অদ্ভুত_মেয়ে (season 2) Part- 17

0
2656

অদ্ভুত_মেয়ে (season 2)
Part- 17
Writer: #Nur_Nafisa
.
.
পরেরদিন হিমা, হিয়া ও রেহানকে সাথে নিয়ে ইমরান ঢাকা এসেছে। তারা একদিন থেকেছে। পিঠা খাওয়াদাওয়া ও চলেছে। পরেরদিন আবার ইমা আপুরা ও মামামামীরা এসে তাদের নিয়ে গেলো। একসপ্তাহ তাদের বিয়ের আয়োজন, রীতিনীতি চললো! শান্তা আপুরা নিজের বাসায় চলে গেলো। এদিকে ইমা আপুরা নিজের বাসায় চলে গেলো। নাফিসাদের বাসা এখন ফাকা! কারণ নাফিসাও এখন নারায়ণগঞ্জ আছে। বইপত্র সব নিয়ে এসেছে। ঢাকা এলে মাঝে মাঝে ক্লাস করতে আসবে ভার্সিটিতে, আর এমনিতে বন্ধুদের কাছ থেকে হেল্প নিয়ে বাসায় পড়বে। তাছাড়া ইমরানও হেল্প করতে পারবে।
সবাই সবার জীবন নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। হিমা হিয়া স্কুল থাকাকালীন মামীদের সাথে কথাবার্তা আর রিয়াদ, হিমেলের সাথে দুষ্টুমি চলে আর তারা স্কুল থেকে ফিরলে তাদের সাথে। ইমরান সন্ধ্যায় অফিস থেকে ফিরলে কতোক্ষন দুষ্টুমি, ফাজলামো, ঝগড়া চলে! এ বাড়ির বাকিগুলো আগে ইমরানকে কিছুটা হলেও ভয় পেতো, ইমরানের কথা শুনতো। এখন নাফিসা আসার পর সব একজোট হয়ে ইমরানের বিপরীতে দল বেধেছে!
হিমা, হিয়া, রেহান স্কুলে গেছে। মামীদের সাথে নাফিসা বাসায় আছে। আজ বললো রাতের খাবার নাফিসা রান্না করবে। বিকেলে লেগেও গেল কাজে। কিন্তু কাজ আর হলো না! না করা সত্ত্বেও নাফিসাকে সাহায্য করার উদ্দেশ্যে এক মামি এসে সবজি কেটে দিলো, আরেক মামি উপকরণগুলো এগিয়ে দিলো, আরেক মামি হলুদ মরিচ, মসলা পরিমাপ করে দিলো! নাফিসা আর কি করলো! পাতিলে একটু নাড়াচাড়া! শেষ পর্যন্ত রাগ করে রান্নাঘর ছেড়ে চলেই এলো! রাতে খাবার সময় নাফিসাকে মানিয়ে নিয়ে এলো। বড় মামি বললো,
মামি- আজ কিন্তু নাফিসা রান্না করেছে।
বড় মামা- তাই নাকি!
নাফিসা- একদম মিথ্যে বলবা না। রান্না করতে দিছো আমাকে! মামা আমি রান্না করিনি। একজন সবজি কেটে দিছে, একজন হলুদ মরিচ পরিমাপ করে দিছে, একজন আসবাবপত্র সব এগিয়ে দিছে! আমি কি করলাম! শুধু খুন্তি দিয়ে নাড়াচাড়া! এই রান্না করা হয়ে গেল?
নাফিসার কথা শুনে সবাই হেসে উঠলো, আর নাফিসা শুধু মুখ গোমড়া করে রইলো। খাবার শেষে রুমে এসে ইমরান নাফিসার হাতে প্যাকেট দিলো।
নাফিসা- এটা কি?
ইমরান- দেনমোহর। পুরো আড়াই লাখ আছে এখানে।
নাফিসা- ওহ, আচ্ছা।
নাফিসা আলমারি খুলে টাকা রেখে দিলো। হঠাৎ ওই প্যাকেটটায় হাত দিলো। বের করে বললো,
নাফিসা- ভাইয়া এটা কি, শাড়ি?
ইমরান- হুম।
নাফিসা- কার শাড়ি?
ইমরান- অন্য মেয়ের শাড়ি আমার আলমারিতে থাকবে!
