অদ্ভুত_মেয়ে Part – 10
writer – #Nur_Nafisa
.
.
বিকেলে শপিং করে আপুর সাথে বাসায় ফিরছিলাম CNG তে করে। সাথে একজন মহিলা ও ছিল।
আন্টি- তোমরা কি ২ বোন? চেহারা অনেকটা মিল আছে!
আমি- না আমরা নানি-নাতনি ?
আপু- ??
আন্টি- হাহাহা…. তোমার নাম কি? (আপুকে উদ্দেশ্য করে)
আপু- শান্তা।
আন্টি- তোমার বাসা কোথায়? তুমি কিসে পড়? তোমার কি বিয়ে হইছে?
আমি- ?
আপু- ? না, আমা…
আমি- ওর বাসা মাটির উপর। ও টেবিলে পড়ে, আর ওর বিয়ে হয় নি, বিয়ে দিবো। আপনি আপনার ছেলের জন্য পাত্রী খুজছেন?
আন্টি- না, মানে, আসলে…. হ্যাঁ।
আমি- আপনার ছেলের নাম কি? বাসা কোথায়? কি করে? শিক্ষাগত যোগ্যতা কতটুকু? বয়স কত? ওজন কত? উচ্চতা কত? রক্তের গ্রুপ কি?
আন্টি – এত প্রশ্ন একসাথে করলে উত্তর দিব কিভাবে?
আমি- যেমনটা আপনি করেছিলেন, আমিও করলাম ?। তাছাড়া আমাদের এতো সময় নেই আমরা বাসার কাছে এসে পড়েছি ?।
গাড়ি থেকে নেমে পড়লাম। আপু ভাড়া দিচ্ছে আর আমি,
আমি- আন্টি রাস্তায় রাস্তায় পাত্রী খোজার দরকার কি! রাস্তার পাশে দেয়ালে লিফলেট লাগিয়ে দিন। যার পছন্দ হবে সে যোগাযোগ করবে। ?
আন্টি – কি #অদ্ভুত_মেয়ে রে বাবা! ?
আপু- ????
আমি- ????
.
হাসতে হাসতে ২বোন বাড়িতে ঢুকলাম।
মা- কিরে এমন হাসছোস কেন তোরা।
আপু- মা তোমার মেয়ের কান্ড দেখে হাসছি ???
মা- কেন কি হয়েছে?
আমি- তোমার বড় মেয়ের বিয়ে ঠিক করে আসলাম ??
মা- কিহ!!
আপু মা কে সব বলল।
মা- এজন্য মেয়েদের একা বাইরে যেতে দেওয়া হয় না। আজকালের মহিলা গুলো ও যত্তসব! ?
আমি- আমরা ২ জন ছিলাম মা?। আর ভুলে যাও কেন, তুমি ও মহিলা ??
মা- তাই বলে আমি এমন!! ??
আমি- না, তুমি তো আমার মায়ের মতো ??
.
অন্যদিকে,
ইমরান ভাইয়া সন্ধ্যার সময় বাসায় এসে,
ইমরান – চাচি, হিমা, হিয়া, রেহান কোথায়?
মেঝ মামি- ওরা সেই কখন থেকে থেকে সাজগোজ নিয়ে পড়েছে! ?
ইমরান – ওহ এই মেয়ে গুলো ও পারে! ? (চিতকার করে) হিমা, ৫ মি এর মধ্যে তারাতাড়ি আয়, না হলে রেখে চলে যাবো।
রেহান – ভাইয়া আমি রেডি ?
ইমরান – হুম এই না হলে আমার ভাই! ☺️
ইফাজ (ইমা আপুর ছেলে) – মামা, আমিও লেদি ?
ইমরান – ওরে ইফাইজ্জা কত্ত সুন্দর লাগছে! ??
ইমা- আমিও রেডি।
হিমা, হিয়া (দৌড়ে এসে)
হিমা- ভাইয়া দাড়াও, আমার মেকআপ টা একটু বাকি।
হিয়া- ভাইয়া দাড়াও, আমি যাস্ট, লিপস্টিকটা দিব।
ইমরান- ??? অই রূপসীরা, দাড়া! এই রাতের অন্ধকারে তোদের কোন রূপক এসে দেখবো, বলতো আমাকে! ?? একটাকে ও নিবো না আমি।
হিমা, হিয়া- ভাইয়া প্লিজ, এখন ই আসছি।
ইমরান – আপু আমার জামা-কাপড়ের ব্যাগটা গুছিয়েছো?
ইমা- হুম সব ঠিক করে রেখেছি। তা সারপ্রাইজটা তো রাত ১২টার পর দিবো। তা এখন গিয়ে থাকবো কোথায়?
