অপূর্ব প্রাপ্তি,পর্ব-তিন

0
1538

অপূর্ব প্রাপ্তি,পর্ব-তিন
নাফিসা নীলয়া!

নীরা বাচ্চাদের ক্লাস নিচ্ছে। সবাইকে ধরে ধরে বুঝিয়ে দিচ্ছে। এখানে অনেক প্রতিবন্ধীরা পড়াশোনা করে। বাক-প্রতিবন্ধী,শ্রবণ প্রতিবন্ধী,শারীরিক প্রতিবন্ধী। ছোটবেলায় এমন এক্সট্রা সুযোগ-সুবিধা পাওয়া হয়নি নীরার। আর নীরা চাইতোও না। ও চাইতো সবাই যেমন করে পড়ালেখা করছে ও ও সেভাবেই করবে।
আর ওর মা তো পাশেই ছিলো। নীরার ভালো লাগে ওদের সাথে সময় কাটাতে। ওদের মধ্যে নীরা নিজের প্রতিচ্ছবি খুঁজে পায়।

-নীরা, চল লাঞ্চ টাইম হয়ে গেছে খাওয়া দাওয়া করি গিয়ে।

রুমার কথা শুনে ওর দিকে চাইলো নীরা। ওরা দুজন একই ইউনিভার্সিটি তে একই সাথে পড়তো। নীরার সবচেয়ে ভালো বান্ধবি রুমাই। নীরা আর রুমা একইসাথে এখানে চাকরি নিয়েছে। রুমারও ভালো লাগে এই প্রফেশন। এজন্যই নীরার সাথে সাথে সে ও এপ্লাই করে। আর দুই বান্ধবি একই জায়গায় পড়ানোর সুযোগ পায়।

-আচ্ছা ডিয়ার স্টুডেন্টস,ক্লাস টাইম অলরেডি শেষ। এখন ব্রেক টাইম। কারো খেতে সমস্যা হলে জিনিয়াকে বলবে। নইলে আমিই একটু পর এসে দেখে যাবো। কেউ দুষ্টুমি করবে না। তোমরা না আমার খুব ভালো বাচ্চা? আচ্ছা জিনিয়া দেখে রাখবে সবাইকে। কোনো সমস্যা হলে আমি রুমার সাথে টিচার্স রুমেই আছি। আমাকে ডেকে নিবে ওকে?

নীরার কথায় জিনিয়া মাথা দোলালো। সে এখানকার আয়া কাম সহকারী।

-জ্বি আপা একদম টেনশন করবেন না। আমি তো আছিই।

-আচ্ছা, চল রুমা।

নীরা রুমার সাথে টিচার্স রুমে চলে আসলো।

-এই নীরা দেখ আম্মু তোর জন্য কি পাঠিয়েছে। টাকি মাছের ভর্তা,শুটকির ভর্তা উইথ খুঁদের ভাত। তুই তো জান প্রান দিয়ে খাস এসব। বাবা কি ঝাল খেতে পারিস রে তুই।

রুমার কথায় নীরা উচ্ছাসিত হয়ে উঠলো।

-সত্যিই? আন্টি পাঠিয়েছেন? আই লাভ দিস। তাড়াতাড়ি বেড়ে দে আমার তো আর তর সইছে না।

রুমা হাসতে হাসতে খাবার বাড়তে লাগলো। নীরাকে প্রথম থেকে খুব পছন্দ রুমার। নীরাকে ছাড়া তার চলেই না। প্রিয় বান্ধবির লিস্টে নীরা সবার আগে।

-আচ্ছা সামনেই তো ক্রিসমাস। এই উপলক্ষে এনজিওর বাচ্চারা ক্রাফ্ট,মাটির জিনিস অনেককিছু বানিয়েছে। প্রতিবার তো আমরা সাইফের ক্যাফেতে এক্সিবিশন রাখি সেল করার জন্য। এবার তো আগে থেকে ওকে বলাও হয়নি। তোকে বলতে বলেছিলাম বলেছিলি?

