#অবাধ্য_প্রেম
#পর্ব_১৬,১৭
#নন্দিনী_নীলা
১৬
ইভা মেয়েটাকে আমি যতটা আফিয়ার মত ভেবেছিলাম অহংকারী টাইপের কিন্তু তার বাসায় থেকে আমি বুঝতে পারলাম মেয়েটার ওর ধারের কাছেও না। খুবই মিশুক একজন আমার সাথে এত ভালো ভাবে কাটিয়েছে। আমাকে আর নিবিড় কে একসাথে দেখে সে রকম কিছু আমাকে জিজ্ঞেস করেনি শুধু একটা কথা জিজ্ঞেস করেছিল।
আমরা যখন ঘুমাবো তখন ইভা শুধু বলেছিল, ‘ ছোঁয়া নিবিড় কে তো তুমি পছন্দ করতে না। আজ ওকে বিলিভ করে ওর সাথে আমার কাছে কিভাবে এলে?’
আমি বললাম, ‘ জানি না। কিন্তু আজকে তার ওপর আমার অনেক হয়েছিল আস্থা । মনে হয়েছিল তিনি আমাকে সাহায্যই করবেন।’
‘তুমি একজন সঠিক মানুষের কাছে সাহায্য চেয়েছিলে। নিবিড় খুব ভালো একজন বন্ধু আমাদের। ও যদি কোন দায়িত্ব হাতে নেয় সেটা খুব নিখুঁতভাবে করে। ওকে এবং কি আমাদের তুমি পছন্দ করো না জানি তোকে বিশ্বাস করে তুমি ঠকবে না। নিবিড় বিশ্বাসের মর্যাদা রাখতে জানে। যাইহোক ঘুমাও।’
আমি তখন মিষ্টি হেসে উনার দিকে তাকিয়ে বললাম, ‘আমিতো আপনার কে ও পছন্দ করতাম না কিন্তু আপনি সত্যি খুব ভালো।’
তখন ইভা আপু বলল, ‘জানি। কিন্তু আমি তোমাকে মোটেও খারাপ ভাবি নি। তোমাকে খুব মিষ্টি একটা মেয়ে ভাবছি। আমার ফ্রেন্ড কেউই কিন্তু তোমাকে দু’চোখে সহ্য করতে পারে না।’
‘তাদের সহ্য করায় আমার কিছু আসে যায় নাকি আমি আবার তাদের পছন্দ করিনা।’
আমার কথা শুনে ইভা আপু হা হা করে হেসে উঠলো আমি ও হেসে উঠলাম। সারাদিনের ক্লান্তিতে আমি খুব তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়লাম। যদি ও ইচ্ছা ছিল আর একটু গল্প করি ইভা আপুর সাথে কিন্তু হয়ে উঠল না।
পরদিন ইভা আপুর মা-বাবা আর তার ছোট বোনের সাথে আমার দেখা হলো তারা খুবই ভালো মনের মানুষ। সকালবেলা ব্রেকফাস্ট আর করব কি সাতসকালে নিবিড় এসে হাজির বাসায়।
নিবিড় কে দেখেই তো ইভা আপু বলে উঠলো, ‘কিরে তুই রাতে ঘুমাস নি সাত সকালে চলে এসেছিস?’
নিবিড় আমার দিকে তাকিয়ে বলল, ‘চলো এবার!’
ইভা আপু শুনেই বলে উঠলো, ‘ না খেয়ে যাবে নাকি কি বলিস তুই? চুপচাপ বসে থাক রান্না করছে আম্মু রান্না হলে তার পরে খেয়ে যাবি!’
