রোহিত রোহিতত,,,, নিশি স্তব্ধ হয়ে গেছে,,,
নিচে তাকিয়ে ওখানেই ধপ করে বসে চিৎকার করে রোহিতকে ডাকতে লাগলো ও।]

আবরার কিছুটা বুঝতে পেরে সাদের কাধ থেকে হাত সরিয়ে নেয়,,, তারপর ওখান থেকে চলে যায়,,,

আবরারঃ আমি কিভাবে ভুলে গেলাম যে সাদ এঞ্জেল তার উপর কিং,,, আমি ওকে স্পর্শ করলে ও আমার মাইন্ড রিড করে ফেলবে,,, ওকি আমার প্ল্যান সম্পর্কে জেনে গেল,,, এই বোকামী আমি কিভাবে করলাম হাও( যেতে যেতে ভাবছে)

সাদ এখনো বুঝতে পারছে না ও কি দেখেছে,,, আর যা দেখেছে তাকি আদৌ সত্যি কি না,,,

সাদঃ র রোহিত ডেন্জারে আছে,,, কিং নিশ্চই আজকে এরকম কিছু একটা করবে,,, আ আমি এটা হতে দেব না,,, রোহিতের কোন ক্ষতি আমি হতে দিবো না,,, রোহিত কোথায়?? আমার রোহিতকে খুঁজতে হবে,,

ধীর সাদের ফেস দেখেই বুঝতে পারছে কিছু একটা হয়েছে,,, ধীর কিছু বলার জন্য এগোতেই সাদ পিছন ফিরে দ্রুত চলে যায়,,,

রশনি হাতের ব্রেসলেট ঠিক করতে করতে রুমে যাচ্ছিলো,,, হঠাৎ কেউ ওর কোমর জড়িয়ে ওকে দেওয়ালের পিছনে নিয়ে আসে,,, রশনি চিৎকার দিতে নিলেই হাত দিয়ে ওর মুখ চেপে ধরে,,

To be continued….

#The_Love_Of_A_Devil_And_Angel
#An_Impossible_Love_Story
#Writer: Sanjana Shabnam Fahmida
#Part_22

রশনি হাতের ব্রেসলেট ঠিক করতে করতে রুমে যাচ্ছিলো,,, হঠাৎ কেউ ওর কোমর জড়িয়ে ওকে দেওয়ালের পিছনে নিয়ে আসে,,, রশনি চিৎকার দিতে নিলেই হাত দিয়ে ওর মুখ চেপে ধরে,,

হুশ আমি আমি প্লিজ ডোন্ট শাউট,,, (শুভ)

রশনি শুভর কন্ঠ শুনে চোখ খুলে দেখে সামনে আর কেউ নয় বরং শুভ,,,

রশনি একটা প্রশস্তির নিঃশ্বাস নিয়ে চোখ দিয়ে ইশারা করে শুভকে হাত সরাতে,,,

শুভ বুঝতে পারে রশনি ওর মুখ থেকে হাত সরাতে বলছে,,

শুভঃ ওকে ছেড়ে দেব বাট চিৎকার করবানা প্রমিস,,,

রশনি চোখ দিয়ে ইশারা করে বলল,, করবে না,,, শুভ হালকা হেসে নিজের হাত সরিয়ে ফেলল।

রশনি ঘন ঘন কয়েকটা নিঃশ্বাস দিয়ে শুভর দিকে রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলতে শুরু করল,,,

রশনিঃ আপনার মাথার স্ক্রু কি ঢিলা হয়ে গেছে,,, কেউ আচানক এরকম করে,,, আমি কত ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম জানেন,,, আর একটু সময় হলে আমি হার্ট এ্যাটেক করে ফেলতাম,, ( এক নিঃশ্বাসে)

শুভঃ ওকে রিলেক্স রিলেক্স টেক এ ব্রিথ,,, ফার্স্ট অফ অল আমার মাথার স্ক্রু ঠিকই আছে,,, এন্ড সেকেন্ড অফ অল,,, আমি থাকতে কারো এতটুকু সাহস হবে না যে তোমার দিকে হাত বাড়াবে,,, নিজের মরন কি কেউ নিজে টেনে আনে,,, ( কড়া গলায়)

