অপূর্ব প্রাপ্তি,পর্ব–ঊনপঞ্চাশ(শেষ পর্বের দ্বিতীয় অংশ।)
নাফিসা নীলয়া!
পুনশ্চঃ
নীরাকে প্রতিবন্ধী,সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের নিয়ে কাজ করার জন্য ও অনেক মহিলাদের কর্মসংস্থান গড়ে দেওয়ার জন্য পুরষ্কৃত করা হলো। এখন তার নিজেরই সংগঠন রয়েছে। বাচ্চাদের নিযে সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের নিয়ে। শিহাব সবসময়ই নীরার পাশে ছিলো। নীরা যখন মহিলাদের কর্মসংস্থানের উদ্যোগ নিয়েছিলো তখন শিহাব নিজ থেকেই অনেক সাহায্য করেছে। নীরার এতদূর আসা সম্ভব হয়েছে শুধুমাত্র মালিহা আর শিহাবের জন্য। যখন পুষ্ককৃত করার জন্য নীরার কাছে ফোন আসলো সেসময় নীরা অনেকক্ষন কিছু বলতে পারেনি। নীরা ফোনে কিছু বলছে না বলে শিহাব যখন নিজেই ফোন কানে নিয়ে শুনলো তখন তার থেকে বেশি খুশি আর কেউ ছিলো না। খুশিতে হাসতে হাসতে নীরাকে ধরে বলেছিলো।
-তুমি তো এটারই যোগ্য। ফাইনালি!
নীরাও খুশিতে আত্মহারা হয়ে শিহাবকে জড়িয়ে ধরেছিলো।
নীরাকে পুরষ্কার হাতে নিতে দেখতে সবাই ওদের সাথে গেল। মিলা নিজের আপার এই প্রাপ্তিতে কতোটা খুশি তা বলা বাহুল্য। মালিহার নিজেকে গর্বিত মনে হয়।
নীরাকে যখন সম্মানিত করে পুরষ্কার দেওয়া হলো তখন তার চোখে প্রায় পানি এসে যাচ্ছিলো। বহু কষ্টে সে চোখের পানি আটকে রেখেছিলো। পুরষ্কারের ক্রেস্ট হাতে যখন নীরাকে কিছু বলতে বলা হলো তখন সে বলতে শুরু করলো।
-“আমি একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী” জন্ম থেকেই আমার বাম পায়ে সমস্যা। খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাটি। আমি এমন একটা সময়ে এমন একটা পরিবেশে বড় হয়েছি যে ছোট বড় সবাই আমাকে টিজ করে কথা বলতো। একে তো শারীরিক প্রতিবন্ধী উপরন্ত আমি একজন মেয়ে। এটাই আমার সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা ছিলো আমার আশেপাশের মানুষের কাছে। আমিও যে আর দশটা সাধারণ মেয়ের মতো বড় হতে পারি। আর দশটা মেয়ের মতো আমিও যে কিছু করতে পারি এটা অনেকেই মানতে পারতো না। আমাকে বিয়ে দিতে সমস্যা হবে। পাত্রপক্ষকে মোটা অংকের যৌতুক দিয়ে আমাকে বিদায় করতে হবে এমনটাই ধারণা ছিলো সবার। যা আমার পরিবারকেও সবাই ক্ষনে ক্ষনে মনে করিয়ে দিতো। আত্মীয় স্বজন পাড়া প্রতিবেশী সবাই করুনার চোখে দেখতো। ভালো ব্যবহার তো পেতাম কিন্তু সেটা লোক দেখানো। মানুষ ভালো ব্যবহারের আড়ালেও যে বাঁকা চোখে দেখতো সেটা আমি বুঝতাম। কেউ ভরসা করতে চাইতো না মানতে পারতো না আমিও কিছু করতে পারি। আমিও সেজন্য নিজেকে গুটিয়ে নিলাম। নিজেকে শূণ্য মনে হতো। আমার এই দূর্বলতার সুযোগও