ইমরান – সেই চিন্তা বাদ দাও, শান্তাকে আমি কল করে বলে রেখেছি, ও সব ব্যবস্থা করে রাখবে।
ইমা- ওকে।
হিমা, হিয়া – ভাইয়া চল, আমরা রেডি।
ইমরান – হুম পেত্নিরা চল। রাস্তায় আবার আমার ঘাড় মটকাস না।?
সবাই – ???
হিমা, হিয়া – ???
ইমরান – আম্মু আমরা আসি, আল্লাহ হাফেজ ?
মামি- সাবধানে যাস, আল্লাহ হাফেজ ?
.
আমি- মা এতো বড় পাতিলে রান্না কর কেন?
মা- বড় পাতিলে রান্না করলে নাকি বেশি মজা লাগে তাই।
আমি- তাই বলে এতো খাবার কে খাবে? নষ্ট হবে তো। জানোনা, অপচয় কারী শয়তানের ভাই , আর তুমি তো শয়তানের বোন হয়ে যাবা।?
মা- কেন আমরা খাব। আর বেশি হলে কাল পর্যন্ত খাব।
আমি- বাসি খাবার খেতে হবে! ?
মা- সবসময় তাজা খেতে হবে এমন তো কোনো কথা নেই। যা গিয়ে পড়তে বস।
আমি- হুম যাচ্ছি, আর আমি তোমার বস না, তোমার মেয়ে ??
.
ডিনার করে ঘুমিয়ে পরলাম।
হঠাৎ করে মনে হলো বাজ পড়ল! আমি ধরফরিয়ে উঠে পড়লাম।
ও মা…… ??? এ তো বাজ পড়ার শব্দ না, এই শয়তানগুলো একসাথে চিতকার করে উঠেছে! ইচ্ছা করছে সবাইকে গলা টিপে মেরে ফেলি?
ইমরান – কিরে কেমন সারপ্রাইজ দিলাম!!
আমি- ইচ্ছে করছে সবাইকে কুপিয়ে মারি। আমার ঘুমটাকে ভেঙে দিলা কেন!! আর তোমরা এখানে কেন??
হিমা- আপু, সন্ধ্যা থেকে ছাদে বসে মশার কামড় খাচ্ছি। আর এখন তুমি মেরে ফেলতে চাচ্ছো!?
আমি- সন্ধ্যায় আসছোস? তাহলে আমি দেখিনি কোনো!
ইমা- কারণ তুই তখন স্টাডি রুমে পড়ছিলি।
রেহান – আপু চল তো, এখন ছাদে চল।
আমি- কেন? ছাদে কেন?
শান্তা- গেলেই তো দেখবি।
আমাকে টেনে ছাদে নিয়ে আসলো,
আমি- ?????????
ছাদের একপাশে বেলুন আর কেন্ডেল দিয়ে সাজানো, আর একটা টেবিলে ২পাউন্ডের ১টা কেক রাখা আছে। পিছন থেকে সবাই, ” Happy Birthday, Nafisa! Happy Birthday to you!! ”
আমি- আমার জন্মদিন তো কালকে, তাহলে আজকে এসব কেন?
ইমরান ভাইয়া আমার মাথায় টোকা দিয়ে মোবাইল সামনে ধরলো,,,
ইমরান- দেখ তো এখন কয়টা বাজে! রাত ১২ টা ২৩ বাজে। তারমানে আজই তোর জন্মদিন। ১২টা ১ এ সারপ্রাইজ দিতে চাইছিলাম, তোর পেচালের জ্বালায় পারলাম না?
ইফাজ- খালামনি কেক কাতো, আমি কাবো।
আমি- ?ওকে ইফু, চলো☺️
তারপর কেক কাটলাম, ১মে বাবা-মা কে খায়িয়ে তারপর সবাইকে খাওয়ালাম। সবাই মিলে অনেগুলো সেল্ফি তুললাম।
ইমরান – এবার রাগ ভাঙছে আপনার। খুব তো রাগ দেখিয়ে চলে আসলেন, আপনি ২ দিন থাকছেন আমরা কিন্তু ৭ দিন থাকবো।
আমি- আমি রাগ করলাম কখন! আর নাফিসা কারো সাথে রাগ করে কোনো কাজ করে না। ?
শান্তা আপু ছাড়া সবাই- কিইইইইইই!
শান্তা- জ্বি, নাফিসা এমন ইইইইই।??
ইমরান – আগে জানলে তো এমন কিছুই করতাম না। তাছাড়া নাফিসা ১টা ধন্যবাদ ও দিলো না!??
আমি- কি করে দিবো!! আমি তো ধন্য হই নি ???
সবাই – ????
আমি- এত্তগুলা ভালোবাসা আমার কলিজা গুলোকে ??
সবাই – ??? ভালোবাসা tooooooo!
সবাই কিছুক্ষণ আনন্দ করে রুমে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম। শুভ রাত্রি ?