অন্তর্দহন (সিজন-২)
পর্ব- ৩
লেখিকা- অলিন্দ্রিয়া_রুহি
মধ্য দুপুর। মাথার উপর মেঘলা আকাশ, বাতাস বইছে মৃদুমন্দ গতিতে, তবুও গরম কমছে না। মানুষের অবস্থা নাজেহাল, কুকুররা হা করে জিভ বের করে করে দৌঁড়াচ্ছে একটু পানির আশায়। এরকম আবহাওয়ায় মানুষের ভেতরে বিরক্তিবোধ জন্ম নেয়, অথচ উদ্দিন বাড়িতে আজ যেন আনন্দের মেলা বসেছে। সকাল থেকেই সবার হৈ-হুল্লোড়। রমরমা পরিবেশ, বাড়তি আয়োজন। কারণ একটিই, বিগত চারটি বছর পর শায়লা দেশের মাটিতে পা রাখতে যাচ্ছে। শিখা তো দফায় দফায় কাঁদছেন মেয়ের আগমনের খুশিতে। নাসরিন, বড় চাচী, সবাই সবার শোক ভুলে গিয়ে আয়োজন করছেন শায়লাকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য। শুধু পড়ন্তই দরজা এঁটে চুপচাপ বসে রয়েছে। হাঁটুর উপর মুখ গুঁজে ভাবতে লাগলো অভ্রর কথা। এরকম একটা মুহূর্ত তার জীবনেও আসতো, যেদিন অভ্র ফিরে আসতো বিদেশ থেকে। অথচ কী হয়ে গেল! যদি জানতো এমনটা হবে, তাহলে কোনোদিন অভ্রকে বিদেশে যেতে দিতো না পড়ন্ত। তৎক্ষনাৎ পড়ন্তর মনের ভাবনা গুলো বদলে গেল। অভ্র তো ফিরেই এসেছে! অভিমানের কারণে তালবাহানা লাগিয়েছে। দূরে সরে আছে। সেও যে বেশিদিনের জন্য নয়, বোঝে পড়ন্ত। তবুও মন সয় না। বাঁধা তো নেই, তবুও কেন এই দূরত্ব? কীসের অভিমান? একবার সামনা সামনি এসে জানুক আসল সত্যতা। পড়ন্তর অন্তর যে অভ্রর নাম জপে জপে পুড়ছে। সেখানে সে অন্য কাউকে কী করে বিয়ে করবে?
পড়ন্তর দু’চোখ বেয়ে জলের ফোয়ারা নামলো। নিঃশ্বাস নিতেও কষ্ট হয়। ইচ্ছে করে মাটির ঘরে চুপচাপ আরামের ঘুম দিতে। কেন যে সে সময়টা আসে না! দরজায় ঠকঠক শব্দ হলো। পড়ন্তর কপালে কয়েকটি ভাঁজ পড়ল নিমিষেই। কারো উপস্থিতিই এখন আর ভালো লাগে না। সেদিন উল্লাসী বাড়ির সবাইকে ডেকে আনলে সেই রাতেই ডাক্তার আনানো হয়। এরপর থেকে সবাই যেন আরও কঠোর হয়ে গেছে। পড়ন্তকে বুঝতেই চায় না। যত দ্রুত সম্ভব ওই তন্ময় নামক আপদটার সঙ্গে বিদেয় করে মুক্তির শ্বাস নিতে চায় তারা। পড়ন্তও সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছে, মরতে হলে মরবে। তবুও বিয়ে করবে না কাউকে। তার জন্ম অভ্রর জন্যে..মৃত্যুটাও অভ্রর জন্যে নির্ধারিত থাকুক।
আবার শব্দ হলো। ভেসে এলো পরিচিত কণ্ঠস্বর যা পড়ন্তকে বিরক্তির চরমে পৌঁছে দেয়। ওপাশ থেকে তন্ময় ডাকছে,
-“পড়ন্ত! পড়ন্ত শুনছো? দরজা খুলছো না কেন?”
পড়ন্ত বিড়বিড়িয়ে স্বগতোক্তি করল,
-“ন্যাকা পুরুষ! যত্তসব!”
