অবন্তর_আসক্তি #৭ম_পর্ব,০৮,০৯

0
1498

#অবন্তর_আসক্তি
#৭ম_পর্ব,০৮,০৯
#শারমিন_আক্তার_বর্ষা
০৭

খুবই শক্ত করে হাত চেপে ধরে ছিল। তাই হাতটা ছাড়তে হাফ ছেড়ে বাঁচল বর্ষা। সে তিক্ত মেজাজে বর্ষার পা থেকে মাথা অব্ধি লক্ষ্য করে। দাঁতে দাঁত চেপে বলে উঠে, ‘ রাস্তায় এত সেজেগুজে বের হয়েছিস কেন? রাস্তায় পুরুষদের নিজের শরীর দেখাতে ভালো লাগে নাকি? ‘

উনি বলতে কি চান হুহহ, আমি রাস্তা ঘাটে শরীর দেখিয়ে বেরাই আজব। চোখমুখ লাল হয়ে গেলো, রাগী কন্ঠে চেঁচিয়ে বললাম, ‘ বলতে কি চান আপনি? আমি রাস্তায় শরীর দেখিয়ে ঘুরে বেড়াই? ‘

সে আমার দিকে কিছু টা ঝুঁকে কর্কশকন্ঠে বলল, ‘ তা না হলে তোর পেট দেখা যাচ্ছে কেন? ‘

তার কথায় মনে হলো আমি আসমান থেকে পরলাম। এটা অসম্ভব আমি শাড়ি পরলে সবসময় শাড়ির পিন সেট আপ করি, অতি যত্নে। সেখানে পেট দেখা ইম্পসিবল। তার কথায় আমি হতভম্ব হয়ে পেটের দিকে তাকালাম। সত্যি শাড়ির পিন খুলে কোথাও পরে গেছে।
তার দিকে চোখ ছোটছোট করে তাকিয়ে নিচু কন্ঠে কিছু বলতে যাবো তার আগেই পেছন থেকে চারটা হাত বর্ষাকে জড়িয়ে ধরল।

বর্ষা আতঙ্কে লাফিয়ে উঠে, সে তড়িঘড়ি করে পেছনে ফিরে চায়, পেছনে দুজন বান্দরনী দেখে সে বিস্মিত স্বরে বলল, ‘ তোরা? ‘

বৃষ্টি বলল, ‘ যেভাবে রিয়েক্ট করছিস মনে হচ্ছে তুই জানিসই না আমরা যে এসেছি?’

বর্ষা মাথা নত করে হম্বিতম্বি করে বলল, ‘ শুনেছিলাম। ‘

রিমা ভ্রু কাচুমাচু ভঙ্গি করে প্রশ্ন ছুঁড়ল, ‘ তাহলে? ‘

‘ শুনেছিলাম তোরা সবাই পার্কে যাবি তো সেখানে না গিয়ে বাজারে দেখে অবাক হলাম। ‘

‘ তোকে রেখে কি করে যাই চল গাড়িতে উঠ, ‘ এক প্রকার টেনেই গাড়িতে তুলে বসালো। গাড়িতে উঠে আরও এক জোড় শকট খেলাম। আহিতা মাহিরা দু’জনেই গাড়িতে কিভাবে সম্ভব ওরা না পালিয়ে ছিল? কোনো কিছুরই হিসাব মিলাতে পারছি না। আর এদিকে উনি ড্রাইভিং করছে আমি মুখ ফুলিয়ে ফ্রন্ট সিটে বসে আছি। সব কিছুই জেনো মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে, হঠাৎ করে গাড়ি থেমে গেলো। একবার সামনে তাকিয়ে দ্বিতীয় বার পাশে থাকা ব্যক্তিটার দিকে তাকালাম। পেছনে তাকিয়ে দেখি সকলে একে একে নেমে যাচ্ছে। আমি কি একা বসে থাকবো নাকি? আমিও নেমে পরলাম। মাটিতে পা ফেলতে দ্বিতীয় বারের মতো শকট খেলায়। না না এবার শকট খেয়েছি বললে ভুল হবে। ছোটমোটো একটা হার্ট অ্যাটাক করেছি। গাড়ি থেকে নেমে গাড়ির ডোর আসতে করে লাগিয়ে দিলাম। পেছনে ঘুরে দেখতে মুগ্ধ হয়ে গেলাম। সামনে এক চওড়ারাস্তা তার এক পাশে বড় দিঘি সচ্ছল তার পানি। বিপরীত পাশে হচ্ছে নানান রকমের ফুল গাছ, প্রতিটি গাছে ফুল ফুটেছে আছে৷ আমার ফুল খুব প্রিয় তা তো আপনারা জানেন৷ এখানে এক সাথে এত ফুলের গার্ডেন দেখে আমি নিজেকে কোনো ভাবেই আটকে রাখতে পারছি না। ইচ্ছে করছে উড়ে গিয়ে প্রতিটা ফুল স্পর্শ করি। কিন্তু এখানে সাইনবোর্ডে বড়বড় করে লেখা আছে, ‘ দূর থেকে দেখেই ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করুন। ভুলেও ছুঁয়ে স্পর্শ করবেন না। একটা ফুলের গায়ে স্পর্শ করলে ৫০৫টা জরিমানা, আমরা উপরে সিসি ক্যামেরা দ্বারা আপনাদের উপর নজর রাখিতেছি। ‘

