অজানা_অনুভূতি পর্বঃ৪

0
5898

অজানা_অনুভূতি
পর্বঃ৪
#লেখাঃInsia_Ahmed_Hayat

হায়াতঃ চড়ুই পাখি বারোটা..

আরহামঃ চড়ুই পাখি বারোটা নাকি পনেরোটা তা দিয়ে আমি কি করবো গেম এর কথা বলো।

হায়াতঃ আরে নীলবাবু চড়ুই পাখি বারোটা খেলবো হুহ।

আরহামঃ এটা আবার কি খেলা।

হায়াতঃ আরে বাহ এই খেলা জানে না খুব সুন্দর করে গাধা বানানো যাবে( মনে মনে) ছি ছি ছি নীলবাবু এই খেলা সম্পর্কে জানেন না। ছি

আরহামঃ তোমার হয়েছে নাকি আরো ছি ছি করবা।

হায়াতঃ হ্যা হয়েছে( এই বলে মেঝেতে বসে পড়লো) নীলবাবু এদিকে আসেন (মেঝেতে বসার জন্য বলল)

আরহাম ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছে।
হায়াতঃ কি হলো হেরে যাওয়ার ভয়ে লুকানোর প্ল্যান করছেন বুঝি।

আরহাম উঠে সোফা থেকে উঠে মেঝেতে বসলো।
আরহামঃ জিই না আরহাম চৌধুরী ভয় পায় না। আর হেরে যাওয়ার ভয়ে লুকানোর মতো ছেলে আমি নই। খেলেটা কিভাবে খেলবো সেটা বলো।

হায়াতঃ ঠিক আছে শুনেন খেলার আগে শর্ত দিতে হয় আর শর্ত সব সময় মেয়েরাই দেয় বুঝলেন।

আরহামঃ এই খেলার নিয়ম টা বানালো কে।

হায়াতঃ সেটা বড় কথা নয় আসল কথা হলো খেলা খেলে জিতা। তোহ শর্ত দিবো আপনি রাজি তোহ।

আরহামঃ অবশ্যই রাজি শর্ত কি বলো।

হায়াতঃ খেলায় যে জিতবে সে যা বলবে তাই করতে হবে। রাজি।

আরহামঃ একটু ভেবে বলল হুম রাজি। তোহ শুরু করো কিভাবে খেলবা। কীভাবে খেলে।

হায়াত আরহামের হাত মেঝেতে রাখতে বলল হায়াতও রাখলো এরপর শুরু করলো।
হায়াতঃ চড়ুই পাখি বারোটা ডিম পেরেছে তেরোটা একটা ডিম নষ্ট চড়ুই পাখির মনে বড় কষ্ট । চড়ুই পাখি বারোটা…. ( হায়াত খেলছে আরহাম হাবলার মতো অবাক চোখে তাকিয়ে আছে হায়াতের দিকে। মানে কি বলবে ভাষা খুজে পাচ্ছে না আরহাম।)

হায়াতঃ ইয়েএএএএএস জিতে গিয়েছি লালালালালালালালালালালালালালালালায়াল।লুলুলুলুলুলুলু

আরহাম অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।
আরহামঃ এক মিনিট এক মিনিট এটা কি হলো কি খেলা কেমন খেলা কিভাবে জিতেছো কিছুই তোহ বুঝলাম না (ভ্রু কুচকে)

হায়াতঃ হ্যা হ্যা এখন তোহ বুঝবেনই না আমি যে জিতে গিয়েছি। এখন নানান কাহিনি বানাবেন হুহহ।

আরহামঃ না মানে আসলে তুমি জিতে গেলে (অবাক হয়ে) কিভাবে হলো।

হায়াতঃ বলেছিলাম না আমার সাথে কেউ পারে না (ভাব নিয়ে) তোহ এবার শর্ত অনুযায়ী যা বলবো তাই শুনতে হবে আপনাকে ওকে।

আরহামঃ ঠিক আছে।(ভ্যাবাচেকা খেয়ে)

হায়াতঃ আমরা যে আইসিটিতে ফেইল করেছি তার জন্য আমাদের পাচ জনকে কোনো শাস্তি দিবেন না।

