অদ্ভুত_সম্মোহনী?♥
PART_09
#FABIYAH_MOMO?
সাদ থাপ্পর মেরে হাতভাজ করলো আবদ্ধ ভাবে। টোটালি রাগে ঠোঁট কুচকে দাড়িয়ে আছে সে। রূপ গালে হাত দিয়ে মুখ কাত করে থমকে আছে পুরো। রাহা চোখ নিচু করে আড়চোখে দেখছে সবই। সাদ রাগে কটমট করে বলে উঠলো,
— লজ্জা কি সিরিয়াসলি নেই? ডোন্ট ইউ নো, হাও টু বিহেব উইথ ইউর সিস্টার! এভাবে কেউ কথা বলে বোনের সাথে?
রূপ মাথা উঠিয়ে সাদের দিকে অসহায় দৃষ্টিতে তাকালো। সাদ রূপের দিকে মারাত্মক ভয়ঙ্কর দৃষ্টি ছুড়ে রাহার হাত ধরে অনুষ্ঠান থেকে নিয়ে গেলো। বাড়ির সবাই খুব হুড়োহুড়ি টাইপ ব্যস্ততায় মগ্ন থাকলে রাহা ও রূপের কারনামায় কেউ তাকানোর মতো সুযোগ পায়নি।
রাহাকে নিয়ে সাদ রাস্তায় চলে আসতেই সাদ পকেট থেকে একটা চাবির গোচ্ছা বের করলো। রাস্তায় থামানো একটা কালো ও ডিপ লাল রঙের বাইকের মধ্যে একটা চাবি ঢুকিয়ে বাইক স্টার্ট দিলো সাদ। রাহার দিকে গমগম গলায় বাইকের হ্যান্ডেলে হাত রেখে বলে উঠলো,
— তোমাকে নতুন করে ইনভিটেশন দিতে হবে মিস রাহা??ডু ইউ নিড এ্যা ইনভিটেশন ফ্রম মি?
রাহা সাদের পরিবর্তিত ফর্ম দেখে বিচলিত চাহনিতে তাকিয়ে আছে। সাদের সাদাসিধে রূপ কিরূপ পাল্টে গেলো ভেবে পাচ্ছেনা রাহা। সাদ চুলগুলো কানের পাশ দিয়ে পিছনে ফেলে চোখ তীরের মতো ছুড়লো! রাহা বিষম খেয়ে কাচুমাচু করে বাইকে উঠলো সাদের। সন্ধ্যার আচঁ ফুটেছে আকাশে। পুরো আকাশে বেগুনি রঙের আভা। সেই আভায় বাতাসের হিম দুলুনি হচ্ছে ধীরে ধীরে। বাইকের স্পিড আশির কিছুটা এইপার ওইপার হচ্ছে। রাহা সাদের খয়েরী রঙের পান্জাবীটা কাধের দুই সাইডে খামচে ধরে আছে। রাহার নখের আচঁড় লেগে ব্যথা অনুভব হচ্ছে সাদের। বাইকে ভুম ভুম স্পিড তুলে আরোহনের মাঝেই রাত্রি নেমে আসলো পথে। সাদ একটা সুনশান ব্রিজে বাইক থামালো। রাহাকে বাইক থেকে নিচে নামতে বলে সাদও নেমে পড়লো বাইক থেকে। সাদ বাইকটা সাইড করে রাখতেই রাহা ব্রিজের ধার ধরে দাড়ালো। বাতাসে ঢেউ খেলানো চুলগুলো উড়ছে। সাদ এসে রাহার পাশে দাড়িয়ে চুপচাপ আকিশ দেখায় মনোযোগী হলো। কিছুকাল নিরবতা কাটিয়ে রাহা সাদের দিকে চোখ তুলে তাকালো। আকাশে উঠা গোলাকার চাদেঁর চন্দ্রকিরণে সাদের মুখটা পুরোপুরি আর্কষনীয় লাগছে তার কাছে। বাতাসের কারনে সাদের নরম পাতলা চুলগুলো কপালে লেপ্টে গেছে মেয়েদের মতো। আচ্ছা