#অন্তরালে ?
#অনুগল্প
#আফিয়া_আফরিন
বাসায় কেউ না থাকলেই ফাইজা নিজ মনেই একা একা আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে সাজগোজ করে, কোন কারণ ছাড়াই। আজও শাড়ি পড়েছে, ঠোঁটে হালকা লিপস্টি’ক এবং চোখে কাজল।
আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছিলো।
সে সবে ক্লাস টেনে পড়ে। এই বয়সে এরকম উচ্ছাসতা সাথে অস্বাভাবিক নয়।
এমন সময় হঠাৎ কলিং বেল বেজে উঠলো। ফাইজা চমকে উঠলো। এই ভর দুপুরে কে এলো? মা নয় তো? মনে হয় নেহা আপু এসেছে। নেহা আপুর আসার কথা ছিল তো।
দরজার সামনে গিয়ে লুকিং গ্লাসে দেখলো। না মা নাহ, অহন ভাই এসেছে। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল সে এবং ওষ্ঠদ্বয়ে এক চিলতে হাসি ফোঁটালো। দরজা খুলতে যাবে ওমনি, লজ্জায় গাল লাল হয়ে উঠলো। আহান ভাইকে দেখলে কেমন অকারনেই খুব লজ্জা লাগে। তার মধ্যে আজকে আবার এরকম সাজগোজ অবস্থায়।
সে দরজা খুলে দিয়ে ফ্যাকাশে ভঙ্গিতে তাকালো।
আহান ওকে দেখা মাত্রই বললো, ‘ওমা! কোথাও যাওয়া হচ্ছে নাকি? এত সাজগোজ যে!’
‘নাহ ভাইয়া। এমনিতেই।’
‘ওহ আচ্ছা। আরমানকে ডাকো তো। কথা আছে একটু।’
‘ভাইয়া বাসায় নেই। মাকে নিয়ে মামা বাড়ি গেছে। এলে বরং বলে দিবো, আপনি এসেছিলেন।’
‘ভেরি ব্যাড। এই দুপুরবেলা গরমের মধ্যে এলাম, ফ্যানের ঠান্ডা হাওয়া না খাইয়ে চলে যেতে বলছো!’
‘সেটা বললাম কখন? আসেন, ভিতরে।’
আহান ভিতরে এসে সোফায় গা এলিয়ে দিলো। ফাইজা চলে গেলো রান্নাঘরে চা বানাতে।
কিছুক্ষণ বাদেই দু কাপ চা বানিয়ে নিয়ে একটা আহান এর উদ্দেশ্যে এগিয়ে দিলো।
আহান চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে বললো, ‘তোমায় কিন্তু শাড়িতে বেশ লাগে।’
ফাইজা মৃদু হাসলো। আহান ভাইয়ের প্রশংসা তার ভালই লাগে, কিন্তু উত্তরে হাসি ছাড়া কিছুই দিতে পারে না।
আহান হঠাৎ ওঠা থেকে দাঁড়িয়ে ফাইজার সামনে গেলো। ফাইজা ঘাবড়ে যাওয়া দৃষ্টিতে তার দিকে তাকালো। সোজা আহানের দৃষ্টিতে তাকালো।
ফাইজা সেই দৃষ্টিতে কেমন যেনো মাদকীয়তা আবিষ্কার করলো। হঠাৎ করেই এই এই নির্জন প্রহরে আহানের মাথায় কু’বুদ্ধি ভর করলো।
সে হুট করেই ফাইজার গালে নিজের এক হাত রাখলো। ফাইজা চকিত দৃষ্টিতে তাকালো। মুহূর্তেই সমস্ত শরীর শিরশির করে উঠলো।
এক ঝটকায় আহানের হাত সরিয়ে দিয়ে বললো, ‘কি করছেন কি আপনি?’
‘তুমি কি আমাকে ভয় পাচ্ছো?’
আহানের ভাবভঙ্গি দেখে ফাইজা সত্যি সত্যি আহানকে ভয় পাচ্ছিলো। কিন্তু সেটা মুখে প্রকাশ করল না।
ক্ষীণ গলায় বললো, ‘কই না তো!’
