অনুভূতি part 10

0
2553

অনুভূতি part 10
#Roja_islam

– ভাবি কি করছো?
– ক…কিছু না তোঁ!
.
রাহি বেলার এক্টু সামনে গিয়ে।
– সে কি ভাবি,তুমি কাঁদছ কেনো??
.
বেলা এক্টু হেসে রাহি’র দিকে তাকিয়ে বলে।
– কই না তোঁ কাঁদছি না আমি। চোখে কিছু পরেছে হয়তোঁ।
– ভাঙবে, তোঁবু মোচকা’বে না হুহ। — মনে মনে।
– তুমি কি কিছু বলবে রাহি।
-ওহ আচ্ছা ভাবি আমি তোমাকে যেটা বলতে আসছিলাম!
– হ্যা,বলো।
– ভাবি ভাইয়া আমায় সবি বলেছে।
– কিহহহহহ, বলেছে?
– এই যে তুমি ডিভোর্স চাও তারপর অন্য একজন কে ভালোভাসো এগুলা’ই সব বলেছে।
ভাইয়া আমার থেকে কিছু’ই লুকায় না……
– তোঁ?
– এখন তুমি তোঁ জানো’ই বাবা ভাইয়া’কে জোড় করে বিয়ে দিয়েছে। আসলে ভাইয়া’র ও একজন কে পচন্দ ছিলো।কিন্তু তোমা’র সাথে বিয়ের পর ভাইয়া সব ভুলে তোমার সাথে’ই থাকতে চেয়েছিলো, ভালোবাস’তে চেয়েছিলো কিন্তু। তুমি ভাইয়ার কাছে ডিভোর্স চাও। তাই ভাইয়া এখন তার পছন্দে’র মেয়ে’কে বিয়ে করতে চায়।
.
এই কথা শুনে বেলা চেঁচিয়ে বলে।
– তোমার ভাইয়া তো এই সো কোল্ড দেখা দেখি ডিভোর্সের পরে’ও করতে পারে তাই না??? — বিষণ রেগে।
.
বেলা’র চিল্লানি’তে দরজায় দারিয়ে থাকা বর্ণ ভয়ে শেষ। সাথে রাহি’ও এক্টু চুপ মেরে যায় কিন্তু ভাইয়ে’র জন্য রাহি চুপ থেকে পারে না।
– হ্যা, ভাবি সেটা ডিভোর্সে’র পরেও পারে করতে। কিন্তু ভাই কি চায় জানো?
– কি চায় তোমার ভাই? — দাঁত চেপে।
– ভাইয়া চায় তুমি আমাদের সাথে যাও যেনো ভাইয়া’র পছন্দে’র মেয়ে ভাইয়া কে সন্দেহ না করে।বা তোমার সাথে ভাইয়া’র ভালো রিলেশন ছিলো এগুলা না ভাবে। তাই বুঝেছো ভাবি?
.
এই কথা শুনে
রাগে বেলা থরথর কাঁপছে। সে মানতে পারছে না, না, না কিছুতেই বেলা নিজের বর এর পছন্দে’র মেয়ে দেখতে যাবে না বর্ণ’কে ও যেতে দিবে না। কিন্তু জেদে করে মানুষ কি করে না করে বুঝে না বেলা’র ও তাই হলো জেদ করে বললো সম্পূর্ণ আলাদা কথা।
– ঠিক আছে আমার কোনো সমস্যা নেই যেঁতে। — চোখ মুখ শক্ত করে বলে বেলা।
– ঢং, নিজের বর সেটা পাগল ও বুঝে।যেমেন তুমি বুঝছো কিন্তু মুখে বলছো অন্য কথা ঠিক আছে কতক্ষন থাকে তোমার এই জেদ আমিও দেখবো ভাবি। — মনে মনে।
ওকে ভাবি দ্যান রেডি হয়ে নিচে এসো।
ভাই তো আগেই রেডি।আমি ও যাচ্ছি তুমি এসো তাড়াতাড়ি ওকে বাই ভাবি।
.
বেলা’র গাঁ জ্বলেপুরে যাচ্ছে। রাহি চলে গেলে বেলা আবার কেঁদে দেয় তার এই দুঃখে মরে যেতে ইচ্ছে করছে তার নিজের বরে’র সাথে তাকে অন্য মেয়ে দেখতে যেতে হবে তাও। তার’ই বরে’র বিয়ে’র জন্য। এই ভেবে বেলা আরো কাঁদছে।
.
রাহি রুম থেকে বেরিয়ে হাফ ছেড়ে বাঁচে। ঠিক বলেছে তাঁর ভাই এই মেয়ে ধানিলংকা। আল্লাহ কি চিল্লানি টাই না দিলো রাহি’র তো মনে হচ্ছিলো তাঁর ছোট্ট জান টা ওখানে’ই ফুড়ুৎ করে উড়ে যাবে।বেলা’র ভয়ে কিন্তু না এখন পর্যন্ত তাঁ হয়’নি বাঁচা গেছে।
.
