অনুভব_ভালোবাসি,পার্ট- ৬

0
836

#অনুভব_ভালোবাসি,পার্ট- ৬
#লেখনীতেঃতানজিলা_খাতুন_তানু

আদি আর রিয়া একসাথে কলেজে আসে ।রিয়া আদির হাত ধরে আছে সবাই অবাক কারণ আদি রিয়াকে সহ্য করতে পারে না আর সেই আদি রিয়াকে হাত ধরতে দিয়েছে।আদি ওর বন্ধুদের কাছে ওকে নিয়ে যায়।

মেঘ- রিয়া তোর সাথে কেন।

আদি- আমার প্রেমিকা আমার সাথে থাকবেনা তো কার সাথে থাকবে। ( শান্ত কন্ঠে)

আদির কথা শুনে সবাই অবাক হয়ে যায়।

মিতু- প্রেমিকা মানে।

রিয়া- আদি আর আমি একে অপরকে ভালোবাসি আমরা কিছুদিন পর বিয়ে করবো।( খুশিতে গদগদ হয়ে)

অনিক- রিয়া তুমি যাও আদির সাথে আমাদের একটু কথা আছে।

আদি- রিয়া এখানেই থাকবে। যা বলার ওর সামনে বল।

অনিক- না কিছু বলার নেই।

আদি- ওকে।

রিয়া- আদি বেবী চলো আমার সাথে।

আদি- চলো জান।

আদি আর রিয়া চলে গেল।নীলা, নিঝুম,আর তানিশা চুপ করে সবটা শুনছিল।ওরা চলে যেতেই অনিক ক্ষেপে গেল।

অনিক- ও রিয়ার সাথে রিলেশনশিপে গেছে।

মিতু- অনিক দা তুমি রাগ করো না আমি মোটামুটি খুশি কারণ দাদাভাই তাকে ভুলে অন্য কাউকে নিয়ে বাঁচবে।হ্যা সেটা রিয়া এটা আমার ও মেনে দিতে কস্ট হচ্ছে তবে দাদাভাই এর যখন কোন সমস্যা নেই তাহলে আমাদের সমস্যা হবার কথা নয়।

অন্যদিকে-

কেউ একজন পাগলামিতে মেতে উঠেছে একের পর এক কাঁচের বোতল ভাঙচুর করছে। পায়ের না জায়গায় কেটে গেছে। একসময় সে ক্লান্ত হয়ে বিছানায় বসে ঢুকরে কেঁদে ওঠে বলতে লাগলো

-আদি কেন করলে এমন কেন। তুমি না আমাকে ভালবাসো।তাহলে কেন রিয়ার সাথে রিলেশনশিপে গেলে।কেন ঠকালে আমায় আমি ও যে তোমায় বড্ড বেশি ভালোবাসি।তোমাকে আমি কাছে পাইনি তবুও তোমায় ভালোবাসি #অনুভবে_ভালোবাসি ।( চিৎকার করে কাঁদতে লাগলো)

তখন দরজা খুলে ভেতরে একটা ছেলে আসে।

ছেলেটা- কেন পাগলামি করছিস।

মেয়েটা- তুমি জানো না কেন পাগলামি করছি।
আমার আদি আমাকে ভুলে গেছে।( কাঁদতে কাঁদতে)

ছেলেটা- শান্ত হ।আদি শুধু মাত্র তোর আর তোরই থাকবে।এখন তুই শান্ত হ।

ছেলেটা মেয়েটাকে বসিয়ে ওর পায়ের চোটে ঔষধ লাগিয়ে দিল।

কিছুদিন পর—

আদি আর রিয়া প্রেম করছে । তানিশা আর আদির সাথে কথা বলে নি। তানিশা কয়েকদিন কলেজেই আসেনি। কালকে অনুষ্ঠান তাই আজকে কলেজে এসেছে।

