অবশেষে_পরিণয় পর্ব_১৪

0
6868

অবশেষে_পরিণয় পর্ব_১৪
#জান্নাতুল_নাঈমা

এতো মানুষের ভীড়ে হঠাৎই খুশি নিজের গলা চেপে ধরে নিজের শরীরটা ছেড়ে দিলো। মুখে ফোনা তুলতে তুলতে দাঁত, মুখ খিঁচে বললো-“দাদি আমাকে তোমরা শান্তিতে বাঁচতে দাওনি। শান্তিতে মরতে দাও। শুধু আমার মা কে এখানে নিয়ে এসো আর ভুলেও কেউ আমায় হসপিটালে নেওয়ার চিন্তাও করো না”

সকলেই চিল্লাচিল্লি শুরু করে দিলো খুশির অবস্থা দেখে কারো আর বুঝতে বাকি রইলো না খুশি ঠিক কি করেছে। ভিতরের কথা বাহিরে পৌঁছাতে খুব একটা সময় নিলো না। মিলন চিৎকার করতে করতে রুমে ঢুকলো দাদির চিল্লাচিল্লি দেখে একটানে দাদিকে ছিটকে ফেললো। দাদি পড়ে গিয়ে কোমড় ধরে ও বাবা গো বলেই কুঁকড়িয়ে ওঠলো। মিলন গিয়ে খুশিকে জাবটে ধরে বললো-

— এই আপু তুই কি করেছিস। আপু তুই এটা কেনো করলি। আপু তোর কিছু হবে না আমি তোকে হসপিটাল নিয়ে যাবো।

খুশি ভাইয়ের দিকে চেয়ে মৃদু হেসে গলা চিপে বললো-

— সোনা মা কে একটু ডাক না। কাঁদিস না ভাই আমার শুধু মা কে ডেকে আন।

খুশির পুরো শরীর কাঁপছে কপালের রগ গুলো ভেসে ওঠতে শুরু করেছে শরীরটা নেতিয়ে মুখ দিয়ে ফোনা বের হতে শুরু করেছে।
সাকিব বরের আসন থেকে ছুটে এলো। মাথার মুকুট ছুঁড়ে ফেলে মোশতাক তালুকদার কে বললেন-

— মামা গাড়ি রেডি করো হসপিটাল নিতে হবে খুশিকে।

রুমের দরজা অবদি পা রাখতেই খাদিজা বেগম চিৎকার করে রুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিলেন।
বাইরে থেকে সকলে এতো হাকডাগ করছে তবুও সে দরজা খুললো না। দৌড়ে গিয়ে বিছানায় নেতিয়ে পড়া খুশিকে জরিয়ে হাউমাউ করে কেঁদে ওঠলেন।
রোকসানা তালুকদার দরজা খুলতে যেতেই খাদিজা বললো-

— মিলন আমার মেয়ের হত্যাকারীকে আটকা আর কোন খুনি যেনো এ ঘরে প্রবেশ করতে না পারে।
রুমে যে কয়েকজন মানুষ ছিলো সকলেই স্তব্ধ। রোকসানা তালুকদারের মুখ চেপে ধরে আছে মিলন।

