অদ্ভুত_মেয়ে (season 2) Part- 16

0
2671

অদ্ভুত_মেয়ে (season 2)
Part- 16
Writer: #Nur_Nafisa
.
.
মেহমানগন সবাই নাফিসাকে দেখে মুগ্ধ! আনকমন ড্রেস পড়া! বর কনে দুজনেই সম্পূর্ণ সাদা ড্রেস! স্টেজে এসে ইমরান আগে উঠে হাত বাড়িয়ে দিলো নাফিসার দিকে। নাফিসা মুচকি হেসে ইমরানের হাতে হাত রেখে উঠতে লাগলো। আশেপাশের সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো! ইমরানের বন্ধুবান্ধব সব অদ্ভুত শব্দ করে অভ্যর্থনা জানালো তাদের! ইমা আপু প্রশান্তির হাসি দিলো।
দুপুরের শেষ দিকে ঢাকা থেকে সবাই এলো। স্টেজে শান্তা নাফিসাকে দেখে হা হয়ে আছে!
নাফিসা- এমন করে আছো কেন?
শান্তা- ওঠে দাড়া আগে!
নাফিসা সোফা থেকে উঠে দাড়াতেই শান্তা জড়িয়ে ধরলো!
শান্তা- এতো সুন্দর লাগে কেন? ভাইয়া না রিসিপশনের জন্য নীল শাড়ি আনলো! এটা কি সেই ড্রেসটা?
নাফিসা- হুম। অনেক চেষ্টার পর পড়েছি!
শান্তা- কেন?
নাফিসা- ভাইয়া পড়তে দিতে চায়নি লুকিয়ে পড়েছি।
শান্তা- ভাইয়া ও তো সাদা ই পড়ছে!
নাফিসা- জোর করে পড়াইছি। ওই দিনের ঘটনার জন্য গাল ফুলিয়ে হোপপ… করে ছিলো!
শান্তা- হিহিহি….. এখনো ভাইয়াই বলবি?
নাফিসা- হ্যাঁ। বাবা মা কোথায়?
শান্তা- মামিদের সাথে দেখা করছে।
একটু পর মা বাবা, আপু ও ভাইয়ারা এলে নাফিসা সবাইকে সালাম দিলো,
নাফিসা- কেমন আছো, বাবা?
বাবা- আলহামদুলিল্লাহ। আমার ছোট আম্মা কেমন আছে?
নাফিসা- আলহামদুলিল্লাহ।
মা- একদিনেই আমার মেয়েটা পাল্টে গেছে!
নাফিসা- কথা বলবা না আমার সাথে।
মা- ও মা! কেন? আমি আবার কি করলাম!
নাফিসা- একটা বার কল করে কথা বলেছ আমার সাথে! একবার খোঁজ নিয়েছো আমার? ভুলেই তো গেছো, নাফিসা বলে কেউ আছে!
মা- কতবার কল করেছি হিসাব আছে! কান্নাকাটি করবি তাই ইমা কথা বলতে দেয়নি তোর সাথে।
নাফিসা রেগে ইমা আপুর দিকে তাকালে ইমা আপু এক কান ধরে বললো,
ইমা- সরি! এই জন্যই দেইনি। এই যে চোখে পানি এসে গেছে!
ফাহিম- বেয়াই কলসি ধরেন, নাফিসার চোখের পানি জমা করি!
নাফিসাসহ সবাই হেসে উঠলো!
নাফিসা- কাল থেকে শুনছি, কিসের বেয়াই বেয়াই শুরু করেছেন আপনারা! বাজে লাগে শুনতে! আর একবারও বলবেন না!
মাহিন- যথা আজ্ঞে মহারানী! কিন্তু আপনি কোন রাজ্যের রানী?
নাফিসা- আপনার নানা শ্বশুরের রাজ্যের রানী!
মাহিন- হাহাহা….
নাফিসা- খাওয়াদাওয়া করে নাও তোমরা।
মা- তুই খেয়েছিস?
নাফিসা- হ্যাঁ।
শান্তা- ভাইয়া এই ড্রেস কোথায় পাইছো?
মাহিন- শুরু হইছে আরেকজন! পছন্দ হয়ে গেছে বুঝি!
শান্তা- চুপ থাকো তুমি, সবকিছুতে অগ্রিম! ভাইয়া বলো…
ইমরান- সারস পাখির মতো, এক ঘরে ঢুকছিলাম! এক যুগ ধরে তৈরি করে এনেছি!
