অদ্ভুত_মেয়ে Part – 17

0
4300

অদ্ভুত_মেয়ে Part – 17
.
writer – #Nur_Nafisa

.
আজ আমরা শুধু পাহাড়েই ঘুরলাম। তাজিংঢং পাহাড়ের ঘর গুলো/তাবু আমার কাছে হেব্বি লাগে। পাড়লে উঠায় নিয়ে আসতাম! কিন্তু দিবে না আমায়।?
ইমরান ভাইয়া আমাদের ছবি তুলতে তুলতে ক্লান্ত হয়ে গেছে, আর অন্তুর ক্যামেরা ও ক্লান্ত ?।সারাদিন ঘুরে হোটেলে ফিরে আসলাম।
.
পরদিন,
আজ আমরা বান্দরবান এর বগা লেক এ যাচ্ছি। অনেক সুন্দর একটি জায়গা ?। আমরা ভাই-বোন ও ৪জন ফ্রেন্ডসহ ১ নৌকায় উঠে ঘুরছি। মনে অফুরন্ত ভালোলাগা কাজ করছে।
আমি- আমার তো মন চাচ্ছে সারাজীবন এখানে থেকে যাই। ?
ইমরান – থেকে যা, না করছে কে!
শিহাব – বান্দরবান এর ১টা জংলী ধরে বিয়ে করে ফেল। হাহাহা…. ?
সবাই – হাহাহা……
আমি- এখানে জংলী ও আছে?
অন্তু – জঙ্গলে জংলী থাকবে না তো কি থাকবে!
আমি- বিয়ে করতে হলে জংলী লাগবে কেন, ভালো মানুষ নেই!?
ইমরান- তোর মতো পেত্নীকে ভালো মানুষ বিয়ে করবে নাকি! ?
সবাই – হাহাহাহা ???
আমি- আমি পেত্নী! তারপর নৌকার একপাশে গিয়ে ঝাকাতে শুরু করলাম।
ইমা- আরে আরে! কি করছিস!
আমি- ইফাজ আছে বলে বেচে গেলা, নাহলে আমি নৌকা ডুবিয়ে ছাড়তাম ?
ইমরান – সাইকো!
হিয়া – ভাইয়া চুপ থাকো, না হলে সত্যিই নৌকা ডুবিয়ে দিবে। আমি সাতার জানি না।
ইমরান – ওকে আমি চুপ আছি।
আমরা সবাই নৌকায় বসে অনেক ভঙ্গিতে অনেক ছবি তুললাম।
.
তারপর বনে-বাদাড়ে ঘুরতে আসলাম ও বান্দর খুজতে ?।
সবুজ অরণ্য, পাখির কিচিরমিচির শব্দ, আর আমি মোহিত, উফফফ! অসম্ভব ভালো লাগছে ? হঠাৎ হিমা গাছের লতে হোচট খেয়ে পড়ে যায়।
হিমা- আহহ!?
মাহিন স্যার – আরে, আস্তে! ব্যাথা পাওনি তো?
হিমা- নাহ! ঠিক আছি।
ইমরান – আরে কানি, এই বয়সে চোখের দৃষ্টি শক্তি কমে গেছে! ?
হিমা- ? মনে হচ্ছে তোমার চোখের দৃষ্টি শক্তি খুব বেশি!
ইমরান – হুম বেশি ই তো ?
আমি- হিমা, ঢাকায় ফিরে ইমরান ভাইয়ার চোখ খুলে লাগিয়ে নিস ??
ইমরান – ? হুহ!
.
হঠাৎ দেখলাম গাছের উপর ছোট ১টা ঘর, অনেক সুন্দর দেখাচ্ছে। আমি, দিনা, নিসা ও রেহান দৌড়ে সেখানে গেলাম।
আমি- ওয়াও অনেক সুন্দর! ?
দিনা- চল উঠি…?
নিসা- কিন্তু কোনো সিড়ি তো নেই! কি করে উঠবো!
আমি- হুম?, তারপর উপর দিকে তাকিয়েই গাছের চারিদিকে ঘুরে দেখতে লাগলাম, হঠাৎ মনে হলো কিছুর সাথে ধাক্কা খেলাম..
আমি- আউচ…..
কিন্তু পড়িনি, পড়ার আগে ই আমাকে ধরে ফেললো। সামনে তাকিয়ে দেখি সেই ছেলেটা, কাল সকালে হোটেলের ছাদে যার সাথে দেখা হয়েছিল।
ছেলে – আরে আস্তে, এখনই তো পড়ে যেতেন।
আমি- আপনি!
ছেলে – হুম আমি। চিনতে পেরেছেন আমাকে?
আমি- আপনি কাজী নজরুল ইসলাম?
ছেলে – ? না তো।
আমি- তাহলে প্রমথ চৌধুরী?
ছেলে – না, আমি জিহাদ।
আমি- আপনি কি কোনো বিশেষ কাজে নিয়োজিত আছেন?
ছেলে- না আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। আপনি এমন প্রশ্ন করছেন কেন?
আমি- আপনি কোনো খ্যাতিমান লোক না, তাহলে আমি আপনাকে কিভাবে চিনব?
ছেলে – হাহাহা…. ? কি #অদ্ভুত_মেয়ে! এতো ঘুড়িয়ে ফিরিয়ে উত্তর! আপনার সাথে কাল হোটেলের ছাদে দেখা হয়েছিল। তা উপর দিকে তাকিয়ে কি খুজছেন?
আমি- বান্দর।
ছেলে – whattt!
নিসা- হাহাহা…. ? আপনাকে বলে নি। ও বান্দর খুজছে, সেটা বলেছে।
ছেলে – হাহাহা….. এখানে গাছে বান্দর পাবেন না।
আমি- তাহলে কি নদীর পানিতে বান্দর পাবো! ?
ছেলে – না, গাছেই পাবেন। খুজেন খুজেন। ?
তারপর ছেলেটি চলে যায়। আর এদিকে ইমরান ভাইয়া দৌড়ে আসে।
ইমরান – কিরে, ওই ছেলেটা কে রে?
আমি- কোনটা?
ইমরান – অই যে তোর সাথে কথা বলে গেলো যে।
আমি- আমি কি জানি, অই ছেলে কে! তাকে গিয়ে জিজ্ঞেস করো। ?
ইমরান – ১টা উত্তরও ঠিক মতো দেয় না। ফাজিল কোথাকার, যা ভাগ ?