অনেকে নিতে চেয়েছে। এরকমই হয় দূর্বলদের দূর্বলতার সুযোগ নেওয়া হয়। এখনো নেওয়া হয়। সেই কারনে আমি নিজেই একসময় অনেক ভেঙে পরেছিলাম। বাইরে বেরোতেই ইচ্ছে করতো না। আমিও যে একজন মানুষ সেটাই ভুলতে বসেছিলাম। এরপর আমার জীবনের সবচেয়ে বড় নেয়ামত আমার আম্মা আমাকে সেই অন্ধকার থেকে টেনে বের করলেন। জীবনের নতুন মানে বোঝালেন। নিজের যোগ্যতা দিয়ে সব হাসিল করে সবাইকে দেখিয়ে দিতে হবে সেটা মাথায় গেঁথে দিলেন। আমারও পরিচয় আছে আমি “নীরা মাহমুদ” একটা আলাদা পরিচয় আছে আমার। সেটা সেসময় একমাত্র আমার আম্মা আমাকে বুঝিয়েছেন। তারপর শুরু হলো আমার আম্মার আর আমার পথচলা। আল্লাহর ওপর ভরসা করে সব প্রতিকূলতা বাঁধা বিপত্তি পেড়িয়ে আমি বড় হলাম৷ নিজের যোগ্যতায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করলাম। এজন্য আমি আমার রবের কাছে সবচেয়ে বেশি কৃতজ্ঞ। এই যে এই জার্নিটা এটা এতো সহজ ছিলো না। পদে পদে আমাকে আমার দূর্বলতার জন্য সহানুভূতির নামে সুযোগ ছিনিয়ে নেওয়া হতো। আমার দূর্বলতার সুযোগ অনেকেই নিতে চাইতো। কিন্তু আমি ছিলাম অনড়। যা করবো নিজের যোগ্যতা দিয়ে করবো কথাটা একদম মাথায় গেঁথে রেখেছিলাম। আমার পরিবার আমাকে সবসময় সাহস যোগাতো। আমার আম্মা আমার অনুপ্রেরনা। আমাকে সবসময় সাহস যোগাতেন আমার আম্মা। ঢাল হয়ে দাড়াতেন আমার সামনে। যেনো কোনো বিপদ আমাকে ছুঁতে না পারে। আমি যখন ভেঙে পরতাম। ভাবতাম আমাকে তো সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না সহানুভূতি দেখালেও আমাকে তো আমার যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না,আমাকে দাবিয়ে রাখা হচ্ছে। কি করে আমি লড়বো! তখন আমার ছোট বোন আমাকে সাহস যোগাতো। সে কিন্তু তখন খুব ছোট ছিলো। তারপরও সে আমার পাশে ছিলো। আমাকে কি করে যোগ্যতা দিয়ে সুযোগ ছিনিয়ে নিতে হবে সে সবসময় বুঝিয়ে গেছে। মিথ্যে বলবো না আমার বাবা অন্যের কথায় প্রভাবিত হয়ে আমাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখা বাদ দিয়েছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে তিনি বুঝতে পেরেছেন। আমার পাশে থেকেছেন। এরপর আমার দুই বন্ধুও আমার পাশে সবসময় ছিলো। একটা সময় আমার কোনো বন্ধু ছিলো না হয়তো আমার এই দূর্বলতার জন্যই। আমি ভাবতাম বন্ধুত্বও বুঝি অবস্থান দেখে হয়। কিন্তু আমার সেই ধারণা ভুল প্রমানিত করলো আমার প্রিয় দুই বন্ধু। আমরা সবসময় আমাদের বিপদে আপদে এক হয়ে থেকেছি। আমার পাশে আমি ওদেরও পেয়েছি। সবাই বলতো আমার ভালো জায়গায় বিয়ে হবে না। কিন্তু আমি আমার জীবনে এমন একজনকে পেয়েছি যাকে পেয়ে আমি