অরুণিকা #লেখিকা_সামিয়া_বিনতে_হামিদ ||পর্ব-৬২||

0
1100

#অরুণিকা
#লেখিকা_সামিয়া_বিনতে_হামিদ
||পর্ব-৬২||

১০৩.
এক সপ্তাহ হয়ে গেছে সাহিল আর রাহির এনগেজমেন্ট হয়েছে। কিন্তু রাহির মুখে কোনো হাসি নেই। আজ শাহেদ মির্জা রাহির বাবা-মার সাথে বসে আক্দের তারিখ ঠিক করে ফেলেছেন। আগামী বৃহস্পতিবার তাদের আক্দ হবে।
এদিকে সাহিল রাহিকে একা ছাদের এক কোণায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে তার হাত শক্ত করে চেপে ধরে বলল,
“আমি বুঝতে পারছি না, তুমি হঠাৎ এমন অদ্ভুত আচরণ কেন করছো?”

রাহি ভ্রূ কুঁচকে বললো,
“আমি কখন অদ্ভুত আচরণ করলাম? আমি তো আগের মতোই আছি।”

“তুমি মোটেও আগের মতো নেই। তুমি হঠাৎ আমার কাছ থেকে দূরত্ব রাখা শুরু করেছো! হোয়াই রাহি? হোয়াই?”

রাহি কোনো উত্তর না দিয়ে মুখ ঘুরিয়ে নিলো। সাহিল দাঁতে দাঁত চেপে বলল,
“তোমার এই আচরণের পেছনে আরাফ চৌধুরী নেই তো? ইদানিং তোমাদের মধ্যে খুব ভাব জমেছে দেখছি। কতোদূর এগিয়েছো?”

রাহি চোখ বড় বড় করে বলল,
“সাহিল, আমি তোমার উল্টোপাল্টা প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার প্রয়োজন মনে করছি না। আরাফের সাথে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। শুধু দেখা হলে, টুকটাক কথাবার্তা হয়।”

“শুধু টুকটাক কথা বলার জন্য রেস্টুরেন্টে বসার কি খুব প্রয়োজন ছিল!”

রাহি তাচ্ছিল্যের সুরে বলল,
“ও! তাহলে তুমি আমার পেছনে তোমার লোক লাগিয়ে দিয়েছো, তাই না?”

“তুমি আমার ভালোবাসার মানুষ। আমি কেন তোমার পেছনে লোক লাগাবো? আমি তোমাকে অনেক বিশ্বাস করি, রাহি। আমি তো তোমার সেইফটির জন্য কিছু লোক রেখেছিলাম।”

রাহি সাহিলের দিকে তাকিয়ে বলল,
“আমি আরাফের সাথে মাঝে মাঝেই দেখা করি৷ এমনকি ওর চেম্বারেও চলে যাই। কারণ আমার ওর সাথে কথা বলতে ভালো লাগে।”

রাহির কথা শুনে রাগে সাহিলের মুখটা লাল হয়ে উঠলো। রাহি আবার বলল,
“যেখানে আমার তোমার সাথে সময় কাটানো উচিত ছিল। সেখানে আমি আমার সময়টা তোমাকে দিতে চাইছি না। কেন জানো? কারণ তোমার সাথে কথা বলে আমি কোনো মানসিক শান্তি পাই না।”

সাহিল শান্ত কন্ঠে বললো,
“ওই আরাফের সাথে কথা বলে তুমি খুব শান্তি পাও?”

“হ্যাঁ, কেন পাবো না? আরাফ মানুষটাই এমন। তুমি তো আর ওর মতো হতে পারবে না!”

