অবন্তর_আসক্তি #পর্ব_৩৬,৩৭

0
875

#অবন্তর_আসক্তি
#পর্ব_৩৬,৩৭
#শারমিন_আক্তার_বর্ষা
৩৬

“তুই থ্রিপিস পরে আসছিস কেন? শাড়ি পড়ে আসিসনি কেনো? ” মাথা থেকে পা অব্ধি লক্ষ্য করে বলল অভ্র।
“ থ্রিপিস পরে আসছি তাতে সমস্যা কি?” বলল বর্ষা।
“ আমার সাথে কোথাও বের হলে তো তোকে শাড়ি পরে বের হতে হবে। থ্রিপিস পরে বের হতে পারবি না। ” রাগী গলায় বলল।

“ সব সময় শাড়ি পরা যায় না। শাড়ি পরা অনেক ঝামেলা। আর শাড়ি পরে অনেক টেনশনে থাকতে হয়। এই বুঝি কুঁচি খুলে গেলো বা উস্টা খেয়ে পরে গেলাম ”

“ সে যাইহোক শাড়ি তো তোকে পরতেই হবে। আর নয়তো যাওয়া ক্যানসেল। ” বলে অন্য দিকে তাকিয়ে রইল। রাগে ফোঁসফোঁস করতে করতে বর্ষা চলে গেলো।

“সবসময় শাড়ি মানে কি? লিমিট থাকে সবকিছুর। এখন আবার শাড়ি পরতে হবে উফফ। ”

রাগ হলেও কিছু করার নেই ভালো বাসার মানুষটির ভাললাগে এমন কাজ করতেও ভালো লাগে।
কলা পাতা রঙের পাড় সাদা রঙের শাড়ি পরে রেডি হয়ে নেয় বর্ষা। শাড়ি পরে নিচে নামতে অভ্রর মুখে ফুটে উঠে সচ্ছল হাসি। যা দেখে হেসে উঠল বর্ষা। গাড়িতে উঠে রওনা হলো। গাড়ি ড্রাইভিং করছে অভ্র পাশের সিটে বসে আছে বর্ষা। আঁড়চোখে বার কয়েক তাকিয়ে ছিল অভ্র। কিন্তু বর্ষা তাকায়নি তার দৃষ্টি জানালার বাহিরে। সে মনযোগ দিয়ে বাহিরের দৃশ্য দেখছে।
অনেকটা পথ আসার পর হঠাৎ গাড়ি ব্রেক কষলো অভ্র। একে একে সকলে নেমে পরল বর্ষা নামতে যাবে তখন অভ্র বর্ষার হাত ধরে নেয়। ঠোঁট বাঁকা করে হেসে বলে, “ আমার তুমি শুধু আমার একান্তই আমার। ”

বলে কিছু এগিয়ে আসতে নিলে বর্ষা অভ্রর হাত ছাড়িয়ে গাড়ির দরজা খুলে বেরিয়ে পরে।
অভ্র বর্ষার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে গাড়ি থেকে নামে।

সামনে এক বড় লেক স্বচ্ছ পানি চারপাশ ঘিরে অনেকে বসে আছে। কিছুদূর হাঁটার পর ওরা লেকের কাছে পৌঁছে যায়। পাশে বেঞ্চ রয়েছে তাতে সকলে বসে পরে। পেছন দিয়ে আইসক্রিম ওয়ালা যাচ্ছিল। তাকে থামিয়ে অভ্র সকলের জন্য আইসক্রিম নিয়ে আসলো। বর্ষা লেকের চারপাশে তাকিয়ে বলে উঠল, “ আমিও মাছ ধরবো। ”

হতবিহ্বল তাকিয়ে রয় সকলে বর্ষার অদ্ভুত ইচ্ছা প্রকাশের দিকে। চোখ জোড়া ছোট ছোট করে বর্ষাকে উদ্দেশ্য করে অভ্র বলে, “ তুই ফিশিং করতে পারিস? ”

বর্ষা সঙ্গে সঙ্গে বলে উঠল, ‘ হ্যাঁ হ্যাঁ পারি তো খুব পারি। ’

অভ্র উপর নিচ মাথা নাড়িয়ে বলল, ‘ আচ্ছা দাঁড়া দেখি আশে পাশে কোনো বর্শি জোগাড় করতে পারি কিনা। ’