এমন সতর্ক বার্তা পড়ার পর কিভাবে ছুঁয়ে দেখবো ফুলগুলো কে হুহহ? বেলুনের মতো মুখ চুপসে গেলো আমার। কিছুটা সময় আমরা পুরো জায়গাটা ঘুরে দেখলাম খুবই সুন্দর জায়গা৷ হঠাৎ পেছন থেকে কেউ একজন তার হাত আমার মুখের সামনে ধরল হাতে তার চিপস। কিছুটা বিস্ময় নিয়ে পেছনে ঘুরে তাকালাম, অভ্র ভাইয়া আমার পেছনে দাড়িয়ে আছে সে আমার দিকে গুরুগম্ভীর দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল, ‘তাকিয়ে থাকবি নাকি এটা ধরবি? ‘

তার চোখের দিকে বেশিক্ষণ তাকিয়ে থাকা মুশকিল। মায়াবী দু’টি চোখ, তাকিয়ে থাকলে মনে হয় এই চোখের অতল সাগরে ডুবে যাবো। যৎকিঞ্চিত ভ্রমণগুলোর আনন্দ উল্লাসে মেতে উঠেছি সবাই এদিকে সন্ধ্যে গনিয়ে আসছে। আমি শাড়ি কুঞ্চিত উঁচু করে লাফ দিলাম। এ পাশ থেকে ওপাশে রাস্তার মধ্যে কোনো ড্রেন ছিল না।। তবুও ইচ্ছে করল লাফ দিতে আর নিজের কোনো ইচ্ছাই অপূর্ণ রাখতে নেই। সেজন্যই লাফ দেওয়া আর এটাই বর্ষার জীবনে বহু বড় কাল হয়ে দাঁড়ালো। এমন ভাবে পরেছে, যে বাগানের কন্চির সাথে লেগে পেছনে ব্লাউজ ছিড়ে যায়। ব্লাউজ ছিঁড়েছে বুঝতে পেরে মুখ কাচুমাচু করে ফেলল। এই বুঝি এখনই কেঁদে ফেলবে। তা ছাড়া এমন অবস্থায় একটা মেয়েই বুঝতে পারে তার উপর দিয়ে কি যায়। মাথা নিচু করে ঠোঁট জোড়া বাঁকা করে রেখেছে। খোলা চুলগুলো সে অনেক আগেই খোঁপা বেঁধে নিয়েছে। এখানে এত মানুষ দেখে অস্বস্তিতে পরে যায় সে কি করবে বুঝতেই পারছে না৷ এদিকে বর্ষা পরেগেছে সেটা কেউ দেখেনি। তারা অনেকটা দূরে একটা দোকানে অবস্থান করছে। এই অবস্থায় বর্ষা আগাতে পারছে না। তার চোখের কার্নিশ বেয়ে এক ফোটা অশ্রু টুক করে গালের উপর গড়িয়ে এসে পরে। তখনই কেউ একজন পেছন থেকে বর্ষার গায়ে জ্যাকেট জড়িয়ে দেয়। জ্যাকেট টার দুই মাথায় ধরে পেছনে ঘুরে তাকালো। দেখার জন্য এই বিপদে কে তাকে সাহায্য করল।

‘ বাঁন্দরের মতো লাফাস কেন? ঠিক করে হাঁটতে পারিস না। ‘

কর্কশকন্ঠে কথাগুলো বলে হনহনিয়ে সামনে থেকে চলে গেলো৷ আমার আজ আর তার কথা খারাপ বা বিরক্ত লাগল না৷ উল্টো আমার অনেক ভালো লাগল তার বলা কথা মনে হচ্ছে কি মনে হচ্ছে হুদ্দাই ঘোড়ার ডিম আলু পটল৷ এত বেশি বেশি কেন ভাবছি হুহহ? বড় ভাই হিসাবে কর্তব্য পালন করেছে শুধু আর তো কিছু না৷ তারপর আর কি হেঁটে সকলকে পেছনে ফেলে আমি আগে আগে গাড়িতে উঠে বসে পরি। সবাই আসলে অভ্র ভাইয়া গাড়ি চালানো স্টার্ট দেয়। সে গাড়ির স্টিয়ারিংয়ে হাত রেখেই সর্বপ্রথম আমার দিকে আড় চোখে তাকায়। তার এই চাহনি আমার চোখ এড়ালো না। কেনো জানি আমার উনার আড়চোখে তাকানো টা অনেক ভালো লাগল। বাড়ির সামনে এসে বেশ জোরেই ব্রেক কষলো সে। আমি সিট ছেড়ে সামনের দিকে অনেকটা এগিয়ে গেলে সে আমার হাত ধরে সিটের উপর বসায় আর দাঁতে দাঁত চেপে বলে,

