অদ্ভুত_মেয়ে (season 2) Part- 35

0
2724

অদ্ভুত_মেয়ে (season 2)
Part- 35
Writer: #Nur_Nafisa
.
.
ঈদুল আজহা কাটলো তাদের আনন্দেই। নাফিসা ঢাকায় অনেকদিন থেকেছে। নাফিসা থাকাকালীন ইমরানও এখানে থেকেছে মাঝে মাঝে। এখান থেকে অফিসও যেতো। সেখান থেকে ইমরানের সাথে একদিন ইমা ও শান্তা আপুর বাড়িতে ঘুরে এসেছে।
রিমার বিয়ের তিনদিন আগে মুশুল ধারে বৃষ্টি নামলো বিকেলের দিকে! ইমরান আজ আগেই বাসায় ফিরেছিলো। নাফিসা জানালার পাশে দাড়িয়ে ছিলো। হঠাৎ বৃষ্টি নামতে দেখে আনন্দে লাফিয়ে উঠলো। ইমরান সোফায় পা মেলে বসে ল্যাপটপে কাজ করছিলো। নাফিসার উৎফুল্ল দেখে জিজ্ঞেস করলো,
ইমরান- কি হয়েছে?
নাফিসা- বৃষ্টি নেমেছে।
ইমরান- তো?
নাফিসা- তো কি আবার! বৃষ্টিতে গোসল করবো। হিমা হিয়া…
ইমরান- এই এদিকে আসো।
নাফিসা- তুমি চুপ থাকো।
নাফিসা হিমা হিয়াকে ডাকতে ডাকতে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো। ইমরান ডেকেছে তবুও শোনেনি। হিমাদের রুমে এসে তাদের তিনজনকে ডেকে বেরিয়ে সিড়ি দিয়ে উঠতে লাগলো। গিয়ে দেখলো দরজায় তালা ঝুলছে! এখানে তালা লাগিয়ে গেলো কে! সিড়ি দিয়ে উঠার সময় ইমরানকে দেখেছিলো রুমে ঢুকছে! তারমানে এইটুকু সময়ে ইমরান এসে তালা লাগিয়ে গেছে! তাদের দাড় করিয়ে নাফিসা রেগে নিচে এলো। ইমরানের সামনে দাড়িয়ে বললো,
নাফিসা- তালা লাগিয়েছো কেন? চাবি দাও।
ইমরান-….
নাফিসা- চুপ করে আছো কেন? চাবি দাও!
ইমরান কোন কথা বলছে না। নিজের কাজে ব্যস্ত!
নাফিসা- চাবি দিতে বলছি না!
নাফিসা ল্যাপটপ টেনে ধরতে গেলে ইমরান নিজেই ল্যাপটপ বন্ধ করে রেখে সোফায় শুয়ে পড়লো। চুপচাপ নাফিসার দিকে তাকিয়ে রইলো। নাফিসা প্রচুর রেগে আছে!
নাফিসা- আমার দিকে তাকিয়ে থাকতে বলছি নাকি চাবি দিতে বলছি?
ইমরান- চাবি দিয়ে কি করবা?
নাফিসা- চাবি দিয়ে তালা খুলবো।
ইমরান- তালা খুলে?
নাফিসা- তালা খুলে কি করবো জানো না! কথা পেচিয়ে পেচিয়ে আমার সময় নষ্ট করছো! বৃষ্টি থেমে যাবে, তারাতাড়ি দাও না!
ইমরান- একবার গোসল করেছো। এখন ভিজতে হবে না ঠান্ডা লাগবে।
নাফিসা- কিছু হবে না। প্লিজ দাও তারাতাড়ি!
ইমরান- না বলেছি!
ইমরান ধমক দেয়ায় নাফিসা আরও রেগে গেলো! উল্টো জেদ করে বললো,
নাফিসা- লাগবে না তোর চাবি। গিলে খা তুই! ভালো ভালো ব্যবহার করি তো, তোর ভালো লাগে না। তুই তো ভালোর উপযুক্তই না!
নাফিসা ফুসতে ফুসতে বেরিয়ে গেলো। নিচে এসে মামির কাছে বললো, মামিও নিষেধ করে দিলো ভিজতে! কেউই তার পক্ষ নিচ্ছে না! সবাই একই কথা বলছে, ভিজলে অসুস্থ হয়ে পড়বে তাও আবার অসময়!
