#অবশেষে_পরিণয় পর্ব_১২
#জান্নাতুল_নাঈমা
তিনদিন পরই বিয়ে দুদিন পর গায়ে হলুদ।
বেশ ধূমধাম করেই বিয়ের আয়জন করা হচ্ছে।
খুশি স্কুল থেকে সাতদিনের ছুটি নিয়েছে। ছুটি নেওয়ার মতো রুচি তাঁর না হলেও বাবা,আর দাদির জোরাজুরিতে ছুটি নিয়েই নিলো। সারাদিন স্কুলে পোলাপানের হট্রগল সামলে বাড়ি এসে দাদির চেচামেচি তে বিরক্ত লাগছে খুশির। আসার পথে আরুশের সাথে দেখাও হয়েছিলো তাঁর বাইকের পিছন সিট টায় বসা ছিলো তৃষা। বোধ হয় কোথাও ঘুরতে যাচ্ছে দেখেও না দেখার ভান করে নিচের দিকে মাথা দিয়ে চলে এসেছে খুশি। নিজেকে কেমন পাগল পাগল লাগছে, মাথাটা যন্ত্রনা হচ্ছে বেশ। দরজা লাগিয়ে সবে বিছানায় মাথা হেলিয়েছে তখনি দাদির ডাক পড়লো। দরজা খুলে দিতেই দাদি খুশিতে গদগদ হয়ে গয়না,শাড়ি নিয়ে হাজির।
— দেখ দেখ কি সুন্দর শাড়ি,গয়না এইসব সাকিব পাঠিয়েছে পড়ে দেখ তো কেমন লাগছে।
খুশি মলিন হেসে বিছানায় গিয়ে বসলো। মাথাটা চেপে ধরে বললো-
— দাদি আমার মাথাটা ধরেছে সবে স্কুল থেকে ফিরলাম।জানোইতো বাচ্চা দের সামলাতে কতো কাঠখড় পোহাতে হয়। তারওপর আজকে একটানা ক্লাস নিয়েছি আমি বরং কাল দেখবোনি এসব।
দাদি গলা বের করে চিল্লিয়ে ওঠলো।
— মাথা তো ব্যাথা করবোই বিয়েতে তো মন নাই। মন তো অন্যজায়গায় পইড়া রইছে। তুই কি ভাবছোস তোর ভাবসাব আমি বুঝিনা। এমন উঠা উঠা ভাব করলেই কি তোরে ছাইড়া দিমু ঐ ফকিন্নির পুত এর জন্য।
খুশি বহুকষ্টে নিজের কান্নাটা চেপে মুখ খুললো।
— আমাকে ছেড়ে দিতে হবে না। ছেড়ে দিলেও আর লাভ নেই যার জন্য এতোসব কথা শোনাচ্ছো তাঁর বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে সে তাঁর হবু বউকে নিয়ে খুব ভালো আছে তাই অযথা এসব বলে মাথা খারাপ করো না দাদি প্লিজ একটু শান্তি দেও আমাকে।
আর ফকিন্নির পুত কাকে বলছো তাঁর যে যোগ্যতা আছে তা তোমার কোন পুএেরই নেই।
— কি বললি তুই কার সাথে কার তুলনা করস।
আমি তালুকদার এর গিন্নি আমার সন্তান রা তালুকদার বাড়ির সন্তান।
— হ্যাঁ বাপ, দাদার পরিচয়ে পরিচিত।নিজের কি পরিচয় টা আছে দাদি??আর যাকে নিয়ে এতো বকবক করো সারাদিন সে কিন্তু নিজের যোগ্যতা প্রমান করেছে। সে কিন্তু দিনে তোমার কথা ভুলেও একবারও স্মরণ করে না। তাঁর তোমার মতো, তোমাদের মতো ঠুনকো মানুষ দের নিয়ে ভাবার বিন্দু সময়ও নেই। অথচ সে তোমাদের কাছে এতটাই গুরুত্বপূর্ণ মানুষ এতোটাই মূল্য তাঁর তোমাদের কাছে যে প্রত্যেকটা মূহুর্তে তুমি তাঁর নাম করে তজবি পাঠ করতে থাকো।
রোকসানা তালুকদারের মুখে ঝামা ঘষে দিলো খুশি।
বেশ অপমানিত হয়ে ত্যাজি গলায় বললো –
— তাইলে তুই এগুলা দেখবি না।
খুশি মাথাটা চেপে ধরে বললো-
— বললাম তো পরে দেখবো এখন ভালো লাগছে না।
রোকসানা তালুকদার গটগট করতে করতে শপিং ব্যাগগুলো সাথে নিয়েই বেরিয়ে গেলো।
.