দশ মিনিটের মাথায় অভ্র একটা বর্শি নিয়ে আসল। বর্শি হাতে পেয়ে বাচ্চাদের মতো লাফাতে শুরু করলো বর্ষা। সে লেকের পাশে দাঁড়িয়ে বর্শির ঠুর পানিতে ফেলল। অভ্র বর্ষার পেছনে একটা চেয়ারে বসে রয়েছে। যা বর্ষা দেখেনি অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে রয়েছে এদিক সেদিক তাকিয়ে শুধু দেখছে। সকলের বর্শিতে মাছ ধরা পরছে শুধু বর্ষার টা বাদে। মন মরা হয়ে দাঁড়িয়ে রয় পানি থেকে ঠুর তুলতে যাবে তখনই ঠুর পানির নিচে চলে যায়। বর্শিতে একটু টান লাগে। বর্ষা বুঝতে পারে কোনো মাছ আঁটকিয়েছে। সে তার যত শক্তি আছে সব দিয়ে টান মারল। ফলে বর্শি সহ মাছ উপরে চলে আসল। বর্ষা এমনিতেই শাড়ি পরা ছিল। ও সেই যোক সামলাতে পারেনি।

পেছনে গালে হাত দিয়ে বর্ষার মাছ ধরা দেখছিল অভ্র ঠোঁটের কোণে তার দুষ্টু হাসি। বর্ষা এক’পা দু’পা পিছিয়ে সোজা গিয়ে পরলো অভ্রর কোলে। আকস্মিক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো সকলে ওদের উপর। আশে পাশের অনেকে মাছ ধরা বন্ধ রেখে ওদের দিকে তাকিয়ে আছে। অভ্র বর্ষাকে ইতস্তত বোধ করানোর জন্য বলে উঠল, “ এতই যখন আমার কোলে বসার সখ তাহলে আগে বললেই তো পারতে। এত কষ্ট করে মাছ ধরার এক্টিং করতে হতো না। ”

বর্ষা রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে দেখে অভ্র দাঁত বের করে হাসছে। যা দেখে বাকিরাও হাসছে। এদিকে বর্ষার ইচ্ছে করছে অভ্র টাকে ধাক্কা দিয়ে লেকের জলে ফেলে দিতে সব কিছু ওই পাজিটার জন্যই হয়েছে।

অভ্র হাসতে হাসতে বলল, “ চলো বাড়ি ফিরে যাই এখানে একজনের বিষয়টা খুব সম্মানে লেগেছে। ”

বর্ষা প্রত্যত্তরে কিছুই বলল না। চুপ করে গিয়ে গাড়ির পেছনের সিটে বসে পরল। অভ্র ভালোই বুঝতে পারছে তার রাগরাগিণী বেশ ভালোই রাগ করেছে।

সকলকে বাড়ির সামনে নামিয়ে দিয়ে গাড়ি নিয়ে কোথাও চলে যায় অভ্র। রুমে এসে শাড়ি চেঞ্জ করে নেয়। পাক্কা ত্রিশ মিনিট শাওয়ার নেওয়ার পর থ্রিপিস পরে বের হয়ে আসে।

ভেজা চুলে টাওয়াল পেঁচিয়ে বিছানার উপর বসে পরে। মোবাইলে হঠাৎ টুকটাক শব্দ হয় শুনে উঠে গিয়ে মোবাইল নিয়ে আসে। লক খুলে দেখলো একটা মেসেজ, ❝ Gp Offer.
৫মিনিট ৩টাকা,মেয়াদ ৪ঘন্টা। নিতে ডায়াল করুন *১২১*৪০২২# ❞

মেসেজটা দেখার পরপর মেজাজ জেনো তিরতির করে বেড়ে গেলো। ঠোঁট জোড়া উল্টিয়ে বেশ কিছুক্ষণ চোখ বন্ধ করে বসে রইল। নিঃশ্বাস ফেলে মোবাইলটা আবারও হাতে নিলো। ওয়াইফাই অন করে হোয়াটসএপে গেলো কিন্তু সেখানে কারো মেসেজ না পেয়ে, গেলো মেসেঞ্জারে কিন্তু কোথাও কেউ কোনো এসএমএস করেনি। দেখে বিরক্ত হলো বর্ষা পরক্ষণে ভাবলে ইউটিউবে যাওয়া যাক।

অনেকক্ষণ ঘুরে একটা কোরিয়ার ড্রামা দেখতে পেলো। একটা হিন্দি গানের মধ্যে, দেখে অনেক ইন্টারেস্টিং লেগেছে বলে সার্চ করে ড্রামাটা দেখতে লাগল। ঘন্টার পর ঘন্টা পার হয়ে যাচ্ছে অথচ সে মনোযোগ দিয়ে ড্রামা দেখছে। আরও কয়েক ঘন্টা পেরিয়ে গেলো কিন্তু কোনো হেলদোল নেই বর্ষার সে জেনো ড্রামাটায় আসক্ত হয়ে পরেছে। যেভাবেই হোক দেখে শেষ করতে হবে। রাতে খাবার খাওয়ার জন্য ডাকতে এসেছিল কিন্তু সে খাবে না বলে দিয়েছে। শুধু মাত্র ড্রামাটা দেখার জন্য যতবার প্রাকৃতিক কাজে যাওয়ার প্রয়োজন পরেছে মোবাইলটা হাতে করে নিয়েই গেছে।

