অদ্ভুত_মেয়ে (season 2) Part- 42

0
3405

অদ্ভুত_মেয়ে (season 2)
Part- 42
Writer: #Nur_Nafisa
.
.
টেস্ট এক্সাম শেষ হতেই নাফিসা নারায়ণগঞ্জ চলে এসেছে। ফাইনাল এক্সাম নিকটে বিধায় পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। তাছাড়া মাঝে মাঝে ঘরের কাজ টুকটাক করে। সেন্টার কাছেই , ইমরান নিয়ে যাবে তাই নারায়ণগঞ্জ থেকেই এক্সাম দিবে নাফিসা। বিয়ের পর ক্লাস করেনি তাই বইয়ের অনেক কিছুই তার এখন সমস্যা! বন্ধুদের কাছ থেকে নোট নিয়ে পড়ছে। বিশেষ প্রব্লেম হলে মাহিন ভাইয়ার কাছে ফোনে জেনে নিচ্ছে। অনেক রাত পর্যন্ত বন্ধুদের সাথে আলাপ করে আর আর পড়ে। পড়া ঠিক আছে কিন্তু অন্যান্য বিষয়ে কথা ইমরানের ভালো লাগছে না। যেখানে ইমরানকে বিরক্ত করে ঘুমানোর জন্য আর এখন তাকে জিজ্ঞেস করতেই নাফিসা বলে “তুমি ঘুমাও গিয়ে, আমি পড়ে ঘুমাবো।” ইমরানের প্রশ্ন যদি এমন হয়, ” কি সমস্যা, দেখাও আমাকে। ” নাফিসার উত্তর হয়, “সারাদিন কাজ করছো, বিশ্রাম করো। আমার সমস্যা সমাধানের জন্য বন্ধুরা আছে!” কথাগুলো শুনতে খারাপ লাগলেও পড়াশোনার চাপ বেশি তাই ইমরানও আর কিছু বলে না। মেনে নিচ্ছে নাফিসার অবহেলা!
একদিন নাফিসা ভার্সিটি থেকে এডমিট কার্ড আনার জন্য ভার্সিটিতে গেলো। বাবার সাথে দুদিন আগে ঢাকা এসেছিলো। এডমিট কার্ড নিয়ে আসার সময় শিহাবের কাছ থেকে কিছু নোট নিবে আর দিনাও আসবে। শিহাব নাফিসাকে ধরলো, অনেক দিন পর দেখা। আজ কফি খাওয়াতে হবে! নাফিসাও অনেক দিন হলো বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেয় না। নোট নিতে নিতে আড্ডা দেওয়া হয়ে যাবে। তাই সে রাজি হয়ে গেছে। দিনাকে কল করে কফি শপে আসার জন্য বললো। সাথে নাকি অন্তুও আসছে। নাফিসা কফি অর্ডার করেছে দু কাপ। তারা কথা বলছে, লিখছে আবার কফিও খাচ্ছে। রাস্তার পাশেই কফিশপ। হঠাৎ কেন জানি মনে হলো নাফিসা ইমরানকে দেখেছে গাড়িতে। কিন্তু ইমরানের তো এখন অফিস টাইম! সাথে সাথেই ইমরানের কল চলে এলো। নাফিসা এবার নিশ্চিত সে তাহলে ইমরানকেই দেখেছে। আর ইমরান নিশ্চয়ই তাকে দেখে কল করেছে! তার সাথে একটু মজা করবে ভেবে ফোন রিসিভ করলো।
নাফিসা- আসসালামু আলাইকুম।
ইমরান- ওয়ালাইকুম আসসালাম। কোথায় তুমি?
নাফিসা- কেন? বাসায়!
ইমরান- ওহ আচ্ছা।
ইমরান সাথে সাথে কল কেটে দিলো। এবার নাফিসা ইমরানের অপেক্ষা করতে লাগলো। কিন্তু ইমরান আসছে না কেন! সে তো ভেবেছে ইমরান এখানে আসবে আর তাকে হাতেনাতে ধরবে! তাহলে কি সেটা ইমরান ছিলো না! নাফিসা আবার কল করলো।
ইমরান- কি?
নাফিসা- কোথায় তুমি?
