অদ্ভুত_মেয়ে (season 2) Part- 43

0
3692

অদ্ভুত_মেয়ে (season 2)
Part- 43
Writer: #Nur_Nafisa
.
.
কিছুক্ষণ বসে থেকে জানতে পারলো রিপোর্ট কাল দিবে। এদিকে মাগরিবের আযান দিয়ে ফেলেছে। শান্তা আপু আর নাফিসাকে একা ছাড়লো না। শান্তার ফোন নষ্ট, মাহিন ভাইয়া বারবার ড্রাইভারের কাছে কল করে তাড়া দিচ্ছে বাসায় ফেরার জন্য। সে নাফিসাকে তাদের গাড়িতে করে সাথে বাসায় নিয়ে এসেছে। তারাহুরোর কারণে মাহির ওষুধ নিতেই ভুলে গেছে!
ইমরান নাফিসাকে শিহাবের সাথে যেতে দেখে রেগে আগুন হয়ে আছে! সারারাত কেটে গেছে, এক মুহুর্তের জন্য নিজেকে শান্ত করতে পারেনি! ড্রয়িং রুমে বসে ছিলো নাফিসার অপেক্ষায়! চোখের সকল রগ লাল হয়ে আছে! সম্পূর্ণ শরীরে রাগ, কষ্ট জমাট বেঁধে আছে!
সকালে শান্তা আপুর বাসায়ই নাস্তা করে নাফিসা আপুর সাথে আবার হসপিটাল এলো। এখানে এসে দেখলো রিপোর্টের জন্য লম্বা সিরিয়াল! প্রায় নয়টা বেজে গেছে। ইমরান তো অফিস যাবে! রান্নাবান্না করা নেই! আপুকে রিপোর্ট নিতে বলে নাফিসা বাসার উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়লো। সিএনজি রিজার্ভ করে একেবারে বাসায় এসে পৌছেছে। ভাড়া বেশি লাগলেও একা মানুষ ভেজালমুক্ত পথ বেছে নিয়েছে। ড্রয়িং রুমের দরজা খোলা ই আছে। নাফিসা দরজা ঠেলে ভেতরে প্রবেশ করতেই দেখলো ইমরান সোফায় বসে আছে। নাফিসাকে আসতে দেখে সোজা হয়ে তাকালো তার দিকে। চোখ রক্তাবর্ণ হয়ে আছে! মুখ কেমন গম্ভীর! খুব ভয়ার্ত দেখাচ্ছে ইমরানকে! সে রাতে ঘুমায়নি! নাফিসা ভয় পেয়ে গেছে এই চেহারা দেখে।
নাফিসা- এমন দেখাচ্ছে কেন তোমাকে? রাতে ঘুমাও নি?
ইমরান তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে উঠে দাড়িয়ে বললো,
ইমরান- আমার কথা ছাড়ো। তোমার রাত কেমন কাটলো শিহাবের সাথে, মিস সাঈফা নূর নাফিসা?
নাফিসা- হোয়াট! কি বললে তুমি?
ইমরান- না, মানে জিজ্ঞেস করলাম শিহাবের সাথে তোমার রাত কেমন কাটলো। থাক বলতে হবে না। খুব এনজয় করেছো বুঝাই যাচ্ছে। তা এ বাড়িতে পা রাখলে কোন সাহসে? শিহাব কি শুধু এক রাতের জন্যই তোমাকে নিয়ে গেছে! আর প্রয়োজন নেই তোমার? রাত শেষ তো প্রয়োজন শেষ!
নাফিসা- মুখ সামলে কথা বলো তুমি। উল্টাপাল্টা কিছু বলার আগে তোমার মুখে আটকালো না!
ইমরান- খবরদার, আরেক পা সামনে এগিয়েছিস তো। তোর সাহস কি করে হয় পর পুরুষের সাথে রাত কাটিয়ে এ বাড়িতে পা ফেলার! কি ছিলো ওই শিহাবের কাছে যেটা তুই আমার কাছে পাসনি? কিসের অভাবে রেখেছিলাম তোকে? কেন এমন প্রতারণা করলি, আমাকে ঠকালি, আমার পরিবারকে নিয়ে খেলা করলি! কি ভেবেছিস তুই, আমি কিছু বুঝতে পারিনি! রাতের পর রাত শিহাবের সাথে কথা বলা, ভার্সিটির নাম করে কফিশপে ডেটে যাওয়া! অবশেষে বাড়ির সকলের অনুপস্থিতিতে বাইরে গিয়ে রাত কাটানো! ছি! ভাবতে ঘেন্না লাগছে যে আমি এমন কাউকে নিয়ে স্বপ্ন দেখেছি! এমন কারো জন্য নিজের সম্পর্কে ভাবতে ভুলে গেছি!