‘ গাড়ির ফ্রন্ট সিটে বসলে সিট বেল্ট লাগাতে হয় এত টুকু কমন সেন্স নেই ‘

তখন তিনি কত ভালো ব্যবহার করলেন নিজের গা থেকে জ্যাকেট খুলে দিলো আর এখন কি এমন হলো এমন করে কথা বলছে কেন? ভাবতেই বুকের ভেতর চিলিক দিয়ে উঠলো। গাড়ির ডোর খুলে দিলাম দৌঁড় এক দৌঁড়ে একদম রুমে। হল রুমে বসেছিল বাড়ির সকলে আমাকে এভাবে ছুটে আসতে দেখে কয়েকবার ডেকে ছিল। কিন্তু আমি তাদের ডাক কানে নেইনি। রুমে এসে ঠাস করে দরজা চাপিয়ে দিলাম। খুবই খারাপ লাগছে আমার উনার ব্যবহারে কিন্তু কেনো? উনার এমন ব্যবহারে আমার কেন খারাপ লাগবে আজব। নিজের উপরই বিরক্তি লাগছে। ফ্রেশ হওয়ার জন্য চলে আসলাম ওয়াশরুমে। রুমের মধ্যে টুকটাক শব্দ শুনে ভেতর থেকেই চেচিয়ে বললাম, ‘ কে রিয়া? ‘

রুমের মধ্যে থেকে প্রতিত্তোরে সে বলল, ‘ না আমি রিমা। ‘

আমি চিন্তা মুক্ত হলাম। সম্পূর্ণ শাওয়ার কমপ্লিট করে নিলাম। একটা সাদা টাওয়াল গায়ের সাথে পেঁচিয়ে নিলাম।
পেছনে ঘুরে তাকাতেই পিছলে পরে যাওয়ার মতো অবস্থা মুখ ফসকে বলে ফেললাম, ‘ ও মোর জ্বালা জামা-ই তো আনি নাই ‘ কতক্ষণ বাথরুমে দাঁড়িয়ে কাকা করলাম। মানে কাকের মতো রিমাকে ডাকলাম কিন্তু তার কোনো শব্দ নেই, আরও কয়েকবার ডাকলাম কোনো রকম আওয়াজ না পেয়ে দরজা খুলে দিলাম। রুম পুরো ফাঁকা কোথাও রিমা নাই গেলো কোই পেত্নী টায়? বিড়বিড় করে বললাম। এক টাওয়াল গায়ে জড়িয়ে দ্বিতীয় টাওয়াল মাথায় চুলের সাথে পেঁচিয়ে বাথরুম থেকে বের হলাম। আমি কি আর তখন জানতাম আমার সাথে ওইরকম একটা বিচ ছিঁড়ি কাহিনি ঘটবে।

রুমে এসে আলমারির কাভার্ড থেকে গোলজামা, পায়জামা ও ওড়না হাতে নিয়ে আবারও বাথরুমে যাচ্ছিলাম। তখনই রুমের মধ্যে চলে আসল অভ্র ভাইয়া সে বলতে লাগল, ‘ বর্ষা তোর মোবাইল গাড়িতে ফেলে আসছিলি। ‘

উনার ভয়েস শুনে আমি চমকে তার দিকে তাকালাম। উনাকে হনুমানের মতো সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে অস্ফুটস্বরে দিলাম এক চিৎকার, ‘ আহহহহহহহ ‘ সেও আমার সাথে তাল মিলিয়ে চিৎকার দিলো ‘ আহহহহ ‘

তারপর,

চলবে?

#অবন্তর_আসক্তি
#পর্ব_০৮
#শারমিন_আক্তার_বর্ষা
_________
গরুর মতো চিৎকার করে রুম থেকে ছুটে বের হয়ে গেলো৷ আমি পরে গেলাম লজ্জায় এমন সময় রুমে চলে আসবে ভাবতেও পারিনি। আর ওই বজ্জাত রিমা দরজা খোলা রেখে চলে গেছে অসহ্য!

এক রাশ বিরক্ত নিয়ে সিঁড়ি দিয়ে নামছি। হুট করে পায়ে পা লেগে পরে যাবো, তখনই পেছন থেকে একটা হাত আমাকে ধরে নিলো। পেছনে ঘুরে রাগী গলায় কিছু বলতে যাবো তার আগেই মানুষটার মুখ দেখে চমকে উঠলাম, সে আমার দিকে ভ্রু কুঞ্চিত করে তেজি কন্ঠে বলল, ‘ সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় সাবধানে নামতে পারিস না। ফাজিল এখনই তো পরে হাত পা ভাঙতো। ‘

আমি প্রত্যত্তরে কিছুই বললাম না শুধু দু’টি চোখ দিয়ে তাকিয়ে রইলাম। তার কথা শোনানো শেষ হয়ে গেলে সামনে থেকে হনহনিয়ে চলে যায়৷ তার চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে মুখ ভেংচি কাটলাম। উপর থেকে নেমে এসে রিমা বলল, ‘ কি বললো কাব্য ভাইয়া তোকে? ‘

‘ কি আর বলবে ফ্রি তে জ্ঞান বিতরণ করে গেছে ‘

বলে হাঁটতে হাঁটতে হল রুমে চলে আসলাম। পেছন পেছন রিমাও আসলো আগে থেকেই সবাই এখানে বসে গল্প করছে। আমাকে দেখতে সকলে কপাল কুঁচকালো কর্কশকন্ঠে সকলে একসাথে বলল,

