অবশেষে_পরিণয় পর্ব_৩

0
5605

অবশেষে_পরিণয় পর্ব_৩
#জান্নাতুল_নাঈমা

আরুশ প্রচন্ড পরিমানে দুষ্ট, বাচ্চা হলেও তাঁর হাবভাব একদম বড়দের মতোন।
তাঁর চোখে একফোঁটাও পানি বের হচ্ছে না।
অথচ আয়েশা বেগম ফুঁপিয়ে কেঁদে চলেছে।
আরাফ বিরক্ত হয়ে বললো,,,

— উফ,,,আম্মু কেনো এমন বাচ্চা দের মতো কাঁদছো।
ওর তো কিছু হচ্ছে না ব্যান্ডেজ করে দিয়েছি তো একটু রক্ত পড়েছে এতো টেনশনের কিছু নেই।

আরুশ বিছানায় বসে আছে অগ্নি দৃষ্টিতে চেয়ে আছে খুশির দিকে।
খুশি ভয়ে ভয়ে আরাফ, আরুশ আর আয়েশা বেগমের দিকে তাকাচ্ছে।
আয়েশা বেগম খুশিকে সামনে নিয়ে গালে হাত দিয়ে বললো,,,

— হ্যা রে মা তোর দাঁতে কি করাত বসানো??
আমার ছেলেটা না হয় একটু চুমুই খেয়েছে তাই বলে এভাবে কামড়াবি।

আরাফ কপালে হাত দিয়ে তাঁর মায়ের কথা শুনে বললো,,,

— আমি যে কোথায় বসবাস করি তাই বুঝে ওঠতে পারিনা। খুশি চল তো এই পাগল দের মাঝে থাকলে আমরাও পাগল হয়ে যাবো। বলেই খুশিকে কোলে নিয়ে বাইরে চলে গেলো।

আয়েশা বেগম আরুশকে কাছে টেনে আদর করতে করতে বললো,,,

— বাবা তোর খুব লেগেছে?? আমি খুশিকে বকে দিবো।

আরুশ মায়ের দিকে চেয়ে বুকে হাত দিয়ে বললো,,,

— আমার তো এইখানে লেগেছে আম্মু।
যেদিন থেকে তুমি আমার স্কুল পালটে দিয়েছো আর টিয়া সোনার থেকে দূরে চলে গেছি আমি।

আয়েশা বেগম এবার চটে গেলেন।
বসা থেকে দাঁড়িয়ে আঙুল ওঠিয়ে বললেন,,,

— বাচ্চা বাচ্চার মতো থাক। নয় তো আমার থেকে খারাপ কেউ হবে না এই বলে দিলাম।
আর খুশিকে একদম নায়িকা ভাববি না বোন ভাববি বোন। আজ যা করেছিস এটা যেনো আর কোনদিন না হয়।

রুমে ঢুকেই আরুশের দাদী বললো,,,

— ও বৌ মা কি সব বলো বউ কে বোন বলবে কোন দুঃখে ছিঃ ছিঃ তোমার দেখি হুশ জ্ঞান এখনো তৈরি হলো না।

শাশুড়ীর কথা শুনে আয়েশা বেগম দ্বিগুণ চটে গেলেন। আরুশকে ছেড়ে শাশুড়ীর সামনে গিয়ে বললেন,,,

— এই আপনার জন্য, আপনার জন্যই আমার ছোট ছেলেটা দিন দিন গোল্লায় যাচ্ছে। এই বয়সে এইটুকু বাচ্চার মাথায় এসব ঢোকাতে আপনার লজ্জা করে না। খুশির বাবা-মা এসব শুনলে কি ভাববে ভেবে দেখেছেন। আজি আপনার ছেলেকে আমি বলবো, আপনার জন্যই আমার ছেলেটা নষ্ট হচ্ছে।

