অদ্ভুত_মেয়ে (season 2)
Part- 31
Writer: #Nur_Nafisa
.
.
কিছুক্ষণের মধ্যেই তারা নাফিসাদের বাসায় ফিরে এলো। তালা খুলে নাফিসা ভেতরে প্রবেশ করে তারাতাড়ি দরজা লাগিয়ে দিতে চাইলো কিন্তু ইমরান তার চালাকি বুঝে দরজা ধাক্কা দিয়ে ধরে রাখলো! তার শক্তির কাছে না পেরে নাফিসা চলে এলো। তার রুমের তালা খুলতে খুলতে ইমরান মেইন দরজা লক করে এখানেও এসে পড়েছে। নাফিসা রুমে এসে লাথি দিয়ে জুতা এদিক সেদিক ছুড়ে মারছে! রেগে শাড়ির পিন খুলছে। হাতের বালা ঢিল মেরে ড্রেসিং টেবিলে ফেলছে! গলার নেকলেস, কানের দুল খুলে ঢিল মেরে ফেলছে! অবশেষে নাকফুলে হাত দিয়ে ব্যাথায় আহ শব্দ করে উঠলো তবুও এটা খোলার চেষ্টা করছে। ইমরান জুতা খুলে বসা থেকে উঠে এসে নাফিসার হাত ধরে ফেললো!
ইমরান- কি করছো! নাক ফুলে যাবে, ঘা শুকাবে না এটা খুললে!
নাফিসা- ছাড়, টাচ করবি না আমাকে। আমার যা খুশি তা করবো, তোর কি!
ইমরান- আমারই তো সব!
ইমরান হাতসহ নাফিসাকে খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো!
ইমরান- এতো জেদ কেন! হুম? আরেকবার নাকে হাত দিলে মাইর দিবো!
নাফিসা- ছাড় আমাকে!
ইমরান শক্ত করে জড়িয়ে ধরেই আছে। নাফিসা ছোটার জন্য চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে শব্দ করে কান্না শুরু করে দিলো! ইমরান কপালে চুমু দিয়ে ছেড়ে দিলো। নাফিসা কপাল মুছতে মুছতে ওয়ারড্রব খুলে জামা নিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেলো! চেঞ্জ করে হাতমুখ ধুয়ার সময় অসাবধানতাবশত নাকে জোরে হাত লাগে! সাথে সাথে সে চিৎকার করে উঠে! ইমরান রুমে থেকে ভয় পেয়ে যায়, আর ওয়াশরুমের দরজা খুলতে বলে। নাফিসা কান্না করতে করতে বেরিয়ে এলে দেখলো নাক দিয়ে প্রচুর রক্ত বের হচ্ছে! ইমরান নাফিসাকে ধরতে গেলে সে তার হাত সরিয়ে হাটতে লাগলো! ইমরান রেগে আবারও খুব জোরে ধমক দিলো যার ফলে নাফিসা ভয় পেয়ে দাড়িয়ে গেলো! রক্ত পড়তে দেখে ইমরানের প্রচুর রাগ হচ্ছে! না পারছে নাফিসাকে কিছু বলতে আর না পারছে নিজেকে ঠান্ডা করতে! ওয়ারড্রবের উপর থেকে টিস্যু নিয়ে নাফিসাকে খাটে বসালো।
ইমরান- দেখি বসো চুপচাপ! কি অবস্থা করেছে! এতো জেদ কেন! ইচ্ছে করে নাড়াতে গেছো এখন আর ব্যাথা লাগছে না!
নাফিসা- আমি কি ইচ্ছে করে করেছি! মুখ ধুতে গিয়ে লেগে গেছে! সবসময় শুধু আমাকে বকে!
ইমরান আর কিছু বললো না। আস্তে আস্তে রক্ত মুছে দিলো। নাফিসার চেহারায় তাকিয়ে দেখলো কান্না করে চোখ মুখ লাল করে ফেলেছে! এইটুকু নিয়ে এতো রিয়েক্ট মনে হচ্ছে কেউ তাকে ইচ্ছেমতো মেরেছে!