‘ তুই নাকি বিকেলে পরে গিয়ে ব্লাউজ ছিঁড়ে ফেলছিস ‘

ওরে আল্লাহ কি বলে সবাই স্টক করার মতো অবস্থা হইছে, এক তো বিনা অনুমতিতে রুমে ঢুকে গিয়েছিল দ্বিতীয় যা কেউই জানতো না সেটাও সবাই কে বলে দিলো। প্রচুর কান্না পাচ্ছে এখন আমার, মাথা নিচু করে হাত কচলাচ্ছি। মাথা তুলে আঁড়চোখে অভ্র ভাইয়ার দিকে তাকালাম সে মুখে কৃত্রিম হাসি দিয়ে মোবাইল স্ক্রল করছে। ইচ্ছে করছে চুলের মুঠি ধরে গালে ঠাসস ঠাসস করে চড় মারতে, আমাকে চুপ দেখে সকলে আবারও একই প্রশ্ন ছুঁড়ে দেয়। চোখে ছলছল করছে অশ্রু, সকলের দিকে এক নজর তাকিয়ে কান্না ভেজা কন্ঠে বললাম, ‘ আমি পরে যাইনি, ওই আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফালাই দিছে। ‘

হাত দিয়ে অভ্র ভাইয়ার দিকে ইশারা করলাম। আমার আঙুলের ইশারায় সকলে তার দিকে তাকালো, সে হতভম্ব হয়ে আমার দিকে তাকালো আমার চোখে পানি দেখে সে কিছু বলতে গিয়েও চুপ হয়ে গেলো। থমথমে হয়ে আমার মুখের দিকে তাকিয়ে রইল৷ আমি সেখানে আর এক মূহুর্ত ও দাঁড়ালাম না ছুটে চলে গেলাম রুমে।
_______

রাত প্রায় ১১টা বাজে, চোখে ঘুম নেই মনে শান্তি নেই কারণ অজানা। এদিকে কারেন্ট ও নেই রুমে শুয়ে থাকাও যাচ্ছিল না চিনচিন গরম পরেছে। আমার গুনধর বোনগুলা এই গরমেও দিব্যি ঘুমাচ্ছে, ওদের কি গরমও লাগে না নাকি ‘ আল্লাহ মালুম’

তবে আমার ঘুম নেই তাই হাঁটতে হাঁটতে চলে আসি ছাঁদে, খুবই ঠান্ডা ও শীতল হাওয়া বইছে, মনকে প্রসারিত করে তুলেছে। চোখ জোড়া বন্ধ করে সে বাতাসকে অনুভব করছিলাম। তখনই পেছন থেকে কারো নির্মূল কন্ঠের আওয়াজ ভেসে আসল সে বলল, ‘ সরি ‘

আমার তার কন্ঠ চিনতে বেশি সময় লাগেনি। কিন্তু পেছনে ফিরে তাকাতে ইচ্ছে করছে না। সে হেঁটে আমার সামনে এসে দাঁড়িয়ে বলল, ‘ সরি। আমি তখন বলতে বাধ্য হয়ে ছিলাম। আমি যখন বাড়ি আসি তখন বাড়ির সকলে আমাকে গেঁড়ো দিয়ে দাড়িয়ে প্রশ্ন ছুঁড়ে, আমার জ্যাকেট তোর গায়ে কেনো? তাই আমি বলেছিলাম কিন্তু আমি বুঝিনি তাতে তুই এত হার্ট হবি। ‘

আমি অন্য দিকে তাকিয়েই বললাম, ‘ আপনার বলা শেষ হয়ে গেলে এখন আসতে পারেন। আমাকে কিছু ক্ষণ একা থাকতে দিন। ‘

সে আমার কথার কোনো তোয়াক্কা না করে বলল, ‘ আমি তোকে কিছু বলছি বর্ষা ‘

‘ আপনি বলেছেন আমি শুনেছি এখন আপনি আসতে পারেন। ‘ রাগী গলায় চেঁচিয়ে বলল বর্ষা।

সে এক বিরক্তিকর নিঃশ্বাস ফেললো। তারপর তার একহাত আমার দিকে বাড়িয়ে দিলো অন্ধকারে তেমন দেখছি না। তবুও আবছা আবছা চাঁদের আলোয় বুঝলাম একটা প্যাকেট কিন্তু কিসের মাথায় আসলো না। আমি তার দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন ছুড়লাম, ‘ এটা কি? ‘

সে বলল, ‘ আইসক্রিম তোর না ফেবারিট ‘

সে কেন আমাকে আইসক্রিম দিচ্ছে আজব আমি কি তার কাছে চেয়েছি নাকি হুহহ কি ভাবে টা কি আমাকে সুসি বিলাই মনে করে নাকি? যে আইসক্রিম দিলেই আমি সব ভুলে যাবো৷ কিছুতেই না আমিও তার মুখের উপর বলে দিলাম, ‘ আমি কি আপনার কাছে আইসক্রিম চেয়েছি কেন আনছেন হুহহ? তখন জুতা মেরে এখন গরু দান করতে আসছেন? চাই না আমার আইসক্রিম চলে যান এখান থেকে ‘