আরুশ বললো,,,

— আম্মু আমার গিন্নি কে তুমি একদম ধমকাবে না।

— দেখেছো দাদু ভাই আমার সাথে কি সব আচরণ করে। এই বাড়িতে আর এক মিনিটও থাকতে চাইনা আমি। আজি বড় খোকা কে বলবো যাতে আমাকে ছোট খোকার বাসায় দিয়ে আসে। কর্তা নাই বলে আমাকে কেউ দাম দেয়নাগো বলেই কাঁদতে শুরু করলো।

আয়েশা বেগম বিরক্ত হয়ে বেরিয়ে গেলো রুম থেকে।
আরুশ তাঁর দাদীর হাত ধরে বললো,,,
— ও গিন্নি কাঁদছো কেনো আমিই তো তোমার কর্তা।
,
তিন ভাইকে খেতে দিয়েছে ডায়নিং টেবিলে।
আরাফ, আয়ান আর আরুশ একসাথেই খাচ্ছে।
খুশিকে সোফায় বসিয়ে খাওয়িয়ে দিচ্ছে আয়েশা বেগম। খুশি নিজ হাতে ভাত খেতে পারে না।
আরুশ খুশির খাওয়া দেখছে আর নিজে ভাত গিলছে।
এমন সময় ফোন এলো খুশির দাদীর নাতনী খাচ্ছে শুনে আয়েশা বেগম এর সাথে ভালো মন্দ কথা বলে রেখে দিলেন।
আজাদ সরকার আরুশের বাবা ফোন করে আরাফকে তাঁরাতারি অফিসে যেতে বললেন।
ছোট একটা বিজনেস তাঁর বড় ছেলে আর সেই সামলায় হাতে গুনা কয়েকজন কর্মচারী রয়েছে।
মেজো ছেলে আয়ান অনার্স সেকেন্ড ইয়ার পড়ছে।
বড় ছেলে ডিগ্রি পাশ করে বিজনেস দেখছে।
আরুশের দাদী সাহেলা খুবই রসিক মানুষ।
নাতি দের সাথে সর্বক্ষন হাসিতামাসায় মেতে থাকেন তিনি। আরুশকে একটু বেশীই ভালোবাসেন সাহেলা।
খুশিকেও কম ভালোবাসেন না নিজের নাতি দের মতোই খুশিকেও সে খুব ভালোবাসে।
সর্বক্ষন আয়েশা বেগমের কানের কাছে বলতে থাকেন — ও বৌ মা মাইয়াটার বাপ-মা বড় পাষান।
তাঁরা কতো বড় ঘরের লোক কিন্তু মন মানসিকতা এতো ছোট ক্যান বুঝিনা বাপু। মেয়ে যখন দিছেই একবারেই নিয়ে যাওগা আমার ছোট কর্তার বউ কইরা ঘরে রাইখা দেও।
আয়েশা বেগম কথা গুলো শুনে শাশুড়ী কে শাসন করে,,,
— আম্মা আপনি এসব বলবেন না।
খুশির মা আমার প্রিয় বান্ধবী আমাকে নিজের বোনের থেকেও বেশী ভালোবাসে বিশ্বাস করে, ভরসা করে তাই আমার কাছে রেখে গেছে।
আর খুশিও আমার কাছে থাকে ওর মা মনে করেই।
ওর চাচা-চাচি,দাদীর কাছে থাকতে চায় না।
আর খাদিজা তো আমেরিকাতে গিয়ে আবারো প্র্যাগনেন্ট হয়েছে তাই আসতে পারছে না।
মোশতাক ভাইও কাজের জন্য আটকে গেছে।
আর ওরা যে সময় গেছে সেই সময় খুশির শারিরিক অবস্থা ভালো ছিলো না পক্স ওঠে পুরো শরীর ঝলসে যাওয়ার অবস্থা ছিলো। সব বুঝে কথা বলবেন খুশির ভালোর জন্যই তাঁরা ওকে রেখে গেছে।

সাহেলা বলেন,,,

— অতোসতো তো আমি বুঝিনা বাপু। সন্তানের থেকে টাকা-পয়সা তো আর বড় হয় না। ফুলের মতো মাইয়াটারে রাইখা কোন মায় বিদেশ যাইয়া পইড়া থাকবো?

