অদ্ভুত_সেই_বাড়িটি? ৬,৭?

0
571

#অদ্ভুত_সেই_বাড়িটি? ৬,৭?
#মুসাফফা_মারহামা_মিম।
০৬

♠♠♠
—————
সাদিয়া এখনো সেখানেই চুপটি করে বসে আছে।আফজাল সাহেব পিছন থেকে মজনু মিঞাকে ডাক দিলেন।তিনি পিছন ফিরতেই আফজাল সাহেব পকেট থেকে পান বের করতে করতে বললেন।

কি ব্যাপার মজনু সাহেব,পান খাবেন?

হ্যাঁ খাওয়া যায়।

নিন।

আফজাল হাত বাড়িয়ে পানের পাতা মজনু মিঞার কাছে দিলেন।মজনু মিঞা দু পা সম্মুখে এগিয়ে পানের পাতা হাতে নিলেন।এবং এক গাল হেসে বললেন।ভাই চুন তো দিলেননা।

এই নিন।

যেই গরম পড়েছে ভাই।তাই একটু হাটঁতে বের হলাম।আমারতো আবার বাহিরে যেতে মানা।মজনু মিঞা কথা বলতে বলতে পানের পুরো অংশটি মুখে ভরে নিলেন।

আফজাল সাহেব ঝোপঝাড়ের দিকে সূক্ষ্ম দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন। যে করেই হোক মজনু মিঞাকে এখান থেকে সরাতে হবে।আর নয়তো সর্বনাশ হয়ে যাবে।মজনু মিঞা তার কাজের ব্যাপারে সচেতন না হলেও রফিকের কাছে তিনি অধিক একনিষ্ঠ ।অনেক আগে একটি মেয়ে ভুল করে এ বাড়িতে ঢুকে পড়েছিলো।মজনু মিঞা দেখতে পেয়ে সাথে সাথে রফিককে জানায়।তৎক্ষনাৎ রফিক মেয়েটির প্রতি হিংস্র বাঘে রুপান্তরিত হয়।অতঃপর মেয়েটিকে আর কখনো খুজে পাওয়া যায়নি। মজনু মিঞা পানের চিপটি মাটিতে ফেলে বললেন।

আফজাল সাহেব এ বাড়িতে বোধহয় সাপ ঢুকেছে?

কেন বলুনতো?

মাঝেই মাঝেই কেমন ফুসফুস আওয়াজ শুনতে পাই। এখন মনে হচ্ছে সেটা এই ঝোপঝাড়টির মধ্যে আছে।

হু থাকতেও পারে।তবে একটা বিষয় কি জানেন সাপের সাথে আমরা দুজন কখনোই পেরে উঠবোনা।এটা সাপুড়িদের কাজ তারাই ভাল পারবে।

কি যে বলেন আপনি? আপনি জানেন আমি যখন ছোট ছিলাম পুকুরে গোসল করতে যেয়ে কত সাপ ধরেছি ।এখন একটু বয়স হয়ে গেছে তাই অত বল পাইনা শরীরে। সাহস কিন্তু মেলা আমার। আর নয়তো এই বাড়িতে থাকবার পারতাম।

আফজাল সাহেব শুকনো হাসি দিয়ে বললেন ঠিকই বলেছেন ভাই আপনার মেলা সাহস।চলুন ছাদে যাই।সকালে রোদ গায়ে মাখলে নাকি অনেক উপকার হয়।

যামুতো ভাই,আগে সাপটা ধইরা নেই।

বাদ দেন তো ভাই রফিক আসলে ধরবোনি।

আচ্ছা আপনি যা বলবেন।

আফজাল সাহেব মজনু মিঞাকে নিয়ে বাড়ির ছাদের দিকে যাচ্ছেন।তিনি জানেন এখানে সাদিয়া আছে।সাদিয়ার যেন কোনো ক্ষতি না হয় এ জন্যই এত বাহানা।সানজানা ঘুম থেকে উঠে বিষয়টি আঁচ করতে পেরেই আফজাল সাহেবকে পাঠিয়েছেন। উভয়ে চলে যাওয়ার পর সাদিয়া ঝোপেঝাড় থেকে বের হয়ে দ্রুত বাড়িতে ফিরে আসলো।সানজানা পুকুর পাড়ে বসে আছে।তার পাশে তার বান্ধবীরা বসা।সানজানা সাদিয়ার দিকে ক্রোধী চোখে তাকিয়ে আছে।এর কারন অবশ্য বিশ্লেষণ করার প্রয়োজন নেই। সাদিয়া প্রথমত সানজানাকে কিছুই বললোনা।ঠান্ডা দৃষ্টিতে তার সম্মুখে যেয়ে দণ্ডায়মান হলো।দু হাত পিছনে মুষ্টিবদ্ধ। দৃষ্টি নিম্নোভাগে নিবদ্ধ। এ যেন অপরাধীদের বিচার করার পূর্ব ভঙ্গি। সানজানা সকলের দিকে তাকিয়ে কঠিন গলায় বললো।

তোরা চুপ হয়ে আসিছ কেন এখন? বল ওকে কি করা উচিত?