“তুমি আমাকে এই অবস্থায় ভালোবেসেছিলে, রাহি।”

“হ্যাঁ, কিন্তু তুমি তখন এতো হিংস্র ছিলে না। আরাফ নিজেও মৈত্রী গ্রুপের একজন সদস্য। কিন্তু ওর মধ্যে কোনো অহংকার নেই। আর তুমি এতো অহংকার নিয়ে থাকো, মাঝে মাঝে আমার নিজেকে তোমার সামনে তুচ্ছ মনে হয়। আর তুমিই আমাকে সেই অনুভূতি দিয়েছ। তোমার চলাফেরা, খাওয়া-দাওয়া, সবকিছুতে দাম্ভিকতা। আমি তোমার সাথে শান্তি পাচ্ছি না, সাহিল। আমি একজন প্রাকৃতিক মানুষকে চাই। কৃত্রিম মানুষকে নয়।”

সাহিল হাত মুঠো করে মুখ ঘুরিয়ে নিলো। যাকে সে এতো ভালোবাসতো, যেই মেয়ের জন্য সে এতো উন্মাদ, সেই মেয়েটিই আজ তাকে তার শত্রুর সাথে তুলনা করছে। নিজের রাগ নিয়ন্ত্রণ করে সাহিল শান্ত কন্ঠে বললো,
“তুমি ওই আরাফ চৌধুরীর সাথে আমার তুলনা করে ভালো করো নি। শুনো, বৃহস্পতিবার আমাদের আক্দ। তোমার ইচ্ছা থাকুক বা না থাকুক এই বিয়েটা তো হবেই। তোমাকে পাওয়ার জন্য যদি আমার কাউকে পৃথিবী থেকেই মুক্তি দিতে হয়, তাহলে আমি বিনা দ্বিধায় তাকে মুক্তি দেবো।”

রাহি সাহিলের হাত ধরে বলল,
“কি করবে তুমি? তুমি কিন্তু উল্টোপাল্টা কিছু করবে না, সাহিল।”

“তাহলে চুপচাপ আমাকে স্বামী হিসেবে গ্রহণ করে নিও, তখন আর আমি কিছুই করবো না। তুমিও ভালো থাকবে, বাকিরাও ভালো থাকবে।”

রাহি মলিন মুখে বললো,
“একবার যদি তুমি সব ভুলে আমার কথা চিন্তা করতে, তাহলে আমিও তোমার মাঝেই ডুবে থাকতে পারতাম। যাকে ভালোবাসি, সে একজন রাক্ষস। তাহলে জেনে বুঝে আমি একজন রাক্ষসকে বিয়ে করবো, তাই না?”

সাহিল ব্যথিত দৃষ্টিতে রাহির দিকে তাকিয়ে চলে গেলো। নিচে নামতে নামতে সে একটা নম্বরে ফোন দিয়ে বলল,
“আমি এক্ষুনি আরাফ চৌধুরীকে আমার সামনে চাই। ডোন্ট বি লেইট।”

এদিকে বিশ মিনিটের মধ্যে সাহিলের লোকেরা আরাফকে তার চেম্বার থেকে তুলে এনে একটা রাস্তার মোড়ে নিয়ে গেলো। তারা আরাফের ফোনটাও নিয়ে ফেলেছে, তাই সে বাসায় কাউকে কিছুই জানাতে পারে নি। আরাফ গাড়ি থেকে নেমে দেখলো তার সামনে আরো তিনটা গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে। কিছুক্ষণ পর মধ্যের গাড়িটা থেকে কেউ একজন বেরিয়ে এলো। আরাফ লোকটাকে দেখেই অস্ফুটস্বরে বলে উঠল,
“সাহিল মির্জা!”

সাহিল আরাফের সামনে দাঁড়িয়ে বলল,
“সাহিলের সম্পদের দিকে নজর দেওয়ার খুব শখ তোমার, তাই না!”

আরাফ ভ্রূ কুঁচকে সাহিলের দিকে তাকিয়ে রইল। সাহিল আবার বলল,
“তোমার বন্ধু আর ভাই, ইমন আর আহনাফ ভালোই তো ইটা কোম্পানিকে একেবারে মৈত্রী কোম্পানির মতো উপরে উঠিয়ে নিচ্ছে। কিন্তু আমার জায়গাটা ধরা ওতো সহজ নয়। যতোদিন আমার পজিশন ওয়ান, ততোদিন আমি নাম্বার ওয়ান, আর আমাকে তুমি কখনো হারাতে পারবে না। আমার বাবা, তোমার বাবা-চাচাদের সাথে কম্পিটিশনে সবসময় সেকেন্ড পজিশনে ছিল। কিন্তু আমি শাহেদ মির্জা নই। আমাকে তোমরা এতো সহজে সেকেন্ড পজিশনে আনতে পারবে না।”

আরাফ বুকে হাত গুঁজে বলল,
“এটা বলার জন্য আমার সব পেশেন্টকে বসিয়ে রেখে, আমাকে এখানে উঠিয়ে এনেছো?”