অভ্র কিছুক্ষণ আগে বাড়ি ফিরেছে হাতের আইসক্রিম ফ্রিজে রেখে রুম থেকে ফ্রেশ হয়ে ডাইনিং টেবিলে চলে আসে। খাবার শেষ করে জানতে পারে বর্ষা খেতে নামেনি। সেজন্য অভ্র নিজের রুমে না গিয়ে সোজা বর্ষার রুমে চলে যায়। বিছানার উপর উপুড় হয়ে শুয়ে মোবাইল দেখছে। রুমে ঢুকে বিছানার উপর বসে কিছুক্ষণ দেখল বর্ষা কি দেখছে এত মনোযোগ দিয়ে। অভ্র কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে শাণিতকন্ঠে বলল, “ এইসব কি দেখছিস কোন দেশের ভাষা এটা? বুঝিস কি বলছে? যতসব চুং চাং কিং কাং কুং ফুং বলছে। ”

অভ্রর আওয়াজ শুনে লাফিয়ে উঠে বসে বর্ষা। ভ্রু উঁচু করে তাকিয়ে আছে ওর দিকে দেখে শুকনো ঢোক গিলে বর্ষা বলল, ‘ নিচে ইংলিশ ট্রান্সলেশন হচ্ছে, তাই বুঝতেছি। ’

অভ্র বর্ষার দিকে কিছুটা ঝুঁকে গম্ভীর কন্ঠে বলল, ‘ কি বুঝছিস? আমাকেও বুঝা। ’

বর্ষা দুই চোখ ছোট ছোট করে অভ্রর দিকে তাকিয়ে অস্ফুটস্বরে বলল, “ আমি বুঝতেছি এটাই অনেক তোমাকে বুঝাতে পারবো না। ”

রাগী কন্ঠে বলল,‘ খেতে যাসনি কেনো? ’

বিছানা থেকে লাফ দিয়ে নিচে নেমে বলল, ‘ এখনই যাচ্ছি। ’

বলে রুম থেকে ছুটে চলে গেলো সে খুব ভালো করেই জানে এখানে থাকলে শত প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে।
.
.
রাতে অভ্র কল দিয়েছিল, বর্ষা কল কেটে দেয়। মেসেজ দিয়ে বলে তাকে বারান্দায় আসতে কিন্তু বর্ষা সাফসাফ বলে সে যাবে না। কেননা সে কোরিয়ার ড্রামা দেখায় মগ্ন।
পুরো একটা রাত সে ড্রামা দেখে পার করে দেয়। আগামীকাল শুক্রবার তাই সে দিনে পরে পরে ঘুমাবে এটাই তার প্লেন।

সকাল আটটা পর্যন্ত ড্রামা দেখে শেষ করে হাফ ছাড়লো বর্ষা। মনের মধ্যে এখন শান্তি লাগছে।

সকালের নাস্তা করে ছাঁদে চলে যায়। কিন্তু বর্ষা কি জানতো অভ্র আজ ওর সাথে এমন এক অদ্ভুত কান্ড করে বসবে? শুধু মাত্র ড্রামার নায়কটা হ্যান্ডসাম বলায়।

চলবে?

#অবন্তর_আসক্তি
#পর্ব_৩৭
#শারমিন_আক্তার_বর্ষা
_____________
আজ আকাশটা সকাল থেকেই মেঘলা। সূর্য মেঘের আড়ালে লুকিয়ে আছে। আকাশের বুকে কালো কালো মেঘ জমেছে বার কয়েক বজ্রপাত ও হয়েছে কিন্তু বৃষ্টি নামেনি। আকাশের অবস্থা তেমন ভালো নয় যেকোনো সময় বৃষ্টি নামতে পারে। বাহিরে গাছপালা বাতাসের সাথে দুলছে ঠান্ডা হিমেল বাতাসে গা শীতল হয়ে যাচ্ছে। প্রকৃতির রূপে সজ্জিত হতে সকলে ছাঁদে এসে বসে আছে। শুধু শুধু খালি মুখে বসে থাকা ও দ্বায়। মনটা জেনো তাদের খাই খাই করছে। বাড়ির সবগুলো ছেলে মেয়ে ছাঁদে বসে রয়েছে। এমন অবস্থায় ঝাঁল কিছু খেলেই ভালো লাগবে। পুতুল সকলের উদ্দেশ্য বলল, ‘ তোদের নিশ্চয়ই কিছু খেতে ইচ্ছে করছে? ১০মিনিট সময় দে আমি সবার জন্য বেশি করে পেঁয়াজ মরিচ দিয়ে ঝাল করে ঝালমুড়ি বানিয়ে নিয়ে আসছি। ’

