অদ্ভুত_মেয়ে Part -13

0
2601

অদ্ভুত_মেয়ে Part -13
writer – #Nur_Nafisa

.
.
কলেজে,
ক্লাসে কারো মনযোগ নেই, সবাই টূর প্লান নিয়ে ব্যস্ত। মাহিন স্যার আমাদের সবার কান্ড দেখে রোল কল করে চলে যাচ্ছিলেন, আর বলে যাচ্ছেন
স্যার – ভাগ্যিস, তোমাদের ৪দিন আগে জানানো হয়েছে, না হলে তো পড়ালেখা গোল্লায় যেতো!
আমি- স্যার, গোল্লায় না, পড়া বইয়ে, আর লেখা কলমে থাকতো ?
স্যার -??
সবাই – ????
বাকি ক্লাসে ও একই অবস্থা, দেখে স্যার রা কিছুক্ষণ বকবক করে চলে গেলো?
আমরা আমাদের পরিকল্পনা শেষ করে টাকা জমা দিতে অফিস রুমে গেলাম। সেখানে হাবিব স্যার ও মাহিন স্যার টাকা জমা নিচ্ছে।
হাবিব স্যার – নাফিসা, একা যাচ্ছো নাকি, তোমার পরিবারের সদস্য যাবে?
আমি- জ্বি স্যার, আমার পরিবারের সদস্য যাবে। আমি আমার টাকা গুলো হাবিব স্যারের কাছে দিলাম।
হাবিব স্যার – এতো টাকা! কত জনের?
আমি- স্যার ৮ জনের।
স্যার – ২ জনের বেশি নেয়া যাবে না তো।
আমি- স্যার ২ জনের বেশি নিব ও না।
হাবিব স্যার -তাহলে,!
মাহিন স্যার – স্যার, নাফিসা আর 3rd year এর শান্তার বোন।
হাবিব স্যার – ওহ আচ্ছা। কিন্তু তাও তো মানুষ বেশি!
আমি- স্যার আমি বলছি আপনি লিখুন, নাফিসা ( হিমা, হিয়া), শান্তা ( ইমা, রেহান), মাহিন স্যার ( ইমরান, সাঈদ)
হাবিব স্যার – মানে!!
আমি- মানে হচ্ছে, আমার সাথে ২জন, আপুর সাথে ২জন আর মাহিন স্যার এর সাথে ২জন।
হাবিব স্যার মাহিন স্যার এর দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকালেন!
মাহিন স্যার – ?? জ্বি স্যার, লিখুন।
হাবিব স্যার বুঝতে পেরেছে মাহিন স্যার ফেসে গেছে নাফিসার চালাকিতে।
হাবিব স্যার – ?ওকে।
আমি- স্যার, দোকান থেকে ৫টা চকলেট কিনলে ১টা ফ্রী দেয়, ১০টা কলম কিনলে ২টা ফ্রী দেয়। আর আমার পরিবার থেকে ৮ জন যাচ্ছি তাহলে ১জন ফ্রী তে নিবেন না?
হাবিব স্যার – এটাতো চকলেট আর কলম না, এটা পিকনিক। ?
আমি- হুম স্যার, টাকা টা ও তো আমি চকলেট এর দিচ্ছি না, পিকনিকের ই দিচ্ছি।
হাবিব স্যার – ?
মাহিন স্যার – ওকে, ইমার ছেলে ফ্রী তে যাবে। ?
আমি- ওর তো মাত্র ২ বছর। খেতে ও পারবে না, অন্য কোনো খরচ ও নেই। তাই ওর কথা বলছেন!! ?
মাহিন স্যার – তাতে কি! মানুষ তো।?
আমি- স্যার আপনি অনেক চালাক হয়ে গেছেন ?
মাহিন স্যার – হুম তোমার কাছে ই শিখেছি ???
হাবিব স্যার – হাহাহা??
.
অতঃপর, দিনা ও নিসার সাথে কিছুক্ষণ আড্ডা দিয়ে বাসায় এসে পরলাম। কলিং বেল বাজাতে ই ইমা আপু দরজা খুলে দিলো।