বর্ণ বোনে’র ফেস দেখে নিচু শব্দে হেসে দিলো।
– কি’রে শেষ তোঁর কাজ? — হেসে।
– তাঁ আর বলতে ভাভাহ গোঁ ভাভাহ।কেমনে ছিলি তুই এই ধানিলংকা মেয়ে’র সাথে দুই’টা দিন। ২ দিন বাদ দিলাম সাড়া জীবন কেমনে থাকবি ভাই।– করুন কন্ঠে বলে রাহি।
– হাহাহা। যানি না।
– হাসছিস তুই আমার তো মনে হচ্ছিলো ওখানেই তোঁর বউ চিল্লানি দিয়ে আমায় টপকায় দিবে।– চোখ বড় বড় করে বলে রাহি।
.
বর্ণ হেসে টেনে রাহি’কে রাহি’র রুমে নিয়ে যায়।
– তোঁর একটা শাড়ি দে। তাড়াতাড়ি দে।
– কেনো তুই না বউ এর জন্য শপিং করেছিস শাড়ি আনিস’নি? — শাড়ি বের করতে করতে।
– না আমার মনে ছিলো না। — মাথা চুলকাতে চুলকাতে।
– খুব ভালো। এই নে তোঁর শাড়ি। — মুখে ঢিল দিয়ে।
– কালি……
– একদম চিল্লাবিল্লা করবি না করলে….
– করলে? — রেগে।
– করলে আমি এক্ষুনি গিয়ে ভাবি’কে সব গরগর করে বলে দিবো। — দাঁত বের করে হেসে।
.
এই কথা শুনে বর্ণ একটা ঢোক গিলে চুপচাপ শাড়ি নিয়ে বেড়িয়ে যায়।
আর কিছু’ই বলে না কারন বর্ণ এতো তাড়াতাড়ি মরতে চায় না। বেলা সত্যিটা জানলে ঠিক বর্ণ’কে মেরেই ফেলবে।
.
বর্ণ বেরিয়ে যেতে’ই রাহি তাঁর বাবা কে ফোন দেয়।
– হ্যালো বাবা!
-………………
– বাবা তোঁমার প্লেন কাজ করেছে বাবা ইশ দাড়াও দাড়াও তোমায় সব বলছি।– রাহি সব বলে রায়হান চৌধুরী কে ২ দিন এর কথা।
-……
– হ্যা, বাবা বাট সব তোঁ ঠিক আছে কিন্তু নিয়ান?
-….
– ওকে বাবা তুমি যখন বলছো। তখন আমি টেনশন করলাম না।
-…….
– ওকে, বাবা এখন তাঁহলে রাখি অভিনয় করতে যেতে হবে যে।
-……..
– হাহাহাহা। ওকে,বাই বাবা।
-…….
.
বর্ণ শাড়ি হাতে রুমে ঢুকে দেখে বেলা কাঁদছে।
বর্ণ কে দেখেও বেলা কান্না থামায়’নি।
– কি হলো কাঁদছ কেনো?
.
বেলা চুপচাপ বর্ণ এর দিকে তাকিয়ে কেঁদে’ই যাচ্ছে তাই বর্ণ বলে।
-কি হলো তুমি কি চাও নাকি আমি আবার তোঁমায় কিস করে কান্না থামা’ই হুহ?
– কেনো থামালে তোঁর গার্লফ্রেন্ড রাগ করবে? — রেগে।
.
বর্ণ ভড়কে যায় বেলা’র কথা শুনে। এক্টু চুপ থেকে বর্ণ বলে।
– যাও এই শাড়ি’টা পরে এসো। আমাদের বেরুতে হবে! — শাড়ি বেলা’র হাতে দিয়ে।
– আমি তোকে যেতে দিবো না। — চেঁচিয়ে।
– ওকে,তাহলে ডিভোর্স চেও না। আমি যাবো না রাজি?? — বাঁকা হেসে।
.
বেলা চুপ থাকে বর্ণ’র কথা শুনে। বর্ণ বেলার দিকে’ই তাকিয়ে আছে। বেলা কিছু বলছেনা দেখে বর্ণ চলে যেতে নিলে’ই বেলা বলে।
– আমি শাড়ি পরতে পারি না! — চেঁচিয়ে।
.
বর্ণ পিছন ফিরে বলে।
– আমি রাহি’কে পাঠিয়ে দিচ্ছি…..