সাহিল কিছুক্ষণ তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে আরাফের দিকে তাকিয়ে থেকে বলল,
“রাহি থেকে দূরত্ব রাখবে। ও আমার ফিয়োন্সে। তোমাদের আর যদি কখনো একসাথে দেখি, তাহলে এটা তোমার জন্য মঙ্গলজনক হবে না।”

এই কথা বলে সাহিল গাড়িতে উঠে বসলো। আরাফ বিরক্তমুখে দাঁড়িয়ে আছে। রাহিকে নিয়ে তার এমনিতেই কোনো আগ্রহ নেই। তবুও সাহিল মির্জা শুধু শুধুই তাকে এভাবে রাস্তার মোড়ে নিয়ে এসে হেনস্তা করেছে। এখন আশেপাশে কোনো গাড়িও নেই। অগত্যা তাকে বিশ মিনিট হেঁটে একটা লোকাল বাস ধরতে হলো।

দু’দিন পর। আরাফ তার চেম্বারে রাহিকে ঢুকতে দেখে অবাক হলো। রাহি ভেতরে ঢুকতে ঢুকতেই বলল,
“বসতে পারি?”

আরাফ হালকা হেসে বলল,
“আবার কোনো সমস্যা?”

রাহি মুচকি হেসে বলল,
“কেন, সমস্যা ছাড়া কি আসা যায় না?”

“চেম্বারে এসেছেন, তাহলে তো অবশ্যই সমস্যা নিয়েই এসেছেন, তাই না? বাইরে অনেক রোগী আছে। তাদেরও দেখতে হবে। আমি গল্প করার জন্য তো এখানে বসি নি।”

আরাফের এমন কথায় রাহি কিছুটা দমে গেলো। সে আমতা-আমতা করে বলল,
“সরি। আমার এই সময়ে আসা উচিত হয় নি। আসলে আমি আমার আক্দের দাওয়াত দেওয়ার জন্য এসেছিলাম।”

“আচ্ছা। ধন্যবাদ।”

“কাল বিকেলে আমার আক্দ, আর রাতে অনুষ্ঠান। আসবেন কিন্তু।”

“চেষ্টা করবো।”

রাহি মুচকি হেসে উঠতে গিয়েও বসে পড়লো। আরাফ ভ্রূ কুঁচকে বলল,
“আর কিছু বলবেন?”

আরাফের এমন ঠান্ডা কথাবার্তা শুনে রাহি ইতস্তত ভাব নিয়ে বসে রইলো। আরাফ আবার বলল,
“মিস রাহি, আর কিছু কি বলার আছে? বাইরে পেশেন্টরা অপেক্ষা করছে। এখান থেকে আমার আবার অন্য চেম্বারে গিয়েও বসতে হবে।”

রাহি হুট করে হাত এগিয়ে দিয়ে বলল,
“আমরা কি বন্ধু হতে পারি?”

আরাফ রাহির কথায় অবাক হলো। কিছু একটা ভেবে বলল,
“হঠাৎ বন্ধুত্ব!”

রাহি হেসে বলল,
“আমার আপনার বন্ধু হওয়ার অনেকদিনের ইচ্ছে ছিল। এখন কি বন্ধু হওয়া সম্ভব না?”

আরাফ রাহির আবদার ফেলতে পারলো না। সে নোট প্যাডে কিছু একটা লিখে রাহির দিকে এগিয়ে দিয়ে বলল,
“এবার আপনি আসুন।”

রাহি কাগজটা খুলে দেখলো সেখানে লেখা আছে,
“আচ্ছা, হলাম বন্ধু। বেশি করে পানি খাবেন। এই সময়টাই বেশি পানি খেলে স্কিন ভালো থাকবে।”