মিতু- কীরে কোথায় ছিলি এতদিন।

তানিশা- এমনি আসিনি। চল ক্লাসে যাই।

নিঝুম,নীলা, তানিশা, মিতু ক্লাসে যাবার সময় রিয়া আসে।

রিয়া- তোমরা যাও আমি তানিশার সাথে একটু কথা বলবো।

নীলা- তোমার আবার নিশার সাথে কি কথা।

তানিশা- তোরা যা আমি আসছি।

ওরা তিনজন চলে যায়।

রিয়া- আদির পেছনে ঘুরে কোন কী লাভ হলো সেই আদি আমারই হলো।

তানিশা- আদির পেছনে আমি নয় তুমি ঘুরতে।আর কার সাথে কার ভাগ্য লেখা আছে সেটা উপর ওয়ালা ছাড়া কেউ জানেনা।

রিয়া- আদি আমার হবেই।

তানিশা- কনফিডেন্স ভালো কিন্তু ওভার কনফিডেন্স ভালো না‌। আদি কার হবে সেটা সময় হলেই দেখা যাবে।

রিয়া- তানিশা তুমি এবার বাড়াবাড়ি করছো।

তানিশা হাসলো।

রিয়া- প্রাণে মেরে দেবো।

তানিশা বাঁকা হেসে চলে যায়। রিয়া রাগে গজগজ করতে লাগলো।

ক্লাস শেষে-

নীলা- কালকের ড্রেস থিম কী?

মিতু- নীল কালার।

নিঝুম- তানিশার ফেবারিট কালার।

তানিশা- হুম।

মিতু- শাড়ি পরবি তো।

নিঝুম- হুম কিন্তু নিশা ‌পড়বে না।

নীলা- হুম।

ওরা অনিক আর মেঘ এর কাছে গেল।

মেঘ- কেমন আছো তানিশা।

তানিশা- হুম ভালো তুমি।

মেঘ- ভালো,তা এতদিন আসোনি কেন।

তানিশা- এমনি।

মেঘ- ওওও।

তানিশা- তোমরা গান করবে তো।

অনিক- হুম ।

আদি তানিশাদের দেখে আসতে লাগলো। কিন্তু তানিশা আদিকে আসতে দেখে

তানিশা- তোমরা গল্প করো আমি একবার স্যারের কাছে যাই

নিঝুম- ওকে।

তানিশা চলে যাবার পর আদি আসে।

আদি- কী রে ।

অনিক- বল।

আদি তানিশাকে খুঁজেছে। কিন্তু তানিশা তখন চলে গেছে।

সন্ধ্যা বেলা-

নীলা- নিশা তুই কাল কী পরবি।

তানিশা- দেখি।তোরা নীল কালার শাড়ি পড়বি তো
তা শাড়ি টা কী ঠিক করেছিস কোনটা পড়বি।

নিঝুম – না।

তানিশা- আমি শাড়ি গুলো আমার রুমে রেখেছি ওর মধ্যে থেকে তোরা বেছে নে।

নীলা- তুই কোথায় থেকে আনলি।

তানিশা- কিনেছি।চল তোরা।

তানিশার রুমে গিয়ে দেখে ৫ টা শাড়ি ।৫ টাই নীল কালার।নীলা আর নিঝুম পছন্দ করে নিয়ে নেয়।

নিঝুম- বাকি তিনটে কী করবি।

তানিশা- দেখি।

নীলা- ওও

পরেরদিন-

নিঝুম আর নীলা তানিশার দেওয়া শাড়িটা পড়ে
আর তানিশা একটা নীল রঙের লেহেঙ্গা পড়েছে ।

নীলা- দারুন লাগছে।

তানিশা- তোদের ও ।

নিঝুম- আজকে নাচ করবি তো ।

তানিশা- হুম। কলেজের মান সম্মান এর ব্যাপার।

ওরা তিনজন কলেজে যাই। অনেক বড়ো আয়োজন অনেক নামিদামি লোক আসবে। সবাই নীল রঙে সেজেছে।

