বিপরীতে_তুমি_আমি #পর্বঃ১২

0
770

#বিপরীতে_তুমি_আমি
#পর্বঃ১২
#লেখনি_সুমাইয়া_ইসলাম

আগেই বলে ছিলাম তুমি নিজেকে নিয়ন্ত্রণ না করলে আমি কিন্তু বেসামাল হয়ে যাবো। এখন তোমার কি হবে বউ?

কিরণ কেঁপে উঠলো। কোমর পেঁচিয়ে রাখা হাতটা আরো জোড়ে পেচিয়ে নিল অর্ণব। অপর হাতটিও ধীরে পেটের উপর রাখে। হেলিয়ে রাখা শরীর সোজা করে বসে মুখ গুজে দিলো কিরণের উন্মুক্ত ঘাড়ে। কিরণের ঘন হয়ে আসা নিঃশ্বাস ও বুকের দামামা নৃত্য অর্ণবের কর্ণগোচর হচ্ছে। অর্ণব মুচকি হাসলো। কিরণের এত সময় করে আসা সকল কর্ম বলে দিচ্ছে বরফ গলছে। না গলেই কি থাকা যায়? প্রেমের উত্তাপে যদি আগুন জ্বলে সেখানে বরফ গলবে না? এ প্রেমের অনলে তো পুড়ে পুড়ে খাটি সোনা হবে। আঙ্গুলের নরম নরম স্পর্শ ঘাড়ে ছুঁয়ে বেঁধে রাখা খোঁপা খুলে দিতেই কিরণের শরীরের গভীর কম্পন অনুভব করলো।
অর্ণবের এমন ছলা কলা কিরণ হাড়ে হাড়ে বুঝতে পারছে। লোকটা ইচ্ছে করে ওকে জ্বালানোর এমন বিপদজনক বুদ্ধি এঁটেছে। অর্ণবের চুম্বন ঘাড় থেকে ক্রমশ গলার দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এমন গভীর স্পর্শে কিরণের মস্তিষ্ক যেন শূন্য হয়ে আসছে। হাত গুলো মুঠ হয়ে এলো। খামচে ধরলো শাড়ি আরেকট হাত খামচে ধরলো অর্ণবের শার্টের হাতায়। আবেশে বন্ধ হওয়া চোখ খুলে গেলো। এমন দম বন্ধ হওয়া মূহুর্ত থেকে পালাতে হবে তাকে। শূন্য মস্তিষ্কে হুট করেই বুদ্ধি উপস্থিত হলো। একবার নিজের হাতের নখগুলোর দিকে তাকিয়ে দেখলো। মাঝারি পর্যায়ের নখগুলো বিদ্যমান। দেরি না করেই নিজের পেটে জড়িয়ে রাখা অর্ণবের হাতে তালুর ঠিক উল্টো পিঠের চামড়ায় খামচে ধরতেই হাত সরে গেলো। মৃদু আর্তনাদ শোনা গেল অর্নবের কন্ঠ থেকে। কিরণ এ সময়ের অপেক্ষাই ছিল। তাই সময় অপচয় না করে দ্রুত অর্ণবের পায়ের উপর থেকে দাঁড়ালো। এখনো নিঃশ্বাসের গতিধারা অস্বাভাবিক। হাঁপিয়ে ওঠেছে যেন। দু চোখের মাঝের চামড়া কুচকে অর্ণবের দিকে তাকালো। অর্ণবের ডান হাতের চামড়ায় কিরণের নখের দাগগুলো জ্বল জ্বল করছে। বাম হাত দিয়ে এই দাগের উপর মালিশ করতে করতে তাকিয়ে রইলো কিরণের দিকে। কিরণের মুখে মৃদু রাগের আভাসে অর্ণবের মুখটাও হাসির সামান্য আভা দেখা গেলো। সে মনে হয় বেশ মজা পাচ্ছে। কিরণ খামোখা রাগ নিয়ে জোর গলায় চিল্লিয়ে বললো,

আ আপনি আসলেই চূড়ান্ত অসভ্য মানুষ। শুধু অসভ্যই নন, ঠকবাজ, চালবাজ, নাটকবাজও। এতো সময় মাতাল হয়ে পড়ে থাকার অভিনয় করতে পারে কেউ?