খাদিজা বেগম খুশি বলেই হাউমাউ করে কেঁদে ওঠলেন। আজ যেনো এক মা,মেয়ের লড়াই চলছে।

— তুই এতো বড় কাজটা কেনো করলি খুশি।
মা রে আমি এ বাড়ি থেকে চলে যাবো বিশ্বাস কর। তোকে নিয়ে অনেক দূরে চলে যাবো। ঐ মোশতাক তালুকদার কে আমি এই মূহুর্তে তালাক দিলাম।
এ বাড়ির সঙ্গে আর কোন সম্পর্ক নেই আমাদের।
তুই আমি মিলে বাকি জীবন খুব অনায়াসে পার করে দিবো। আমি শুধু আমার সন্তান কে চাই মা আর কিছু না। অনেক সহ্য করেছিস আর না তোকে বাঁচতে হবে। আমার জন্য বাঁচতে হবে তোকে।
যে সম্পর্ক বাঁচাতে গিয়ে একজন মা কে সন্তান হারা হতে হয় সেই সম্পর্ক আর না আগামোই মঙ্গল বলেই নিজের বা হাতের দু আঙুল খুশির মুখে ঢুকিয়ে গলা অবদি পৌঁছালো। সাথে সাথে খুশির পেট চেপে ভিতরের সব উগ্রে দিলো। বমি হতে হতে সব বেরিয়ে গেলো অবশেষে লালা পড়তে শুরু হলো।
পুরো শরীর, চোখ মুখ লাল হয়ে গেলো খুশির খাদিজা বেগম রুমে থাকা একজন মেয়ে কে পানি আনতে বললেন পানি নিয়ে আসতেই খুশির চোখ মুখে ছিটিয়ে দিলেন।
.
বিষ খাওয়ার পর কোন মানুষের যদি জ্ঞান থাকে তবে বমি করানোর চেষ্টা করা উচিত। রোগীর গলায় আঙ্গুল ঢুকিয়ে বমি করাতে হবে। এক্ষেত্রে রোগী নিজে আঙ্গুল প্রবেশ করাতে পারে। আর রোগী অক্ষম হলে চিকিৎসা-দাতা চেষ্টা করবে। অথবা যে পদ্ধতিতে সে বমি করবে সে পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে। এমব পরিস্থিতিতে হসপিটাল নিয়ে যেতে যেতে খুব বেশী দেরী হয়ে যেতে পারে মায়ের মন তাই খাদিজা বেগম কোন রিক্স না নিয়ে প্রচন্ড সাহসীকতা নিয়ে নিজেই নিজের মেয়ের প্রাথমিক চিকিৎসা করলেন।
.
চিঠি পড়ার পর আরুশ এক সেকেন্ডও দেরী করেনি।
গাড়ি নিয়েই বেরিয়ে পড়েছে খুশির বাড়ির উদ্দেশ্যে।
চোখ বেয়ে অঝড়ে পানি পড়ছে। সে তো খুব ভালো করেই জানতো খুশিকে বাঁধ্য করা হয়েছে কিন্তু নিজের বাবা, দাদি মিলে এমন নির্মম ভাবে অত্যাচার করেছে যা তাঁর ধারনার বাইরে ছিলো।
ভিতরের সব সত্যি টা যখন কোনভাবেই জানতে পারছিলো না ঠিক তখনি খুশির শেষ দূর্বলতা হিসেবে বেছে নিয়েছিলো তৃষা কে। কিন্তু সেই প্রভাব যে বিপরীত দিকে আঘাত হানবে বুঝতে পারেনি আরুশ। পাগলের মতো ড্রাইভ করে খুশির বাড়ির সামনে এসে গাড়ি থেকে ছুটে বেরিয়ে গেলো।
পুরো বাড়ি থমথমে পরিবেশ দেখে আরুশের ভিতর বয়ে চলা ঝড় যেনো দ্বিগুণ বেড়ে গেলো।
আশেপাশের মানুষ কানাঘোষা করছে তাঁকে দেখে সেই কানাঘোষা যেনো দ্বিগুণ বেড়ে গেলো।
আরুশ কোন দিকে তোয়াক্কা না করে সোজা ড্রয়িং রুমে চলে গেলো। চিৎকার করে ডাক দিলো খুশি,,,

সাকিব সহ খুশির বাবা,কাকারা নিচে নেমে এলো।
সাকিব এসেই আরুশের নাক বরাবর এক ঘুষি দিয়ে বললো-

— এই শালা,,,এই শালার জন্যই খুশি বিষ খেয়েছে তোকে তে আজ মেরেই ফেলবো।
খুশি বিষ খেয়েছে শুনতেই আরুশের পুরো শরীরে যেনো আগুন ধরে গেলো। চোখ দুটো রক্ত বর্ন ধারন করলো তাঁর । বুকের ভিতর কম্পন সৃষ্টি হয়ে গেলো।
সাকিব তাঁকে আবারো আঘাত করতে আসতেই সাকিবের নাক বরাবর এক ঘুষি দিয়ে মোশতাক তালুকদারের গলা চেপে ধরলো।
এতোদ্রুত ঘটনা ঘটলো যে সবাই বাক রুদ্ধ।
সকলে এসে আরুশকে পিছন দিকে টানাটানি শুরু করলো। মোশতাক তালুকদার হুংকার ছাড়লো।
আরুশের শক্তির সাথে কেউ পেরে ওঠলো না।
হিংস্র চোখে মুখে বললো-

— এই তালুকদার সাহেব আজকে যদি খুশির কিছু হয় তোকে সহ তোর পুরো পরিবার কে কোমড়ে দড়ি বেঁধে লোকাবে ঢুকাবো।
.
সকলের মনে পড়ে গেলো তাঁরা এখন শুধু আরুশ সরকারের গায়ে স্পর্শ করেনি। তাঁরা এখন একজন আইনের লোক বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ সদস্য সাব ইন্সপেক্টর আরুশ সরকারের গায়ে স্পর্শ করেছে। মূহুর্তেই সকলের হাত নরম হয়ে এলো।
মোশতাক তালুকদার নিচু স্বরে বললো-

— আমার বাড়ি থেকে বেরিয়ে যা।

আরুশ কলার ছেড়ে দাঁতে দাঁত চেপে বললো –

— যাবোতো বটেই তাঁর আগে অনেক হিসেব নিকেশ বাকি।

খুশির চাচাতো ভাইয়ের কলার চেপে চিৎকার করে বললো-

— খুশি কোথায়??