নাফিসা- বললেই পারো আমার জন্য এনেছো! কিন্তু এটা দেখাও নি কেন?
ইমরান কোনো জবাব না দিয়ে সোফায় বসে ল্যাপটপে নিজের কাজে মনযোগ দিলো। নাফিসা প্যাকেট খুলে কালো শাড়িটা খুলে দেখলো। অনেক সুন্দর! এটা তো ওই রিসিপশনের জন্য যে ব্লু শাড়ি এনেছে তার চেয়েও বেশি সুন্দর!
নাফিসা- এটা বিয়ের অনেক দিন আগে এনেছো না?
ইমরান- হুম।
নাফিসা- তাহলে রিসিপশনে ব্লু টা না পাঠিয়ে এটা পাঠালেও পারতে!
ইমরান- সাদাটা না পড়ে এটা পড়তি?
নাফিসা- উহুম, কিন্তু দেখতাম! কোথা থেকে এনেছো? আর সাদা ড্রেসটাই কোথা থেকে এনেছো?
ইমরান- দুইটা একজায়গা থেকেই।
নাফিসা- কোথা থেকে?
ইমরান- শপিংমল থেকে।
নাফিসা- সেটা তো জানি ই! কোন শপিংমল?
ইমরান- জানি না!
নাফিসা শাড়ি হাতে নিয়ে ইমরানের কাছে সোফায় বসে পড়লো।
নাফিসা- জানো না মানে! অবশ্যই জানো তুমি। বলো না কোথা থেকে?
ইমরান- প্যাকেটের উপর লেখা আছে।
নাফিসা দৌড়ে এসে আলমারি থেকে সাদা ড্রেসের প্যাকেটটা হাতে নিলো। লেখা তো আছে ঠিকই! কিন্তু এ কোন ল্যাংগুয়েজ!
নাফিসা- এ কোন ভাষা! আমার তো এর আ কার ও জানা নেই!
ইমরান- হাহাহা…. না জানা থাকলে জানতে হবে না।
নাফিসা- ওফ্ফ! বলো তো…
ইমরান- দেশের নামটা ইংলিশ এ লেখা আছে।
নাফিসা প্যাকেট ঘুড়িয়ে ফিরিয়ে একটা ইংলিশ লেখা পেল,
নাফিসা- থাইল্যান্ড!!! থাইল্যান্ড থেকে এনেছো?
ইমরান- হুম।
নাফিসা- কে এনে দিছে?
ইমরান- শখের জিনিস অন্য কারো হাতে আনি না!
নাফিসা- হিহিহি…… বোকা পাইছো আমাকে? তুমি থাইল্যান্ড গেছো কবে!
ইমরান কিছু বললো না! হঠাৎ নাফিসাই আৎকে উঠলো!
নাফিসা- ভাইয়া!!! তুমি কিছুদিন আগে তোমার বন্ধুদের সাথে থাইল্যান্ড গেছো! আর এজন্যই আমাকে জিজ্ঞেস করতে নিষেধ করছো, কোথায় আছো তা যেন না জিজ্ঞেস করি!
ইমরান- মাথায় বুদ্ধি আছে তাহলে কিছুটা!
নাফিসা- ও এম জি! আমি আগেই সন্দেহ করেছিলাম, বাংলাদেশে এই ড্রেস পাওয়া দুষ্কর! তারমানে বাসার কেউ জানতো না তুমি থাইল্যান্ড! কতদিন থেকেছো?
ইমরান- ছয় দিন।
নাফিসা- ওফ! কি কি দেখেছো থাইল্যান্ড?
ইমরান- যা আছে তাই দেখেছি।
নাফিসা- পুরো থাইল্যান্ড ঘুরেছো?