ফিজা নরম গলায় বললো।দোস্ত পুরো বিষয়টিকে স্কিপ করা যায়না?

না যায়না।কারন এটা আমাদের জীবনের সাথে জড়িত। আমি তোদের বিশ্বাস করেই ভুল করেছি।এত বড় একটা বিষয় ঘটার পূর্বে আমাকে জানানোর প্রয়োজনও মনে করলিনা।সানজানা প্রচন্ড রেগে আছে। তার আওয়াজ উঁচু হচ্ছে। গলায় স্বর ভারী হচ্ছে।সাদিয়া এহেন অবস্থা দেখে দ্রুত সানজানা কে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকলো।

দোস্ত আমার ভুল হয়ে গিয়েছে আমাকে ক্ষমা করে দে।আমি তোকে এতদিন ভুল বুঝেছি।আমি কখনো চাইনি তোকে ব্যথিত করতে।কিন্তু আজ ওই বাড়িটিতে না গেলে আমি তোকে কষ্ট দিয়েই যেতাম।আমার সাদমানের সাথে দেখা হয়েছে।ও আমাকে সব খুলে বলেছে। আমি কথা দিচ্ছি যতদিন আমি বেঁচে থাকবো। তোকে সাহায্য করে যাবো।

সাদিয়ার মুখে সাদমানের নাম শুনে বাকীরা খুব বিস্ময় হলো।তাদের চক্ষু বড় বড় হয়ে গিয়েছে।ললাটে বিস্ময়ের ভাজ পড়েছে।গ্রীবা চেপে আসছে।অতিশয় আশ্চর্য হলে নাকি মানুষের এমন হয়। কণ্ঠনালী তখন ভালো মত কাজ করেনা। তবুও ফিজা নিজেকে সংবরণ করে সাদিয়ার দিকে তাকিয়ে বললো

সত্যি সেখানে সাদমান ছিলো সাদিয়া?

সাদিয়া ক্ষীণ মাথা নাড়ালো।

ফিজা বৈঠক থেকে উঠে দাড়ালো।এবং সানজানার দিকে জিজ্ঞাসু নেত্রে তাকিয়ে থাকলো।সাদিয়া ব্যপারটি বুঝতে পেরে নিরবতা ভেঙে বললো।

তোরা সানজানাকে কিছু বলিসনা।ও খুব ভালো মেয়ে।আমরা কখনোই ওকে বুঝতে চাইনি।ওর মনের অসুখ নিয়ে মাথা ঘামাইনি।অথচ তোরা জানিস? ও অনেক আগেই জীবন্ত লাশে পরিনত হয়েছে।যত দিন যাচ্ছে ওর মনের কুঠুরি অসার হচ্ছে। আমি যখন সেই বাড়িতে সাদমানের সামনে সানজানার নাম নেই।তখন সাদমান আমাকে সমস্ত বিষয় ক্লিয়ার করে।

সাদিয়া সকলকে একে একে সব খুলে বললো। সানজানার কান্নার আওয়াজ এখন উঁচু হচ্ছে।খুব জোরে চিৎকার করতে ইচ্ছে হচ্ছে তার। নিজের আত্মার গহীন ক্লেশ গুলো যখন অন্যরা জেনে যায় তখন কি আর অভিনয় করা যায়?এতদিন তো অনেক অভিনয় করেছে কিন্তু আর কত? সানজানাকে কাঁদতে দেখে কেউ তাকে থামালোনা।সবাই সেখানেই বসে পড়লো।কাঁদুক সে! এভাবে মাঝে মাঝে কাঁদা উচিত। তাহলে নাকি বুকের ভারী বোঝা কিছুটা হালকা হয়।সাদিয়া, ফিজা তার পাশে বসে তাকে জড়িয়ে ধরলো।সানজানার শ্বাসপ্রশ্বাসের ভারত্ব তার বান্ধবীরা অনুমান করতে না পারলেও বাতাস কিন্তু অনুমান করতে পেরেছে।আচনকই বাতাসের উপদ্রব বেড়ে গেছে।মনে হচ্ছে বৃষ্টি নামবে।সবাই ঘরে আসতে চাইলো।কিন্তু সানজানা আসলোনা।তাই সকলে তাদের সিদ্ধান্ত বদলালো।তারা আজ বৃষ্টিতে ভিজবে।তবে এটাকে ঠিক বৃষ্টি বিলাশ বলা যাবেনা।এটাকে বলতে হবে অশ্রু লুকানোর জন্য বৃষ্টির সাহায্য নেওয়া।এভাবে বললেই পুরো ব্যপারটি সমীচীন মনে হবে। সত্যি সত্যিই গগনে মেঘনাদের উপস্থিতি ঠাওর করা যাচ্ছে।মূহুর্তেই জমীনের বুকে বৃষ্টির জলবিন্দু নেমে আসলো।পুকুরে প্রতিটি ফোঁটা পড়তেই অনেকটা স্থান ঘিরে গোলাকৃতি ধারণ করলো।একজন সুখি মানুষের কাছে এ দৃশ্য নিতান্তই সুন্দর। অসম্ভব সুন্দর। কিন্তু একজন দুঃখী মানুষের কাছে শুধুই দেখার জিনিস। বৃষ্টির গতিবেগ এখন ঢের।পুকুরঘাটের উপরে পাথরের ছাউনি দেয়া আছে।তাই সেখানে যারা অবস্থান করছে তাদেরকে বৃষ্টি পুরোপুরি ভিজাতে পারেনি। তবে মাটিতে আচঁড়ে পড়া বৃষ্টির ছাট তাদের পা ভিজিয়ে দিয়েছে।অনেকটা সময় ধরে বৃষ্টি পড়লো। ধীরে ধীরে বৃষ্টির গতিবেগ কমতে থাকলো।গগন পরিস্কার হচ্ছে। পুরোপুরি বৃষ্টিবিন্দু কমে গেলে সানজানা তার গল্প বলতে লাগলো।
কেউ তাকে জিজ্ঞাসাও করেনি সে নিজে থেকেই বললো।