সাদ কেনো চুলগুলো পেছনে ঠেলে দিচ্ছেনা? সে কি জানে না রাহা তার চুলের দৃশ্য দেখে দূর্বল হয়ে পড়ছে!! এই দৃশ্য আর কিছুক্ষণ দেখতে থাকলে বেহায়া হয়ে উঠবে হাতদুটো!! অপলকেই হাত একটা চলে যাবে সাদের কপালে চুলগুলো সরাতে!! রাহা হাত মুষ্ঠিমেয় করে চোখ দিয়ে পিটপিট করে দেখছে।। সাদ ব্রিজের ধারের উপর দুইহাত রেখে শান্ত গলায় বলে উঠলো,
— আমার আজ মন খারাপ রাহা। ভীষণ মন খারাপ। একটা ছেলে হয়ে জন্মানো বড়ো কঠিন ব্যাপার জানো? কতোটা কঠিন ব্যাপার হয়তো আমার জায়গায় থাকলে বুঝতে। একটা ফ্যাক্ট বলি। সবার মন খারাপের ঔষুধ থাকে। মনকে ভালো করার জন্য কিছু না কিছু উপায় থাকে। কেউ কানে হেডফোন গুজে ফুল সাউন্ডে গান শুনে, কেউ অন্ধকার রুমে বালিশে মুখে ডুবিয়ে অঝোরে কান্না করে। আবার দেখবা কেউ কেউ ভ্রমনে বের হয়। বাট আমার ক্ষেত্রে বুঝছো এগুলার একটাও কাজে দেয়না। আমার যে মেডিসিন লাগে সেটা আমি চাইলেও কাছে পাইনা। মানে বিশ্বাস করো মারাত্মক লেভেলে পাগল হয়ে যাই আমি! মনে হয় দৌড়ে এসে এমন এক অঘটন ঘটিয়ে ফেলি যেটা সবার জন্য খারাপ হলেও আমার মনকে শান্তি দেওয়ার জন্য চরম! বাট আই কান্ট! আই কান্ট রাহা!
সাদ মাথা নিচু করে শ্বাস ছাড়ছে। মন খারাপের কথা উঠলে তার মাথা অকেজো হয়ে উঠে। নিজেকে কন্ট্রোল করার জন্য প্রচুর যুদ্ধ চালাচ্ছে নিজের মনসংযোগের সাথে। রাহা ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে থেকে মৃদ্যু স্বরে বলে উঠলো,
— আপনার মন খারাপের ঔষুধ কি সাদ ভাইয়া? কি নিয়ে আপনি এতো দীর্ঘ নিশ্বাস ছাড়ছেন? আপনার তো কিছুরই কমতি নেই ভাইয়া।
সাদ ব্রিজের নিচে প্রবাহিত পানির দিকে তাকিয়ে আছে। রাহার দিকে না তাকিয়ে সাদ উত্তরে বলে উঠে,
— তুমি!
রাহা পুলকিত চাহনিতে কয়েক কদম পিছিয়ে গেলো সাদের থেকে। সে ভাবতে পারেনি সাদ অদ্ভুত কিছু মুখ থেকে বলে উঠবে। সাদ আড়চোখে রাহার স্থিতি বুঝে কাছে এসে পান্জাবীর পকেটে দুহাত ঢুকিয়ে গলা ঝেড়ে বলে উঠলো,
— জ্বি মিস! তুমি!
আমার মন খারাপের ঔষুধ তুমি! আমার দিনরাত স্বপ্ন দেখার অজুহাত তুমি! অবাক হচ্ছো? একচুয়েলি রাহা আ’ম ডেসপারেটলি ক্রেজি এবাউট ইউ! মাই গড! আ’ম জাস্ট নিড ইউ!
-চলবে ?
-Fabiyah_Momo
#বিদ্র: ভ্রমনে বেরিয়েছি। প্রচুর সময় কাটাচ্ছি বাইরে। আমি দুঃখিত! অসম্ভব দুঃখিত!??