নীরার কথায় জ্বিভ কাটে রুমা। সে একদম ভুলে বসে আছে। প্রতিবছর বাচ্চাদের সহায্য করার জন্য তারা তাদের বন্ধু সাইফের ক্যাফেতে এক্সিবিশন রাখে। প্রতিবার সবাই মিলে এরেঞ্জ করে সব। নীরা তাকে বলতে বলেছিলো আগে থেকে। কিন্তু সাইফের সাথে তার ব্রেক-আপ হওয়ার কারনে সে আপসেট ছিলো। এজন্য বলাও হয়নি। তাদের ব্রেক-আপ সপ্তাহে দশবার হয়। আবার দুইদিনেই প্যাচ-আপ হয়ে যায়। কিন্তু এবার দীর্ঘসময়ের ব্রেক-আপ চলছে। সাইফও ক্ষমা চায়নি তার কাছে। রুমাও আগ বাড়িয়ে স্যরি বলবে না। হাঁদারামকে মজা দেখাবে এবার। নীরা সন্দিহান দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে রুমার দিকে। সে নিশ্চিত রুমা বলতে ভুলে গেছে। সাইফ-রুমার সম্পর্কে সে সব জানে। সে জানে দুই জন দুই জনকে ছাড়া থাকতে পারে না। আবার এদের বনিবনাও হয় না। এবার মনে হচ্ছে দীর্ঘ সময়ের ব্রেক-আপ। দেখতে হচ্ছে বিষয়টা। মনে মনে ভাবে নীরা।

-বলিসনি জানি। এত অন্যমনস্ক হয়ে ভান ধরার কি আছে। এখন ফোন কর সাইফকে। এখনই।

নীরার কথায় চটে যায় রুমা।

-আমি ওই হাঁদারামকে ফোন করবো? নেভার। কখনো না।

নীরা বুঝলো নাছোড়বান্দা রুমাকে রাজি করানো যাবে না। তাই সে নিজেই ফোন লাগালো।

-হ্যালো,সাইফ কই তুই?

নীরার ফোন পেয়ে স্থির হয়ে বসলো সাইফ। এতক্ষন সে কাজ করছিলো।

-হ্যা নীরা ইয়ার,তুই কেন ফোন দিয়েছিস আমি জানি। প্রতিবছরই তো আমরা এই কাজ করে আসছি। তোর ফোন করে মনে করিয়ে দিতে হবে না। এক কাজ কর স্কুল ছুটির পর এখানে এসে সব দেখে যা আর বলে যা কিভাবে কি হবে।

সাইফের বক্তব্য শুনে নীরা স্বস্তির শ্বাস ফেললো। সে জানে সাইফ খুব দায়িত্ববান ছেলে। ওকে কিছু মনে করিয়ে দিতে হয় না। তবুও মনের শান্তির জন্য সে ফোন করেছে।

-আচ্ছা ভাই আমরা পৌছে যাবো বিকাল নাগাদ। তুই থাকিস ক্যাফেতে।

-এই এই একমিনিট। আমরা মানে? রুমা ও আসবে?

সাইফের প্রশ্নে হেসে ফেললো নীরা।

-তো প্রতিবছর তো আমরা এই কাজগুলো একসাথেই করি। তাহলে তো ও ও আসবে। তাই না? কি গাঁধার মতো কথা বলিস ইয়ার। আর তোদের ঝগড়া দেখতে দেখতে আমি অতিষ্ট হয়ে গেছি। এবার বিয়ে করে নে তোরা। আমি আর পারবো না শুধু শুধু সময় নষ্ট করে তোদের প্যাচ-আপ করাতে।

-খবরদার নীরা এসব বলবি না।,সাইফের সাথে আমার কখনো বিয়ে হবে না। আমি এই হাঁদারামকে বিয়ে করবো না। বিয়ের কথা বললেই যে দৌড়ায় তাকে বিয়ে করবো না। নেভার।

রুমার অভিমানী কথা ফোনের ওপাশে থাকা সাইফও শুনে ফেললো। রুমার কথা শুনে নীরা আর সাইফ দুজন একইসাথে হেসে ফেললো।

-আচ্ছা আসিস তোরা আমার এদিকে কাজ আছে এবার আমি রাখছি।

সাইফ ফোন কেটে দিলো।

-রুমা আর রেগে থাকিস না। বেচারা তোর রাগকে কতো ভয় পায় জানিস না? প্লিজ।

নীরার কথা শুনে মনে মনে গললেও। বাইরে প্রকাশ করলো না রুমা।

-ব্রেক টাইম শেষ চল ক্লাস আছে আমার।

নীরা হাতঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে সত্যিই সময় শেষ তাই সে ও উঠে পরলো।

-কি আর করার চল। বিকালে কিন্তু যাচ্ছি ক্যাফেতে। ঠিক আছে?