আমি যখন কলেজ শেষ করে ভার্সিটিতে উঠি।তখনই আমার চাচাদের এই ভয়ানক কীর্তিকলাপ সম্পর্কে জানতে পারি।এসব জেনে মানসিক ভাবে অনেক ভেঙে পড়ি।মা,বাবাকে এ জন্য প্রতিবাদ করতে বলেছি।কিন্তু তারা করেনি।এর কারন, তারা আমার মতই অসহায়।আমার একজন চাচাতো ভাই আছে।নাম রাইহান।ভাইয়া খুব ভালো মানুষ।তখন আমি সিদ্ধান্ত নেই ভাইয়ার সাথে কথা বলবো।একদিন সরাসরি ভাইয়ার কাছে এ সম্পর্কে জানতে চাই।সেদিন ভাইয়াকে স্বচক্ষে দেখেছিলাম ভাইয়া এ ব্যাপার টির জন্য মনে মনে কতটা কষ্ট পাচ্ছে।ভাইয়া আগে সবার সাথে কথা বলতো, মিশতো।কিন্তু এখন সে কারো সাথেই তেমন কথা বলেনা, মিশেনা।একদম চুপ হয়ে গিয়েছে।আমরা দুজনই ব্যাপারটি নিয়ে খুব আঘাত পেয়েছিলাম।শুধু চাচা যদি এর সাথে জড়িয়ে থাকতো তবে না হয় মানা যেত।এর সাথে আরো অনেকেই জড়িত।যাদের সাথে আমরা পেরে উঠবোনা।তাই আমরা পরিকল্পনা করলাম।এই বাড়িটি পুড়িয়ে দিবো।কিন্তু আমাদের সাহস হলোনা।তখন আমরা সিদ্ধান্ত বদলালাম।এখানে যারা আসে তাদের প্রত্যেকের একটি লিস্ট ভাইয়াদের বাড়িতে যায়। আমরা নতুন করে আরেকটি প্লান করলাম।ওই লিস্ট থেকে কয়েকটি সংখ্যা আমরা কেটে দিবো।এবং রফিক যেহেতু এই বাড়িতে কারো মৃত্যুর খবর লিডারদের জানায়না। সুতরাং এটাই সুযোগ, কেটে দেওয়া সংখ্যার মানুষগুলোকে পালাতে সাহায্য করা।তাই যখনই রফিক তার বাড়িতে যেত তখনই আমি এখানে আসতাম।আর এই সুযোগে আমাদের উদ্দেশ্য হাসিল করতাম।এক মাস পূর্বে যখন আমি এখানে এসেছিলাম তখন সাদমানকে দেখেই চিনে ফেলি।কিন্তু ওকে পালাতে সাহায্য করার কোনো সুযোগ আমি পাইনি।কারন ও একজন জনপ্রিয় ব্যক্তি। ও এখান থেকে ছুটে গেলে স্বাভাবিক ভাবেই সবাই তাকে নিয়ে মাতামাতি করবে। লিডাররাও বুঝে যাবে তাকে পালাতে সাহায্য করা হয়েছে।তখন আফজাল সাহেব, রফিক,মজনু মিয়া,এবং তাদের পরিবার সবাই এ জন্য বিপদে পড়বে।আমি আমাকে নিয়ে ভাবিনা।আমি এখন বেঁচে আছি কারন নিজেকে নিজে মারতে পারবোনা তাই। আমি জানি সাদিয়া তুই আমাকে সাদমানকে বাঁচাতে বলবি।আমি এ কাজটি করতে পারবোনা সাদিয়া।আমাকে ক্ষমা করে দে।তোকে কষ্ট পেতে দেখে আমি অনেক চেয়েছি সাদমানকে সাহায্য করতে। কিন্তু কখনোই আমি তেমন কোনো বুদ্ধি খুজে পাইনি যার মাধ্যমে সাদমানকে সাহায্য করবো। তাছাড়া এখন রফিক চলে এসেছে।

সাদিয়া নিশ্চুপ।এখন তার কি বলা উচিত সে বুঝতে পারছেনা। কিছুটা সময় সে এভাবেই থাকলো।এরপর নিরবতা ভেঙে বললো।সানজানা আমরা একটা প্লান করতে পারি।

কি প্লান.