শান্তা- দূর…..!
মাহিন- হাহাহা…. উপযুক্ত জবাব!
ইমা- ইমরান, বলতো কোন শপিংমল থেকে কিনেছিস? আমিও জানতে চাই!
ফাহিম- তোমার লাগবে নাকি?
ইমা- এনে দিলে তো লাগবেই!
ফাহিম- সরি, আমি অফিস রেখে এক যুগের জন্য কোন ঘরে ঢুকতে পারবো না!
সবাই হাহা… করে হেসে উঠলো!
সন্ধ্যায় চলে যাওয়ার জন্য নাফিসা ইমরান রুমে এলো গোছগাছ করতে। সাথে ইমা আপুও এলো হেল্প করতে।
ইমা- কাল তো কান্না করছিলি খুব! আজ কান্না করবি না?
নাফিসা- হিহিহি…. করেছিতো।
ইমা- কখন? আমি তো দেখলাম না!
নাফিসা- ভাইয়াকে জিজ্ঞেস করো, কান্না করেছি কিনা!
ইমা- ইমরান, নাফিসা কান্না করছে?
ইমরান কিছু না বলে নাফিসা ও ইমা আপুর দিকে তাকিয়ে নিজের কাজে মনযোগ দিলো। একটু পর তারা ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিলো।
আজ আবার নাফিসাদের বাসা পরিপূর্ণ লাগছে। যদিও মেহমানরা চলে গেছে কিন্তু বাড়ির ছেলেমেয়ে বাড়িতে আছে। রাতে ঘুমাতে গেলে মাঝে এক বালিশ দিলো নাফিসা! ইমরান আগেই শুয়ে পড়েছে।
ইমরান- আজ আবার এক বালিশ কেন?
নাফিসা- আমার রুমে একটাই আছে। ও বাড়িতে রেহানের টা আনা গেলেও এখানে সাঈদেরটা আনা যাবে না! তুমি সাবধানে ঘুমাবা, অনেক নড়াচড়া করো তুমি!
ইমরান- আমি একটুও নড়াচড়া করি না।
নাফিসা- সকালে তোমাকে প্রমাণ দেখাইনি!
ইমরান- ইচ্ছে করেই ফেলেছি।
নাফিসা- কিইইহ!
ইমরান- জ্বিইইহ! একটার উপর আরেকটা রাখায় আমার উপর পড়ছে! ঘুমের মধ্যে ভয় পেয়ে গেছি! তোর উপর যে ফেলি নাই, সেটাই তো বেশি!
নাফিসা- হিহিহি… কোলবালিশও মানুষ চিনে! আমার দেনমোহর দাও নি কেন তুমি?
ইমরান- বাবাহ! কান্না করতে করতে বেহুশ হয়ে গেছে অথচ দেনমোহরের কথা ভুলে নি! এখন টাকা দিয়ে কি করবি?
নাফিসা- যা খুশি করবো! তুমি আটকিয়ে রাখার কে?
ইমরান- আটকিয়ে রাখলাম কই?
নাফিসা- আমার হাতে আসেনি, তো আটকিয়েই রাখছো!
ইমরান- নারায়ণগঞ্জ গিয়ে দিয়ে দিবো। এখন শান্তিতে ঘুমাতে দে…
সকালে নাস্তা করে ইমরান চলে গেলো নারায়ণগঞ্জ। বিকেলে আসবে না হয় কাল আসবে। নাফিসা এ বাড়িতে দুদিন থাকবে। মাহিন ভাইয়াও রেডি হচ্ছে ভার্সিটি যাওয়ার জন্য! নাফিসা আর তার মা পিঠা বানানোর আয়োজন করছিলো। শান্তা মাহিকে সোফায় রেখে ঘর ঝাড়ু দিচ্ছিলো। মা বারবার না করা সত্ত্বেও শুনেনি শান্তা! মাহি হামাগুড়ি দিয়ে পড়ে যাচ্ছিলো সোফা থেকে! নাফিসা মাহি বলে জোরে চিৎকার দিলো! একটুর জন্য পড়েনি মাহি। মাহিন ভাইয়া দৌড়ে এসে ধরে ফেলছে, তবুও টেবিলের কর্ণারে মাথাটা একটু আঘাত লেগেছে। শান্তা ঝাড়ু ফেলে দৌড়ে এলো। মাহি কান্না করছে মাহিন ভাইয়ার কোলে! মাহিন ভাইয়া অগ্নি দৃষ্টিতে তাকালো শান্তার দিকে!
