অজানা_অনুভূতি পর্বঃ১৩(শেষ_পর্ব)

0
7105

অজানা_অনুভূতি
পর্বঃ১৩(শেষ_পর্ব)
#লেখাঃInsia_Ahmed_Hayat

পাত্র পক্ষের সামনে বসে আছে নৌশিন। এভাবে হুট করে পাত্র পক্ষ তাকে দেখতে আসবে ভাবতে পারছে না। চুপচাপ নিচের দিকে তাকিয়ে আছে। এই নিয়ে ২১ নাম্বার পাত্র পক্ষের সামনে বসা। ২০ টা বিয়ে আগে ভেঙেছে তাই এইবার তার বাবা তাকে না বলেই পাত্র পক্ষ নিয়ে আসলো মনে হালকা রাগ লাগছে। কারও দিকে তাকাবে না সেই সিদ্ধান্ত নিয়ে মাথা নিচু করে আছে। কেউ কিছু বললে জোর গলায় বলে দিবে সে বিয়ে করবে না। অনেক হয়েছে আর না। এতে যদি তাকে বেয়াদব বলে তাতেও তার সমস্যা নেই। বিয়ে করবে না মানে করবে না। অনেক্ষন চুপ থাকার পর।

” তোহ সুন্দরী রমনি মুখটা একটু তোলো। এত লজ্জা পেলে কি হয়”
একজন মহিলা কন্ঠ শুনে অবাক কন্ঠটা পরিচিত পরিচিত মনে হচ্ছে। নৌশিন মাথা উচু করে তাকিয়ে অবাক।

নৌশিনঃ হায়াত (অবাক হয়ে)
সবার দিকে চোখ ভুলিয়ে দেখলো। আদনান, ওর মা বাবা, নানী আর আরহাম এসেছে। সাথে হায়াত নামের ডাইনিটাও এসেছে। নৌশিন ভ্রু কুচকে হায়াতের দিকে তাকিয়ে আছে।

হায়াতঃ জিই আপু আপনার নামটা বলেন তোহ। আমি পাত্রের ছোট ভাইয়ের বউ হায়াত। আপনার ইন্টারভিউ নিতে এসেছি। পাশ করলেও আমাদের বাড়ির বউ না করলেও আমাদের বাড়ির বউ বানাবো।

নৌশিন অবাক চোখে তাকিয়ে আছে। বউ মানে কার বউ একবার আদনানের দিকে তাকালো। আদনান নৌশিন এর দিকে তাকিয়ে আছে। নৌশিনের মা বাবা অনেক খুশি। তাদের একমাত্র মেয়ের খুশির জন্য অনেক কিছু করতে পারে তার উপর এতো বছরেও নৌশিনের মনের কথা বুঝতে পারেনি। আগে জানলে তারা নিজে চেষ্টা করে আদনানের মায়ের সাথে কথা বলতো।

আদনান ও নৌশিন ছাদে দাঁড়িয়ে আছে। আদনান এখনো নৌশিনের দিকে চেয়ে আছে। নৌশিনের অনেক ইতস্ততবোধ হচ্ছে।

নৌশিনঃ আপনি এখানে কি করছেন। আপনি কিভাবে পাত্র পক্ষ হলেন আর আমায় জানালেন না কেন। আর হায়াত কার বউ এর কথা বলল কি হচ্ছে আমি তোহ কিছু বুঝতে পারছি না (এক দমে কথা গুলো বলল)

আদনান হালকা হেসে বলল
আদনানঃ আরে আরে দম নেও মেরি জান। তুমি যে আমার প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছো আগে বলবা না তাহলে কি আর এতো বছর সিংগেল থাকি বলো মিস কলিং বেল।

নৌশিনঃ ভ্রু কুচকে কি বলতে চাচ্ছেন সরাসরি বলুন তোহ।

আদনানঃ তোমার আর আমার বিয়ে তাই এসেছি তোমাকে দেখতে। আর সব কিছু হায়াত করেছে তাই তুমি ওকে জিজ্ঞেস করো। ওকে তোহ এবার নিচে চলো।

নৌশিন কিছু বলল না।নিচে গেলো খাবার দাবার খাচ্ছে সবাই। হায়াত নৌশিনের রুমে গেল। নৌশিন চুপচাপ বসে আছে।