– তুই পরিয়ে দিবি। — রেগে।
– বেলায়ায়া, আর একবার তুইতুক্কারি শুনলে খারাপ হবে। — বিষন রেগে।
– হ্যা করবো’ই তোঁ যা করার ক… করেন। — তুতলিয়ে যায় বেলা তুই বলতে গিয়েও বর্ণ ওর ফেস দেখে বলতে পারে না।
– তাঁ ডিভোর্স হয়ে যাবে তাও আমায় শাড়ি পরিয়ে দিতে বলছো লজ্জা করে না তোমার?– রেগে।
– না করে না পরিনে দিন। আর হ্যা এখনো ডিভোর্স হয় নি তাই বলছি। — চেঁচিয়ে।
– আমি……..
-আপনার প্রব্লেম থাকলে পরিয়ে দিতে’ই হবে।
— রেগে।
.
বর্ণ কিছু বলতো কিন্তু বেলা’র চিল্লানি’তে আর পারলো না তাই বর্ণ ও রেগে। বেলা কে সামনে টেনে নিয়ে বলে।
– মানে সব কি আমি’ই পরিয়ে দিবো?
– মানে কি?
– মানে ব্লাউজ ও আমি পরিয়ে দিবো?– রেগে
– না,না।
.
বলেই বেলা ওয়াশরুম গিয়ে পরে আসে। বর্ণ বেলা’র উপর এক রকম অত্যাচার করে শাড়ি পরিয়ে দেয়।যার কারনে বেলা’র চোখ দিয়ে পানি পরছে।
আসলে বর্ণ ইচ্ছে করে বেলা পেটে, পিঠে, হাতে, শাড়ি পরায় সময় খুব জোরেই নখ দিয়ে আচর দেয় যার ফলে বেলা ব্যাথা’য় কাঁদছে। কিন্তু বর্ণ সে দিকে নজর না দিয়ে। শাড়ি পরিয়ে বেলা’কে টেনে নিয়ে একদম গাড়িতে বসিয়ে দেয়। আর চলে যায় মেয়ে’র বাড়ি।গাড়ি থেকে নেমে’ই বর্ণ একদম কোনো কথা ছাড়া’ই ভিতরে চলে যায়। রাহি, আর বেলা এক সাথে ভিতরে যেতে যেতে রাহি বেলা’কে বলে।
– দেখলা ভাবি ভাই কত ভালোবাসে মেয়ে’টা কে ভাই। আমাদের ফেলে’ই চলে গেলো ভিতরে। — দাঁত বের করে হেসে।
.
রাহি’র দিকে বেলা চোখ পাকিয়ে তাকিয়ে থাকে এই কথা শুনে।
এই মুহূর্তে রাহি’র দাঁত গুলি বেলা’র ভেঙে ফেলতে ইচ্ছে করছে। শুধু ননদী বলে রছেড়ে দিলো আজ।আর না হলে ভাঙতে না পারলেও কালি ঠিক মেখে দিতো দাঁতে তাহলে রাহি এই কালা দাঁত নিয়ে আর হাসা’র দূরসাহস করতে পারতো না।
.
রাহি বেলা’র চোখ মটকানো দেখে তাড়াতাড়ি পা ফেলে চলে যায় ভিতরে পিছে পিছে বেলা’ও যায়।
ভেতরে গিয়েই বেলা’র চোখ বড় বড় হয়ে যায়। কারন বর্ণ’ওর কোলে একটা মেয়ে বসে আছে আর দু জনেই কথা বলে হেসে হেসে গড়াগড়ি খাচ্ছে। বেলা আর এক্টু সামনে গেলে’ই। বর্ণ বলে ।
– অনা,সি এই যে এই মেয়ে কে বিয়ে করিয়েছে বাবা। — বেলা কে হাত দিয়ে দেখিয়ে।
আর বেলা এই হচ্ছে আমার নতুন বউ অনামিকা অনা….
.
বর্ণ আর কিছু বলা’র আগেই বেলা বলে।
– বিয়ে হয় নি এখনো। – রেগে।
– বাদ দেও একি কথা করবো তো ওকে’ই বিয়ে একদিন তাই না। তুমি বলো বিউটিফুল না মাই নতুন বউ।–অনা’র সামনে’র চুল কানে গুঁজে দিতে দিতে বলে বর্ণ।
.
বেলা তোঁ রেগে কিছু করবে এসব দেখে তাঁর আগেই। অনা উঠে বেলা’র সামনে গিয়ে বলে।
– থ্যাংক ইউ সোঁ মাচ বেলা। বর্ণ কে ডিভোর্স দেওয়া’র জন্য। না হলে আমি কি করে পেতাম বর্ণ কে। তাই থ্যাংকস।
.
চলবে..
[জানি ভালো লিখিনা।তাও জানাবেন কেমন হইছে। ভুল ত্রুটি ক্ষমা’র দৃষ্টিতে দেখবেন ]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here