#অবাধ (০৪ শেষ)
নিহিত বর্ণার সামনে কাচুমাচু করে দাঁড়িয়ে আছে। বর্ণাও অল্প সময় নিয়ে নিহিতের এমন অদ্ভুত ব্যাপারগুলো করলো, তারপর জোর গলায় বললো,
‘ বসুন বসুন।
নিহিত বর্ণার দিকে তাকাতে তাকাতে বসে পড়লো৷ বসেই সে বিরবির করে বললো,
‘ কি বলবেন? দেখুন আমি আপনার সবকিছু মেনে নিয়েই আপনাকে বিয়ে করতে রাজী হয়েছি, আমি আপনার অতীত সম্পর্কে জানতে চাইনা৷
বর্ণা আওয়াজ করে হেসে বললো,
‘ আপনাকে কে বললো যে আমি আমার অতীতের কথা বলতে আপনাকে এখানে এনেছি? আমি মোটেও আমার প্রাক্তনকে আপনার সাথে বিশ্লেষণ করবোনা। যতটুকু জানেন ততটুকুই থাকবে৷ তবে আমার এটা বিশ্বাস, কপালে ভালো থাকা লিখা থাকলে ভালোবাসার মানুষকেই পেতে হবে এমন কোনো কথা নেই৷ তার কাছে পরবর্তীতেও আমি খারাপ থাকতে পারি। আবার ভালো না বেসে কাউকে বিয়ে করেও অনেক ভালো থাকতে পারি।
নিহিত একটু হেসে বললো,
‘ অবশ্যই, বিয়ে জীবনে একবারই সুন্দর। আর যদি আপনাকে একটা মানুষ মনেপ্রাণে চায়, সে আপনাকে পেলে কখনোই খারাপ থাকতে দিবেনা।
বর্ণা আঙুল উঁচু করে বললো,
‘ এইতো মূল প্রসঙ্গে পৌঁছে গেলেন! এতো করে চাওয়া জিনিসটার তুমুল বিপক্ষে আমি। তারা পাওয়ার আগ পর্যন্তই আগ্রহ দেখায়, পেয়ে গেলেই আর দাম দেয়না, তখন তাদের সবকিছুই যেন এক্সপেকটেশনের চেয়ে কম কম মনে হয়। তার আচরণ পাল্টে যেতে থাকে, আর সেটা এই মানুষটা সহ্য করতে পারেনা, যে কিনা তাকে এভাবে দেখবে ব্যপারটা ভুল করেও কোনোদিন মাথায় আনেনি। সে সহ্য করতে পারেনা, তার মনে হয় স্থিরই যদি না থাকবে সে এতো বেশি ভালোবাসা দেখালো কেন? কেনই বা বেশি বেশিতে তাকে অভ্যস্ত করে এখন কষ্ট দিচ্ছে।
দেখুন আপনিও আমার সেই প্রাক্তনের মতোই, আমাকে পেতে বিশাল পাগলামি আপনার। সেও না, দুনিয়ার সবকিছুর বিনিময়ে শুধু আমার মন পাওয়াটাকেই প্রাধান্য দিয়েছিলো, কতো বছর, কতো দিন, কতো মূহুর্ত তার পাগলামিতে আমি থমকে গেছি, এসবের ভীড়ে যখনি আমি তার প্রতি দূর্বল হয়ে গেলাম, ঠিক তখনি, ঠিক তখনি সে একটু একটু করে বদলে যেতে থাকলো। এদিকে তাকে পেতে আমার কতো অজুহাত, কতো পরিবর্তন, কিন্তু নাহ শেষ পর্যন্ত পেলাম না আমি।
আমি বুঝে গেছি তাকে আমার কখনো পাওয়া হলেও তার কাছে কোনোদিন ভালো থাকা হবেনা। কালকে বাসায় এসে তাই বাবা মাকে বলেছিলাম তাদের পছন্দে একটা সাধারণ কাউকে বিয়ে করে নিবো, যে আমার প্রতি নিজের আগ্রহ দেখাবে অতি সামান্য, এটাতে আমি মানিয়ে এক জীবন কাটিয়ে দিবো। জীবন সঙ্গীর সাথে যেভাবেই পারি কোনো রকম মানিয়ে নিবো, আর এতেই যদি আল্লাহ কপালে ভালো লিখে রাখেন অবশ্যই আমি ভালো থাকবো। অন্তত ওইসব মানুষের কাছ থেকে বেশি ভালো থাকবো, যারা আগে প্রচুর অস্থায়ী প্রেম দেখায়!
