#অন্ধকারের_হাতছানি,(অন্তিম_পর্ব)
#নাজিফা_তাবাসসুম
বারান্দার ইজি চেয়ারে রেহানা আধশোয়া হয়ে বসে আছে। তার দুচোখ বন্ধ।বাইরে থেকে তাকে যে কেউ দেখলেই ভাববে সে খুব শান্ত হয়ে বসে আছে , কিন্তু রেহানা আজ ভেতরে ভেতরে ভয়ানক অস্থির এবং চিন্তিত। তিয়াশ অফিসে যাওয়ার আগে রেহানাকে একবার খুঁজছিল। তিয়াশ দেখতে পেল, রেহানা বারান্দায় বসে আছে , তিয়াশ রেহানার কাছে এসে বলল , রেহানা আমি অফিসে যাচ্ছি।
রেহানা চোখ না খুলেই বললো – আচ্ছা ঠিক আছে।যাও। সাবধানে যেও।
তিয়াশ বাসা থেকে চলে যাওয়ার পর রেহানা নিজ মনে ভাবল, তিয়াশকে সে আজ সাবধানে যেতে বলল; কিন্তু আজকে রাতে তিয়াশের ভাগ্যে কি অপেক্ষা করছে তা কি তিয়াশ জানে?
রেহানা নিজ মনে বলল , লুসিফার আজকে আমি তোমার আনুগত্য প্রকাশ করব। তুমি বলেছিলে তোমার প্রতি আমার ভালোবাসা প্রকাশ করার জন্য আমাকে তোমার উদ্দেশ্যে কাউকে উৎসর্গ করতে, আমি তিয়াশকে বেছে নিয়েছি।
লুসিফার আমি তোমার আনুগত্য প্রকাশ করছি।
এই কথাগুলো ভাবতে ভাবতে রেহানা তার হাতের আংটিতে আরেক হাত দিয়ে স্পর্শ করে শক্ত মুখে বসে থাকল।
বেশ কিছু দিন পার হয়ে গেছে রেজাউল করিম এর খুনের কেসটি অমীমাংসিতই থেকে গেছে।ইন্সপেক্টর রায়হান এবং রোহিত দুজন অনেক চেষ্টা করেছিল; কিন্তু কেসটি সলভ করতে কিন্তু পারেননি। শেষ পর্যন্ত যে ফরেনসিক রিপোর্ট এসেছিল… তাতে করে কেস নিয়ে আগানোর মতই অবস্থায় তারা ছিল না। খুবই বিচিত্র ভাবে ফরেনসিক রিপোর্টে এসেছিল, কোন অচেনা বিষধর সাপের দাঁতের আঘাতে রেজাউল করিমের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু অদ্ভুত বিষয় এই যে , সেই বিষধর সাপ কোন প্রজাতির তা কেউ জানে না? পৃথিবীর কোথাও সেই বিষের অস্তিত্ব নেই।
কেসটি সেখানেই বন্ধ হয়ে গেছে । কেস সংক্রান্ত ফাইলে হয়তো এতদিনে ধুলো জমে গেছে।
যেহেতু রেজাউল করিমের কেস নিয়ে আগানোর মতই কোন ক্লু নেই।
তাই কেসটি আর রিওপেন করা হয়নি।
এ কিছুদিনের ব্যবধানে সবার জীবনে একটি পরিবর্তন চলে এসেছে, ইন্সপেক্টর রায়হান তার অন্যান্য কেস নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।
রোহিত চাকমা ট্রান্সফার নিয়ে তার জন্মভূমি খাগড়াছড়িতে চলে এসেছে। ঢাকায় রোহিত পড়াশোনা এবং চাকরির সুবাদে থাকলেও জন্মভূমি টানে নিজ জেলায় ফিরে এসেছে। তবে সে ফিরে আসার আগে রেহানার কথা অনেকবার ভেবেছিল। তিয়াশের কথাও ভেবেছিল। কিন্তু অদ্ভুত বিষয় এই দম্পতির সাথে তার আর কখনোই দেখা হয়নি।