হায়াতঃ হবু বড় ভাবিজি কি এতো ভাবা হচ্ছে হুম বলুন তোহ।

নৌশিনঃ হায়াত কি হচ্ছে এগুলো আমার আর আদনানের বিয়ে মানে।

হায়াতঃ কেনো তুমি কি খুশি হওনি। নাকি এই বিয়েও ভেঙে দিবে যদি ভেঙে দেও তাহলে সমস্যা নেই আরো মেয়ে আদনানকে বিয়ে করার জন্য লাইন ধরে আছে আমি তাদের কাছে বিয়ে প্রস্তাব পাঠাবো। অনেক কষ্টে বিয়ের জন্য রাজি করিয়েছি।

নৌশিনঃ কি বললে তুমি অন্য কারো সাথে বিয়ে দিবে আমিও দেখি কিভাবে দেও। (রাগী দৃষ্টিতে)

হায়াতঃ এর মানে ( হেসে নৌশিনের দিকে তাকালো)

নৌশিন মুচকি হাসলো। হায়াত নৌশিনকে জড়িয়ে ধরলো।
হায়াতঃস্যরি নৌশিন আমি তোমাকে না বলে তোমার ডায়েরি পড়ে ফেলছিলাম। যেখানে তুমি তোমার প্রথম প্রেমে পড়া কলিং বেল বাজানো মেসেজ দেওয়া সব লিখেছিলে।

নৌশিন অবাক হয়ে আছে সে রাগবে নাকি খুশি হবে বুঝতে পারছে না।

হায়াতঃ আচ্ছা সব বুঝলাম ৪ বছর ধরে তার সাথে কন্টাক্ট করোনি কেনো।

নৌশিনঃ আমি ভেবেছিলাম তার মনে অন্য কেউ আছে। আর আমি তাকে নিজ থেকে মেসেজ দিতাম সে আমায় অনেক ইগনোর করতো তাই তার উপর অভিমান হয়েছিলো। শেষ ফলে ওই এলাকা ছেড়ে চলে আসায় ফেসবুক থেকে বিদায় নিলাম। আসলে বিদায় নেইনি ওই আইডি বাদ দিয়ে আরেক আইডি চালাতাম হুহ।

হায়াত মুচকি হাসলো। যাক ওর এই কাজ হয়ে গেলো। হায়াত বুঝতে পেড়েছিলো আদনান ওকে পছন্দ করে তাই এভাবে বিয়েটা ঠিক করলো। আদনানের সাথে কথা বলে আদনানকে রাজি করানো হলো। আদনানের মনে নৌশিনের জন্য অনুভূতি আছে এক অজানা_অনুভূতি সেই অনুভূতিটা হায়াত জানিয়ে দিলো। আর আদনানও নাকোজ করেনি বরং খুশি হয়েছে।

★★★
হায়াত সবাইকে জানিয়ে দিয়েছে ওরা বিয়ে করবে তাও এক সাথে বিয়েতে বর থাকে ৬ জন কনে থাকবে ৬ জন। একদম ইউনিক স্টাইলে বিয়ে। হায়াত অনেক ভেবে এমন আনকমন ভাবে বিয়ে করার প্ল্যান করে। আর তার এই প্রস্তাবে কেউ মানা করেনি।

হায়াত❤️আরহাম, আয়াত❤️আরনাব, আদনান❤️নৌশিন, ইভান❤️অর্পা,ইশান❤️প্রিসা,ইফাত❤️আনিশা

৬ টা জুটির বিয়ে তাও এক সাথে এই বিয়ে দেখার জন্য এলাকাবাসি অপেক্ষা করছে। সাতক্ষীরা থেকে নৌশিনের বাবা মা এসেছে সাথে আত্নীয় স্বজন ও। হায়াত বলেছে বিয়েটা এখানেই হবে হায়াতদের বাড়ি থেকেই ইভান ইশা ইফাত নতুন করে আবার বিয়ের সাঝে সাজবে।

হায়াত বলেছে ছেলে মেয়ে এক সাথেই সব করতে। তাই গায়ে হলুদ, মেহেদী সব এক সাথে করার বন্ধবস্ত করছে আরহাম।

