#অবিরাম ভালোবাসা
পর্ব – শেষ পর্ব
#Writer:-#Sajna Akther
ধীরে ধীরে তাকিয়ে দেখি একটা অচেনা ছেলে আমাকে ধরে আছে আমি ধরফরিয়ে উঠে লোকটার কাছ থেকে সরে আসি
সরি সরি আমি আসলে বুঝতে পারি নি বলেই ওখান থেকে চলে যাই একটা বিপদ থেকে উদ্ধার হলাম নিচে তাকিয়ে দেখি সাগর আমাকে খেয়াল করেনি যদি একবার দেখতো ওই লোকটা আমাকে ধরেছে তাহলে কি করে বসত কে জানে
.
.
বিছানায় শরীরটা এলিয়ে দিলাম খুব ক্লান্ত লাগছে
ওই লোকটাকে তো চিনতে পারলাম না হয়তো রূপা আপুর বরের কেউ হবে দূর এসব ভেবে কি হবে আগে একটু ঘুমাই
.
.
ঘুম ঘুম চোখে পাশে তাকিয়ে দেখি সাগর আমার পাশে বসে আছে
আচমকা আমার হাত টান দিয়ে তুলে টানতে টানতে ওয়াশরুমে নিয়ে যাচ্ছে
“” কি হয়েছে আপনার আপনি এরকম করছেন কেনো “” ”
আহ কি করছেনটা কি ছাড়ুন আমাকে,
আমার পেট আর হাতের কব্জি সাবান দিয়ে ঘষতে ঘষতে লাল করে ফেলেছে হঠাৎ কি হলো এরকম করছেন কেনো, আমার খুব যন্ত্রণা হচ্ছে
ওনি আরো ঘষতে ঘষতে বলছেন
” “এখানে ছোয়েচে তাই না আমি সেই ছোয়া আর রাখবো না তুমার শরীরে শুধু আমার ছোয়া থাকবে আর কারো না “”
“” কি বলছেন এইসব আপনি “” ”
তুমি এটা ভেবো না আমি আমার বউয়ের প্রতি কোনো খেয়াল রাখি না তুমি কি করছো কোথায় যাচ্ছো সব আমার চোখে পড়ে এর পর থেকে খুব সাবধানে চলাফেরা করবে (এসব বলে আমার সেই লাল করা স্থানে অজস্র কিস করে যাচ্ছেন )
.
.
.
.
আমি এই সময় কি করবো একদিকে আমার খুব যন্ত্রণা হচ্ছে আর অন্যদিকে ওনার পাগলামি এভাবে কি কাউকে ভালোবাসা যায় ?
আচ্ছা আমি যদি কোনোদিন ওনার থেকে মরে বা হারিয়ে যাই তাহলে কি ওনি পাগল হয়ে যাবেন নাকি আমাকে ভুলে যাবেন
হঠাৎ ওনি আমাকে কোলে নিয়ে রুমে আসলেন এসে হাতে পেটে বরফ লাগিয়ে দিচ্ছেন
আমিতো রিতিমতো সক্ড? ওনার এই রূপ দেখে
তারপর ওনি কোথায় চলে যান
এই অবস্থায় নিচে যাচ্ছি না রুমেই বসে আছি কেউ একজন আমার রুমে আসছে চেয়ে দেখি রূপা আপু ,
আপুকে দেখে পেট আর হাত কোনোমতে ডাকার চেষ্টা করলাম
আমি::::::আপু ভিতরে আসো
আপু ::::::হুম তোর কি শরীর খারাপ তানিসা
আমি ::::::না আপু তেমন কিছু হয়নি একটু ক্লান্ত লাগছে ঠিক হয়ে যাবে
আপু :::::::শোন তুই এখন আমার একটা মাত্র ভাইয়ের বউ আমার ভাইকে তুই কষ্ট দিসনা ও অনেক যন্ত্রণা ও কষ্টের মধ্যে ছিলো তুই আমার ভাইটাকে একটু সুখে রাখিশ ?
আমি :::::::কেনো আপু ওনার কি হয়েছিল
আপু ::::::জানিস সাগর আগে একদম মা বলতে পাগল ছিলো বাবা যদি কোনোদিন মায়ের সাথে ঝগড়া করত সাগরতো প্রায় বাবাকে একদম শয্যই করত না মাকে যদি কেউ একটা গালি দিতো তখন সাগর পাগল হয়ে যেতো ওকে মারার জন্য কিন্তু মা ওকে আগলে রাখতেন সেই মা চলে যাওয়ার পর
(বলেই আপু কান্নায় ভেঙে পড়লেন?)
আমি ওনাকে সান্ত্বনা দিচ্ছি তারপর আপু বলতে শুরু করলেন
.
.
আপু :::::মা চলে যাওয়ার পর সাগর প্রায় পাগল পাগল খাওয়া দাওয়া একদম করত না রীতিমত আমি আর বাবা সাগরকে নিয়ে ভয়ে ছিলাম
একদিন সাগরের রুমে গিয়েছিলাম ওকে খাওয়ানোর জন্য কিন্তু আমি খাওয়াতে না পেরে চলে আসি আমার খেয়াল ছিলো না তখন আমার মোবাইলটা ওর কাছে ফেলে আসি আর তখনই আমার ফোন আসে তুইতো জানিস আমার ফোনে ওয়ালপেপার তুই আর আমি পাশাপাশি তখন সাগর আমার কাছে ফোন নিয়ে আসে আমি ফোনে কথা বলতে বলতে দেখি সাগর খেতে বসেছে আর কি জানি ভাবছে আমিতো অবাক
তারপরের দিন থেকে সাগর অফিসে যাওয়া শুরু করে তারপর তোর সাথে ওর বিয়ের কথা শুরু হয়
.