আহান হাসতে হাসতে বললো, ‘ সেটা তোমার মুখ দেখেই বুঝতে পারছি।’
‘এমন কিছু না আপনি এখন চলে যান আহান ভাই। নেহা আপু আসবে এখনই।’
‘আই সি। তারমানে নেহা আপুর ভয়ে আমায় এখন ভদ্র হয়ে থাকতে হবে। উল্টাপাল্টা কিছু করা যাবে না।’
‘কি পাগলের মতো কথা বলছেন আপনি? প্লিজ চলে যান। না হলে আমি চেঁচাবো।’
‘চেঁচাও তো আগে। কাজে করো। তুমি এমন একটা ভাব ধরে আছো, মনে হয় আমি তোমায় রে’প করতে আসছি!’ ভুরু নাচিয়ে কথাটা উচ্চারণ করলো আহান।
চমকে উঠলো ফাইজা। সে আশেপাশে তাকালো। কি বলবে বা কি করবে কিছুই বুঝতে পারছে না।
ওর চমকানো ভাব দেখে আহান আবার বললো, ‘এত চমকে ওঠার কিছু নেই।’
‘আপনি প্লিজ চলে যান। ভাইয়া এলে এসে দেখা কইরেন। প্লিজ। আপনাকে আমি অনুরোধ করছি।’
আহান উঠে দাঁড়ালো। ফাইজা ভেবেছে এবার হয়তো সে চলে যাবে। এতক্ষণে চোখের কোনে জল জমেছিলো ভয়ে। শাড়ির কোনা দিয়ে চোখ মুছলো। আহান দরজার সামনে কয়েক মুহূর্তের জন্য দাঁড়িয়ে ফাইজার ধারণা ব্যর্থ প্রমাণিত করে দরজা লক করে দিলো। তারপর সহজ ভঙ্গিতে ফাইজার দিকে তাকালো।
ফাইজা কাঁপা কাঁপা গলায় বললো, ‘দরজা বন্ধ করছেন কেন?’
‘কেনো বন্ধ করছি এখনো বুঝতে পারছ না?’
‘প্লিজ আহান ভাই। আপনি আমার ভাইয়ের মতো।’
‘তুমি অকারনেই ভয় পাচ্ছো। কেউ কিচ্ছু জানতে পারবে না। আমি তো নিজ থেকে কাউকে কিছু বলবো না। আশা করি তুমিও কাউকে কিছু বলতে পারবে না। মানুষের মুখ যে বড় কঠিন জিনিস!’
ফাইজা কোন কথা কানে নিল না। ছুটে নিজের ঘরে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দিতে চাইলো, কিন্তু সেখানেও সে ব্যর্থ হলো।
সব কেমন নিমিষেই এলোমেলো হয়ে গেলো। সে ছুটে ঘর পর্যন্ত যেতে পারল না। তার আগেই ন’র’প’শু তাকে ধরে ফেললো।
এটা নিশ্চয়ই কোনো দুঃস্বপ্ন! আহান ভাইকে সে পছন্দ করতো, ভালো মানুষ ভাবতো। আর সেই কিনা?
এই লোকটি তার গায়ে হাত দিচ্ছে কেন? ফাইজা কথা বলতে পারছে না। আহান মুখ চেপে ধরেছে। অধিক উত্তেজনায় জ্ঞান হারিয়ে মেঝেতে লুটিয়ে পড়লো ফাইজা। আহান ওকে ছেড়ে বড়ো করে নিঃশ্বাস ফেললো। এইটুকু একটা মেয়েকে কাবু করতে কতো ছোটাছুটি করতে হলো।
সে ঠোঁটের কোণে বক্র হাসি ফুটিয়ে বললো, ‘অনেক দিন থেকে তুমি আমার টার্গেটে ছিলো। শেষমেষ নাগালে পেলাম আজকে।’
তারপর মোহনীয় দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো, ফাইজার শঙ্খের মতো সাদা দেহে।
.