মাগরিবের আযান দিলে সে ঘরেই নামাজ পড়ে নিলো। বাবার কাছে কল করে বলে দিলো তারা নারায়ণগঞ্জ চলে যেতে, সে কাল যাবে। এদিকে ফুপা ফুপি, সাঈদ এসে পড়েছে ইশার আযানের পর। ইমরান ঘরেই নামাজ পড়েছে। নাফিসা বিছানার একপাশে বালিশ ছাড়া কাচুমাচু হয়ে শুয়ে আছে। ইমরান এসে দু তিনবার ডাকলো খাওয়ার জন্য উঠেনি সে। দুপুরে খাওয়ার পর আর খেতে ইচ্ছে করছে না তাই ইমরানও খায়নি। আজ এখানেই থেকে গেলো। রুমে এসে শার্ট খুলে নাফিসার কাছে এলো। খাটের মাঝামাঝিতে বালিশ রেখে নাফিসাকে খুব সাবধানে বালিশে শুয়িয়ে দিলো। ঠান্ডা লাগছে তাই ইমরান কাথা টেনে দিলো। ওড়না গলায় পেচে আছে, ইমরান আস্তে আস্তে সেটা খুলে বালিশের পাশে রাখলো। একই কাথার নিচে একই বালিশে সে শুয়ে পড়লো। এক হাতে নাফিসার সামনে আসা চুলগুলো পেছনে নিয়ে দিলো। নাক একটু ফুলে গেছে দেখা যাচ্ছে! চোখের পানি মুছে চোখের পাতায় আলতো করে চুমু দিলো, নাকফুলে চুমু দিলো, ঠোঁটে চুমু দিয়ে নাফিসার দিকে তাকিয়ে রইলো। সে মনে মনে বললো,
– অদ্ভুত মেয়েটা জেগে থাকলে বয়ে যায় ঝড়! আর ঘুমিয়ে থাকলে হয়ে যায় সব নিরব!
নাফিসা ঘুমের মধ্যেই একটা পা ইমরানের উপর তুলে দিলো! ইমরান মুচকি হেসে নাফিসার হাতটাও তার পিঠে এনে রাখলো। নাফিসা আরও কাছে এসে তার বুকে মাথা রাখলো!
সকালে ঘুম ভাঙতেই ইমরানকে জড়িয়ে ধরে ঘুমাতে দেখে দু’হাতে ইচ্ছে মতো মাইর শুরু করলো! বেচারার ঘুম ভাঙলো মাইর খেয়ে! দুহাত মুঠোয় নিয়ে বললো,
– সকাল সকাল এতো সুন্দর সারপ্রাইজ! রাগ এখনো কমেনি!
– দূর হ…
ইমরান মুচকি হেসে আরও তার উপর হাত পা তুলে তাকে আটকে রাখলো! উপায় না পেয়ে নাফিসা তার হাতে খুব জোরে কামড় বসিয়ে দিলো!
ইমরান- আহ! করছো কি!
নাফিসা মুক্তি পেয়ে উঠে পড়লো! কিছুক্ষণ পর সাঈদের সাথে ড্রয়িং রুমে টিভি দেখছিলো ইমরান এসে হাত থেকে রিমোর্ট নিয়ে নিলো।
ইমরান- নারায়ণগঞ্জ যাবো আমি, যেতে চাইলে রেডি হয়ে নাও!
নাফিসা- তোর যেদিকে ইচ্ছা সেদিকে যা, আমাকে বলছ কে! রিমোর্ট দে!
মা ডাইনিং টেবিলে খাবার রাখতে রাখতে নাফিসাকে ধমক দিলো,
মা- নাফিসা, এসব কি ভাষা!
ইমরান রিমোর্ট রেখে বেরিয়ে টেবিলের কাছে যেতে যেতে বললো,
ইমরান- ফুপি দেখো তোমার মেয়ে কেমন করে!
খাওয়া শেষে ইমরান নাফিসার ফোনে কল করলো, নাফিসা রিংটোনের শব্দ পেয়ে রুমে গিয়ে দেখলো ইমরান কল করেছে। এদিকে তার পিছু পিছু ইমরানও রুমে এসেছে। নাফিসা রেগে তাকাতেই সে মুচকি হেসে সামনে এলো। ওড়না টা মাথায় তুলে জোর করেই ঠোঁটে চুমু খেলো! নাকফুলে চুমু দিয়ে বললো,
ইমরান- নাকে নাকফুল, মাথায় ঘোমটা! এখন বউ বউ মনে হচ্ছে! টক খাবার খেয়ো না, ঘা শুকাবে না। আসি আমি, আল্লাহ হাফেজ।
ইমরান রুম থেকে বেরিয়ে গেলো। ফুপির কাছে বিদায় নিয়ে সাঈদকে বললো,
ইমরান- সাঈদ, সাবধানে থাকিস। বাসায় নাফিসা ভুত আছে!