মাহিন- মা, বারবার নিষেধ করেছিলো না!
শান্তা- বুঝতে পারিনি এমনটা হবে! দাও আমার কাছে।
মাহিন- আর বুঝতে হবে না!
শান্তা কোলে নিতে গেলো কিন্তু মাহিন ভাইয়া মাহিকে নিয়ে শান্তা আপুর রুমে চলে গেলো। শান্তা ফ্রিজ থেকে বরফের টুকরো নিয়ে মাহিনের পিছু পিছু দৌড়ে গেলো। মা যাচ্ছিলো পিছু পিছু নাফিসা বাধা দিলো।
নাফিসা- তুমি যেও না।
মা- আরে মাহি ব্যাথা পেয়েছে।
নাফিসা- মাহির কাছে ওর বাবা-মা আছে।
মা- মাহিন রাগ করছে! চলে যাবে!
নাফিসা- যাক! তোমার মেয়ে এমন বেখেয়ালি কেন! দু একটা হোচট না খেলে শিক্ষা হবে না।
মাহিন ভাইয়া খালি হাতে মাহির কপালে হালকা স্লাইড করে দিচ্ছে আর শান্ত করানোর চেষ্টা করছে। মাহি কান্না করেই যাচ্ছে। শান্তা আপু বারবার চাইছে মাহিকে কিন্তু মাহিন ভাইয়া দিচ্ছে না!
শান্তা- মাহিন, প্লিজ বাবুকে দাও আমার কাছে।
মাহিন- না, আর তোমাকে কষ্ট করতে হবে না।
শান্তা- দাও না! ব্যাথা লেগেছে বাবুর , ফুলে যাবে! বরফ দিয়ে দেই।
মাহিন- লাগবে না কিছু।
মাহিন ভাইয়া এক হাতে মাহিকে ঝাপটে ধরে এক হাতে ব্যাগ গুছাতে শুরু করেছে। মাহির পোশাকাশাক সব ব্যাগে ভরছে! শান্তা মাহিকে নেয়ার জন্য কান্না করতে করতে মাহিনের পিছু পিছু ঘুরছে!
শান্তা- বাসায় চলে যাবে? পাচ মিনিট দাড়াও, আমি ব্যাগ গুছিয়ে নিচ্ছি।
মাহিন- তোমাকে যেতে হবে না। আমিই আমার মেয়েকে নিয়ে যাচ্ছি। থাকো তুমি এখানে। তোমার সব কাজেই তো বাধা দেয় আমার মেয়ে! আর বাধা দিবে না, শান্তিতে সব করতে পারবে।
শান্তা- মাহিন! কি বলছো তুমি এসব! আর ও কি আমার মেয়ে না!
মাহিন- না তোমার মেয়ে না! তোমার মেয়ে হলে এমন অবহেলা করতে! মেয়ের যত্ন ছেড়ে অন্য কাজ নিয়ে পড়ে থাকতে!
শান্তা- বললাম তো বুঝতে পারিনি সোফা থেকে পড়ে যাবে! প্লিজ দাও…
মাহিন- শুধু কি সোফা থেকে! বাবু আসার পর থেকে তুমি কম অবহেলা করছো! বাবুর দেখাশোনা বাদ দিয়ে সব কাজ নিয়ে পড়ে থাকো! সারাদিন বাসায় রেখে এখানে সেখানে ঘুরাফেরা করো! মায়ের কাছে রেখে বেড়াতে চলে যাও, শপিং করতে চলে যাও! বাবুর খাবারটা পর্যন্ত ঠিকমতো দিতে পারো না! এইটুকু বাচ্চার কি আলগা খাবার খাওয়ার বয়স! যেখানে এইটুকু বাচ্চা সারাদিন তার মায়ের কাছে থাকবে, সেখানে তুমি এক মুহুর্তের জন্যও থাকছো না! কেমন মা তুমি? হ্যাঁ? কেমন মা তুমি, যে এই বয়সের সন্তানকে এভাবে দূরে রাখে!
শান্তা কান্না করতে করতে মাহিনের পায়ের কাছে বসে পড়লো!
শান্তা- প্লিজ, মাফ করে দাও না। আর যাবো না কোথাও বাবুকে রেখে। আর ঘুরতে যাবো না, শপিংও করতে যাবো না! এক মুহুর্তের জন্যও বাবুকে একা ছাড়বো না। সবদিকে খেয়াল রাখবো বাবুর, দেখো তুমি! এরপর যদি ভুল হয় তাহলে আমাকে তাড়িয়ে দিও।
মাহিন- ওঠো..
