অবুঝ বউ?,১ম পর্ব
❤আশিক❤
তিথিকে যখন বিয়ে করি তার বয়স তখন ১৪। সম্পর্কে আমার দুর সম্পর্কের বোন। আমার দাদীর ইচ্ছায় বিয়েটা হয়েছিল।
পরিবারের বড় ছেলে হওয়াই আমাকে এই বিয়ের পাঁঠা হতে হয়েছিল। ওকে যখন বিয়ে করি আমার বয়স তখন ২৬ , বুঝতেই পারছেন দুজন দুই গ্রহের বসিন্দা।
সা सा
দাদীও ছিল শেষ পর্যায়ে, কোন রকম হাঁটতে চলতে পারতো। তাই একদিন বাবা ও মাসিকে ডেকে এই বিয়ের ব্যাবস্থা করে। তার এক কথা মারা যাওয়ার আগে নাতবউ দেখে যাবে, আর তিথির সাথেই আমার বিয়ে দিবে, তাইতো এক প্রকার জোর করেই তিথির সাথে আমার বিয়েটা হয়েছিল।
অনিচ্ছা সত্ত্বেও দাদীর জোরাজুরি তে বাসর ঘরে ঢুকতে হয়েছিল, ঘরে ঢুকতেই ও রোবটের মত খাট থেকে নেমে পায়ে হাত দিয়ে প্রনাম করা শুরু করলো , করছে তো করছেই, আমি কিছু বলছিনা, প্রায় দুই মিনিট করার পর ধমক দিয়ে বললাম
” কিরে কি করছিস? “(আমি)
তিথি: প্রনাম করছি ,
তা তো দেখতেই পারছি এতক্ষণ ধরে প্রনাম করতে হয়?(আমি)
নানী তো বলছে আপনি যতক্ষণ না ওঠাবেন ততক্ষণ পায়ে হাত দিয়ে থাকতে। (তিথি)
(ওর কথা শুনে তো আমার পেট ফেটে হাসি পাচ্ছে)
তো আর কি কি বলছে তোর নানী?(আমি)
আরও অনেক কথা বলেছে,(তিথি)
কি কি বলছে? (মুখে হাসি চেপে রেখে)(আমি)
বলছে আপনার বুকে মাথা রেখে রাতে ঘুমাতে ,
আপনি যদি আমাকে জড়িয়ে ধরেন আমি যেন বাধা না দেই, চিৎকার চেঁচামেচি যেন না করি, আর …(আর কিছু বলতে না দিয়ে)
হয়েছে এবার থাম , চল খাটে বসে পড়। (আমি)
নানী বলছে আমাকে কোলে করে নিয়ে যেতে,(তিথি)
কানের নিচে একটা চাঁটা লাগাবো দাঁত ফেলে দেবো , ওকে আবার কোলে করে খাটে নিয়ে যেতে হবে?(আমি)
যা খাটে যা,(আমি)
ওওওও এইবার বুঝেছি নানী কেন চিৎকার করতে না বলছে । (তিথি)
কি বুঝেছিস ?(আমি)
এই যে আপনি আমাকে থাপ্পড় মারবেন আমি ব্যাথা পাবো। তাই যেন চিৎকার না করি , চিৎকার করলে তো মামা এসে আপনাকে মারবে। (তিথি)
মনে নেই একদিন আপনি আমাকে মেরেছিলেন আর আমি চিৎকার করেছিলাম তখন মামা এসে আপনাকে কি মারটাই না মেরেছিল , বলেই ফিক করে হেসে দিছে, আপনি মারতে পারেন আমি চিৎকার করবো না। (তিথি)
(ওর কথা শুনে আমি হাসব না কাদব ঠিক বুঝতে পারছি না )
কি হল মারুন না হলে আমাকে কোলে করে বিছানায় নিয়ে যান। (তিথি)
ওই তোর তো সাহস একদিনেই বেড়ে গেছে, আমার কথার উপর কথা বলিস ? যা বিছানায় (ধমক দিয়ে, ও আবার আমায় খুব ভয় পায়)(আমি)
(ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে বিছানায় গেল)
আমিও বিছানায় গিয়ে হাতে থাকা একটা জামা ওর হাতে দিলাম। কিছুদিন আগেই ও আমায় ফোনে বলছিল ভাইয়া এবার আসার সময় আমার জন্য একটা হলুদ কালারের জামা নিয়ে আসবেন।ওটাই আজ দিলাম,
” ভাইয়া এটা কি? “(তিথি)
খুলে দেখ,(আমি)
woow অনেক সুন্দর হয়েছে ভাইয়া । THANK YOU বলেই গালে একটা চুমু দিল , আচ্ছা আপনি এমন কেনো?(তিথি)
কেমন ?(আমি)
এই যে ড্রেসটা এখন দিলেন আগে যদি দিতেন তাহলে এটা পড়েই আসতাম। কি শাড়ী পরিয়েছে , আমি পরবোই না তারপরেও বলে বিয়েতে শাড়ী পরতে হয়, আচ্ছা ভাইয়া বিয়ে কি?(তিথি)
তোর অতো কিছু জানতে হবে না, শাড়ীটা খুলে এটা পড়ে আয়।শাড়ী পরে ঘুমাতে পারবি না । (আমি)
” আচ্ছা ” (বলেই শাড়ী খুলতে লাগল)
ওই কি করছিস ?(আমি)
কেন আপনি না বললেন এটা পরতে ?(তিথি)
বলছি তাই বলে কি এখানে ?(আমি)
না। নানী বলেছে এভাবে ঘুমাতে। (তিথি)
ওর কান্ড কারখানা দেখে আর কিছু বললাম না।
সকালে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হতে চলে গেলাম । ফ্রেশ হয়ে হাঁটতে হাঁটতে বাজারে গেলাম চা খেতে।
চা খেয়ে বাড়ি এসে দেখি সবাই যেনো কি বলাবলি করছে । আমি তোয়াক্কা না করে রুমে গেলাম। কিছুক্ষন পর দাদী এলো। এসেই তিথিকে খোঁজা শুরু করলো।
আমায় বলছে ” কি নাতি আমার নাতনিটারে কোথায় রাখলি? দেখি একটু কেমন হলো ? ”
তোমার নাতনী আগে যেমন ছিলো তেমনি আছে । (আমি)
তা কই আমার নাত বউ টা ?(দাদি)
তোমার নাত বউ কে কি আমি পকেটে করে নিয়ে বসে আছি, যে আমায় জিজ্ঞাসা করছো ?(আমি)
কি বলিস , ও তো বের হয়নি। আমরা তো মনে করলাম তুই রুমে , তাই এদিকে আসিনি।
কি বল আমি তো ওকে ঘরে রেখেই বাইরে গেলাম। (আমি)
(তারপর সারা বাড়িতে ওকে খোঁজার ধুম পড়ে গেলো।
চিৎকার করে ডেকে কেউ , কোথাও পেলো না )
আমার মনে হঠাৎ সন্দেহ জাগলো , ওকি তাহলে ?
যেই ভাবা সেই কাজ। দৌড়ে পুকুর ঘাটের আম বাগানে গেলাম। যা ভেবেছিলাম ঠিক তাই , বাঁদর গাছে বসে আম খাচ্ছে ।
কিরে ওখানে কি করছিস ?(আমি)
ভাইয়া আম খাচ্ছি খাবেন ?(তিথি)
দাঁড়া তোর আম খাওয়া বের করছি । আজ তোর পা ভেঙে দেবো , তোকে যে এত মানুষ ডাকছে তুই শুনতে পাস নি ?(বলেই লাঠি খোঁজা শুরু করলাম)
শুনতে পেয়েছি তো । (তিথি)
শুনতে যখন পেয়েছিস, তাহলে সাড়া দিচ্ছিস না কেনো ?(আমি)
আপনিই না কাল বললেন যে কথা কম বলতে….(তিথি)
চলবে…….?