আমার কথায় সে চোয়াল শক্ত করে হাতের আইসক্রিম ছাঁদের উপরেই ছুড়ে ফেলে দেয়। ধুপধাপ পা ফেলে হেঁটে চলে যায়।
বুঝলাম সে চলে গেছে, পেছনে ঘুরে তাকে খুঁজলাম কোথাও দেখতে পেলাম না। তাকে দেখতে না পেয়ে অন্ধকারেই বসে পরলাম। দু-হাত দিয়ে আইসক্রিম টা খুঁজতে লাগলাম। কিছুটা দূরে গিয়ে পরেছিল। হাত ফেলে খুঁজতেই পেয়ে গেলাম। আইসক্রিম কিছুটা গলে গেছে, তাই নিয়ে দিলাম দৌঁড় রুমে এসেই সবার আগে ফ্রিজের সামনে গিয়ে আইসক্রিম টা ফ্রিজে ঢুকালাম। মনের মধ্যে এক প্রশান্তি কাজ করছে৷ জানি না তা কেনো কিন্তু এটা বুঝতে পারছি খুব ভালোলাগা থেকে এই প্রশান্তির সৃষ্টি হয়েছে। মুখে কৃত্রিম হাসি দিয়ে রুমে চলে আসলাম। ততক্ষণে কারেন্ট ও চলে আসছে, রুমে এসে বেলকনির দরজা খুলে দেই সাথে জানালার বড় একটা থাই খুলে দিলাম। এতে বাহিরের সচ্ছল বাতাস সহজেই রুমে ঢুকছে। এখন জানি না কেনো আমার প্রচুর ঘুম পাচ্ছে, চাইলেও আর চোখ খুলে রাখা সম্ভব নয়। বিছানার উপর গা এলিয়ে দিতে প্রস্থান করলাম ঘুমের রাজ্যে।
______
সকালে ঘুম ভাঙলে চরম লেভেলের হতবাক হই। বিশ্বাসই হচ্ছে না, চোখ দু’টো ছোটছোট করে তাকিয়ে রইলাম৷ দরজা তো রাতে বন্ধ ছিল তাহলে রুমে আসলো কিভাবে? আর এটাই বা রেখে গেলো কীভাবে সবকিছুই মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে। আড়চোখে তাকিয়ে এতো বড় কাগজটা হাতে নিলাম তাতে বড়বড় ইংরেজি ওয়ার্ড দিয়ে লেখা আছে, ‘ .

কি লেখা আছে আগামী পর্বে বলবো।

#চলবে?

#অবন্তর_আসক্তি
#পর্ব_০৯
#শারমিন_আক্তার_বর্ষা
_________
‘ S O R R Y ‘

ফ্যানটা অফ ছিল, তাই কাগজটা দিয়েই গায়ে বাতাস করছিলাম। ইচ্ছে করছিল কাগজটা ধুয়ে ধুয়ে পানি খাই। কিন্তু সেটা সম্ভব নয় তাই আপাতত বাতাস খাচ্ছি। রুমের মধ্যে বৃষ্টি এসে আমাকে উদ্দেশ্য করে বলল, ‘ বাড়ির পেছনের দিকটায় যা তোর জন্য অপেক্ষা করছে ‘

আমিও অস্ফুটস্বরে পাল্টা প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলাম, ‘ কে অপেক্ষা করছে? আরে বলে তো যা কে অপেক্ষা করছে? ‘

কিছু না বলেই চলে গেলো, জানাই হলো না কে অপেক্ষা করছে এত সকালে আমার জন্য? বলে বিছানা থেকে উঠতে যাবো তখন দেয়ালের ঘড়ির উপর চোখ আঁটকে গেলো। সকাল ১০টা বাজে, আর আমি কি না ভাবছিলাম এখনো সূর্যের আলোয় ফুটেনি। মাথায় হাত দিয়ে তারাহুরো করে উঠে দৌঁড়ে বাথরুমে চলে গেলাম। এখন আমি ঢের বুঝতে পারছি কে অপেক্ষা করছে আমার জন্য আজও গেলে বকা খাবো ধ্যাত ভাল্লাগে না। বিড়বিড় করতে করতে বেরিয়ে পরলাম। নাস্তা করার জন্য মা অবশ্য ডেকেছিল কিন্তু আমার ওত সময় নেই বলে ছুটে যাই। আঙিনায় গিয়ে আহিতা মাহিরা রিয়া কাউকেই দেখতে পাচ্ছি না। থমকে দাঁড়িয়ে রইলাম কানের কাছে বিড়বিড় করে কেউ একজন বলল, ‘ সরি ‘
আমি ঠোঁটের উপর আলতো ভাবে কামড় বসিয়ে পেছনে ঘুরে দাঁড়ালাম। সে তার দুই হাত পেছনের দিকটায় নিয়ে মুঠি বন্ধ করে আমার দিকে ঝুঁকে রয়েছে। আমি ভ্রু কুঞ্চিত করে তাকিয়ে আছি। সে আবারও মৃদুস্বরে বলল,
‘ সরি ‘

আমি মুখ ভেংচি কেটে পাশ দিয়ে চলে যাচ্ছিলাম। তখন অভ্র ভাইয়া আমার এক হাত ধরে টান দিয়ে তার সামনে দাঁড় করিয়ে প্রশ্ন ছুঁড়ে,