নাহিদ পুতুলের দুইগাল টেনে দিয়ে বলল, ‘ আপা তুই সত্যি অনেক সুইট কোনো কিছু বলতে হয় না। বলার আগেই সব বুঝে যাস। ’

নাহিদের কথায় তাল মিলালো সকলে। পুতুল রিয়া ও বৃষ্টি কে বলল, ‘ ঝালমুড়ি ছাঁদে বসে বানালে ভালো হবে। রান্নাঘর থেকে বানিয়ে আনতে গেলে ওখানেই অর্ধেক শেষ হয়ে যাবে। রিয়া, রিমা, বৃষ্টি আমি যা যা বলছি কিচেন থেকে নিয়ে আয়। পেঁয়াজ, সরিষার তেল, কাচা মরিচ, চানাচুর, মুড়ি, টমাটো একটা আর দুইটা বোল একটা ছোট আরেকটা বড় অন্তিমে বটি। যা তারাতাড়ি গিয়ে নিয়ে আয়। ’

ওরা সঙ্গে সঙ্গে নিচে চলে গেলো। এত কিছু নিয়ে আসছে দেখে বর্ষার ছোট ফুপি কাজল বলে উঠল, ‘ এইসব নিয়ে কথায় যাচ্ছিস? ’

বৃষ্টি ক্ষীণকন্ঠে বলল, ‘ ছাঁদে। পুতুল আপু মুড়ি মাখাবে। ’

মিসেস কাজল এবার চেচিয়ে বললেন, ‘ আমার জন্য নিয়ে আসিস। ’

বৃষ্টি নির্মূলকন্ঠে দৌঁড়াতে দৌঁড়াতে বলল, ’ আচ্ছা মা। ’

১০মিনিটের মধ্যে মুড়ি মাখানো হয়। সকলে মুড়ি খাওয়ার জন্য হাত বাড়িয়েছে ঠিক তখনই সেখানে উপস্থিত হলো বর্ষা। সকলের উদ্দেশ্য বলল, ‘ জানো তোমরা কি হইছে? ’

সকলে সন্ধিহান দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললো, ‘ কি হইছে? ‘ বর্ষা মৃদু হেসে বলল, ‘ একটা কোরিয়ান ড্রামা দেখছিলাম। নায়কটা যে কত্তো কিউট আর হ্যান্ডসাম আল্লাহ আমি তো পুরো ফিদা হয়ে গেছি। কি সুন্দর কোনো খুদ নেই। আমার ক্রাশ সামনে পেলে কি যে করতাম। ইশশ ’

বলতে বলতে বর্ষার দুইগাল টমাটোর মতো লাল হয়ে গেলো। লজ্জা পেয়ে দুই হাত দিয়ে চোখ-মুখ ঢেকে ফেলল। ঠোঁট জোড়া উল্টিয়ে কপালের চামড়া ভাজ করে বর্ষার কথাগুলো শুনছিলো অভ্র। অন্য একজনের তারিফ করছে দেখে সে রাগে সবার মাঝখান থেকে উঠে চলে যায়। আঙ্গুলের ফাঁক দিয়ে তাকে যেতে দেখে ফিক করে হেসে উঠল বর্ষা। বিড়বিড় করে বলল, ‘ মেডিসিনে কাজ হয়েছে জ্বলেছে জ্বলেছে। ’

বলে সে-ও হাসতে হাসতে চলে যায়। সকলে একে অপরের দিকে তাকালো এতেই বোঝা যায় তাদের মাথায় কিছুই বোধগম্য হয়নি।
.
.
সিঁড়ি বেয়ে নিচে নেমে রুমের দরজার সামনে আসতেই হঠাৎ বর্ষার হাত ধরে কে জেনো টান মারলো। বর্ষা কোনো কিছু বোঝার আগেই ঠাসস করে দরজা আঁটকে দেয়। দুই হাতের বাহু ধরে দরজার সাথে চেপে ধরল। মুখ দিয়ে অস্ফুটস্বরে বলে উঠল, ‘ আউচ ‘

একবার হাতের দিকে তাকিয়ে সামনে তাকাতে বিস্ময়ে ডুবে যায় বর্ষা। শুকনো ঢোক গিলে আমতা আমতা করে বলল, ‘ অভ্র ভাই,ই ভাইয়া ’

চোখমুখ খিচে রাগী গলায় বলল, ‘ কি বলছিলি তখন? অনেক কিউট হ্যান্ডসাম ক্রাশ তাই না? ’

বর্ষা চোখজোড়া ছোট ছোট করে বলল, ‘ আমি কখন বললাম? আর কাকে বলছি? ’

‘ওই কোরিয়ান হিরোকে বলছিস?’