মিলন ছেলেদের সাথে মাঠে ক্রিকেট খেলছিলো।
এমন সময় আরুশ বাইক নিয়ে সেখানে দাঁড়ালো।
আরুশকে দেখে মিলন খেলায় বিরতি নিয়ে দৌঁড়ে এসে জরিয়ে ধরলো। আরুশ স্মিথ হাসলো মিলন আরুশ কে ছেড়ে দিয়ে বললো-
— ভাই তোমাকে দেখলে আমার মনটা একদম শান্তিতে ভরে যায়। মন শুধু বলে এইটাই তোর দুলাভাই খুব আপন আপন লাগে তোমারে।
আরুশ বাঁকা হেসে মিলনের কাঁধে এক হাত রেখে এক পা এক পা করে আগাতে থাকলো।
মিলনও আরুশের পায়ের সাথে পা মিলিয়ে এগুতে লাগলো।
— তোর আপু দুদিন ধরে স্কুল যায় না কেনো রে কাহিনী কি?? হবু বরের সাথে সময় কাটাচ্ছে নাকি??
মিলন অভিমানী সুরে বললো –
— আপুকে তো বাড়ি থেকে কেউ বের হতে দেয় না।
আপু ছুটি নিয়েছে স্কুল থেকে কাল গায়ে হলুদ তারপরের দিন বিয়ে। আর সাকিব ভাইয়ার সাথে তো আপু ফোনেও কথা বলে না আবার সময়।
হাসলো মিলন আরুশের হাসি মুখটা খানিকটা মিলিয়ে গেলো। মিলন আড় চোখে চেয়ে সেই মলিন মুখটা দেখে বললো-
— আরুশ ভাইয়া তুমি আপু কে নিয়ে পালিয়ে যাও।
আমি সাহায্য করবো তোমাকে।
আরুশ হু হা করে হেসে ওঠলো।
“হাসি জিনিস টা সব সময় আনন্দের বহিঃপ্রকাশ ঘটায় না। কখনো কখনো দুঃখ লুকাতেও মিথ্যা আনন্দের বহিঃপ্রকাশ ঘটায়”
“হাসি দুই প্রকারের হয় এক- কিছু হাসি মানুষের মনের আনন্দের বহিঃপ্রকাশ। দুই- কিছু হাসি দুঃখ কষ্ট লুকায়িত করার হাতিয়ার।
আরুশের ক্ষেএে দ্বিতীয়টাই প্রযোজ্য।
.
আরুশের হাসির দিকে মিলন বোকার মতো চেয়ে রইলো। আরুশ হাসতে হাসতে দাঁড়িয়ে পড়েছে মিলনের মাথায় টোকা দিয়ে বললো-
— আরে পাগলা পালানোর বয়স কি এখন আর আছে রে সেই বয়স যে কবেই পার করে আসছি।
এখন আর পালানোর বয়স নাই এখন মেয়ে ওঠিয়ে নিয়ে বিয়ে করার বয়স।
মিলন উৎসুক নয়নে চেয়ে বললো-
— তাঁর মানে তুমি আপুকে ওঠিয়ে নিয়ে বিয়ে করবে??কবে, কখন,কিভাবে??
আরুশ আরেক দফা হো হো করে হেসে ওঠলো।
কোমড়ে দুহাত চেপে হাসতে হাসতে হাঁপিয়ে ওঠে বললো-
— আইনি লোক হয়ে বেআইনী কাজ করবো ভাবলি কি করে খোকা।
মিলন কপাল কুঁচকে বললো –
— আবারো তুমি আমাকে খোকা বললা??
আরুশ আবারো হাসতে লাগলো হাসতে হাসতে তাঁর চোখে পানি এসে গেছে এক আঙুলে টোকা মেরে পানি ছিঁটকে ফেলে মিলনের দিকে সিরিয়াস হয়ে তাকালো।
— খোকা কে খোকাই তো বলবো। কি যেনো বলছিলি তোর বোনকে নিয়ে পালাবো তাইনা। মাফ চাই খোকা একবার পালিয়ে যথেষ্ট শিক্ষা হইছে আর না।
আমি বরং আমার তৃষাকে নিয়েই বাকি জীবন কাটাই আর যাই হোক ঠকতে হবে না।
আর হ্যাঁ মেয়ে রাজি থাকলে ওসব সেট করা ব্যাপার না কিন্তু তোর বোন জিনিসটা সুবিধার না বুঝলি। কখন কিভাবে পালটি খাবে কেউ জানেনা সয়ং উপরওয়ালাও বোধ হয় জানে না।
বলেই আবারো কাঁধে হাত রেখে আগাতে লাগলো।
মিলন চুপচাপ হেঁটে যাচ্ছে তাঁর খুব বলতে ইচ্ছে করছে আরুশ ভাইয়া আপু নিজে থেকে তোমার থেকে সরে যায় নি। আপুকে বাধ্য করা হয়েছে।
কিন্তু সে বলতে পারলো না কারন তাঁর মা যে পাঁচবছর আগেই তাকে কসম দিয়েছে যে ঐ দিনের ঘটনা গুলো কেউ যেনো না জানতে পারে।
.