নাফিসা রেগে চলে এলো। তালার উপর কতোক্ষন ঝাড়ু দিয়ে আগাত করলো। তালার তো কিছুই হচ্ছে না অযথা ঝাড়ু নষ্ট!
নাফিসা- রেহান, কিচেন থেকে পোতা নিয়ে আয়।
রেহান- ওকে।
রেহান দৌড়ে নিচে গেলো। আবার খালি হাতে দৌড়ে ফিরে এলো!
নাফিসা- কই?
রেহান- পোতা নিতে গেছি, আম্মু খুন্তি নিয়া দৌড়ানি দিছে!
রেহানকে বললো তার ক্রিকেট ব্যাট নিয়ে আসতে। আজ তালা ভেঙে হলেও ভিজবে। রেহান বেট আনলো। স্টিলের দরজা হওয়ায় প্রতিটি আঘাতে খটাখট শব্দ হয়েই যাচ্ছে! ইমরান রুমে থেকেই কয়েকবার ডাকলো কিন্তু নাফিসার কাজ নাফিসা করেই যাচ্ছে! কয়েক ঘা লাগাতেই রেহানের বেট ফেটে দু টুকরো হয়ে গেছে! তবুও তালা ভাঙ্গেনি! ব্যাট ভাঙতে দেখে হিমা হিয়া হাসতে লাগলো আর রেহান মন খারাপ করে নাফিসার দিকে তাকাতেই নাফিসা বললো,
নাফিসা- তোকে আমি ব্যাট কিনে দিবো। এখন আমার সাথে ভিজতে হলে আগে দরজা খুল!
সবাই দরজায় লাথি মারতে লাগলো! ছোট মামি সিড়ির নিচে থেকেই ধমকে যাচ্ছে! ইমরান এবার রুম থেকে বেরিয়ে এলো। ইমরানকে রুম থেকে বের হতে দেখে নাফিসা বাদে সবাই দৌড়ে নেমে রেহানের রুমে ঢুকে দরজা লাগিয়ে দিলো। নাফিসা উপরেই দাড়িয়ে আছে। মুখ ফুলিয়ে পেচার মতো করে রেখেছে। ইমরান সিড়ি দিয়ে উঠে তার কাছে এসে শান্ত গলায় বললো,
ইমরান- নিচে যাও।
নাফিসা ঠেই দাড়িয়ে আছে সেখানেই! চোখে পানি এসে ভিড় জমিয়েছে, দৃষ্টি তার ইমরানের দিকে। বলার পরও নামছে না তাই খুব জোরে ধমক দিয়ে বললো,
ইমরান- নিচে যেতে বলেছি না! যাও!
নাফিসা অভিমান নিয়ে দৌড়ে নেমে গেলো। হিমাদের রুমের দিকে যেতে নিলে ইমরান আবার বললো,
ইমরান- এইদিকে না, নিজের রুমে যাও। না হয় মাইর একটাও মিস হবে না।
নাফিসা রেগে হনহন করে নিজের রুমেই চলে এলো। ইমরান সিড়ি থেকে নেমে রেহানের রুমের সামনে এসে বললো,
ইমরান- এই যে বাহিনী, আর একবার সাহস দেখাতে গেলে তিনটাকে তিন রুমে সারারাত বন্দী করে রাখবো।
রুমে এসে দেখলো নাফিসা জানালার পাশে দাড়িয়ে বাইরে তাকিয়ে আছে। ওড়না দিয়ে চোখের আর নাকের পানি মুছছে আর নাক টানার শব্দ শুনা যাচ্ছে। ইমরান দরজা বন্ধ করে আস্তে আস্তে হেটে নাফিসার কাছে এলো। পেছন থেকে দু’হাতে নাফিসাকে জড়িয়ে ধরে কাধে থুতনি রেখে বললো,
ইমরান- বৃষ্টি তো চোখেই আছে, শুধু শুধু ছাদে যাওয়ার কি প্রয়োজন!
নাফিসা হাত সরিয়ে পেছনে তাকিয়ে বললো,
নাফিসা- ছাড়! ধরবি না আমাকে। একদম স্পর্শ করবি না!
ইমরান দুহাত মেলে সামনে এগিয়ে নাফিসাকে একদম জানালার গ্রিলে মিশিয়ে দু’হাতে গ্রিল ধরে বললো,
ইমরান- ওকে, করলাম না স্পর্শ! হুম!
নাফিসার রাগান্বিত মুখ দেখে মুচকি একটা হাসি দিয়ে গালে গাল ঘষলো! নাফিসা সজোরে ধাক্কা দিয়েও সরাতে পারছে না! না পেরে ইমরানের পায়ে পাড়া দিয়ে মোচড় দিলো!