মিতু- দারুন লাগছে তোদের।

তানিশা- তোকেও।

মিতু- চল মেঘ দের সাথে কথা বলে আসি।

নিঝুম- কিন্তু কোথায়‌ ওরা।

মিতু- চল গিয়ে দেখি।

তানিশা- তোরা খোঁজ আমি একবার স্যারের কাছ থেকে ঘুরে আসি ।সব ঠিকঠাক আছে কিনা দেখি।

নীলা- ওকে।

ওরা চলে গেল, তানিশা হলরুমের দিকে যেতে লাগলো হঠাৎ কেউ ওর হাত ধরে টান মারে আর ওও ব্যক্তিটির বুকের উপর গিয়ে পড়ে। তানিশা হালকা চিৎকার করে উঠল- কে আপনি আমাকে এভাবে টানলেন কেন।

তানিশা মাথাটা তুলে সামনে থাকা মানুষটাকে দেখে চমকে উঠলো।

তানিশা- আদি আপনি।

আদি তানিশার দিকে একভাবে তাকিয়ে আছে। তানিশা আদিকে ধাক্বা দিয়ে ওর কাছ থেকে সরে আসে।তাতে আদির ঘোর কাটে।

তানিশা- আমাকে এভাবে আনার মানে কি।

আদি- তুমি আমাকে এভয়েড করছো কেন।( তানিশার কথাটিকে পাত্তা না দিয়ে)

তানিশা- আমি আপনাকে এভয়েড করতে যাবো কেন।

আদি- তাহলে আমার সাথে কথা বলো না কেন ,আমাকে দেখলে এড়িয়ে চলো কেন( ভ্রু কুঁচকে)

তানিশা- যাতে আপনার রিলেশনশিপে কোন প্রভাব না পড়ে,

আদি- তোমার সাথে কথা বললে আমার রিলেশনশিপে প্রভাব পড়বে কেন।

তানিশা- সেটা আপনার মনকে জিজ্ঞাসা করুন।

তানিশা আদিকে না কিছু বলতে না দিয়ে চলে গেল।আদি ভাবতে লাগলো তানিশার কথাটা ।

অনুষ্ঠানটা শুরু হয়। অনুষ্ঠানে অতিথি হয়ে আসে আরমান চৌধুরী( আদির বাবা)আরো অনেকে।
এখন পুরস্কার বিতরণ হবে।

স্যার- নাচে তৃতীয় হয়েছে শিমুল বিশ্বাস।

স্যার- দ্বিতীয় হয়েছে মনিকা।

এদের পুরস্কার দেওয়া হলো।এবার প্রথম পুরস্কার । আগের দুটি পুরস্কার অন্য কলেজের ছাত্রীরা পেয়েছে‌। এবার কোন কলেজের ছাত্রী পাই সেটাই দেখার বিষয়।

স্যার- প্রথম পুরস্কার পাচ্ছে

সবার মাঝে একটা চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে।

স্যার- কে।সেটা আমি বলবো না বলবেন আমাদের অতিথি মিস্টার আরমান চৌধুরী।

আরমান- প্রথম পুরস্কার যে পাচ্ছে সে আর কেউ নয় এই কলেজেরই ছাত্রী তানিশা।

সবাই চেঁচিয়ে উঠলো আনন্দে। তানিশা স্টেজে গেল। আরমান চৌধুরী মেডেল প্রদান করেন। তানিশা আরমান চৌধুরী কে পা ছুঁয়ে সালাম করতে যান কিন্তু তিনি করতে দেন না।

আরমান- কখনো কারোর কাছে নীচু হয়ে না,

(তানিশার চোখ ছলছল করছে কারণ সে এই কথাটা আগেও শুনেছে ওর বাবার কাছ থেকে ওর বাবা সব সময় এটা বলতেন- মারে আল্লাহ পাক ছাড়া কারোর কাছে তোর মাথা নীচু করবি না সবসময় মাথা উঁচু করে থাকবি।)