ইমরান- যেখানে থাকার কথা। ব্যস্ত মানুষ, পরে কথা বলি।
ইমরান সাথে সাথে কল কেটে দিলো। দূর! তাহলে সেটা ইমরান ছিলো না! কিন্তু তাকে যে মিথ্যে বললো! যাক পরে না হয় বলে দিবে সত্যিটা। দিনা অন্তু এলে নাফিসা আরও কিছুক্ষণ আড্ডা দিয়ে বাসায় ফিরলো। পরেরদিন কল করে ইমরানকে এসে নিয়ে যেতে বললো কিন্তু এলো বড় মামা! ইমরান কেন এলো না! ভেবেছিলো একটু ঘুরে বাসায় যাবে তা আর হলো না! মামার সাথেই বাসায় ফিরলো। সন্ধ্যায় ইমরান বাসায় ফিরেছে,
নাফিসা- তোমাকে না বললাম যেতে! গেলে না কেন?
ইমরান- কেন, আমি গেলে আসতে আর বাবা গিয়েছে বলে কি আসোনি!
ইমরানের কথাটা মোটেও ভালো লাগেনি! নাফিসা ভেঙচি কেটে বেরিয়ে গেলো রুম থেকে। সারাদিন তো পড়াশোনার মধ্যেই কাটে, তাই হিমা হিয়াদের সাথে একটু দুষ্টুমি করতে লাগলো। ইমরান এসে হিমা হিয়া রেহান কে ধমক দিয়ে পড়তে বললো, কিন্তু নাফিসাকে কিছুই বলেনি! রাতে ঘুমাতে গেছে, ইমরান অন্যদিকে ফিরে ঘুমিয়ে গেছে আগেই। যদিও ইমরান জেগে আছে। নাফিসা তাকে টানলো এপাশে ঘুরাতে কিন্তু পারলো না। ইমরান ঘুমের ভান করে নাফিসার হাত সরিয়ে দিলো। নাফিসা আর চেষ্টা না করে পেছন থেকেই ঝাপটে ধরে পিঠে মাথা রেখে শুয়ে পড়লো।
এক্সাম দিচ্ছে, প্রতিদিনই ইমরান নিজেদের গাড়িতে করে সেন্টারে নিয়ে যায় আবার নিয়ে আসে। কিন্তু নাফিসার সাথে সে তেমন কথা বলে না। শুধু অতি প্রয়োজনীয় কথায় জবাব দেয়। নাফিসাও বুঝতে পারছে ইমরান তার সাথে অন্যরকম আচরণ করছে। এক্সাম শেষ করে বাসায় ফিরার পথে তিনদিন বলেছে একটু ঘুরাতে, কিন্তু ইমরান “অযথা সময় নষ্ট বা কাজ আছে ” বলে বাসায় ফিরে এসেছে। দিন যাচ্ছে আর ইমরানের অবহেলাও বাড়ছে। প্রায় দেড় মাস লেগে গেছে এক্সাম শেষ করতে! লাস্ট এক্সামের দুদিন আগে থেকেই নাফিসা কেমন অসুস্থ অনুভব করছে! ভেবেছে পড়াশোনার চাপে হয়তো দুর্বল হয়ে পড়েছে। শেষ এক্সাম দিতে একটু কষ্টও হয়েছে। ইমরানও লক্ষ্য করছে নাফিসাকে একটু দুর্বল দেখাচ্ছে। রাতে খেতে যাওয়ার সময় দুজন একসাথে সিড়ি দিয়ে নামছে। নাফিসা মাথা ঘুরে পড়ে যাচ্ছিলো ইমরান ধরে ফেলেছে! বাকি সিড়িগুলো সে ধরে নামালো। নাফিসা নিচের বাথরুমে এসে মাথায় পানি দিলো। খেতে ইচ্ছে করছে না তাই উপরে চলে এলো। বড় মামি গরম দুধ এনে খায়িয়ে গেলো। মাথায় তেল দিয়ে মেসাজ করে দিলো।
নাফিসা আর ইমরানের জন্য অপেক্ষা করে না। কারণ এক্সামের মাঝামাঝিতে একবার ইমরান তাকে দূরে সরিয়ে দিয়েছে। তার মাথা আর বুকে নিয়ে ঘুমায় না। নাফিসার খুব কষ্ট লেগেছে সেদিন। কিছু জিজ্ঞেস করলে ইমরান জবাবও দেয়না। তাকে যেন কোনো মূল্যই দেয় না। ভেবেছে এক্সামের পর কথা বলে তার সমস্যা জেনে মিটিয়ে নিবে সব। কিন্তু এখন নিজেই অসুস্থ বোধ করছে, ইমরানের সাথে দুষ্টুমি করার মানসিকতা তার মাঝে নেই! ঘুমিয়ে পড়েছে আগেই। সকালে আবার