অদ্ভুত_মেয়ে Part -16

0
3511

অদ্ভুত_মেয়ে Part -16
writer – #Nur_Nafisa

.
.
সবাই হইচই করে অনেকটা ক্লান্ত। গাড়িতে ঘুমিয়ে নিয়েছিলাম আমরা।
গাড়ি থামলে আমরা নেমে পড়লাম। বৃষ্টি হওয়ায় রাস্তা কাদামাক্ত হয়ে আছে।
ছেলেদের গাড়ি থেকে দেখলাম ভাইয়া, মাহিন স্যার, সাঈদ, রেহান নেমে আসছে। পিছনে শিহাব ও।আমি সেখানে গেলাম।
আমি- শিহাব, তোর টমির খাচা কোথায়?
শিহাব – বাসায়, হাহাহোহো…. ???
আমি- কিহ! আনিস নি! আমি বলে দিছি না আনতে!
শিহাব- আরে এখানে বান্দর পাবি কোথায়! আমি তো এমনিতেই মজা করছি, আর তুই সিরিয়াস ভেবে নিলি!?
সাথে সাথে আমি শিহাবকে ধাক্কা দিয়ে রাস্তার পাশে কাদায় ফেলে দিলাম , ধপাসসসসস……!
সবাই – ???
শিহাব – এটা কি করলি!!
আমি- আরে দোস্ত, আমি তো মজা করেছি, তুই সিরিয়াসলি নিলি! ?
জয় শিহাবকে টেনে তুলছে। শিহাব বেচারার তো পুরো কাপড় নষ্ট হয়ে গেছে। ???
শান্তা- নাফিসা, এমন দুষ্টুমি কেউ করে! ? সব কিছুর লিমিটেশন থাকা দরকার।
মাহিন – নাফিসা এমন কাজ না করলে ও পারতে। মাত্র আসলাম, এর মধ্যেই শিহাবের জামা নষ্ট করে দিলে!
আমি- সমস্যা কি! শিহাব অন্য জামা পড়ে নিবে। ? কিরে জামা আনিস নি? না হলে আমার 3পিস নিয়ে পর। হাহাহা ?
শিহাব – লাগবে না ? শিক্ষা হয়ে গেছে আমার, হুহ!
সবাই হোটেলে চলে আসলাম।
প্রত্যেক রুমে ৪জন করে থাকতে হবে। আমি, দিনা, নিসা আর হিমা ১ রুমে। ইমা, হিয়া, শান্তা ও শান্তা আপুর ১ জন ফ্রেন্ড অন্য রুমে। আর ছেলেদেরটা জানি না। সবাই ক্লান্ত হওয়ায় স্যার বলে দিছে বিশ্রাম নিতে। আমাদের রুমে শুরু হল শাওয়ার নিয়ে তুমুল কান্ড! বাথরুম ১টা, মানুষ ৪ জন, কার আগে কে যাবে!
আমি- আমি আগে যাব। আমার বেশি সময় লাগবে না।
হিমা- আপু, আমি আগে যাই। আমি বাসে বমি করছি।
দিনা- অই, দেখ আমি ঘেমে একাকার!
নিসা- আমার প্রচুর মাথা ধরেছে, আমি যাই।
আমি- নায়ায়ায়ায়া, আমি যাবো।
নিসা- নায়আয়ায়ায়ায়া আমি যাবো।
দিনা- wait! এভাবে হবে না। নিসা, ৪ টুকরো কাগজ নে।
আমি ছাড়া সবাই খাটে বসলো, দিনা ব্যাগ থেকে কাগজ বের করে টুকরো করে নিল। কলম খুঁজে পাচ্ছে না, ৫/৬ মি. খোজার পরে পেল। নিসা নাম লিখছে। আমি ওয়াশরুম থেকে বের হতে হতে,
আমি- আমার নাম টা বাদ দিয়ে দে।
পিছনে তাকিয়ে সবাই হা হয়ে আছে! ?
দিনা- আমরা এদিকে কাজ করছি, আর তুই শাওয়ার সেড়ে নিলি! এটা কি হলো!!
আমি- কি করব? তোরা কাজ করতে করতে, আমি সময় টা কাজে লাগালাম। ??
আমি বারান্দায় চলে আসলাম।
তারা সবাই একের পর এক শাওয়ার নিচ্ছে। একটু পর ডিনার করার জন্য ডাকা হলো। সবাই ডিনার করে এসে ঘুমিয়ে পড়লাম।
.
সকালে আযান শুনে উঠে পড়লাম, সাথে সবাই কে ওঠালাম নামাজ পড়ার জন্য। সবাই নামাজ পড়ে আবার ঘুমিয়ে পড়ে। আমি কিছুক্ষণ বারান্দায় দাড়িয়ে ছিলাম, আমার আবার ঘুম থেকে উঠে হাটাহাটি না করলে ভালো লাগে না। তাই, হোটেলের ছাদে চলে আসলাম। হোটেলটি ৬ তলা। আমরা ৩ তলায় আছি।