‘ আমার দেওয়া আইসক্রিম নিয়েছিস, তাহলে আমার বলা সরি কেনো নিচ্ছিস না? ‘

ও মোর খোদা মানে কি সে তখন দেখে ফেলছিল। আল্লাহ আমি চোখ জোড়া রসগোল্লার মতো বড়বড় করে তার দিকে তাকিয়ে রইলাম। মনে মনে এক শুকনো ঢোক গিলে ফেললাম, তার মুখের উপর আমতা আমতা করে বলি,

‘ হা,হাত ছাড়ুন আমার, আমাকে কলেজে যেতে হবে। ‘

অভ্র ভাইয়া ভ্রুক্ষেপহীন ভাবে আমার দিকে তাকিয়ে রয়, তৎপর হাত ছেড়ে দেয়, আমি তার সামনে থেকে চলে আসলে, সে পিছু ডেকে বলে উঠে,

‘ শুক্রবারেও তোর কলেজ খোলা থাকে? ‘

‘ What the ফাউ প্রশ্ন শুক্রবারে আবার কলেজ কার খোলা থাকে? ‘

মাথা ঘুরিয়ে তার দিকে তাকিয়ে পাল্টা প্রশ্ন ছুড়লাম।
অভ্র ভাইয়া দুই হাত প্যান্টের পকেটে গুঁজে দেয়, ঠোঁট জোড়া বাঁকা করে আমার দিকেই হেঁটে আসছে। আমি ঠাঁই দাঁড়িয়ে আছি, সে সামনে এসে দাঁড়িয়ে বলল,

‘ আজ শুক্রবার ‘

‘ আজ শুক্রবার ইশশ ভুলেই গেছি। মাথা থেকে একদম বেরিয়ে গেছে। ‘ মনে মনে,

মাটির দিকে তাকিয়ে ছিলাম মাথা তুলে সামনে তাকাতে দেখলাম সে একদম আমার সামনে এসে দাঁড়িয়ে রয়েছে। এতটাই কাছে যা দেখলে যে কেউই ভাবতে বাধ্য হবে আমরা হয়তো লিপকিস।
ইয়াক, আমি তার চোখের দিকে এক নজর তাকিয়ে উল্টো দিকে দিলাম দৌঁড়, সে বেআক্কেলের মতো সেখানেই দাঁড়িয়ে রইল। আমি রুমের মধ্যে ঢুকে দরজার সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে পরলাম। বুকের উপর এক হাত দিয়ে চাপ দিলাম। দীর্ঘ শ্বাস নিয়ে সামনে তাকিয়ে দেখি উপুড় হয়ে শুয়ে ফোন টিপছে বৃষ্টি, আমি তেড়েমেড়ে ওর পাশে গিয়ে ধুম করে দিলাম পিঠের উপর এক কিল, পিঠের উপর হাত দিয়ে ‘ ওরে বাবা গো ‘ বলে চিৎকার করে উঠে বসল বৃষ্টি আমার দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি নিক্ষেপ করে চেচিয়ে বলল, ‘ মারলি কেন শাঁকচুন্নি? ‘

বিছানার উপর উঠে বসে ওর হাতে গুঁতো দিয়ে বললাম, ‘ কে ডাকছে আমায়?

সে ডোন্ট কেয়ার এটিটিউট নিয়ে বলল, ‘ কেন অভ্র ভাইয়া ‘

অভ্র নামটা শোনার পর দিলাম আরও এক ঘাত কাঁধের উপর বসাইয়া।
_______
তীক্ষ্ণ রৌদে বসে রয়েছি ছাঁদে, আজ তিন দিন পর রুম থেকে বের হইছি। লজ্জায় রুমেই লুকিয়ে ছিলাম, না জানি আবার কখন সামনে পরে যাবে, আবারও আইসক্রিম নিয়ে কথা বলবে তখন কি হবে ভেবেই রুম থেকে বের হইনি। কিন্তু আজ বের হয়ে বড়সড় শকট খেলাম। জানতে পারলাম দুইদিন আগেই অভ্র ভাইয়া তার বন্ধুদের সাথে চলে গেছে, শুনেই বুকের বা পাশে চিলিক পেরে উঠল, সে চলে গেছে শুনে আমার খুশি হওয়ার কথা অথচ আমার মুড অফ হয়ে গেলো। তখন থেকেই মনমরা হয়ে রৌদ্রে বসে রয়েছি। ভালোই লাগছে না কোনো কিছু মনে হচ্ছে কি জেনো মিসিং,, অভ্র ভাইয়ার ফেলে দেওয়া আইসক্রিম টা আমি আজও খাইনি, রেখে দিয়েছি ফ্রিজে রোজ তা দুইবার করে দেখে আবারও আগের ন্যায় ফ্রিজে রেখে দেই, জানি না কেনো দেখতে ভালো লাগে, হঠাৎ মাথার উপর একরাশ ছায়া উদয় হলো। মাথা উপর দিকে তুললাম দেখার জন্য এত কড়া রোদে ছায়া কোত্থেকে আসলো? মাথা উপরে তুলতেই দেখলাম একটা ছাতা, আর ছাতাটা নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। অভ্র ভাইয়া।
উনাকে দেখেই ফট করে উঠে দাঁড়িয়ে পরি। অস্ফুটস্বরে মুখ দিয়ে বের হয়ে আসে,