ভালো লাগছে। মাথাব্যথা দূর হয়ে গেছে। মামামামীরা সবাই নাকি সিলেট যাবে বেড়াতে। কিন্তু ইমরান জানিয়ে দিলো সে যাবে না। যাবে তো তিন চারদিনের জন্য। ইমরান একা বাসায় থাকবে, রান্না করে খাওয়াবে কে! তাছাড়া কিছুদিন আগে কক্সবাজার থেকে ঘুরে এসেছে তাই নাফিসা থেকে যেতে চাইলো। বাকিরা ঘুরে আসুক, ইমরানের সাথে যেকোনো সময় সে যেতে পারবে। তাই আর গেলো না। সবাই চলে গেছে এখন বাসায় শুধু নাফিসা আর ইমরান। এখন এখানে থাকতেও ভালো লাগছে না। ইমরান সারাদিন অফিস থাকে আর সে বাসায় একা! একবার ফোনও করে না। নাফিসা করলেও ইমরান রিসিভ করে না। মাঝে মাঝে রিসিভ করে, অপ্রয়োজনীয় কথা বলতেই টুট টুট কেটে দেয়! এক্সাম শেষ হওয়ার পর থেকেই সংসারের কাজে মনযোগ দিয়েছে নাফিসা । আর এখন যেহেতু মামিরা নেই সেহেতু সকল কাজেই তাকে হাত লাগাতে হবে। তবে নাফিসার আপত্তি নেই, এই সুযোগে অনেক কাজে দক্ষতা চলে আসবে।
রাতে ইমরান বাসায় ফিরলো। একসাথে খেতে বসেছে। অল্প খাবার খেয়েই উঠে পড়েছে নাফিসা। ভালো লাগছে না তার! সে ড্রয়িং রুমে টিভি ছেড়ে বসলো। দিনা কল করলে হেসে হেসে কথা বলতে লাগলো। আবার শিহাব অন্তু দিনা ও নাফিসা গ্রুপ কলে কথা বলতে লাগলো। ইমরান খেয়ে উপরে চলে গেলো। নাফিসা কথা শেষ করে টেবিলে এসে দেখলো ইমরান নেই। একটা নিশ্বাস ছেড়ে সবকিছু গুছিয়ে রাখলো। উপরে এসে দেখলো ইমরান ল্যাপটপ নিয়ে বসেছে। খাটে উঠে সে ইমরানের পাশে এসে বসলো। কাধে হেলান দিতেই ইমরান মাথা সরিয়ে দিলো। নিজে উঠে ল্যাপটপ নিয়ে সোফায় চলে গেলো। নাফিসার চোখে পানি এসে গেছে। একটু উঁচু গলায়ই বললো,
নাফিসা- এমন করছো কেন তুমি আমার সাথে! কি করেছি আমি! গত কয়েকদিন যাবত দেখছি শুধু কিছু বলছি না। বিনা কারণে অযথা এমন আচরণ করছো কেন আমার সাথে? কিছু বলছো না কেন!
ইমরান কোনো জবাবই দিলো না। একা একা কি যুদ্ধ করা যায়! এতো প্রশ্ন করছে কোনো কিছুরই জানান দিচ্ছে না! এমন আচরণের কোনো কারণও খুঁজে পাচ্ছে না! এভাবে হবে না। মামি আসুক, মামিকে জানাতে হবে ব্যাপারটা। না হলে আরও খারাপ কিছু হয়ে যাবে! এই বোবার মুখ থেকে তো কোনো শব্দই বের করতে পারছে না।রুম থেকে বেরিয়ে কিছুক্ষণ হাটাহাটি করে নিজেকে শান্ত আবার রুমে এলো। দিনা অনলাইনে এলে নাফিসা লুডু খেললো। ইমরান আড়চোখে তাকিয়ে দেখলো নাফিসার মুখে হাসি আর দৃষ্টি ফোনে! লাইট অফ করে মাঝে কোলবালিশ রেখে ইমরান শুয়ে পড়লো। নাফিসার শরীর আরও খারাপ লাগছে। বিছানা থেকে উঠে জানালার পাশে এসে শান্তা আপুকে কল করলো। ইমরানের আবার ডিস্টার্ব হলে উল্টাপাল্টা আচরণ করবে তাই আস্তে আস্তে কথা বলছে। অনেক্ক্ষণ কথা বলে এসে শুয়ে পড়লো।
মামিকে দিয়েই সমাধান করাবে তাই সে চুপচাপই আছে। তার কাজ শুধু তিন বেলার খাবার রান্না করা, ঘর ঝাড়ু দেওয়া এই ই! এক বেলা রান্না করলেই সারাদিন পাড় হয়ে যায়!