ওদের নাচের কোচ বললো- আমি এই কলেজের পক্ষ থেকে সবার সামনে তানিশাকে কিছু বলতে চাই।

সবাই স্যারের দিকে তাকায়।

তিনি বললেন- নবীন বরণ অনুষ্ঠানে আমি ছিলাম না তানিশা একা সবাইকে দেখিয়ে দিয়েছে।আর এবারে আমায় কিছু করতে হয়নি ওই সবটা সামলেছে।আমার বলতে কোনো আপত্তি নেই যে । তানিশা আমার থেকে অনেক বেশী দক্ষ নাচে।আমি বা আমরা চাই তানিশা যেন আমাদের কলেজে আমার পদে নিয়োগ হোক। তানিশা তোমার কী মত।

তানিশা – একজন স্টুডেন্ট এর কাছে এই পদটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।সেটা আমার কাছেও ।আমি আমার মতো চেষ্টা করবো তবে আমি স্যারের সহকারী হয়ে থাকতে চাই স্যারের জায়গাটা আমার চাইনা।

অনুষ্ঠানটা ভালো ভাবে শেষ হলো।

মিতু- নিশা সত্যি তোর জবাব নেই। তুই কি সুন্দর
নাচ করলি।সবাই হা করে তাকিয়ে ছিল।

নিঝুম- সত্যি অসাধারণ।

তানিশা- থাক আর নাম করতে হবে না।আমি জানি আমি কী পারি ( ভাব নিয়ে)

নীলা- ওই বেশি ভাব নিবি না। তুই মেয়ে হয়ে শাড়ি পরতে পারিস না

তানিশা- ওটা তো ইচ্ছা করে শিখেনি ।

মিতু- কেন।

তানিশা- আমার বরের হাত থেকে শাড়ি পড়বো বলে।

অনিক,মেঘ আর আদি ওদের থেকে একটু দূরে দাঁড়িয়ে ছিল। অনিক কথাটা শুনতে পাই।

অনিক- মেঘ ,আদি তোরা কী কেউ শাড়ি পড়তে জানিস।

মেঘ- কী পাগল হয়েছিস। আমরা শাড়ি পরতে জানবো কোন দুঃখে ( অনিকের পিঠে ঘুষি মেরে)

অনিক- সরি পরতে নয় পরাতে মানে বউ যদি বলে শাড়ি পরতে পারিনা।তখন তো তোদেরই পড়াতে হবে।

আদি আর মেঘ অনিকের দিকে তাকিয়ে আছে।

আদি- মেয়ে শাড়ি পরতে জানে‌না আর আমরা পারবো কিভাবে।

অনিক- শিখে রাখবি।কাজে লাগবে।

ওরা আর কিছু বলেনা।

২ বছর পর ———

সময় থেমে থাকেনা ।কেটে গেছে ২ টো বছর। আদি দের পরিক্ষা শেষ হবার পর ওরা তিনজন ওদের পারিবারিক বিজনেস দেখাশোনা করতে থাকে।ওদের তিনজনের দেখা হয় প্রায় তবে আগের মতো আড্ডা মারতে পারে না । তানিশারা ভালোই ছিলো মিতুর সাথে ওদের বন্ধুত্ব আরো বেড়ে গিয়েছিল।এই কিছুদিন আগে ওদের ফাইনাল পরীক্ষা শেষ হলো।ওদের গ্র্যাজুয়েশন হয়ে গেল এখন শুধু রেজাল্ট বের হবার অপেক্ষা। নিঝুম আর মিতু অনিক আর মেঘ এর সাথে প্রতিদিন ফোনে কথা বলে।দেখা করেনা বললেই চলে ওদের তিনজনকে নিজেদের কাজ বুঝে নিতে হিমশিম খেতে হয়েছে এই ২ বছরে।আর রিয়া আগের বছর পরিক্ষা দিয়ে কোন রকমে পাশ করে । আদির সাথে রিয়ার রিলেশনশিপ এখন ও আছে।
আজ সবাই একসাথে হয়েছে অনেকদিন পর ।তার অবশ্য একটা কারণ আছে।( পরে বলছি ওটা)