ছেলেটা ভয়ে ভয়ে বললো-

— উপরে।

আরুশ আর এক মূহুর্তও দেরী করলো না ছুটে চলে গেলো উপরে। খুশির রুমের দরজার সামনে অনেক মানুষের ভীড় যা দেখে আরুশ চোয়াল শক্ত করে এগিয়ে গিয়ে দরজায় কয়েকটা লাথি দিতেই দরজা খুলে গেলো।

খুশিকে খাদিজা বেগম জরিয়ে কেঁদে চলেছে খুশির নিভু নিভু চোখ দেখেই আরুশ ছুটে গিয়ে খুশিকে ছিনিয়ে বুকে পুড়ে নিয়ে এক চিৎকার দিয়ে ওঠলো।

— তুই শুধু আমার। আমার থেকে আজকের পর কেউ তোকে ছিনিয়ে নিতে পারবে না। আমি আমার শেষ চেষ্টা করে সফল হয়েছি খুশি। আমি জানতাম আমার পাশে অন্য মেয়ে দেখলে তুই কোনভাবেই ঠিক থাকতে পারবি না।

খাদিজা বেগম আরুশকে ডুঁকড়ে কেঁদে ওঠলো। ভাঙা আওয়াজে বললো-

— আমার মেয়েটা যে আমার কোল খালি করে দিয়ে চলে যাচ্ছিলো বাবা। আমার মেয়েটা সবাইকে মুক্তি দিয়ে চলে যাচ্ছিলো। দেখো না দেখো কেমন নেতিয়ে রয়েছে।

মিলনও কান্না করে দিয়ে বললো-

— আরুশ ভাইয়া দেখো আপু কি করেছে। আপু বিষ খেয়েছিলো।

আরুশের আত্মাটা কেঁপে ওঠলো খুব শক্ত করে খুশিকে জরিয়ে নিলো বুকের মাঝে।

সকলের চোখের বয়ে চলেছে অশ্রুধারা।
এমন সময় রোকসানা তালুকদার নাক,মুখ কুচকে বললেন-

— এই তোর সাহস তো কম না আবার এসেছিস আমার বাড়ি বেরিয়ে যা।

আরুশ পাগলের মতো চোখ, মুখ ঘুরিয়ে রোকসানা তালুকদার কে দেখে খুশিকে খাদিজা বেগমের কোলে শুইয়িয়ে মিলনকে বললো-

— মিলন ডক্টর কে ফোন কর খুশির চিকিৎসা প্রয়োজন।

বিছানা থেকে এক লাফে রোকসানা তালুকদারের সামনে গিয়ে পিছন দিকে দুহাত মুচড়িয়ে ধরলো।

— মিলন খুশির দুটা ওড়না দে এই মহিলার হাত পা বেঁধে আজ থানায় নিয়ে যাবো।
খুশির দিকে আড় চোখে চেয়ে এক ঢোক গিললো আরুশ।

রোকসানা তালুকদার চিল্লাচিল্লি শুরু করে দিলো।
যে কয়েকজন রুমে ছিলো তাঁরা ভয়ে রুম ছেড়ে দিলো এক দৌড়।রোকসানা তালুকদারও যেতে নিলো চোঁচামেচি করতে করতে তখনি মিলন ওড়না আনতেই আরুশ প্রথম হাত পড়ে মুখ বেঁধে ধাক্কা দিয়ে মেঝেতে ফেলে দিলো।
.
ডক্টের পিছন পিছন মোশতাক তালুকদার, তাঁর ভাই বোন সকলেই রুমে আসলেন।
রোকসানা তালুকদার কে ঐ অবস্থায় দেখে মোশতাক তালুকদার দ্রুত গিয়ে তাঁর সব বাঁধন খুললেন রোকসানা ছাড় পেয়ে চেঁচামেচি করতে নিতেই আরুশ আঙুল ওঠিয়ে বললো –