নিবিড় বলল, ‘ দরকার নাই ওকে আমাকে ওর বাসায় পৌঁছে দিতে দে তো। এই মেয়ের পেছনে আমি আর এক ফোঁটা টাইম ওয়েস্ট করতে চাইনা।’
ইভা আপু কড়া গলায় বলল, ‘এমন ভাবে বলছি যেন আমরা তোর মাথায় বন্ধ করে ধরে সব করাচ্ছি। তুই নিজে থেকে এসব করছিস তাই এখন আমার কথা শুনতে হবে। চুপচাপ বসে থাক এখন কোথাও যাবে না। ছোঁয়া খাবে আর সাথে তুই ও খাবি তারপর যাবি।’
নিবিড় বলল, ‘ নো। আমি কি তোদের বাড়ি ভাত খেতে আসছি নাকি? যখন আসবো তখন যত পারিস খাওয়াইস।’
‘সে না হয় তুই পরে এসে খাবি এখন ছোঁয়াকে আমি খালি মুখে পাঠাব না।’
নিবিড় বিরক্তিকর মুখে বলল, ‘ ছোঁয়া তুমি যাবে না?’
দু’জনের কথার মাঝে আমি কথা বলতে পারছিলাম না আমি বার সুযোগ পেয়ে বলে উঠলাম, ‘ না খেয়ে আমি কোথাও যাবো না। আপনার ইচ্ছা হলে আপনি চলে যান আমি একা যেতে পারব। যাওয়ার আগে শুধু আমার ব্যাগটা রেখে যাইয়েন!’
নিবিড় আমার দিকে তাকিয়ে দাঁত কিড়মিড় করে সোফায় বসে পড়ল। রান্না হতে আরো 20 মিনিট লাগলো তারপরে খাওয়া-দাওয়া শেষ করে পাক্কা দু’ঘণ্টা পর আমরা বের হতে পারলাম। নিবিড় তো খেলো ই না শত বলেও তাকে খাওয়ানো গেলো না সে শুধু এক কাপ চা খেল।
গাড়িতে এসেই আমি আমার ব্যাগটা ফিরে পেলাম। আহ কি শান্তি। করো ঘোরাঘুরি না করারও এটার জন্য। মানুষটা এতো খাটাশ হতে পারে উনাকে না দেখলে জানতামই না। উনি এবার আমার অনেক হেল্প করেছে এজন্য তাকে কিছুই বললাম না আমি শান্ত হয়ে বসে রইলাম গাড়িতে।
নিবিড় নিজেই দাঁতে দাঁত চেপে রাগী কন্ঠে আমাকে বলতে লাগল, ‘ কালকে কি কথা হয়েছিল তুমি আমার সব কথা শুনবে আর এখন কি হলো তুমি আমার কথা অমান্য করলে।’
আমি উনার দিকে চোখ তুলে তাকিয়ে বললাম,’ আপনার মনে কি আছে আমি বুঝতে পারিনি ভেবেছেন তাই না। কালকে রাতে অনেক টাকার খাবার খেয়ে এমনিতে আমার অনেক টাকা গচ্চা গিয়েছে আজকে আবার আমার টাকা খরচ করে খাবার খেতে চেয়েছিলাম তাই না। আমিতো তা হতে দেব না।’
নিবিড় আমার দিকে জ্বলন্ত চোখে তাকিয়ে বলল, ‘ইউ….
কি যেন বলতে চেয়েছিলে থেমে গিয়ে মুখে শয়তানী হাসি ফুটিয়ে তোলে বলল, ‘তুমি খেয়েছ তুমি না হয় না খাবে। কিন্তু আমি তো কিছু খাইনি আমার তো খেতেই হবে। এবার ফাইভস্টার হোটেলে যাব।’
‘ তো আমার কি আপনি যেখানে খুশি সেখানে যান। আমি খাব নাকি। যে আমার টাকা খরচ হবে। আপনি নিজের টাকা খরচ করে যা খুশি তাই করেন!’
নিবিড় আমার দিকে তাকিয়ে শয়তানি গলায় বলল, ‘ আমি নিজের টাকা খাবে কে বললো? এত হেল্প করছি আমার খাবার বিলটা তোমাকেই দিতে হবে।’
‘ এ্যা?
‘ এ্যা না হ্যা!’