অর্ণবের এবার হাসি পেলো। অনেক্ক্ষণ যাবৎ কিরণের কাজকর্ম, কথায় অর্ণবের হাসি পেলেও হাসে নি। দমিয়ে রাখার চেষ্ট করেছে। কিন্তু এবার মনে হলো হাসিটা আটকে রাখা যাবে না। পুনরায় চেয়ারে পিঠ ঠেকিয়ে দিল। অর্ণবও অট্ট হাসিতে মেতে ওঠলো। হাসির সাথে সাথে দুলতে থাকলো চেয়ারটি। হাসির ফাঁকেই দেখতে পেলো কিরণের হতবাক হয়ে থাকা মুখটা। বেচারি হয়তো অর্ণবের হঠাৎ হাসির কারণটা বুঝতে পারছে না। বোকা হয়ে আছে। এ দৃশ্য দেখে অর্ণবের হাসির মাত্রা আরো বেড়ে গেলো। এরপর হাসি থামিয়ে এক পা নিচে রাখে চেয়ারের গতিও থামিয়ে দিলো। নিশব্দে ওঠে দাঁড়ালো। এক পা এগোতেই দেখতে পেলো কিরণও পা পিছিয়ে নিল। ভয় পাচ্ছে হয়তো। আবার যদি ফাঁসতে হয়! অর্ণব সাথে সাথে পা থামিয়ে দু পা একসাথে করে সটান হয়ে দাঁড়ালো। দু পকেটে হাত রেখে কিরণের দিকে তাকিয়ে বললো,

ব্যাপারটা কেমন হলো না? চোরের মায়ের বড় গলার মতো!

কিরণের এবার রাগ হলো। এতো বড় অপবাদ! ক্ষেপে বললো,

চোর মানে? কি বলতে চাচ্ছেন আপনি?

তুমি আমায় ঠকবাজ বললে, চালবাজ বললে অথচ ঠকিয়েছে কে? চাল খাটিয়েছে কে?

কে ঠকিয়েছে আপনাকে? আপনিই না এতোক্ষণ অভিনয় করে আমাকে ঠকালেন।

অর্ণব এবার ধীরে এক পা এক পা এগোলো। কিরণও কথায় কথায় পেছানো শুরু করলো।

ওওও আচ্ছা! শরবতে এলকোহল মেশাল তুমি, মাতাল বানালে তুমি, আর ঠকালাম আমি? বাহ্! বউ তো আমার দারুণ যুক্তি জানে।

হ্যা! করেছি তো অন্যায় কোথায় করেছি? আ আপনি কোনো কিছু না বললে তখন নিজ থেকে জানতে হয়। ওই যে কথায় আছে না! সোজা আঙ্গুলে ঘি না ওঠলে আঙ্গুল বাঁকাতে হয়। তেমনি!

বউ আমার দারুণ আর্টকেল লিখতে পারবে বোঝা যাচ্ছে। কিন্তু আমার মনে হচ্ছে তোমার জন্য ওকালতিটা একদম মানানসই হতো। আসামীও খালাসি পেতো।

কিরণ এবার যেন আরো ক্ষেপে গেলো। কত বড় আরোপ! সে কি দুর্নীতি সমর্থন করে নাকি? রেগে তেড়ে গেলো অর্ণবের দিকে। দু কদম দিয়ে অর্ণবের মুখোমুখি হলো। দু হাতে কলার টেনে ,

এই এই! কি বললেন আপনি? আমি অপরাধীদের বাঁচাতাম? আমি অপরাধীর হয়ে লড়তাম? হ্যা মানলাম আমি আপনার শরবতের সাথে ছেড়খানি করেছি তাই বলে এতো বড় কথা বলবেন? আপনাকে তো আমি খু*ন করে দেবো।

অর্ণবের চাহনি বদলালো। এক হাত দিয়ে কিরণের কমর টেনে নিজের সাথে মিশিয়ে বললো,

খু*ন তো তুমি করেছোই। খু*নী তো তুমি সে বছর আট আগের থেকেই। নতুন করে আবারো খু*ন করতে চাও? তবে করে ফেলো। আমি সেচ্ছায় এ খু*নীকে বরণ করেছি। কতবার যে ম*রেছি তোমাতে তুমি যদি তা জানতে, হয়তো আরো যত্নে মা*রতে, হয়তো তুমিও ম*রতে চাইতে।