ইমরান দুপুরের দিকে অফিস থেকে এসে দেখলো নাফিসা কারো সাথে কথা বলছে। ইমরান আসার পরপরই কথা শেষ করে কল কেটে দিয়েছে। নাফিসা খাবার রেডি করার জন্য নিচে এলে ইমরান ফোনটা নিয়ে ডায়াল লিস্ট চেক করে দেখলো শিহাবের নম্বর প্রথমে! একটু পর আবার ফোন বেজে উঠলো। ইমরান হাতে নিয়ে দেখলো শিহাব কল করেছে! সাথে সাথে ফোনটা ফ্লোরে আছাড় দিয়ে ভেঙে ফেললো! ইমরান নিচে যাচ্ছে না বিধায় নাফিসা ডাকতে এসেছিলো। আর এসেই দেখলো তার ফোনের এই অবস্থা! টুকরো হয়ে এদিক সেদিক পড়ে আছে!
নাফিসা- এটা কি করলে! ফোন ভাঙলে কেন?
ইমরানের চোখ কেমন লাল হয়ে আছে! এক হাতে নাফিসার মুখখানা চেপে ধরে বললো,
ইমরান- ইচ্ছে হয়েছে করেছি। তোর কাছে জবাবদিহি করতে হবে? এতো কিসের কল আসে! বন্ধুবান্ধব তো আমারও আছে! কই আমি তো সারাদিন ফোন নিয়ে ব্যস্ত থাকি না! মেয়েদের ফোনে ছেলেদের কেন কল আসবে! বিয়ে হয়েছে তবুও পর পুরুষের সাথে এতো কথা কিসের!
নাফিসা ছলছল চোখে তাকিয়ে আছে! মুখ চাপ দিয়ে ধরেছে বিধায় খুব ব্যাথা লাগছে। ইমরান তাকে ছেড়ে দিয়ে ধাক্কা দিয়ে দরজার সামনে থেকে সরিয়ে বেরিয়ে গেলো! নাফিসা ফ্লোরে বসে কান্না করে দিলো! এসব কি হচ্ছে তার সাথে! ইমরান এতোটা পরিবর্তন হয়ে গেলো কিভাবে! কি বলে গেলো ছাতামাথা তো কিছুই বুঝতে পারলো না!
প্রায় অনেক্ক্ষণ যাবত কান্না করলো। ঘড়ির দিকে তাকাতেই দেখলো সাড়ে তিনটা বেজে গেছে। আপু চারটার কথা বলেছিলো। সে উঠে চোখ মুছে নিচে এলো। ইমরান খায়নি! দরজা তো ভেতর থেকে লক করা, তাহলে বাইরে যায়নি। ছাদে গেছে হয়তো। খাবার ঢেকে রেখে রুমে এসে তারাতাড়ি বোরকা হিজাব পড়ে রেডি হয়ে গেলো। একটা কাগজ নিয়ে কিছু লিখে ড্রেসিং টেবিলের উপর ভাজ করে রেখে সে পার্স নিয়ে বেরিয়ে গেলো। ইমরান ছাদে দাড়িয়ে থেকেই দেখলো নাফিসা রাস্তায় দাড়িয়ে আছে! সে কি চলে যাচ্ছে! যাক! নিজেও এক অভিমান নিয়ে দাড়িয়ে রইলো। সাত আট মিনিটের মতো দাড়িয়ে আছে একটা গাড়িও চলছে না রাস্তায়! কোনো অবরোধ তো ডাকা হয়নি তাহলে গাড়ি চলছে না কেন! শুধু মাঝে মাঝে একটা দুইটা বাইক আসতে দেখা যাচ্ছে। হঠাৎ কোথা থেকে বাইকে করে শিহাবের আগমন! ইমরান ছাদে থেকেই শিহাবকে দেখে চমকে উঠলো! নাফিসা তাহলে কল করে শিহাবকে আসতে বলেছে!