আমি কাঁদো কাঁদো মুখে তাকিয়ে আছি নিবিড়ের দিকে। নিবিড় আমার নাম করে একগাদা খাবার খেল তারপর কি যেন হিসাব করে টাকা গুনতে লাগলো কত টাকা আমার কাছে পাওনা আছে।
আর আমি কপাল চাপড়াচ্ছি। উনি তো দেখছি সাহায্য করার নাম করে আমার টাকা ডাকাতি করল। অবশ্য এখন এইসব উনার ই টাকা কিন্তু পরে তো কষ্ট করে টাকাগুলো আমাকে শোধ করতে হবে।
রেস্টুরেন্টে থেকে বের হওয়ার সময় নিবিড় বলল, ‘ তোমার টাকার খাবার এতো টেস্ট ছিল যে আমার আরো খেতে ইচ্ছে করছে।’
আমি চোখ কপালে তুলে বললাম, ‘রাক্ষসের মত এত খেলেন। এখন ও আপনার পেটে জায়গা আছে?’
‘ তোমার টাকা বাঁচানোর জন্য কমই তো খেলাম। রাক্ষস বললে কিন্তু রাক্ষসের মতোই খাব এই ধরো রেস্টুরেন্টের সব খাবার শেষ করে ফেলব যেটা রাক্ষস থাকলে করতো।’
আমি আর কথা বাড়ালাম না গটগট করে বেরিয়ে এলা।এই লোকটার সাথে ঝগড়া না করে থাকাই যায় না। যাবে কিভাবে যেভাবে আমাকে ঝগড়ার জন্য খোঁচাচ্ছে আমি একটা ভালো শান্ত মেয়ে বলেই এখনও ঝগড়া না করে থাকছি। এমন বজ্জাত লোকের সাথে থাকলে যে কেউ ঝগড়া করবে।
এবার আর রাস্তায় একটা কথাও বলিনি। নিবিড় আমাকে বাসার সামনে রেখে চলে গেল আমি বাসায় ঢুকতেই দীপার দেখা পেয়ে চমকে উঠলাম। ও এখানে কি করছে? ও একা না পারে ওর বয়ফ্রেন্ড ও আছে। ওর কপালে সিঁদুর আল্লাহ ওরা বিয়ে ও করে ফেলেছে। আমাকে দেখেই ও জরিয়ে ধরল। আমি বললাম, ‘ তোরা এখানে কি করিস?’
দীপা বলল, ‘ গতকাল রাত থেকে এখানে আছি। তোর বাসায় একটা চাবি আমাকে দিয়েছি সেটাই কাল কাজে লেগেছে। এখানে এসে তোকে পেলাম না। আমরা বাবার হাত থেকে রক্ষা পেতে এখানে আশ্রয় নিলাম। রাতে তোর মামি আসছিল তুই নাকি বিয়ে না করে পালিয়েছিস তাই খুঁজতে এসেছিল। না পেয়ে চলে গেছে আমি বলেছি আমরা এখানে নতুন ভাড়া নিয়েছি।
আমি অবাক গলায় বললাম, ‘ বাড়ি ওয়ালা কিছু বলে নি।’
‘ তিনি আমাকে দেখেছে শুধু। আমি বলেছি তুই দরকারে তোর মামার বাড়ি গিয়েছিস আমাকে বাসায় পাহারা রেখে।’
আমি হাসতে হাসতে বললাম, ‘ শেষে কিনা তুই আমার বাসার পাহারাদার হলি। শ্রাবণ ভাই কই?’
দীপা বলল, ‘ বাথরুমে লুকিয়ে আছে। জানতাম না তো তুই আসবি।’
আমি আরো জোরে জোরে হাসতে লাগলাম।
#চলবে…..