সাদমানকে এখান থেকে বের করার।

যেমন?

সকলের দৃষ্টি সাদিয়ার দিকে নিবদ্ধ। সাদিয়া কি বলে সেটা শুনার জন্য সকলে উৎসুক হয়ে আছে।
এরপর সাদিয়া সকলকে ঝুঁকতে বললো।সবাই তা করলে সাদিয়া ফিসফিস করে তার মস্তিষ্কে আসা সমস্ত পরিকল্পনা খুলে বললো।

সানজানা কিছুটা আপত্তি জানালো।তার ভাষ্যমত অনুযায়ী সাদমান হাঁটতে জানেনা।সুতরাং তাকে এখান থেকে বের করবো কিভাবে? পূর্বে যাকে বের করেছিলাম।তার পরিবারের সাথে আমি আগেই যোগাযোগ করেছি।কিন্তু সাদমানের পরিবারতো এ সম্পর্কে কিছুই জানেনা তাইনা?তাছাড়া ও যেহেতু জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব সুতরাং ওকে কোনো হসপিটালে নিয়ে চিকিৎসা করানো যাবেনা.তাহলে সাংবাদিকরা নিউজ করতে চলে আসবেন।

সাদিয়া বললো, সমস্যা নাই দরকার হয় আজকে বিকেলে পাহাড় দেখার নাম করে আমরা বাসস্ট্যান্ডে যাবো এবং সেখানে গিয়ে তার ভাইকে ফোন করবো।তার ভাইকে বিষয়গুলো বললে তিনি বুঝতে পারবেন। তাছাড়া তিনি একজন ডাক্তার।

সানজানা বললো।সে তো লেখক মানুষ।যদি কোনো ভাবে ব্যাপারটি প্রকাশ হয়ে যায়?

হবেনা দোস্ত,তুই শুধু শুধুই চিন্তা করছিস।আচ্ছা এটা ধরেনিলাম সাদমান আমাদের কথা চিন্তা করবেনা। তাই বলেকি পরিবার নিয়েও ভাববেনা?আর সে নিজেই আমাকে বলেছে বেঁচে থাকার জন্য পালিয়ে যাওয়া মানুষ গুলো নিশ্চুপ হয়ে যায়।দরকার হয় আমরা তাকে লেখালেখি করতে বারণ করবো।

হু আচ্ছা, তবে বাসস্ট্যান্ডে আমরা সবাই মিলে যেতে পারবোনা।সবাই এক সাথে গেলে সন্দেহ করবে।এর চেয়ে বরং আফজাল সাহেবের সাথে সাজিদকে পাঠিয়ে দিবো।তারা সেখানে বাজার করতে যাবে।তুই সাজিদকে কথা গুলো বুঝিয়ে বলতে বলিস।

আচ্ছা ঠিকাছে।তবে রফিক টাকে নিয়ে সমস্যা।

এতক্ষণ ফিজা,রিফা,রাজিয়া,সাজিদ তাদের কথা নিরব দর্শক হয়ে শুনছিলো।এখন ফিজা নিরবতা ভেঙে বললো। মজনু মিঞা তো রাতে ঘুমায় যায়।শুধু রফিককেইতো ম্যানেজ করতে হবে।আমার মনে হচ্ছেনা এটা কঠিন হবে।

সানজানা বললো।রফিক যেই ধূর্ত স্বভাবের তার সাথে পেরে উঠা সহজ নয়।তবুও আমরা সাদিয়ার বলা অনুযায়ী চেষ্টা করে দেখতে পারি।বাকি যা আছে ভাগ্যে।সাদিয়ার বুদ্ধি অনুযায়ী করলে মনে হচ্ছে প্লান কার্যকর না হলেও ধরা পড়বোনা।

সকলে অস্ফুট স্বরে বললো হুঁ।

রাজিয়া বললো।আচ্ছা এবার এসব কথার ইতি টান।আমার খুব ক্ষুধা পেয়েছে।চল খেতে যাই।আজ কিন্তু আমাদের পাহাড়ে যাওয়ার কথা ছিলো।তোরা কি ভুলে গিয়েছিস?

“ফিজা বললো।আরে না ভুলবো কেন? চল চল দ্রুত খাওয়া দাওয়া সেরে নেই।

____________

রাতে সাজিদ আর আফজাল সাহেব বাড়িতে ফিরে আসলে তাদেরকে চিন্তিত দেখা গেলো।

সানজানা আফজাল সাহেবকে এ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেন।

প্রথম দিন তাদেরকে এখানে নিয়ে আসা ভ্যানচালকটি সাজিদের কথা শুনে ফেলেছে।সব কিছু শুনতে পেরেছে কিনা তা বলা যাচ্ছেনা।তবে তিনি যে কিছু একটা শুনেছেন সেটা নিশ্চিত।তাছাড়া ভ্যানচালক এই বাড়ির রহস্য সম্পর্কে অবগত আছেন।যদি রফিককে ব্যাপারটি জানিয়ে দেয়।তাহলেতো সর্বনাশ হয়ে যাবে।

আফজাল সাহেবের কথা শুনে সকলের মধ্যে একপ্রকার উৎকন্ঠা বিরাজ করলো। সাথে চাপা উদ্বেগ। আসলেই যদি সে রফিককে সব বলে দেয়?