— কোন আওয়াজ নয়।
রোকসানা তালুকদার কান্না করে দিয়ে মোশতাকের বুকে মাথা রাখলেন। সকলেই প্রচন্ড রাগ নিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে দাঁড়িয়ে রইলো। এছাড়া কিছু করার নেই খুশি যা করেছে এরপর তাঁদের জেলের ভাত খাওয়া ছাড়া আর উপায় নেই সেই ভয়েই চুপচাপ দাঁড়ালো সকলে।
.
আরুশ খুশিকে নিজের বুকে জরিয়ে নিয়ে আছে।
খুশির চোখ দুটো বন্ধ বন্ধ চোখের পাতা বেয়ে অঝড়ে পানি পড়ছে।বিষপান করলে শ্বাস নিতে প্রচন্ড কষ্ট হয় খুশিরও হচ্ছে তবে সব বমি হয়ে বেরিয়ে যাওয়াতে তেমন প্রভাব ফেলছেনা তবুও শরীটটা ভীষণ দূর্বল হয়ে পড়েছে। আরুশের বুকে আছে ভেবেই মানসিক ট্রমাটা অনেকটাই কমে গেছে।
ডক্টর আসতেই মিলন বিছানার কাছে চেয়ার টেনে দিলেন। আরুশ কে দেখে ডক্টর সালাম করলেন আরুশের পরিচয় তাঁর খুব ভালো করেই জানা। যেহেতু পরিচিত সেহেতু তাঁকে আলাদা করে কিছু বলার প্রয়োজন হলো না আরুশের কোলে শোয়া অবস্থায়ই চেক আপ করলেন।
ডক্টর বললেন -সাধারণত এমন অবস্থায় রোগীকে নিয়ে যা করনীয় তা কেউই বুঝে ওঠতে পারে না। কিন্তু আপনারা ভীষণ সাহসীকতার সাথে কাজটা করেছেন রোগীর দেহে বিষের প্রভাব পড়ছে না।
বমি করানোর ফলে সব উগ্রে ফেলে দিয়েছে যার কারনে রোগী বেঁচেও গেছে। শারীরিক ভাবে বেশ দূর্বল আছে আমি একটা ইনজেকশন আর কিছু মেডিসিন লিখে দিচ্ছি। ইনহেলা সাথেই রাখুন যেহেতু শ্বাসকষ্টের সমস্যা আছে কৃএিম শ্বাস টা এ সময় বেশ গুরুত্বপূর্ণ। রোগীকে কোন প্রকার মানসিক চাপ দেওয়া যাবে না এ মূহুর্তে।
কিছু ওষুধ লিখে একটা ইনজেকশন পুশ করে বেরিয়ে গেলেন সাথে গেলো মিলন।
.
এবার সকলে মিলে শুরু করে দিলো ঝামেলা।
আরুশের ওপর চিৎকার, চেঁচামেচি করতেই আরুশ দাঁতে দাঁত চেপে কিছু বলতে যাবে তখনি খুশি নড়ে,চড়ে ওঠলো। আরুশকে হালকা ভাবে হাতে জরিয়ে নিয়ে জোরে জোরে শ্বাস নিলো।
খাদিজা বেগম ইনহেলা নিয়ে খুশির মুখের সামনে ধরে শ্বাস দিতেই খুশি সরিয়ে দিয়ে বললো –

— আমার এটার প্রয়োজন নেই মা আমার আরুশ আছে আমার পাশে। আমি ঠিক আছি সরাও এটা বলেই সরিয়ে দিলো।

আরুশের চোখ বেয়ে পানি গড়িয়ে পড়লো।

রোকসানা তালুকদার বললেন –

— হায় হায় গো কি সর্বনাশ টাই ঘটলো পাড়া-পড়শীর কাছে মুখ দেখানোর আর জো থাকলো না।

তখনি সাকিব রুমে এলো আরুশ খুশি কে ওভাবে দেখে নাক,মুখ কুঁচকে বললো-

— মামা এসব কি আপনারা কিছু বলবেন নাকি আমিই ব্যবস্থা নিবো। ওর জন্যই খুশি আত্মহত্যা করতে গেছে ঐ বাধ্য করেছে। কই এতোদিন তো খুশি এসব করেনি। যবে থেকে ও ঢাকা আসছে তবে থেকেই খুশি বদলাতে শুরু করেছে।

খুশির চাচা সাকিবকে থামানোর চেষ্টা করলো।
আরুশ ধমকে ওঠলো।

— আপনারা সবাই চুপ থাকবেন নাকি আমি ওকে নিয়ে বেরিয়ে যাবো। মানবতা বলতে কিছু নেই এমন সিচুয়েশনে এমন আচরণ করতে বিবেকে বাঁধছে না।

খাদিজা বেগম নিঃশব্দে কেঁদে যাচ্ছেন।
খুশির কেমন ঘুম পাচ্ছিলো এদের অবস্থা দেখে সে এই অবস্থায়ই তাচ্ছিল্যের হাসি হেসে বললো-