ওকে বাদ দাও,,, শুভ রশনিকে উপর থেকে নিচ পর্যন্ত ভালোভাবে স্ক্যান করলো,,,

ওয়াও পুরো অমায়িক লাগছে,,, একদম আমার মনের মতো ( ঘোর লাগা কন্ঠে)

শুভর কথায় রশনি ব্লাশিং হয়ে মাথা নিচু করে ফেলে,,,

শুভঃ আমার চয়েজ আছে বলতে হবে,,, ? কি সুন্দর ড্রেস কিনে এনেছি,,, ড্রেসটা পুরোই গর্জিয়াস যেই পরবে তাকেই পরীর মতো লাগবে,,, ( মজা করে)

শুভর কথা শুনে রশনি কিছুটা রেগে গেলো,,

রশনিঃ আমি ভাবছিলাম যে আমার তারিফ করছে কিন্তু ইনি তো নিজের ড্রেসের তারিফ করছে,,, সার্থপর লোক একটা ( মনে মনে )

রশনি রাগ দেখিয়ে চলে যেতে নিলেই শুভ ওকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে ঘোর লাগা কন্ঠে বলতে শুরু করে,,,

শুভঃ আহ্ রাগছো কেন রশনি,,, ইউ নো হোয়াট তোমার নাম রশনি না রাগিণী হওয়া উচিত ছিল,,, কথায় কথায় খালি রাগ দেখিয়ে চলে যাও,,,

রশনি রেগে শুভর দিকে তাকালো,,,

শুভঃ এই দেখ তুমি এখনো রেগে যাচ্ছো,,, তুমি যানো যখন তুমি রেগে যাও তোমার নাক আর গাল একদম টমেটোর মত টুকটুকে লাল হয়ে যায়,,,

শুভর কথা শুনে রশনি ওর দিকে ফিরে তাকায়,,,

শুভঃ বিশ্বাস হচ্ছে না ওয়েট তোমাকে আয়না দেখাচ্ছি,,, কিন্তু এখানে আয়না পাবো কোথা থেকে ( অসহায় ভাব নিয়ে)

রশনি ভ্রু কুঁচকে শুভর দিকে তাকালো,,,

রশনিঃ আপনার ড্রামা শেষ হলে এখন আমি যাই,,

শুভঃ আরে ওয়েট ওয়েট আইডিয়া,,, তুমি এক কাজ করো আমার চোখের আয়নায় নিজের প্রতিবিম্ব দেখ,,, দেখ আমার চোখে তোমাকে কেমন দেখায়,,,

রশনি শুভর কথায় ওর চোখের দিকে তাকালো,,, শুভর চোখের গভীরতায় নিজের ছবি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে রশনি,,, শুভ এক দৃষ্টিতে রশনির দিকে। তাকিয়ে আছে,,, চোখে অজস্র ভালোবাসা,,, সীমাহীন চাওয়া,,, শুভর চোখের দিকে তাকিয়ে ঘোরে হারিয়ে যাচ্ছে রশনি,,, শুভর চোখে এক অদ্ভুত রকমের নেশা আছে যেটাতে বেশিক্ষণ তাকিয়ে থাকলে হয়তো রশনি নিজেই তার অতলে ডুবে যাবে,,,, তাই আর না তাকিয়ে ঘুরে দাঁড়ালো রশনি,,,

শুভ বুঝতে পারছে রশনি পরিস্থিতি থেকে পালাতে চাচ্ছে,,, তাই ও রশনির হাতের ভাজে নিজের হাত নিয়ে ওকে একটু এগিয়ে বারান্দায় নিয়ে যায়,,,

শুভ চাঁদটার দিকে ইশারা করে রশনিকে বলল,,

শুভঃ ওই চাঁদটা দেখতে পাচ্ছো রশনি,,,

রশনিঃ হুম,,,

শুভঃ ওটা তুমি,,, আর ওই অন্ধকার টা দেখতে পাচ্ছো রশনি?? ( বাগানের অন্ধকার জায়গাটা ইশারা করে)