শান্তা- দুইটা থাপ্পড় দাও না, তবুও আমাকে ফেলে যেও না। দাও না গো একটু বাবুকে…
শান্তা না উঠায় মাহিন নিজেই বসে পড়লো। মাহিকে শান্তার দিকে এগিয়ে দিতেই শান্তা ঝাপটে ধরে কান্না করতে করতে মাহির সারামুখে চুমুতে ভরিয়ে দিয়ে বুকে জড়িয়ে নিলো।
শান্তা- সরি মা, মাফ করে দে আমাকে। আমি তোকে ব্যাথা দিয়েছি না! তোর মা, খুব পঁচা! তোর যত্ন নিতে পারি না আমি! বকে দে ইচ্ছে মতো আমাকে!

মাহিন যে সামনে বসে আছে সেদিকে খেয়ালই নেই শান্তার! এখন তাকে মনে হচ্ছে একটা বাচ্চার মা! মাহিন শান্তার পাগলামো দেখে প্রশান্তির নিশ্বাস ছাড়লো! হাতে থাকা বরফের টুকরো অর্ধেক গলেই গেছে! সেই অর্ধেকই মাহির কপালে আস্তে আস্তে ঘষে দিচ্ছে শান্তা। মাহিন উঠে আয়নার সামনে গিয়ে আবার চুল ঠিক করে নিলো। মাহি শান্ত হয়ে গেলে, শান্তা মাহিনের দিকে তাকিয়ে উঠে দাড়ালো।
শান্তা- চলে যাবো আজ? ব্যাগ গুছিয়ে নিবো?
মহিন আয়নায় তাকিয়েই জবাব দিলো,
মাহিন- আগামী শুক্রবার নারায়ণগঞ্জ থেকে এসে বাসায় ফিরবো।
শান্তা একটু মুচকি হেসে মাহিকে কোলে নিয়েই মাহিনের পিছনে দাঁড়িয়ে পিঠে মাথা রেখে এক হাতে জড়িয়ে ধরলো।
শান্তা- রাগ কমেনি আমার উপর?
মাহিন হাত সরিয়ে ঘুরে দাড়িয়ে দু’হাতে শান্তার চোখের পানি মুছে দিয়ে, বাবুকেসহ তার বুকে জড়িয়ে ধরলো। শান্তাও এক হাতে ঝাপটে ধরে রইল।
মাহিন- ভার্সিটি যাবো, লেট হয়ে যাচ্ছে!
শান্তা ছেড়ে দিয়ে সোজা হয়ে দাড়ালে মাহিন শান্তার কপালে ঠোঁটের ছোয়া দিলো,
শান্তা- বাবুর আব্বু, একটু নিচু হও..
মাহিন- কেন?
শান্তা- হও না…
মাহিন একটু নিচু হয়ে এলে শান্তা তার ঠোঁটে আলতো করে ঠোঁটের ছোয়া দিলো। মাহিন মুচকি হেসে শান্তার নাকের সাথে নাকটা ঘষে মাহির কপালে একটা চুমু দিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে এলো। নাফিসা ও মা তাদের দেখে বুঝতেই পেরেছে তুফান থেমে গেছে! মাহিন বিদায় নিয়ে ভার্সিটি চলে গেলো।
.
সকাল দশটার দিকে সাঈদ চোখ ডলতে ডলতে রুম থেকে বেরিয়ে এলো।
নাফিসা- তুই বাসায় আছিস! আমি তো জানি ই না! গত চারদিন ধরে তোকে দেখি ই না!
সাঈদ- তুমি তো এমনিতেই চোখে কম দেখো! তাছাড়া আবার শশুর বাড়ি গেছো! দেখবা কেমনে!
মা- হ্যাঁ, দেখবে কিভাবে! গত চারদিন ধরে একটা মিনিটের জন্য শান্তিতে বসে ছিলো! সারাদিন হৈ-হুল্লোড় করে রাতের বেলা ক্লান্ত হয়ে বিছানায় পড়ে সকাল দশটায় বিছানা ছাড়ে! খাবারদাবার কিছুর খবর থাকে না!
সাঈদ- খাবার দাও…
নাফিসা- হিহিহি….. ব্রাশ না করেই খাবি! খাটাশ!
সাঈদ- খাবার দিতে দিতে ব্রাশ করা শেষ হয়ে যাবে। ভাইয়া কই?