নিজেকে ভাগ্যবতী মনে করি৷ আমার স্বামী যে আমাকে সবসময় সম্মান দিয়েছে পাশে থেকেছে। আমার স্বামীর বাড়ির সকলে আমাকে সম্মান করেছে। ওরা সবাই আমার পরিবার, আমার বাবা আমার ভাই-বোন সবাই আমাকে ভালোবেসেছে। আজকে আমি যা তার সমস্ত অবদান আমার আল্লাহর তারপর আমার পরিবারের এবং আমার দুই বন্ধুর। বিশেষ করে আমার আম্মা,আমার বোন আর আমার স্বামীর অবদান আমি কখনোই ভুলতে পারবো না।
এটুকু বলে নীরা থামলো। দর্শক সারিতে বসা মালিহা নীরার কথা শুনে কেঁদে ফেলেছেন। মিলাও কাঁদতে কাঁদকে তাকে ধরে শান্তনা দিলো। মালিহার পাশে বসা রেজাউলের চোখেও পানি দেখা দিলো। সাইফ আর রুমা তাদের বন্ধুর কৃতিত্ব দেখছে মুগ্ধ হয়ে। রেজা সাহেবের গর্ববোধ হচ্ছে এমন একটা মেয়েকে নিজের পুত্রবধূ হিসেবে পেয়ে। তিতলি আর রেহান তাদের ভাবিমনির সংগ্রামী জীবনের গল্প শুনে তাদের ভাবিমনির দিকে একধ্যানে তাকিয়ে আছে। আর শিহাব সে তো নীরাতেই মুগ্ধ। স্টেজের ওই সাদা শাড়ি পড়া অপরূপা রানীটি নিজের জীবনের গল্প শোনাচ্ছে। আর শিহাব সেই গল্প শুনছে আর অপরূপ ভুবনমোহিনীকে দেখছে। কি সুন্দর দেখতে লাগছে। শিহাবের চোখ ওদিকেই আটকে আছে। ঝলমলে আলোয় সে ওদিকে তাকিয়ে থাকলো।
নীরা আবার বলতে শুরু করলো।
-আমি যেভাবে সব প্রতিকূলতা পেড়িয়ে বড় হয়েছি। আমি আমার সব প্রতিবন্ধী বাচ্চাদেরও এই শিক্ষা দেই। ওরা আমার নিজের সন্তানের মতো। শুধু তাই নয় সবাইকেই আমি সবসময় বলি নিজের দূর্বলতাকে শক্তিতে রূপান্তর করতে। তুমি যদি একবার নিজের আল্লাহর ওপর ভরসা করে নিজের দূর্বলতাকে হাতিয়ার হিসেবে নাও তবে পৃথিবীর কোনো শক্তিই তোমাকে বাঁধা দিতে পারবে না। নিজেকে কখনো দূর্বল ভাবতে নেই। অন্যের কথায় কখনো প্রভাবিত হতে নেই। কারন তুমি নিজে তো জানো তুমি কি! তুমি নিজে জানো তোমার ভেতর কোন গুণ আছে তোমার ভেতর কি আছে। সেসবকে কাজে লাগাতে হবে। সেসব নিয়ে সামনে এগোতে হবে। মনে রাখতে হবে থেমে যাওয়ার নাম জীবন না। সব প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে এগিয়ে যাওয়ার নামই জীবন। সৃষ্টিকর্তা প্রত্যেককেই কোনো না কোনো উদ্দেশ্যে এই পৃথিবীতে পাঠান। নিজেকেই সেই উদ্দেশ্য খুঁজে বের করতে হবে। আমি ভাবলাম আমার জীবন খুব কঠিন। আমি কিচ্ছু করতে পারবো না। সম্ভব না! এরকমটা ভাবলে চলবে না। দুঃখ কষ্ট কার জীবনে না থাকে! সবার জীবনেই থাকে। সুখ এবং দুঃখ একটা আরেকটার সাথে জড়িত। একটা ছাড়া আরেকটা অপূর্ণ। দুঃখ না থাকলে আমরা সুখকে অনুভব করতে পারতাম না। আবার সুখ না থাকলে দু্ঃখ আসতো না। কাজেই সবসময় মনে রাখতে হবে আমার চেয়েও নিচু অবস্থানে মানুষ আছে। আমার নিজের চেয়েও বেশি কষ্টে