কিরণের হাতের বাঁধন নরম হয়ে এলো। অর্ণবের চোখে চোখ আবদ্ধ হলো। মনে হলো এর অভ্যন্তরে হারালে বোধ হয় নিখোঁজ হওয়া যাবে। অর্ণবের পুরো সত্তাতে হারানো যাবে। অচেনা অর্ণবকে জানা যাবে। ওর অদেখা প্রেমের বিশাল সমুদ্র দেখা যাবে। ঘোরের মাঝেই অর্ণব এগিয়ে এলো। হঠাৎ কিরণ অর্ণবের নিঃশ্বাসের প্রতিফলনে ঘোর ফিরে এলো। বুকে রাখা দু হাত দিয়ে ধাক্কা দিয়ে বেড়িয়ে গেলো ঘর থেকে। দ্রুত হেঁটে নেমে এলো নিচে। কোথাও থামলেই যেন অর্ণব জেঁকে বসবে। অর্ণব নামের মাতাল ঝড় সে আর চাচ্ছে না। এমনিই সব উল্টে পাল্টে গেছে, সে ঝড় পুরোপুরি এলে তো কিরণ এলোমেলো হয়ে যাবে। পা চালিয়ে রান্না ঘরে আসতেই দেখতে পেলো জান্নাত চা বানাচ্ছে। এ ক দিনে সকলে চলে গেলেও জান্নাত যায় নি। জান্নাতের বাসাও কাছে। কিরণের একাকিত্ব ঘোচানোর সঙ্গি হতেই সে থেকে গিয়েছে। কিরণ বড় নিঃশ্বাস নিয়ে এগিয়ে গেলো জান্নাতের দিকে। মৃদু হেসে জান্নাতকে ডাক দিলো,

জান্নাত! তুমি এখন এ সময় রান্নাঘরে?

জান্নাত কিরণকে দেখে অমায়িক এক হাসির সাথে প্রতুত্তর করলো,

চা বানাচ্ছি ভাবি। তুমি খাবে?

সে খাওয়া যেতেই পারে। কিন্তু এখন চা বানাচ্ছো যে?

জান্নাতের হাসি মুখটা পরিবর্তন হলো বিরক্তিতে। চায়ে চিনি ঢালতে ঢালতে বললো,

রাক্ষসটাকে চেনো না? খালি খাই খাই। আমাকে দেখলেই এটা রান্না করে দে, ওটা রান্না করে দে। বাসায় মনে হয় খেতে পায় না। আমাকে খাটিয়ে ফোনে প্রেম আলাপ করছে। অসহ্য লাগে। ওই প্রেমিকাকে বললেই তো পারে। দেখো তুমি ভাবি ওর বউও ওকে এমন ভাবেই খাটাবে। অভিশাপ দিলাম অভিশাপ!

কথাগুলো বলেই চিনির বৈয়ামটা ধপ করে রেখে দিল। কিরণের বেশ হাসি পেলো। মেহরাব আর জান্নাতের সম্পর্কটা এ কদিনে বেশ লক্ষ করেছে। মেহরাব ক্ষণে ক্ষণেই জান্নাতকে ডেকে নেয়। না হলেই নিজেই বিভিন্ন অযুহাতে চলে আসে। জান্নাতের সাথে মেহরাবের খুনসুটিগুলোও অন্যরকম। প্রেমময়!

কিরণ মুচকি হেসে চলে গেলো কাপ আনতে। তিনটে চায়ের কাপ ধুয়ে জান্নাতের পাশে দাঁড়িয়ে বলল,

আচ্ছা হয়েছে অনেক অভিশাপ দেওয়া। এবার দাও দেখি আমি ঢেলে দিচ্ছি চা। তুমি বরং বিস্কিটের বৈয়ামটা নিয়ে যাও বসার ঘরে। মেহর্ব ভাইয়া তো দেখলাম সোফায় বসে টিভি দেখছে। তিনজনে বসে আড্ডা দেওয়া যাক চলো।

জান্নাত বাধ্য মেয়ের মতো সরে দাঁড়ালো। পেছনের কাবার্ট থেকে বৈয়ামটা হাতে নিয়ে ঢাকনা খুলে একটা বিষ্কুট বের করে নিল। দরজার কাছে হেলিয়ে দাঁড়ালো। বিস্কুটে একটা কামড় দিয়ে কিরণকে বললো,

ভাবি! মেহরাব ভাইয়া আবার কেন এলো গো? তুমি ঢেকেছো বললো। কেন ডাকতে গেলে বলোতো?