‘কোরিয়ান হিরো সেটা আবার কে? ’

‘ বর্ষা? ’ রাগে কটমট করে বলল।

‘ আমি কিছু করিনি। ’

‘ সামনে পেলে তো করতি বলেছিলি। ’

‘ তাতো করতামই’ বিড়বিড় করে বলল।

‘কি বললি? ’

‘কোই কিছু না তো। আমাকে আম্মু ডাকছিলো আসি। ’

বলে কোনো রকমে অভ্রর হাত থেকে ছুটে পালালো বর্ষা।
___________
দুপুরে খাওয়া দাওয়ার পর সকলে যার যার রুমে চলে যায়। অনেকে বিছানার সাথে গা এলিয়ে দিতে ঘুমেরে দেশে পারি জমায়৷

বিছানার উপর বসে পড়ছে বর্ষা। মাঝেমধ্যে টুংটাং শব্দে ফোনের মেসেজ রিংটোন বেজে উঠছে। কিন্তু সেদিকে কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই বর্ষার তার সামনেই পরীক্ষা পড়া জমে রয়েছে বহুত পড়তে হবে। জানালার পর্দা বাতাসে উড়ছে ঠান্ডা বাতাস রুম পুরো ঠান্ডা করে তুলেছে। কাঁথা মুড়ো দিয়ে বর্ষা শুয়ে পরে। শুয়ে শুয়ে পড়তে থাকে কিছুক্ষণের মধ্যে শিল দ্বারায় বৃষ্টি শুরু হয়ে যায়। বৃষ্টির দিনে ঘুমাতে বেশ লাগে। এমনিতেও দুপুরে খাওয়ার পর ঘুমঘুম একটা রেশ চলে আসে। সে সাথে যদি হয় বৃষ্টি তাহলে তো কথাই নাই। বই পাশে রেখে ঘুমিয়ে পরে বর্ষা। অনুভব করতে লাগে কেউ একজন গভীর দৃষ্টিতে মগ্ন হয়ে তাকে দেখছে। ঘুমের মধ্যে এমন অনুভূতি সর্বপ্রথম ভূত নয় তো চিন্তা ভাবনা মাথায় আসে। সবে মাত্র চোখ লেগেছে তাই ঘুমটা গভীর নয়। পিটপিট করে চোখ খুললে আবছা আবছা দেখতে পায়। ওর মাথার দুইপাশে দুই হাতের উপর ভোড় দিয়ে অনেকটা ওর মুখের দিকে ঝুঁকে রয়েছে কেউ। আবছা আবছা দেখায় ভয়ে ‘আহহ’ বলে চিৎকার দেয়। সঙ্গে সঙ্গে ছায়ামূর্তি তার হাত দিয়ে বর্ষার মুখ চেপে ধরে বলে, ‘চেচামেচি করছিস কেন? মার খাওয়াবি নাকি?’

ভালো মতো চোখ খুলে দেখল বর্ষা ছায়ামূর্তি আর কেউ নয় অভ্র।
বিস্ময়ে বরফের মতো হয়ে তাকিয়ে আছে বর্ষা অভ্রর দিকে। তার চাহনি দেখে হাত পা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে বর্ষার। ভয় মিশ্রিত কন্ঠে বলল, ‘ তুমি এখানে কি করছো? কিভাবে এলে? ‘

অভ্র হাত সরিয়ে নিলো বিছানার এক কোণায় বসে বলল, ‘ যখন তুই পড়ছিলি মেসেজের রিপ্লাই দিচ্ছিলি না তখন। ‘

‘ কিভাবে আসছো? দরজা তো ভেতর থেকে বন্ধ। ‘
বিছানার উপর বসে বলল।

‘ পাইপ বেয়ে যেভাবে তুই উঠা নামা করিস। ’

” কেন আসছো? ”

‘ তোকে খুব দেখতে ইচ্ছে করছিলো তাই। ‘

‘ এত ঢং করতো হবে না যাও কেউ এসে দেখে ফেললে কেলেঙ্কারি হয়ে যাবে। ‘

‘ কিভাবে যাবো? বাহিরে বৃষ্টি হচ্ছে তো। ‘

‘ বৃষ্টি হবে জেনেও আসছো কেন তুমি আমার রুমে? ‘

অভ্র কোনো প্রত্যত্তর না করে হাত পা কাঁথার নিচে ঢুকিয়ে বসলো। আকস্মিক ঘটনায় বর্ষা বিছানা থেকে লাফ দিয়ে নিচে নেমে দাঁড়ায়। বর্ষার দিকে তাকিয়ে মৃদু ঠোঁট বাঁকা করে হাসে অভ্র। বর্ষা বিরক্ত হয়ে বলল, ‘ বিছানার নিচে ঢুকছো কেন? ‘