রশনিঃ হুম,,,

শুভঃ ওটা আমি,,

শুভর কথা শুনে রশনি কিছুটা অবাক হয়ে পেছনে ফিরলো,,

শুভঃ হ্যাঁ রশনি অন্ধকার!! আমার জীবনে শুধু চারোদিকে অন্ধকার কোন আলো নেই,,, ছোট বেলা থেকে এই অন্ধকারই আমার সাথী ছিল। সেই ছোট্ট বেলা থেকেই সবার থেকে গুটিয়ে রেখেছি নিজেকে,,, ভেবেছি যার কাছে যাবো তার জীবনেই বিপদ নেমে আসবে,, যাকে ভালোবাসবো সেই আমার থেকে দূরে সরে যাবে,,, তাই সবার থেকে দূরত্ব বজায় চলেছি,,, মা সিয়া সবার থেকে দূরে থেকেছি,,, তাদের ভালোর জন্য,,, এখানে আসার পেছনেও আমার একটাই উদ্দেশ্যে ছিলো নিজের কিছু অজানা প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বের করা,,, কিন্তু তাও পেলাম না,,, পেলাম তোমাকে,,, তোমার প্রতি দুর্বল হতে চাই নি তাও নিজের মনকে ধরে রাখতে পারি নি,,, এই মন বারবার তোমার কাছেই ছুটে গেছে,,, তোমাকেই খুঁজে গেছে নিজের পাশে,,,

তুমি এই চাঁদের মতো রশনি যে সব কিছু আলোকিত করে,,, আমার জীবনটা অন্ধকারাচ্ছন্ন।তুমি কি নিজের আলো দিয়ে আমাকে এই অন্ধকার থেকে রেহা করবে?? (ছলছল চোখে)

আগে এই অন্ধকার কে ভালোবাসতাম কিন্তু এখন ভয় হয় যদি হারিয়ে যাই,,,

আমি জানি না আমার ভবিষ্যত কি আর জানতেও চাই না আমি শুধু তোমার সাথে নিজের বর্তমান টা বাঁচতে চাই,,,

রশনির চোখে পানি শুভর চোখেও পানি,,, শুভ রশনির সামনে হাটু গেড়ে বসে ওর হাত ধরে বলতে শুরু করে,,,

শুভঃ ভা ভালো বাসি রশনি,,, অনেক বেশী ভালোবাসি তোমাকে,,, জানি না কতদিন বাঁচবো শুধু চাই যতদিন এই নিঃশ্বাস আছে তুমি আমার পাশে থাকো,,, আমার কাছে থাকো,,, এর থেকে বেশী আমি আর কিছু চাই না,,,

শুভর কথা গুলো শুনে রশনি স্তব্ধ হয়ে গেছে,,, শুভ রশনিকে ভালোবাসি বলেছে যা রশনি কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছে না,,, শুভর প্রত্যেক টা কথা রশনি হৃদয়ে গিয়ে লেগেছে,,, শুভর মনের অবস্থার ব্যাপাররে রশনি সম্পুর্ন অজ্ঞ ছিলো,,,কিন্তু শুভর মুখে কথা গুলো শুনে নিজেকে আর ধরে রাখতে পারলো না ও।

শুভ উত্তরের আশায় রশনির দিকে তাকিয়ে আছে,,,

রশনি শুভর সামনে হাটু গেড়ে বসে ওর গালে দু হাত রেখে বলে,,,

রশনিঃ কি বলবো শুভ,,, অনেক বেশী ভালোবাসি আপনাকে এতো যে তা কল্পনার বাইরে,,, জানি না কি কানেকশন আছে আমাদের মাঝে শুধু এইটুকু জানি যে এটা অনেক গভীর কানেকশন যেটা সহজে ভাঙা যাবে না,,, মরতে রাজি কিন্তু আপনাকে ভুলতে না,,, আই আই লাভ উই শুভ আই রিয়েলি লাভ ইউ,,,

রশনি শুভকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে আর শুভও রশনিকে নিজের মাঝে মিশিয়ে নেয়,,,,

শুভঃ Thank you thank you so much Allah. আমার আর কিছুই চাই না আমি আমার রশনিকে পেয়ে গেছি,,, এখন যদি মৃত্যু ও এসে পরে আমার কোন দুঃখ নেই,,, (আকাশের দিকে তাকিয়ে মনে মনে)