.
.
‘এরকম পাগলামি না করে একটু স্থির হো ফাইজা।’
নেহা এতো করে বলার পরও ফাইজা স্থির হতে পারলো না। কিছুক্ষণ আগে যা ঘটে গেল তার সাথে, তারপর ও কখনো স্থির থাকা যায় না!
নেহা যখন এসেছে, তখন প্রায় সন্ধ্যা হয়ে গেছে। ঘরের দরজা খোলা দেখে ঘরে ঢুকে, ফাইজাকে বিবস্ত্র অবস্থায় উদ্ধার করে।
তখন ও তার জ্ঞান ছিলো না।
নেহা এসে চোখে মুখে পানিয়ে ছিটিয়ে সমস্ত ঘটনা শুনলো। দেরি না করে সাথে সাথেই ফোন দিয়ে খবর দিল ফাইজার মাকে।
তারা এতক্ষণে রওনা দিয়ে দিয়েছে।
ফাইজা নেহার হাত আঁকড়ে ধরে বসে আছে।
বললো, ‘তুমি চলে যেও না আপু।’
‘এক সেকেন্ডের জন্য আমি এখান থেকে যাব না। শুধুমাত্র আমার জন্যই এমনটা হলো। আপনি যদি আরেকটু আগে আসতাম।’
ফাইজা কেঁদে ফেললো হু হু করে। বললো, ‘তুমি প্লিজ কাউকে কিছু বলবে না।’
‘আচ্ছা। এখন থাম। কান্নাকাটি করলে কিছু ঠিক হবে না।’
নেহা ঠান্ডা মাথায় ভাবছে কি করবে? ফাইজা তো তাকে ছাড়ছেই না। পুলিশকে খবর দেওয়া লাগতো। এমন মুখোশধারী অপরাধীকে তো আর ছেড়ে দেওয়া যায় না। ফাইজা না চাইলেও পু’লিশ কে’স করতে হবে।
.
.
.
পু’লিশ কে’স এ আগ্রহী নয় কেউও। ঘটনাটা জানাজানি হোক সেটা কেউ চায় না। এমনকি ফাইজা নিজেও না। সে তো পাথরের মূর্তির মত বসে আছে। ভালো খারাপ কোন অনুভূতি ই তাকে স্পর্শ করতে পারছে না। নেহা গিয়ে ফাইজাকে বেশ কয়েকবার বোঝালো। অবশেষে ফাইজা নিজেও সিদ্ধান্ত নিলো, জানাতেই হবে।
.
.
.
ফাইজা, ফাইজার মা এবং নেহা তিনজনে মিলে থানায় গেল। থানার অফিসার এর সাথে কথা বলতে চাইলে, উনি জানালেন হাতের কাজ সেরে নিয়ে তারপর কথা বলবেন। আলাদা একটা রুমে বসতে দেওয়া হলো। অফিসার তিন মিনিটের মাথায় চলে এলেন।
ফাইজা চুপচাপ বসে আছে। একটি কথাও বলছে না।
এরই মধ্যে অফিসার এসে জিজ্ঞেস করলেন, ‘বলুন আপনারা কি কেস রিপোর্ট করতে এসেছেন?’
নেহা নির্বিকার ভাবে জবাব দিলো, ‘রে’প কে’স।’
‘ঘটনা পুরোটা খুলে বলেন।’
ফাইজা নিজে কিছু বলল না। নেহা ফাইজার থেকে যা শুনেছে তাই অল্প ভাষায় বললো।
শুনে অফিসার বললেন, ‘মেডিকেল টেস্ট করাতে হবে। আমরা ওনার অবস্থা দেখে বুঝতেই পারছি, তবুও একটা প্রমাণ তো দরকার হয়।’
ফাইজা বললো, ‘আমি এসব কিছু করতে পারবো না।’
‘মিনিট দশেকের ব্যাপার। এমন আহামরি কিছু না। আপনি যদি মেডিকেল টেস্ট করেন তাহলে এক ঘন্টার মধ্যেই, অপরাধীকে ধরে নিয়ে আসবো। আর যদি না করান, তাহলে সে হয়তো আপনার মত আরো কতগুলো মেয়ের জীবন নষ্ট করবে। অবশ্যই তাকে ধরতে চাই। মেডিকেলের ঝামেলাটা মিটিয়ে আপনাকে আর কিছু করতে হবে না। আপনার কাছে এই পর্যন্তই বাদবাকি দায়িত্ব আমাদের।’
ফাইজা একটু পরপর ফুঁপিয়ে উঠছে।
নেহা তাকে ফিসফিসিয়ে বললো, ‘তোর সাথে আজকে যেটা হয়েছে, অন্য কারো সাথেও হতে পারতো। তাই দেরি করিস না। চল।’
তারা উঠে দাঁড়ালো।
.