নাফিসা- ভাইয়া, চুপ করো! নিতে পারছিনা আমি এসব! না জেনে উল্টাপাল্টা ভেবো না! আমি রাতে শান্তা আপুর কাছে ছিলাম।
ইমরান- হ্যাঁ, ধরা পড়লে এখন তো কতোকিছুই আসবে! শান্তার বাসায় যাবি, শান্তা নিষেধ করলে বলবি ইমার বাসায় গেছি, ইমা নিষেধ করলে বলবি বাবার বাসায় গেছি!
নাফিসা- প্লিজ চুপ করো, বিশ্বাস না হলে তুমি মাহিন ভাইয়ার ফোনে কল করে জিজ্ঞেস করো।
ইমরান- আমার কাছে আসা তো দূরে থাক, এক কদমও ফেলবি না ঘরে। লাগবে না আমার কারো সাফাই! সব সাজিয়েই এসেছিস! শান্তার কাছে যেতে হলে তোর শিহাবকেই ডাকতে হলো! সাহস দেখলে অবাক না হয়ে পারি না! একেবারে বাসার সামনে থেকে রিসিভ করতে বলেছিস! বাহ! এতোটাই যখন পছন্দ ছিলো এতো নাটক করার কি প্রয়োজন ছিলো! ডিভোর্স নিয়ে চলে যেতে পারতি! একটুও বাধা দিতাম না তোকে! কোনো প্রয়োজন নেই তোর। বেরিয়ে যা, শিহাব কেন শুধু, যার কাছে ইচ্ছে তার কাছেই যা। কেউ তোকে বাধা দিবে না! আর লুকিয়ে লুকিয়ে ফোনে কথা বলতে হবে না, লুকিয়ে দেখা করতে হবে না। হাত জোর করছি তোকে, আমার নাম চিরদিনের জন্য মুছে তারপর কারো কাছে যা! ভুলেও দ্বিতীয়বার এই বাড়ির সীমানায় তোর ছায়া ফেলবি না! তোর মতো দুশ্চরিত্রার দেখা যেন আমার কখনো না মিলে!
নাফিসা স্তব্ধ হয়ে গেছে ইমরানের কথায়! এ কোন অপবাদ দিলো ইমরান তাকে! কি সুন্দর একটা সারপ্রাইজ নিয়ে এসেছিলো সে নিজেই সারপ্রাইজড হয়ে গেছে! ইমরান তাকে এতো কঠিন কথা বললো কিভাবে! আর যাইহোক, চরিত্র নিয়ে যখন সন্দেহ এনেছে তার উপর তখন তার সংসার সজ্জিত হবে কিভাবে! অত্যাচার করলেও মেনে নেওয়া যেতো কিন্তু চরিত্র কলঙ্কিত করে ফেলে এমন পুরুষের সাথে সংসার করা যায় না! যেখানে সে নিজেই ডিভোর্স চেয়ে নিয়েছে সেখানে আর তার কি করার থাকে!