সাঈদ হাহাহা করে হেসে উঠলো আর নাফিসা রেগে রিমোর্ট নিয়ে ইমরানের দিকে মারলো! মা নাফিসাকে ধমক দিলো, ইমরান রিমোর্ট ধরে ফেলে সাঈদের কাছে দিয়ে বেরিয়ে যেতে যেতে বললো,
ইমরান- ফুপি তোমার মেয়ে পাগল হয়ে গেছে! দেখে রেখো আর টক খাবার খেতে দিয়ো না।
ইমরান নারায়ণগঞ্জ চলে গেছে। নাফিসার কিছু ভালো লাগছে না! বোরিং লাগছে! শান্তা আপু কল করে বলেছিলো মুনতাহা আপুর রিসিপশনে যেতে সে যায় নি। বাবা-মা সাঈদ গেছে আর নাফিসা একাই বসে আছে! বারবার আয়নার সামনে দাড়িয়ে নিজের চেহারা দেখে! নাকফুল পড়ায় কেমন বড় বড় লাগছে তাকে! এটা না থাকলে তো সে ভার্সিটি থেকেও ঘুরে আসতে পারতো! প্রায় এক সপ্তাহ ঢাকায় থেকে ইমরানকে কল করে আসতে বলেছে। ইমরান এসে দেখে তার নাকে ফুল নেই! নাক ঠিক হয়ে স্বাভাবিক হয়ে গেছে অনেকটা, নাফিসা সেটা খুলে চিকন কাঠি দিয়ে রেখেছে! ইমরান কিছু বললো না, শান্ত হয়েছে এটাই তার জন্য অনেক। নাফিসাকে নিয়ে যাওয়ার সময় শপিং করে গেছে। আবার সাথে দুই বক্স আইস্ক্রিমও এনেছে। বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে নাফিসা সোফায় বসে আইস্ক্রিম খাচ্ছে! ইমরান গোসল করে মাথা মুছতে মুছতে বললো,
ইমরান- আইস্ক্রিম কিনতে কিনতে আমি ফকির হয়ে যাচ্ছি! গার্মেন্টস ফেক্টরি না দিয়ে আইস্ক্রিম ফেক্টরি দেয়া দরকার ছিলো! তাও তো কিছু টাকা বেচে যেতো!
নাফিসা- গার্মেন্টস তো মামারা দিয়েছে। তুমি এবার নতুন করে আইস্ক্রিম ফেক্টরি দাও।
ইমরান- হ্যাঁ এই কাজই করি! সারাদিন বসে বসে আইস্ক্রিম খাও, আর আমার ব্যাবসায়ে দিন রাত লাল বাতি জ্বালাও!
নাফিসা- হিহিহি…. লাল বাতি তোমার এতো পছন্দ!
ইমরান- যেই জামাটা কেটেছি সেটার দাম কতো ছিলো?
নাফিসা- সতেরো শ।
ইমরান- কিইইই! সতেরো শ এর জন্য আমার সাড়ে চার হাজার টাকা শেষ! ঈদের শপিং পাবে না আর। এটাই শেষ এক বছরের জন্য!
নাফিসা- বছরে মাত্র সাড়ে চার হাজার!
ইমরান- এর আগে যে আরও কত হাজার শেষ হইছে!
নাফিসা- বিয়ে করছো কেন! তাছাড়া তোমার এই টাকা শেষ করবে কে? বলো…
ইমরান আর কিছু বললো না। কি বলবে আর! সত্যিই তো, তার টাকার হকদার তো নাফিসাই! বর্তমানে তার জন্যই তো সব!
নাফিসা- সন্ধ্যায় বাইরে ঘুরতে নিয়ে যাইবা।
ইমরান- সারাদিন শপিং করে ঘুরেফিরে শখ মিটেনি!
নাফিসা- কথা কম বলো, এসব তো সব জামা কেটেছো তার বিনিময়ে হলো৷ এখন নাক ফুটানোর টা বাকি আছে না!
ইমরান- আরও কিছু বাকি আছে? বলো সব একসাথে করে দেই!