তার আজও মনে পড়ে রেজাউল করিমের খুনের কেস নিয়ে সে এবং ইন্সপেক্টর রায়হান যখন কাজ করছিলেন। রেহানার বাস্তব সত্যটা সে রায়হান আহমেদকে বললে , রায়হান হেসে উড়িয়ে দিয়েছিলেন। এসব বিষয় আসলে অনেক মানুষের কাছে হাসিঠাট্টার বিষয়। সেজন্য রোহিত আর কারো কাছে হাসিঠাট্টার পাত্র হতে চায়নি; তাই রেহানার অমোঘ সত্যটা সে নিজের মধ্যে রেখেছে।আর কারো কাছে প্রকাশ করেনি।
রোহিতের মনে পড়ে গেল, তার এক বন্ধুর বাবা একজন শয়তানের উপাসক ছিলেন, তাঁর শেষ পরিণতি খুবই ভয়াবহ হয়েছিল। রোহিতের শরীর শিউরে উঠলো। আজ তার বন্ধু বেঁচে নেই তার বন্ধুর বাবা নিজ হাতে নিজ সন্তানকে শয়তানের উদ্দেশ্যে বলি দিয়ে উৎসর্গ করেছিল।
রেহানার থেকে কি শেষ পর্যন্ত তিয়াশের ও একই পরিণতি হবে!! রোহিত এসব নিয়ে ভাবতে চায় না। এসব অন্ধকার জগতের ভাবনা বাদ থাকুক না। রেহানা থাক তার অন্ধকার জগত নিয়ে । রেহানার অন্ধকার জগতে অনাধিকার প্রবেশ করে নিজের কোনো বিপদ ডেকে আনতে চায় না রোহিত।
মাঝরাতে তিয়াশের ঘুম ভেঙ্গে গেলে সে একটা চাপা কান্নার শব্দ শুনতে পায় ; সাথে একটা ভরাট কন্ঠ থেকে চেঁচানোর শব্দ… এমন কিছু তার মনে হলো। তিয়াশের ঘুম ভাবটা কেটে যেতেই তিয়াশ বিছানায় উঠে বসলো।
তার পাশে রেহানাকে দেখতে পেল না।
এত রাত্রে রেহানা কোথায় গেল? রেহানা
আবার ছাদে যায়নি তো! এসব ভাবতে ভাবতে তিয়াস বাসায় রেহানাকে খুঁজে না পেয়ে ছাদের উদ্দেশ্যে রওনা হল ।
ছাদে যেতেই তিয়াশ বিস্ময় বোধ করল সে দেখতে পেলো রেহানা ছাদের একেবারে শেষ প্রান্তে ভাঙ্গা কার্ণিশের উপর পা ঝুলিয়ে বসে আছে। রেহানা বলে তিয়াশ ডাক দিতেই রেহানা তার দিকে মাথা ঘুরিয়ে তাকাল; রেহানার চোখের দৃষ্টি দেখে তিয়াশ কেঁপে উঠলো; ‘কি ভয়াবহ দৃষ্টি রেহানার চোখে!
তার চোখ দুটো রক্তবর্ণ ধারণ করে আছে’।
তিয়াশ কাঁপাকাঁপা স্বরে করে বলে উঠলো, ‘রেহানা তুমি কি করছো’? ‘এখন থেকে পড়ে যাবে তো’!! ছাদের কার্নিশে ভাঙ্গা।প্লিজ রেহানা তুমি চলে আসো।
রেহানা ভয়ঙ্কর শক্ত গলায় বলে উঠলো, ‘তিয়াশ আমি এখান থেকে সরবো না’।
তুমি যদি নিজের ভাল চাও এখান থেকে চলে যাও।
– ‘রেহানা প্লিজ চলে আসো’। কি পাগলামি করছ রাতের বেলায়?
রেহানা প্লিজ কিছু করো না। এখান থেকে চলে আসো তুমি পড়ে যাবে তো!!
রেহেনা এবার বললো- ‘আমি বললাম না তুমি চলে যাও!’ আর কিছুক্ষণ যদি তুমি এখানে থাকো, আমি কিন্তু; ছাদ থেকে লাফ দিব!