আয়েশা বেগম বললেন,,,

— তা নিয়ে আপনার চিন্তা করতে হবে না।
বরং ভাবুন বেশ ভালোই হয়েছে তিন ছেলের পর খুশির মতো একটা টুকটুকে মেয়ে তো পেয়েছি।

— হু তাই তো বলতাছি একবারে রাইখা দেও।

— আপনিও দেখি আরুশের মতো বাচ্চা হয়ে গেছেন।
যান তো আমাকে কাজ করতে দেন।
,
দিনের পর দিন যাচ্ছে মাসের পর মাস কাটছে তবুও আরুশের পাগলামি থামছে না।
তাঁর হিরো হওয়ার স্বপ্ন বুকে লালন করেই বড় হচ্ছে সে। আর সুযোগ বুঝেই খুশিকে লুকিয়ে লুকিয়ে চুমু খায়। খুশি আর তাঁর মামনিকে নালিশ করে না।
নালিশ করলেই আরুশ তাঁকে ছাদ থেকে ঢিল মারবে এই ভয়েই সে আর মুখ খুলে না।

কিন্তু এখন তো ওরা বাচ্চাই রয়ে গেছে যখন আরেকটু বড় হবে? বাল্যকাল পেরিয়ে কৈশোর, কৈশর পেরিয়ে যৌবনে পা দিবে তখনও যদি এমন টা চলতে থাকে???

এসব চিন্তাই করছিলেন সাহেলা কারন তিনিই জানেন তাঁর নাতির কীর্তি গুলো।
,
পাঁচ টা বছর কেটে গেছে খুশি সরকার বাড়িতেই রয়েছে। সরকার বাড়ির আদর্শেই সে বড় হচ্ছে।
আয়েশা বেগমের স্নেহ ভালোবাসায়ই বেড়ে ওঠছে সে। বাড়ির সকলেই তাঁকে খুব ভালোবাসে।
শুধু একজন বাদে সে হচ্ছে আরুশ।
এই একটা মানুষ কে সে সহ্য করতে পারেনা।
এই একটা মানুষ দিনের পর দিন তাঁর ওপর টর্চার করতে থাকে। যা তার অসহ্য লাগে আবার এই একটা মানুষ কে ভয় ও লাগে ভীষণ।
কিন্তু সত্যি কি তাই এই একটা মানুষ কি সত্যি অসহ্যকর?? এই একটা মানুষ কি সত্যি তাঁকে বিন্দু পরিমানও ভালোবাসে না??
,
এস.এস.সি পরীক্ষার রেজাল্ট বেরিয়েছে এবার আরুশ কলেজে ভর্তি হবে। ছুটির দিন থাকায় সারাক্ষন ঘুরে ফিরে,শয়তানি করে মেয়েদের টিজ করে বেরায় এসবই তাঁর নিত্য দিনের কাজ।
আর রাতের বেলা এসে খুশিকে দিয়ে পা টেপানো,
শরীর টেপানো ইচ্ছে অনুযায়ী কিস করা।
সকলের চোখের আড়ালে রাতের আঁধারে জোর করে কোলে তুলে নিয়ে ছাদে গিয়ে চন্দ্র বিলাস করা।
খুশির শরীরের মাতোয়ারা ঘ্রান নিতে নিতে ঘুমানো তাঁর অভ্যেসে পরিণত হয়েছে।
আরুশ ষোল পেরিয়ে সতেরোর গন্ডি তে পা দিয়েছে।
খুশির বয়স বারো আরুশ যতোটা বুঝে খুশি তোটাও বোঝদার নয়। আরুশ এগারো বছর বয়স থেকেই এই বাচ্চা মেয়েটার ওপর তীব্র ভাবে আসক্ত।
একটা দিন যদি খুশিকে সে কাছে না পায় তাঁর পাগল পাগল লাগে। পায়ে পা লাগিয়ে ঝগরা যতোই করুক এই একটা মানুষ যেনো তাঁর শ্বাস-প্রশ্বাসের সাথে মিশে রয়েছে তাঁর জীবনের অক্সিজেন এই একটা মানুষ। এখন আর সে হিরো হওয়ার জন্য পাগলামি করে না।
বাস্তবতা সম্পর্কে তাঁর জ্ঞান হয়েছে সেই সাথে এখন বুঝতে পারে একটা ছেলে-মেয়ের মাঝের সম্পর্ককে।
তাঁর এখন একটাই লক্ষ সেটা হলো খুশির বাস্তবজীবনের হিরো হওয়া,,,
,
খাদিজা বেগম, মোশতাক তালুকদার এবং তাঁদের ছোট ছেলে মিলন দেশে ফিরেছে।
আয়েশা বেগম আর আরাফ খুশিকে নিয়ে তালুকদার বাড়ি যাবে বলে রেডি হচ্ছে।
আরুশ কলেজ থেকে ফিরতে না ফিরতেই খুশি দৌড়ে এসে বললো,,,