নাফিসা- কোন ভাইয়া?
সাঈদ- মাহিন ভাইয়া তো ভার্সিটিতেই, ইমরান ভাইয়া কই?
নাফিসা- নারায়ণগঞ্জ।
সাঈদ- নারায়ণগঞ্জ চলে গেছে! কোথায় ভাবছি একটু ঘুরতে যাবো! কাল সন্ধ্যায় না এলোই! এক রাতের জন্য আসার কি দরকার ছিল!
মা- তোর দরকারে আসবে আর যাবে! যা ব্রাশ কর…
সাঈদ- আহ! যাচ্ছি…
সারাদিন শান্তা মাহিকে কোলে নিয়েই বসে ছিলো। ঘুমিয়ে পড়লেও কোলেই রেখেছে। মা একবার নিয়েছিলো, নাফিসা দুবার নিয়েছে। তাদের কাছে দিয়ে শুধু গোসলটা সেড়েছে! নাফিসা বেশ বুঝতে পারছে সকালে মাহিন ভাইয়ার ডোজ খুব কড়া ভাবে কাজ করছে! মাহিন ভাইয়া দুপুরে বাসায় ফিরেও দেখলো ঘুমন্ত মাহিকে কোলে নিয়ে বসে আছে। নাফিসার কাছে দিয়ে মাহিন ভাইয়ার সাথে লাঞ্চ করেছে। বিকেলে নাফিসা ইমরানের কাছে কল করলো,
নাফিসা- আসসালামু আলাইকুম।
ইমরান- ওয়ালাইকুম আসসালাম।
নাফিসা- কোথায় আছো?
ইমরান- অফিসে।
নাফিসা- মামারাও গেছে আজ?
ইমরান- হুম।
নাফিসা- ঢাকা আসবে আজ?
ইমরান- কেন খুব দরকার?
নাফিসা- তুমি এলে তোমার ফুপি… সরি, তোমার শাশুড়ী আম্মা পিঠা বানাবে তোমার জন্য।
ইমরান- হাহাহা…. না এলে কি নাফিসার খাওয়া মিস হয়ে যাবে?
নাফিসা- হুহ্! নাফিসার খাওয়া মিস হবে না! নাফিসা ইজ নট ইন্টারেস্টেড! তাছাড়া, তুমি এলেও বানাবে, না এলেও বানাবে।
ইমরান- এখন না বললি আমার জন্য বানাবে!
নাফিসা- আরে তুমি এলে উদ্দেশ্য তোমার আর না এলে তোমার না। ভাইয়া, এখন তাড়াতাড়ি বলো তো আসবে কি না?
ইমরান- না এলেই ভালো হতো! কালও অফিসে আসতে হবে।
নাফিসা- তাহলে আর আসতে হবে না। আল্লাহ হাফেজ।
ইমরান- আল্লাহ হাফেজ।
কাজের চাপ থাকায় ইমরান আর আসেনি। রাতে আবার নাফিসার কাছে কল করলো।
নাফিসা- হ্যাঁ, ভাইয়া বলো…
ইমরান- আহারে…..! আমার জন্য নাফিসার পিঠা আর খাওয়া হয়নি!
নাফিসা- আগেই তো বলেছি আমি ইন্টারেস্টেড না।
ইমরান- তাহলে, বানালো না কেন পিঠা!
নাফিসা- মাহিন ভাইয়া বললো আজ খাবে না। বাবাও বললো ইমরা… বাবাও বললো আজ খাবে না। তাই…
ইমরান- হুম, বাবাও বললো ইমরান এলে একসাথেই খাবে। হাহাহা….
নাফিসা- তুমি জানলে কিভাবে?
ইমরান- জানানোর লোকের অভাব! ও বাড়িতে আমার ফুপা ফুপি আছে, একটা বোন আছে, দুইটা ভাই আছে, আর…
নাফিসা- বোন একটা?
ইমরান- হুম, আর একটা বউ আছে।
নাফিসা- আচ্ছা! বাকি বউগুলো কোন বাড়িতে আছে?
ইমরান- কি জানি!
নাফিসা- মাহিন ভাইয়া কল করে বলেছে না?
ইমরান- বলার সময় নাফিসা মাহিন ভাইয়ার সাথে ছিলো না?
নাফিসা- না! রাখি এখন, ঘুমাবো আমি।
ইমরান- ওকে, আল্লাহ হাফেজ।
নাফিসা- আল্লাহ হাফেজ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here