সবার ভীতিকর অবস্থা দেখে সাদিয়া সাজিদকে বললো। যখন তুই তাকে দেখেছিলি।তখন কি বলছিলি ফোনে?

সাজিদ মাথায় হাত দিয়ে বললো।আমি তখন ভাইয়াকে এটুকু বলেছি।গাড়ি ভিতরে নেওয়া যাবেনা।তাই আপনি এখানেই থাকবেন।আমরা এসে এরপর গাড়িতে উঠবো। তবুও সে আমাদের দিকে সন্দেহের দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলো।

সাদিয়া বললো।এসব বাদ দে।শোন তোরা এত ভাবিসনা।ভ্যানচালক রফিককে কিছু বললেও পরিস্কার করে কিছু বলতে পারবেনা।রফিক যদি আমাদের কিছু জিজ্ঞাসা করে আমরা বলবো।আমরা চলে যাবো তাই আমাদের ড্রাইভারকে ফোন দিয়েছি আমাদের নিয়ে যাওয়ার জন্য।ব্যাস সবাই এটাই বলবো।এখন ঘুমিয়ে পড়।চিন্তা করিস না এত।আর নয়তো আমরা আমকদের প্লান অনুযায়ী কাজ করতে পারবোনা।

সবাই সাদিয়ার কথা শুনে নিরব হলেও চিন্তামুক্ত হতে পারছেনা।যতই হোক তাদেরকে স্বাভাবিক থাকতে হবে। ভেঙে পড়লে চলবেনা।ফিজার কাছে পুরো ব্যাপারটি অদ্ভুত রকমের ভয়ংকর মনে হচ্ছে। বারবার তার মন ঋণাত্মকের ( নেতিবাচক) দিকে ইশারা করছে।তার মন বলছে ভ্যানচালক রফিককে সব জানিয়ে দিবে।এবং রফিক সাদমানকে মেরে ফেলবে।

আস্তাগফিরুল্লাহ আস্তাগফিরুল্লাহ।আমি এসব কি চিন্তা করছি।ফিজা চাপা স্বরে এটুকু বলেই জিভে কামড় দিলো।এবং মাথা থেকে উদ্ভট চিন্তা ঝেড়ে ফেলে শুয়ে পড়লো।

_____________________

ভুলত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। এবং আপনাদের মূল্যবান মতামত জানাতে ভুলবেননা কিন্তু ?।

আসছে।

#অদ্ভুত_সেই_বাড়িটি?[৭]?
#লেখনীতে_মুসাফফা_মারহামা_মিম

আজ সকাল সকাল রফিক এ বাড়িতে বড় তলোয়ার নিয়ে হাজির।রাগী অবয়ব। গ্রীবার স্বর ভারী। চক্ষু রক্তিম বর্ণ। কালকের ব্যাপারটি নিয়ে সে অত্যাধিক রেগে আছে।উঠানের মাঝখানে দাঁড়িয়ে চিৎকার করতে লাগলো। এই আফজাল মিয়া, এই সানজানা।তাত্তাড়ি বাইরে আহেন।
আজ আপনেগো খবর আছে। আফজাল সাহেব হন্ত দন্ত হয়ে বাহিরে চলে আসলেন।রফিককে ক্রুদ্ধ দেখে খুব ঘাবড়ে গেলেন। তার অবয়ব দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে। পাশে মজনু মিঞা আর ভ্যান চালক দণ্ডায়মান আছেন। আফজাল সাহেব ঠান্ডা গলায় বললেন।কি হয়েছে রফিক ডাকলা কেন?

ডাকছি কেন বুঝেননা?

কেন?

আপনারা আমারে এতদিন ঠকাইতেছিলেন কেন শুনি?

কে বললো।

কে বললো মানে?আমি আপনেগো সব কীর্তিকলাপ জাইনা ফেলাইছি।আজ আর আপনেগো রক্ষা নাই।যান মাইয়া গুলারে ডাকেন।

তুমি কি বলছো রফিক আমিতো কিছুই বুঝতে পারছিনা.