– রেহানা কেন এই পাগলামি করছ? আচ্ছা রেহানা তুমি আমাকে বলো, আমি কি কোন ভুল করেছি? আমার কোন ভুল হয়েছে ?তোমার কি কোন সমস্যা আছে? তুমি প্লিজ আমার সাথে শেয়ার করো।
সেটার সমাধান আমরা বের করতে পারবো। সমস্যা থেকে বের হতে পারব। প্লিজ রেহানা তুমি চলে আসো।
রেহেনা এবার চেঁচিয়ে বলল , আমার সমস্যা তুমি! তুমি আমার সমস্যা! তুমি যতক্ষণ আমার সামনে থাকবে আমার সমস্যা । তুমি তুমি চলে যাও।আমি বললাম তুমি চলে যাও।
তিয়াশ এবার চেঁচিয়ে বলে উঠলো – রেহানা, আমি তোমাকে ভালোবাসি। অনেক ভালোবাসি। প্লিজ রেহানা এমন কিছু করো না। যদি তুমি আমার সাথে থাকতে না চাও। তবে তুমি আমাকে ছেড়ে দাও। তারপরও প্লিজ…. রেহানা, তুমি নিজের ক্ষতি করবে না। প্লিজ!
তিয়াশের কথা শেষ হতেই রেহানার চোখের দৃষ্টি আগের চাইতে অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে এলো,
রেহানা নরম গলায় তিয়াশকে বলল, “প্লিজ তুমি চলে যাও”। তোমার কোন ক্ষতি হোক আমি চাইনা। তুমি এখানে বেশিক্ষণ থেকো না। তোমার বিপদ হতে পারে।
– না রেহানা । তোমাকে না নিয়ে আমি এখান থেকে যাব না।
– তিয়াশ জেদ করো না। তুমি এখান থেকে চলে যাও।
রেহানার কথা শেষ হতেই তিয়াশের মাথায় প্রচন্ড চাপ অনুভব হল। হঠাৎই সে মূর্ছা গেল ।
তিয়াশের যখন জ্ঞান ফিরলো তখন সে নিজেকে হসপিটালের বেডে আবিষ্কার করল। সে বিস্মিত হয়ে হসপিটালের একজন নার্সকে ডেকে বললো, ‘আমার কি হয়েছে’? আমাকে এখানে কে এনেছে?
নার্স অবাক হয়ে বলল, সেটা বলতে পারবো না। তবে ‘আপনাকে একজন মেয়ে এডমিট করিয়ে দিয়ে গিয়েছে’; তার পরিচয় আমরা জানি না।
– ‘আমি কত দিন অজ্ঞান ছিলাম’?
– আপনি তিন দিন অজ্ঞান ছিলেন।
তিয়াশ প্রচন্ড অবাক হয়, তার কি হয়েছিল? সে বুঝতে পারছে না ; আস্তে আস্তে যখন তিয়াশের শরীর কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে আসে, তখন সে হসপিটাল থেকে বাসায় ফিরল । বাসায় ফিরে রেহানাকে খুঁজে পেল না। ‘রেহানার কি হয়েছে’? ‘সে এখান কোথায়’? কেউ জানে না।
তিয়াশ অনেক খোঁজার চেষ্টা করে শেষ পর্যন্ত রেহানাকে কোথাও না পেয়ে; সে রেহানার বাড়িতে যায়। কিন্তু সেখানে গিয়েও রেহানার বাড়ির কাউকে খুঁজে পায় না । তালাবদ্ধ ভাবে রেহানার বাড়ি দেখতে পায় ।
তিয়াশের হঠাৎ মনে পড়ে যায়, রেহানা আর তার বিয়ের সময় , রেহানা একজন চাচা ছিলেন তিনি মূলত রেহেনার সাথে তিয়াশের বিয়ে দিয়েছিলেন।
সে কোথায়? তার খোঁজ করে তিয়াশ জানতে পারে তিনি গত দুই দিন আগে মারা গিয়েছেন। কেন মারা গিয়েছেন কেউ জানে না। ডক্টর বলেছেন, হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু হয়েছে। সে এতোসব কিছুর পর আর কিছুতেই কিছু না করতে পেরে ফিরে এসেছে।
বেশ কিছু দিন পার হয়ে যাওয়ার পর, রেহানাকে ছাড়া তিয়াশের জীবন পার হয়ে যাচ্ছিল।