আরহামঃ অহ এই ব্যাপার এই চালাকি করেছো তাই না। কোনো ছাড় নেই।

হায়াতঃ না নীলবাবু এটা ঠিক না। আর ছি ছি আরহাম চৌধুরী নিজে কথা দিয়ে কথা রাখে না। আমি তোহ ভেবেছিলাম সে কতো ভালো কতো মিষ্টি আর এখন তোহ দেখি সে একজন…

কিছু বলতে পারল না আরহামের ফোন বেজে উঠলো। আরহাম ফোন চেক করে মুচকি হাসলো
আরহামঃ ঠিক আছে এইবারই লাস্ট কিছু বলবো না।
এই বলে আরহাম ফোন নিয়ে নিজের রুমে চলে গেলো।হায়াত আরহামের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে এরপর হেসে দিলো। অবশেষে নীলবাবুকে শাস্তি না দেওয়ার জন্য পটিয়েই ফেললো।

এরপর অর্পা আসলো হায়াতেরা চলে গেলো।
পরের দিন কলেজে
আনিশাঃ আজ তোর কারনে দেরি হয়েছে হায়াত। ভাগ্য ভালো লেট হওয়ার ফাইন দিতে হলো না।

প্রিসাঃ ঠিক আছে গাল ফুলিয়ে লাভ নেই নিজে দেড়ি করেছো।

হায়াতঃ তোরা আমার বান্ধুবি নাকি দুশমন হ্যা। ঘুম থেকে উঠে ব্রাশ করছিলাম লেট হবে বলে যেইভাবে আছি ওইভাবেই উঠিয়ে নিয়ে এসেছিস। এখন সবাই হাসাহাসি করছে। মুখও ধুতে দিলি না তোরা দেখিস তোদের কপালে…

আনিশা,প্রিসা,অর্পাঃআমাদের কপালে তোর ভাইরা পড়বে।(এক সাথে বলল)

আয়াতঃ আচ্ছা এই ক্লাস শেষ হতে ৪ মিনিট বাকি হায়াত ফাতেমা ম্যাম এর কাছ থেকে ফেসওয়াস আর চিরুনি নিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসিস।

★★
হায়াত ফ্রেশ হয়ে চুলে চিরুনি করে ম্যামকে ফেরত দিয়ে দৌড়ে সিড়ি দিয়ে উঠতে গিয়ে পায়ের সাথে পা লেগে পড়ে যাচ্ছিলো। হায়াত টের পেলো যে সে কারো বুকের উপর পরলো।গায়ে থেকে সুন্দর স্মেল আসছে।হায়াতের চুল খোলা হওয়ায় সব চুল মুখের উপর এসে পড়লো আর পুরো পিঠ জুড়ে চুল ছড়িয়ে আছে।
হায়াত নিজেকে সামলিয়ে সরে দাড়িয়ে তাকালো।একটি ছেলে নতুন স্যার নাকি এই ভেবে বলল
হায়াতঃ অপ্স স্যরি স্যরি আমি ইচ্ছে করে করিনি । পায়ের সাথে পা লেগে পড়ে গিয়েছে (এই বলে খোপা করতে করতে চলে যাচ্ছিলো)

ছেলেঃ তোমাকে খোলা চুলে বেশ লাগে।
হায়াত দাঁড়িয়ে গেলো বলে কি চেনা নাই জানা নেই আর কি বলল রেগে উত্তর দিবে তার আগেই।

ছেলেঃ হ্যালো হ্যা শোনা যাচ্ছেনা বলেছি তোমাকে খোলা চুলে বেশ লাগে তাই চুল খোলা রাখো।(কানে ব্লুটুথ লাগানো তাতে হাত রেখে বলল।এই বলে হেটে সিড়ি বেয়ে নিচে নেমে চলে গেল)

হায়াতঃঅবাক হয়ে নিজের মাথায় নিজেই টোকা দিল অফফো হায়াত তুইও না সব সময় রেগে যাস। ওই ছেলে তোহ ফোনে কথা বলছে।একটা ধন্যবাদও দিলি না ভাগ্য ভালো উল্টো পালটা কিছু বলিসনি নিজের মুখ খুললে তোহ যা নয় তাই বলে বেরাস। আর ছেলেটাকে কোথায় কোথায় যেনো দেখেছি।