#অবাধ্য_প্রেম
#পর্ব_১৭
#নন্দিনী_নীলা
শ্রাবণ ভাইয়া বাথরুম থেকে বের হল আমি মুখ টিপে হাসছি। আমার যে কি পরিমান হাসি পাচ্ছে তা আমি বুঝাতে পারব না। এখন আমি গড়াগড়ি করে হাসতে পারলে আমার ভালো লাগতো। কিন্তু ভদ্রতার জন্য সেটা পারলাম না কিন্তু উনাকে টিটকারি মারে কথা বলতাম ছাড়লাম না।
আমি শ্রাবণ ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে বললাম, ‘ আমাদের সবাইকে না জানিয়ে একা একা বিয়ে করে ফেললেন। আপনি এত কিপটা টাকা ভাঙতে হবে বলে একা বিয়ে করে ফেললেন। এখন ঘোরাঘুরি করছেন কেন নিজের বাড়িতে কি হয়েছে নিজের বাড়িতে বউ নিয়ে উঠতে পারলেন না?’
শ্রাবণ ভাইয়া সব সময় কথার পিঠে কথা বলে কিন্তু আজকে বলতে পারল না আজকে তিনি নীচু কন্ঠে বলল, ‘মা ফোনে বলেছে দীপা কে নিয়ে বাসায় ঢুকলে সাথে সাথে নাকি দীপার বাড়িতে খবর চলে যাবে এজন্য ভয় এই যেতে পারছিনা।’
‘গেলে যাবে সমস্যা কি তারা না হয় মেয়ের শ্বশুর বাড়ি দেখার জন্য আসবে।’
‘না তাদের কানে শুধু খবর না তাদের হাতে দীপাকে নাকি তুলে দেবে আর দীপাকে তারা একটু ও পছন্দ করে না। দীপ আম্মুর সাথে চ্যাটাং চ্যাটাং কথা বলেছিল তাই আরো পছন্দ করেনা।
দীপা শ্রাবণ ভাইয়ার কথা শুনে খেপা বাঘিনীর মত তেড়ে গিয়ে বলল, ‘আই কি বললে তুমি আমি চ্যাটাং চ্যাটাং করে কথা বলি। এইজন্য তোমার ঐ ডাইনি মা আমাকে পছন্দ করো না?’
শ্রাবণ ভাইয়া তো দীপাকে খুব ভয় পায়। তিনি ভীতু গলায় বললেন, ‘তুমি বলো না তো মি এটা মনে করেন।’
‘ তোমাকে বিয়ে করে আমার জীবনে সবচেয়ে বড় ভুল হয়েছে তোমার সাথে কি জন্য যে পালিয়ে ছিলাম এখন আমাকে পালিয়ে পালিয়ে বেরাতে হচ্ছে।’
ওদের দুজনকে থামিয়ে বললাম, ‘থাম তোর আর আমার কথা শোন দীপা। তোদের বিয়ে তো অলরেডি হয়ে গেছে এখন চাইলেও তোর শাশুড়ি মানে শ্রাবণ ভাইয়ের মা তোকে তোর বাবা মার হাতে তুলে দিতে পারবে না সে যদি আইনের চেষ্টাও করে তারপর ও এই কাজটা করতে পারবে না কারণ বিয়েটা হয়ে গেছে। স্বামী স্ত্রীকে আইন ও আলাদা করে না। তোর গুন্ডা মার্কা ফ্যামিলি আমাদের যা ভয় দেখিয়েছে জানিস। আমি আর লিলি কি বড় বিপদে পড়েছিলাম তোরা যে পালিয়ে যাবি তার একটুখানি যদি আমাদের জানিয়ে দিতি তাহলে কি আমরা ওই সিংহের গুহায় যেতাম।’
‘ বলার সুযোগ হয়নি রাগ করিস না। এবার তোর পালানোর কথা বল!’