নিহিত চুপ করে আছে। ভেতরে অনেক আবেগপ্রবণতা কথারা বিরবির করছে, কিন্তু বর্ণার সামনে ঠেলে বাইরে আসছেনা। যদি সেগুলোকেও বর্ণা অস্থায়ী ভেবে নেয়? এর মধ্যে বর্ণা আবার বললো,
‘ আপনার কিছু বলার থাকলে বলতে পারেন, আমার কথা শেষ!
নিহিত ভেতরকার কথাগুলো বলতে না পারার আক্ষেপে আরো কাচুমাচু করছে, সে কীভাবে বোঝাবে যে সে বর্ণাকে খারাপ থাকতে দিবেনা, সবসময় নিজের সবটা দিয়ে তাকে ভালো রাখার চেষ্টা করবে৷ তার কথাকেই বোধহয় বর্ণা তার প্রাক্তনের একসময়কার পাগলামির সাথে গুলিয়ে ফেলবে।
সব কথা চাপিয়ে সে বলে উঠলো,
‘ দেখুন আপনি যেমন চাবেন আমি তেমনই থাকবো। আপনি যদি বলেন আপনাকে কম গুরুত্ব দিতে,তাহলে কমই দিবো। আমাদের যেহেতু এখনো কোনো সম্পর্ক হয়নি তাহলে আমি সেভাবেই শুরু করতে পারবো, আপনিও সেভাবেই অভ্যস্ত হবেন!
বর্ণা ভ্রু কুঁচকে নিহিতের দিকে তাকালো। মনে হচ্ছে মারাত্মক ভুল কিছু বলে ফেলেছে। সে এবার আরো চুপসে গেলো। বর্ণা তার এই ভাঁজ ভরপুর মুখটাকে দীর্ঘ করতে পারলো না, আওয়াজ করে হেসে বললো,
‘ আচ্ছা আচ্ছা যান, আমি বিয়েতে রাজী।
বলেই সে মুখ ঘুরিয়ে নিলো, নিহিত বর্ণার সেসময়কার মুখের ভঙ্গিটা মিস করে গেলো। এদিকে বর্ণা রুম থেকে বের হয়ে অন্য রুমে চলে গেছে।
আর নিহিত ধীর পায়ে আশেপাশে বর্ণার সন্ধান করতে করতে তার মায়ের কাছে গিয়ে বসে ফিসফিস করে বললো,
‘ আম্মা বাগদান লাগবেনা, খুব জলদি বিয়ের ব্যবস্থা করে ফেলুন।
সে ফিসফিস করে বললেও তার মা জোরে বলে উঠলো,
‘ তার মানে মেয়ে বিয়েতে রাজী?
সামনে থাকা বর্ণার মা-বাবাও এবার খুশিতেই একে অপরেরদিকে তাকালো। বর্ণার মা হাসতে হাসতে বললো,
‘ আমি বলেছিলাম না আমাদের মেয়ে রাজী?
এখন সবাই হাসছে! আর নিহিত ভেতরকার একটা রুমের পর্দার দিকে তাকিয়ে দেখছে, সেখানে একটা মানুষের উপস্থিতি, যে লুকিয়ে সব শুনছে। নিহিত সেটার দিকে তাকিয়ে মিটমিট করে হাসলো।
দুই পরিবারের সম্মিলনে তাদের বিয়ের তারিখ ঠিক হলো ১০ দিন পর, যা কোনো এক সোমবার।
এর মধ্যে নিহিতের বাবাও দেশে আসার জন্য যাবতীয় কার্যক্রম শুরু করে দিয়েছে। ছেলের বউয়ের গয়নাগাটি অবশ্য আগেই কিনে রেখেছিলো তাই আর কোনো চাপ ছিলোনা।
অন্যদিকে নিহিত প্রচন্ড খুশি, এবং বিয়ে ঠিক হওয়ার পর থেকে বেশ গুছিয়ে চলাফেরা করে। তার বউ এসে যদি ভুলভাল কাজকর্মে তার প্রতি বিরক্ত হয়?