— আরুশ ভাইয়া,,, আরুশ ভাইয়া আমি আজি চলে যাচ্ছি। তুমি আর আমায় ধরতে পারবে না।
এবার আমি তোমার নাগালের বাইরে চলে যাবো।
বলেই কোমড়ে হাত দিয়ে আরুশের দিকে হাসি হাসি মুখ করে চেয়ে রইলো।

আরুশ সবে কলেজ ড্রেস খুলেছে। ট্রাউজার পড়া খালি গায়ে রয়েছে সে শীরর ঘেমে একাকার অবস্থা।
খিদে লেগেছে খুব তাঁর আবার অল্পতেই মাথা গরম হয়ে যায়। ক্লান্ত শরীর নিয়ে সবে ফিরেছে তখনি এমন মন মেজাজ নষ্ট করা কথা বললে কার না রাগ হবে,,,আরুশের ও হলো খুশির সামনে গিয়ে খুশির হাত মুচড়ে পিছন দিক নিয়ে বললো,,,

— কি বললি তুই তোর নাগাল আমি পাবো না।
আর কোথায় যাবি তুই কার কাছে যাবি??

— আহ,,,আমার ব্যাথা লাগছে, তুমি খুব খারাপ, সব সময় আমাকে ব্যাথা দাও আজি চলে যাবো আর কখনো আসবো না আমি।

খুশি কাঁদতে শুরু করলো। আরুশের রাগ কমার বদলে বেড়ে গেলো খুশিকে ছেড়ে দরজা টা লাগিয়ে দিলো। খুশির কাছে এসে দুহাতে গাল চেপে ধরে ঠোঁটে ঠোঁট ডাবিয়ে দিলো।
এই বিষয়টাতে ছোট থেকেই সে বড় পাকা।
খুশির অভ্যাসও হয়ে গেছে কিন্তু রাগের বশে এমন ভাবে তাঁর ঠোঁট জোরা আঁকড়ে ধরেছে যে ব্যাথায় অকুলান হয়ে গেলো খুশি।
অনেক সময় পর ছেড়ে বললো,,,
— তুই কোথাও যাবি না তোর বাবা-মা এসেছে দেখা করে চলে আসবি দ্যাটস ইট। আর হ্যাঁ না আসলে তুলে নিয়ে আসবো মনে রাখিস।

খুশি কাঁদতে কাঁদতে বেরিয়ে গেলো।
,
দুইদিন হয়ে গেছে খুশি তাঁর নিজের বাড়িতে রয়েছে।
সরকার বাড়ির সবারই মুড অফ সবাই খুশিকে ভীষণ মিস করছে। খুশিরও মন খারাপ হচ্ছে তবুও ছোট একটা ভাই পেয়ে মা,বাবাকে কাছে পেয়ে তাঁর তেমন খারাপও লাগছে না।
কিন্তু একজন যে পাগলের মতো ছটফট করে যাচ্ছে।
আয়েশা বেগম বেশ বুঝলো সে যে মা ছেলের মন তাঁর বুঝতে খুব একটা অসুবিধা হলো না।
কিন্তু এটাতো ঠিক না এটা হয় না। এটা আরুশকে বুঝতেই হবে।
কিন্তু না অারুশ তিনদিনের দিন পাগল হয়ে গেলো একদম। রুমের সব কিছু ভাঙচুর করতে শুরু করলো। বই, খাতা সব টেবিল থেকে ছুঁড়ে ফেললো।
খাওয়া – দাওয়া ছেড়ে দিলো তাঁর খুশিকে চাই চাই।
আর কোন কথা সে শুনতে চায় না বুঝতে চায় না।
সাহেলা খুবই বুদ্ধিমতী মহিলা তিনি বললেন,,,