-“আমার চিন্তা হচ্ছে পড়ন্ত। তুমি নিজের মাথা ফাটিয়ে ফেলেছো। কতটা ডেসপারেট হয়ে গেছো। অথচ একবারও কল্পনা থেকে বাস্তবে বেরিয়ে আসছো না। সবাই এত চেষ্টা করছে, তবুও তোমাকে বোঝাতে পারছে না! পড়ন্ত শুনছো তুমি? প্লিজ অন্তত নিজের বাবা-মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে হলেও নিজেকে সামলাও। আবেগ সামলাও। আর বাস্তব দেখো। মৃত ব্যক্তির জন্য শোক ভালো, কিন্তু এত শোক ভালো না!”
কথাটি শেষ করতে না করতেই ফট করে দরজাটা খুলে গেল। অগ্নি চোখে পড়ন্ত চেয়ে রয়েছে। তন্ময় মৃদু হাসে।
-“সত্য কথা কেন যে তোমার সহ্য হয় না!”
-“আমার আপনাকেই সহ্য হয় না। তারপরও নির্লজ্জের মতো বারবার বিরক্ত করতে চলে আসেন কেন? আমি মেয়ে হয়ে জন্মেছি বলে কী নিজের ইচ্ছা, অনিচ্ছা থাকতে পারে না? করব না আমি বিয়ে। এমনিতেই করব না, এটা একান্ত ব্যক্তিগত ইচ্ছা আমার। তাতে জোর খাটানোর আপনি কে? চলে যান আপনি এবং আর কোনোদিন যেন আমার বাড়িতে না দেখি।”
তন্ময়ের ভ্রু কুঁচকে এলো। চোখেমুখে ঘন আঁধার। যথেষ্ট হয়েছে সাধু পুরুষ হওয়া, আর সম্ভব নয়। এই মেয়ে একেবারে অতিরিক্ত করে ফেলছে এবারে। যা মুখে আসছে তাই বলে যাচ্ছে! তার বাড়ির লোকেরা তাকে যমের মতোন ভয় পায়। আর এই মেয়ে এর পেছন পেছন ঘুরিয়ে মারছে। তন্ময় ধৈর্য্য হারিয়ে ফেলল। বাতাসের গতিতে ঘরে ঢুকে দরজা আঁটকে দিতেই পড়ন্ত চেঁচিয়ে উঠল। তন্ময় সঙ্গে সঙ্গে তার মুখ চেপে ধরে দেয়ালের সাথে ঠেস দিয়ে ধরল। পড়ন্ত হতবাক। এর আগে এরকম আচরণ তন্ময় কখনো করেনি!
-“তোমার ড্রামা আমি অনেক দেখছি। এইবার তো তোমাকেই বিয়ে করব আমি। সবসময় পাগলের।অভিনয় করবা, যা ইচ্ছা তাই বলবা, তা হবে না। জোর করে হলেও, আই উইল ম্যারি ইউ।” গমগমে স্বরে কথাগুলো ছুঁড়ে দিতেই পড়ন্ত তন্ময়ের আঙুলে কামড় বসিয়ে দিলো। ‘আউচ’ করে হাত সরিয়ে নিলো তন্ময়। রক্তচক্ষু করে চেয়ে রইলো পড়ন্তর দিকে।
-“আমি ভয় পাই না। তাই মিথ্যে ভয় দেখানোর চেষ্টা করবেন না। অভ্র যদি একবার জানতে পারে আপনি আমার সঙ্গে এমন আচরণ করেছেন, তাহলে খারাপি আছে আপনার কপালে। ছাড়বে না ও।” ঝাঁঝালো কণ্ঠে পাল্টা জবাব দিলো পড়ন্ত।
তন্ময় হঠাৎই হেসে উঠল। পড়ন্তর মনে হলো, এর চেয়ে জঘন্য আর কারো হাসি হতেই পারে না।
-“অভ্র আমাকে ছাড়বে না? সত্যি! আচ্ছা ডাকো তোমার অভ্রকে। বিচার দাও তার কাছে। তারপর দেখবো সে কয়টা চুল ছিঁড়ে আমার।”
-“ডাকবো। ওকে বলবও। ওর অভিমান তো ভাঙবেই,সেই সাথে আপনাকে টাক্কু না বানালেই হয়। বেরিয়ে যান আমার ঘর থেকে। আপনার চেহারাটাও আমার সহ্য হয় না।”
পড়ন্ত খেঁকিয়ে উঠলে তন্ময় তার মুখ চেপে ধরল এক হাত দিয়ে। জোরে টিপ দিয়ে ধরে চিবিয়ে চিবিয়ে বলল,
-“আই উইশ, তোমাকে রেপ করতে পারতাম যদি!”