নাফিসা খুব কঠিন হয়ে বললো,
নাফিসা- ঠিক আছে, দেখবে না কখনো আমার ছায়া! পাঠিয়ে দিও ডিভোর্স পেপার। সাইন করে দিবো।
নাফিসা দরজার সামনে থেকেই দৌড়ে বেরিয়ে গেলো। ইমরানের সারা শরীর কাপছে রাগে, যন্ত্রণায়! টেবিলের উপর থেকে ফুলের ভেস সব আছড়ে ফেলে ভেঙে ফেললো! কাচের জগ আর গ্লাস রাখা ছিলো, ঢিল মেরে ফেলে গুড়ো করে ফেললো! ভয়ঙ্কর পশুর মতো চিৎকার দিয়ে মেঝেতে বসে পড়লো! সব শেষ হয়ে গেছে তার! কতো ভালোবাসা দিয়েছিলো, কতো স্বপ্ন বুনেছিলো তাকে নিয়ে সব শেষ করে দিয়েছে সে! কি করে পারলো তাকে এভাবে ঠকাতে! পাগল হয়ে যাচ্ছে ইমরান! একটু পরেই বাড়ির বাকি সদস্যরা ফিরলো। তারা বাসার সামনে আসতেই শান্তাও মাহিকে নিয়ে গাড়ি থেকে নামলো। তাদের সাথে কথা বলে খুশি মনে বাসার ভেতরে প্রবেশ করতেই বিশৃঙ্খল অবস্থা দেখে সবাই হতম্বর! ড্রয়িং রুমের অবস্থা তো করুনই, সাথে ইমরানের অবস্থা নাজেহাল!
শান্তা- ভাইয়া!
বড় মামি- ইমরান!
ছোট মামা দৌড়ে ইমরানের কাছে এলো।
ছোট মামা- কি হয়েছে ইমরান! এভাবে বসে আছিস কেন?
বড় মামি- আরে, কিছু বলছিস না কেন! নাফিসা কোথায়! নাফিসায়ায়া…?
ইমরান বসা থেকে উঠে দাড়ালো।
ইমরান- ভুলেও ওই মেয়ের নাম মুখে আনবে না কেউ। কোনো দুশ্চরিত্রা মেয়ের নাম এবাড়িতে কেউ উচ্চারণ করবে না।
বড় মামি- কি বলছিস এসব!
ইমরান- কি বলছি বুঝতে পারছো না? বুঝবেই কি করে! আমি এতো কাছে থেকেই তো বুঝতে পারিনি! দুধ কলা দিয়ে কাল সাপ পুষে রেখেছো বাড়িতে! ছোট থেকেই যাকে এতো ভালোবাসো সে ই আজ তোমাদের মুখে চুনকালি মাখিয়ে গেছে! বিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও রাত নেই দিন নেই পরপুরুষের সাথে কথা বলে। সংসারে তো কোনো মনযোগ নেই ই বন্ধুবান্ধব নিয়ে আড্ডা। ভার্সিটির নাম করে বাইরের ছেলেদের নিয়ে ডেটে যাওয়া! অবশেষে কাল রাতও বাইরে কাটিয়েছে তার বন্ধুর সাথে! কতটা দুশ্চরিত্রা মেয়েকে এতো আদর করো ভাবতে পারছো!
কথাটা বলার সাথে সাথে ইমরানের গালে তার বাবার হাতে সজোরে একটা থাপ্পড় পড়লো!
বড় মামা- আরেকবার যদি এমন কিছু উচ্চারণ করছ, জ্বিভ ছিড়ে ফেলবো।
ইমরান- করো না যা ইচ্ছে। তাই বলে কি সত্য ঢাকা পড়বে! মেরে ফেলো আমাকে তবুও নিজের চোখে দেখা অবিশ্বাস করি কিভাবে!
শান্তা- ছি! ভাইয়া! এটা কি বললে তুমি! নাফিসাকে নিয়ে এমন কিছু ভাবলে কিভাবে!
ইমরান- দয়া করে ওই নামটা আর উচ্চারণ করিস না। আমি তোকে অনেক ভালো মনে করি, দয়া করে ওই মেয়ের নামে সাফাই দিস না! নিজের থেকেও বেশি বিশ্বাস করতাম! আজ সব ধ্বংস করে দিয়েছে!