— বউ মা এবার বড় ছেলের বিয়ের ব্যাবস্থা করো তো। বাড়িতে অনেক দিন হলো বিয়ে টিয়ে হয় না।
বড়টার ব্যবস্থা করেই মেজো টার ব্যবস্থা করো।

বিয়ের অনুষ্ঠানের বাহানায় খুশিকে এ বাড়ি আবার নিয়ে আসা যাবে। আরুশকেও বুঝিয়ে শুনিয়ে মানানোও যাবে।
সেই কতোগুলো বছর ধরে মেয়েটার সাথে একসাথে বেড়ে ওঠেছে হুট করে আলাদা হয়ে গেলে খারাপ তো লাগবেই। তাঁর ওপর মেয়েটার প্রতি ওর আলাদা এক মায়া আছে যতোই সাপে,নেওলে সম্পর্ক হোক আমি তো বুঝি ওদের মধ্য অদৃশ্য এক মায়া কাজ করে।

আরাফের বিয়ের বেশ কটা দিন খুশি সরকার বাড়ি রইলো। আরুশ তাঁর সাথে পায়ে পা বাজিয়ে ঝগরা করা, জ্বালাতন করা সবই করলো কিন্তু যেটা করলো না সেটা হচ্ছে তাঁকে স্পর্শ,,, তাঁর কেমন একটা মনে হলো যে সে বড় হচ্ছে সাথে খুশিও বড় হচ্ছে।
তাই এসব থেকে আপাতত দূরে থাকাই ভালো।
দূর থেকে খুশিকে প্রানভরে দেখা আর কাছে এলে তাঁকে জ্বালাতন করাই তাঁর মূখ্য কাজ।
আয়েশা বেগম ও ছেলেকে বুঝিয়েছে খুশি তো সারাজীবন এখানে থাকতে পারবে না।
বাবা মায়ের কাছে থাকতেই হবে তোর যখন ওর কথা মনে পড়বে ফোন করে কথা বলবি স্কুল গিয়ে দেখা করবি।
তারপর ভবিষ্যতে দেখা যাক কি হয়,,,
কে বলতে পারে খুশির মনেও তোর জন্য আলাদা এক জায়গা সৃষ্টি হবে,,,
মায়ের কথা, সকলের বোঝানোতে আরুশ বুঝলো।
খুশি যেদিন চলে গেলো সেদিন শাসিয়ে দিলো,,,

— আমি ফোন করলে কথা বলবি।
কোনরকম ইগনোর করার চেষ্টা করবি না আমাকে।
আর সপ্তাহে একবার এ বাড়ি আসতে বায়না করবি।

খুশি মুখ ভেঙচি দিয়ে ছুটে গাড়িতে ওঠে পড়লো।
সবাইকে টাটা করে চলে গেলো।
,
আরুশকে দূর থেকে চটাতে খুশির বেশ মজা লাগে।
সে তাই করে কিন্তু পরেরদিন স্কুলে গেলে আরুশ তাঁর অবস্থা কাহিল করে ফেলে।
খুশি বেশী অবাধ্যতা করলে জোর করে স্কুল থেকে বাড়ি নিয়ে যায়। আর আয়েশা বেগম কে ফোন করে তালুকদার বাড়ি জানিয়ে দেয়।
এভাবেই কেটে যায় আরো কয়েকটা বছর।