দেখতে দেখতে গায়ে হলুদের দিন চলে আসলো

হলুদে বাসন্তী কালারের শাড়ি পড়েছে কনেরা আর বররা পড়েছে হলুদ পাঞ্জাবি। অনেক মানুষ অনুষ্ঠান দেখতে এসেছে। একটা বড় খোলা জায়গায় অনুষ্ঠান করানো হচ্ছে। আর অনেক বড় খালি জায়গা স্কুল মাঠ ছাড়া হবে না তাই স্কুল মাঠে বড় করে সাজানো হয়েছে। ছেলে পক্ষ মেয়ে পক্ষ সবাই আছে। বিয়েতে আত্নীয় স্বজন, ববন্ধুবান্ধব, কলিগ বিয়েতে আছে।

বেশ কিছুক্ষণ পর পর পর ৬ টা বাইক নিয়ে এন্ট্রি দিলো ছয় জুটি। ছেলেরা বাইক চালাচ্ছে আর মেয়েরা তাদের পেছনে বসে আছে। ক্যামেরা ম্যান নানা এংগেলে ছবি তুলছে আশে পাশের সবাই এই দৃশ্য গুলো ক্যামেরা বন্ধি করছে।

হলুদে স্টেজে বসেছে ছয় জুটি। একে একে সবাইকে হলুদ দিচ্ছে সবাই। এদিকে হায়াত কতো শত ছবি। মাঝে মাঝে ক্যামেরা ম্যান বকছে।

হায়াতঃ আয়াত বেবি।

আয়াতঃ কি হয়েছে।

অর্পাঃ কি হবে সামনে দেখ।

প্রিসাঃ আহা কতো সুন্দর লাগছে হাহাহ।

আনিশাঃ কিসের কথা বলছিস তোরা।

হায়াতঃ নাস্তা থুক্কু নাতাশাকে দেখ। ওর চেহারা দেখে মনে হচ্ছে আয়াতকে চাবিয়ে খাবে।

আরহামঃ এই নাতাশা কি করেছে।

হায়াতঃ এমা আপনি জানেন না। ওফ জানবেন কিভাবে আমি বলি। এই নাতাশা আয়াতকে বলেছে নাতাশা আর আরনাব ভাইয়া নাকি রিলেশনে আছে তাই আয়াতকে বলেছে আরনাবের কাছ থেকে দূরে থাকতে।

ইভানঃ আর তোরা কি করেছিস ওর সাথে।

অর্পাঃ আমরা কি করবো।

ইশানঃ সত্য করে বল তোহ হায়াত কি করেছিস।।

প্রিসাঃ আমরা কি কিছু করতে পারি।

ইফাতঃ হ্যা সব পারিস তোরা বলতো।

আনিশাঃ বাথররুমে লক করে দিয়েছিলাম।

আরনাবঃ মানে কি। কখন কবে কোন বাথরুমে।

হায়াতঃ নাতাশা আয়াতকে বাথরুমে লক করে দেওয়ার প্ল্যান করেছিলো। আর তা আমার কানে বাতাসের গতিতে এসে পড়ে আর আমি যে যেমন তার সাথে তেমন করে দিয়েছি।

আয়াতঃ আর আজ আমায় ও আরনাবকে দেখে মুখ টা কে গরিলার মতো করে রাখছে।

সবাই হেসে দিলো। অনেক রাতে হলুদের অনুষ্ঠান শেষ হলো। ছেলেরা সবাই রাতে ঘুমায়নি কাজ করেছে এরপর শেষ এ গিয়ে একটু ঘুমিয়েছে। সবাই অনেক খুশি। সব ঝামেলার অবসান ঘটে এক হতে যাচ্ছে ছয় ছয়টা জুটি। কারো মনে কারো জন্য কোনো রাগ অভিমান নেই।

পরেরদিন মেহেদীর অনুষ্ঠান রাখলো। হায়াত, আয়াত, আনিশা, অর্পা, প্রিসা,নৌশিন হালকা সবুজ রঙের ডিজাইনার থ্রিপিস পড়েছে। সাথে গর্জিয়াছ সাঝ। হায়াত সবাইকে বলে দিয়েছে। বিয়ে যতবারই হোক অনুষ্ঠানে পার্লারের সাঝ মিস দেওয়া যাবে না।