শান্তা- সাফাই দিতে চাচ্ছি না আমি! এসেছিলাম ভালো একটা খবর নিয়ে কিন্তু এই ভালোর পরিনাম যে এতোটা তীক্ষ্ণ হবে সেটা আমার ভাবনার বাইরে ছিলো! কাল রাতে আমার কাছে থেকেছিলো নাফিসা। আমার ফোনটা কাস্টমার কেয়ারে থাকায় জানাতে পারিনি তোমাকে! মাহিন জরুরি কাজে বাইরে ছিলো ফিরেছে অনেক রাত করে, তার ফোন থেকেও জানাতে পারিনি! আর ঘন্টার পর ঘন্টা রাতে দিনে ফোনে কথা বলার কথা বললে না, সেটাও সে আমার সাথেই বলতো। এক্সাম শেষ হওয়ার দুতিনদিন আগে থেকেই তার শরীর দুর্বল লাগছে, অসুস্থতা অনুভব করছে এসব কি তোমরা কেউই লক্ষ্য করোনি! প্রায় প্রতিদিনই অস্থিরতার কথা বলে। মাহিকে ডাক্তার দেখাতে হসপিটাল গিয়েছিলাম তাই তাকেও কল করে বলি কাল আমার সাথে হসপিটাল যেতে, ডাক্তার দেখাতে। হসপিটালেই সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছিলো তাই আর তাকে একা আসতে দেইনি। সাথে করে আমি বাসায় নিয়ে গিয়েছি। সকালে রিপোর্ট আনতে আবার হসপিটালে এসেছি, একটু লেট হবে তাই তোমার নাস্তা রেডি করার কথা ভেবে আমাকে সিরিয়ালে দাড় করিয়ে সে চলে আসে। আর আমি রিপোর্ট নিয়েই এখানে এলাম। এটাও সে আমাকে বলেছে তোমার সম্পর্ক ওর সাথে ভালো যাচ্ছে না কিছুদিন ধরে। তোমার আচার ব্যবহার অনেক ভিন্ন হয়ে গেছে। ফোনে কিছু বলতে চাইনি, ভেবেছি এ নিয়ে তোমার সাথে সরাসরি কথা বলবো। কারণ ফোনে সব ব্যাপার বুঝে উঠা যায় না! কিন্তু সুযোগ হয়ে উঠছিলো না তোমার সাথে দেখা করার! কিন্তু এখানে এসে যা শুনলাম তাকে এখানে রাখার কথা ভেবেও ভুল করবো না। কোথায় সে? মামামামী, ক্ষমা করো পারলে। আমি নাফিসাকে এখানে রেখে যাবো না।
মেঝ মামি- শান্তা, এসব বলো না। ওদের একটা ভুল বুঝাবুঝি হয়েছে। ঠিক হয়ে যাবে। নাফিসাকে আমরা সিলেট যাওয়ার আগেও একটু অসুস্থ দেখেছি। কি হয়েছে তার? রিপোর্ট কি এসেছে?
শান্তা- নাফিসা প্রেগন্যান্ট, মামি।
সবাই শান্তার দিকে তাকালো! শান্তা রিপোর্ট বের করলো। ছোট মামি হাতে নিয়ে রিপোর্ট দেখলো। ইমরান প্রথম থেকেই শান্তার কথা শুনছিলো আর এখন প্রেগ্ন্যাসির কথা শুনে তো সে স্তব্ধই হয়ে গেছে! এগিয়ে এসে খপ করে ছোট মামির হাত থেকে রিপোর্ট নিয়ে দেখতে লাগলো! চোখে তার পানি টলমল করছে! শান্তা আবার বলতে লাগলো,
শান্তা- কালকেই ডাক্তারের কাছে জেনে গেছি। কিন্তু নাফিসা কাউকে জানাতে নিষেধ করেছে। সে চেয়েছে রিপোর্ট নিয়ে সবার আগে ভাইয়াকে দেখাবে! আর এই হলো তার পরিনতি! কোথায় নাফিসা? নাফিসায়ায়ায়া?
ইমরান শান্তার দিকে তাকিয়ে বললো,
ইমরান- নাফিসা নেই বাসায়। চলে গেছে সে।
বড় মামি- চলে গেছে কেন? কি বলেছিস তুই?
ইমরান শুরু থেকে যতটুকু সম্ভব সবটা খুলে বললো। সবাই ই ইমরানের উপর রেগে আছে। সবাই ই নির্বাক! একটা মেয়ের চরিত্র নিয়ে উল্টাপাল্টা বলা কেউই সহ্য করতে পারছে না!
