অনুভূতি part 2
#Roja_islam
সকালে….
বেলা ঘুম থেকে উঠেই চিৎকার শুরু করে বর্ণ তাকে জরিয়ে ধরে ঘুমিয়ে আছে দেখে।
– এই হুনুমান ছাড় আমাকে। ছাড় বলছি।
— কি হইছে ফাজিল মেয়ে।চিল্লাস কে?
-আমায় ধরলি কোন সাহসে। হনুমান।
আবার ফাজিল বলিস চিনিস আমাকে?
— হ্যা চিনি তুমি ধানিলংকা আমার সুন্দরী বউ।এখন রাহ উঠিও না ঘুমাতে দেও।
.
বলেই বর্ণ বেলা কে ছেড়ে অন্য পাশ হয়ে শুয়ে পরে।বেলা ছাড়া পেয়ে লাফ দিয়ে উঠে দারায়।বেলার তো গা জ্বালা করছে বর্ণ এর কথা শুনে।
.
– খুব শখ না হনুমান আমায় জরিয়ে ধরার আবার সুন্দরী বউ বলার দেখ কি করি তোকে। কতো বড় সাহস তোর আমাকে বেধে রেখেছিস রাতে এখন আবার নাম দিয়েছিস ধানিলংকা।দেখ তবে ধানিলংকা র ঝাল কতো।
বেলা বিড়বিড় করতে করতে ওয়াশরুমে যায়। গিয়ে এক মগ পানি নিয়ে। চেঞ্জিং রুমে যায় এখানে সব আছে।কত গুলি মেকাপ মগে ঢেলে গুলিয়ে রুমে যায়। গিয়ে দেখে হাত পা মেলে আরামে ঘুমাচ্ছে বর্ণ।
– খুব আরামে ঘুমাচ্ছিস না হনুমান। দেখ কি করে তোর আরামের ঘুম হারাম করি।
বলেই বেলা মগের মেকাপ গুলা পানি ছুরে মারে একদম বর্ণ এর একদম মুখে। সাথে সাথেই বর্ণ হুরমুরিয়ে উঠে।আর বর্ণ কে দেখে বেলা খিলখিল করে হেসে দেয়।
– এই ফাজিল মেয়ে কি করলে এটা তুমি?
কেমন ঔষধ ঔষধ গন্ধ আসছে। ইয়াক কি দিছো এটা।?
.
বেলা হাসতে হাসতে বলে।
– হনুমান ঔষধ ঔষধ না বলো মেকাপ মেকাপ গন্ধ। আপনাকে একদম মেকাপ হনুমান সুন্দরী লাগছে
।
বলেই বেলা পেটে হাত দিয়ে ধরে হাসতে লাগলো।
বর্ণ দৌড়ে ওয়াশরুমে গেলো। গিয়ে যা দেখলো।
— আয়ায়ায়া এটা কে আল্লাহ আমার চেহারা। কি বজ্জাত মায়ে। আমার কি হাল করছে খবর আছে তোর খালি বাবা কে যেতে দে একবার বাইরে।
মেকাপ গুলে দেওয়ার কারনে বর্ণ কে ভুত পেত্নী থেকে কম লাগছে না।
বেলা ইচ্ছা মতো হাসছে বেডে শুয়ে।
— এখন বুঝ ধানিলংকা কি কি করতে পারে আর ঝাল কত হনুমান কোথাকার।
বর্ণ ওয়াশরুমে থাকতেই। বেলা জিন্স আর ছোটখাটো একটা টি শার্ট পরে চুল গুলা ছেরেই নিচে চলে গেলো।
বেলা নিচে নামতেই দেখে। একটা মেয়ে আর একটা লোক ডাইনিং এ বসে আছে। বেলা এদের চিনে না বিয়ে হলেও অন্য সব বিয়ের মতো বেলা আর বর্ণ এর বিয়ে হয়নি। তাই কাউকেই চিনেতে পারছে না বেলা।বেলা আস্তে আস্তে টেবিলের সামনে যায়। বেলা কে দেখা মাএ রায়হান চৌদুরী বর্ণ এর বাবা হুংকার দিয়ে উঠলেন। টেবিলে বসা মেয়েটি ও ভয়ে দারিয়ে জায়। বর্ণ বাবার হুংকার শুনে তাড়াতাড়ি নিচে আসতে ধরে।
– না জানি নিচে গিয়ে কি করছে এই মেয়ে।আল্লাহ বাচাও।
.
– এই মেয়ে কি পরেছ। তুমি এসব হ্যা…
চৌদুরী পরিবারের বউ হয়ে। কি সব পরে শ্বশুরের সামনে এসেছ তুমি হ্যা।
.
বেলা ভয়ে কুকরে যায়। বেলা বুঝতে পারে এটা বেলার শ্বশুর মানে আর একটা হারামি বাবা।
বেলা কে চুপ থাকতে দেখে ছেলে কে ডাকতে থাকে
রায়হান চৌদুরী।
.
-বর্ণ কোথায় বর্ণ বর্ণ….
কই তুমি??
– জ্বী বাবা?
– তোমার বউ কি পরছে না পরছে দেখেছো তুমি। তুমি ভুলে যাচ্ছো বেলা তোমার ওয়াইফ তুমি ওর খেয়াল না রাখলে সব দিক দিয়ে আমি কিন্তু এক কানা করিও তোমায় দিবো না।বেলা তোমার জন্য সোনার হরিণ মনে রাখবে।
.