হঠাৎই তার মোবাইলে একটা মেসেজ আসে। সেদিন অফিসে তিয়াশ অনেক ব্যস্ত ছিল। কি কারনে যেনো তার মেসেজটা চেক করা হয়নি। রাতে সে বাসায় ফিরে মেসেজটা চেক করে দেখে , সেই মেসেজটা আর কারোর না রেহানার নাম্বার থেকে এসেছে। কল ব্যাক করতে গিয়ে তিয়াশ দেখল নাম্বারটি বন্ধ।
তিয়াশ বিস্ময়বোধ করে কারণ সেই মেসেজে লেখা ছিল,
“শুভ জন্মদিন” তিয়াশ ।তোমার জন্মদিনের উপহার হিসেবে আমাকে ঘিরে থাকা রহস্যগুলো তুমি আজ উন্মোচন করতে পারবে । আমাদের আলমারির পিছনে একটা “সিক্রেট চেম্বার” আছে। সেখানে একটা ডায়েরী আছে; সেটা বের করে নিও।
মেসেজটা পাওয়ার পর , তিয়াস দ্রুত আলমারি খুঁজতে থাকে। আলমারির পেছনে সত্যিই একটা সিক্রেট চেম্বার পেয়ে যায় সে।
সেখান থেকে একটা অদ্ভুত কালো রংয়ের ডায়েরী বেরিয়ে আসে। ডায়েরীটা হাতে নিতেই তিয়াশের অন্য রকম একটা অনুভূতি হয়। অনূভুতিটি যেন বড্ড বেশি অচেনা।
তার কাছে মনে হলো; রেহানা যেন তার পাশেই আছে। ডায়েরীর প্রত্যেকটা পাতা খালি শুধুমাত্র একটা পাতাতে কিছু লেখা আছে। তিয়াশ পরম উৎসাহের সাথে লেখাগুলো পড়তে শুরু করে।
“প্রিয় তিয়াশ”
যখন তুমি লেখাগুলো পড়ছো, তখন আমি হয়তোবা তোমার পাশে নেই। ‘ততক্ষণে আমার অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাবে নাকি’ ; ‘আমি জানিনা’। তবে আমাকে ঘিরে কিছু অপ্রিয় সত্য, ‘তোমাকে আমি জানিয়ে যেতে চাই’। “তিয়াশ” তুমি হয়তো বা জানো না। আমি একজন অন্ধকারের বাসিন্দা। আমি অন্ধকার জগতের মানুষ। আমাদের সম্পর্ক কখনো সম্ভব না, কারণ আমাদের জগত ভিন্ন।আমাদের ভেতরের সবকিছু ভিন্ন।
আমি ডেভিল লুসিফারের একজন উপাসক। আমি আমার স্রষ্টা লুসিফারের আনুগত্য প্রকাশ করার জন্য সুউচ্চ স্তরে প্রবেশ করতে চেয়েছিলাম। তার কারণে আমাকে আমার নিজের ভালোবাসাকে স্যাক্রিফাইস করতে হবে। এটা অদ্ভুত হলেও সত্য আমার জীবনের সবচেয়ে ভালোবাসার মানুষ হলে “তুমি”। তোমাকে আমি কখনো স্যাক্রিফাইস করতে পারবোনা। তার জন্য যদি আমাকে ডেভিল লুসিফারের হাতে মৃত্যুবরণ করতে হয়। আমি করব ।
আমি আমার নিজেকে স্যাক্রিফাইস করলাম। আমি খুবই খারাপ একটা মানুষ। খুবই খারাপ। আমি আমার নিজের হাতে আমার প্রেমিক সিয়াম কে খুন করেছিলাম । শুধুমাত্র লুসিফারের কাছ থেকে অসামান্য ক্ষমতা পাওয়ার জন্য । সেই শক্তি অর্জন করার জন্য।পৃথিবীতে অকল্পনীয় শক্তির অধিকারিণী হয়ে বাঁচার জন্য।
কিন্তু ; আমি শেষ পর্যন্ত হেরে গিয়েছি। আমি তোমার ভালোবাসার কাছে মৃত্যু বরণ করেছি। তিয়াশ আমি জানি, তুমি আমাকে অনেক ভালোবাসো।
কিন্তু ; প্লিজ। তুমি যদি আমাকে এক মূহুর্তের জন্য ও ভালোবেসে থাকো… তবে তুমি আমাকে এখন এই মুহূর্ত থেকে ঘৃণা করো… আমি তোমার ঘৃণা পাওয়ার যোগ্য। আমার ভালোবাসা পাওয়ার কোনো অধিকার নেই। আমি একজন নিকৃষ্ট মানুষ।
আর হ্যাঁ তিয়াশ, তোমার কি মনে আছে তোমার বস রেজাউল করিমের কথা? তার মৃত্যু কিভাবে হয়েছিল? সেটা নিয়ে এখনো হয়তোবা এখনো তোমার মনে প্রশ্ন জমে আছে । ফুটেজে কিভাবে এতো পরিবর্তন হলো সেটাও জানতে চাও?