শান্তা- ছি! এতোটা নিচু তোমার মানসিকতা! এতোদিনে এই চিনেছো নাফিসাকে! ওকে তো তুমি ছোট থেকেই জানো, তাহলে এমনটা ভাবলে কিভাবে তার সম্পর্কে! আমি যখন জানতে চেয়েছি হসপিটাল কিভাবে পৌছেছে, তখন সে বলেছে আমাকে। জ্যাম থাকার কারণে গাড়ি চলাচল করছিলো না তাই যেতে দেড়ি হয়েছে। আবার রাস্তায় নাকি শিহাবের সাথে দেখা হয়েছিলো। সে স্ট্যান্ড পর্যন্ত নামিয়ে দিয়েছে। সেখান থেকে সিএনজি রিজার্ভ করে হসপিটাল পৌছেছে একা একা। কিন্তু এখন কোথায় গেছে!
ইমরান- জা..জানি না আমি! তাড়িয়ে দিয়েছি আমি তাকে!
ইমরানের বাবা আরও দুইটা থাপ্পড় মেরেছে। আরও মারতো ,ছোট চাচ্চু এসে বাধা দিয়েছে।
বড় মামা- ছাড় আমাকে! কোন জানোয়ার জন্ম হয়েছে আমার ঘরে! মেরে ফেলবো আজ! এই মুহূর্তে আমার মেয়েকে বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে আয় বলছি! ফিরে না আসা পর্যন্ত তোর চেহারা দেখাবি না।
শান্তা- মামা, শান্ত হও তুমি। আমি মাকে কল করে দেখছি নাফিসা বাসায় ফিরেছে কিনা!
শান্তা কল করলো মায়ের ফোনে। রিসিভ করে শান্তা “হ্যালো মা, ” বলতেই ইমরান ফোন নিয়ে নিলো শান্তার হাত থেকে।
ইমরান- হ্যালো, ফুপি? নাফিসা ফিরেছে তোমার কাছে?
– হ্যাঁ, ইমরান। কি হয়েছে, এই মাত্রই এসেছে। ঘরে এসেই আমাকে ধরে হাউমাউ করে কেদে উঠলো। কিছু না বলে রুমে দরজা লাগিয়ে কাদছে। কিছু বলছেও না, দরজাও খুলছে না!
ইমরান- ফুপি, আমি এসে বলবো। তুমি ওকে চোখে চোখে রাখো। আমি এখনই আসছি।
ইমরান শান্তার হাতে ফোন দিয়ে বেরিয়ে যেতে নিলো। আবার ফিরে এসে দৌড়ে দোতলায় গিয়ে ফোন আর ওয়ালেট নিয়ে দৌড়েই নিচে নেমে এলো। কারো দিকে কোন খেয়াল না দিয়ে সোজা গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়লো।
বাবার হাতে থাপ্পড় খেয়েছে সে খেয়ালই নেই! কে কি বলেছে তা নিয়ে মাথাব্যথা নেই দৃষ্টি শুধু ফাকা রাস্তায় আর মাথায় শুধু নাফিসা! শুধু ভেবে যাচ্ছে নাফিসা কি করছে! কতটা কষ্ট পেয়েছে তার কথায়! নিজের উপর রাগ হচ্ছে! না জেনে না বুঝে উল্টাপাল্টা বলতে গেলো কেন! নাফিসা কয়েকবার চেয়েছে তার সাথে কথা বলতে, সে তাকে সুযোগ দিলো না কেন! সন্দেহ যেহেতু ছিলো তাহলে সে ক্লিয়ারলি নাফিসাকে জিজ্ঞেস করলো না কেন! প্রেগন্যান্ট অবস্থায় তার মুখে এসব কথা শুনার পর এখন নাফিসার কতটা খারাপ লাগছে, তা ভাবতে পারছে না ইমরান! শুধু দোয়া করে যাচ্ছে, নাফিসা উল্টাপাল্টা কিছু যেনো না করে!
বেশ কিছুক্ষণ কান্নাকাটি করে নিজেই নিজেকে শান্ত করলো নাফিসা। এভাবে ভেঙে পড়বে কেন সে! তার মাঝে তো কেউ আছে! তাকে নিয়ে বাচবে সে। তার জন্য যত সংগ্রাম করতে হয় করবে। পৃথিবীতে কতো এতিম অনাথ আছে তারাও বেচে আছে। কতো নারী স্বামী ছাড়া আছে তারাও তো বেচে আছে, তাহলে সেও পারবে। প্রয়োজন নেই ইমরানকে। নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার অনেক সুযোগ আছে তার কাছে। জানতেই দিবে না ইমরানকে সন্তানের কথা!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here