আয়াত,প্রিসা হায়াতকে মেহেদী পড়িয়ে দিচ্ছে। অর্পা নৌশিনকে, আনিশা নিজেরটা নিজে। সবাই নিজে নিজে মেহেদী পরতে পারে হায়াত বাদে তাই তোহ জোর করে সবার আগে মেহেদী পড়েছে। ছেলেদের আগেই মেহেদী দেওয়া হয়ে গিয়েছে। তাদের হাত ধুয়ে কালকে বিয়ের জন্য কাজে লেগে গিয়েছে।

হায়াত সেই কখন থেকে বসে আছে বিরক্ত হাতের এক কোনাও বাদ রাখেনি সবা যায়গায় মেহেদী দিয়ে রেখেছে। আয়াতের হাত ব্যাথা হয়ে গিয়েছে মেহেদী পড়াতে পড়াতে।

কিছুক্ষন পর
আরহাম হায়াতের পাশে এসে বসলো।
হায়াতঃ কোন চিপায় ছিলেন আপনি আপনার তোহ কোনো দেখাই পাইনি।

আরহামঃ কাজ করছিলাম। তোহ দেখি তোমার মেহেদী।

হায়াতঃ মেহেদীকে সাইডে রাখেন। আগে আমার সাইড ব্যাগটা নিন আর ম্যাংগোবার আছে বের করুন সেই কখন থেকে ম্যাংগোবার খাই না।

আরহাম মুচকি হেসে ম্যাংগোবার ছিড়ে হায়াতকে খাইয়ে দিচ্ছে। এই মেয়েটা এতো ম্যাংগোবার পাগলি।
কিছুক্ষন পর ইভান একটা প্লেটে করে হায়াতের জন্য বিরিয়ানি নিয়ে এসেছে আর তা আরহামের হাতে দিয়ে চলে গিয়েছে। আরহাম হায়াতকে বিরিয়ানি খাইয়ে দিচ্ছে। হায়াত খাচ্ছে এরুর ইশান হায়াতের জন্য পানি দিয়ে গেলো। আর যাওয়ার আগে হায়াতের মাথায় হাত ভুলিয়ে দিলো। অবশেষে তার বোন হ্যাপি তা দেখে তার খুব ভালো লাগছে।

ভাই যতই ব্যস্ত থাকুক বোনের কথা মনে পড়বেই। ইফাত আয়াতকে বিরিয়ানির প্লেট দিয়ে এসেছে।আর আরনাবকে পাঠিয়েছে আয়াতকে খাইয়ে দেওয়ার জন্য।

রাতে সবাই বসে বসে ঝিমাচ্ছে। হায়াত তোহ আড্ডা দিতে দিতে অর্পার কোলেই ঘুমিয়ে গিয়েছে।

আয়াতঃ এ তোহ ঘুমিয়ে গিয়েছে ওকে জাগাও বাসায় যাবো তোহ কালকে সকালে পার্লারে যেতে হবে।

প্রিসাঃ না জাগানোর দরকার নেই।এমনি দৌড়াদৌড়ি করে ক্লান্ত ওকে ঘুমাতে দে। ইভানকে ডাক দে তোহ।

আনিশাঃ আমি ডেকে নিয়ে আসছি।

নৌশিনঃ এর দৌড়াদৌড়ির অভ্যাস যায়নি এখনো। হাহা আমরা গার্লস স্কুলে ছিলাম তখন আর প্রচুর দৌড়াদৌড়ি মারামারি করতাম মনে আছে তোদের।

আয়াতঃএকদম। মনে আছে বৃষ্টির সময় আনিশা পা পিছলে মাঠে পড়ে যায় সবাই সেকি হাসাহাসি।

প্রিসাঃ হ্যা এরপর হায়াত নিজের ইচ্ছায় মাঠে বসে পড়ে এরপর আমরা সবাই বসে পড়ি হাহা।

অর্পাঃহ্যা কতো তারাতারি সময় পার হয়ে গেলো বুঝতেই পারলাম না।

নৌশিনঃ তোমাদের ফ্রেন্ডশীপ দেখে অনেকের হিংসা হতো। ধন্যবাদ তোমাদের আমায় সঙ্গ দেওয়ার জন্য।