নাফিসা- আপাতত মনে পড়ছে না। বাকিটা পরে।
ইমরান না চাইতেও নাফিসার জোড়াজুড়িতে সন্ধ্যায় তাকে নিয়ে বের হলো। তবে বাকিদের না জানিয়ে। তারা জানলে আবার পিছু নিবে। একটার যন্ত্রণায়ই ইমরান বাচে না, বাকিরা এলে সে আধমরা!
নাফিসা আর ইমরান বাদাম খেতে খেতে আর টুকটাক কথা বলতে বলতে রাস্তায় হাটছে। অন্ধকার রাস্তায় ভালোই লাগছে হাটতে। মৃদু বাতাস, গাড়িগুলো একটু পরপর হর্ণ বাজিয়ে দৌড়াচ্ছে! পাশে প্রিয় মানুষ! নাফিসা হঠাৎ করেই বলে উঠলো,
নাফিসা- ভাইয়..সরি, ওগো ডাব খাবো!
ইমরান নাফিসার দিকে তাকিয়ে আবার আশেপাশে তাকিয়ে দেখলো রাস্তার পাশে ভ্যানগাড়িতে ডাব বিক্রি করছে।
ইমরান- দাড়াও এখানে, আমি নিয়ে আসি।
ইমরান দুইটা ডাব আনলো। দুজনেই রাস্তার পাশে দাড়িয়ে ডাব খেয়ে নিলো। খাওয়া শেষ হলে ইমরান ডাব ছেড়ে দিয়ে পা দিয়ে ফুটবলের মতো লাথি মেরে ময়লার স্তুপে ফেলে দিলো। নাফিসা মুচকি হেসে বললো,
নাফিসা- পরান যায় জ্বলিয়া মুভির কথা মনে পড়ে গেলো।
ইমরান- কি যায় জ্বলিয়া?
নাফিসা- পরান পরান!
ইমরান হাহা করে হেসে উঠলো। নাফিসা আবার বললো,
নাফিসা- ওই মুভিতে দেব ডাব খেয়ে খোলস এমন করে লাথি দিয়ে ফেলে সেটা দেখে শুভশ্রীও লাথি দিতে যায় আর পায়ে ব্যাথা পায়! তারপর দেব তাকে কোলে করে বাকিটা পথ নিয়ে যায়! হায়রে বেচারা!
ইমরান ব্যাঙ্গ করে বললো,
ইমরান- হ্যাঁ এবার তুমিও এটা করো আর আমি কোলে করে নিয়ে যাই!
নাফিসা- হুহ্! ওটা তো শুটিং বাট আমি স্ট্রং! ভার্সিটিতে, স্কুলে ডাব খেয়ে কতবার এভাবে ফেলেছি ব্যাপার না! এই দেখো তোমার চেয়েও বেশি দূরে নিবো।
নাফিসা সাথে সাথে করে দেখালো! এতো জোরে দিয়েছে, ইমরানেরটার আগে গেছে ঠিকই কিন্তু পায়ে ব্যাথা পেয়েছে! পা আগে চলায় হাড়ে আঘাত পেয়েছে! পা ফেলে হাটতে গেলে ব্যথা অনুভব করলো! পা মচকে গেছে! এখন হাটবে কিভাবে!
ইমরান- অনেক্ষন হয়েছে, চলো এবার বাসায় ফেরা যাক।
নাফিসা- অনেক্ষন হেটেছি আমার পা ব্যাথা করছে। এখন রিক্সা নাও।
ইমরান- এইটুকু পথ যাওয়ার জন্য রিক্সা নিতে হবে! চলো..
নাফিসা- না আমি রিক্সাতে যাবো।
ইমরান- এখন রিক্স পাবো কোথায়!
নাফিসা- ওই যে, একটা দেখা যাচ্ছে।
ইমরান- ওকে চলো।
নাফিসা- না, এখানে নিয়ে এসো।
ইমরান- আশ্চর্য! রিক্সা পর্যন্তও যেতে পারবে না!
নাফিসা- না!
ইমরান দু কদম এগিয়ে আবার তার কাছে এসে বললো,
ইমরান- এই, তুমি কি পায়ে ব্যাথা পাইছো?
নাফিসা- হিহিহি…পায়ে ব্যাথা পাবো কেন!