ইমরান- চারটা শহর ঘুরেছি।
নাফিসা- ওফ্ফ! থাইল্যান্ড এর জামা পড়েছি! ভাবতেই অবাক লাগছে! (ইমরানের গাল টেনে) থ্যাংক ইউ, থ্যাংক ইউ, থ্যাংক ইউ সো মাচ! এখনি শান্তা ও ইমা আপুকে এখনি জানাচ্ছি…
ইমরান নাফিসার কর্মকাণ্ডে অবাক! এতোটা আনন্দিত! কিন্তু ইমা আপু ও শান্তাকে জানালে প্রলয় ঘটবে! ইমরান ল্যাপটপ বন্ধ করে নাফিসার হাত থেকে ফোন নিয়ে নিলো। আর খুব সাবধান করে দিলো, কেউ যেন জানতে না পারে! আর নাফিসাকে বললো, চুপচাপ ঘুমাতে। নাফিসা ও ইমরানের দুজনের ফোনই এখন ইমরানের কাছে! নাফিসা আর কল করতে পারলো না। নাফিসা গিয়ে শুয়ে পড়লো, ইমরান ড্রেসগুলো আলমারিতে রেখে লাইট অফ করে শুয়ে পড়লো। এখন তাদের মাঝে একটাই কোলবালিশ থাকে। রেহানের দুইটা রেহান নিয়ে গেছে!
.
সকালে ইমরান ও মামারা নাস্তা করতে এলে নাফিসা চেকবই সহ আড়াই লাখ ও ইমরানের দেওয়া সালামি তিন হাজার মোট দু লাখ তিপ্পান্ন হাজার টাকা বড় মামার কাছে দিলো। টাকা কি জন্য দিয়েছে সেটা বড় মামা বুঝলেও বাকিরা বুঝেনি!
বড় মামা- এতো টাকা?
নাফিসা- ভাইয়া দিছে, দেনমোহর।
বড় মামা- অহ, আচ্ছা।
ইমরান- তো বাবা কি করবে?
নাফিসা- চেক বই দেখতে পাচ্ছো না! আমার একাউন্টে জমা করবে।
ইমরান- এটা আমার কাছে বললেই হতো, টাকা বাসায় না এনে একাউন্টে ট্রান্সফার করে দিতাম!
নাফিসা- তুমি আমার একাউন্ট নম্বর জানো?
ইমরান- না।
নাফিসা- তো রাখবা কিভাবে! আর আমি সবসময় বড় মামাকে আর বাবাকে দিয়ে টাকা জমা করি।
ইমরান- হুহ্! তোর মামা তো এখন আমাকেই দিবে জমা করার জন্য!
বড় মামা- না, আমি নিজেই যাবো।
ইমরান- তাই নাকি! এমনিতে তো আবার সব কাজে আমাকে টানো!
মেঝো মামা – কত টাকা আছে নাফিসার একাউন্টে?
বড় মামা – এটা জমা করলে, চার লাখ সত্তর হাজারের মতো হবে।
ছোট মামি- ভালোই তো জমেছে!
ইমরান- জমবেই তো! সালামি টালামি যা পায় সব ব্যাংকে জমা করে আর খরচের বেলায় অন্যের পকেট খালি করে!
নাফিসা- হুহ্! মানুষ এতো টাকা সালামি পায়! দু লাখ বিশ হাজারের মধ্যে বড় মামা জমা করেছে পঞ্চাশ হাজার, বাবা আশি হাজার, বাকিটা আমি।
হিমা- আল্লাহ! চাচ্চু, ফুপা এতো টাকা দিছে তোমারে!
সবাই একটু অবাক হলো! তাদের সংকোচ কাটাতে বড় মামা বললো,
বড় মামা- কেন করেছি সেটা বলবি না?
নাফিসা- সেটা সময় হলে তো এমনিতেই জানবে!
বড় মামা- এতে তো সবার মাঝে সংকোচ জন্মাবে! তাহলে আমিই বলছি, নাফিসার ইচ্ছা একটা বৃদ্ধাশ্রম প্রতিষ্ঠা করবে। পড়াশোনা শেষ করে পর্যাপ্ত টাকা উপার্জন করে সে ইচ্ছে টা পূরণ করবে। আল্লাহ সামর্থ্য দিছে যখন সাধ্যমতো আমিও নাফিসার ইচ্ছায় শরীক হবো। এতো মূল্যবান একটা ইচ্ছা কেন ব্যার্থ হবে! নাফিসার বাবাও আছে তার সাথে।
সবাই টাকার কথা শুনে যতটা না অবাক হয়েছে, তার চেয়েও বেশি অবাক এখন নাফিসার ইচ্ছার কথা শুনে! বড় মামি একটু দুষ্টুমি সুরে বললো,
বড় মামি- বৃদ্ধাশ্রম দিয়ে নাফিসা আমাদের বৃদ্ধাশ্রমে পাঠানোর ব্যবস্থা করছে নাকি!!