সে ভীষণ উৎফুল্ল, তবে তার ভেতর চুরমার হয়ে যায় বর্ণাকে দেখার আকুলতায়! একটু কথা বলার আকাঙ্ক্ষায়, কিন্তু বর্ণা তো এসবকে বুঝবেনা! তাই সে বিয়ে হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করছে, এরপর তার ভালোবাসা প্রকাশে বর্ণার কোনো বিধিনিষেধই তাকে বাঁধা দিতে পারবেনা।
এদিকে নিপুণ তো প্রচন্ডরকম জেদ করে আছে, সে তার হবু ভাবির সাথে বিয়ের আগে দেখা করবেই করবে। আর নিহিত তাকে সেই কথাও দিয়েছিলো। কিন্তু নিহিত বুঝাতে পারছেনা, বর্ণা তার আবদারকে উল্লেখ করলেও বর্ণা ভাব্বে নিহিতেরই বুঝি ছলচাতুরী, আর এরপর কোনো অঘটন করে যদি বিয়ে ভেঙে দেয়? নাহ সে কোনোভাবেই বর্ণাকে হারাতে পারবেনা। তাকে স্বাভাবিক থাকতে হবে। এদিকে নিপুণকে বুঝালো, তার বাবা আসলে তাকে নিয়ে গিয়ে দেখে আসতে। অবশ্যই তার বাবা দেশে এসে মেয়েকে এক নজর দেখে আসবেন!
চলে গেলো পাঁচদিন। নিহিত অফিসে বসে বিয়ের ছুটির জন্য দরখাস্ত লিখছিলো।
তখনি তার মাথার উপর একটা ছায়া পড়লো। নিহিত ভাবলো তার কোনো কলিগ। সে লিখছেই কেবল। হুট করে দেই ছায়াটা তার পাশ ঘেঁষে দুম করে টেবিলে হাত রেখে বলে উঠলো,
‘ বিয়ের জন্য এখনি ছুটির আবেদন?
নিহিত এমন অভদ্র আচরণে রেগে গেলেও সেই লোকের মুখে তাকিয়ে একদম স্তব্ধ হয়ে গেলো। বর্ণার প্রাক্তন প্রেমিক তার অফিসে এসে তারই টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে তাচ্ছিল্য করে বলছে, বিয়ের জন্য ছুটির দরখাস্ত লিখছে কিনা।
নিহিত দাঁড়িয়ে বললো,
‘ বসুন আপনি।
সেই ছেলে মাথা দুলিয়ে বললো,
‘ বসবোনা। শুধু একটা কথা বলতে সরাসরি এখানে চলে আসলাম। আসলে পাশ দিয়ে যাচ্ছিলাম তো!
নিহিত হাসিমুখে বললো,
‘ অবশ্যই বলুন।
সেই ছেলে কপালের চুলগুলোতে হাত বুলিয়ে নিয়ে বললো,
‘ আপনার হবু বউ সম্পর্কে বিস্তারিত জানেন তো? সে আমার..