রেহান- ভাইয়া, আমি অই ঘরে উঠবো। প্লিজ আমাকে উঠিয়ে দাও।
ইমরান- সিড়ি নেই তো, এখানে উঠবি কি করে। এখানে উঠা যায় না।
রেহান – ওই দেখো, সাঈদ ভাইয়া উঠেছে।
ইমরান – কোথায়!
সাঈদ – হ্যালো ☺️
আমি- সাঈদ, তুই কিভাবে উঠলি!
সাঈদ – গাছ বেয়ে। ?
দেখলাম সাথে অনেক ছেলেরাও উঠেছে শিহাব, অন্তু ও
আমি- আমিও উঠবো। ? ভাইয়া আমাকে হেল্প কর।
ইমরান – মাথা খারাপ তোর! একে তো সিড়ি নেই, তাও আবার ছেলেরা সেখানে।
আমি- আমার ভ্রমণ অপূর্ণ ???
রেহানকে ও উঠতে দিলো না, ভাইয়া ও উঠে নি। তারপর মন খারাপ করেই কিছুক্ষণ ঘুরলাম। হঠাৎ ইমরান ভাইয়া এসে আমার হাত ধরে টেনে নিয়ে যাচ্ছে সাথে হিমা, হিয়া, দিন, নিসা ও শান্তা আপুকে ও ইশারা করলো সাথে যেতে। ইমা আপু মাহিন স্যার এর সাথে সাথে কথা বলছে, তাই আর ডাকে নি।
আমি- আরে কোথায় নিয়ে যাচ্ছো!
ইমরান- চুপচাপ চল।
তারপর বাকি সবার থেকে কিছুটা দূরে আমাদের কয়েকজনকে ১টা গাছের কাছে নিয়ে গেলো।
আমি- আরে, এখানে আনলে কেন?
ইমরান – উপরে তাকা।
তাকিয়ে দেখি এই মোটা গাছটায় ও ১টা ঘর আছে, আগেরটির চেয়ে ও বড়।
আমি- কিন্তু উঠবো কিভাবে?
ইমরান ভাইয়া পিছনে নিয়ে দেখালো, গাছের গায়ে খোদাই করা সিড়ি আছে।
আমি- ওয়াও ভাইয়া, কত্ত ভালো তুমি ?? এত্তগুলা ধন্যবাদ.. ছরি, ধন্যযোগ তোমাকে।
সবাই – হাহাহোহো…. ?
ইমরান – হইছে উঠ এবার, না হয় অন্যরা দেখলে এদিকে চলে আসবে, তখন আর উঠতে পারবি না।
আমি- ওকে ?
১মে ইমরান ভাইয়া উঠে তারপর আমাদেরকে হাত ধরে টেনে উঠতে সাহায্য করলো। রেহান তো উঠে নাচা শুরু করে দিছে।
শান্তি- ওয়াও কি সুন্দর! ভাইয়া তুমি এটা দেখলে কিভাবে!
ইমরান – হাটতে হাটতে এদিকে এসেছিলাম, তারপর হঠাৎ দেখতে পেলাম। তার উপর রেহান আর নাফিসা মন খারাপ করে ছিলো ঘরে উঠার জন্য। এখানে কেউ নেই তাই তোদের নিয়ে এলাম।?
নিসা- অনেক ধন্যবাদ, ভাইয়া। খুব বড় একটা অনুভূতি miss করতাম।
ইমরান – welcome ?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here