-ঠিক আছে চল এবার।

সকাল থেকে একটানা কাজ করে হাপিয়ে উঠেছে শিহাব। কিন্তু তাকে দেখে কেউ বলতে পারবে না যে সে কতো ক্লান্ত। তার অফিসের সবার মনে হয় সে বুঝি রোবট। সবকিছু মেপে মেপে করে শিহাব। মেপে মেপে কথা বলে মেপে মেপে হাসে। তার মতে একজন পার্ফেক্ট ব্যবসায়ী হতে গেলে সবকিছু এরকম মেপে মেপেই করতে হয়। তার এই লজিকলেস কথায় সবাই বিরক্ত। মেপে মেপেই যদি সব কাজ করি তাহলে জীবনের আনন্দটা কই! কিন্তু এটা কেউ শিহাবকে বোঝাতে পারে না। কারন তার রাগ সবসময় নাকের ডগায় থাকে। তার গায়ের রঙ শ্যামলা,উজ্জ্বল শ্যামলা না। কালোর আশেপাশে। ছোটবেলায় রেসিজমের শিকার হতে হতো তাকে। তাও খুব ছোটবেলায়। এখন সেসব কেউ বলে না। দিন পাল্টাচ্ছে। মানুষের কথায় সে কিছু মনেও করতো না। তবে তার মা অন্য লোকের সাথে চলে যাওয়ার পর সে গম্ভীর হয়ে গেছে। স্কুলে যখন তাদের তিন ভাই-বোনকে সবাই নানা কথা বলে ক্ষ্যাপাতো তখন তার খুব খারাপ লাগতো। বাবাকে এসে বলতো। বাবা বলতো মানুষের কথায় কান না দিতে। নিজের মতো থাকতে। সেই থেকে সে বদরাগী গম্ভীর।

-স্যার আজকের মিটিংটা কখন ফিক্সড করবো?

এসিস্টেন্ট এর কথায় রেগে গেল শিহাব।

-তুমি আমার এসিস্টেন্ট কেন রাহাত? আমার কখন সময় হয় কখন হয় না এটা কি তুমি জানো না?

শিহাবের গম্ভীর রাগী কন্ঠ শুনে ঢোক গিললো রাহাত। সবাই স্যারকে খুব ভয় পায় তার এই রাগের জন্য। আর সে জেনেশুনে বোকার মতো কথা বলে রাগ বাড়িয়ে দিচ্ছে। নিজের মাথায় নিজেরই মারতে মন চাইলো রাহাতের।

-স্যরি স্যার আমি দেখছি।

এই বলে তাড়াতাড়ি কেবিনের বাইরে চলে আসলো রাহাত। এতক্ষন মনে হচ্ছে সে বাঘের গুহায় ছিলো।

অনেকক্ষন যাবৎ কলেজের সামনে দাড়িয়ে আছে তিতলি। আজ তার ছোট ভাইয়ের তাকে নিতে আসার কথা। বড় ভাই তো সবসময় ব্যস্ত থাকে। তার সময় হয় না। দুই ভাইয়ের জান তিতলি। কিন্তু এখন ছোট ভাইয়ের ওপর ভীষণ রেগে আছে সে। কখন থেকে দাড় করিয়ে রেখেছে তাকে। এর শোধ নিবে তিতলি। বড় ভাইয়ের কাছে বিচার দিবে সে।

-স্যরি তিতলি খুব স্যরি। আসলে ক্লাস শেষ হতে দেরি হয়ে গেছে। অনেকখন ওয়েট করেছিস আমার জন্য তাই না? স্যরি অনেক।

রেহান ক্রমাগত তিতলিকে বোঝাতে লাগলো। কিন্তু তিতলি দাঁত কিড়মিড় করে অন্য দিকে তাকিয়ে রইলো। সে আজ কথা বলবে না তার ছোট ভাইয়ের সাথে। তিতলিকে দাড় করিয়ে রাখা? তাও আবার এই রোদে! আজ যদি বড় ভাইয়ের কাছে বিচার না দিয়েছে তো ওর নামও তিতলি না। মনে মনে ভাবে তিতলি।