বুঝা লাগবোনা যেইটা বলছি ওইটা করেন।আর নয়তো আপনার কল্লা কাইটা ফেলামু।

আরে রাগ হইওনা আগে মেজাজ ঠান্ডা করো।বলোতো শুনি কি হইছে।

ওই বুড়া আমার মুখের উপর বারবার কথা কইতাছোস কে? তোর কল্লাডাই আগে ফালামু।
রফিক তার হাতে থাকা তলোয়ারটি দিয়ে আফজাল সাহেবের বদন থেকে মাথা আলাদা করে ফেললো।মেঝেতে রক্তের বন্যা বইছে।
কি ভয়ংকর দৃশ্য।মূহুর্তেই সে অবয়ব ভঙ্গি পরিবর্তন করে বিকট স্বরে হাসতে লাগলো। পাশে থাকা ভ্যানচালক, মজনু মিঞাও অট্টহাসিতে মশগুল হলেন। সাংঘাতিক ব্যাপারটাতে তারা ভীত না হয়ে হাসছে।বিষয়টি মেয়েদের কাছে ভয়ংকর ছাড়া আর কিছুই মনে হচ্ছেনা।রফিকের শরীরে বোধহয় অশরীরী ভর করেছে।কোনো স্বাভাবিক মানুষের কর্ম কাণ্ড এতটা ভয়াবহ হতে পারে না। ক্ষানিকটা সময় পর রফিক মেয়েদের কক্ষের দিকে এগিয়ে গেলো।প্রথমত ফিজার লম্বা কেশগুচ্ছ শক্ত করে ধরে উঠনের দিকে নিয়ে আসার জন্য উদগ্রীব হলো। ওই মূহুর্তেই ফিজার ঘুম ভেঙে গেলো।ফিজা চিৎকার দিয়ে উঠে বসলো। ঘুমিয়ে থাকা সাদিয়া,সানজানা,রিফা, রাজিয়াও উঠে পড়লো।।
ফিজা বড় বড় শ্বাস নিচ্ছে। সে যে স্বপ্ন দেখেছে বাকিরা ব্যাপারটি আঁচ করতে পারলো। সাদিয়া ফিজার সম্মুখে পানির বোতল ধরলো।ফিজা অবিলম্বে ডগডগ করে বোতলের অর্ধেক পানি খাওয়া শেষ করলো। সানজানা স্বপ্ন সম্পর্ক জানতে চাইলে ফিজা সব টা খুলে বললো।

সবার চোখে মুখে আতঙ্কের ছাপ।লোম গাত্রে মিশে নেই। হৃদপিণ্ডে ভয়াবহ অনুভুতি। সাদিয়া ফিজাকে শান্ত করে বললো।আসলে অনেক সময় দুশ্চিন্তাগ্রস্ত থাকলে এমন টা হয়।দেখলিনা আমি এ কয়দিন শুধু স্বপ্ন দেখতাম।কিন্তু আজ খুব হালকা লাগছে।যার দরুন ঘুমটাও ভালো হয়েছে।

সানজানা কিছু একটা বলতে যাবে।তৎক্ষনাৎ দ্বারে আফজাল সাহেব বারবার টোকা দিতে থাকলেন।মনে হচ্ছে তিনি খুব উদ্বিগ্ন। আসলেই কি তাই? ফিজার বুকে আবারো কম্পন শুরু হলো।সানজানা কাঁপা কাঁপা হাতে দরজা খুললো।দরজার অপাশে সাজিদ আর আফজাল সাহেব দাঁড়িয়ে আছেন। কিন্তু তাদেরকে সামনা সামনি দেখে চিন্তিত মনে হচ্ছেনা।আফজাল সাহেব সাজিদ কে নিয়ে ভেতরে চলে আসলেন।এবং চাপা স্বরে বললেন।

একটু আগে আমাকে মজনু মিঞা ডাক দিয়ে নিয়ে যান।সাজিদকে ঘুমে রেখে আমি সেখানে যাই।প্রথমে ভয় পেয়েছিলাম।

সানজানা বললো.তারপর তারপর, ভ্যানচালক কি সব বলে দিয়েছেন?

“না না বলেননি।আমি এটাই ধারণা করেছিলাম।হয়তো এ জন্য আমাকে ডেকেছে।কিন্তু পরে
রফিকের কথা শুনে বুঝলাম।সে সাদমানের জন্য আমাকে ডেকেছে সাদমানের শরীর নাকি খুব খারাপ হয়েছে। কিছুক্ষণ পর পর মূর্ছা যাচ্ছে।এখন তাকে নিয়ে করবে এটাই রফিক বুঝতে পারছেনা।

সাদিয়া বললো।কি হয়েছে তার?

আরে শোনো আগে। তার কিছুই হয়নি।আমি তার কাছে যাওয়ার পর সে আমাকে বললো।আংকেল আমি ঠিক আছি।সাদিয়া আমাকে বলেছিলো ও আমাকে সাহায্য করবে।তাই অসুখের ভান ধরছি।আপনি শুধু রফিককে এটা বুঝাবেন আমার মৃত্যু সন্নিকটে।তাহলেই হবে।

সাদিয়া এটুকু শুনে উঁচু গলায় হাসতে লাগলো।সানজানা রসিকতা করে বললো।আর যাই বলিস সাদিয়া, তোর সাদমানের বুদ্ধি আছে ভালো।

রিফা বললো।লেখক মানুষ বুদ্ধি না থেকে উপায় আছে?

সাদিয়া বললো। আরে তোরা এসব বাদ দিবি।সে এখনো আমার হয়নি।তাই আজাইরা আলাপ বন্ধ কর।

আফজাল সাহেব সবাইকে থামিয়ে বললেন।যা করার আজকে রাতেই করতে হবে।তোমরা তৈরি থেকো।এরপর আফজাল সাহেব সাজিদের দিকে ফিরলেন।সাজিদ তুমি তার ভাইকে কখন আসতে বলেছো?