হায়াত উপরে উঠে ক্লাসে যেতে যেতে একবার মাঠের দিকে তাকালো। ওই ছেলেটা গাড়িতে উঠছে।
হায়ায়ঃআরে এতো হ্যা এবার মনে পড়েছে। এতোহ

আয়াতঃআদনান চৌধুরী।

হায়াতঃ তুই এখানে

আয়াতঃ তোকে খুজতে আসছিলাম।

হায়াতঃহ্যা আয়াত এই আদনান এখানে কি করছে।

আয়াতঃ আমাদের নেতার ছেলে তার উপর এর বাবাও আমাদের কলেজের ট্রাস্টি। আর এইবার ইলেকশনে দাঁড়িয়েছিলো আর জিতেছেও ওই যে মনে নেই আমরা যে এদের কারনে দেয়ালের উপর দিয়ে গিয়েছিলাম।

হায়াতঃ হ্যা মনে আছে। জানিস কিছুক্ষন আগেই তোহ এর সাথে আমার দেখা হলো আমাকে নাক ফাটা থেকে বাচিয়েছে।

আয়াতঃভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছে।
।হায়াত সব বলল। এরপর আয়াত কিছুক্ষণ হায়াতকে বকা দিয়ে ক্লাসে চলে গেলো।

সন্ধ্যায়

অর্পাদের বাড়িতে পার্টি চলছে। হায়াতেরা এসে পড়েছে।

আয়াতঃ অর্পা স্যারদের তোহ দেখছি না।

অর্পাঃ দেখবি কিভাবে দুই চিপকু আসছে আর আমার ভাইদের কোন চিপায় নিয়ে গিয়েছে কে জানে।

হায়াতঃ মানে কোন চিপায় কার চিপায় আর চিপকুটা আবার কে।

আয়াতঃ আরনাবও কার সাথে গিয়েছে( মুখে হালকা রাগী ভাব)

অর্পাঃ খুজে দেখ তোরা আমি ইভান এর কাছে যাচ্ছি।

আয়াতঃ আমি একটু ঘুরে আসি।

আনিশাঃ অর্পা তোহ ইভানের সাথে গেলো। ইফাত যে কেনো আসলো না ধ্যাত।

প্রিসাঃ তোর কি ইফাতের কথা মনে পড়ছে নাকি অনেক।

আনিশাঃ না তা পড়বে কেনো মনে তোহ তোরই একা পড়ে।

হায়াতঃ ধূর তোরা ঝগড়া কর আমিও ঘুরে আসি।

হায়াত দৌড়ে যাচ্ছিলো হঠাৎ কারো সাথে ধাক্কা লাগে।
হায়াতঃ অপ্স স্যরি স্যরি আপু আমি দেখি না।(একটা মেয়ের সাথে ধাক্কা লাগলো আর তার হাতের গ্লাসের সব জুস মেয়েটার ড্রেসে পড়ে গেলো)

মেয়েঃ এই মেয়ে কি করলে এটা আমার ড্রেসটা নষ্ট করলে জানো এই ড্রেসের দাম কতো।

হায়াতঃ দুঃক্ষিত আপু আমি ইচ্ছে করে করিনি।

মেয়েঃ তুমি ইচ্ছে করেই আমার উপর জুস ঢেলে দিয়েছো। তোমাদের মতো মেয়েদের আমার চেনা আছে। যতসব লো ক্লাস ক্ষেত কোথা থেকে যে আসে। আমার জুতাও তোমার ৫০ ড্রেস থেকে দামি। এই ড্রেসটা আমি ২০ হাজার টাকা দিয়ে কিনেছি তা তোমাদের মতো মেয়েরা কখনোই পারবে না।ছোটলোক কোথাকার

হায়াতঃ আপু আপনি কিন্তু বেশি বারাবাড়ি করছেন সামান্য জুস পড়ে যাওয়ায় এতো রিয়েক্ট করার কিছুই নেই। আর হ্যা আমি আপনাকে জিজ্ঞেস করিনি আপনার ড্রেস কতো বা জুতা কত। বেশি বড়লোকি দেখাতে গিয়ে ছোটলোকের কর্মকাণ্ড করে ফেলছেন।