ইমরান- আহ! পাগল হয়ে গেছো! এতো দুষ্টুমির পরেও আমি আদর করছি আর তুমি আমাকে মারছো!
নাফিসা- আরেকবার কাছে আসবি তার চেয়েও ভয়ানক হয়ে যাবে নাফিসা! মাইন্ড ইট!
ইমরান- বাবারে! ওকে, আসবো না! দেখি আবার আমার প্রয়োজন পড়ে কি-না!
নাফিসার চোখেমুখে প্রচুর রাগ স্পষ্ট! সে চোখ মুছে গিয়ে বিছানার এক কোনে গুটিসুটি মেরে শুয়ে পড়লো! খুব রাগ হচ্ছে তার, ইমরানের সাথে এমন বিহেভও করতে চায়নি! কিন্তু অজান্তেই হয়ে গেছে! কেন জানি খুব ইচ্ছে করছিলো আজ বৃষ্টিতে ভিজতে! হতে দিলো না ইমরান সেটা!
ইমরান সোফায় বসে আবার ল্যাপটপ নিলো হাতে। কয়েক মিনিট পর নাফিসার দিকে তাকিয়ে দেখলো এখনো কাদছে! বিরক্ত হয়ে টেবিল ম্যাটের নিচ থেকে চাবি বের করে খাটে ঢিল মেরে দিয়ে বললো,
ইমরান- যাও, ভিজো যত পারো। শখ মিটিয়ে আসো। কোনোকিছুতে নিষেধ করলে এটা বুঝে না কেন নিষেধ করছি! একেবারে কান্নার বন্যা বয়ে যায়!
নাফিসা চাবি নিয়ে ঢিল মেরে ফ্লোরে ফেলে দিলো! ইমরান ল্যাপটপ রেখে সোফা ছেড়ে উঠে এলো। নাফিসা একটু ভয় পেয়ে গেছে! ভেবেছে অতিরিক্ত করে ফেলছে, না জানি ইমরান এখন মাইর লাগায়! কিন্তু ইমরান সোজা বেরিয়ে গেলো রুম থেকে। নাফিসা কম্বল টেনে মাথাসহ ঢেকে শুয়ে আছে।
ইমরান বেশ কিছুক্ষণ পর রুমে এসে দেখলো নাফিসা মাথা ঢেকে শুয়ে আছে। কাছে এসে আস্তে আস্তে কম্বলটা মাথা থেকে সরিয়ে দিলো। নাফিসা ঘুমিয়ে পড়েছে। ঠান্ডা আবহাওয়ায় গভীর ঘুমে তলিয়ে গেছে। ইমরান আবার নিজের কাজ করতে লাগলো।
সন্ধ্যায় নাফিসার ঘুম ভেঙেছে! এরপর থেকে ইমরানের সাথে একটা কথাও বলেনি নাফিসা। নাফিসা তার উপর রেগে আছে তাই ইমরানও বলেনি। দেখতে চায়, কতোক্ষন কথা না বলে থাকতে পারে!
রাতে ঘুমানোর সময় নাফিসা সোফায় ঘুমানোর জন্য বালিশ নিতে গিয়েও নিলো না। এর আগে ইমরান বলেছিলো যতরাগই হোক খাট থেকে যেনো না নামে তাই সে মাঝখানে কোল বালিশ রেখে শুয়ে পড়লো খাটে। ইমরান বাথরুম থেকে এসে দেখলো নাফিসা বালিশ রেখে শুয়ে আছে। সে কিছু বললো না। চুপচাপ অন্যপাশে শুয়ে পড়লো।
একে তো বিকেলে ঘুমিয়েছে তারউপর আবার বাজে অভ্যাস হয়ে গেছে ইমরানের! কোনো মতেই চোখে ঘুম আসছে না। একবার এদিক আরেকবার সেদিন ঘুরে ঘুরে ছটফট করছে নাফিসা। একটু পর ইমরানের দিকে তাকিয়ে দেখলো ইমরান মুচকি হেসে তার দিকেই তাকিয়ে আছে। নাফিসা আবার অন্যপাশে ফিরলো। আরও দুবার এপাশ ওপাশ করে উঠে বসে পড়লো। ইমরানের দিকে আবার তাকিয়ে দেখলো ইমরান এখনো মুচকি হেসেই তাকিয়ে আছে! নাফিসাকে উঠে বসতে দেখে মাঝখানের কোলবালিশ নিয়ে মেঝেতে ফেলে দিলো। মাথার নিচের বালিশটা টেনে মাঝামাঝিতে এনে নাফিসার দিকে দুহাত বাড়িয়ে দিলো,
ইমরান- আসেনাতো ঘুম! আসো আমার কাছে।
নাফিসা চুপচাপ বসেই আছে। ইমরান আবার বললো,
ইমরান- হাত নামিয়ে ফেলবো? আসো।
নাফিসা এবার ইমরানের কাছে এলো। ইমরান তাকে দু’হাতে বেধে ফেললো। ইমরান তো টিশার্ট পড়ে আছে, তাই নাফিসা আরাম পাচ্ছে না! সে নিজেই ইমরানের টিশার্ট খোলার জন্য উপরে তুলতে লাগলো।
ইমরান- আরে আরে কি করছো! আমার লজ্জা লাগে না বুঝি!