— আরুশ,, আত্মহত্যা জিনিসটা শুনতে যতোটা ভয়াবহ মনে হয় পরিবার,আশেপাশের মানুষ,সমাজের মানুষের কাছে আসলে বিষয়টা ততোটাও ভয়াবহ নয় তাঁদের কাছে। অথচ তাঁরা এমন একটা মুখোশ পড়ে থাকে যে মুখোশটা সবার কাছেই উপস্থাপন করে দেয় যে কেউ আত্মহত্যা করেছে মানে এর জন্য তাঁরা খুব মর্মাহত হয়েছে,খুবই ব্যাথিত হয়েছে সর্বোপরি যে আত্মহত্যা করেছে বা করতে গিয়েছে তাঁর জন্য সে প্রচন্ড দুঃখ পাচ্ছে।
অথচ যে মানুষ টা আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় সে কি শখ করে বেছে নেয়??বা আনন্দের সাথে নিজের জীবন শেষ করতে যায়?? কখনোই না।
আমাদের পরিবার,সমাজের মানুষ রাই একজন মানুষ কে আত্মহত্যা করতে বাঁধ্য করে।
একটি মেয়ে বা একটি ছেলে প্রচন্ড নিরুপায় হয়েই আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। বাঁচার উপায় থাকলে কে না বাঁচতে চায়??
আমি একসময় ভাবতাম মানুষ সুইসাইড কেনো করে? সুইসাইড তো কোন সলিউশন নয়।
কিন্তু আজ বুঝতে পারছি মানুষ তো সুইসাইড করে না মানুষ কে সুইসাইড করতে বাঁধ্য করা হয়।
প্রতিদিন একটু একটু করে হত্যা করা হয়।
চারদিক থেকে নিসঃঙ্গ করে দিয়ে সুইসাইডের মতো কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে বাঁধ্য করা হয়।
.
“যে মানুষের জীবনে ভুল নেই সে মানুষের জীবন কখনোই সঠিকভাবে গড়ে ওঠতে পারে না”
ভুলের মধ্যেই মানুষ শিক্ষা গ্রহন করে সঠিক পথ বেছে নেয়। তাই বলে সেই ভুল শুধু ছেলে,মেয়েরা করবে কম বয়সি যুবক,যবতীরা,বা স্কুল পড়ুয়া ছেলে মেয়ে রাই করে না। সব থেকে বড় ভুল করে এই পরিবার এবং সমাজের লোকজনরা।
অল্প বয়সে আমি আরুশের হাত ধরে বেরিয়ে গিয়ে সকলের চোখে ভুল করেছিলাম। আমি নিজেও এটা মানি কিন্তু আমার সেই ভুলকে শোধরানোর নাম করে আমার প্রতি যে টর্চার গুলো করা হয়েছে সেগুলো কি ভুল নয়??যে সিদ্ধান্ত আমি আজ নিয়েছি এই সিদ্ধান্ত আরো পাঁচ বছর আগে নেওয়া উচিত ছিলো এতে অন্তত আমি শারীরিক আঘাত থেকে রক্ষা পেতাম। ২১বছর বয়সী একটি মেয়েকে জোর করে, ইমোশনালি ব্ল্যাকমেইল করে, বিয়ের পীড়িতে বসানো কি ভুল নয়?? আমি যে ছেলেকে আজো মনের ভিতর যত্ন করে রেখেছি সেই ছেলের থেকে তোমাদের পছন্দ করা ছেলেটা কোনদিক দিয়ে ব্যাটার শুধু বড় বাড়ি আর বিজনেস আছে এটাই।
আরুশের কমতি টা ঠিক কোথায় আছে নিজের যোগ্যতায় ভালো জব করছে। কোন অংশে কম সাকিবের থেকে বরং মানুষ হিসেবে ওর থেকে হাজারগুন বেশী ভালো। সব থেকে বড় কথা আরুশ সাকিবের মতো চরিএহীন নয়।
বিয়ে দিলেই তোমরা মুক্ত আর কোন দায় নেই।
আশে পাশে কয়টা মেয়ের জীবন সম্পর্কে জানো তোমরা??স্বার্থপরের মতো নিজেদের নিয়েই ব্যাস্ত থাকো যতোটুকু জানো ততোটুকুতে সমালোচনা করে করে তাঁদের জীবন ধ্বংসের মুখে ঠেলে দাও।

চলবে…
রিভাইজ করিনি ভুলত্রুটি ক্ষমা করবেন। ভুলগুলো ধরিয়ে দিবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here