.
.
সেই রাতেই পুলিশ অফিসার ফোন করে জানালেন, তারা আহানকে গ্রে’ফ’তার করেছে। এবার শুধু কেসটা কোর্টে ওঠার অপেক্ষায়। সাথে সাথে তিনি এটাও জানালেন, মেডিকেল রিপোর্টে খুব শক্ত কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি। প্রথম কারণ, ভিকটিম অজ্ঞান ছিলো। দ্বিতীয় কারণ, সে ওই ঘটনার পর পরই গো’সল করেছে এবং তার শ’রীর থেকে সমস্ত চি’হ্নই মুছে ফেলছে।
.
.
আজ কেস কোর্টে উঠেছে। দুশ্চিন্তাতে আগের রাতেই ঘুম হা’রাম হয়ে গিয়েছিল সবার।
ফাইজাকে যখন কাঠগড়ায় ডাকা হয়েছে, ফাইজা কাঁদতে কাঁদতে ওখানে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। তার বিপরীত দিকেই দাঁড়িয়ে আছে আহান। ক্রোধে রাগে তার চোখের পানি বাঁধ মানছে না।
আসামির পক্ষের উকিল ক্রস এক্সামিনেশন শুরু করবে। ফাইজাকে যখন প্রশ্ন করা হলো, তখন সে আসল প্রশ্নগুলোর উত্তরই দিতে পারল না। প্রচন্ড ঘাবড়ে গিয়েছিলো। রক্তশূন্য মুখে বারবার নেহার দিকে তাকাচ্ছিলো। মনে হচ্ছে একটা সহজ জিনিস অতি দ্রুত কঠিন হতে শুরু করেছে। ফাইজা মনে হচ্ছে চোরাবালিতে তলিয়ে যাচ্ছে।
আসামিপক্ষের উকিল অনেক কোশ্চেন করলেন। তার বিনিময়ে ফাইজার উত্তর ছিলো একদম সামান্য। কোর্টে বড় রকমের হাসির শব্দ শোনা যাচ্ছিলো বারবার।
আসামি পর্যায়ের উকিল শেষ প্রশ্ন হিসেবে তাকে বললো, ‘আমরা আহান সাহেবের কাছে শুনেছি আপনি আগে থেকেই তাকে পছন্দ করতেন এবং আপনার বান্ধবীদের কাছেও আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। আপনি তাদেরকে বলেছিলেন যে আপনি আহানকে পছন্দ করেন। আমি যদি বলি আপনি আপনার মা-বাবার বাসায় না থাকার সুযোগ নিয়েছেন, তখন কি বলবেন আপনি?’
ফাইজা উত্তরে আর কিছুই বলতে পারলো। কাঁদতে লাগলো। অসহায় হয়ে উঠল চারিদিক। আসামের পক্ষে উকিল বিজয়ের হাসি হাসলো।
কোর্ট সেদিনের মতো এনজর্নড হয়ে গেল। ফাইজার সমস্ত পরিবার চোখে অন্ধকার দেখলো। মান সম্মান সব বোধ হয় একেবারেই শেষ হয়ে গেল। মুখ দেখানোর অবস্থা রইলো না তাদের। পাড়া-প্রতিবেশীদের যেন কৌতূহলের কোন শেষ নেই।
কিন্তু হাল ছাড়লো না নেহা। পুলিশ অফিসারের সাথে আলাদাভাবে কথা বলে আহানের সম্বন্ধে গোপন ভাবে খোঁজখবর করা শুরু করলো।
এবং বেশ শক্তভাবে কয়েকটা প্রমাণ দাঁড় করালো, সাক্ষী হাজির করলো।
.