মেয়েঃ কি বললে আমি ছোট লোক।(বলেই কেদে দিল) আরহাম দেখলে এই মেয়ে আমাকে ছোট লোক বলল

হায়াত পেছন ফিরে দেখলো আরহাম এদিকেই আসছে। মেয়েটা আরহামকে জরিয়ে ধরলো।

আরহামঃ কি হয়েছে জেসিকা। কাদছো কেনো

জেসিকাঃ এই মেয়েটা আমাকে ছোটলোক বলেছে আর ইচ্ছে করে আমার ড্রেসে জুস ফেলে দিয়েছে।

হায়াত কিছু বলতে যাবে তার আগেই।
আরহামঃহায়াত তোমার কাছ থেকে আর কি আশা করা যায়। অনেক বেশি বেয়াদব হয়ে গেছো। কার সাথে কেমন ব্যবহার করতে হয় ভুলে গিয়েছো। নিজেকে কি ভাবো তুমি।

হায়াতঃ স্যার একবার আমার কথাটা…

আরহামঃ চুপ (ধমক দিয়ে) তোমার কথা শোনার সময় নেই মুখে যা আসে তাই বলে ফেলো। জেসিকা লন্ডন থেকে এসেছে ওর নকেরও যোগ্য না তুমি আর আসছো ওকে ছোট লোক বলতে। পার্টিতে আসছো ফ্রেন্ডসদের সাথেই থাকো জেসিকার পেছনে পড়ে আছো কেনো।(রেগে বলে চলে যাচ্ছিলো)

এইদিকে জেসিকা সয়তানি হাসি দিয়ে ভেংচি কেটে আরহামের সাথে চলে যাচ্ছে। হায়াত এখনো অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।

হায়াতঃলোকটা এমন কেনো কোনো কিছু বলার সুযোগই দিলো না। আর হায়াত তুই কেনো চুপ আছিস। (হায়াত কিছু ভেবে দুইটা জুসের গ্লাস নিয়ে আরহামের সামনে দাড়ালো)

জেসিকাঃ এই মেয়ে এখানে আমাদের সামনে আসছো কেনো। লজ্জা নেই কিছুক্ষণ আগে আরহাম যা বলল ভুলে গিয়েছো আসলে তোমাদের মতো মেয়েদের লজ্জা বলতে কিছুই নেই।

হায়াত হালকা হেসে একটা গ্লাসে জুস সবটা জেসিকার মুখে ছুড়ে মারলো। এতে জেসিকাসহ আরহাম আর আশেপাশের সবাই অবাক।

আরহামঃ তোমার… (আর কিছু বলার আগেই হায়াত আরেকটা গ্লাসের জুস আরহামের মুখের উপর মারলো।)
এইবার সবাই অবাক হয়ে চেয়ে আছে। আশেপাশে তেমন মানুষ ছিলো না। যারা ছিলো তারা পরিচিত। আয়াত হায়াতের পাশে এসে দাড়ালো। রাগে আরহামের মাথা ফেটে যাচ্ছে।

হায়াতঃ কাউকে কিছু বলার আগে ভেবে নিবেন কাকে কি বলছেন। কাউকে কিছু বলার সুযোগ দিতে হয় কথাটা আপনিই আমায় বলেছিলেন অথচ আপনিই মানেননি। যাইহোক আপনার এই হাইক্লাস জেসিকা প্রথমে আমায় ছোট লোক বলেছে ভুল করে জুস ড্রেসে পড়েছিলো তাতে আমি স্যরিও বলেছি।কিন্তু আপনি আমার কথা না শুনে এক তরফা কথা শুনে আমায় যা নয় তাই বলে দিয়েছেন। আর হ্যা কার যোগ্যতা কতটুকু তার সিদ্ধান্ত নেওয়ার আপনি কে হন। বিদেশ থেকে পড়ে এসেছেন অথচ ব্যবহার কিভাবে করতে হয় তা কি ওইখানেই রেখে এসেছে। কোনটা ভুল আর কোনটা সঠিক তার কি কোনো জ্ঞ্যান নেই আপনার। অন্ধের মতো কাউকে বিশ্বাস করবেন না দেখা যাবে একদিন ঠকে যাবেন।