কিরণ চায়ের কাপ তিনটে একটা ট্রে তে বসিয়ে উত্তর দিলো,

একটু কাজ ছিল। একটা জিনিস আনানোর ছিল।

জিনিস আনানোর জন্য ওই বদমাইশ ব্যটাকে ডেকেছো? আমায় বলতে আমি এনে দিতাম। ওনি নিজেও বদ আর তোমায় এনেও দিয়েছো দেখো গিয়ে কোনো দুই নম্বর জিনিস।

কিরণ জান্নাতের দিকে তাকালো। মেহরাবকে দিয়ে আনানো এলকোহলটা কি আসলেই আসল ছিল? কিরণ ভাবনায় পড়লো। এতোক্ষণ তো ভাবে নি। অর্ণবকে নিজে দাঁড়িয়ে থেকে শরবত।খাওয়ালো ঠিকই কিন্তু নেশা হলো না। মানুষটা কিভাবে একদম সুস্থ রয়েছে ভেবেই কিরণ হতাশ হয়ে এলো। এলকোহলটা ভাল ছিলো তো? ওটা এলকোহলই ছিলো তো?

কিরণকে হঠাৎ চুপচাপ দেখে জান্নাতে কাছে গিয়ে কিরণের কাঁধে হাত রাখলো। কিরণ চমকে ওঠে পাশে তাকালে জান্নাত বললো,

কি হলো তোমার হঠাৎ? কি এতো ভাবছো?

কিরণ চিন্তিত মুখেই হাসির রেখা টেনে চায়ের ট্রে টা জান্নাতের হাতে দিকে এগিয়ে দিলো। বিস্কুটের বৈয়ামটা হাত থেকে নিয়ে চায়ের ট্রে টা হাতে ধরিয়ে বললো,

আমার কিছু হয় নি। শোন! তুমি চা টা নিয়ে যাও। খেতে থাকো আমি পাঁচ মিনিটের মধ্যে আসছি বিস্কুটটা নিয়ে। তোমার ভাইয়ার জন্য কফি করতে হবে ভুলে গেছি।

জান্নাত হেসে সম্মতি জানালো। পা টিপে টিপে সাবধানে ট্রে ধরে চলে গেলো।

জান্নাত চলে যাওয়ার পর কিরণ নিচের এক কাবার্টের দরজা খুলে অর্ণবের জন্য আনানো এলকোহলের বোতলটা খুঁজতে লাগলো। কেউ যেন না দেখতে পারে তাই সে ভেতরের দিকে লুকিয়ে রেখেছিলো। ভেবেছিল পরে ফেলে দিবে। কিন্তু এখন তা পরীক্ষা করা প্রয়োজন। পুরো এক গ্লাস শরবতে প্রায় অর্ধেকটা এলকোহল দিয়েছিল। একজন মানুষকে নেশাগ্রস্ত করতে ওতটুকই নাকি যথেষ্ট ছিল। মেহরাব বলেছিল। এও বলেছিল এইটা নাকি বেশ কড়া। মিনিট পরেই বোতলটা খুঁজে পেলো। দ্রুত এক গ্লাস ভর্তি করে ফেললো। গ্লাসটা নাকের কাছে আনতেই হালকা উটকো ঘ্রাণ এলো। কিন্তু সে তো জানতো এগুলোর ঘ্রাণ বেশ কড়া হয়। পরবর্তীতেই মনে পড়লো কিরণ বলে দিয়েছিল কাজ কড়া হলেও যেন ঘ্রাণ কড়া না হয়। অর্ণবের ধরে ফেলার আশঙ্কা আছে। কিন্তু তাতেও বিশেষ কোনো লাভ হলো না। ধরা সে পড়েই গিয়েছে।