মানুষ দিন কাটায়। তাদের প্রতিটা দিন হয় সংগ্রামের। সৃষ্টিকর্তা আমাকে ভালো রেখেছেন। আরো খারাপ অবস্থাতেও তো আজ আমি থাকতে পারতাম। এটাই সবসময় মাথায় রাখতে হবে! কোনো অবস্থাতেই বিপথে যাওয়া যাবে না। নিজেকে একজন মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। বড় হওয়ার নেশায় বিপখে যাওয়া যাবে না। জীবনে যে অনেক বড় হতেই হবে এমন কোনো কথা নেই। জীবনে আমি ভালো মানুষ হতে পারলাম কিনা সৃষ্টিকর্তাকে খুশি করতে পারলাম কিনা সেটাই বড় কথা। দিনশেষে আখিরাতই সব। দুনিয়ার জীবন কিছুই না। এই থিউরি মাথায় রেখেই সুন্দরভাবে এগিয়ে যেতে হবে। সবার কাছে অনুরোধ আপনারা দূর্বলদের এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরনা দেওয়ার চেষ্টা করবেন। কাউকে সহানুভূতির নামে তার থেকে সুযোগ ছিনিয়ে নিবেন না। একজন মানুষকে যদি সুযোগই দেওয়া না হয় তবে সে কি করে নিজেকে প্রমান করবে। করুনার চোখে না দেখে আমাদের উচিত সকলকে সম্মান করা। সবধরনের মানুষকে সম্মান করা। যদি সম্মানই করতে না পারেন সুযোগও দিতে না পারেন তবে দয়া করে অসম্মান বা নিরুৎসাহিত করবেন না। আমাদের নিরৎসাহের কারনে,অসম্মানের কারনে হাজার হাজর ছেলেমেয়ে ভেঙে পড়ে। পিছিয়ে যায়। নিজেকে হারিয়ে ফেলে। এমন অনেকেই আছেন যারা দূর্বলদের দূর্বলতার সুযোগ নিয়ে নিজেদের কার্যসিদ্ধি করেন। আপনারা ভাবুন তো এর মাধ্যমে আপনারা কি পাবেন! কিচ্ছু না। শুধু ভুক্তভোগীর অভিশাপ ছাড়া। কাজেই সবাইকে সম্মান করতে হবে। যোগ্যতা অনুযায়ী সুযোগ দিতে হবে। তবেই সবাই নিজেকে প্রমান করতে পারবে৷ সৃষ্টিকর্তাই সবাইকে সৃষ্টি করেছেন। সৃষ্টির সবাই সুন্দর। কাউকে তার কমতি নিয়ে আঘাত করে কথা বলা মানে সৃষ্টিকে অপমান করা। আর সৃষ্টিকে অপমান করা কোনো সভ্য সমাজের সভ্য মানুষের কাজ হতে পারে না। আমার আপনার কারো অধিকার নেই সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টি নিয়ে মজা করা। কাউকে তার খুঁত নিয়ে অপমান করার। কারো বর্ণ,শারীরিক মানসিক খামতি,আকার আকৃতি এসব নিয়ে কখনোই কাউকে বিচার করা যায় না। বিচার করতে হয় যোগ্যতা দিয়ে! আমাদের সবসময় এটাই মানতে হবে আমরা সবাই সুন্দর ও পরিপূর্ণ। যেমনটা মহান আল্লাহ্ আমাদের তৈরি করেছেন। আমরা কেউ কাউকে তৈরি করিনি আর না করতে পারবো। আমরা আজ আছি কাল নেই দিনশেষে এসব বাহ্যিক সৌন্দর্যের কোনো মূল্যই নেই। এজন্যই সবাইকে সমানভাবে সম্মান দিতে হবে।