‘তুমি কোনো বিপদে পড়ো তা আমি চাইনি ‘ তাই আমি নিজ হাতেই ফুটেজটি অনেকাংশে পরিবর্তন করেছিলাম। কিভাবে করেছি তা নাহয় তোমার অজানা থাক…।
তবে শোনো… রেজাউল করিমকে স্বয়ং লুসিফার মেরে মেরেছিল । শুধুমাত্র এই কারণে… কারণ সে তার সন্তানকে ডেভিল লুসিফারের উদ্দেশ্যে স্যাক্রিফাইস করতে চায়নি।
শুনে হয়তো অবাক হলে!! এত চমৎকার একজন মানুষ! সেও লুসিফারের উপাসক! হ্যাঁ তিয়াশ। আমি আর করিম পূর্বপরিচিত ছিলাম।
আমরা পাঁচ জন ছিলাম… পেন্টাকলের পাঁচ প্রান্তে… তবে পাঁচজনের মধ্যে আমি আর করিম দুজনই শেষ হয়ে গেলাম …..শুধুমাত্র ভালোবাসার জন্য।
ভালোবাসা একটি বিরাট ব্যাপার। সত্যি আমি আমার জীবনের সমস্ত পাপের প্রায়শ্চিত্ত না করতে পারলেও….আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি। অনেক।
‘কখনো হয়তো তোমার কাছে প্রকাশ করিনি’। সব সময় গোপন রেখেছি । তবে তোমার কাছে আমি একটা জিনিস চাইছি।
তুমি যদি সত্যিই আমাকে ভালোবেসে থাকো তাহলে তুমি আমাকে ভুলে যাও। ‘একেবারের জন্য ভুলে যাও’। আমি পাপী। ঘোর পাপী। ‘আমাকে ঘৃণা করো’। ‘ঘৃণা করো’। ‘আমি তোমার ঘৃণা পাবার যোগ্য’।
লেখাটি এখানেই শেষ । তিয়াশ সম্পূর্ণ ডায়েরীতে আর কোন লেখা পেল না ।
তিয়াশের চোখে জল জমছে । বুকের ভেতরটা কেমন যেন শূন্য লাগছে । সব কিছু ফাঁকা ফাঁকা লাগছে। তার প্রচন্ড কষ্ট হচ্ছে।
‘তবে কি রেহানার গল্পটি এখানেই শেষ’?
রেহানাকে হারিয়ে গেলো তিয়াশের জীবন থেকে। সত্যিকারের অর্থে ।
রেহানাকে তিয়াশ কি কোনদিন ঘৃণা করতে পারবে? নাকি ঘৃণা করতে গিয়ে বারবার তাকে… ভালোবেসে ফেলবে! “ততটা ভালোবাসা যতটা ভালোবাসার জন্য রেহানা তার নিজের জীবন স্যাক্রিফাইস করে তাকে বাঁচিয়ে দিয়ে গেল”।
বিশেষ দ্রষ্টব্য: (এই গল্পটি মূলত একজন অন্ধকার জগতের বাসিন্দাকে নিয়ে ছিল। ইলুমিনাতি অর্থাৎ শয়তান বা লুসিফারের উপাসনায় আচ্ছন্ন রেহানাকে নিয়ে ছিলো। যে তার অন্ধকার জগত ছেড়ে বের হতে না পেরে গাঢ় অন্ধকারের হাতছানিতে ডুবে গেছে।
রেহানাকে সবার কাছে কেমন লাগেছে? গত দুই পর্বে অনেক প্রশ্ন জমেছিল তা আজকে অন্তিম পর্বে দেওয়ার চেষ্টা করছি। )
আশা করি আমি ব্যর্থ হইনি। গল্পের শুরু থেকে যারা গল্পের সাথে ছিলেন সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
যদি কোন ভুল ত্রুটি হয় তবে আমি ক্ষমাপ্রার্থী। ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। ধন্যবাদ।
সমাপ্ত