‘ আপনি কোণ্থেকা আইলেন? ‘

অভ্র ভাইয়া ভ্রু কুঞ্চিত করে বলল, ‘ মানে? ‘

আমি থতমত খেয়ে বললাম, ‘ না মানে হচ্ছে আপনি না চলে গিয়েছিলেন তাই আর কি? ‘

বলে মাথা নিচু করে ফেললাম। সে আমার দিকে তাকিয়ে গুরুগম্ভীর কন্ঠে বলল, ‘ এত রোদে ছাঁদে বসে আছিস কেন? ‘

আমি বললাম, ‘ ভালো লাগছিল ‘

‘ আমার মোটেও ভালো লাগেনি! ‘

‘ কিহহ? ‘

‘ কিছু না! এই নে! ‘

উনার কথা শুনে উনার মুখের উপর থেকে হাতের দিকে তাকালাম। এক হাত আমার দিকে বাড়িয়ে দিয়েছে অন্য হাত দিয়ে ছাতা ধরে রাখছে, ভাল করে তাকিয়ে দেখলাম। একটা কোণ আইসক্রিম আমি তাতে চোখ বুলিয়ে প্রশ্ন ছুঁড়লাম।

‘ আইসক্রিম কি আমার জন্য? ‘

সে কন্ঠ কঠোর করে বলল, ‘ না এখানে তো আরও কেউ আছে তারজন্য আনছি। ‘

উনার কথা শুনে চুপসে গেলাম আমি, চোখ দু’টো ছোটছোট করে তাকিয়ে রইলাম। সে আবারও চোখ দিয়ে ইশারা করল হাতের দিকে, যাতে আইসক্রিম টা আমি নেই। আমি না নিয়েই ইতস্ততভাবে উনার দিকে তাকিয়ে আছি। উনি হয়তো কিছু আন্দাজ করেছেন, নিঃশ্বাস ফেলে ধীর কন্ঠে বলল,

‘ তুই যদি ও-ই দিনের ঘটনার জন্য আপসেট হয়ে থাকিস তাহলে শোন, আমি ওইদিন ভুল করে তোর রুমে চলে গিয়েছিলাম আর দরজা টাও খোলা ছিল তাই সেরকম পাত্তা না দিয়ে ঢুকে পরে ছিলাম। আর বিশ্বাস কর আমি তোর দিকে তাকাইনি। কোনো কিছুই খেয়াল করিনি। আমার তেমন ইন্টারেস্ট ও নেই না ছিল। আমি সব মেয়েকেই সম্মান করি। কারো প্রতি কুদৃষ্টি আমার নেই, তাই ভুলের জন্য ক্ষমা চেয়েছি, আইসক্রিম টা তোর জন্য নিবি প্লিজ। ‘

এইভাবে বললে না নিয়ে থাকা যায়। মনে মনে প্রচুর হাসি পাচ্ছে তবুও হাসি কন্ট্রোল রাখার চেষ্টা করে হাত থেকে আইসক্রিম নিয়ে দিলাম দৌঁড়, রুমে এসে দরজা বন্ধ করে দিলাম। কিছুক্ষণ হাতে আইসক্রিম নিয়ে বসে রইলাম পরক্ষণেই টের পেলাম আস্তে আস্তে আইসক্রিম গলে যাচ্ছে। কি কপাল একদম ফাটা কপাল, গলা আইসক্রিম খেতে হলো।

বিকেলে ফ্রিজ খুলে দেখলাম আমার আইসক্রিম নাই গেলো কোই আমার আইসক্রিম কিছুক্ষণ চিল্লা চিল্লি করার পর, মুন্নী আপু আইসক্রিম খেতে খেতে এদিকেই আসল, আমি তার আইসক্রিমের দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে প্রশ্ন ছুঁড়লাম, ‘ এই আইসক্রিম কার কোথা থেকে নিছিস? ‘

মুন্নী আপু সাধারণ ভাবেই জবাব দিলো, ‘ কেন ফ্রিজ থেকে, অনেক দিন ধরেই দেখছিলাম। কেউ খাচ্ছিল না তাই আমিই খাচ্ছি। ‘

‘ হারামী কুত্তী রাক্ষসী ডাইনি ‘ বলে তেড়েমেড়ে ওর সামনে গিয়ে সোজা ওর গলা টিপে ধরলাম। সাহস হয় কি করে আমার অভ্র ভাইয়ার দেওয়া আইসক্রিম ওর খাওয়ার? ও আমার থেকে নিজেকে বাঁচানোর জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করছে, তখনই পুতুল আপু সেখানে চলে আসল। আমার হাত থেকে ওকে ছাড়িয়ে বলল, ‘ কি হয়েছে ওর গলা টিপে ধরছিস কেন? ‘