‘ বিছানার নিচে কোথায় ঢুকলাম? আমি তো কাঁথার নিচে ঢুকলাম। ‘ হেয়ালি করে বলল অভ্র।

‘ সে যাগ্গে কেন ঢুকলে? ‘

‘ আমার একমাত্র বউয়ের বিছানায় আমি শুয়েছি তাতে তোর এত কেন জ্বলছে শাঁকচুন্নি? ‘

বর্ষা ঠোঁট জোড়া উল্টিয়ে অভ্রর দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে রইলো। অভ্র কিছু বলবে ভাবে তখনই দরজায় কে জেনে বর্ষা বলে ডাকছে। বৃষ্টির শব্দে কন্ঠ স্পষ্ট নয়। বর্ষা দরজার দিকে তাকিয়ে কাপড় খামচে ধরে। অভ্র লাফ দিয়ে বিছানা থেকে নেমে দাঁড়ায়। ধীরে ধীরে ডাক একটু জোরে হতে লাগে। বর্ষা অভ্রকে নিয়ে আলমারির পেছনে দাঁড় করায়। অভ্র বর্ষার মতো চিকন নয়। ছেলে মানুষ তাদের বডি ফিটনেস মেয়েদের থেকে আলাদা হয়। তাই অভ্র আলমারির পেছনে একটু জায়গায় ফিট হচ্ছিল না। না পেরে সে পেছন থেকে বের হয়ে আসে। অভ্রর গায়ের রং ফর্সা, আলমারির কাঠের সাথে লেগে শরীরে কয়েক জায়গায় লালচে দাগ হয়ে গেছে। বর্ষা করুণ দৃষ্টিতে অভ্রর দিকে তাকালো। হাতের দাগ দেখে চোখের কার্নিশে অশ্রু টলটল করছে। এক ফোঁটা জল গড়িয়ে পরার সাথে সাথে অভ্র তার আঙুলের তর্জনী দিয়ে জলটা মুছে দিয়ে সরু কন্ঠে বলল,’ আমার কিছু হয়নি পাগলী। আমি দরজার পেছনে লুকিয়ে পরছি তুই দরজা খোল। ’

বর্ষা উপর নিচ মাথা নাড়ালো। অভ্র দরজার পেছনে লুকালো। বর্ষা দরজা খুলে দেখে ওর মা দাঁড়িয়ে আছে হাতে তার একটা বাটি বর্ষা লক্ষ্য করে দেখলো পায়েসের বাটি। শানিতকন্ঠে বর্ষার মা জানতে চাইলো, ‘ এতক্ষণ লাগলো কেনো দরজা খুলতে? ‘

ঘুম ঝড়ানো কন্ঠে বর্ষা বলল, ‘ ঘুমিয়ে পরেছিলাম আম্মু। ‘

বর্ষার আম্মু আর কিছু না বলে বাটিটা বর্ষার হাতে থামিয়ে দিয়ে চলে যায়। বর্ষা ভেতর থেকে দরজা বন্ধ করে বিছানার উপর ঝুঁকে বাটি সহ ট্রে টা রাখে।
সোজা হয়ে দাঁড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে পেছন থেকে দুটি হাত বর্ষাকে আগড়ে ধরে। অভ্রর এমন অদ্ভুদ কান্ড বর্ষাকে বিস্ময়ে ফেলে দেয়। বর্ষা অভ্রর থেকে নিজেকে ছাড়ানোর জন্য কিছুটা নড়েচড়ে দাঁড়ালে অভ্র বর্ষাকে আরও শক্ত করে চেপে ধরে বলল, ‘ উঁহু! প্লিজ নড়ো না কিছুক্ষণ এভাবে দাঁড়িয়ে থাকো। খুব ইচ্ছে করছে তোমাকে আষ্টেপৃষ্টের সাথে আঁকড়ে ধরি। নিজেকে আটকাতে চেয়েও পারিনি। প্লিজ ‘

স্তব্ধ প্রায় দাঁড়িয়ে রয় বর্ষা। অভ্র তার গরম নিঃশ্বাস ফেলছে বর্ষার কাঁধের উপর অনুভব করতে পারছে বর্ষা। কিছুক্ষণের মধ্যে অভ্র তার অষ্ট জোড়া বর্ষার ঘাড়ের উপর ডুবিয়ে দিলো। চোখ জোড়া সঙ্গে সঙ্গে বড় বড়সড় করে নেয়। বর্ষা হুট করে পেছনে ঘুরে দাঁড়িয়ে অভ্রর চিবুকে হাত রেখে সজোরে ধাক্কা মারে। কয়েক পা পিছিয়ে যায় সে পরক্ষণে জেনো অভ্র ওর হুঁশশ ফিরে পায়। এতক্ষণ সে জেনো তার মধ্যে ছিলো না। কোনো এক গভীর নেশায় মগ্ন হয়েছিল। বর্ষা কাঁদো কাঁদো ফেস বানিয়ে তার দিকে তাকিয়ে রইল। দু’জনের মধ্যে নীরবতা বিরাজমান অভ্র পরিস্থিতি সামলানোর জন্য বলল, ‘ সরি। আমার কোনো হুঁশশ ছিলো না নিজের মধ্যে ছিলাম না। জানি না কি হয়েছিল সরি। ‘