নাফিসা- হ্যাঁ, মামি।
এবার সবাই বড় বড় চোখ করে তাকালো নাফিসার দিকে! আর যাই হোক তার কাছে এখন এমন উত্তর আশা করেনি কেউ! এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে নাফিসা বললো,
নাফিসা- এমন করে তাকিয়ে আছো কেন! বৃদ্ধাশ্রম দিলে আমি তো সারাক্ষণ সেখানেই থাকবো। আর সেখানে থাকলে তোমাদের দেখাশোনা করবো কিভাবে! তাই তোমাদেরও সাথে নিয়ে যাবো! সেখানকার কাজও করা হলো, তোমাদের দেখাশোনাও করা হলো।
এবার সবাই হাসলো।
বড় মামি- নাফিসা কি এখনো আমাকে মামিই ডাকবি?
নাফিসা- তাহলে কি ডাকবো!
বড় মামি- মা ডাকবি!
নাফিসা- এএএএএ! তোমাকে মা ডাকবো! তাহলে বড় মামি ডাকবো কাকে! তাছাড়া, মেঝো মামি বলবে মেঝো মা ডাকতে, ছোট মামি বলবে ছোট মা ডাকতে! তাহলে আমার এতো শখের মামি ডাক কাকে ডাকবো! এই শখ কেড়ে নিবা! ঠিক আছে, মা ডাকবো….
বড় মামি- না না, তোর যা ইচ্ছা তাই ডাকবি…
নাফিসা- মামা দেখছো! মামি আমাকে নাফিসা না বলে নানা বলছে!
সবাই হাহা…. করে হাসলো। নাস্তা করে নাফিসা ইমরানের সাথে সিড়ি দিয়ে উঠার সময়,
ইমরান- মিথ্যে বললি কেন? এটা বললেই পারতি, নিজের মা কে ছাড়া অন্য কাউকে মা ডাকতে পারবি না! কেউ কিছু মনে করতো না।
নাফিসা- কিছু মনে না করলেও, কষ্ট পেত… আর আমি মিথ্যে বলিনি। কৌশল প্রয়োগ করেছি।
ইমরান মুচকি হাসলো। নাফিসা দোতলায় এসে নিজের রুমে না গিয়ে হিমা হিয়ার রুমে এসে গল্প করছে। ইমরান রুমে এসে অফিসে যাওয়ার জন্য রেডি হচ্ছে। ইমা আপু কল করলো ইমরানকে,
ইমরান- হ্যাঁ, বলো আপু।
ইমা- ইমরান! তুই থাইল্যান্ড গেছোস সেদিন!
ইমরান অবাক হয়ে আছে আপুর কথায়! নাফিসা বলে দিছে আপুর কাছে!
ইমা- নাফিসার ওই ড্রেস থাইল্যান্ড থেকে আনছোস! আবার নাকি একটা শাড়িও আনছোস! আমার জন্য কি আনছোস?
ইমরান- আমি ঘুরতে গেছি, শপিং করতে না…..
ইমা- তাই বলে কিছু আনবি না! ফাজিল! কথা বলবি না আমার সাথে!
ইমা কল কেটে দিলো! ইমরানের মেজাজ প্রচুর খারাপ হচ্ছে! নাফিসার কাছে কাল বলাই ভুল হয়েছে! ওই মুহূর্তে সে ভুলেই গেছিলো, নাফিসা জানলে বাকি দুজনের জানা ব্যাপার না!
আবার শান্তা কল করলো,
ইমরান- কি জানতে চাইবি! আমি থাইল্যান্ড গেছি কিনা! তোর জন্য কিছু আনছি কিনা! তাহলে শুন, আমি ঘুরতে গেছি, শপিং করতে যাইনি!
শান্তা- তাই বলে কিছুই আনবা না! নাফিসার জন্য এতো সুন্দর একটা গাউন আবার একটা শাড়ি আনছো! আর আমাদের জন্য একটা সুতাও না!