‘ আমার আইসক্রিম খাইছে কেন ও? ‘

‘ একটা আইসক্রিমের জন্য বোন মেরে ফেলছিলি? ‘

‘ ও খাবে কেন আইসক্রিম? ‘

‘ বোইন বিশ্বাস কর তোর আইসক্রিম জানলে আমি টাচ ও করতাম না। ‘

‘ এক তুই আর এক রিমা, একজনের আইসক্রিম আরেকজনের চকোলেট উফফ পারিস ও তোরা দু’জন ‘

বলে মুন্নী আপুকে নিয়ে চলে গেলো।

সন্ধ্যার পর,

বিছানার উপর আরাম করে বসে মোবাইল স্ক্রল করছিল! আমি রুমে প্রবেশ করে বললাম।

” একটা কথা ছিল ”

আমার দিকে না তাকিয়েই ফোন স্ক্রল করতে করতেই উত্তর দিলো অভ্র।

” যা বলবি তারাতাড়ি বলে বিদায় হো ”

হেব্বি মেজাজ গরম হলো অপমান করল নাকি Insult

দাঁত কিলবিলিয়ে বললাম।

” আমি তোমাকে নিয়ে একটা গল্প লিখবো নায়ক তুমি থাকবা ”

ফোনের স্কিন থেকে চোখ সরিয়ে ভ্রু কুঁচকে তাকালো দাঁতে দাঁত চেপে পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ল.!

” নায়িকা কে? ”

আমিও দাঁত কেলিয়ে হেঁসে লজ্জা মাখা মুখ করে মৃদুস্বরে প্রতিউত্তরে জানালাম!

“কেন আমি?”

সে কিছুক্ষণ আমার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল তার পর যা বলল ইচ্ছা করছিল চুলগুলো ধরে টেনে একটা একটা ছিঁড়ে ফেলি।

” তোর গল্পে আমার নাম দিলে আমার নামের অপমান করা হবে ভুলেও এ কাজ করবি না তারপরেও যদি করিস জরিমানা দিবি ১০হাজার টাকা এখন যা ফুট আমার রুম থেকে ”

কথাটা বলে আবারও ফোন স্ক্রল করতে ব্যস্ত হয়ে পরল। বেশ কিছুক্ষণ আঁড়চোখে উনার দিকে তাকিয়ে রইলাম। মনে মনে ভাবলাম।

উনার নামে তো আমার তিনটা গল্প আছে আর সেটা যদি উনি জানেন তাহলে কি আমাকে জরিমানা তিন গুন দিতে হবে…

Like seriously তিন দশে ত্রিশ হাজার
What the ফাউ কথা
_______
মুখ ভেংচি কেটে রুম থেকে বের হয়ে গেলাম। রাতে আমাকে বলা হলো অভ্র ভাইয়াকে ডেকে আনার জন্য, রাতে খাবার খাওয়ার জন্য ডাকতে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ দরজার সাথে ধাক্কা লেগে হাত থেকে ফোনটা ফ্লোরে পরে গেলো। ফোনটা তুলতে তুলতে বললাম।
নিজে পরে গেলো এত কষ্ট হয় না যতটা না তুই পরে গেলে হয়।

চেয়ারে পায়ের উপর পা তুলে ফোন স্ক্রোল করছিল অভ্র ভাইয়া। এতদূর থেকে আমার কথা শুনে আমার দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে ঠোঁট চিবিয়ে চিবিয়ে বলল!

তুই পরে গেলে তোর কষ্ট হয় না বর্ষা? চল আমার সাথে সিঁড়ি থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিবো এখন তোকে!

What the ফাউ কথা চোখ দু’টো থেকে চারটা হয়ে গেলো ডেবডেব করে তাকিয়ে রইলাম অভ্র ভাইয়ার দিকে সাথে সাথে একটা ঢোক গিলে উল্টো দিকে৷ না তাকিয়েই দিলাম দৌঁড় অন্ধের মতো দরজার সাথে বাড়ি খেয়ে ফ্লোরে পরে গেলাম।

আমাকে পরতে দেখে অভ্র ভাইয়া ফোনটা টেবিলের উপর রেখে চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়াল সাথে দুই হাত দিয়ে শার্টের কলার ঠিকঠাক করল তারপর আমার সামনে এসে দাঁড়াল। কোই মনে মনে ভাবছিলাম এই বুঝি কোমড়ে হাত রেখে ফিল্মি স্টাইলে টেনে তুলবে।
কিন্তু হলো উল্টো আমার দিকে একটু ঝুঁকে বসে আমাকে অবাক করে দিয়ে বলল!

অন্ধের মতো দৌঁড়ালে এমনই হয় জংলী। এখন বল এখানে কেন আসছিস?

আমি এক হাত দিয়ে আরেক হাত কচলাতে কচলাতে বললাম।

আম্মু ডাকছে গিলতে না মানে খেতে..!

আমার কথা শুনে অভ্র ভাইয়া ভ্রু কুঁচকে “বড় আম্মু ডাকছে” বলে উঠে দাঁড়িয়ে সিটি বাজাতে বাজাতে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো।

আমি বোকার মতো বসে অভ্র ভাইয়ার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইলাম।

What the শেষে কি না জংলী এত অপমান।

হাত দুটো উপরের দিকে তুলে মুখ দিয়ে চেঁচিয়ে বললাম, ‘ আল্লাহ ধৈর্য দান করেন আমাকে ‘

#চলবে?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here