এই বলে হায়াত বাহিরে চলে গেলো প্রচুর রাগ লাগছে। সামান্য একটা ব্যাপার নিয়ে এতো কাহিনি করলো। হায়াত বাগানের সাইডে গিয়ে বসল।

এইদিকে আরহাম নিজের রুমে বসে আছে পাশেই জেসিকা বসে আছে। আর নেকা কান্না করছে।
জেসিকাঃ আরহাম ওই মেয়ে আমাদের এতো অপমান করলো আর তুমি কিছু বললেনা কেনো। তুমি কি আমায় অপমান করানোর জন্য এখানে আনিয়েছো(কাণ্ণা করতে করতে।)

আরহামঃ জেসিকা আমাকে একা থাকতে দাও প্লিজ।

জেসিকাঃ কিন্তু।

আরহামঃ দেখো জেসিকা আমি আর এইবিষয়ে কথা বলতে চাচ্ছি না। তুমি নিচে যাও আমি আসছি।

জেসিকা চলে গেলো।

★★
আরনাব আয়াতের সাথে দাঁড়িয়ে আছে।
আরনাবঃ হায়াত এমনটা না করলেও পারতো।

আয়াতঃ কি বলতে চাচ্ছেন দোষ হায়াতের শুনুন মিস্টার আরনাব চৌধুরী আমার বোন কখনো কোনো ভুল কাজ করে না। আপনার ভাই না বুঝে আমার বোনকে কথা শুনিয়েছে আর আমার বোন তার জবাব দিয়েছে।

আরনাবঃ আমি জানি আয়াত কিন্তু তুমি ভাইকে চিনো না ভাই জেসিকার জন্য সব করতে পারে। জেসিকাকে ভালোবাসে আরহাম ভাই।

আয়াতঃ ভালোবাসা ঠিক আছে কিন্তু অন্ধ ভালোবাসা কখনোই ঠিক না। এতে করে আমরা ভুল কোনটা আর সঠিক কোনটা ভুলে যাই যা আপনার ভাই করছে।

এই বলে আয়াত চলে গেলো। আরনাব আয়াতের বলা কথা গুলো ভাবছে।

আনিশাঃ হায়াত কোথায়।

অর্পাঃ জানি না কোথায়। এতো বড় ঘটনা ঘটলো আর আমি দেখলাম না। ভাগ্য ভালো বড়রা আর ইভান দেখেনি।

প্রিসাঃ দেখবে কিভাবে ঘটনাটা পুল সাইডেই হয়েছে সেখানে আমরা ছাড়া তেমন কেউ ছিলো না।ওই মেয়ে কি যেনো নাম।

আয়াতঃ জেসিকা।

প্রিসাঃ হ্যা জেসিকার চিল্লাচিল্লি শুনে ওইদিকে গিয়ে দেখি হায়াত কথা শোনাচ্ছে আরহাম স্যারকে। স্যারের চেহারাটা দেখেছিস।

অর্পাঃ এই প্রথম কেউ ভাইয়ার সাথে এমন করেছে। না জানি এর ফল কি হয়।

আয়াতঃ কি হবে তোর ভাই এরও দোষ আছে। অন্ধ ভালোবাসা ভালো নয়।( আয়াত রেগে চেয়ারে গিয়ে বসলো)

এরপর সবাইকে সবটা বলল। প্রিসা,আনিশা,অর্পা টেনশনে আছে। হায়াতকে আপাতত একা থাকতে দেওয়া উচিত।

অর্পাঃ এই ব্যাপারটা ইভানকে কোনো ভাবেই জানতে দিবি না।

আয়াতঃ ইভান ভাইয়া কোথায়। আরনাব যদি বলে দেয়।

অর্পাঃ সুযোগ নেই বলার ওইযে দেখ এক চিপকু এসে পড়েছে।
আয়াত অর্পার কথায় তাকালো। আরনাব একটা মেয়ের সাথে হেসে হেসে কথা বলছে তা দেখে আয়াতের গা জ্বলে যাচ্ছে। কেন এতো রাগ লাগছে জানে না আয়াত। রাগে কটমট করে অন্য দিকে চলে গেলো আয়াত। যাতে এদের দিকে চোখ না পড়ে।