-আআ আমার চুল। ছোট ভাই আমার চুল ছাড়। ভালো হচ্ছে না কিন্তু। চুল ছাড়।

রেহান অনেকক্ষন বকবক করছিলো। তিতলি কোনো জবাব না দেওয়ায় সে রেগে গেছে। একে তো খারুস স্যারের ক্লাসের জন্য দেরি হয়ে গেছে। আর এখানে দৌড়ে এসে সে হয়রান হয়ে তিতলিকে স্যরি বলছে। আর মহারানী তাকে পাওাই দিচ্ছে না! কতবড় সাহস। তাই সে তিতলির বেণী ধরে টান দিয়েছে।

-আমি কতক্ষন ধরে কথা বলছি তোর সাথে? হ্যা জবাব না দিয়ে ভাব নিস তুই? মেরে চ্যাপ্টা করে দিবো একদম। তাড়াতাড়ি গাড়িতে উঠ।

তিতলিকে ধমক লাগালো রেহান। ধমক শুনে তিতলি মুখ ফুলিয়ে গিয়ে গাড়িতে বসলো। ঠিক করলো আজ সে বড় ভাইয়ের কাছে কঠিন বিচার দিবে। আজ সে দেখেই ছাড়বে তার ছোট ভাই কত উড়তে পারে।
তিতলির ফুলানো মুখের দিকে চেয়ে নিঃশব্দে হেসে দেয় রেহান। তাদের দুই ভাইয়ের একটা মাএ আদরের বোন তিতলি। কত আদরের কত ভালোবাসার। তিতলিকে ক্ষ্যাপাতে তার ভালোই লাগে। সে জানে বাড়ি গিয়ে ভাইয়ের কাছে বিচার দেওয়ার ফন্দি আঁটছে তিতলি। পকেট থেকে চকলেট বের করে তিতলির হাতে ধরিয়ে দেয় সে।

-নিবো না আমি। জুতা মেরে গরুদান লাগবে না আমার।

-নিবি না? আচ্ছা না নে আমার কি।

চকলেট পুনরায় পকেটে ভরতে নিলে তিতলি খপ করে কেড়ে নেয়। তিতলির কান্ড দেখে এবার জোরে হেসে দেয় রেহান। তিতলি মুখ ফুলিয়ে চকলেট খেতে থাকে।
গাড়ি ড্রাইভ করে বাড়ির দিকে চলে যায় রেহান।

সাইফের ক্যাফেতে এসে সবকিছু দেখে নিচ্ছে নীরা আর রুমা। ইতিমধ্যে সাইফ আর ওদের কয়েকজন বন্ধু মিলে এনজিও থেকে বাচ্চাদের বানানো জিনিস নিয়ে এসে পরেছে। নীরা রুমা সবকিছু দেখে নিয়ে সাজিয়ে রাখছে। সাইফ আর রুমা এখনো কেউ কারো সাথে কথা বলেনি। নীরা সাইফকে নিয়ে এক কর্ণারে গেল।

-কথা বলবি না নাকি সাইফ? এবার দোষটা তোরই। রুমার বাবা-মা ওকে বিয়ে দিতে চাইছে রুমা তোকে বিয়ের কথা বলছে। তুই কেন বাড়িতে বিয়ের কথা বলছিস না। এখন তো একদম সেটেল তুই। আর কিসের অপেক্ষা করিস তুই?

নীরার প্রশ্নে হতাশ হয়ে পরলো সাইফ।

-নীরা জানিসই তো আমি বাবাকে কতো ভয় পাই। ভয়ের জন্য বলতে পারছি না। কি করবো বল তুই!

-আচ্ছা ঠিক আছে আংকেল আন্টির সাথে আমি কথা বলবো। আমি নিশ্চিত রুমার মতো মেয়ের কথা শুনলে ওনারা না করবেন না। তুই চিন্তা করিস না আর। এক্সিবিশন শেষে বিয়ের জন্য প্রোপজ করে দিবি তুই। আর আমি আংকেল আন্টির দিকটা দেখছি। ওকে?