নিহিত কথার মাঝে বললো,
‘ আমি জানি। এছাড়া আর কোনো কথা না থাকলে আপনি আমার সাথে আসতে পারেন। বাইরে আপনাকে এক কাপ চা খাইয়ে তবেই বিদায় জানাবো। আমার অফিসে এসেছেন, এইটুকু সম্মান আপনার প্রাপ্য।
ছেলেটা চোখ লাল করে বললো,
‘ সম্মান আপনার আছে? কেমন মেয়েকে বিয়ে করছেন জানেন আপনি? দু নম্বর একটা মেয়েকে বউ হিসেবে পাচ্ছেন।
নিহিত রাগে ক্ষিপ্ত হয়ে ছেলের কলার চেপে ধরলো। আর এটা দেখে আশেপাশের কলিগরা উঠে দাঁড়িয়ে গেলো। বিষয়টা খেয়াল করে নিহিত ছেলেটার কলার ছেড়ে দিলো। তারপর ছেলের হাত ধরে তাকে টেনে বাইরে নিয়ে আসলো।
তারপর সেই ছেলের মুখের উপর আঙুল তুলে বললো,
‘ বর্ণা যদি পৃথিবীর সবচেয়ে খারাপ মেয়েটাও হয়, আমি তাকেই বিয়ে করবো। তার অতীত আমার কাছে কেবলই অতীত। আমার বর্তমান দিয়ে তাকে এতটাই শুদ্ধ করে তুলবো যে তুই দেখে তখন তার সুখকে শুধু হিংসা করবি। যাহ তোকে চা খাওয়ানোর ইচ্ছেটাও চলে গেছে।
বলেই নিহিত অফিসের ভেতর চলে আসলো। তার কাছের একজন এসে জানতে চাইলো, লোকটা কে ছিলো। নিহিত মুচকি হেসে বললো,
‘ রাস্তায় ঝামেলা পাকিয়েছিলাম, ওটার জন্যই আমাকে শাসাতে আসছিলো আরকি।
সেই লোকটা বোধহয় নিহিতের কথা বিশ্বাস করলোনা, কারণ নিহিত রাস্তায় ঝামেলা পাকানোর মতো কোনো মানুষই না। তবুও নিরবে চলে গেলো। কিন্তু নিহিত জানে, সে নিজে ছোট হলেও বর্ণাকে কোনোদিন কারো সামনে ছোট করবেনা।
৭ দিনের মাথায় নিহিতের বাবা দেশে আসলো। সবকিছুই একদম ঠিকঠাক। ৮তম দিনে তার বাবা আর নিপুণ গেলো বর্ণাকে দেখতে, কারণে তারা দুজন সরাসরি দেখেনি। নিহিতের ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও সে যেতে পারলোনা।
এর পরেরদিন ছিল তাদের গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান । নিহিত হিসাবে সেদিন থেকেই পুরো একমাসের ছুটি নিয়েছে।
যেহেতু তার ছুটি পিছিয়ে মঞ্জুর হয়েছে, তাই আজকে তার কাজের চাপ অত্যাধিক। অনেক জিনিসপত্র কেনাকাটা বাকি ছিলো, যা এক এক করে কিনে কিনে বাসায় পাঠাচ্ছে।
বিকেলের দিকে সে ক্লান্ত হয়ে লেকের পাড়ে গিয়ে বসলো। বেশ খানিকটা সময় সে লেকের পানির দিকে তাকিয়ে আছে। তখনি অচেনা একটা নাম্বার থেকে ফোন আসলো।
নিহিতের ফোন রিসিভ করতে ইচ্ছে করছেনা, কারণ সে জানে নিমন্ত্রিত কোনো অতিথি হবে, এই কয়দিনে অনেক মানুষকেই তো দাওয়াতের জন্য ফোন করেছিলো সে।
প্রথম ফোনটা কেটে যাওয়ার পরে আবারও ফোন আসলো। নিহিত এবার বিরক্তি নিয়েই রিসিভ করলো। সাথে সাথেই শুনলো ওপাশ থেকে কেউ হ্যালো বলেই খুব কাঁদছে। নিহিতের বুক ধুকপুক করে উঠলো। বর্ণার আওয়াজ। বর্ণা কাঁদছে কেন?
নিহিত কি বলবে বুঝতে পারছিলোনা। তবুও বোকার মতো এটাই বললো,
‘ কাঁদছেন কেন আপনি?