স্তব্ধ হয়ে গেল পড়ন্ত। এতটা নিচ আর নিকৃষ্ট এই মানুষের ভেতরটা? এতদিনের ভালো রূপটা নাটক ছিল তবে? পড়ন্তর গা গুলিয়ে বমি পেল। নিজেকে ধরে রাখতে না পেরে এক দলা থুতু তন্ময়ের চোখেমুখে ছুঁড়ে দিলে তন্ময়ের পাঁচ আঙুলের দাগ বসে গেল তার গাল বরাবর। পড়ন্ত ‘মা’ বলে গুঙিয়ে উঠে।
★
উল্লাসী দরজায় টোকা মারলো। তার এক হাতে তেলের বোতল। অনুরোধের গলায় বলল সে,
-“আপা, দরজাটা একটু খুলেন।”
পড়ন্ত ধরে প্রাণ ফিরে পেল যেন। তন্ময়ের হাত থেকে নিস্তার পাওয়ার জন্য এক পা বাড়াতেই তন্ময় ওর হাত চেপে ওকে দেয়ালে পুনরায় ঠেস দিয়ে দাঁড় করালো। পড়ন্তর বুক কাঁপছে ভয়ে। এই লোক মানুষ রূপী জানোয়ার। এর হাত থেকে যেকোনো উপায়ে রক্ষা পেতে হবে। তন্ময় হিসহিসিয়ে বলল,
-“এই চার দেয়ালের ভেতর কী হয়েছে তা যেন বাহিরে বের না হয়।”
পড়ন্ত হ্যাঁ, না কিছু বলল না। তন্ময়ের হাত থেকে ছোটার জন্য মোচড়ামুচড়ি লাগিয়ে দিলো। ওদিকে উল্লাসীর গলার আওয়াজ বাড়ছে। অগত্যা পড়ন্তকে ছেড়ে দিতে হলো তন্ময়ের। উত্তপ্ত শ্বাস ফেলে নিজে গিয়ে দরজাটা খুলে দিলো। উল্লাসী হতবাক। এক কামড়ায় পড়ন্তর সাথে তন্ময়কে আবিষ্কার করবে সে, এমনটা কল্পনাতেও আসেনি কখনো। তন্ময় তীক্ষ্ণ দৃষ্টি উল্লাসীর দিকে ছুঁড়ে দিয়ে দুই কদম আগাতেই উল্লাসীর ধারালো প্রশ্নবাণে জর্জরিত হলো।
-“আপনি এখানে কী করছেন?”
তন্ময় ঘুরে তাকাল। আপাদমস্তক উল্লাসীকে সরু চোখে দেখে নিতে নিতে বলল,
-“নিজের হবু ওয়াইফের কাছে আসলে তার কৈফিয়ত তোমাকে দিতে হবে?”