নাফিসা তাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিলো। ইমরান হাহাহোহো করে হাসতে হাসতে টিশার্ট খুলে আবার নাফিসাকে টেনে কাছে নিয়ে গেলো।
রিমার বিয়ে খেতে দুদিন আগেই যাবে। সকালেই সবাই প্রস্তুত! কিন্তু ইমরান নাফিসাকে যেতে দিলো না। অফিসের নানান অজুহাত দিয়ে সে যাবে না বলে নাফিসাকেও যেতে দিলো না। গায়ে হলুদের প্রোগ্রামে নিয়ে যাবে বলে বাকিদের পাঠিয়ে দিলো। নাফিসা রাগ করেছে কিন্তু কিছু বললো না। কি বলবে! এটা তো আর তার নিজের মামার বাড়ি না। যার মামার বাড়ি সে ই যেতে দিচ্ছে না এখানে আর তার কি বলার আছে! সে চুপচাপ রুমে চলে এলো। ইমরান রুমে এসে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে বললো,
ইমরান- রাগ করেছো! বিয়ে বাড়ি, থাকার জায়গার অভাব হবে! আমাদের পরিবারই তো কতো মানুষ! আবার কতোদিক থেকে কতো লোক আসবে। তাছাড়া বাবা চাচ্চুরাও যদি বিকেলের দিকে সেখানে যায়, আরও বেশি ঝামেলা!
নাফিসা- আমি কখন বললাম রাগ করেছি! তোমার মামার বাড়ি আমার কি!
ইমরান- একটুও কমেনি রাগ! ওকে আমি ফিরে এসে রাগ ভাঙ্গাবো। আমি সবাইকে কমলাপুর রেখে আসছি। প্রয়োজন ছাড়া রুম থেকে বের হবে না। বাইরে থেকে আমি মেইন দরজা লক করে যাচ্ছি। আর ফোন সাথেই রাখো। কল রিসিভ করতে যেন মিস না হয়।
ইমরান চলে গেলো। নাফিসা জানালার পাশেই দাড়িয়ে আছে মেঘলা আকাশ পানে তাকিয়ে। কয়েকদিন যাবতই একাধারে বৃষ্টি হচ্ছে। কখনো মুশুল ধারে আবার কখনো ঝিরিঝিরি। ঠান্ডা আবহাওয়া! মনে হচ্ছে এই বৃষ্টিই শীত নামিয়ে ছাড়বে!
ইমরান চলে গেছে অনেক্ক্ষণ হয়েছে। পাচ মিনিটও যায় না কল দেয়! নাফিসা রিসিভ করতে করতে বিরক্ত হয়ে যাচ্ছে! নাফিসার বোরিং লাগছিলো তাই কিছু করার চিন্তা করলো। একটু ভেবে সিদ্ধান্ত নিলো একটু সাজুগুজু করা যাক! বসে পড়লো সাজতে। হালকা সাজ সেজেছে। চোখে কাজল, ঠোঁটে হালকা গোলাপি লিপস্টিক। সেজেছে যখন শাড়ি পড়লে মন্দ হয়না! আলমারি খুলে সিল্কের শাড়িটা হাতে নিলো। তিন বান্ধবী একই রকমের শাড়ি কিনেছিলো নিসার বিয়ের আগে। সেটাই হাতে নিলো পড়ার জন্য। শাড়ি অর্ধেক পড়ার পরই তীব্র গতিতে বৃষ্টি শুরু হলো! এই বৃষ্টিতে গোসল করতে দারুণ মজা! কি করবে ভেবে পাচ্ছে না। এদিকে আরেক ইমরাইন্না কল করে বলেও দিচ্ছে ছাদেও যেন না যায়! শাড়ি পড়া শেষ করেছে। ইমরান আবার কল করলো, কিন্তু মন যে আর মানছে না! নাফিসা জানালার পাশে এসে রিসিভ করেই চেচিয়ে বললো,
নাফিসা- কিছু শুনতে পারছিনা আমি বৃষ্টির জন্য! ফোনে চার্জ নেই, কারেন্ট নেই এখনই ফোন বন্ধ হয়ে যাবে!