বর্ষা জড়ানো কন্ঠে বলল, ‘ আম্মু পায়েস দিয়ে গেছে। তোমার তো পায়েস অনেক প্রিয়। বিছানায় বসে খাও। বৃষ্টি কমলে না হয় চলে যেও। ‘

বর্ষার কথায় সাই দিয়ে বিছানায় উঠে বসল। চোখ দিয়ে ইশারা করে বর্ষাকে তার পাশে বসতে বলল। বর্ষা হাত পা গুটিয়ে বিছানায় বসল। অভ্র বর্ষাকে প্রথমে কয়েক চামচ খাইয়ে দিয়ে নিজেও খেলো।

বারান্দায় গিয়ে কয়েকবার উঁকি ঝুঁকি দিয়েছে বর্ষা। বৃষ্টি কমবার কোনো নামগন্ধ ও নেই। বৃষ্টি জেনো বাড়ছে দেখে ভারী নিঃশ্বাস ফেললো বর্ষা। পাশ গেষে হাতের সাথে হাত লাগিয়ে দাঁড়ালো অভ্র।

কানে কানে ফিসফিস করে বলল, “আমার নীলচে পরী, ভালো লাগে বৃষ্টির প্রতিটি বিন্দু বিন্দু পানি সঙ্গে থাকো যদি তুমি। ”

বর্ষা মাথা ঘুরিয়ে অভ্রর দিকে তাকিয়ে ফিক করে হেসে দেয়। দু’জনে বেশ কিছুক্ষণ বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকে। অভ্র একহাত বর্ষার মাথার উপর রেখে কপালে আলতো চুমু একে দেয়। যখনই বৃষ্টি কিছুটা কমে ফোঁটা ফোঁটা পরে তখনই চারপাশে একবার লক্ষ্য করে অভ্র। তারপর পাইপ বেয়ে তার রুমে চলে যায়।

পাইপ বেয়ে উঠার সময় পা পিছলে পরে যাচ্ছিলো অভ্র কিন্তু পরক্ষণে নিজেকে সামলে নেয়। রুমে গিয়ে গোসল করতে চলে যায়। বৃষ্টির ফোঁটা গায়ে পরেছে তাই। রুমে এসে কাঁথা মুড়ো দিয়ে শুয়ে পরে বর্ষা।
.
.
হল রুমে সবে একত্রে বসে আড্ডা দিচ্ছে। কিছু দল বসে মোবাইল টিপছে কিছুদল লুডু খেলছে তো বাকিরা বসে বসে সারাদিনের গল্প করছে। আর বড়রা বসে তাদের যুগের গল্প করছে।

সকলের নাকে একটা ঘ্রাণ আসতে লাগল। সকলে চোখ বন্ধ করে ঘ্রাণ টা শুঁকতে লাগল। বর্ষা কিচেনে সকলের জন্য নুডলস রান্না করছে তারই ঘ্রাণ বাতাসে ভেসে আসছে। কিছুক্ষণ আগে রাতের ডিনারের জন্য খিচুড়ি ও গরুর মাংসের ভোনা রান্না করা হয়েছে। কিন্তু সেটা তো রাতের জন্য এখন তো সন্ধ্যা আর এখন ওর খিদে পেয়েছে। নিজের জন্য একা রানবে? ভেবে সকলের জন্য রান্না করে নিলো।

ট্রে সাজিয়ে হল রুমে আসলো বর্ষা। সকলকে একটা একটা করে বাটি দিয়ে দিলো। শেষের টা অভ্র নিলো। সকলে খেতে শুরু করে দিয়েছে। এদিকে মন মরা হয়ে ট্রে হাতে দাঁড়িয়ে রয় বর্ষা। সবার জন্য এনে এখন তার জন্যই নেই। বর্ষার ভাগের বাটিটা একটা মেয়েকে দিয়েছে। পাশের বাসার আন্টি মার্কেটে গিয়েছে আর তার মেয়েকে বর্ষাদের বাড়িতে রেখে গেছে। বাচ্চা মেয়ে নুডলস দেখে খেতে চেয়েছে দেখে বর্ষা ওর ভাগের টা মেয়েটাকে দিয়ে দেয়।

অভ্র লক্ষ্য করে নিঃশ্বাস ফেলে বর্ষাকে উদ্দেশ্য করে বলল, ‘ বর্ষা তোর ভাগে তো পরলো না। তুই এক কাজ কর এদিকে আয় আমি তোকে আমার বাটি থেকে খাইয়ে দেই। ‘