রাহি মুচকি হেসে চেম্বার থেকে বেরিয়ে এলো।

এদিকে ইভান আর সানায়া খোলা আকাশের নিচে পাশাপাশি হাঁটছে। আর সানায়া মুগ্ধ দৃষ্টিতে ইভানের দিকে তাকিয়ে আছে। তার সারাদিনই ইভানকে দেখে থাকতে ইচ্ছে হয়। দিনদিন সে ইভানের প্রতি অনেক বেশি দুর্বল হয়ে পড়ছে। প্রথম প্রথম ভালো লাগা থাকলেও, এখন এই ভালো লাগা ভালোবাসায় রূপ নিচ্ছে। শুধু বলার সাহস পাচ্ছে না। এদিকে ইভানও তাকে কিছু বলছে না। ইভানের যত্ন-আত্তি দেখে মনে হচ্ছে সেও সানায়াকে ভালোবাসে। কিন্তু এই ছেলে এতোটা চাপা স্বভাবের যে কিছুই বলে না।

অনেক দূর হাঁটার পর ইভান হঠাৎ সানায়ার হাতটা আলতোভাবে স্পর্শ করলো। আর সানায়া সাথে সাথেই চমকে উঠলো। ইভান হাতটা সামনে এনে হঠাৎ তার পকেট থেকে একটা সাদা কাঠের চুড়ি বের করে তা সানায়ার হাতে পরিয়ে দিয়ে বলল,
“আজ মেলায় গিয়ে এই চুড়িটা দেখলাম। ভালোই লাগলো। তুমি তো আবার টপ-জিন্স পরো। তাই চুড়ি জিনিসটা তোমার হাতে মানাবে না। কিন্তু এই কাঠের চুড়িটা হয়তো ভালো লাগবে, তাই নিলাম।”

সানায়া চুড়িটার দিকে তাকিয়ে থেকে বলল,
“তুমি যা দেবে, সবটাই আমার ভালো লাগে।”

ইভান সানায়ার চোখের দিকে তাকিয়ে বলল,
“থ্যাংকস।”

সানায়া মনে মনে হাসলো। ইভানের চোখাচোখি হলেই তার হৃদপিণ্ডের কম্পন বেড়ে যায়। তার মনে হয় খুব দুঃসাহসিক কাজ করে ফেলেছে। কারণ এই চোখ দুটির দিকে তাকিয়ে থাকতে পারাটাই তার কাছে অনেক বড় সাধনা।

এদিকে অরুণিকা কলেজ থেকে বের হয়েই রাস্তায় ইমানকে দেখলো। ইমানকে দেখেই তার খুব ইচ্ছে করছিলো ইমানের সাথে কথা বলতে। কিন্তু সে ইমানকে মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলতে চায়। কারণ ইমান তো তাকে ভালোবাসে না।
অরুণিকা কলেজ গেইটের সামনে দাঁড়িয়ে আনমনে অনেক কিছুই ভাবতে লাগলো। তখনই ইমান তার সামনে এসে বলল,
“হাই, অরুণিকা, কেমন আছো?”

ইমানের কন্ঠ শুনেই অরুণিকা চমকে উঠলো। সে হালকা হেসে বলল,
“জ্বি ভালো আছি।”

“ক্লাস শেষ? বাসায় যাচ্ছো?”

“হ্যাঁ।”

“চলো, আমি তোমাকে নামিয়ে দিয়ে আসি।”

“না, না। আহনাফ আসবে। ও বলেছে এখানেই দাঁড়িয়ে থাকতে।”

“ওহ আচ্ছা।”

ইমান এবার অরুণিকার পাশে দাঁড়িয়ে রইলো। অরুণিকা ভ্রূ কুঁচকে বললো,
“আপনি এখানে কেন দাঁড়িয়ে আছেন?”

“তোমাকে পাহারা দিচ্ছি।”

অরুণিকা অভিমানী কন্ঠে বলল,
“আপনি কেন আমাকে পাহারা দেবেন? আপনাকে তো কেউ এই দায়িত্ব দেয় নি।”

ইমান মুচকি হেসে বললো,
“দায়িত্ব দিতে হয় না। নিতে জানতে হয়। আর কিছু দায়িত্ব নিতে এমনিতেই ভালো লাগে।”

অরুণিকা মনে মনে বলল,
“কেমন খচ্চর! ভালোবাসে অন্য কাউকে, আর পাহারা দেবে আমাকে? আমার হবু বর অন্য কোনো মেয়েকে পাহারা দিলে, আমি তো তার পা গুঁড়ো করে দিতাম।”

ইমান অরুণিকার সামনে এসে বলল,
“মনে মনে কি ভাবছো?”