শুভ রশনির মাথায় কয়েকটা চুমু দিয়ে ওকে নিয়ে উঠে দাঁড়ালো,,,

রশনির চোখ লাল হয়ে গেছে কান্না করায়,,, শুভ আলতো করে রশনির চোখের পানি মুছে দিলো তারপর ওর দুই চোখের পাতায় চুমু খেল।

শুভঃ ব্যস আর না রশনি,,, আই প্রমিস আর কখনো তোমার চোখে পানি আসতে দিবো না কখনো কষ্ট পেতে দিবো না তোমাকে,,, আই প্রমিস,,,,

রশনি হালকা হেসে শুভকে জড়িয়ে ধরলো,,,

রাত আরো গভীর হচ্ছে ঘড়ির কাঁটা বারোটার কাছাকাছি,,,,

শুভর মাথা কিছুটা ভারী হয়ে আসছে,,, শরীরও হালকা ঘামতে শুরু করেছে,,,

শুভঃ এমন অস্বস্তি লাগছে কেন হঠাৎ। হয়তো দূর্বলতার কারনে ( মনে মনে )

শুভ ব্যাপারটা অতটা গ্রাহ্য করলো না। শুভ রশনিকে ঘুরিয়ে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে বলতে শুরু করে,,,,

শুভঃ আজকে চাঁদটা কত সুন্দর লাগছে তাইনা রশনি,,, একদম পূর্ণ। ( চাঁদের দিকে তাকিয়ে)

রশনিঃ হ্যাঁ অনেক সুন্দর লাগছে আর পূর্ণতো লাগবেই আজকে পূর্ণিমা আর পূর্ণিমাতে চাঁদ পূর্ণ ভাবেই উঠে শুভ,,,

রশনির কথা শুনে শুভর মুখ ফ্যাকাসে হয়ে যায়,, ভয়ে নিঃশ্বাস ভারী হয়ে আসে,,, শুভ রশনিকে ছেড়ে ওর থেকে পেছনে সরে দাঁড়ায়,,, শুভ হঠাৎ সরে যাওয়ায় রশনি কিছুটা অবাক হয়ে পেছনে ফিরলো,,,

রশনি খেয়াল করলো এই ঠান্ডার মাঝেও শুভ ঘামছে ।

রশনিঃ কি হয়েছে শুভ আপনি ঠিক আছেন?? (শুভর কাছে গিয়ে)

শুভ নিজের হাতের ঘড়িতে তাকিয়ে দেখে এগারোটা পঞ্চান্ন বাজে,, শুভ নিজের কদম পিছিয়ে নেয়,,,

শুভঃ আ আই হেভ টু গো রশনি,,, আমার যেতে হবে,,,

রশনিঃ কোথায় যেতে হবে শুভ,, কিসের কথা বলছেন?

শুভ পেছন ফিরে এক রকম দৌড়ে নিচে নেমে আসে।

রশনি পেছন থেকে ডাকতে থাকে কিন্তু শুভ কোন মতে দৌড়ে নিচে নেমে আসে,,, শুভ তাড়াহুড়া করে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়,,,

আর কেউ খেয়াল না করলেও আবরার ঠিকই খেয়াল করলো যে শুভ বাইরে যাচ্ছে,,,

আবরারঃ তোমরা যাই করো না কেন শুভ আমার সন্তান ওর শরীরে আমার রক্ত বইছে,,, ওকে নিজের অস্তিত্ব থেকে বেশি দিন অজানা রাখতে পারবে না,,, একজন ডেভিল কখনো ভালো গুন নিয়ে জন্মায় না আর শুভতো ডেভিল কিং এর ছেলে,,, ওর শরীরে আমার দোষ গুন আমার শিক্ষা বইছে,,, ওকে আর বেশিদিন নিজেদের মাঝে রাখতে পারবে না তোমরা,,, শীঘ্রই আমার সন্তান নিজের অস্তিত্ব উপলব্ধি করতে পারবে,,, আর তখন নিজের হাতে তোমাদের শেষ করবে,,,

কথা গুলো ভেবে বাকা হেসে ওয়াইনের গ্লাসে চুমুক দিলো আবরার,,,,

To be continued…..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here