বাড়ির সবার সামনে খাইয়ে দেই কথাটা বলায় হাত পা কাঁপতে শুরু করে তার। বুকের মধ্যে মোচড় দেয়া শুরু হয়ে গেলো। বর্ষা দাঁড়িয়ে রয়েছে হ্যাঁ বা না কোনো কিছু বলছে না দেখে অভ্রর মা বলে উঠল, ‘ কিরে তুই এমন খাম্বার মতো দাঁড়িয়ে আছিস কেন? তোর অভ্র ভাইয়া কি বলল? যা ও তোকে খাইয়ে দিবে। এত কষ্ট করে রান্না করছিস না খেয়ে থাকবি নাকি? ‘

বর্ষা ওর বড় আম্মুর কথা শুনে সন্দিহান দৃষ্টিতে তাকালো। তার মাথায় ঢুকলো না, ‘ব্যাপার’ টা সকলে এত ইজিলি নিলো কিভাবে? অভ্র বর্ষার মাথায় কি চলছে বুঝতে পেরে তার হাত ধরে টেনে ওর সামনে বসিয়ে এক চামচ নুডলস বর্ষার মুখে পুরে দিলো।
.
.
.
রাতে সকলে একসাথে ডিনার করতে বসেছে। বাহিরে ফোঁটা ফোঁটা বৃষ্টি পরছে। বৃষ্টির থেকে বাতাস বইছে তীব্র। এমন পরিবেশে খিচুড়ি উফফ। সকলের প্লেটে বেড়ে দেওয়ার পরপর সবাই খাওয়া শুরু করে। এক লোকমা মুখে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বর্ষার নাকে মুখে খাবার উঠে যায় সে অনবরত কাশতে শুরু করে।

বর্ষার বাবার বলা একটা কথায় সে বর্ষার দিকে তাকিয়ে বলেছিল, ‘ বর্ষার জন্য দুইটা বিয়ের প্রস্তাব এসেছে। কালকেই ছেলে দুটো মেয়েকে দেখতে চায়। যেকোনো একজনকে পছন্দ হলে কথা পাকাপাকি করবো। ছেলে মেয়ে দুজন দু’জনকে পছন্দ হলে দুই পরিবার একত্রে আলোচনার জন্য বসবো। দুইটা ছেলের মধ্যে কাউকে না কাউকে তো ওর পছন্দ হবে। ‘

কথাটা শোনার সঙ্গে সঙ্গে খাবার তাউলায় উঠে। মাথায় হাত দিয়ে কাশছে দেখে এক গ্লাস পানি বাড়িয়ে দেয়। সম্পূর্ণ পানি টুকু খেয়ে চুপচাপ বসে রয় বর্ষা। মাথা নিচু করে খাওয়া সম্পূর্ণ করে উঠে চলে যায়।
.
.
পড়ার টেবিলে বই খোলা রেখে চেয়ারে বসে রয়েছে মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে শুধু তার বাবার বলা কথাটা। কাঁধের উপর কারো হাতের স্পর্শ পেয়ে পেছনে তাকালো, বর্ষার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে তার বাবা বলল, ‘ মারে প্রতিটা মেয়েরই কোনো না কোনো সময় বাপের বাড়ি ছেড়ে যেতে হয়। প্রথমবার আমরা ভুল করেছি। তাই এবার আর দ্বিতীয় ভুল করতে চাই না। রেস্টুরেন্টে তোর জন্য অপেক্ষা করবে ওরা গিয়ে একবার দেখা করে আসিস। ‘

বর্ষা মাথা নিচু করে দুই পাশে মাথা নাঁড়ায়। বর্ষার বাবা রুম থেকে চলে যায়। বর্ষা ভেতর থেকে দরজা আঁটকে পেছনে ঘুরে দাঁড়ায় ভয়ে দুই পা পিছিয়ে যায়। দরজার সাথে চেপে ধরে রাগী গলায় বলল, ‘ বাড়িতে এসে বলবি ছেলেদের তোর পছন্দ হয়নি। ‘

দরজার দু’পাশে দুই হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে অভ্র। বর্ষা মৃদু কন্ঠে বলল, ‘ ঠিক আছে। তাছাড়া তাদের জেনো আমাকে পছন্দ না হয় আমি সে ব্যবস্থাই করবো। তুমি এখন যাও। ‘

অভ্র বর্ষার দুই হাত চেপে ধরে বলল, ‘ যদি না পারিস। দেখিস আমি তাদের মে’রে ফেলবো। ‘

বর্ষা অস্ফুটস্বরে বলে উঠল, ‘ মা’মা’ মানে? ‘

‘ মানে কিছু না তুই ঘুমা। ‘ বলে অভ্র বারান্দায় চলে যায়।

চলবে?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here