আজই বলেছি।সাথে এটাও বলেছি। যদি আজ আমরা না আসি বাসস্ট্যান্ডে। তবে চলে যাবেননা।কাল পরশু অবধি এখানেই অপেক্ষা করবেন।

বুদ্ধিমানের কাজ করেছো। মেলা বুদ্ধি তোমার। জীবনে কিছু একটা করতে পারবে আশা করা যায়।

আফজাল সাহেব সাজিদকে নিয়ে উপরে চলে গেলেন।

রাত বাজে ১২ টা। সাদিয়ার বুদ্ধি অনুযায়ী রিফা,আর রাজিয়া উত্তরের বাড়িটির সম্মুখে দাঁড়িয়ে আছে।দাঁড়িয়ে আছে বললে ভুল হবে। বরঞ্চ তারা পাশের এক ঝোপঝাড়ের মধ্যে লুকিয়ে আছে।তাদের হাতে রয়েছে দেশলাই।এবং ছোট্ট কেরশিন তেলের বোতল।চারিপাশে গাঢ় তমসা বিরাজ করছে। চোখ খুলে রাখা বন্ধ করা দুটাই যেন একই রকম।আফজাল সাহেব সাদমানের কক্ষে অবস্থান করছেন।সাদমানের অবস্থার অবনতি হচ্ছে।মনে হচ্ছে তাকে বাঁচানো যাবেনা।যদিও বা এটা রফিক বা মজনু মিঞার ভাষ্যমত।সানজানা, সাদিয়া আর সাজিদ একটি গুপ্ত স্থানের সম্মুখে বসে আছে।এই স্থানটির কথা আজই জেনেছে তারা। তাদের বাড়ি থেকে প্রায় ২০.৩০ গজ দূরে জংগোলের মাঝখানে একটি বটবৃক্ষ রয়েছে।গাছের শিকড়ের একপার্শ্বে বর্তুলাকার ( গোলাকার) আকৃতির একটি গাছের ডাল রাখা।এর নিচে অনেকটুকু মাটি দিয়ে গুপ্ত স্থানটির মুখ বন্ধ করে রাখা হয়েছে। তারা উপর থেকে ডাল সরানোর পর লক্ষ্য করলো স্থানটি তালাবদ্ধ। সাদিয়া নিরাশ হয়ে গেলো।সানজানা তাকে আশ্বাস দিয়ে বললো চিন্তা করিসনা।এখানে আসার আগে আফজাল আংকেল আমাকে চাবি দিয়ে দিয়েছেন। তালা খুলে ফেললে সাজিদ গুপ্ত গুহায় প্রবেশ করলো।সাদমানকে আনতে হবে।এই গুহাটি শেষ হয়েছে উত্তরের বাড়ির পিছন দিকের জংগোলটিতে।যেখান টাতে কবর দেওয়া হয়। আফজাল সাহেব সাদমানের কানে কিছু একটা বলতেই সে হাত পা ছেড়ে দিলো।মনে হচ্ছে একটু পরেই তার সময় শেষ।তবে রফিকের চোখ ফাঁকি দেওয়া অত সহজ নয়।একটা মানুষের প্রাননাশ হবে আর সেটা রফিক কাছে দাঁড়িয়েও বুঝতে পারবেনা।এতটা বোকা রফিক নয়।রফিক সাদমানে কাছে পৌঁছাতে থাকলো।তাকে ভালো করে দেখে বুঝতে হবে আদৌ সাদমান মারা গিয়েছে কিনা।সে দু পা আগানোর পরই তাকে থামতে হলো।উপস্থিত সকলের নাকে পোড়া গন্ধ ভেসে আসছে। কোথাও মনে হচ্ছে আগুন লেগেছে।রফিক ঘ্রাণেন্দ্রিয়ের সাহায্যে ব্যাপারটা বুঝার চেষ্টা করলো।মনে হচ্ছে এই বাড়িতেই আগুন লেগেছে।আফজাল সাহেব বুদ্ধি খাটিয়ে বললেন।

কি হলো রফিক দেখো না এই বেটা মরছে কিনা?

আরে আপনি আছেন মরা নিয়ে মনে হইতেছে কোথাও আগুন লাগছে।রফিক জানালা দিয়ে উঁকি দিলো।গগনে কালচে ধোঁয়ার উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে।রফিক হন্তদন্ত হয়ে কক্ষ থেকে বের হয়ে গেলো।আসলেই আগুন লেগেছে।এখন আগুন বন্ধ না করলে জংগোলের গাছপালা গুলোতে আগুন লেগে যেতে পারে। জংগোলে একবার আগুন লেগে গেলে মানুষজনেরা দ্রুত জেগে যাবে।তখন সর্বনাশ হয়ে যাবে। রফিক এক হাত দিয়ে লুংগি ধরে দৌড়াতে লাগলো। পিছনে আফজাল সাহেব ও মজনু মিঞাও আসছেন। বাড়ির প্রধান ফটকের পার্শ্ববর্তী গাছ গুলোতে আগুন লেগেছে। রফিক বড় পাইপ এনে সেখানে পানি ঢালার সিদ্ধান্ত নিলো।রফিককে অস্থির দেখে আফজাল সাহেব সেই সুযোগকে কাজে লাগালেন।