.
.
এরপর একদিন তোকে তোলে নিয়ে আমাদের বাসায় আসে,,, বাবা ফুপি সবাই সাগরের জেদ আর রাগ জানেন তাই তোদের বিয়ে দেন তুই প্লিজ আমার ভাইটাকে দেখে রাখিশ ওকে আর কোনো কষ্ট পেতে দিসনা (বলেই কাঁদতে কাঁদতে আপু চলে গেলেন)
নাহ আমি আর ওনাকে কষ্ট পেতে দিবো না এখন বুঝতে পারছি আমার কাছে কোনো পুরুষ আসলেই ওনার কষ্ট বেড়ে যায় যদি আমিও হারিয়ে যাই সেই ভেবে
আচ্ছা ওনি কোথায় গেলেন এখনো আসছেন না কেনো
উফ খুব খিদেও পেয়েছে
দরজায় তাকিয়ে দেখি খাবার হাতে নিয়ে সাগর আসছে আমার পাশে বসে মুখে তুলে খাবার খাইয়ে দিচ্ছে আমিও সাগরকে খাইয়ে দিচ্ছি খাওয়া শেষ, আসলেই লোকটা বড়ই অদ্ভুত,,,
“” “সরি জান তুমার খুব জ্বালা করছে আর এমন হবে না (করুন কন্ঠে),,,,,,,
“” “” “হুম মনে থাকে যেনো আর আমার সাথে এমন করলে আমিও আপনাকে ছাড়বো না বলে দিলাম ?
” ” কেনো সোনা আমি এরকম করলে তুমি কি আমায় আদর করবে বেশি করে (ডেভিল হাসি) ” ”
” “জি না আপনাকে আমি কামড় দিবো হাতে কামড় দিবো সারা মুখে কামড় দিবো তখন বুঝবেন” “” “?
আমার কথা শুনে ওনি হাসিতে গড়াগড়ি খাচ্ছেন
” “” “কি বললে কামড় দিবে আমায় কি রাক্ষসী মেয়েরে বাবা” “”
“” “” কি বললেন আমি রাক্ষসী দাঁড়ান দেখাচ্ছি বলেই ওনার গাড়ে একটা কামড় বসিয়ে দিলাম,,,
আহ তানু তুমি কি চাইছো আজ রাতেই আমাদের বাসর হোক (বলেই আমার উপর ঝাঁপিয়ে পড়েন)
আজ ভালোবাসার রাত আমাদের একে অপরের
দুজন দুজনাতে হারিয়ে গেছি
আমার সবটুকু ভালোবাসা দিয়ে সাগরকে আগলে রাখবো
সকালে…..
আমি আর সাগর সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে আসি,,,,,
.
.
এখন থেকে সাগর প্রতিদিন অফিসে যায় আবার তাড়াতাড়ি বাসায় এসে আমার সাথে দুষ্টুমি করে রাগ অভিমান লেগেই থাকে আমাদের কিন্তু কারো কাছ থেকে কেউ আলাদা হই না
.
.
বিয়ের তিন মাস পর হঠাৎ একদিন আমি মাথা ঘুরে পরে যাই বাড়ির কাজের লোক সাগরকে কল করে আমার কথা জানায় সাগরতো প্রায় পাগল পাগল আমার জ্ঞান ফিরে রুমে তাকিয়ে দেখি প্রায় ১০জন নার্স আর ডক্টর সাগর আমার হাত ধরে বসে আছে আমি উঠে বসতেই সাগর তাদেরকে চোখ দিয়ে ইশারা করে চলে যেতে
.
.
তারপর সাগর আমাকে জড়িয়ে ধরে কিস করতে থাকে
জানো আজকে আমাদের কও খুশির দিন আমি হবো বাবা আর তুমি মা
আমি এই কথা শুনে খুশিতে সাগরকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরি
.
তারপর শুরু হয় সাগরের পাগলামি আগেতো অফিসে যেতো তাড়াতাড়ি বাসায় ফিরতো এখন অফিস কাজ বাদ দিয়ে আমার কাছে পরে আছে
বাবা একাই অফিস সামলান
.
.
.
.
৪ বছর পর
উফ এই বাপ ছেলে আমাকে জ্বালিয়ে ছাড়বে,,
তোমরা কি খেতে আসবে ,, না আমি টিভিটা এক আছাড়ে ভেঙে ফেলি ?
আহ মা তুমি আতো আমলা একতাথে তিভি দেকি(শান্ত)
(সাগর আর তানিসার ছেলে শান্ত)
.
না বাবা তোমার মা আমাদের সাথে টিভি দেখতে আসবে না তোমার মার আর একটু রাগ উঠলে আমাদের কামড়াতে আসবে চলো আমরা খেয়ে আসি (সাগর)
কি হল বাবা আর ছেলে কি এতো কানাকানি কর
কই নাতো আমলা খেতে আততি(শান্ত)
.
.
.
.
হুম সাগর আর আমি অনেক সুখে আছি আমাদের ছেলেকে নিয়ে সাগরের প্রতি আমার
“” অবিরাম ভালোবাসা “ও সবসময়ই আমাকে আগলে রেখেছে,, ওইতো সেদিন আমাকে হঠাৎ জড়িয়ে ধরে বলে
সাগর:::::আমার বেঁচে থাকার কোনো ইচ্ছা থাকতো না তুমি না থাকলে ” কি বলবো তোমায় তুমি কি আমার,,, তুমি আমার জীবনের একমাত্র আশা?
হঠাৎ সাগরের এইসব পাগলামি আমার খুব ভালো লাগে আমার আর কি চাই যদি এরকম একটা স্বামী পাশে থাকে
Happy Ending ?❤️
কারো ভালো না লাগলে দুঃখিত ?