আমি সত্যিই নিজেকে ভাগ্যবতী মনে করি এতোজন বাচ্চাদের দায়িত্ব নিতে পেরে। এতোজনের ভরসার হাত হতে পেরে। আমি ওদেরও আমার এই অর্জনের জন্য ডেডিকেটেড করছি। ওদের সবাইকে ধন্যবাদ। আমার পরিবারের সবাইকেও অনেক ধন্যবাদ। আমার পরিবার আমার স্বামী আমার পাশে না থাকলে আজ আমি এখানে দাড়াতে পারতাম না। তার জন্য আমি সবার কাছে কৃতজ্ঞ। আমি আমার এই পুরষ্কার আমার আম্মার হাতে তুলে দিতে চাই। সত্যি বলতে এই পুরষ্কার তার প্রাপ্য। সবাই ভালো থাকবেন। সবাইকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ।
দীর্ঘ বক্তব্য শেষে নীরা মালিহার কাছে গিয়ে মালিহার হাতে নিজের পুরষ্কার তুলে দিলো। মালিহা নীরার কপালে চুমু খেলেন। অশ্রুসিক্ত চোখে বললেন।
-তুই আমার মেয়ে এটা যে আমার জন্য কতো গর্বের আর আনন্দের। আমি তোর জন্য কিছুই করিনি। বরং তুই ই আমাদের সবার জন্য অনেককিছু করেছিস।
রেজা সাহেব মালিহার কথায় সায় দিলেন।
-আপা একদম ঠিক বলেছেন। তুই নিজেই তো আমাদের সবার জন্য কতো কিছু করেছিস। আমরা তার একাংশও করতে পারিনি। সত্যিই আমি গর্বিত তোর মতো মেয়ে আমাকে বাবা বলে ডাকে এজন্য।
নূরজাহান বেগমও কেঁদেছেন। নীরা ওনার সামনে গিয়েই বললো।
-কিছু শুনতে চাই না। নিজেকে দোষ দেওয়া চলবে না দাদী। একদম না।
নূরজাহান বেগম হেসে ফেললেন নীরার কথায়।
রেজাউল নীরাকে জড়িয়ে ধরে বললেন।
-যেই ছোট্ট মেয়েটাকে আমি অবহেলা অনাদর করতাম সেই মেয়েটাই আজ আমার গর্বের কারন।
নীরা কিছু বলতে পারলো না। চোখে জল নিয়ে হাসলো। আজ তার আনন্দের দিন। মিলা,তিতলি,রুমা,তিশা চারজনে এসে একসাথে নীরাকে জড়িয়ে ধরলো। মিলা রেহানকে উদ্দেশ্য করে বললো।
-এই যে পার্সোনাল ফটোগ্রাফার ছবি তুলে দাও আমাদের।
রেহান মিলার সম্বোধন শুনে ব্যঙ্গ করে বললো।
-হ্যা হ্যা পোজ নিয়ে দাড়াও। আমি তো আছিই আপনার পার্সোনাল ফটোগ্রাফার।
মিলা হেসে ফেললো। চারজন একসাথে নীরাকে জাপটে ধরে সমস্বরে বললো।
-আওয়ার এঞ্জেল।
নীরা ওদের চারজনের মাঝখানে হাসছে।
যাওয়ার সময় নীরা নিজ থেকেই শিহাবের হাত ধরলো। শিহাব মুচকি হেসে বললো।
-বাহ্ আজ সূর্য কোনদিকে উঠেছে?
নীরা কপট রাগ দেখিয়ে হাত ছেড়ে দিয়ে বললো।
-আমি কি কখনো তোমার হাত নিজ থেকে ধরি না?
শিহাব ভীড়ের মাঝেই নীরার কপালে চুমু দিয়ে দিলো। নীরা অবাক হয়ে এদিক ওদিক তাকালো। তারপর শিহাবের দিকে রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললো।
-এই স্বভাব কখনো যাবে না না?
শিহাব মাথা নেড়ে বললো।
-কখনো না!
নীরা শিহাবের সাথে হাটতে হাটতে বললো।
-মিলা আর রেহানের বিয়েতে গ্রামের বাড়ি যাচ্ছি না? সেখানে কিন্তু অনেকদিন থাকবো।
শিহাব নীরার নাক ছুঁয়ে বললো।
-তুমি বললে আমি কি করে বারন করি বলো!
নীরা শিহাবের কথা শুনে খিলখিল করে হেসে ফেললো। শিহাব এক সমুদ্র ভালোবাসা চোখে নিয়ে নীরার দিকে তাকালো।
চলবে!