ইমরান- মাহিন ভাইয়াকে আর ফাহিম ভাইয়াকে বল দুজন মিলে দেড় লাখ টাকা পাঠাতে। আমি থাইল্যান্ড যাই, আর তোদের জন্য শপিং করে নিয়ে আসি…
শান্তা- হুম, বুঝছি! নাফিসা তো বউ, আমরা তো বোন! ওর জন্য এতো দামি ড্রেস আনছো আবার শাড়িও আনছো, আমাদের তো একজোড়া সেন্ডেলও দিতে পারতে! থাক, আমাদের কিছু লাগবে না।
শান্তাও কল কেটে দিলো! ইমরান নিজের রুম থেকে জোরে ডাকতে শুরু করলো নাফিসাকে।
নাফিসা- ডাকছো কেন?
ইমরান- নিষেধ করছিলাম না থাইল্যান্ডের কথা কাউকে জানাতে! তোরে তো এখন…
নাফিসা হাসতে হাসতে দৌড়ে নানুর রুমে এসে দড়জা লাগিয়ে দিলো। ইমরান বাইরে থেকে চেচিয়ে বললো,
ইমরান- অফিস যাচ্ছি, তাই বেচে গেলি। না হলে আজ তোর বারোটার খবর ছিলো!
ইমরান কথা বলে চলে গেলো। নাফিসা রুমে বসে হাসতে লাগলো। এক ঘন্টার আগে অন্তত এখান থেকে বের হবে না। কিন্তু সময় কাটবে কি করে! ফোনটাও তো সাথে নেই! বইও নেই যে পড়বে! তাই জানালার পাশে দাড়িয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে অপেক্ষা করতে লাগলো ইমরান কখন বাসা থেকে বের হবে!
প্রায় দশ মিনিট পর মামাদের সাথে ইমরান বেরিয়ে গেলো। নাফিসা এক দৌড়ে ইমরানের রুমে এসে আবার দরজা বন্ধ করে দিলো। এ রুমে সারাদিন বসে থাকলেও সমস্যা নেই। সময় কাটানোর অনেক উপায় আছে এখানে! ফোন আছে, ল্যাপটপ আছে, বই আছে! আপাতত ল্যাপটপ নিয়ে একটা মুভি দেখা যাক। অনেকদিন হলো বিনোদন জগতের বাইরে আছে! খাটে, টেবিলে, সোফায় তাকিয়ে ল্যাপটপ না পেয়ে আলমারিতে খুজলো! এখানেও নেই! ড্রেসিং টেবিলের ড্রয়ারে খুজলো, এখানেও নেই। সুকেচের দিকে একবার চোখ বুলিয়ে নিলো, এখানেও নেই! ল্যাপটপ কি সাথে নিয়ে গেছে ভাইয়া! দূর! প্ল্যানটাই মাটি! ফোনটা নিয়ে কনফারেন্সে ইমা ও শান্তা আপুকে কল করলো। এমন সময় সবাই ফ্রি। ভাইয়ারা কর্মস্থলে চলে গেছে। তিন বোন মিলে আধঘন্টার মতো আড্ডা দিলো। নাফিসা আপুদের মন ভালো করে দিলো, ইমরানের উপর থেকেও রাগটা সরিয়ে দিলো। এটাও বলে দিলো, তার ড্রেস যেন নিয়ে পড়ে। কিন্তু একবারের বেশি দিবে না। আর ইমরান যেহেতু আপুদের জন্য একটা সুতাও আনেনি, সেহেতু নাফিসার ড্রেস আর শাড়ি থেকে যেন একটা করে সুতা উঠিয়ে নিয়ে যায়! আপুরাও এ নিয়ে নাফিসার সাথে দুষ্টুমি করলো। তাদের সাথে কথা বলে মায়ের সাথে কিছুক্ষণ কথা বললো। নিচে গেলে ভালো হতো। হিমেল রিয়াদের সাথে দুষ্টুমি করে সময় কাটিয়ে দেওয়া যেত! কিন্তু ইমরান ভাইয়া যদি বাসায় ব্যাক করে, নাফিসা শেষ! এই ভেবে নিচে না গিয়ে ধপাস করে খাটে শুয়ে পড়লো। এই সময়টা অবসর থাকলে ঘুম পায় খুব , সুতরাং অবহেলা করার মানেই হয় না। নাফিসা চোখের পাতা এক করে ফেললো।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here