বর্ণা ফুঁপিয়ে জবাব দিলো,
‘ আমার পুরো এলাকায় আমার প্রাক্তন প্রেমিক আমার নামে খারাপ বদনাম রটাচ্ছে। আমি জানি এগুলো আপনাদের কানেও পৌঁছাবে, বিশ্বাস করুন সে যা বলছে সব মিথ্যে, আমি তার জন্য পাগল ছিলাম এটা ঠিক কিন্তু এতটাও অবুঝ ছিলাম না যে নিজের সর্বস্ব বিসর্জন দিয়ে দিবো।
নিহিত গলা খাঁকরে বললো,
‘ আমাদের কানে পৌঁছাবে নয়, আরো চারদিন আগে সে আমার অফিসে এসে এসব বলে গেছে। কই আমি তো বুড়ো আঙুল দিয়েও তার এসব কথাকে পরোয়া করিনি। বর্ণা যারা জ্ঞানী তারা নিন্দা যে করে তাকে ঘৃণা করে, যার নিন্দা করে তাকে নয়। ভালো মানুষেরা কখনোই কারো বদনাম রটায় না। আর আমি আপনাকে বিয়ে করবো, আমার তো এসবে একটুও মাথা ঘামেনি, তাহলে অন্য মানুষের কথা দিয়ে আপনার কি হবে? শুধু আমাকে এটা বলুন সে এমনটা কেন করছে? সে তো বিয়ে করবেনা তাহলে আপনার বিয়ে ভাঙতে চাইছে কেন?
বর্ণা ভাঙা গলায় আস্তে আস্তে বললো,
‘ কারণ তার সেই প্রেমিকার একটা আপত্তিকর ব্যপার ইতোমধ্যেই তার সামনে এসেছে, যার পরে ওই মেয়েকে গ্রহণ করা তার পক্ষে অসম্ভব। সে আমার কাছে ফিরে আসতে চাচ্ছিলো, আমি বারণ করাতে সে আমাকে নিশ্চিত করলো সে এমনকিছু করবে যে আমার এই বিয়ে এবং অন্য কোনো জায়গাতেই আর বিয়ে হবেনা। তার কাছেই যেতে হবে।
নিহিত হেসে বললো,
‘ আমিও নিশ্চিত করলাম, বিয়ে হবে এবং আমার সাথেই হবে। আপনি এর জন্য ভেতরে একফোঁটাও ভীতি জমিয়ে রাখবেন না।
বর্ণা হাসলো, খুব চাপা সে হাসি। যা নিহিত শুনতে পায়নি, এবং দেখতেও পায়নি, তবে অনূভব করেছে বর্ণার এখন স্বস্তি লাগছে!
তাদের গায়ে হলুদ সম্পন্ন হলো, বাড়ি জুড়ে হইহই করে আনন্দ হলো। পাড়াপ্রতিবেশিদের কানে বদনামের রেশ ধরলেও কেউই তা প্রকাশে কোনো সাহস পেলোনা, যেখানে ধুমধামে বিয়ে হচ্ছে, সেখানে এসব শুনবেই কে?
বিয়েরদিন পাত্র পাত্রী উভয় পক্ষের সামনে বন্ধুবান্ধব নিয়ে এসেও সেই ছেলের দাবী, মেয়ে খারাপ, তার সাথে তার খারাপ সম্পর্ক ছিলো। বর্ণা ঠোঁটে হাসি ধরে রেখেই শুনছে সেই ছেলে আর কি কি বলতে পারে!
তবে বর্ণার দৃষ্টি সেই ছেলে নয় একটা বিশ্বস্ত মানুষের উপর, যে এসবকিছুকেই তাচ্ছিল্যের সাথে এড়িয়ে শুধুমাত্র তাকেই গুরুত্ব দিচ্ছে।
তাকে এর থেকে আর কে বেশি ভালোবাসবে? মানুষ সঠিক হলে অতিরিক্ত ভালোবাসায় শঙ্কা থাকতে পারে, এমন চিন্তা গত কয়েকদিনে তাকে আর ভর করছেনা।
সবকিছুকে সামনে রেখেই নিহিত বর্ণাকে বিয়ে করে নিলো। কোনো কিছুতেই তার এবং তার পরিবারের কিচ্ছু যায় আসেনি।
আর বর্ণার দৃষ্টিতেও নিহিতের জন্য ফুটছে অগাধ আস্হা। ঠোঁটে ঝড়ছে অঢেল খুশির ফোয়ারা। এর থেকে বেশি আর কি লাগে নিহিতের জীবনে?
এখন আর কে পারবে বর্ণাকে আর তার থেকে আলাদা করতে?
তাদের মধ্যে দুনিয়ার সব বাধ একত্রে জড়ো হলেও সে বিশ্বাস করে সেখানে তার ভালোবাসা থাকবে চির অবাধ।
(সমাপ্ত)
লেখাঃ #তাজরীন_খন্দকার