রফিক ওই বেডায়তো মারা গেছে।

আরে মিয়া রাখেন আপনার কথা।দেখেননা আগুন লাগছে।

আরে সেটাতো বুঝলাম আগুন লাগছে এ জন্য যদি কাল লিডাররা চলে আসেন।তাহলেতো জাইনা ফেলাইবো এ সম্পর্কে।

তো আগুন নিভায়ে আসতেছি যান।আপনি যাইয়া কবর খুরতে থাকেন।

আফজাল সাহেব আর কথা বাড়ালেননা।রফিক বেশ ধূর্ত স্বভাবের লোক।বেশি কথা বললে সে এসব বুঝেও যেতে পারে।তাই তিনি দ্রুত এসে সাদমানকে একটি বস্তায় ভরলেন।সাদমান পায়ে প্রচণ্ড ব্যাথা পাচ্ছে।তবুও সে দাতে দাত চেপে বসে থাকলো।তিনি সাদমানের বস্তা টিকে বাড়ির পিছনদিকের জংগোলের দিকটাতে নিয়ে গেলেন এবং সেই গুপ্ত গুহার কপাট খুলে সাদমানকে বস্তা থেকে উন্মোক্ত করে দিলেন।সাদমান আফজাল সাহেবকে মৃদু আওয়াজে বললো।

আমি কখনো এই মুহুর্তটি ভুলবোনা।এবং আপনাকেও ভুলবোনা।অজান্তে আপনাকে আঘাত দিয়ে থাকলে ক্ষমা করবেন আংকেল।

আরে এখন এসব বাদ দাও।তুমি হামাগুড়ি দিয়ে যেটুকু পারো আগাতে থাকো।সাজিদ তোমাকে নিতে আসছে।

আফজাল সাহেব সাদমানকে মুক্ত করে আবারো গুপ্ত কপাট শক্ত করে লাগিয়ে কবর খনন করতে চলে আসলেন।কবরের পাশে ঠিক একই বস্তা রাখা।সেটাতে রয়েছে একটি মরা কুকুর।সাথে কিছু ময়লা আবর্জনা। আফজাল সাহেবের খনন পর্ব শেষ হলে তিনি আবারো রফিকের কাছে গেলেন।এবং বললেন।

কবর খনন শেষ।ওই লোকেরে বস্তায় ভরে কবরের পাশে নিয়া গেছি।এসে কবর দিয়ে যাও।

রফিক এখনো কাজে ব্যস্ত। আফজাল সাহেব চাননা বস্তাটি সে কবরে ফেলুক।কারন রফিকের চতুরতার কাছে আফজাল সাহেব পেরে উঠবেননা।তাই তিনি রফিককে ব্যস্ত থাকতে দেখে সুযোগ কাজে লাগালেন।রফিক হাতে থাকা পাইপ টি মজনু মিঞার কাছে দিয়ে সেদিকে যেতে উদগ্রীব হলো।আফজাল সাহেবের বুক ধুক ধুক করছে। আফজাল সাহেব জোড় গলায় মজনু মিঞাকে উদ্দেশ্য করে বললেন।ভাই আপনি কি একটা কাজও ঠিক মত করতে পারেননা? আগুনের জায়গায় পানি দেন।এমনে পানি ঢাললেতো আগুন আরো বেশি লাগবো।

রফিক আফজাল সাহেবের কথা শুনে ঘুরে দাড়ালো। মজনু মিঞাকে সস্তা দুইটি গালি দিয়ে তার হাত থেকে পাইপ কেড়ে নিয়ে বললো।আফজাল মিয়ার সাথে যাইয়া কবরে লাশ ফালায় দিয়া আহেন যান।এইসব ঢংএর কাজ আমার পছন্দ না।

মজনু মিঞা বাধ্যগত ছাত্রের মত আফজাল সাহেবের সাথে চলে গেলেন।কবর দেওয়া শেষ। জংগোলের বাহির থেকে কেউ একজন সাদিয়াদের দিকে নজর রাখছে।সেই মানব সাদমানের বের হওয়ার অপেক্ষা করছে।অথচ সাদিয়ারা এ সম্পর্কে উদাসীন।সাদিয়া একটু বুদ্ধি খাটালেই হয়।আর নয়তো সেই মানবটি খপ করে সাদমানকে ধরে ফেলবেন।যেভাবে সাপ পাখির খাঁচা থেকে তাদের বাচ্চাদের ধরে নিয়ে যায়।।মানবটির চেহারা অস্পষ্ট। শরীরে লম্বা চাদর ঝুলছে।
অন্যদিকে রফিক চিন্তা করছে।এখানে কিভাবে আগুন লাগলো।তাকে এটা বের করতেই হবে।

আসছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here