কথাটা বলে সাথে সাথে কল কেটে ফোন বন্ধ করে দিলো নাফিসা! ফিক করে একটা হাসি দিয়ে শাড়ি পড়েই ছাদে ছো মেরে দৌড় দিলো! একা একাই ভিজছে! ইমরান ফিরতে নিশ্চয়ই অনেক দেড়ি হবে! মামুর বাড়ি যাবে, ঘুরেফিরে দেখবে কিছুক্ষণ সময় কাটিয়ে তারপর না আসবে! এদিকে নাফিসা খুব আনন্দে বৃষ্টিতে ভিজছে! আট দশ মিনিটের মতো পাড় হতেই সে ঘুরে ঘুরে বৃষ্টির সাথে নাচছে। হঠাৎ কাউকে দেখে থমকে গেলো! ইমরান পকেটে দুহাত রেখে ছাদের দরজার সামনে দাড়িয়ে নাফিসার দিকে তাকিয়ে আছে। সেও বৃষ্টিতে ভিজছে! নাফিসা সাথে সাথে জিভ কাটলো! সে কখন এলো! ভয়ে ভয়ে এগোতে এগোতে দরজার কাছে এসে নিচে নামার জন্য দৌড় দিতে গেলেই ইমরান ধরে ফেললো।
ইমরান- কোথায় যাচ্ছো! ভিজবে না?
নাফিসা- ঠা…ঠান্ডা লাগছে!
ইমরান- কিন্তু আমার যে এখন ভিজতে ইচ্ছে করছে তোমাকে নিয়ে!
ইমরান নাফিসার শাড়ির নিচে হাত রাখতেই নাফিসা কেপে উঠে ইমরানের শার্ট খামচে ধরলো! একে তো বৃষ্টিতে ভেজায় ঠান্ডার কাপুনি! অন্যথায় ইমরানের স্পর্শ!
ইমরান- ফোনের চার্জ শেষ না? কারেন্ট নেই! বৃষ্টির জন্য কিছু শুনতে পাও না? আজ শখ মিটিয়ে ছাড়বো। দেখি কতক্ষণ ভিজতে পারো!
নাফিসা চোখ বন্ধ করে আছে। ইমরান লক্ষ্য করলো নাফিসার ঠোঁট জোড়া প্রচন্ড কাপছে! চোখের কাজল বৃষ্টির পানিতে অর্ধেক ধুয়ে গেছে আর অর্ধেক ছড়িয়ে আছে! নাফিসার এই রূপ ইমরানকে আরও কাছে টানছে! নাফিসার শরীর ঠান্ডা হয়ে গেছে বুঝতে পেরে তাকে কোলে তুলে নিচে নামতে লাগলো। রুমে এসে মাঝামাঝিতে নামিয়ে দিলো। দরজা লাগিয়ে নাফিসাকে ধরে এমনভাবে দাঁড়িয়েছে তার বুঝতে বাকি নেই ইমরান শার্ট খুলে দিতে বলছে! নাফিসা বোতাম খুলে শার্ট খুলে নিলো। ইমরানের ফর্সা উন্মুক্ত পিঠে বিন্দু বিন্দু জল দেখে লোভ সামলাতে পারেনি। হুট করেই সে পিঠের মাঝে আলতো চুমু একে দিলো! যা ইমরানকে আরও শিহরিত করে তুলেছে। নাফিসা হাতে শার্ট নিয়ে বাথরুমের দিকে পা বাড়াতেই ইমরান তার শাড়ির আঁচল টেনে বাধা দিলো এবং একটানে নিজের কাছে নিয়ে এলো। হাত থেকে শার্ট নিয়ে ফ্লোরে ফেলে তাকে কোলে তুলে নিয়ে বিছানার দিকে অগ্রসর হলো।
নাফিসা- ঠা..ঠান্ডা লাগছে আ..আমার। ভেজা কাপড়, চে..চেঞ্জ…
ইমরান- হুশশ!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here