ইমরান- লুকানো কথা তো তোমার হাসিই প্রকাশ করে দিচ্ছে! ডাবে লাথি দিয়ে ব্যাথা পাইছো না?
নাফিসা- তাহলে তো কান্না করতাম না?
ইমরান- হাটো তো একটু।
ইমরান টেনে সামনে আনার চেষ্টা করতেই দেখলো নাফিসা পা ফেলতে পারছে না! ব্যাথায় ” আহ!” শব্দ করে উঠলো আর চোখে পানিও চিকচিক করছে! অপরাধী দৃষ্টিতে সে ইমরানের দিকে তাকালো! ইমরান দাতে দাত চেপে বললো,
ইমরান- আমি স্ট্রং, না! কোথায় গেল স্ট্রংনেস? এখন তো ইচ্ছে করছে….!
ইমরান আর কিছু বললো না। দৌড়ে গিয়ে রিক্সা নিয়ে এলো। নাফিসাকে নিয়ে ডিসপেনসারিতে এলো। ডাক্তার দেখলো পা মচকে গেছে তাই, তিনি হালকা মোচড় দিয়ে ঠিক করে বললেন নাফিসাকে হাটতে। নাফিসা পা ঠিকমতো ফেলতে পারছে কিন্তু ব্যাথা পাচ্ছে। ডাক্তার বললো কিছু হয়নি, বাসায় ফিরে জলপটি লাগিয়ে দিলেই ব্যাথা চলে যাবে। ইমরান তাকে নিয়ে বাসায় ফিরে এলো। ইমরানের উপর ভর দিয়ে আস্তে আস্তে ভেতরে প্রবেশ করলো। মামিরা জিজ্ঞেস করলে বললো পা মচকে গেছে। সিড়ির কাছে আসতেই ইমরান নাফিসাকে কোলে নিয়ে উপরে উঠতে লাগলো। নাফিসা গলা জড়িয়ে ধরে তার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে। খুব ভালো লাগছে তার হিরোকে দেখতে! ইমরান এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে সিড়ি দিয়ে উঠতে উঠতে বললো,
ইমরান- এখন তো, সেই পরান যায় জ্বলিয়াই হলো তাই না! হিরোইন হিরোকে দেখে একই কাজ করতে গেলো আর ব্যাথা পেলো! এবার হিরো কোলে করেই রুমে নিয়ে যাচ্ছে!
নাফিসা লজ্জা পেয়ে তার কাছ থেকে চোখ ফিরিয়ে নিয়ে বিড়বিড় করে বললো,
নাফিসা- আমি কি বলেছি নাকি কোলে নিতে!
ইমরান রুমে এসে নাফিসাকে খাটে বসিয়ে দিলো। কিন্তু নাফিসা গলা ছাড়েনি! ইমরান তার দিকে ব্রু কুচকে তাকাতেই সে গলা জড়িয়ে কাছে টেনে গালে একটা চুমু দিলো। সাথে সাথে গলা ছেড়ে দিয়ে অন্যদিকে ফিরে তাকালো! ইমরান কোন প্রতিক্রিয়া না করে দরজা লাগিয়ে ছোট তোয়ালে ভিজিয়ে নিজ হাতে নাফিসার পায়ে পেচিয়ে দিতে দিতে বললো,
ইমরান- আমার কোলে উঠার জন্য ইচ্ছে করেই ব্যাথা পেয়েছো না?
নাফিসা রেগে গিয়ে বললো,
নাফিসা- ইচ্ছে করে কেউ ব্যাথা পায়! ওই, আমার কিসি ফেরত দাও!
ইমরান দুষ্টুমি হাসি দিয়ে দ্রুত পায়ের কাছ থেকে উঠে এগিয়ে এসে বললো,
ইমরান- আগে বলবা তো!
নাফিসা কিছু বুঝার আগেই ইমরান তার ঠোঁট জোড়া নিজের দখলে নিয়ে দীর্ঘ সময় নিয়ে কিসি ফেরত দিলো। ছেড়ে দিয়ে বললো,
ইমরান- হয়েছে? নাকি আরও বোনাস লাগবে?
নাফিসা লজ্জায় কোথায় লুকাবে বুঝতে না পেরে ইমরানের বুকেই লুকালো! আর ইমরান নির্লজ্জের মতো হেসে নাফিসার লজ্জা আরও বাড়িয়ে দিতে লাগলো!