আমি বিছানায় বসে পরলাম, ‘আমার অনেক হয়রানি হয়েছে রে এই ছোট বাসায় তোরা থাকতে পারবি না। এবার দীপা তুই শ্বশুর বাড়ি যা। বাড়িওয়ালা একবার যদি তোদের এখানে দেখে তাদের সহ আমাকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দেবে তখন আমার এখানে থাকলে প্রবলেম হবে।’
দীপা বলল, ‘ তুই আমাদের তাড়িয়ে দিবি।’
আমি বললাম, ‘আমার নিজের বাড়ি থাকলে আমি নিজে চলে যেতাম তোকে এখানের রেখে।’
দিন টুকু ওরা জোর করে থাকলেও সন্ধ্যার পর অন্ধকারে তখন ওরা বেরিয়ে চলে গেল আর এর মধ্যে আমার বিয়ের কাহিনী টা দীপাকে শুনিয়ে দিছি।
ওরা চলে যাওয়ার পর আমি বিছানায় শুয়ে একটা ঘুম দেয়। ঘুম ভাঙ্গে লিলির কলে ও আমাকে জিজ্ঞেস করে আমি কোথায় আমি বলি, আমি বাসার।’
‘কাল কলেজ আসবি?’
‘না পরশু এক্সাম দিতে আসবা একেবারে।’
‘ তুই ঠিক আছিস? তুই কাল রাতে কোথায় ছিলি?’
আমি বললাম, ‘সামনা সামনি বলবো নি এভাবে এত কথা বলা যায়না। আর আমি একদম ঠিক আছি আমাকে নিয়ে টেনশন করিস না।’
‘ আচ্ছা আমি খুব টেনশন ছিলাম কাল। আর আমাকে ক্ষমা করে দিস আমি তোকে কালকে হেল্প করতে পারলাম না। কি করবো বল আমি তো জানি না তুই কালকে আমাদের বাসায় আসতে চাবি।আমি তো বাসায় ছিলাম না আমি সত্যি খুব সরি রে।’
‘ আচ্ছা রাখছি ঘুমাবো। দীপার সাথে বকবক করতে করতে আমি ক্লান্ত হয়ে গেছি।’
দীপার কথা শুনতেই লিলি চমকে উঠে বলল, ‘ কি বললি তুই দীপার সাথে বকবক করছিস মানে কি তুই দীপাকে কোথায় পেলি?’
আমি বললাম, ‘বইন তুই এবার চুপ যা আমাকে একটু ঘুমাতে দে।’
‘দ্যাত রাখ ফোন।’
.
একদিন পর আমার কলেজে আসা হলো পরীক্ষা দিতে। আমাদের পরীক্ষা বিকেলে পড়েছে আমি একটু আগেই এসেছি কারণ লিলি কল দিয়ে বারবার করে আগে আসতে বলেছে। ওকে সব কথা বলতে হবে একদম পূর্ণদৈর্ঘ্য বাংলা ছায়াছবির মতো।
যাইহোক কলেজ আসলাম। লিলি আমার আগে এসে বসে আছে।নিবিড়ের সাথে ছিলাম ও আমাকে হেল্প করেছে। আর ওর একটা ফ্রেন্ডের বাসায় আমাকে রাতে রেখেছিল । তারপর যা যা জালিয়াতি আমার সাথে করেছে সব বললাম। সব শুনে তো লিলি গালে হাত দিয়ে আছে।
লিলি অবাক গলায় বলল, ‘ এ তো সিনেমার প্রেম কাহিনী।’
তারপর আবার বলে উঠল, ‘ ওই দেখ তোর হিরো।’
আমি বিরক্তকর কন্ঠে বললাম, ‘ পাগলের মতো আজাইরা কথা বলবি না। ওই নিবিড়ের বাচ্চা আমার হিরো হতে যাবে কেন ?’
নিবিড় আর ওর একটা বন্ধু আমাদের দিকে এগিয়ে আসছে আমি ভাবছি হয়তো আমাদের সাথে কথা বলতে আসছে আমি তা দেখে ভাব নিয়ে বসে আছি। কাছাকাছি আসতেই আমি নিবিড়ের দিকে তাকিয়ে বলতে যাব যে, আ
আর বলতে পারলাম না। শয়তান নিবিড় আমাদের খুব নিকটে আসলো কিন্তু আমাদের সাথে কথা না বলে আমাদের পাস করে চলে গেলো আমি হাঁ করে ঘাড় ঘুরিয়ে ওদের দিকে তাকিয়ে রইলাম এটা কি হলো। আমি নিবিড় কে লজ্জা দিতে চাইছিলাম যে আপনি না বললেন আমার সাথে আর কথা ফলবেন না আমার সামনে আসবে না কিন্তু এখন নিজে থেকে কথা বলতে আসছেন। ব্যাপার কি?