আয়াতঃ এখন তোহ দিতেই হবে আমাদের জা বলে কথা।

নৌশিন হালকা লজ্জা পেলো। বাকি সবাই হেসে দিলো।হায়াত হালকা নরে উঠায় সবাই চুপ হয়ে গেলো।

কিছুক্ষনপর ইভান আসলো।
ইভানঃকি হয়েছে।

অর্পাঃ হুসসস আস্তে।

ইভান খেয়াল করলো হায়াত ঘুমিয়ে গিয়েছে। ইভান হায়াতকে কোলে নিয়ে নিলো। আজ অনেক বছর পর নিজের বোনকে কোলে নিলো মনে পড়ে গেলো ছোট বেলার কথা যখন ছোট হায়াতকে কোলে নিয়ে ওর কান্না থামাতো ঘুম পাড়াতো তিন ভাই মিলে।
আজ নিজের বোন বড় হয়ে গিয়েছে বিয়ে হয়ে গিয়েছে। ঘুমানোর কারনে কোলে নেওয়া। হায়াতকে কোলে দেখে ইফাত দৌড়ে আসে।

ইফাতঃ কি হয়েছে ভাই। হায়াত..

আনিশাঃ হুস আস্তে হায়াত ঘুমাচ্ছে।

ইফাতঃ ওহ ঘুমাচ্ছে আমি ভাবলাম বেহুস নাকি।

প্রিসাঃ ঘুম আর বেহুস এর কাছে একই। ডাকাত এসে নিয়ে গেলেও টের পাবে না।

★★★
পরের দিন
৬ জন কনে সেঝে গেট দিয়ে ডুকছে সবাই একই ড্রেস এক সাঝ। আরহাম হায়াতের দিকে চেয়ে আছে। আদনান না চাওয়া স্বত্বেও নৌশিনের দিকে তাকিয়ে আছে।

সবাই গিয়ে বসলো। আদনান ❤️নৌশিন ও আরনাব ❤️ আয়াতের আজকে বিয়ে পরাবে। বিয়ে পড়ানো শুরু করলো।

★★★
আরহামঃ আজ আমাদের বিয়ের এক বছর হলো মোহিনী। আজকে তোমাকে আমি নিজের করে পাবো। ধন্যবাদ আমার জীবনে আসার জন্য।

হায়াতঃ ঠিক আছে। আসে সেল্ফি তুলি।
আরহাম বিরক্ত হয়ে ছবি তুলছে।

হায়াতঃ নীলবাবু থেকে ট্রান্সফার হওয়ায় বরবাবু ম্যাংগোবার খাবেন।

আরহামঃ অফফো আবার ম্যাংগোবার । নাহ খাবো না তুমি খাও।

হায়াতঃ হ্যা হ্যা জানি তোহ এখন আমার ম্যাকাপ নষ্ট হয়ে যাক সেই জন্য আমায় খেতে বলছেন। আমি খাবো না হুহ।

আরহামঃ আচ্ছা আচ্ছা খেও না।

।হায়াতঃকি বললেন খাবো না আমার খাওয়া নিয়েও আপনার সমস্যা। ম্যাংগোবার পছন্দ করি এতেও কিপটামি করবেন ছি ছি ছি।

আরহাম অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। হায়াত জিভ বের করে ভেংচি কেটে চুপচাপ গাল ফুলিয়ে বসে আছে। আর আরহাম ওকে মানানোর চেষ্টা করছে।

★★
ইভানঃ এতো সাঝ দিলা কেন আজকে তোমার আমার প্রথম বিয়ে না। আমাদের বিয়ের এক বছর হয়ে গেলো।