নীরার কথায় আশ্বাস পায় সাইফ।

-থ্যাংক ইউ মেরি জান। লাভ ইউ।

সাইফের উচ্ছাস দেখে জোরে হেসে দেয় নীরা। সাইফও হাসে। ওদের হাসি দেখে ভ্রু কুঁচকায় রুমা।

-দুইটা মিলে এতো হাহা হিহি করছিস কেন? এদিকে যে কতো কাজ পরে আছে সেই কথা খেয়াল আছে দুইটার? সবগুলা কাজচোর। সব আমাকেই করতে হয়।

একা একা বকবক করে কাজ করতে থাকে রুমা। ওর বকবক শুনে সাইফ আর নীরা আরেক দফা হাসে।

-হেই মিলা টিলা মিলা টিলা মিলা টিলা। শুনো টিলা এই টিলা।

ক্লাস শেষে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিচ্ছিলো মিলা। রেহানের ক্রমাগত ডাক শুনে রেগে গেল সে। হারামি ছেলেটা আবার তার নাম নিয়ে টিজ করছে। আজকে ওর একদিন কি মিলার একদিন। হাতের খাতাটা রোল করে রেহানের দিকে ছুড়ে মারলো মিলা। রেহান ক্যাচ ধরে নিলো খাতাটা।

-কি হয়েছে? কি হয়েছে রেহান? বলো কি হয়েছে? মিলা টিলা করছো কেন? আমার নাম মিলা শুনেছো তুমি আরেকবার টিলা বললে তোমার দাঁত আমি ভেঙ্গে দিবো রেহান।

মিলার কথা শুনে সবাই হেসে উঠলো। রেহানও দাঁত কেলিয়ে মিলার সামনে আসলো৷

-তো মিলা রাইট? সো মিলা আপুর নাম্বার দাও। সেদিন নিতে ভুলে গেছি। আমার ফোন হারিয়ে গেছে নাম্বারটাও হারিয়ে গেছে। সো দাও আপুর নাম্বার দাও।

রেহানের কথা শুনে দাঁতে দাঁত চাপলো মিলা।

-কোন আপুর নাম্বার চাও তুমি? আমার কাছে কোনো আপুর নাম্বার নেই।

স্পষ্ট না করে দিলো মিলা।

-নীরা আপু তোমার বোন না? আমি নীরা আপুর কন্ট্যাক্ট নাম্বার চাইছি। দাও আপুর নাম্বার দাও।

-আমার বোন তোমার কোন জন্মের আপু? পারবো না আমার আপার নাম্বার দিতে। তোমাকে আমি দিবো না। এবার সামনে থেকে যাও।

মিলার কথা শুনে আবার দাঁত কেলালো রেহান।

-দিবে না? ওকে আপুর ফেইসবুক একাউন্ট আছে হয়তো? তাই না? ওখানেই আমি আপুর সাথে কন্ট্যাক্ট করবো। আর বলবো আপু জানো তোমার বোন আমার সাথে কি দূর্ব্যবহার টাই না করলো। সামন্য ফোন নাম্বারের জন্য কি খারাপ ব্যবহার করলো সেটা যদি তুমি দেখতে।

রেহানের কথা শুনে একটু চিন্তায় পরে গেল মিলা। তার বোন রেহানকে খুব ভালো জানে। রেহানের কথা যদি সত্যিই বিশ্বাস করে। তাকলে তো বকা দিবে তাকে। না সে তার বোনের বকা খেতে পারবে না। দুনিয়ার সবাই বকলে সে সহ্য করতে পারে। তবে তার আপা একটু চোখ গরম করে তাকালেই তার দুনিয়া ভেঙ্গে কান্না পায়।

-আচ্ছা রেহান তুমি তো আপার সাথে ফেইসবুকেই কথা বলতে পারো। ওখানেই নাম্বার চাইতে পারো। আমার কাছে কি?

মিলার কথা শুনে রেহান বুঝলো তার ভুল হয়েছে। সে মিলার কাছে না চেয়ে ওভাবেই তো ম্যানেজ করতে পারতো। তবে মিলাকে জ্বালাতে তার ভালো লাগে। সেটা তো পূরণ হয়েছে। তাই সে বললো।

-না,আপুর আইডি খুঁজতে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হবে। একই নামের কতো আইডি আছে। তাই আমি তোমার কাছ থেকেই নিবো দাও তাড়াতাড়ি।

রেহানের কথা শুনে মিলা বিরক্ত হলেও নীরার ফোন নাম্বার দিয়ে দিলো।

-ওকে বাই মিলা টিলা,টিলা।

নাম্বার কালেক্ট করে যাওয়ার সময় মিলাকে টিজ করতে ভুললো না রেহান। রেহানের যাওয়ার দিকে অগ্নি দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো মিলা।

চলবে!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here