আরুশ অনার্স ফাইনাল ইয়ারে,,, খুশির সামনে এস.এস.সি পরীক্ষা কিন্তু খুশি ক্লাস করা,
কোচিং করা বাদ দিয়ে বন্ধু, বান্ধবের সাথে ঘুরে বেরায়।খবড় গুলো মোশতাক তালুকদারের কানে গেলেও সে মালুম করে না কিন্তু আরুশের কানে যেতেই আরুশ বেশ চটে যায়।

পরের দিন স্কুলের সমনে দু’ঘন্টা দাঁড়িয়ে থেকেও লাভ হলো না খুশি স্কুলে আসেনি।
তালুকদার বাড়িও এখন যখন তখন যেতে পারেনা।
সে বড় হয়েছে খুশিও বড় হয়েছে সবাই এখন কানাঘোষাও করে। খুশির দাদীও হারে বজ্জাত গেলেই গোয়েন্দাগিরী শুরু করে দেয়।
আরুশ নোটসের কথা বলে খাদিজা বেগম কে ফোন করে খুশিকে চাইলো। খাদিজা বেগম সোজাসাপ্টা মানুষ খুশিকে জোর করে ফোন ধরিয়ে দিয়ে চলে গেলেন।
ফোন কানে নিয়ে হ্যালো বলতেই আরুশ দাঁতে দাঁত চেপে বললো,,,

— “কিররে তালুকদারের মাইয়া,,,
খুব নাকি উড়ছিস,বেশী উড়িস না ঐ ডানা ভাঙতে আমার দের মিনিটও লাগবে না ”

— “কিররে সরকারের পোলা,,,
আমি উড়ি, লাফাই বা দৌড়াই তোর বাপের কি”
মনে মনে কথা গুলো ভেবে এক ঢোক চিপল খুশি।
মুখের ওপর বলতে গিয়েও থেমে গেলো।
সে খুব ভালো করেই জানে এখন এটা বললে কাল আর তাঁর সুন্দর মুখ খানা নিয়ে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরা হবে না।
হয় ধরে বেঁধে নিজ বাড়ি নিবে নয়তো এক থাপ্পড়ে তাঁর গালখানা লাল করে মুখখানা বাংলার পাঁচ বানিয়ে ফেরত পাঠাবে তালুকদার বাড়িতে।

খুশি তোতলাতে তোতলাতে বললো,,,

— কি বলছো ভাইয়া আমার তো ডানাই নেই উড়বো কি করে??

আরুশের এবার রাগে মাথা ফেটে যাচ্ছে।
দাঁতে দাঁত চেপে আবারো বললো,,,

— শাফিন তোকে প্রপোজ করেছে আর এই কথা তোর থেকে না শুনে অন্যকারো থেকে আমার শুনতে হলো কেনো?? উত্তর দে।

খুশি এক ঢোক গিলে বললো,,,

— আমি একটা সুন্দরী মেয়ে আমাকে ছেলেরা প্রপোজ করতেই পারে তোমার এতো জ্বলে কেনো?

— তুই আমার সামনে আয় তারপর বুঝাচ্ছি আমার জ্বলে কেনো।

খুশি বললো,,,

— ও হো হো তুমি তো আবার ছোট বেলায় আমার হিরো সাজতা আর আমাকে হিরোইন তাইনা।
আচ্ছা এখন আমরা বড় হয়ে গেছি এখন ছোট বেলার প্রেমে ছ্যাঁকা দেই কেমন,,,
” আমি তোমাকে ছ্যাঁকা দিবো তুমি ছ্যাঁকা খেয়ে একদম ব্যাঁকা হয়ে যাবা হিহিহি ”

“তুই আমাকে ছ্যাঁকা দিবি?????????????
মেরে হারগুড় ভেঙে সেগুলো ব্লেন্ডারে দিয়ে জুস করে গিলে খেয়ে নিবো”

চলবে…….

ভুলত্রুটি ক্ষমা করবেন।

আগের পার্টে আরুশ,খুশির এইজ ভুল ছিলো পরে ঠিক করে নিয়েছি।ধন্যবাদ সকলকেই ?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here