এদিকে নাফিসাও শিহাবকে দেখে হতবাক! নাফিসার নিকাব পড়া তবুও শিহাব তাকে চিনতে পেরেছে!
শিহাব- কিরে কোথায় যাচ্ছিস? তুই তো ইনভাইট করছ না, এমনিতেই চলে এলাম তোর শশুর বাড়ি!
নাফিসা- তুই এখানে কিভাবে?
শিহাব- জব নিয়েছি তো একটা মার্কেটিংয়ের। প্রোডাক্ট ডেলিভারি দিতেই এলাম নারায়ণগঞ্জ।
নাফিসা- ওহ আচ্ছা। ভালোই তো। বাসায় কেউ নেই, তাছাড়া আমি নিজেই এক জায়গায় যাচ্ছি। আজ নিতে পারছি না। অন্য একদিন আসিস!
শিহাব- না, তুই বললেও আমি আজ যাবো না। আমার কাজ আছে। ফোন দিয়েছিলি কেন?
নাফিসা- কখন?
শিহাব- ঘন্টাখানেক আগে তোর নম্বর থেকে মিসড কল এলো। তারপর ব্যাক করলাম, ফোন বন্ধ!
নাফিসা- ওহ, আপুর সাথে কথা বলেছিলাম। ভুলে তোর নম্বরে ডায়াল হয়ে গেছে।
শিহাব- ওহ! কোথায় যাবি?
নাফিসা- আপুর সাথে একটু হসপিটাল যাবো। কিন্তু একটা গাড়িও আসছে না! আজ অবরোধ আছে?
শিহাব- হাহাহা… কোনো অবরোধ নেই! অনেক বড় জ্যাম লেগে আছে। আগামী এক ঘন্টায় ছুটবে নাকি সন্দেহ! আমি কোনোমতে বাইক নিয়ে ছুটে এসেছি!
নাফিসা- অহ!
শিহাব- তুই একা কেন?
নাফিসা- একার প্রয়োজন তাই একাই যাবো।
শিহাব- উঠ আমি স্ট্যান্ড পর্যন্ত নামিয়ে দেই।
নাফিসা- না। তুই যা। রিকশা পেলে চলে যাবো।
শিহাব- রিকশাও পাবি না। আমার সাথে চল স্ট্যান্ড পর্যন্ত নিয়ে যাই। সেখান থেকে সিএনজি অথবা বাসে উঠে যেতে পারবি।
নাফিসা দোটানায় পড়ে শিহাবের বাইকেই উঠে পড়লো। এমনিতেই দেড়ি হয়ে গেছে! স্ট্যান্ড পর্যন্ত এসে একটা সিএনজি রিজার্ভ করে মাতুয়াইল হসপিটাল চলে এলো। শান্তা আপু সেই কখন এসে মাহিকে ডাক্তার দেখিয়ে বসে আছে। নাফিসা দেড়ি করে আসায় বকাঝকা করলো। হসপিটালে ভীড় অনেক। ডাক্তার দেখালো নাফিসা। টেস্ট করার পর ডাক্তার ৯০% নিশ্চিত বললো নাফিসা প্রেগন্যান্ট! তারও মনে হচ্ছিলো সেটা, শান্তা আপুর কাছে তার কনডিশন বলার পর শান্তা আপুরও এটাই মনে হয়েছে। মাহিকে নিয়ে হসপিটাল আসবে তাই নাফিসাকে এখানে এসে টেস্ট করিয়ে নিতে বললো। এখন ৯০% তো নিশ্চিত হয়েছে, শান্তা আপুও জেনে খুশি হয়েছে। মনে মনে ভাবছে ইমরান কতটা খুশি হবে! আগে কিছু বলবে না, ইমরানকে সরাসরি রিপোর্ট দেখাবে। আর শান্তা আপুকেও নিষেধ করে দিলো কাউকে কিছু জানাতে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here