আদি- কেমন আছিস

অনিক আর মেঘ- ভালো ( তিনজন তিনজনকে একসাথে জড়িয়ে ধরে)

অনিক- বাসে গিয়ে বস।

আদি- হুম ।

আদি বাসে ওঠে বাসে নিঝুম,নীলা,মিতু । আছে আদির চোখ শুধু মাত্র তানিশাকে খুঁজেছে ।আদি জানালার পাশে একটা সিটে গিয়ে বসে।

রুহি(রূদ্ধির বোন)- আদি দা কেমন আছো।

আদি- ভালো তুমি।

রুহি- ভালো ইরা কোথায়।

আদিরা(আদির বোন) – আমি এখানে।

রুহি আর ইরা একে অপরকে জড়িয়ে ধরে।রুহি আর আদিরা( ইরা) একে অপরের বেস্টফ্রেন্ড।ওরা এবছর hsc দিল।

বাসে উঠলো মেঘা,নিরব,অভিক,রূদ্ধি।আর ওদের ছেলে মেয়ে। নিরবের ছেলে মেহরাব আর অভিকের মেয়ে আরুশী। দুজনের বয়স ৫ বছর।অভিক আর নিরব এর একসাথে বিয়ে হয়েছিল।

নিরব- কেমন আছো আদি

আদি- ভালো ।তোমরা

নিরব- ভালোই।

ওরা একটা বাসে মাত্র কয়েকজন নিঝুম- অনিক,অভিক- রূদ্ধি,নিরব- মেঘা,মেঘ- মিতু, রুহি- ইরা,নীলা,আরুশী, মেহরাব,আদি আর তিনজন সাভেন্ট।

২ঘন্টা পর—

ওরা ওদের গন্তব্য এ এসে পৌঁছায়।সবাই একে একে নামে।

নীলা-কী সুন্দর জায়গাটা।

মিতু- আবার নামটা দ্যাখ।

নিঝুম- প্রেমনগর।

আদি এদিক ওদিক দেখছিল ওর চোখ পড়ে তিনটে ছেলে আর একটা মেয়ের উপর । চারজনেরই মুখে মাস্ক।ওদের সকলকেই আদির চেনা লাগছে কিন্তু বুঝতে পারছে না।

ছেলে গুলো মাস্ক খোলে ফেললো।আদি ওদের সবাইকে চেনে ।অভিক আর নিরব এর বিয়েতে এসেছিল ওরা‌।নীল,রাজ,আর রোহিত।

নীল- কেমন আছো সবাই।

নীলা- ভালো ভুলেই তো গেছিস আমাকে।

নীল- আমি আমার কিউট বোনটাকে কী ভুলতে পারি ( জড়িয়ে ধরে)

নিঝুম- আমি কী বাদ নাকি।

নীল- নো আমি কাউকে ভুলি নাই।

রাজ- মনে হচ্ছে আমাকে সবাই ভুলে গেছে।

নীলা- ভুলি নি।( হালকা করে জড়িয়ে ধরে)

নিঝুম- আমি ও ভুলি নি।

মেয়েটা-আমিও আছি এখানে।

সবাই ওদিকে তাকায় মেয়েটা একটা পিংক কালারের কূতি ,জিন্স পরেছে। চুল গুলো পনিটেল করা।পায়ে হাই হিল।মেয়েটা মাস্ক টা খুললো সবাই অবাক হয়ে যায় ওকে দেখে–

#চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here