উনি আমার থেকেও বেশি ধুরিবাজ। আমাকে পাস করে উল্টা আমাকে লজ্জা দিয়ে চলে গেল।
লিলির হাত ধরে টানতে টানতে হলে চলে এলাম। পরীক্ষা দিয়ে বের হলাম আর দেখতে পেলাম দীপাকে ও যে পরীক্ষা দিতে আসবে এটা আমার ভাবনার বাইরে ছিল।
দীপা তো দৌড় আমাদের কাছে এলো। আমার আর লিলির সিরিয়াল একসাথে কিন্তু দীপার সিরিয়াল আলাদা এর জন্য আমরা ওকে দেখিনি। আর মনে হয় এমনিতো পরে আসছিলো কলেজে।
আজকে আমি বাড়িতে ঢোকার সময়ই দারোয়ান কাকার থেকে শুনতে পাই আমার মামি নাকি এসে বসে আছে বাসায়।কি এক মুসিবতে পরলাম মামির সাথে দেখা হওয়া মানেই জোর করে আমাকে নিয়ে যাওয়া।
আমি বাসায় না ঢুকে আবার উল্টা পথে হাঁটতে লাগলাম। মামি যন্ত্রণায় দেখছি এভাবে থাকা যাচ্ছে না আমাকে ভাষা চেঞ্জ করতে হবে তাড়াতাড়ি।
আমি লিলিদের বাসায় চলে যাব ভাবলাম। একটা অটো জন্য কিছুটা দূরে এসে দাড়িয়ে রইলাম। অটো তো আসল না হঠাৎ একটা মাইক্রো এসে আমার সামনে থেমে গেল। আমি কপাল কুঁচকে মাইক্রো দিকে তাকিয়ে আছি ভেতরে থেকে বেরিয়ে এলো রাফসান। আমি চোখ কপালে তুলে তাকিয়ে আছি।
রাফসান বলল, ‘এই সন্ধ্যেবেলা তুমি কি করছ এখানে? তোমার বাসা তো এখানে না।’
আমি বললাম, ‘ আমার বাসা এখানেই কাকা। কিন্তু আমি এখন বাসায় যেতে পারব না কারণ আমার মামী আমাকে তুলে নিয়ে যেতে আসছে এজন্য আমি আমার ফ্রেন্ডের বাসায় যাচ্ছি।’
‘তুলে নিতে আসছে মানে?’
‘আপনার সাথে বিয়ে ভেঙে যাওয়ার পর আমাকে আরেক ছেলের সাথে বিয়ে দিতে চাইছে। আমি করব না তাই পালিয়ে বেড়াচ্ছি।’
‘ অ আচ্ছা। তোমার সাথে আমার কিছু কথা আছে। তুমি চাইলে আমার সাথে গাড়িতে আসতে পারো। আমি তোমাকে ড্রপ করে দেবো।’
আমি না করে দিয়ে বললাম, ‘ তার কোন দরকার নাই। আমি চলে যেতে পারব আপনি যা বলার এখানেই বলেন কাকা।’
‘এই রাস্তায় দাঁড়িয়ে কিভাবে কথা বলল মানুষ ও খারাপ ভাববে। আমাকে বিশ্বাস করতে পারো। আমি তোমাকে জাস্ট কয়েকটা কথা বলতে চাইছিলাম।’
আমি খুব ইতস্তত বোধ করতে লাগলাম। না করতে পারলাম না একজন বড় মানুষ তার সাথে বেয়াদবি করা হবে না। একটু গেলে কি হবে উনাকে খুব খারাপ বলে মনে হচ্ছে না।
আমি গাড়িতে উঠে বসলাম। জানিনা উনি আবার আমাকে কি কথা বলবেন।
#চলবে…..