-“হুম, হবে। আপা এখনো আপনার স্ত্রী হয়নি। আর হওয়ার পসিবিলিটিও কম। এই পরিবারের সবাই আপনাকে পছন্দ করলেও আপা আপনাকে পছন্দ করে না। সে আমি ভালো করেই জানি। যেহেতু মেয়েই রাজী না, সো পুরো দুনিয়া রাজী থাকলেও কিছু করার নেই। আপনি হেরে যাবেন।”
উল্লাসীর ধারালো কথাবার্তা তন্ময়ের মোটেও পছন্দ হলো না। এই বাড়ির প্রতিটি মেয়েই ধারালো তরবারির ন্যায় নাকি! আরেকটা আছে, কী যেন নাম.. তন্ময় মনে করার চেষ্টা চালায়। হ্যাঁ, নিতু! ওই মেয়েটাও এমন। সবসময় কটকট করে কথা বলে। জিজু হিসেবে একটা মশকরা করলেও চোখ রাঙিয়ে সাবধান বার্তা দেয়। তন্ময় কপালের ভাঁজ মসৃণ করল। এক ভ্রু উঁচিয়ে বলল,
-“আচ্ছা? ওটা পরেই দেখা যাবে বিয়ে হবে কী হবে না। আগে আগে কথা বলাটা আমি খুব অপছন্দ করি।”
-“আপনার পছন্দ অপছন্দে আমার যায় আসে না। আপনি এই বাড়ির কেউ নন যে আপনার মন জুগিয়ে চলতে হবে আমার! ইন ফেক্ট, আপনার এই নোংরামির কথাটা যদি বাড়ির বড়রা জানতে পারে, তাহলে বিনা নোটিশে বারবার আসা যাওয়াটা না বন্ধ হয়ে যাবে একেবারে। বুঝলেন?”
এবার তন্ময় হকচকিয়ে গেল। উল্লাসীকে আর হেলায় ফেলায় নিতে পারছে না। এই মেয়েটার ভেতর কিছু তো আছে যা মানুষকে বিভ্রান্ত করে তুলতে সক্ষম। উল্লাসীর ঠোঁটের কোণে ফিচেল হাসি। পড়ন্তর বিয়ে হোক, এটা সেও চায়। কিন্তু এই ছেলের সাথে না। এই ছেলে যতটা ভালো রূপ দেখায়, তার অর্ধেকও ভালো না। এটা খুব ভালো করেই বুঝতে পেরেছে উল্লাসী। শুধু প্রমাণ পাচ্ছে না কোনো। পেলে এই বাড়ির সাথে যোগসূত্র রাখা চিরতরে কেটে দিবে।
-“এভাবে হতভম্বের ন্যায় মুখ না করে বিদায় হন দেখি… পড়ন্ত আপার রোগ আমাকেও ধরেছে বোধহয়। আপনাকে সহ্য হচ্ছে না।”
দায়সারাভাবে কথাটি বলেই ভেতরে ঢুকে গেল উল্লাসী। তন্ময়ের মুখের উপর সটান দরজা আঁটকে দিলে তন্ময়ের ভেতরটা আগ্নেয়গিরির মতো ফুঁসে উঠল। হাতের কানি আঙুল সাইজের পুচকে মেয়ে, অথচ ভাব দেখো! কথার ছিরিও বা কী! তন্ময় মনে মনে আওড়ালো,
-“তোমাকেও আমি দেখে নিবো উল্লাসী।”
★
-“কী দরকার ছিল ওত কথা বাড়ানোর? পরে আম্মাকে উল্টাপাল্টা বললে আম্মা তোমার উপরই রাগ ঝাড়তো উল্লাসী। আম্মাকে তো একেবারে পটিয়ে নিয়েছে হারামজাদাটা।” চিবিয়ে চিবিয়ে বলল পড়ন্ত। উল্লাসী তার মাথায় তেল ডলছে। কতদিন তেল দেয় না পড়ন্ত! অবশ্য অভ্র চলে যাওয়ার পর থেকেই সে নিজের প্রতি উদাসীন হয়ে পড়েছিল। তারপর যখন মৃত্যুর সংবাদ শুনলো, এরপর থেকে পড়ন্তকে শেষ কবে পরিপাটি দেখা গিয়েছে, সে নিজেও জানে না বোধহয়। আর কটা দিন গেলে এই মেয়ে সম্পূর্ণ রূপে পাগল হলেও হতে পারে।
উল্লাসী পড়ন্তর কথায় মুখ ঝামটা মেরে উত্তর করল,
-“তো কী করব? তোমার রুমে তোমার অনুমতি ব্যতীত ঢুকে গেল, আবার তোমাকে চড়ও মারলো! আর তুমি কিচ্ছুটি করতে পারলে না? অন্তত স্টেডিয়ামে লাথি মেরে ব্যাট,বল দুই-ই ভেঙে দিতে পারতে তো! আমি হলে স্টেডিয়ামই উড়িয়ে দিতাম।”
পড়ন্ত ভ্রুযুগোল কুঁচকে জানতে চাইলো,
-“স্টেডিয়াম কী? আর ব্যাট-বলই বা কোনটা উনার? বুঝলাম না উল্লাসী।”
উল্লাসী ঠাস করে নিজের কপালে নিজেই চাপড় মারলো।
-“জ্ঞানবুদ্ধি সব লোপ পাচ্ছে দেখি দিনকে দিন! অবশ্য তোমার না জানারই কথা। তুমি থাকো দিনরাত অভ্র ভাইয়ের চিন্তা নিয়ে। বাকি দুনিয়ার খবরাখবর রাখার সময় কই?”