অরুণিকা কোণা চোখে ইমানের দিকে তাকিয়ে বলল,
“বিয়ের দাওয়াত দেবেন না?”

ইমান অবাক হয়ে বলল,
“যেখানে বউয়ের খবর নেই, সেখানে বিয়ের দাওয়াত তো স্বপ্ন।”

“মানে?”

“মানে আমি তো এখনো বিয়ে করার চিন্তাভাবনা করি নি। বিয়ে নিয়ে ভাবতে আরো সময় লাগবে।”

অরুণিকা অবাক হয়ে বলল,
“কিন্তু আহনাফ যে বলল, আপনার বিয়ে হবে!”

“কখন বলেছে?”

“বলেছিল তো। আপনি একজনকে পছন্দ করেন, তাকেই বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।”

ইমান এবার অবাক হলো। ভ্রূ কুঁচকে বলল,
“আমি এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেই নি। ইনফ্যাক্ট, আমার কোনো মেয়ের সাথেই সম্পর্ক নেই।”

অরুণিকা আর কিছু বলল না। আহনাফ কি তাকে এতো বড় মিথ্যে কথা বলবে? বললেও বা কেন বলবে?

বাসায় এসে অরুণিকা চুপচাপ উপরে উঠে গেল। আজ পুরো রাস্তা সে আহনাফের সাথে কোনো কথা বলে নি৷ আহনাফ অরুণিকার ব্যবহারে কিছুটা অবাক হলো। সে উপরে উঠে অরুণিকার রুমে এসে বলল,
“কি হয়েছে, বলবে?”

অরুণিকা ব্যাগটা মেঝেতে রেখে আহনাফের সামনে দাঁড়িয়ে বলল,
“ইমানকে নিয়ে তুমি মিথ্যে কথা কেন বলেছে? কেন বলেছ, ও অন্য কাউকে ভালোবাসে?”

আহনাফ অরুণিকার প্রশ্ন শুনে চমকে উঠলো। অরুণিকা বলল,
“আমি তোমাকে বিশ্বাস করেছি, আহনাফ। তুমি আমাকে মিথ্যে কথা কেন বলেছো, বলো?”

আহনাফ অরুণিকার হাত ধরে বলল,
“কারণ আমি চাই না তুমি ইমানকে নিয়ে কোনো স্বপ্ন দেখো। ইমান তোমার জন্য পারফেক্ট না।”

“তাহলে কি তুমিই আমার জন্য পারফেক্ট?”

“আমরা তোমাকে এমনিতেই বাইরে বিয়ে দেবো না, অরু। এটাই তোমার বাবার ইচ্ছে ছিল।”

অরুণিকা মলিন মুখে বললো,
“সম্পত্তি! ৫০ ভাগ অংশ! এগুলোর জন্য তোমরা আমাকে বেঁধে রাখছো?”

“না, অরু। আমাদের মূল সম্পদ তো তুমি। তোমাকে হারিয়ে ফেললে আমাদের কি হবে?”

“আমার অনুভূতির কি কোনো মূল্য নেই তোমাদের কাছে? ইমন তার ভালোবাসার মানুষকে বিয়ে করেছে। তাহমিদ শতু আপুর জন্য সব করতে প্রস্তুত। উপমা ভাবী রকস্টারের জন্য নিজের সব খুশি ত্যাগ করে দিয়েছে। এদের সবার ভালোবাসা তোমাদের চোখে পড়ছে। আমারটা কেন দেখছো না, আহনাফ?”

আহনাফ রাগী কন্ঠে বললো,
“কি বুঝো তুমি ভালোবাসার?”

“আমি ইমানকে পছন্দ করি, আহনাফ। আর তুমি আমাকে ওর সম্পর্কে মিথ্যে বলেছো। আমার কি এখন এই কথা আরাফকে জানানো উচিত নয়?”

আহনাফ বলল,
“জানাও আরাফকে। সবাইকে জানাও। যা করার করো। বিয়ে তো তোমার আমার সাথেই হবে। আর এই সত্যটা মাথায় ঢুকিয়ে রাখো।”

চলবে—-

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here