ছাদে, রেলিং ধরে দাড়িয়ে আছি। সকালের মিষ্টি বাতাস খুব ভালো লাগছে। হঠাৎ, পিছন থেকে
– হ্যালো মিস।
আমি পিছনে তাকিয়ে দেখি ১টি ছেলে দাড়িয়ে আছে। সম্ভবত ওরা ও টূর এ এসেছে।
আমি- হ্যালো!
ছেলে – আপনার নাম কি?
আমি- মিস।
ছেলে – what! এটা আবার কেমন নাম?
আমি- আপনি যেমন টা ডাকলেন।
ছেলে – আমিতো আপনার নাম জানি না তাই সম্বোধন হিসেবে ডেকেছি।
আমি- আমিও তো আপনাকে চিনি না, তাই সম্বোধন হিসেবে ই বলে দিছি।
ছেলে – হাহাহা…… ভারি #অদ্ভুত_মেয়ে আপনি। ? নিশ্চয়ই কলেজ থেকে টূর এ এসেছেন?
আমি- জানেনই তো, আবার জিজ্ঞেস করছেন কেন?
ছেলে – তা, কোথা থেকে এসেছেন?
আমি- কলেজ থেকে।
ছেলে – সেটা জিজ্ঞেস করি নি, কলেজ কোথায়?
আমি- মাটির উপর।
ছেলে – ? কথা ঘুরাচ্ছেন কেন?
আমি- কথা আবার ঘুরে নাকি! জানতাম না তো!
ছেলে – আমি প্রশ্ন করছি, ১টা উত্তর দিচ্ছেন আর ১টা।
আমি- আমিতো সঠিক উত্তর দিয়েছি।? আল্লাহ হাফেজ ?
বলে আমি রুমে চলে আসলাম।
.
কিছুক্ষণ পর সবাই মিলে ঘুরতে বের হলাম। আমরা ভাই-বোন আর কিছু ফ্রেন্ড একসাথে হাটছি।
আমি- ভাইয়া তোমার ক্যামেরা কোথায়?
ইমরান – আনি নি তো। বাসায় ছিলো তাই।
আমি- তাহলে এখন ছবি তুলবো কিভাবে! ?
ইমরান – কেন মোবাইল আছে না!
শিহাব – অন্তু ক্যামেরা আনছে। ওর টা দিয়ে তুলতে পারছ।
আমি- অই অন্তু, ক্যামেরা দে।
অন্তু – তুই বল আমি, ছবি তুলে দেই।
আমি- না, আমার কাছে দে।
অন্তু- নাফিসা, দয়া করে আমার ক্যামেরার কিছু করিস না। অনেক বলার পর বাবা এটা আমাকে কিনে দিছে।
নিসা- হাহাহোহো….. মনে কর আজই তোর ক্যামেরার শেষ দিন।
অন্তু- নাফিসা, প্লিজ যত মন চায় ছবি তোল। কিন্তু কোনো ক্ষতি করিস না ?
আমি- ওকে দে।
তারপর ক্যামেরা নিয়ে ইমরান ভাইয়ার কাছে দিলাম।
ইমরান – আমার কাছে দিলি কেন? তুই না ছবি তুলবি।
আমি- আমার ছবি কি আমি তুলবো! তুমি ভালো ফটোগ্রাফার তাই দিলাম। একটা ছবি ও যাতে পচা না হয়।
ইমরান – পচা মেয়ের ছবি ভালো হবে কিভাবে!
আমি- বেশি কথা বললে পাহাড় থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিব?
সবাই – হাহাহাহা…..

পাহাড়ের উপর থেকে চারিদিকের দৃশ্যগুলো অনেক সুন্দর ??আমি প্রকৃতি প্রেমিকা। দেখতে দেখতে পাহাড়ের কিনারায় চলে আসলাম। নিচের দিকে উকি দিলাম। শুধু গাছপালা দেখা যাচ্ছে।
দিনা- আরে কি করছিস! মরার শখ হয়েছে নাকি!
আমি- না, মারার শখ হয়েছে। দিনাকে টান দিয়ে ফেলে দেয়ার ভয় দেখালাম।
ভেচারি ভয়ে চিতকার করে উঠে।
কেমন লাগলো জানু?
দিনা- তুই কি মানুষ! আমার তো জান বেরিয়ে আসছিলো!
আমি- হাহাহোহো…..
ইমা- নাফিসা, সব জায়গায় মজা করা ঠিক না।
আমি- ওকে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here