মিলনের হাতে শপিং ব্যাগ দিয়ে আরুশ বললো –
— এটা খুশি কে দিয়ে দিবি বলবি ওর বিয়ে উপলক্ষে আমার তরফ থেকে এই ছোট্ট গিফ্ট।
মিলন অবাক হয়ে গিফ্ট টা হাতে নিলো।
আরুশ মিলনের মাথায় হাত রেখে স্মিথ হেসে বললো-
— যা বাড়ি যা সন্ধ্যা হয়ে এলো। বোনের বিয়ে ইনজয় কর।
মিলন আরুশকে শক্ত করে জরিয়ে ধরে কান্না করে দিয়ে বললো-
— তুমি খুব ভালো আরুশ ভাইয়া তুমি খুব ভালো।
তোমার মতো একটা দুলাভাই কেনো আমার কপালে জুটলো না।
আরুশ ভ্রু কুঁচকে বললো –
— কেনো সাকিব কি খারাপ নাকি বড় লোকের ছেলে। তাঁরওপর তোদেরই বংশের ছেলে ভাই তোর।
আমার থেকে অবশ্যই ভালো হবে দামি দামি গিফ্ট পাবি দুলাভাইয়ের থেকে,,, বড় বড় জায়গায় ঘুরে বেড়াবি।
মিলন মন খারাপ করে বললো-
— আমার ভাই বলেই হয়তো আমি খুব ভালো চিনি।
আমি ছোট হতে পারি কিন্তু এখন আমি বেশ বুঝি ভাইয়া। সাকিব ভাইয়া কে সুবিধার মনে হয় না নজরটা খুব খারাপ।
আরুশ জানে সাকিব কি টাইপ তবুও বললো-
— কেনো কি দেখলি খারাপের??
— আমার আপুর সাথে জোরজবরদস্তি করে অনেক।
একদিন লুকিয়ে লুকিয়ে আপুকে দেখছিলো। আপু রুমে ছিলো বাকিটা বলতে পারবো না তবে নজর খারাপ। তাছাড়া সাকিব ভাইয়ার গার্লফ্রেন্ডের বিষয়ে কিছু কিছু জানতাম।
আরুশ দুহাত মুঠ করে কথাগুলো শুনছিলো।
বিষপানের মতো কথাগুলো হজম করে বিদায় জানালো মিলন কে।
.
ভোরের দিকে কাউকে কিছু না বলে আরুশের পাঠানো শাড়িটা পড়ে বেরিয়ে পড়লো খুশি।
উদ্দেশ্য সরকার বাড়ি যাওয়ার কতো বছর পর আজ ও বাড়ি পা রাখবে উত্তেজনায় হাত পা কাপছে খুশির। কতোবছর পর মামনিকে দেখবে আরাফ ভাইয়া ভাবি তাদের ছেলে-মেয়েদের দেখবে খুশিতে কাঁদতে কাঁদতে গাড়ি স্টার্ট দিলো খুশি। নিজেই ড্রাইভ করে যাচ্ছে মিলন আসতে চাইলেও নিষেধ করেছে।
আরুশ ও বাড়ি থাকে না সে নিজের ফ্ল্যাটে থাকে তাই নিশ্চিন্ত মনে যাচ্ছে। একটা বার তাঁর মামনিকে জরিয়ে ধরতে চায় সে। একটা বার আরুশের দাদিকে জরিয়ে ধরতে চায়। যে বাড়িটায় হাজারো স্মৃতি ভরপুর সে বাড়িটায় শেষ একবার পা রাখতে চায় সে। সবশেষে মামনিকে একটাবার সরি বলতে চায়।
তাঁর মামনি কি তাঁর সরি একসেপ্ট করবে??
.
সকাল দশটা বেজে পয়ত্রিশ মিনিট। আরুশ থানার সামনে সবে দাঁড়িয়েছে তখনি মিলন দৌঁড়ে এলো।
হাঁপাতে হাঁপাতে দুহাটুতে হাত ভর করে বললো-
— আরুশ ভাইয়া কখন থেকে গাড়ির পিছন ছুঁটছি কানে শুনো না নাকি।
আরুশ ভ্রু কুঁচকে বললো –
— তা শুনবো কি করে গাড়ি তে কি বোঝা যায়। তুই এভাবে দৌড়ে এলি কেনো বড় লোকের ব্যাটা গাড়ি নিয়ে আসতে পারিস না।
মিলন ধীর গলায় বললো গাড়ি নিয়ে এলে সবাই জেনে যাবে আমি চুপি চুপি বেরিয়েছি। আজ আপুর বিয়ে।
আরুশের বুকটা মোচড় দিয়ে ওঠলো। পা সহ মাথাটা ঝিম ধরে গেলো কেমন। এক ঢোক গিলে নিয়ে বললো-
— তুই এসময় এখানে কেনো খুশি কোথায়??