বেলা তো থ দারিয়ে আছে।
– আমি সোনার হরিণ এই হনুমান এর জন্য আহা কি মজা এখন বুঝাবো মজা হনুমান ওয়েট এন্ড সি। – মনে মনে
.
— এই মেয়েকে এখুনি নিয়ে যাও আমার সামনে থেকে। শাড়ি ছাড়া দেখলে খবর আছে তোমার বর্ণ। যাও এক্ষুনি নিয়ে যাও ওকে।
— ওকে বাবা।যাচ্ছি।
বর্ণ খোপ করে বেলার হাত ধরে টেনে নিয়ে যায়। বাবার চোখের আড়াল হতেই বেলার চুল ধরে নেয় বর্ণ
।
.
-সমস্যা কি আপনার। ছাড়ুন।বর্ণ লাগছে তো উফফফ…..
– সবাইকে শরীর দেখাতে ভালো লাগে।এসব পরে নিচে গেলি কি করে তুই?
বেলা কে বর্ণ চুলের মুঠি ধরে নিজের রুমে নিয়ে যেতে যেতে বললো কথা গুলি।
– বর্ণ এর বাচ্চা তুই কি আমার স্যার যে আমি তোর কথা পাইটু পাই শুনবো… আমি ১০০ বার পড়বো শুনেছেন?
– আমার কাছে থাকলে আর ডিভোর্স পেতে চাইলে। আমি যেটা বলবো সেটাই করতে হবে তোকে। বুঝেছিস?
– তো কে থাকতে চায় আপনার সাথে? ডিভোর্স চাই আমি।
– বেশি উরিও না বেলা। পড়ে সুইসাইড করলেও ডিভোর্স পাবে না।
-হিহি….ঠিক আছে মরে যাবো কিন্তু আপনিও ভুলে যাবেন না।আমি আপনার জন্য সোনার হরিণ। আমি মরে গেলে কিন্তু পস্তাতে হবে আপনাকেই।
– এতো বড় সাহস তোমার বর্ণ চৌদুরী কে ব্লেকমেইল করছ তুমি।
-আপনি বণ না বর্ণ না ড্রাসবিন আমি জানিনা। আমি শুধু জানি আমি ডিভোর্স চাই। আর নিয়ান এর কাছে যেতে চাই।
– তুই আমার কথা কান খুলে শুনে রাখ। আমিও তোকে ডিভোর্স দিবো না। আমি যা বলবো তোকে তাই করতে হবে। আর যদি না শুনিস…..
– যদি না শুনি তো? ভ্রু কুচকে।
– তোর বাবা কে ফোন করে সব বলবো। সাথে আমার বাবা কেও।যে তুই আমার কাছে ডিভোর্স চাস। তারপর তোর বাবা তোকে কি করবে সেটা নিশ্চই বলতে হবে না?
বেলা ঢোক গিললো।
– খাটাশ তুই এগুলা করতে পারিস না আমার সাথে।
– আমি সব পাড়ি।
বলেই বর্ণ… বেলার পরনের ছোট্টখাট্টো টি শার্ট টা এক টানে ছিরে ফেলে।
আর বেলা নিজেকে দু হাত দিয়ে ঢেকে ফেলে সাথে সাথে।
– আল্লাহ আমার সব শেষ করে দিলো হনুমান তোকে তো আমি দে…..
– দেখে নিও আপাদত আমি তোমার হ্যাসবেন্ডই আছি। তাই অনেক সময় পাবা আমাকে দেখতে।কিন্ত এখন যদি তুই এই জিন্স চেঞ্জ না করছিস তো আমি এটাও এখানেই ছিরে ফেলবো।
– না না যাচ্ছি আমি যাচ্ছি।
– গো… রাইট নাউ। এন্ড পাচ মিনিট এর মধ্যে ডাইনিং এ দেখতে চাই তোকে। ইডিয়ট..
.
বলেই বর্ণ চলে গেলো আর বেলা ইচ্ছে মতো চিল্লিয়ে গালি দিচ্ছে বর্ণ কে।
কত্তা,বিলাই, রাক্ষস। আস্তা বজ্জাত……
কুচিকুচি করে কাটবো তোকে দেখিস….
.
বর্ণ দরজার কাছে দারিয়ে.. থেকে শুনতে
পাচ্ছে সব কিন্তু কিচ্ছু করার নেই তার।
আপাদমস্তক নিচে গিয়ে বাবা কে কি উত্তর দিবে তাই ভেবে পাচ্ছে না বর্ণ।
রায়হান চৌদুরী বর্ণ এর বাবা ক্ষীপ্ত বর্ণ এর উপর কারন বাড়ির নতুন বউ বেলা…সে কিনা জিন্স আর ছেড়াফাড়া টি শার্ট পড়ে নিচে এসেছে সবার সাথে ব্রেকফাস্ট করতে। আর বর্ণ তা দেখেনি।
কিন্তু বর্ণ এর বাবা তো আর জানে না কি ধানিলংকা বউ আনছে ছেলের জন্য……
.
চলবে…
[ আগে এই পার্ট এরই কিছু ঝগড়া পোস্ট করে ছিলাম। আশা করি এবার বুঝেছো। কেমন হইছে জানায়ই ও।ভুল ত্রুটি ক্ষমা করিও]