আমি- ইমরান ভাইয়ার মুখে হাসি ফুটেছে?
ইমা- আর বলিস না, তুই যাওয়ার পর কমেন্ট পড়ছে, আর মুখ চেপে হেসেই যাচ্ছে ??
আমি- হাহাহা….. প্রশংসা শুনতে কার না ভালো লাগে! ?
ইমা- হুম, হাহাহা…
আমি- ওকে রেডি হয়ে নাও, স্মৃতিসৌধ দেখতে যাবো ?
ইমা- ওকে। সাঈদ তো এখনও আসে নি!
আমি- এসে পড়বে কিছুক্ষণের মধ্যে ।
তারপর যোহরের নামাজ পরে লাঞ্চ করে নিলাম। সাঈদ ও এসে পড়েছে।
আমি- সাঈদ, ঝটপট রেডি হয়ে নে।
সাঈদ – ওকে আপু ?
তারপর রুমে গিয়ে দেখলাম ইমরান ভাইয়া, শান্তা আপু, রেহান, ইফাজ রেডি হয়ে বসে আছে, ইমা আপু ফোনে কথা বলছে, আর হিমা, হিয়া মেকাপ নিয়ে ব্যস্ত।
আমি- ইমা আপু, ভাইয়া ফোন করেছে নাকি?
ইমা- হুম, কথা বলবি? তোর কথা জিজ্ঞেস করছিলো।
আপু ফোন লাউড স্পিকারে দিলো,
আমি- বলে দাও ভাইয়া আসে নি কেন? তাই নাফিসা রাগ করেছে।
ফাহিম ভাইয়া- sorry শালিকা! কাজের চাপ একটু বেশি ই ছিলো। তা, কি করলে নাফিসার রাগ ভেনিস হবে, জানতে পারি?
আমি- ইমা আপু, তুমি ভাইয়াকে বলনি আমরা এখন সাভার ঘুরতে যাবো!
ইমা- হুম বলেছি তো।
ফাহিম – হুম বলেছে, কিন্তু এখন আমার কি করণীয়?
আমি- নাফিসার রাগ ভাঙাতে হলে, সাভার চলে আসুন। আপনার অফিস কাছে ই। বেশি সময় লাগবে না।
ফাহিম – কাজের চাপ তো বেশি, কি করে আসি!! ওকে আসবো। তবে ১টা শর্ত আছে!
আমি- অপরাধ করে আবার শর্ত দিচ্ছেন!
ফাহিম- ওকে, অনুরোধ করছি, আমি সাভার ঘুরে আবার আমার বাসায় চলে আসবো। আমাকে আবার কাল সকাল সকাল অফিসে যেতে হবে। সুতরাং, তোমাদের সাথে যেতে পারবো না।
আমি- ওকে।
ইমরান – ভাইয়া, wallet fulfill করে আসবেন কিন্তু, নাফিসা আবার wallet check করে ?
ফাহিম- হাহাহা….. ওকে.
সবাই – ????
হঠাৎ করে মা এসে,
মা- আহ! কি শুরু করলি তোরা, কোথায় জামাই কে বাসায় আসতে বলবি তা নয়!
আমি- আসছে জামাই আদর দেখাতে, fun কেক বানাচ্ছি আমরা, তুমি সেটা বুঝবে না?
সবাই – হাহাহা….. ?
ফাহিম – আসসালামু আলাইকুম ফুপি। কেমন আছেন?
মা- ওয়ালাইকুম আসসালাম।
তারপর মা ফোন নিয়ে রুমের বাইরে চলে গেলো কথা বলতে।
.
ইমরান – আরে পেত্নীরা আর কত মেকাপ মারবি তোরা!
হিমা- আহ! ভাইয়া তুমি সবসময় এমন কর কেন!
ইমরান – সবজায়গায় মেকাপ করে যেতে হয়!? নাফিসা তুই এবার রেডি হ, তোর মেকাপ করতে আবার ২ ঘন্টা লাগবে! শান্তা ই ভালো, কোনো মেকাপ করে না।
আমি- হুহ! আমিও মেকাপ করি না ?
১০মি. এর মধ্যে রেডি হয়ে গেলাম।
তারপর বেরিয়ে গেলাম সাভার স্মৃতিসৌধের উদ্দেশ্যে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here