-“কথা না ঘুরিয়ে সোজাসুজি বললেই তো হয়।”
-“কান পাতো। কানে কানে বলব।”
অগত্যা উল্লাসীর দিকে কান এগিয়ে দিলো পড়ন্ত। একমাত্র এই মেয়েটার সাথেই কথা বলতে ভালো লাগে তার। মেয়েটা যতক্ষণ সাথে থাকে, অন্যরকম মায়াজালে জড়িয়ে রাখে পড়ন্তকে। তখন অভ্রর কথাও মনে পড়ে না…
কোনটা স্টেডিয়াম, কোনটা ব্যাট-বল, তা পড়ন্তকে কানে কানে বলতেই পড়ন্ত মুখ ঝামটা মেরে সরে বসল। আর উল্লাসী হা হা হু হু করে হেসে উঠল।
পড়ন্ত নাকমুখ খিঁচে বলল,
-“ছি! তুমি এত বাজে কথা মিন করলে উল্লাসী!”
-“ইশশিরে! না বাবা। তোমার রসকষ সব শুকিয়ে যাচ্ছে দিন দিন। একটু মজাও বোঝো না! আচ্ছা সরি…কিন্তু এরপর থেকে ওই লোক তোমাকে আঘাত করলে তুমিও করবে। চুপ করে থাকলে দুর্বল ভেবে আরও বেশি আঘাত করবে। মনে রেখো, নরম মাটি টিপতে ভালো লাগে। তাই যে মানুষ যত নরম ধাঁচের, তার জন্য ততই বাঁশ ফ্রী..”
পড়ন্ত নিশ্চুপ থেকে উল্লাসীর কথাগুলো ভাবলো এবং সিদ্ধান্ত নিলো, আজকের দেওয়া থাপ্পড়টার জন্যেও তন্ময়কে ক্ষমা করবে না পড়ন্ত। আগামীকাল আবার আসবে ছ্যাঁচড়া ব্যাটা..তখন ওর ব্যাট-বল ভেঙে ফেলবে পড়ন্ত। তৎক্ষনাৎ নিজের ভাবনায় নিজেই মাথা দোলালো। সামান্য থাপ্পড়ের জন্য কারো পুরুষত্ব নিয়ে টানাটানি করার দরকার কী! থাপ্পড়ের বদলে থাপ্পড়, সোজা হিসাব! কিন্তু থাপ্পড়টা এতটাও সামান্য ব্যাপার নয়! দেখা গেলে এটা অনেক বড় ব্যাপার। সে কেউ না পড়ন্তকে গাইড করার। তবুও করেছে আবার মেরেছেও! সো এই অপরাধের শাস্তিস্বরূপ তার ব্যাট-বলে ছোট্ট একটা আঘাত করাই যায়! পড়ন্তর মাথায় জট পাঁকিয়ে গেল। ঠিক কোন ধরনের শাস্তি তন্ময়কে দেওয়া যেতে পারে, তা কিছুতেই ভেবে মনস্থির করতে পারল না সে।
(চলবে)