.
.
আজ আসামীর আবার ক্রস এক্সামিনেশন হবে।
আসামি কাঠগড়ায় উপস্থিত।
ফাইজাদের পক্ষের উকিল এনাম উদ্দিন আহানকে প্রশ্ন করলেন।
‘আপনার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে সেই সম্পর্কে আপনার মতামত কি?’
‘আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগটি সম্পন্ন মিথ্যে।’
‘আচ্ছা। আপনাকে ধন্যবাদ। আমি এখন আমার বক্তব্য পেশ করবো।’
তিনি হালকা কেশে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করলেন। জজ সাহেব তাকালেন তার দিকে।
এনাম উদ্দিন বলতে শুরু করলেন, ‘মাননীয় আদালত। আপনাদের সবার কাছে মনে হতেই পারে আমি এখানে একটি দুর্বল মামলা পরিচালনা করতে এসেছি। কারণ ভিকটিমের মেডিকেল রিপোর্টের প্রমাণের বৃত্তি মজবুত নয়। তবে আজ আমি এখানে প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষী পেশ করবো।
অপরাধীর এটাই প্রথম ধ’র্ষ’ণ ছিল না, এর আগে আরো তিনটি মেয়ের সাথে তিনি এই একই কাজ করেছেন। এর মধ্যে পাঁচ বছর আগে একটা রিপোর্ট পুলিশের কাছে এসেছিল, যেখানে জানানো হয়েছে এই অপরাধী বলপূর্বক তাকে ধ’র্ষ’ণ করে। তারপর পুলিশ তদন্ত হয়। কিন্তু আসামিকে ধরা যায় না। আবার মাঝখানে আরেকটা ঘটনাও ঘটে।’
এইটুকু বলে তিনি থামলে আহান অবাক হয়ে তাকায় তার দিকে।
তিনি আবার বলতে শুরু করলেন, ‘ একই মানুষের কাছে ধর্ষণ হওয়া ভিকটেইম চার নম্বর। মাননীয় আদালতের কাছে আমি জানতে চাচ্ছি আমরা কি পঞ্চম একটি মেয়েকে ধ’র্ষি’তা হবার ক্ষেত্র প্রস্তুত রাখবো নাকি রাখবো না? আমার বক্তব্য এই পর্যন্তই। যারা সাক্ষী দিয়েছে তাদের জবানবন্দীর কপি আমি আদালতে পেশ করেছি।’
দীর্ঘ সময় পর্যন্ত আদালতে কোন সাড়াশব্দ হলো না। নিশ্চুপ প্রতিটি প্রাণী।
নেহা বুঝে গিয়েছিল, তারা কেসটা দিতে গিয়েছে। আনন্দে চোখে পানি চলে এলো।
আজ অবশ্য তার আনন্দের ই দিন। এই একই ঘটনা একবার তার জীবনেও ঘটেছিলো। তাও আবার নিজের সবচেয়ে প্রিয় একজন মানুষের কাছে। নিজের প্রতি লজ্জায় ঘৃণায় কাউকে জানাতে পারে নাই। নিজের কষ্ট নিজের ভেতর চাঁপিয়ে কত রাত চিৎকার করে কেঁদেছে। সেই চিৎকার শোনার মত কেউ ছিল না।
কি লজ্জা, কি অপমান! কাকে বলবে সে?
আজ তার মুক্তির দিন। ফাইজা নামক এই মেয়েটির মাধ্যমেই তার ভিতরের বিরাট এক দরজা আজ খুলে গেল। আলোর স্পর্শে তার আনন্দের সীমা রইলো না।
.
.
.
.
সমাপ্ত।