অর্পাঃ আমার কোনো দোষ নেই যা বলার তোমার বোনকে বলো হুহহ।

ইভান ভ্রু কুচকে তাকিয়ে কিছু বলল না।

★★
ইশানঃ এই নিয়ে দুইবার বউ সাঝলা। আমার সব টাকা খালি খরচ করার মধ্যে আছে।

প্রিসাঃএই একদম আমার সাঝ নিয়ে কিছু বলবে। যা বলার তোমার বোনকে বলো।

ইশানঃ হ্যা এখন তোহ আমার বোনের নাম দিবা। যাতে আমি কিল ঘুষি খাই তাই না।

প্রিসা রাগি দৃষ্টিতে তাকালো।

★★
আনিশাঃ ইফাত আমাদের বিয়েটা এতো সুন্দর হবে ভাবিনি। এক সাথে ছয়টা জুটির বিয়ে। ভাবো একবার কতো মানুষ আমাদের দেখতে এসেছে বিনা দাওয়াতে।

ইফাতঃ হ্যা দেখবেই তোহ ছয়টা ডাইনি এক সাথে সেঝে এসেছে তাই দেখতে আসছে। ছয় ডাইনি এক সাথে সাঝলে কেমন লাগে।

আনিশাঃ কি বললা আমরা ডাইনি দাড়াও। হায়াত (ডাক দিলো আর ওমনি ইফাত আনিশার হাতে চিমটি কাটলো) আউচ কি করছো আহ আমার হাত।

ইফাতঃ আমাদের মাঝে হায়াতকে কেনো ডাকছো বলো তোহ।

আনিশাঃ ভিতুর আন্ডা।

★★
আয়াতঃ দুই ভাই এমন এক সাঝ দিলেন কেনো আমার প্যাচ লেগে গেছে।

আরনাবঃ আচ্ছা আর তোমরা যে এক ড্রেস এক সাঝ দিয়েছো আমি কি কিছু বলেছি।

আয়াতঃ ঢং এতো সুন্দর করব ব্রাইডাল সাঝ দিলাম কোথায় আমার প্রশংসা করবে তা না করে ঝগড়া শুরু করেছো।

আরনাবঃ আমি ঝগড়া করি না ঝগড়া তুমি করছো ঝগড়াটে দলের মেম্বার।

আয়াতঃ তোমায় একবার একা পাই সিব সুদে আসলে মিটিয়ে দিবো।
আরনাব ঢোক গিলল।

★★
নৌশিনঃএভাবে ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে আছেন কেনো। আমার দিকে নজর দিবেন না। আমি জানি আমাকে অনেক সুন্দর লাগছে।

আদনানঃ ইশ আসছে সুন্দরী আস্ত একটা ডাইনি লাগছে তোমায়।

নৌশিনঃ কি বললেন ডাইনি। হ্যা হ্যা এই ডাইনিকেই আপনি বিয়ে করছেন কিছু করার নেই। আর হ্যা আমার হাতের রান্নায়ই আপনার খেতে হবে তাই বুঝে বুঝে শুনে কথা বলবেন কারন সবজির মধ্যে করলাও আছে লাল মরিচও কাচা মরিচও আছে হুহ।

আদনান ভ্রু কুচকে আছে। নৌশিন মিটিমিটি হাসে।

অতপর ছয়জন জুটি এক সাথে ছবি তুলল।
অবশেষে সব মান অভিমান রাগ দুঃক্ষ কষ্টের অবসান ঘটে। যার যার মনের অজানা_অনুভূতি টাকে জেনে এক সাথে পথ চলার প্রতিজ্ঞা করল। ভাই বোনের ভালোবাসা। বান্ধুবিদের নিয়ে ঝগড়া করা ঘুরাঘুরি। ভালোবাসার মানুষকে নিয়ে এক সাথে পথ চলা নিয়েই বেচে থাকুক হায়াত ও ওর কাছের মানুষ গুলো।

❤️❤️❤️❤️❤️❤️সমাপ্ত ❤️❤️❤️❤️❤️❤️

(অবশেষে শেষ হলো অজানা অনুভূতি গল্পটা। যেভাবে শেষ করতে চেয়েছি ওভাবে হয়নি জানি না আপনাদের কাছে কেমন লেগেছে আপনাদের জন্য হ্যাপি এন্ডিং দিলাম। সবাই গঠনমূলক মন্তব্য করবেন। কেমন লেগেছে আপনাদের মতামত জানাবেন কেউ দয়া করে স্টীকার কমেন্ট করবেন না। ধন্যবাদ ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন আর হায়াতকে মনে রাখুন। আল্লাহ হাফেজ)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here