— আপুকে পার্লারের লোকরা সাজাচ্ছে।
আরুশ কিছুটা স্বস্তি নিয়ে বললো-
— তো যা বাড়ি যা এখানে এসেছিস কেনো। আমার অফিস আছে গেলাম আমি।
মিলন আরুশের হাত টেনে ধরলো নিজের ডানহাতে থাকা চার ভাঁজ করা চিঠিটা আরুশের হাতো গুঁজে দিয়ে বললো-
— আপু বলেছে তাঁর শেষ কাজটা করে দিতে তাই করে দিলাম।
মিলন হাসলেও আরুশ হাসলো না। খুশির এই শেষ কাজ কথাটা যেনো তাঁর হৃদপিণ্ডে কম্পন সৃষ্টি করে দিলো।
এই কথার অর্থ টা ঠিক কি??মিলন স্বাভাবিক নিলেও আরুশ নিলো না তাঁর পুরো শরীর ঘেমে একাকার হয়ে গেলো। চিঠিটা মুঠ করে ধরে চলে গেলো ফাঁকা এক জায়গায়। মিলনও বাড়ি ফিরে গেলো।
.
আরুশ চোখ বন্ধ করে ভেবে যাচ্ছে পাঁচ বছর আগের ঘটনা। পাঁচ বছর আগে খুশি এরকমই একটা কাগজে কয়েক লাইন লেখা লিখে তাঁর থেকে পালিয়ে গিয়েছিলো। আজ পাঁচ বছর পর আবারো সেই একি ঘটনা ঘটতে চলেছে। আবারো সাদা কাগজে বিষাক্ত কালির দাগে লিখিত বানী শুনিয়ে সারাজীবনের জন্য অন্যকারো হয়ে যাবে খুশি।
এভাবে ঘটা করে সেই কথা না জানালেই কি নয়??
.
মনের সাথে যুদ্ধ করে কাঁপা হাতে সাদা কাগজের ভাঁজ খুলতেই কালো কালির লেখা গুলো স্পষ্ট হয়ে ওঠলো চোখে। সেই সাথে বেড়ে গেলো তাঁর হৃদস্পন্দন।
.
সাজ শেষে নিজের রুমে বসানো হলো খুশিকে।
নিজের পার্স থেকে কিছু একটা বের করে সকলের মাঝ থেকে সরে বাথরুম ঢুকে পড়লো খুশি।
.
বর এসে পড়ায় সকলে ডাকাডাকি শুরু করলো।
খুশিও তারাতারি বেরিয়ে তাঁর মা কে খুঁজতে লাগলো। তখনি তাঁর দাদি খ্যাকিয়ে ওঠে বললো-
— মা মা করস কে চুপ কইরা বয় কাজি আইতাছে।
খুশি করুন চোখে দাদির দিকে চেয়ে বললো-
— ও দাদি একটু সময় মা কে দিবে আমায়।
জাষ্ট দুটো মিনিট একটু মা বলে ডাকবো একটু মায়ের বুকে মাথাটা রাখবো।
দাদি দাঁতে দাঁত চেপে বললো –
–বিয়ে শেষ হোক তারপর ম্যা ম্যা,করবি এখন চুপ কইরা বয়। বলেই একটানে বিছানায় বসালো।
সকলে ঘিরে ধরলো খুশি কে।
.
খুশি বার বার দরজায় ওকি দিতে লাগলো।
মায়ের জন্য অধীর অপেক্ষায় বসে রইলো সে।
এমনো হতভাগী হয়??নিজের মা কে একটু মা বলে ডাকার জন্য নিজের মা কে একটু কাছে পাওয়ার জন্য নিজের দাদির কাছে এমন অনুনয়-বিনয় করতে হয়??
এমন কঠোর হৃদয় কি করে হতে পারে কিছু মানুষের??
.
সকলে মিলে ঘিরে আছে খুশিকে। সামনের মানুষ গুলো এক গলায় বলছে -খুশি কবুল বল, খুশি কবুল বল??
সকলেই তাঁদের কান খাড়া করে খুশির দিকে চোখ স্থির রেখে মুখ দিয়ে বলে যাচ্ছে – “বল মা আলহামদুলিল্লাহ কবুল ”
.
চিঠি.
“পৃথিবীতে ভালোবাসার অনুভূতি অনেকেই ব্যাক্ত করে গেছে। কিন্তু সেই অনুভূতি গুলো কে কি সবাই অনুভব করেছে”??
একটা বিষয় আমরা যেভাবে ব্যাক্ত করি সেভাবে কখনোই সবাই ফিল করতে পারিনা।
চলবে………