★★ কিছুক্ষন পর
আয়াত খেয়াল করলো মেয়েটা আরনাবের কাছ থেকে চলে গিয়েছে তাই তারাতাড়ি আরনাবের কাছে আসলো আয়াত।

আয়াতঃ আরনাব

আরনাবঃ আরে আয়াত তুমি হ্যা বলো

আয়াতঃ আসলে ওই মেয়েটাকে যার সাথে আপনি কথা বলছিলেন।

আরনাব ভ্রু কুচকে বলল
আরনাবঃ সেটা যেনে তুমি কি করবে। আর মেয়েটার নাম জেনি। আর হ্যা এইটা জিজ্ঞেস করার জন্য এখানে এসেছো।

আয়াতঃ না আসলে বলছিলাম…

আর কিছু বলার আগেই জেনি নামের মেয়েটা আরনাবকে টেনে নিয়ে গেলো। আয়াত আরনাবের যাওয়ার দিকে এক ধ্যানে তাকিয়ে আছে।

★★
হায়াত বেঞ্চের উপর বসে আছে চুপচাপ মনটা অনেক খারাপ। কেন জানি আরহামের কথায় অনেক বেশি কষ্ট পেয়েছি।

“হেই মিস লম্বা চুলওয়া সুন্দরী” কারো কণ্ঠ শুনে পাশে তাকালো হায়াত।

হায়াতঃ অবাক হয়ে আমাকে বলছেন। আপনি এখানে? আপনি তোহ।

“আমি আদনান চৌধুরী”(আদনান)

হায়াতঃ হ্যা আপনাকে তোহ আমি চিনি। কলেজে তোহ আপনার সাথে ধাক্কা খেয়েছিলাম। আর হ্যা তার জন্য ধন্যবাদ।

আদনান হাসলো।

হায়াতঃ আব আপনি এখানে। আপনাকে তোহ পার্টিতে দেখলাম না।

আদনানঃ আমি মাত্র এসেছি। আসবো না কেনো আফটার অল আমার ছোট বোনের বার্থডে বলে কথা।

হায়াতঃ ছোট বোন মানে (অবাক হয়ে)

আদনান আবারো হাসলো।
হায়াতঃ বলুন অর্পা আপনার বোন হয় কিভাবে।

আদনানঃ বলবো একদিন। আচ্ছা তুমি এখানে একা বসে আছো যে মন ভালো নেই নাকি।

হায়াতঃ না তেমন কিছুই না একা থাকতে ইচ্ছে করছিলো।

আদনানঃ তুমি কিন্তু খুব সুন্দর করে দেয়ালের উপর দিয়ে হাটতে পারো

হায়াত কিছুক্ষন তাকিয়ে ছিলো এরপর দুজনেই হেসে দিলো।

” হায়াত” কারো ডাকে দুজনের হাসি থেমে গেলো।

হায়াতঃ ইভান ভাইয়া।

ইভান কাউকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে হায়াতের কাছে এসে ওকে টেনে আদনান এর কাছ থেকে নিয়ে যাচ্ছে। এমন ব্যবহার এ হায়াত আর আদনান দুজনেই অবাক হয়ে গেলো।

হায়াতঃ ইভান ভাইয়া হাত ছাড়ো আমার।

ইভান হায়াতের কোনো কথা না শুনে অর্পাদের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে বাকিদের নিয়ে রৌনা দিলো বাসার উদ্দেশ্যে।
ইভানের এমন কাজে সবাই অবাক।

চলবে

(একবার লিখেছিলাম ডিলিট হয়ে গিয়েছিল তাই আবার লিখতে দেরি হয়েছে। আর কেমন হলো জানাবেন। আর বর্তমান যলদি আসবে একটু অপেক্ষা করুন হুট করেই তোহ আর বর্ত্মানে আনা যায় না আগে ওদের বিয়ের বিষয় পর্যন্ত আসি। যাইহোক ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন হ্যাপি রিডিং)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here