কিরণ হতাশায় এলকোহল পূর্ণ গ্লাসটায় তাকিয়ে তা হাতে তুলে নিলো। অর্ণবের মতো পুনরায় একটা বড় মগে শরবত বানিয়ে সেখানে মিশিয়ে নিয়ে নিজে পান করে ফেললো। নাক মুখ হালকা কুচকে এলো। পরিমাণটা বেশি দিয়ে ফেলেছে। কিন্তু তাতে কি? এটা তো তেমন কাজ করে না। মিনিট দুয়েক পর কিরণের কাছে শরবতটা বেশ মজাদার লাগলো। হঠাৎ এতো মজা কেন লাগছে? আরেকবার খাবে? যেই ভাবা সেই কাজ। তবে সতর্কতার জন্য একটা লেবু প্রথমে কেটে নিল। যদি বেশি খেয়ে নেয় তবে একটা লেবু খেয়ে নেবে। নেশা হবে না।
সময়ের পালাক্রমে আধাঘন্টা পার হওয়ার পর দেখলো বোতল খালি করে নিয়েছে। চোখের পলক পর পর কয়েকবার ফেলে বুঝতে চাইলো সে কি করে ফেলেছে। পাশে একনো একটা গ্লাস শরবত রয়েছে। দ্রুত একটা লেবু মুখে নিতেই জান্নাত এসে ডাক দিলো,

ভাবি! তুমি না বললে আসছো? এলে না তো? আমাদের চা শেষ হয়ে এলো। দেখো খাটাসটা আমার চা টুকুও খেয়ে নিয়েছে। কেবলই একটু খেয়েছিলাম। তোমার টুকুও সাবার করেছে।

কিরণ লেবুটা নামিয়ে রেখে দিলো। জান্নাতের সামনে হঠাৎ লেবু খেলে সন্দেহ করতে পারে। তাই লেবুটা রেখে দিলো। শরবতের গ্লাসটাও আড়াল করতেই জান্নাত কাছে আবারো বললো,

কি বানিয়েছো ভাবি? শরবত? কিসের শরবত? রুহ্ আফজা? কিন্তু লেবু কাটা কেন?

কিরণ মাথা নাড়িয়ে আমতা আমতা করতে বললো,

না না! রুহ আফজা না। ওই আসলে তরমুজের। মোহাব্বতি শরবতটা বানানোর চেষ্টা করছিলাম আরকি। প্রথমে ভাবলাম এক গ্লাস বািয়ে দেখি কেমন হয় তারপর সবার জন্য বানাবো।

জান্নাত উচ্ছ্বাসে হাতের ট্রে টা নামিয়ে গ্লাসটা ধরে বলে,

আমি এই শরবতের নামটা খুব শুনেছি। তুমি বানিয়েছো তার মানে তো দারুণ হয়েছে। আমি কিন্তু প্রথমে টেস্ট করে দেখবো কেমন?

কিরণ পরে গেলো মহা ঝামেলায়। কি বলে না করবে এবার? হঠাৎ মাথার ভেতরটা চক্কর দিয়ে উঠছে। বুদ্ধিও লোপ পাচ্ছে বোধ হয়। জান্নাতে কিছু বলার আগেই জান্নাত অর্ধেক গ্লাস বেশ করে বললো,

দারুণ হয়েছে তবে একটু কেমন যেনো লাগলো।

কিরণ জান্নাতের দিকে টুকুর টুকুর করে তাকালো। নিজের বোকামিতে নিজেকে বকে উদ্ধার করার তীব্র ইচ্ছা জাগলো। মনে মনে কয়েকটা গালি দিয়েও ক্ষান্ত হলো না। গাধামির মতো কোনো পুরস্কার থাকলে হয়তো এ বছরের শ্রেষ্ঠ গাধামির পুরস্কার সে নিজেই পেতো। তার জন্য এটাই উপযুক্ত পুরস্কার। হয়তো নয়, অবশ্যই তাই। জান্নাতকে বাকিটুকু খাওয়া থেকে আটকানো প্রয়োজন ভেবে গ্লাস হাতে নেওয়ার আগে জান্নাত বাকিটুকুও খেয়ে নিল। খাওয়া শেষে মনোযোগ দিয়ে গ্লাসের দিকে তাকিয়ে রইলো। হয়তো ভিন্ন স্বাদটা খুঁজছে। ফাঁকা গ্লাসে সে কি সম্ভব? কিরণ অসহায় চোখে জান্নাতে দিকে তাকালো। ডান হাত আপনা আপনি কপালে দিয়ে বলে ওঠে,

স র্ব না শ!

চলবে ~~

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here